বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ মিনিকেট বা মিনিকিট নামে কোনো ধান বা চাল নেই, অথচ এই চালে বাজার ছয়লাপ। (মিনিকেট নামের যে ধান/চাল টা পাওয়া যায় তার আসল নাম #IEP_4786.) কেনাবেচার শীর্ষে থাকা এই চালের উৎস খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে যে মোটা চাল ইচ্ছেমত ছাঁটাই ও পালিশ করে মিনিকেট নামকরণ করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। পুষ্টিহীন এই ধরনের চালের ভাতে অভ্যস্ত হলে কোলেন ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসের মত মারণ রোগের ঝুঁকি বাড়ে বলে সতর্ক করেছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। রাইসমিলে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত্য ছাঁটাইয়ের অনুমোদন থাকলেও , ছাঁটাই হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চাল । পালিশ করতে প্রয়োগ হচ্ছে নানাবিধ ক্ষতিকর কেমিক্যালস । ফলস্বরূপ চাল হচ্ছে সদা ,ঝকঝকে ও চিকন সুন্দর । তৈরী হচ্ছে দেখতে সুন্দর ও আকর্ষনীয় একপ্রকার সরু চাল, যার নাম মিনিকেট । আসলে এটি মোটা নিম্ন মানের চালের ভিতরের অংশ । এভাবে তৈরী হচ্ছে নাজির শাল ও পাজাম নামের চালও । অত্যধিক ছাঁটাইয়ের ফলে এই চালের খাদ্যগুণ অর্থাৎ মিনারেল, ভিটামিন, ফাইবার , প্রোটিন, এন্টিঅক্সিডেন্ট কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না । থাকে শুধু কার্বোহাইড্রেট। এই চালের ভাতের অভ্যস্তদের লাইফস্টাইল ডিসিস হবার ঝুঁকি প্রবল । ডায়াবেটিস , ক্যান্সার , রক্তচাপ , অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদির সম্ভাবনা বহুগুনে বেড়ে যায় । বার্ধক্য আসে দ্রুত । তবে রোগের এই সম্ভাবনা স্বত্তেও নেই কোনো সচেতনতা । এই চাল দ্রুত রান্না হয় ও ভাত দেখতে হয় সাদা ধপধপে এবং সুন্দর । তাই এই চালের জনপ্রিয়তা বাড়ছে প্রতিদিন । জনস্বাস্থ্য ঠিক রাখতে মিনিকেট চাল পরিহার করতে নাগরিকদের আহ্বান করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি চালকলগুলিতে সরকারী নজরদারি বাড়াতে সুপারিশ করছেন তাঁরা।
□ মিনিকেট চালের আসল সত্য
****************************
****************************
১৯৯৫ সালের দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতের কৃষকদের মাঝে দেশের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন জাতের চিকন শতাব্দী ধান বীজ বিতরণ করে। মাঠপর্যায়ে চাষের জন্য কৃষকদেরকে এ ধান বীজের সঙ্গে আরো কিছু কৃষি উপকরণসহ একটি মিনিপ্যাকেট প্রদান করে ভারতীয় সরকার।যে প্যাকেটটাকে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বলতো ‘মিনি কিটস’ সেখান থেকেই সেই ধানের নাম হয়ে যায় ‘মিনিকেট’। আবার অনেকে বলেন ‘মিনিপ্যাকেটে করে দেয়ায় ভারতীয় কৃষকদের কাছে এ ধান শেষমেষ মিনিকিট বলে পরিচিতি লাভ করে। কৃষকরা মিনিপ্যাকেট শব্দটির মধ্য থেকে ‘প্যা’ অক্ষরটি বাদ দিয়ে মিনিকেট বলে পরিচয় দিতে শুরু করে’। তবে ঘটনা যাই হোক মিনিকেট নামে কোনো চাল বাজারে নেই এটাই সত্য কথা।
□ মিনিকেট চাল প্রস্তুত প্রণালী
***************************
***************************
মোটা চালকে পলিশ করে মিনিকেট চাল বলে বিক্রি করা হচ্ছে। অটোরাইস মিলে রয়েছে একটি অতি বেগুনি রশ্মির ডিজিটাল সেন্সর প্ল্যান্ট। এর মধ্য দিয়ে যেকোনো ধান বা চাল পার হলে সেটি থেকে প্রথমে কালো, ময়লা ও পাথর সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর মোটা ধান চলে যায় অটোমিলের বয়লার ইউনিটে। সেখানে পর্যায়ক্রমে ৫টি ধাপ পার হবার পর লাল কিংবা মোটা চাল সাদা রংয়ের আকার ধারণ করে। এরপর আসে পলিশিং মেশিনে। অতি সূক্ষ্ম এই মেশিনে মোটা চালের চারপাশ কেটে চালটিকে চিকন আকার দেওয়া হয়। এরপর সেটি আবারও পলিশ ও স্টিম দিয়ে চকচকে শক্ত আকার দেওয়া হয়। শেষে সেটি হয়ে যায় সেই কথিত এবং আকর্ষণীয় মিনিকেট চাল।
(সংগৃহীত)
মিনিকেট নামের ধান আছে এবং সেটা আমরা চাষ করু। obviously সেই ধান থেকে চালও হয়। কিন্তু সেই ধান টির অফিসিয়াল নাম IET 4786 (ডাকনাম- শতাব্দী). IET stands for initial evaluation trial. বাস্তব হল কোনো একসময় IET-4786 নামের ধানটি মিনিকেট হিসাবে কৃষকদের বিলি করা হয়েছিল। সেই ধানটা জনপ্রিয় হয়ে যায়। কৃষকরা ঐ নাম মনে রাখতে পারেন নাই। মিনিকেট পেয়েছেন, তাই ধানের নাম মিনিকেট হয়ে যায়। ( Jaydeep Mukhopadhyay এর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য।)
Towfique Ahmed Chowdhury.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন