ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

আমাদের সন্তানরা কি এ+ নির্যাতনের শিকার?

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ   এবারের পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের সবাইকে অভিনন্দন। আমার মেয়ে নাবিলাও জেএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে। পিএসসি’তে এ+ এবং ক্লাসে সবসময় ফাস্ট থাকায় সবাই আশা করেছিল জেএসসিতে সে গোল্ডেন এ+ পাবে। তবে আমি তা মনে করিনি। কারণ পরীক্ষা চলাকালীন সে মারাত্মক অসুস্থ ছিল। সে পাশ করতে পারবে কিনা তা নিয়েই আমি সন্দিহান ছিলাম। তাছাড়া এ+ পেতেই হবে এমন তো কোন কথা নেই। ভাল রেজাল্ট করলে ভাল, তবে খারাপ করলে তিরস্কার করা উচিৎ নয়। তাদের জীবনের পরবর্তী পরীক্ষাগুলোই বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
নাবিলা পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৯০ পাওয়ায় বাসায় মিষ্টি নিয়ে এলাম। পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ক’জন সদস্য মিষ্টি দেখে রেগে গেলেন; বললেন “মিষ্টি কেন? ও কি এ+ পেয়েছে? লজ্জায় কারো সাথে তো কথাই বলতে পারছি না… ইত্যাদি… ইত্যাদি”। আমি বল্লাম, "লজ্জা কিসের? তোমরা কি ভুলে গিয়েছ ওর অসুস্থতার কথা। ওর জিপিএ ৪.৯ আমার কাছে গোল্ডেন এ+ এর চেয়েও বেশী…।“ কথাগুলো বলে মেয়েকে নিজ হাতে মিষ্টি খাওয়ালাম এবং তার কপালে চুমু খেলাম। মেয়ের চোখের কোণে পানি দেখে আমিও চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমার মতো অনেক বাবা মা-ই হয়তো মাঝে মাঝে কাঁদেন। সন্তানদের মানুষ করার যুদ্ধে অনেকেই হয়তো আহত বা পরাস্থ।
বাবা-মা হিসেবে আমাদের ছেলে-মেয়েরা ভাল কিছু করলে আমরা খুব খুশী হই। তা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তাই বলে সব সময় ভালই করতে হবে এমন আশা করা কি সমীচীন? শতকরা প্রায় দশভাগ সন্তান যারা এবারের জেএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছে তাদের বাবা-মাও তো তাদের সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আমাদের জানা দরকার, আমাদের সন্তানদের ভাল ফলাফল শুধু আমাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করেনা। তা নির্ভর করে তাদের লেখাপড়া ছাড়াও তাদের প্রতি সামগ্রিক যত্নশীলতার উপর, তাদের মন মানসিকতার উপর, তাদের সুস্থতা-অসুস্থতার উপর এবং সর্বোপরি মহামহিম প্রভুর উপর।
আমার দৃষ্টিতে, বর্তমানে সারা দেশে আমাদের কোমলমতি সন্তানদের উপর জিপিএ ৫ তথা এ+ নির্যাতন চলছে। যে করেই হউক এ+ পেতে হবে। যেন জিপিএ ৫’ই সবকিছু। অথচ ভালো জিপিএ না পাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার সংবাদ আমাদের অজানা নয়। আমি মনে করি, আমাদের উচিৎ আমাদের সন্তানরা কতোটুকুন আদব-কায়দা শিখলো, দেশপ্রেমে জাগ্রত হলো, নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলো তথা চরিত্রবান হলো তার উপর বেশী জোর দেয়া। ভালো মানুষ তৈরিই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ, কেবল ভালো জিপিএ নয়। সামগ্রিক গুণে গুণান্বিত হয়ে যারা এ+ পাবে তারাই তো সত্যিকার অর্থে সফল-তাই না?

আতিকা জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ (গোল্ডেন) পেয়েছে

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার ফটো সাংবাদিক আবদুল আজিজ ফারুকীর  কন্যা আতিকা এবারের জেএসসি পরীক্ষায় মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে জিপিএ-৫ (গোল্ডেন) পেয়েছে। সে ভবিস্যতে ডাক্তার হতে চায়।
আতিকা দৈনিক সংগ্রামের ফটো সাংবাদিক আবদুল আজিজ ফারুকীর প্রথম কন্যা। সে সকলের দোয়া প্রার্থী। (বিজ্ঞপ্তি)

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শফিউল আলম প্রধান


২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত তাকে মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের সিসিইউতে অধ্যাপক ডা: নাজিউর রহমানের তত্ত্বাবধানে আছেন। এর আগেও দু’বার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রধান।

বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

১১ মাসে নিখোঁজ ৭০ ॥ গুম ৩৪ হদিস মেলেনি হুম্মাম কাদের, ব্যারিস্টার আরমান ও আমান আজমির


রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ১১ মাসে ৭০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৪ জনকে গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নবেম্বর মাস পর্যন্ত মানবাধিকার সংস্থার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। 

কয়েকমাস আগে নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম আরমানেরও খোঁজ মেলেনি। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ হিল আমান আজমিরও হদিস মেলেনি। এই তিনজনের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ তথ্য জানা গেছে। 

বিশ্লেষকদের মতে, বছরের শুরুতে গুম কম হলেও মাঝামাঝি ও শেষের দিকে এসে এ সংখ্যা বাড়তে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে আবার অপহরণ, গুম ও গুপ্তহত্যার ঘটনা বেড়ে গেছে বলে পরিবার থেকে অভিযোগ আসছে।

মানবাধিকারকর্মী ও অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, একের পর এক মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধারের ঘটনার সুরাহা না হওয়া চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা, জবাবদিহির অভাব, মানবিক বিপর্যয়সহ অনেক খারাপ দিক সামনে চলে আসছে, যা মানবাধিকার ও অপরাধের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে। স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনা তদন্তের সুপারিশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

সর্বশেষ নাটোর পৌর যুবলীগের তিন নেতাকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা থেকে। তারা হলেন নাটোর সদর উপজেলার কানাইখালী এলাকার রেদওয়ান আহমেদ সাব্বির (৩২), আবু আব্দুল্লাহ (৩০) ও সোহেল আহমেদ (৩২)। সাব্বির নাটোর পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। বাকি দুজন পৌর যুবলীগের কর্মী। ঘটনার দুই দিন আগে তারা নিখোঁজ হন। 

গত ২৯ নবেম্বর থেকে ঢাকা ও পাবনায় আট শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের নিখোঁজ রহস্যের কিনারা হয়নি। গত ৪ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে স্বজনদের ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছে ২০টি পরিবার। দিন, মাস, বছর গড়ালেও নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মাঝেমধ্যে নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে কারো কারো লাশ উদ্ধার হয়। তবে সেই হত্যার রহস্যও অজানাই থেকে যাচ্ছে। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধেই আটকের অভিযোগ উঠছে, তবে সেই অভিযোগেরও কোনো সুরাহা হয় না।

জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোট ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়। ঘটনার পর হুম্মামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম আল ফেসানি মিডিয়া কর্মীদের জানান, ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ট্রাইব্যুনালের রায় ফাঁসের ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে গেলে গাড়ি থেকে নামার পর ডিবি পরিচয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।

হুম্মামের অপর আইনজীবী চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব রাগিব ওই দিন সাংবাদিকদের বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান। কিন্তু গাড়ি থেকে নামার পরপরই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের নিচ থেকে কয়েকজন লোক নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে হুম্মামকে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় তথ্যপ্রযুক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে আসেন হুম্মাম ও তার মা ফারহাত কাদের চৌধুরী। হুম্মাম সামনের আসনে চালকের পাশে ও তার মা পেছনের আসনে বসা ছিলেন। তারা ঢাকার দায়রা জজ আদালতের সামনে পৌঁছলে আরো মামলায় আটকের কথা বলে হুম্মামকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যায় ডিবি পরিচয়ধারী পাঁচ থেকে ছয়জন। এরপর থেকেই হুম্মাম নিখোঁজ। অবশ্য ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে হুম্মামকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে গত ৯ আগস্ট রাতে জামায়াতের সাবেক নেতা শহীদ মীর কাসেম আলীর ছোট ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম আরমানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সাদা পোশাকধারীরা মিরপুরের ডিওএইচএসের বাসা থেকে তাকে নিয়ে যায় বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ওই রাত সোয়া ৯টার দিকে ৬-৭ জনের সাদা পোশাকের একদল লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ব্যারিস্টার আরমানের মিরপুরের ডিওএইচএসের বাসায় যায়। এ সময় আরমান দরজা খুললে তাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় ওই অজ্ঞাত লোকজন। পরিবারের সদস্যরা কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে কি না জানতে চাইলে তারা কোনো জবাব দেয়নি। এরপর থেকেই আরমান নিখোঁজ। চার মাস পার হলেও তার কোনো হদিস দিতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এখন পর্যন্ত পরিবার জানতে পারেনি আরমান কোথায়, কী অবস্থায় আছেন। আরমান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন ডিফেন্স ল’ইয়ার। 

এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লা- হিল আমান আযমীকে বাসা থেকে তুলে নেয়ার অভিযোগ করেছে পরিবারের সদস্যরা।

২২ আগস্ট রাত পৌনে ১২টার দিকে মগবাজার কাজী অফিস লেনের বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে গেছে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাতে আযমীকে তার ১১৯/২ মগবাজারের বাসা থেকে আটক করা হয়। তবে কি কারণে তাকে আটক করা হয়েছে তা নিশ্চিত করেনি পুলিশ।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, রাত ১১টার কিছু আগে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা বড় মগবাজার কাজী অফিস গলিতে গোলাম আযমের বাড়ি ঘিরে ফেলে। এসময় ওই গলিতে সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। একপর্যায়ে রাত সোয়া ১১টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে কিছু লোক বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে আমান আজমিকে দ্রুত বাসার ভেতর থেকে বের করে এনে গাড়িতে তোলা হয়। এর পর তিনটি গাড়ি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ ঘটনার পর রমনা থানা পুলিশ জানায়, এ ধরনের একটি খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই আমান আজমিকে নিয়ে যায় বলে শুনেছি। তিনি জানান, ‘কারা তাকে নিয়ে গেছে তা আমরা নিশ্চিত হতে পারেনি।

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেছে তা সম্পূর্ণ অন্যায়, অযৌক্তিক ও গণবিরোধী - ডাঃ শফিকুর রহমান


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ   আগামী ১লা জানুয়ারী থেকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে প্রায় দ্বিগুণ করার সরকারী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২৭ ডিসেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “আগামী ১লা জানুয়ারী থেকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেছেন তা সম্পূর্ণ অন্যায়, অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। 

বর্তমান সরকার জনগণের নির্বাচিত নয় বলেই গত ৯ মাসের মধ্যে গ্যাসের মূল্য দ্বিতীয়বার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমান সরকার জনগণের নির্বাচিত হলে এ ধরণের গণবিরোধী অন্যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারত না। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে যে, আবাসিক দুই চুলার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা থেকে এক হাজার এবং সিএনজি গ্যাসের মূল্য প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রায় ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। যা বর্তমান মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ। একইভাবে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশ এনার্জী রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) প্রস্তাব অনুযায়ী গ্যাসের মূল্য গৃহস্থালীতে ১৪০ শতাংশ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৩০ শতাংশ, বিদ্যুতে ৬৩ শতাংশ, সারে ৭২ শতাংশ, শিল্পে ৬২ শতাংশ, বাণিজ্যিকে ৭২ শতাংশ ও সিএনজিতে ৮৩ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি পাবে। 

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে দেশের অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এতে দ্রব্যমূল্য বাড়বে, শিল্প ও কৃষি উৎপাদন খরচ, যাতায়াত ভাড়া ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ সকল পণ্যের মূল্য বাড়বে ও মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে। ফলে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পাবে। বর্তমানে মানুষ দ্রব্যমূল্যের চাপে নিদারুণ কষ্টে জীবন-যাপন করছে। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করে প্রকারান্তরে জনদুর্ভোগই বাড়ানো হয়েছে। গণদাবী এবং বাস্তব অবস্থার দাবি হচ্ছে গ্যাসের মুল্যবৃদ্ধি না করে দ্রব্যমূল্য যাতে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 

কাজেই দেশের জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এ অন্যায়, অযৌক্তিক ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

দায়িত্ববোধ থেকেই ছাত্রশিবির শীতার্তদের পাশে থাকবে -শিবির সেক্রেটারি জেনারেল

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, দুস্থ, গরীব, অসহায় শীতার্ত আমাদের বাইরের কেউ নয় বরং সমাজেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের প্রতি দায়িত্ব অবহেলার সুযোগ নেই। মানবিক ও ধর্মীয় উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো সবার কর্তব্য। আর সেই দায়িত্ববোধ থেকেই ছাত্রশিবির শীতার্তদের পাশে থাকবে।
তিনি পূর্ব ঘোষিত সপ্তাহব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিম আয়োজিত দরিদ্র ও অসহায় ছাত্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি ডা. মোজাহিদুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শিবির সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বাংলাদেশ একটি মুসলীম প্রধান বিপুল সম্পদের অধিকারী একটি দেশ। এদেশে ধনী-দরিদ্রের বিভেদের দেয়াল থাকার কথা ছিল না। শুধু মাত্র ইনসাফের ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালিত না হওয়ার কারণে দেশের সম্পদ আজ সরকার ও গুটিকয়েক লোক লুটেপুটে খাচ্ছে। আর জনসংখ্যার বিশাল একটি অংশ বরাবরই দরিদ্র থেকে যাচ্ছে। শীতকাল এসব গরীব অসহায় মানুষের জন্য দুর্ভোগ বয়ে নিয়ে আসে। অসহায়দের সরকার যেমন অবহেলা করে তেমনি বেশির ভাগ বিত্তশালীরাও এড়িয়ে চলে। কিন্তু দায়িত্ববোধ থেকেই ছাত্রশিবির শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যার যার অবস্থান থেকে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানবতা বোধসম্পন্ন মানুষের কর্তব্য। ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সাধ্য অনুযায়ী অসহায় দরিদ্রদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। শীতার্ত মানুষের শীত লাঘব ও তাদের সহযোগিতার জন্য উৎসাহিত করতে সপ্তাহব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছে। যদিও তা পর্যাপ্ত নয় তবুও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে ছাত্রশিবির দুস্থদের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছে এবং এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা আশা করি, ছাত্রশিবির নেতাকর্মীসহ সমাজের প্রতিটি শ্রেণী-পেশার মানুষ দুস্থ মানুষের শীতের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে আসবে।

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

স্বাধীনতার স্বপ্নকে ক্ষত বিক্ষত করা হচ্ছে: শিবির

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ   বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, দেশে অব্যাহত অপশাসনে মুক্তযোদ্ধারা আজ বেদনাহত। প্রতিদিনই নানা ভাবে স্বাধীনতার স্বপ্নকে ক্ষত বিক্ষত করা হচ্ছে।
আজ ২৪ ডিসেম্বর ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিম শাখা আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিবির সভাপতি বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন, রক্ত সাগর পাড়ি দিয়েছিলেন সেই লক্ষ্য আজো অর্জিত হয়নি। বরং দিন দিন মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নকে ক্ষত-বিক্ষত করা হচ্ছে। স্বাধীন দেশে আজ বাক স্বাধীনতা, নাগরীক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। অথচ স্বাধীনতার মূল স্বপ্নই ছিল সমান অধিকারের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পক্ষের একচ্ছত্র দাবীদাররা মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাসকে নিজস্ব সম্পদে পরিণত করেছে। অন্যদিকে চতুরতার সাথে জাতির মাঝে বিভক্তির দেয়াল তৈরি করে দিয়েছে। এ ঘৃণ্য কাজটি তারা শুধু আমজনতার মাঝেই করেনি বরং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝেও সে বিভক্তির দেয়াল এঁকে দিয়েছে। যা কখনোই কারো কাম্য ছিল না। বিভেদের এ হীণ রাজনীতি শুধুমাত্র দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে না ধ্বংস করছে আগামীর অযুথ সম্ভাবনাকে। পক্ষ-বিপক্ষের কালিমা লেপন করে প্রকৃত পক্ষে জাতিকে এক গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি আর ও বলেন, অপার সম্ভাবনায় ভরপুর আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। তাই এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দেশের শান্তিকামী মানুষ কোন বিভক্তি নয় বরং ঐক্য দেখতে চায়। দেশের প্রতি মায়া দেখানো বুলি শুধু কথায় সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবে পরিণত করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সকল স্বপ্ন আজকের তরুণ সমাজকে ঘিরে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজকের তরুণ সমাজকেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে।
শাখা সভাপতি ডা. মোজাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মানবাধিকার সম্পাদক মাহফুজুল হক।

দৈনিক যুগান্তরে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে প্রকাশিত রিপোর্টটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর, মনগড়া ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত


দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আজ ২৫ ডিসেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “দৈনিক যুগান্তরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে প্রকাশিত রিপোর্টটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভাবমর্যদা ক্ষুণ্ণ করার হীন উদ্দেশ্যেই এ ভিত্তিহীন রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে।
যুগান্তরের রিপোর্টটি সম্পর্কে আমার স্পষ্ট বক্তব্য হলো, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই সংগঠনের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কাজেই জামায়াতের কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত ভয়াবহ অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে উঠার প্রশ্নই আসে না। আমীরে জামায়াত জনাব মকবুল আহমাদ সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যগণের মতামতের ভিত্তিতে সংগঠনের নায়েবে আমীর, সেক্রেটারী জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারী জেনারেলসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল পদে নিয়োগ প্রদান করেছেন। সুতরাং এ নিয়ে কলহ সৃষ্টি কিংবা জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে আমীরে জামায়াতের তোপের মুখে পড়ার প্রশ্ন অবান্তর।
গত ১০ ডিসেম্বর যেখানে কমিটি গঠন নিয়ে জামায়াতের নেতাদের কোন বৈঠকই হয়নি সেখানে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা ছাড়া দৈনিক যুগান্তরে এ ধরনের আজগুবি রিপোর্ট প্রকাশের আর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে? কর্তৃত্ববাদী সরকারের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য নিকৃষ্ট বিভ্রান্তি সৃষ্টির এটি একটি অপপ্রয়াস মাত্র। এ ধরনের কোন অপচর্চার সুযোগ জামায়াতে ইসলামীতে অতীতে ছিল না, এখনও নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকার কোন প্রশ্নই আসে না। অতএব, দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত রিপোর্টটি সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের অসৎ উদ্দেশ্য তাড়িত একটি মনগড়া রিপোর্ট ছাড়া আর কিছুই নয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যেখানে সরকারের নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিণত হয়েছে, সেখানে সরকারের সাথে আঁতাতের গন্ধ খোঁজা চরম হাস্যকর ও নোংরা অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছু নয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা রিপোর্ট প্রচার করা থেকে বিরত থাকার জন্য দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমি আশা করছি যে, তারা অত্র প্রতিবাদটি যথাস্থানে ছেপে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন করবেন।”

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সংলাপে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ   বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সংলাপে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জনাব মকবুল আহমাদ আজ ১৯ ডিসেম্বর একটি পত্র প্রেরণ করেন। পত্রটিতে তিনি বলেনঃ- 

“সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি নির্ধারণের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে আপনি সংলাপের যে মহান উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাকে স্বাগত জানায় এবং আন্তরিকভাবে সফলতা কামনা করে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল। স্বাধীনতার পর প্রায় প্রতিটি সংসদে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব ছিল। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ তথা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জামায়াতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থী বিজয় লাভ করেছে। অধিকন্তু এ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

জামায়াত একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে জামায়াতের নিবন্ধন মামলাটি বিচারাধীন আছে। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে সংলাপে অংশগ্রহণ করার অধিকার জামায়াতের রয়েছে।

দেশের একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় সংলাপকে অর্থবহ করে তোলার জন্য উক্ত সংলাপে জামায়াতে ইসলামীর অংশগ্রহণের সুযোগ থাকা বাঞ্ছনীয়। 

আশা করি দেশের জনগণের যথাযথ প্রতিনিধিত্বের স্বার্থে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সংলাপে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”

শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত।


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ২৩/১২/২০১৬ রোজ শুক্রবার: কেন্দ্র ঘোষিত দোয়া দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন, চট্রগ্রাম সদর অঞ্চল মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষায় দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করে। দোয়া মাহফিলে অঞ্চল সভাপতি মকবুল আহমদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মোঃ মীরহোসাইন এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।। আরো উপস্থিত ছিলেন অঞ্চল সহ-সেক্রেটারী ও ইপিজেড শাখা সভাপতি আবুল কাশেম আজাদ, অঞ্চল অফিস সম্পাদক ইউনুছ আলী লিটন, প্রকাশনা ও পাঠাগার সম্পাদক বেলাল উদ্দিন, অঞ্চলের নির্বাহী সদস্য শহীদুল ইসলামসহ অঞ্চল ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।
দোয়ার আগে নেতৃবৃন্দ সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, মিয়ানমার সরকার সে দেশের মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার অমানবিক কাজে লিপ্ত। এ মানবতা বিরোধী কর্মকান্ড-বন্ধ করার জন্য আমরা মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ ঘটনার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকার ও আন্তর্জাতিক সকল সংস্থার পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, কোন সভ্য রাষ্ট্র তার নাগরিকদের উপর এমন পরিকল্পিত গণহত্যা চালাতে পারে না। শুধুমাত্র মুসলিম পরিচয়ের কারণে রোহিঙ্গাদের উপর বার বার গণহত্যা চালানো হচ্ছে। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। নিপীড়নের শিকার হয়ে রোহিঙ্গা মুসলিমরা বছরের পর বছর মানবেতর জীবন যাপন করছে, তা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সে দেশের সরকারের পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ করে তাদের পুনর্বাসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার লক্ষ্যে নেতৃবৃন্দ জাতিসংঘ, ওআইসি এবং সকল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও শান্তিকামী বিশ্ববাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬

সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শীতার্তদের কষ্ট লাঘব করা সম্ভব- শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ   বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, শীতকাল গরীব অসহায় মানুষের জন্য সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এ দুর্ভোগ দূর করা অসম্ভব কিছু নয়। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শীতার্তদের কষ্ট লাঘব করা সম্ভব। 

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলয়ানতনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা আয়োজিত অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি জামিল মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোবারক হোসেন, অর্থ সম্পাদক রাকিব মাহমুদ। 

শিবির সভাপতি বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও ঋতু পরিক্রমায় শীত জনজীবনে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। এমন বিরূপতায় প্রকৃতি হয়ে ওঠে উষর-রূক্ষ। এতে বয়স্ক ও শিশুসহ সব মানুষের সহনমাত্রা ছাড়িয়ে দেখা দেয় সর্দি-কাশি, জ্বর, হাপানি, পেটের পীড়াসহ নানান জটিল রোগ। দৈনন্দিন কর্ম পরিবেশে ছন্দপতনের কারণে খেটে খাওয়া মানুষের কাজের সুযোগ ও সক্ষমতা কমে আসে। শীত নিবারণের সামান্য কাপড় ও দূর্যোগকালে খাবারের অভাবে কষ্ট পায় অসংখ্য মানুষ। প্রতি বছর দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ শীতে নিদারুন কষ্ট ভোগ করে। যদিও জনগণের কষ্ট লাঘবের দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু এইসব অসহায় শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারের তেমন কোন পদক্ষেপ নেই। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও অসহায় শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। একই সাথে আমরা সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে যার যার অবস্থান থেকে সাধ্য অনুযায়ী শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান করছি।

তিনি বলেন, ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সাধ্যমত অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে। সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই ছাত্রশিবির প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সপ্তাহ ব্যাপি শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি ঘোষনা করেছে। সারাদেশে একজন নেতাকর্মীও যেন এ কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ থেকে বিরত না থাকে সে দিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা আশা করি এ কর্মসূচি এক দিকে যেমন শীতার্ত মানুষের একটি বিরাট অংশের শীতের কষ্ট দূর করবে তেমনি সমাজের সামর্থবানদেরকেও এ মহান কাজে অংশ গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করবে। 

উল্লেখ্য প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সপ্তাহ ব্যাপি শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি ঘোষনা করেছে ছাত্রশিবির। ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত সারাদেশে একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হবে।

বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬

ছাত্রশিবিরের সপ্তাহ ব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি ঘোষনা

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  সারাদেশে শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘব এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করতে আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহ ব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান এবং সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, জনসংখ্যার বিশাল একটি অংশ প্রতি বছরই শীতে কষ্ট পায়। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের আগমন ঘটেছে এবং প্রতিদিনই শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে অসহায় মানুষের কষ্টের মাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীতের দুর্বিষহ কষ্ট লাগবে দেশের অসহায় ও দরীদ্রদের পাশে দাঁড়ানো সবার নৈতিক দায়িত্ব। আর সেই দায়িত্ববোধ থেকেই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সপ্তাহ ব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্রশিবির। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্রশিবির ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে দূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আসছে। এবারো তার ব্যাতিক্রম হয়নি।
নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে এ কর্মসূচিতে স্বতস্ফুর্ত অংশ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, সর্বোচ্চ দায়িত্ব অনুভুতি নিয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করতে হবে। একই সাথে সমাজের সামর্থবানদেরকে অসহায় মানুষদের পাশে দাড়াতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসলে স্বল্প সময়েই অসহায় দরীদ্র মানুষের শীতের কষ্ট লাঘব করা সম্ভব।
উল্লেখ্য শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির (২১-২৭ ডিসেম্বর,২০১৬) মধ্যে রয়েছে,
 প্রত্যেক জনশক্তি কমপক্ষে একটি করে শীতবস্ত্র বিতরণ করবে।
 অসহায় ও দরিদ্র ছাত্রদের অগ্রাধিকার প্রদান।
 বস্তি, রেলওয়ে স্টেশন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত্র এলাকার ছাত্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ।
 এতিম, পথশিশু, ছিন্নমুল ও অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ।
 শীতবস্ত্র বিতরণে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা।

সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

হাঁটুন সুস্থ থাকুন: অধ্যাপক নইম কাদের

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আপনি কি সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন চান, তাহলে আপনার জন্য প্রথম পরামর্শ- হাঁটুন, সুস্থ থাকুন। মানব দেহের সুস্থতার জন্য হাঁটার বিকল্প নেই। যারা নিয়মিত হাঁটেন, অন্যদের তুলনায় তাঁরা অনেক বেশি স্বাছন্দ্য জীবনযাপন করেন। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস হৃৎরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, আথ্র্‌ইটিস, স্মৃতিশক্তি লোপসহ নানা জটিল ও কঠিন রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
যারা নিয়মিত হাঁটায় অভ্যস্থ তাদের শরীরে রক্তচলাচল স্বাভাবিক থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে যায়, উচ্চ রক্তচাপজনিত অন্তত ২৭ ভাগ সমস্যা তাদের কমে যায়। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গবেষণায় দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার কথা বলা হয়েছে।
নিয়মিত হাঁটলে হৃৎরোগের ঝুঁকি কমে যায়। হাঁটার কারণে দেহের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা (এলডিআর) কমে যায়, শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভাল কোলেস্টেরল (এইচডিআর) এর মাত্রা বেড়ে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ট এসোসিয়েশনের গবেষণায় বলা হয়েছে- নিয়মিত হাঁটাহাটির ফলে রক্তে চিনির পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে, মোটা হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে না, শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে পারে না। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৬০ ভাগ পর্যন্ত হ্রাস পায় যদি নিয়মিত হাঁটাহাঁটি হয়। ডায়াবেটিসের ব্যাপারে তো একথা সবারই জানা যে, যেখানে শারীরিক পরিশ্রম নেই, সেখানেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানো যায়। যাদের ডায়াবেটিস আছে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত হাঁটার বিকল্প নেই। 
বর্তমানে সারা বিশ্বে মহিলাদের জন্য এক মহা আতংকের নাম স্তন ক্যান্সার। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী নিয়মিত হাঁটলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৬০ ভাগ কমে যায়। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যান্সারের সাথে ভিটামিন-ডি এর সম্পর্ক নিয়ে একটি ব্যাপক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে। ৪ হাজার ৪৪৩জন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত মহিলার উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, যাদের শরীরের পর্যাপ্ত ভিটামিন-ডি রয়েছে, অন্যদের তুলনায় তারা দ্বিগুণ বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারেন। তাই দিনের বেলায় সকালের রোদে মহিলারা নিয়মিত হেঁটে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
মানব দেহে ভিটামিন-ডি অস্থি গঠন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বিপাক নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি নানাবিধ কাজ করে থাকে। ভিটামিন-ডি আরো একটি কাজ করে থাকে- তা হলো- বিভিন্ন কোষের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সক্রিয় করা। শেষের কাজটির মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ অন্য কোষে ছড়িয়ে পড়তে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
সচরাচর বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে যায়, অতীত, বিশেষ করে নিকট অতীতের কথা ভুলে যায়। বয়স্কদের স্মৃতিশক্তি হ্রাসের উপর পরিচালিত যুক্তরাজ্যের গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদের বয়স ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি তাদের মধ্যে প্রতি ১৪ জনে ১ জনের স্মৃতিবিভ্রাট ঘটে। ৮০বা আরো বেশি বয়স যাদের, প্রতি ৬ জনে ১ জন এ সমস্যায় ভোগেন। যারা নিয়মিত হাঁটায় অভ্যস্থ, তাদের বৃদ্ধ বয়সে স্মৃতি হ্রাসের ঝুঁকি ৪০ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। 
বাত ও শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। বিশেষ করে বৃদ্ধ বয়সে এ সমস্যা তীব্র হয়। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করলে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট সুস্থ থাকে এবং বাত ও জয়েন্টের সমস্যা হ্রাস পায়।
হাঁটলে শরীরের পেশীগুলো শক্ত ও মজবুত হয়। পা থেকে শুরু করে মাথা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কোন না কোনভাবে ব্যায়াম হয় হাঁটার মাধ্যমে। এর ফলে বাত, গেঁটে বাত, বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা, কোমর ব্যথা, কাঁধ ব্যথা, ঘাড় ব্যথা ইত্যাদি কমে যায়। হাত ও পায়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়। এর ফলে পুরো শরীর সুস্থ ও সবল থাকে। বৃদ্ধ বয়সে স্বাভাবিক নড়াচড়া সহজ হয়।

কীভাবে, কোন গতিতে কতটুকু হাটবেন :

নিম্নের আলোচনা থেকে আপনি নিজেই ঠিক করে নিতে পারেন আপনি কিভাবে, কোন গতিতে কতটুকু হাটবেন? দেহের ওজন বৃদ্ধি বা স্থূলতার অন্যতম কারণ দেহে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হওয়া। প্রতিদিন মানুষ খাদ্য হিসেবে যা গ্রহণ করে, তা থেকে শরীরে জমা হওয়া অতিরিক্ত ক্যালরি ক্ষয় করে ফেলতে হবে। বিভিন্নভাবে ক্যালরি ক্ষয় করা যায়। তবে এর সহজ পথ হল হাঁটা। ৬০ কেজি ওজনের একজন মানুষ যদি ঘণ্টায় দু’মাইল গতিতে ৩০ মিনিট হাঁটে, তার ক্ষয় হবে ৭৫ ক্যালরি। দু’ঘণ্টায় তিন মাইল গতিতে ৩০মিনিট হাঁটলে ক্ষয় হবে ৯৯ ক্যালরি। ঘণ্টায় চার মাইল গতিতে ৩০মিনিট হাঁটলে ক্ষয় হবে ১৫০ ক্যালরি। আপনার শরীরে প্রতিদিন অতিরিক্ত কী পরিমাণ ক্যালরি জমা হচ্ছে, আপনার বয়স, উচ্চতা ও ওজন চার্ট মিলিয়ে এখন আপনি নিজেই ঠিক করে নিতে পারেন, আপনাকে কোন গতিতে, কতক্ষণ, কত দূর হাঁটতে হবে। একেবারে খালি পেটে হাঁটবেন না। হাঁটা শুরুর আগে ২/১ গ্লাস পানি পান করে নেয়া ভাল। আবার পেট ভরে খেয়ে দ্রুতগতিতে হাঁটা ক্ষতিকর।

কোন সময়ে হাটবেন :

যে কোন সময়ে হাঁটা যায়। যখনই আপনি হাঁটেন,হাঁটা আপনার জন্য উপকারি। তবে এক্ষেত্রে গবেষকরা একটি পরামর্শ দিয়েছেন। মানুষের শরীরে ভিটামিন-ডি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দৈনন্দিন পানাহার থেকে ভিটামিন-ডি খুব বেশি পাওয়া যায় না। ভিটামিন-ডি এর প্রধান উৎস সূর্যের আলো। সকালের রোদে প্রচুর ভিটামিন-ডি থাকে। হাটার জন্য এ সময়টা বেছে নেয়া যেতে পারে। এতে দুটো কাজ এক সাথেই হয়ে যায়। এছাড়া সকালের মুক্ত আবহাওয়া শরীরের জন্য আরামদায়ক ও উপকারি।

নইম কাদের
চেম্বার : হোমিও হেলথ হোম
বহদ্দারহাট, চট্টগ্রাম।
মোবাইল : ০১৮১৯ ৩৯৮ ৩৩৮, ০১৯৯১ ৯৪ ৮৫ ৯১

শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

সিলেট মহানগর জামায়াতের বিজয় দিবসের আলোচনা সভা: শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে দেশপ্রেমিক জনতাকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে --------এডভোকেট জুবায়ের

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় জাতির জন্য গৌরবের। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন বাজি রাখে বিশ্বের মানচিত্রে লাল-সবুজের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে ঠাই করে দিয়েছেন। বিজয়ের মূল লক্ষ্য ছিল শোষন মুক্ত ও ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। কিন্তু শাসনগোষ্ঠীর একগুয়েমী ও বাকশালী শাসনের গ্যাড়াকলে পড়ে স্বাধীনতার সুফল থেকে জাতি আজ বঞ্চিত। স্বাধীন বাংলাদেশে আজ শাসনের নামে চলছে শোষন, বিচারের নামে চলছে প্রহসন। রাষ্ট্র শক্তি ব্যবহার করে মানুষের মৌলিক ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। মিছিল, মিটিং সকল রাজনৈতিক দলের মৌলিক অধিকার হলেও তা আজ বাকশালের থাবায় বন্ধ। 

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিত্রতার্থ করতে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের উপর চলছে নির্যাতনের ষ্টিমরোলার। মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে একটি শক্তি জাতিকে ঐক্যের বিপরীতে বিভক্তির সুগভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ঐক্যের, বিভক্তির নয়। লাখো শহীদের রক্তস্নাত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা, বিজয়ের সুফল জাতির ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হলে দেশপ্রেমিক জনতাকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। 

তিনি গতকাল শুক্রবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা সোহেল আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা মুফতি আলী হায়দার, ক্বারী আলাউদ্দিন, শফিকুল আলম মফিক ও মাহমুদুর রহমান দেলোয়ার প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, যে মহান লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল কোন অপশক্তির কারণে তা ভুলুণ্ঠিত হতে পারে না। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হুমকি মুখে ঠেলে দিয়েছে। এ থেকে জাতিকে মুক্তি পেতে হলে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।

রাজধানীতে শীতার্ত মানুষের মাঝে জামায়াতের কম্বল বিতরণ: ক্ষমতাকেন্দ্রীক অপরাজনীতির কারণেই দেশের মানুষ রাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে অনেকটাই বঞ্চিত-----------নূরুল ইসলাম বুলবুল


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী নিছক কোন রাজনৈতিক সংগঠন নয় বরং গণমানুষের জন্য কল্যাণকামী আদর্শবাদী সংগঠন। তাই জামায়াতে ইসলামী যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ক্রান্তিকালে দুর্গত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। গণমানুষের জন্য জামায়াতের এই কল্যাণকামীতা অতীতের মত আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ ও দেশকে কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনকে জোরদার করতে সকলের প্রতি আহবান জানান। 

আজ শনিবার রাজধানীর কদমতলীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর কদমতলী পূর্ব থানা আয়োজিত দরিদ্র ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। থানা আমীর মাওলানা আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহাগনরীর কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির ও ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দীন, যাত্রাবাড়ী জোনের সহকারি পরিচালক আ জ ম রুহুল কুদ্দুস প্রমূখ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, নাগরিকের সকল সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু ক্ষমতাকেন্দ্রীক অপরাজনীতির কারণেই দেশের মানুষ রাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে অনেকটাই বঞ্চিত। ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকায় গণদুর্ভোগ ও সমাজের সকল স্তরে দূর্ভোগ অশান্তির অন্যতম কারণ। তাই গণমানুষের সকল সমস্যার সমাধান ও শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে দেশকে ইসলাম ভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করার কোন বিকল্প নেই। তিনি শোষণ, বঞ্চনা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। 

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও প্রতিবন্ধকতার কারণে আমরা বৃহত পরিসরে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারছি না। তাই শীতবস্ত্র বিতরণের মত কাজ ও সীমিত পরিসরে চার দেয়ালের মধ্যেই আমাদেরকে করতে হচ্ছে। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। রাষ্ট্রের ব্যর্থতা ব্যক্তি ও সাংগঠনিক পর্যায়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। তবুও জামায়াতে ইসলামী সীমিত সামর্থ নিয়ে শীতার্থ ও দুর্গত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সাধ অনেক হলেও সামর্থ খুবই সীমিত। তবুও আমরা সীমিত সামর্থ নিয়েই সুখে-দুঃখে গণমানুষের সাথে ভাগীদার হওয়ার চেষ্টা করছি। যারা গণমানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করতেন সরকার প্রতিহিংসাবসত একের পর এক হত্যা করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে। কথিত বিচারের নামে প্রহসন কওে জামায়াতের শীর্ষনেতাদের হত্যা করা হচ্ছে। তিনি উপস্থিত সকলের কাছে আমীরে জামায়াত সহ শহীদ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের জন্য দোয়া কামনা করেন।

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

মহান বিজয়ের সাড়ে ৪ দশক অতিক্রান্ত হলেও দেশে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হয়নি- নুরুল ইসলাম বুলবুল

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ১৬ ডিসেম্বর’১৬  জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছে।
কিন্তু‘ মহান বিজয়ের সাড়ে ৪ দশক অতিক্রান্ত হলেও দেশে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যের যাতাকলে পিষ্ট দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী। গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা সাংবিধান স্বীকৃত হলেও সরকার তা হরণের মাধ্যমে স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করে দেশে জুলুমতন্ত্র ও ফ্যাসীবাদী শাসন কায়েম করেছে। তিনি শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন, শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান ও শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দোয়া করেন।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহাগনরীর কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির ও ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দীন। উপস্থিত ছিলেন যাত্রাবাড়ী জোনের সহকারি পরিচালক আ জ ম রুহুল কুদ্দুস, ঢাকা মহনগরীর মজলিশে শুরা সদস্য ডা. খন্দকার আবু ফতেহ ও মাওলানা আমিরুল ইসলাম, জামায়াত নেতা মনির হোসাইন, তাজুল ইসলাম, আতিকুর রহমান চৌধুরী, কামাল উদ্দীন ও গাজী আবুল কাসেম প্রমূখ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ক্ষমতাসীনরা দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধবংস করেছে। সরকার অঘোষিতভাবে দেশে বাকশালী শাসন কায়েম করেছে। দেশে মত প্রকাশের কোন স্বাধীনতা নেই। বিরোধী মতকে দমনের সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকার ইতোমধ্যেই বেশকিছু গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। এ সরকারের আমলেই পিলখানা হত্যাকান্ডের মাধ্যমে সীমান্তকে অরিক্ষিত করে দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে সরকারি দলের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য হয়নি।
তিনি বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতেই দেশে বিরাজনীতিকরণ শুরু করেছে। দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা যখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি সেখানে পরিকল্পিতভাবে বিভেদ সৃষ্টি করে দেশের রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করে রাখা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগে মামলা দিয়ে জুলুম-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে।
দুর্নীতি, লুটপাট, চাদাঁবাজি ও দলীয়করণের কারণে সরকার সকল ক্ষেত্রে চরমভাবে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। মানুষের জান মাল ইজ্জত-আব্রু কোন নিরাপত্তা নেই। গুম, খুন, ধর্ষণ, গুপ্তহত্যা, ক্রস ফায়ার ও অপহরণসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এমনকি মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুরও কোন গ্যারান্টি নেই। ফ্যাসিবাদী-বাকশালীরা ক্ষমতায় থাকলে জনগনের জানমালের আরো অনিরাপদ হয়ে উঠবে। এভাবে কোন ভাবেই স্বাধীনতা ও মহান বিজয়ের সুফল অর্জন করা সম্ভব নয় । তাই তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পূর্ণদ্ধারের করে সরকারে পতন ঘন্টাকে তারান্বিত করতে আহবান জানান।

আব্দুস সবুর ফকির বলেন, বিজয়ের চার দশক পরেও আমরা স্বাধীনতার সুফল ঘরে তুলতে পারিনি। স্বাধীনতা প্রত্যেক মানুষের কাঙ্খিত হলেও গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে জীবন দিতে হয়-এটা খুবই দুঃখজনক। তাই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে আমাদেরকে আবারও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দীন বলেন, গণতন্ত্র, সাম্য ও আত্মনির্ভরশীলতা মহান বিজয়ের চেতনা হলেও ৪ দশক পরেও আমরা পশ্চাদপদ। তাই স্বাধীনতা ও মহান বিজয়ের সুফল পেতে হলে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে কোন বিকল্প নেই।

বড়লোক হতে চান ? মেনে চলুন এই ১০টি উপায়

সাধারণ জীবনযাপন থেকে আমরা সবাই বড়লোক হতে চাই। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেই তো আর হয় না, কিছু উপায় করতে হয়। জেনে নিন বড়লোক হওয়ার দশ উপায়–
১০) আগে ঠিক করুন কোন ধরনের বড়লোক হতে চান– আগে ঠিক করুন কোন ধরনের বড়লোক হতে চান। মানে ব্যবসার মাধ্যমে নাকি চাকরি করে। বড়লোক মানে প্রচুর টাকার মালিক নাকি বড় মনের মানুষ। সে সবগুলো আগে ঠিক করুন। ব্যবসা করে বড় কিছু করতে হলে ধাপে ধাপে ওঠার চেষ্টা করুন। লাভের টাকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিনিয়োগ করুন। একটা ব্যবসায় আটকে না থেকে ধীরে ধীরে অনেক কিছুতে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করুন। চাকরি করে বড়লোক হতে হলে আগে টিম লিড করতে শিখুন। কাজের পাশাপাশি নতুন আইডিয়া নিয়ে আসুন। অফিসের সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে বসকে নিজের কাজের ভাল দিকটা বোঝানোর চেষ্টা করুন–

৯) স্বপ্ন দেখুন দোষ নেই, কিন্তু সবার আগে সঠিক পরিকল্পনা করুন– বড়লোক হব এমন স্বপ্ন দেখাটা ভাল। হ্যাঁ, ছেঁড়া কাঁথাতে শুয়ে থেকেও লাখ টাকার স্বপ্ন দেখাও ভাল। কারণ আগে কোনও কিছু করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে আগে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। ডায়েরিতে সময় ঠিক করে পরিকল্পনা করুন। ধরুন লিখলেন এক বছরের মধ্যে এক লাখ টাকা জমাতে চান। তারপর স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ। দশ মাস পর হিসেব করে নিন পরিকল্পনা ঠিক দিকে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না।

৮) সময়কে কাজে লাগান, বিনিয়োগ করার আগে ভাবুন-দিনের ২৪ ঘণ্টাকে ভাগ করে নিন। রোজগার করতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু তার চেয়েও বেশি করতে হবে সময় পরিকল্পনা। ধরা যাক আপনি চাকরি করেন। মানে ৯-১০ ঘণ্টা আপনি কাজে ব্যস্ত, তারপরের সময়টা কাজে লাগান। ছোট কোনও ব্যবসা থেকে শুরু করুন। টিউশনিও খারাপ অপশন নয়। যে অতিরিক্ত সময়টা কাজ করছেন সেই টাকাটা বিনিয়োগ করুন। ভুলে যাবেন না বিন্দুতে বিন্দুতে সিন্ধু হয়।

৭) চোখ কান খোলা রাখুন, রোজগারের পন্থা আসতে পারে যে কোনও জায়গা থেকে– সব সময় চোখ কান খোলা রাখুন। যে কোনও আলোচনা থেকে বড় কোনও রোজগারের একটা দিশা তৈরি হতে পারে। কখনও ভাববেন না ওটা আমার কাজ নয়। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গ পর্যন্ত বলেছেন, চোখ কান খোলা না থাকলে তিনি কখনই ফেসবুক খুলতে পারতেন না। ইন্টারনেটটা খুব ভাল করে ঘেঁটে ফেলনু। গোটা দুনিয়াটা লুকিয়ে আছে নেট দুনিয়ায়। সেখান থেকে রোজগারের পন্থা বের করুন। মাথা খাঁটান।

৬) পড়াশোনা, কোর্স করে নিজের যোগ্যতা বাড়ান, এতে পদোন্নতি হবে সবদিকে– পড়াশোনা চালিয়া যান। আপনার যা যোগ্যতা সেটা সবসময় বাড়িয়ে চলুন। বিএ পাশ হলে এমএ করুন। মাস্টার ডিগ্রি থাকলে পিএইচি করুন। যুগপোযোগি কোর্স করুন। এতে একদিকে আপনার সিভি ভারী হবে, আপনার যোগ্যতা বাড়বে। তার চেয়েও বড় কথা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। রোজগারের আরও অনেক পথ বাড়বে। বিভিন্ন কোম্পানিতে লোভনীয় চাকরির প্রস্তাব আসবে।

৫) শুধু পছন্দসই চাকরি নয়, চাকরির জায়গাটাকেও গুরুত্ব দিন–শুধু পছন্দসই চাকরিতে পেয়েছেন বলেই আত্মহারা হবেন না। চাকরির জায়গাটাও গুরুত্ব দিন। ধরুন আপনি চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাহলে চেষ্টা করুন এই কাজের সেরা জায়গায় কাজ করতে। এটা ঠিক যোগ্যতা থাকলে যে কোনও জায়গা থেকে উজ্জ্বল হওয়া যায়। তবে এটাও ঠিক অনেক সময় পেশাদার আবহ আপনার কাছ থেকে সেরাটা বের করে নেয়। তাই একেবারে সেরা জায়গায় কাজ করলে আপনার সেরাটা দেওয়া যায়। তাই সেরাটা পাওয়ায় যায়।

৪) একই চাকরিতে বছরের পর বছর আটকে না থেকে ভাল সুযোগ পেলে নতুন জায়গায় যান– বছরের পর বছর একই কোম্পানিতে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু এই কথা ভেবে ‘যাক চলে যাচ্ছে, রোজগার তো করছি, খেতে তো পাচ্ছি’। এভাবে না ভেবে সুযোগ তৈরি করুন, সুযোগ কাজে লাগান। কোম্পানি পরিবর্তন করলে একদিকে মাইনে, পদ বাড়ে, অন্যদিকে বাড়ে আত্মবিশ্বাস, আসে নতুন কিছু করার মানসিকতা। তাই ভাল সুযোগ পেলে নতুন জায়গায় যান।

৩) খরচের জায়গাগুলো একটু ভাল করে খেয়াল করুন–আপনি হয়তো ভাল রোজগার করছেন। কিন্তু মাসের শেষে দেখছেন সেই ভাঁড়ে মা ভবানি অবস্থা। তাহলে এক কাজ করুন দেখুন তো আপনার খরচগুলো ঠিক কোথায় কোথছায় হচ্ছে। আচ্ছা, আপনার লাইফস্টাইলটা কী একটু বড়লোকি হয়ে যাচ্ছে না। হয়তো এর চেয়ে একটু কম খরচ হলেও আপনার চলে যায়। এসবই আপনি বুঝতে পারবেন যদি খরচের জায়গাগুলো একটু লিখে রাখেন। দেখবেন পরে চোখ বোলালে বুঝবেন কোন জায়গাগুলো একটু চেক করতে হবে।

২) ব্যতিক্রমি কিছু ব্যবসা-বিনিয়োগের কথা ভাবুন– দুনিয়ার বেশিরভাগ বড়লোক মানুষই ব্যতিক্রমী কিছু ভাবনার ওপর ভর করে ব্যবসা করেই নিজেদের ওপরে নিয়ে গিয়েছেন। আচ্ছা একবার ভাবুন scotch brite-এর কথা। আগে তো আমারা এমনি ন্যাকড়া দিয়েই বাসনপত্র মাজতাম। কিন্তু কেউ একজন ভেবেছিলেন এমন একটা কিছু আনতে হবে যা দিয়ে ন্যাকড়াকে বদলে অ্য অভ্যাস করানো যায়। কিংবা ধরুন আজকালকার অনলাইন শপিং। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মালিকরাও ব্যতিক্রমি ভেবেছিলেন। আপনিও ভাবুন, পড়ুন, দেখুন। নতুন ব্যবসার ভাবনা লুকিয়ে আছে আমাদের চোখের সামনে, শুধু আমরা সেটা দেখতে পারছি না। এই ভাবনা, আর তারপর সেটাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ওপরেই আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যত নির্ভর করছে।

১) টাকার পিছনে ছুটবেন না, টাকাকে নিজের পিছনে ছোটান– বড়লোক হতে গেলে টাকার পিছনে ছুটলেই চলে না। দেখবেন ঠিক পরিকল্পনা করে চলে টাকাই আপনার পিছনে ছুটবে। আচ্ছা নিন একটা ঘটনমা বলি। বিল গেটসের। বিল গেটস একদিন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন লেকচার দিতে। অনেক কথা ছাত্রদের সঙ্গে শেয়ার করার পর যখন বিলের বক্তৃতা শেষ হল, তখন হঠাত্‍ই তাঁর পকেট থেকে ১০ ডলার পরে গেল। বিল কিন্তু সে টাকাটা কুড়োলেন না। সবাই তখন অবাক হয়েছিলেন। বিল কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ওই টাকা কুড়োতে যত সময় খরচ হল, ওই সময় ব্য করে তিনি তার চেয়ে বেশি টাকা রোজগার করতে পারেন। নিজেকে এমনভাবেই তৈরি করুন। শুধু টাকার পিছনে ছুটবেন না। সময়কে, কাজকে উপভোগ করে কাজ করুন।
সৌজন্যে: এডভাইস বিডি

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর আয়োজন করে ইসলামী ছাত্রশিবির

 রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালী করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর
বর্ণাঢ্য র‌্যালীর আয়োজন করে ছাত্রশিবির চাপাই নবাবগঞ্জ শহর

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ৪৫তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে বর্ণাঢ্য র‌্যালী করেছে বাংলাদেশ  ইসলামী ছাত্রশিবির।

 আজ ১৬ ডিসম্বর ে২০১৬ ইং তারিখ শুক্রবার বাংলাদেশের ৪৫তম মহান বিজয় দিবস। এই দিবসকে সামনে রেখে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করে। 
রাজধানী ঢাকায় ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহনগরী উত্তর, ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহনগরী দক্ষিণ,  ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহনগরী পূর্ব ও পষ্চিম, চট্টগ্রামে ইসলামী ছাত্রশিবির  চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর,  ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগরী দক্ষিণ, ইসলামী ছাত্রশিবির গাজীপুর, চাপাইনবাবগঞ্জ শহর শাখা  ৪৫তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে বর্ণাঢ্য র‌্যালী করেছে। এ ছাড়া খুলনা মহানগরী, সিলেট, পাবনা, রাজ৭শাহীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালী  অনুষ্ঠিত হয়।
র‌্যালীসমূহে সবুজ টি শার্ট পড়ে ব্যাকসংখ্যক তরুণদের সমাবেশ ঘটেছে।
উৎসবের আমেজে অনুষ্ঠিত েঐ র‌্যালীসমুহ মানুষের মনে ব্যাপক সারা যুগিয়েছে।
চট্টগ্রামে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর আয়োজন করে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগরী দক্ষিণ

জাতির বীর সন্তানরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। এখন সেই বিজয়কে অর্থবহ করার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মের। দেশপ্রেম কথায় সীমাবদ্ধ না রেখে কাজে পরিণত করতে হবে। আর সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রয়োজন সৎ, দক্ষ, যোগ্য, ও দেশপ্রেমিক নাগরীক, যা ছাত্রশিবিররের মিশন এবং ভিশন। ছাত্রশিবির তার প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে জাতীয় ঐক্য, গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি এ জাতি অবশ্যই উন্নতির শিখরে অবস্থান করবে। আর উন্নতির পথে প্রধান নিয়ামক হবে জাতিয় ঐক্যের শক্তি।
রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর আয়োজন করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ

সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই-শিবির সভাপতি


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, অনৈক্য ও বিভক্ত জাতির জন্য অভিশাপ। যা আমাদের বার বার পিছিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু কাঙ্খিত বাংলাদেশ গড়তে না পারলে বিজয়ের পূর্ণতা আসবে না। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমেই সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে হবে।

তিনি আজ গাজীপুরের এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির গাজীপুর মহানগরী কতৃক আয়োজিত বার্ষিক সদস্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি হাসনাইন আহাম্মেদের পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোবারক হোসেন, মানবাধিকার সম্পাদক শাহ মোঃ মাহফুজুল হক ও আন্তর্জাতিক বিষক সম্পাদক সালাউদ্দীন আয়ূবী প্রমুখ। 

শিবির সভাপতি বলেন, গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধ হয়েছিল সকল শ্রেণী পেশার মানুষের জাতিয় ঐক্যর মাধ্যমে। এই দেশপ্রেম ও ঐক্যের শক্তিই সেদিন অল্প সময়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। কিন্তু দু:খজনক ভাবে যে লক্ষ্যে লাখো শহীদ জীবন বিলিয়ে দিয়েছে তা আজও পূর্ণাঙ্গ ভাবে অর্জিত হয়নি। বরং ৪৫ বছরে বহুবার গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এখনো তা অব্যাহত আছে। ফলে জাতি এখনো লক্ষ্যে পৌছাতে পারেনি। বিভেদের রাজনীতি জাতির এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রধান বাধা। বিভেদের রাজনীতি ও অবস্থান এক দিকে যেমন দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে তেমনি হাজারো সম্ভাবনাকে ধ্বংস করছে। স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষের ধোয়া তুলে প্রকৃত পক্ষে দেশকে এক গভীর অনিশ্চিয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু দেশের শান্তিকামী মানুষ বিভক্তি নয় ঐক্য দেখতে চায়।

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, জাতির বীর সন্তানরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। এখন সেই বিজয়কে অর্থবহ করার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মের। দেশপ্রেম কথায় সীমাবদ্ধ না রেখে কাজে পরিণত করতে হবে। আর সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রয়োজন সৎ, দক্ষ, যোগ্য, ও দেশপ্রেমিক নাগরীক, যা ছাত্রশিবিররের মিশন এবং ভিশন। ছাত্রশিবির তার প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে জাতীয় ঐক্য, গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি এ জাতি অবশ্যই উন্নতির শিখরে অবস্থান করবে। আর উন্নতির পথে প্রধান নিয়ামক হবে জাতিয় ঐক্যের শক্তি।

হালিশহর থানা জামায়াতের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস ২০১৬ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্রগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানা জামায়াতের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস ২০১৬ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশ শুরা সদস্য ও সাতকানিয়া লোহাগাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজলুম জননেতা আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। আলোচনা সভাই শাহজাহান চৌধুরী মহান মুক্তি যুদ্বে যারা এই দেশের স্বাধীনতার জন্য জাতির বীর শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন তাদের গভীর শ্রদ্বা ভরে স্বরন করেন এবং তাদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করেন।
অত্র আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে হালিশহর থানা জামায়াতের সেক্রেটারি ফখরে জাহান সিরাজি সহ দায়িত্বশীলবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

চট্টগ্রাম ষোলশহর থেকে অন্যায়ভাবে ২৭ মেধাবী ছাত্র গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, গভীর রাতে কোন কারণ ছাড়াই চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ২৭ জন মেধাবী ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ ছিলনা। পুলিশ এই অন্যায় গ্রেপ্তারকে আড়াল করতে 'জিহাদী বই উদ্ধার' নামক ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। কোন কারণ ছাড়াই এভাবে নিরপরাধ ছাত্রদের গ্রেপ্তার ও হয়রানীর যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। এর আগেও নিরপরাধ ছাত্রদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও হয়রানী করা হয়েছে। যা নিয়ে নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের এমন নির্বিচার গ্রেপ্তার জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে। এতে করে সারা দেশে বিভিন্ন মেস ও ব্যাচেলর বাসায় অবস্থানরত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর লেখাপড়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল ও জাতিকে বিভ্রান্ত করতে একের পর এক নিরপরাধ ছাত্রের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে সরকার।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কোন কারণ ছাড়াই সাধারণ ছাত্রদের জীবন হুমকির মুখে ফেলা নূন্যতম দায়িত্বশীলতার মধ্যে পড়েনা। আমরা অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে মেস ও বাসা-বাড়িতে সাধারণ ছাত্রদেরকে হয়রানি না করার আহবান জানাচ্ছি।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নিরপরাধ নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে এবং ভবিষ্যতে এমন দায়িত্বহীন কাজ থেকে বিরত থাকতে সরকার ও পুলিশের প্রতি আহবান জানান।

বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

১৬ই ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপন করার আহ্বান ও দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন - মকবুল আহমাদ, আমীরে জামায়াত


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  ১৬ই ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জনাব মকবুল আহমাদ ১২ ডিসেম্বর নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেনঃ-

“১৬ই ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’। আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সমগ্র জাতির অবদানের কথা আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ও শহীদদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। 

জাতি এমন এক সময় মহান বিজয় দিবস পালন করতে যাচ্ছে যখন দেশে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্বাধীনতার মূল অর্জন গণতন্ত্রকে হারিয়ে সমাজ আজ এক অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে যাত্রা শুরু করেছে। এ অবস্থায় জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। 

ব্যাপকভিত্তিক জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হেফাজতের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিলসহ নানাবিধ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৬ই ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপন করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। 

সেই সাথে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আমি দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং দেশবাসী সকলের সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করছি।” 

মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

হুদাইবিয়ার সন্ধির রাজনৈতিক গুরুত্ব - ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  মানবতার বন্ধু, সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম। পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি আলোচনার কেন্দ্রে দণ্ডায়মান। ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি, সমরনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সকল অধ্যায়ের সফল আদর্শ তিনি। গোটা বিশ্বে এখনো তাঁর সফল কর্ম সমানভাবে আন্দোলিত করছে। মানবতার মুক্তিদুত বিশ্বনবী (ﷺ) সংঘটিত বিপ্লবের প্রাণশক্তি ছিল কল্যাণ কামনা ও ভালবাসা। দয়া, মহানুভবতায় কেউই তাঁকে অতিক্রম করতে পারেনি। মুহাম্মদ (সা:)-এর নবুয়াতী জিন্দেগীর যে কয়েকটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা তার মধ্যে হুদাইবিয়ার সন্ধি অন্যতম। হুদায়বিয়ার সন্ধি সম্পর্কে ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন “মহানবীর জীবনে হুদায়বিয়ার সন্ধি অপেক্ষা কল্যাণকর কোন ঘটনাই ঘটেনি।”Ernold Twinoby বলেছেন, মুহাম্মদ (ﷺ) ইসলামের মাধ্যমে মানুষের মধ্যকার বর্ণ, বংশ এবং শ্রেণীগত পার্থক্য সম্পূর্ণরূপে খতম করে দিয়েছেন। কোন ধর্মই এর চেয়ে বড় সাফল্য লাভ করতে পারেনি যে সাফল্য মুহাম্মদ (সা.) এর ধর্মের ভাগ্যে জুটেছে।

“রাসূল (ﷺ) পরিচালিত ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাসে হুদায়বিয়ার সন্ধি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সূচিত হয়। এই ঘটনার ফলে ইসলামী আন্দোলন এক লাফে সার্বজনীনতার পর্যায়ে সম্প্রসারিত হবার সুযোগ পায়। এই ঘটনা দ্বারা রাসূল (ﷺ)-এর সর্বোচ্চ রাজনৈতিক দুরদর্শিতা ও বিচক্ষণতার প্রমাণ। নিকৃষ্টতম ও নিষ্ঠুরতম যুদ্ধরত শত্রুকে তিনি কত সহজে সমঝোতা করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং কয়েক বছরের জন্য তাদের হাত বেঁধে দিয়েছেন, হুদায়বিয়ার চুক্তি তারই জ্বলন্ত উদাহরণ। ঐতিহাসিক ড. গ্রেফটাউলি “Asib Civilization” গ্রন্থে লিখেছেন, “ইসলামের যে উম্মি নবীর ইতিবৃত্ত বহু আশাজনক। তৎকালের কোন বৃহৎ শক্তি যে জাতিকে নিজের আওতায় আনতে পারেনি, সে উচ্ছৃঙ্খল জাতিকে তিনি তাঁর আওতায় বশীভূত করেছেন।” 

রাসুল (ﷺ) এই চুক্তির মাধ্যমে সকলের মধ্যে একটি সেতু বন্ধন তৈরী করলেন। তিনি এই চুক্তির মাধ্যমে এ আদর্শের সত্যতা, মানবপ্রেম, ধৈয্য ও প্রজ্ঞার এক ঐতিহাসিক উপমা, মানব সমাজের কাছে হাজির করলেন। সুতরাং ইসলামের দাওয়াত সর্বমহলে ছড়িয়ে দিতে হুদায়বিয়ার সন্ধি এক ঐতিহাসিক মাইল ফলক। মুলত এই সন্ধির মাধ্যমে ইসলামের রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। রাজেৈনতিক গুরুত্বের দিক থেকেও এর রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব। রয়েছে অনাগত মুসলিম উম্মাহর করণীয় নির্ধারনে করনীয় নির্দেশনা। এই সফর একদিকে ধর্মীয় সফর ছিল। অপর দিকে এতে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দিকও ছিল অন্তর্ভুক্ত। এ যেন পর্যায়ক্রমে ফুলের কলি থেকে প্রস্ফুটিত হয়েছে ফুলের মত। সকল মানব পেয়েছে এর সুগন্ধি। কিন্তু এর আগ থেকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ব্যতিত কারো জ্ঞানই যেন তা উপলব্ধি করতে পারেনি। 

হুদাইবিয়া সন্ধির পটভূমি
কা’বা ছিলো ইসলামের মূল কেন্দ্র। এটি আল্লাহর নির্দেমানুক্রমে হযরত ইবরাহীম (আ) ও তাঁর পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ) নির্মাণ করেছিলেন। মুসলমানরা ইসলামের এই কেন্দ্রস্থল থেকে বেরোবার পর ছয়টি বছর অতিক্রান্ত হয়েছিলো। পরন্ত হ্জ্জ ইসলামের অন্যতম মৌল স্তম্ভ হওয়া সত্ত্বেও তারা এটি পালন করতে পারছিলো না। তাই কা’বা শরীফ জিয়ারত ও হজ্জ উদযাপন করার জন্যে মুসলমানদের মনে তীব্র বাসনা জাগলো।

রাসূল (ﷺ) একদিন স্বপ্নে দেখলেন, তিনি তাঁর সাহাবীদের সাথে পবিত্র মক্কা নগরীতে গিয়ে উমরা আদায় করেছেন। রাসূল সাতাঁর স্বপ্নের কথা দ্বিধিহীন চিত্তে সাহাবীদের বললেন এবং সফরের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক ছিলনা। বিশেষ গত বছরই ৫ম হিজরীর শাওয়াল মাসে বিখ্যাত আহযাব যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার ক্ষত ছিলো তখনো। অনেকেই মনে করলো এরা মৃত্যুর মুখে ঝাঁপ দিতে যাচ্ছে!। নবীর (ﷺ) সাথে এ বিপজ্জনক সফরে যেতে ১৪শ সাহাবী প্রস্তুত হলেন।

৬ষ্ঠ হিজরীর যুল-কা’দা মাসের প্রারম্ভে এ পবিত্র কাফেলা মদীনা থেকে যাত্রা করলো। যুল -হুলাইফাতে পৌঁছে সবাই উমরার জন্য ইহরান বাঁধলেন। এর বর্তমান নাম বি’রে আলী। মদীনার হাজীগণ এখান থেকেই হজ্জ ও উমরার ইহরাম বেঁধে থাকেন। এভাবে কাফেলা লাব্বায়কা, লাব্বায়কা, ধ্বনি তুলে বায়তুল্লাহ অভিমুখে যাত্রা করলো। 

নবী করীম (ﷺ) এ পদক্ষেপ কুরাইশদেরকে মারাত্মক অসুবিধায় ও দ্বিধান্বিত হয়ে পড়লো এ জন্য যে, যদি তারা মদীনায় এ কাফেলার ওপর হালমা করে মক্কা প্রবেশ করতে বাধা দেয় তাহলে গোটা দেশে হৈ চৈ শুরু হয়ে যাবে। যে পবিত্র মাসগুলোকে শত শত বছর ধরে আরবে হজ্জ ও বায়তুল্লাহর যিয়ারতের জন্য পবিত্র মনে করা হতো যুল-কা’দা মাসটি ছিল তার অন্যতম । ফলে উমরার জন্য যারা যাত্রা করেছে তাকে বাঁধা দেয়ার অধিকার কারো ছিল না। আরবের প্রতিটি মানুষ বলতে শুরু করবে এটা বাড়াবাড়ী ছাড়া আর কিছুই নয়। 

অপরদিকে মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে এত বড় কাফেলা নিয়ে নির্বিঘেœ আমাদের শহরে প্রবেশ করতে দেই তাহলে গোটা দেশের সামনেই আমাদের প্রভাব প্রতিপত্তি বিনষ্ট হবে। কুরাইশরা নিজেদের মুখ রক্ষার জন্য যে কোন মূল্যে এ কাফেলাকে শহরে প্রবেশ করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো। 

রাসূল (ﷺ) আগে ভাগেই বনী কা’ব গোত্রের এক ব্যক্তিকে গুপ্তচর হিসেবে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি উসফান নামক স্থানে পৌছলে ঐ ব্যক্তি জানালো যে, পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে কুরাইশরা যি-তুয়ায় পৌছেছে এবং তাঁর পথরোধ করার জন্য তারা খালিদ ইবনে ওয়ালিদকে দুই শত অশ্বরোহী সহ কুরাউল গমীম অভিমুখে অগ্রগামী বাহিনী হিসেবে পাঠিয়ে দিয়েছে। দুই কুরাইশদের চক্রান্ত ছিল কোন উপায়ে নবীর (ﷺ) সংগী-সাথীদের উত্যক্ত করে উত্তেজিত করা এবং তার পরে যুদ্ধ সংঘটিত হলে গোটা দেশে একথা প্রচার করে দেয়া যে, উমরা আদায়ের বাহানা করে এরা প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ করার জন্যই এসেছিলো এবং শুধু ধোঁকা দেয়ার জন্যই ইহরাম বেঁধেছিল। এ খবর পাওয়া মাত্র রাসূল (ﷺ) রাস্তা পরিবর্তন করলেন এবং ভীষণ কষ্ট স্বীকার করে অত্যন্ত দুর্গম একটি পথ ধরে হারাম শরীফের একেবারে প্রান্ত সীমায় অবস্থিত হুদাইবিয়ায় গিয়ে পৌঁছলেন। 

কুরাইশদের সঙ্গে আলোচনা
হযরত (ﷺ) সামনে অগ্রসর হলেন এ জায়গাটি মক্কা থেকে এক মঞ্জিল দূরে অবস্থিত। এখানকার খোজায়া গোত্রের প্রধান হযরত (ﷺ)-এর খেদমতে হাযির হয়ে বললো : ‘কুরাইশরা লড়াইয়ের জন্যে প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা আপনাকে মক্কায় প্রবেশ করতে দেবে না। রাসূল (ﷺ) বললেন : ‘তাদেরকে গিয়ে বলো যে, আমরা শুধু হজ্জের নিয়্যাতে এসেছি, লড়াই করার জন্য নয়। কাজেই আমাদেরকে কা’বা শরীফ তাওয়াফ ও জিয়ারত করার সুযোগ দেয়া উচিত।’ কুরাইশদের কাছে যখন এই পয়গাম গিয়ে পৌঁছলো, তখন কিছু দুূষ্টু প্রকৃতির লোক বলে উঠলো : ‘মুহাম্মদের পয়গাম শোনার কোনো প্রয়োজন নেই আমাদের। ‘ কিন্তু চিন্তাশীল লোকদের ভেতর থেকে ওরওয়া নামক এক ব্যক্তি বললো: ‘না, তোমরা আমার উপর নির্ভর করো; আমি গিয়ে মুহাম্মদ (ﷺ)-এর সঙ্গে কথা বলছি।’ওরওয়া হযরত (স)-এর খেদমতে হাযির হলো বটে, কিন্তু কোনো বিষয়েই মীমাংসা হলো না। 

ফিরে গিয়ে উরওয়া কুরাইশদের বললোঃ আমি কায়সার, কিসরা এবং নাজ্জাসীর দরবারে গিয়েছি। কিন্তু আল-াহর শপথ! আমি মুহাম্মাদের (ﷺ) সংগী-সাথীদেরকে মুহাম্মাদ (ﷺ) প্রতি যেমন নিবেদিত প্রাণ দেখেছি তেমন দৃশ্য বড় বড় বাদশাহর দরবারেও দেখেনি। এদের অবস্থা এই যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) অযু করলে তারা এক বিন্দু পানিও মাটিতে পড়তে দেয় না, সবাই তো নিজেদের শরীর ও কাপড় মেখে নেয়। এখন চিন্তা করে দেখ, তোমরা কার মোকাবিলা করতে যাচ্ছো? 

নবী ( সা.) বিচক্ষণতায় কুরাইশদের অপকৌশল ব্যর্থ-
আলাপ-আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে কুরাইশরা মুসলমানদের ওপর হামলা করার জন্যে একটি ক্ষুদ্র বাহিনী প্রেরণ করলো এবং তারা মুসলমানদের হাতে বন্দীও হলো; কিন্তু হযরত (ﷺ) তাঁর স্বভাবসুলভ করুণার বলে তাদেরকে ক্ষমা করে দিলেন এবং তাদেরকে মুক্তি দেয়া হলো। এভাবে কুরাইশরা তাদের প্রতিটি ধূর্তামি ও অপকৌশলে ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে থাকে। 

হযরত উসমান (রা) কে দূত হিসেবে প্রেরণ
নবী (ﷺ) নিজের পক্ষ থেকে হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দূত হিসেবে মক্কায় পাঠান। কিন্তু কুরাইশরা মুসলমানদেরকে কা’বা জিয়ারত করার সুযোগ দিতে কিছুতেই রাযী হলো না; বরঞ্চ তারা হযরত উসমান (রা)-কে আটক করে রাখলো। 

বাইয়াতে রিযওয়ান
এই পর্যায়ে মুসলমানদের কাছে এই মর্মে সংবাদ পৌঁছলো যে, হযরত উসমান (রা) শহীদ হয়েছেন। এই খবর মুসলমানদেরকে সাংঘাতিকভাবে অস্থির করে তুললো। রাসূল (ﷺ) খবরটি শুনে বললেন : ‘আমাদেরকে অবশ্যই উসমান (রা.)-এর রক্তের বদলা নিতে হবে।’ একথা বলেই তিনি একটি বাবলা গাছের নীচে বসে পড়লেন। তিনি সাহাবীদের কাছ থেকে এই মর্মে শপথ গ্রহণ করলেন। কেননা রসূল (ﷺ)-এর ভাষায় পরিস্থিতি ছিল এ রকম যে, ‘‘উসমান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গেছে।’’ তিনি নিজের এক হাতকে উসমানের হাত বলে আখ্যায়িত করে তার ওপর নিজের পক্ষ থেকে অন্য হাত রেখে বললেন, ‘‘অংগীকার কর।’’ তাঁর সাথীরা এমনিতেই আবেগে অধীর ছিলেন। তারা আন্তরিকতার সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে গিয়ে বায়য়াত ও অংগীকার করতে লাগলেন। কুরাইশদের কাছ থেকে আমরা হযরত উসমান (রা)-এর রক্তের বদলা নেবোই।’ এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা মুসলমানদের মধ্যে এক আশ্চর্য উদ্দীপনার সৃষ্টি করলো। তারা শাহাদাতের প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হয়ে কাফিরদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্যে প্রস্তুত হলেন। এই আকস্মিক মুহূর্তটা ঈমান বৃদ্ধি ও চরিত্র গঠনের উপযুক্ত মুহূর্ত ছিল এবং এ সময় মুসলমানরা নিজেদেরকে এত উচ্চ মানে উন্নীত করে যে, রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘আজকের দিন তোমরা সারা দুনিয়ার মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।’’ এই মুহূর্তের ঈমানী জযবা ও আন্তরিকতার দরুন তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করেন।” কুরআনে পাকের এই শপথের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সে সব ভাগ্যবান ব্যক্তি এ সময় রাসূল (ﷺ)-এর পবিত্র হাতে হাত রেখে শপথ গ্রহণ করেছিলেন, আল্লাহ তা’আলা তাঁদেরকে পুরস্কৃত করার কথা বলেছেন। 

হুদাইবিয়া সন্ধির শর্তাবলী
মুসলমানদের এই উৎসাহ-উদ্দীপনার কথা কুরাইশদের কাছেও গিয়ে পৌঁছলো। সেই সঙ্গে এ-ও জানা গেলো যে, হযরত উসমান (রা)-এর হত্যার খবর সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে কুরাইশরা সন্ধি করতে প্রস্তুত হলো। এ জন্যে সুহাইল বিন্ আমরকে দূত বানিয়ে পাঠালো। শেষ পর্যন্ত সন্ধির শর্তাবলী স্থিরিকৃত হলো। সন্ধিপত্র লেখার জন্যে হযরত আলী (রা)-কে ডাকা হলো। সন্ধিপত্রে যখন লেখা হলো ‘এই সন্ধি আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ (ﷺ)-এর তরফ থেকে তখন কুরাইশ প্রতিনিধি সুহাইল প্রতিবাদ জানিয়ে বললো : ‘আল্লাহর রাসূল’ কথাটি লেখা যাবে না; এ ব্যাপারে আমাদের আপত্তি আছে।’ একথায় সাহাবীদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হলো। সন্ধিপত্র লেখক হযরত আলী (রা) কিছুতেই এটা মানতে রাযী হলেন না। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) নানাদিক বিবেচনা করে সুহাইলের দাবি মেনে নিলেন এবং নিজের পবিত্র হাতে ‘আল্লাহর রাসূল’ কথাটি কেটে দিয়ে বললেন : ‘তোমরা না মানো, তাতে কি? কিন্তু আল্লাহর কসম, আমি তাঁর রাসূল।’ নিম্নোক্ত শর্তাবলীর ভিত্তিতে সন্ধি-চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো-

১. মুসলমানরা এ বছর হজ্জ না করেই ফিরে যাবে। ২. তারা আগামী বছর আসবে এবং মাত্র তিন দিন থেকে চলে যাবে। ৩. কেউ অস্ত্রপাতি নিয়ে আসবে না। শুধু তলোয়ার সঙ্গে রাখতে পারবে: কিন্তু তাও কোষবদ্ধ থাকবে, বাইরে বের করা যাবে না। ৪. মক্কায় যে সব মুসলমান অবশিষ্ট রয়েছে, তাদের কাউকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না। আর কোনো মুসলমান মক্কায় ফিরে আসতে চাইলে তাকেও বাধা দেয়া যাবে না। ৫. কাফির বা মুসলমানদের মধ্য থেকে কেউ মদীনায় গেলে তাকে ফেরত পাঠাতে হবে। কিন্তু কোনো মুসলমান মক্কায় গেলে তাকে ফেরত দেয়া হবে না। ৬. আরবের গোত্রগুলো মুসলমান বা কাফির যে কোনো পক্ষের সাথে সন্ধিচুক্তি সম্পাদন করতে পারবে। ৭. এ সন্ধি-চুক্তি দশ বছরকাল বহাল থাকবে।

হযরত আবু জান্দালের ঘটনা
সন্ধিপত্র যখন লিখিত হচ্ছিলো, ঠিক সেই মুহূর্তে ঘটনাচক্রে কোরায়েশ প্রতিনিধি সোহায়েলের ছেলে আবু জুনদুল শেকল পরা অবস্থায় মক্কা থেকে এসে হাজির হলো। তাকে মারপিট ও নির্যাতন করা হয়েছিল। সে রাসূল (ﷺ) ও সাহাবীদের সামনে নিজেকে পেশ করলো। সোহায়েল বিন আমর বললো, প্রস্তাবিত শর্ত অনুসারে আবু জুনদুলই প্রথম ব্যক্তি, যাকে আপনার ফেরত পাঠাতে হবে। রাসূল (ﷺ) বললেন, এখনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। কাজেই আবু জুন্দুলের ব্যাপারটা এর আওতার বাইরে থাকতে দাও। সোহায়েল বললো, তাহলে কোন আপোষ হতে পারে না। এরপর রাসূল (ﷺ) কোমল ভাষায় বুঝিয়ে বললেন, ‘‘ঠিক আছে, ওকে আমার খাতিরে আমার সাথে মদিনায় যেতে দাও।’’ সোহায়েল মানলো না। বাধ্য হয়ে রাসূল (ﷺ ) বৃহত্তর স্বার্থে এই অন্যায় আবদার মেনে নিলেন। এবার আবু জুন্দুল সমবেত মুসলমানদেরকে সম্বোধন করে বললো, ‘‘মুসলমান ভাইয়েরা, তোমরা আমাকে মুশরেকদের কাছে ফেরত পাঠাচ্ছ। অথচ ওরা আমাকে ঈমান থেকে ফেরানোর জন্য আমার ওপর নির্যাতন চালাবে।’’ আবু জুন্দুলের এ আবেদন ঐ পরিবেশে অত্যন্ত উত্তেজনা সৃষ্টিকারী ছিল। কিন্তু রাসূল (ﷺ) তখন অতুলনীয় ঠান্ডা মেজাজের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন। আবু জুন্দুলকে নম্র ভাষায় বললেন, “তোমার ও অন্যান্য মযলুমদের জন্য আল্লাহ তায়ালা একটা মুক্তির পথ বের করবেন। একটু ধৈর্য ধারণ কর।’’ 

রাসুল (ﷺ) ব্যতিত সবাই বিচলিত-
যে সময় সন্ধির শর্তসমূহ নির্ধারিত হচ্ছিলো তখন মুসলমানদের পুরা বাহিনী অত্যন্ত বিচলিত বোধ করেছিলেন। এ সন্ধির ফলে যে বিরাট কল্যাণ অর্জিত হতে যাচ্ছিলো তা দেখতে পাওয়ার মত দূরদৃষ্টি কারোরই ছিল না। এমন কি হযরত উমরের (রা) মত গভীরদৃষ্টি সম্পন্ন জ্ঞানীজনের অবস্থা ছিল এই যে, তিনি বলেনঃ ইসলাম গ্রহণের পরে কখনো আমার মনে কোন সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু এ যাত্রায় আমিও তা থেকে রক্ষা পাইনি। তিনি বিচলিত হয়ে হযরত আবু বকরের (রা) কাছে গিয়ে বললেনঃ “তিনি কি আল্লাহর রাসূল নন? আমরা কি মুসলমান নই? এসব লোক কি মুশরিক নয়? এসব সত্ত্বেও আমরা আমাদের দীনের ব্যাপারে এ অবমাননা মেনে নেব কেন?” তিনি জবাব দিলেনঃ “হে উমর তিনি আল্লাহর রাসূল আল্লাহ কখনো তাঁকে ধ্বংস করবেন না” । এরপরও তিনি ধৈর্যধারণ করতে পারলেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে তাঁকেও এ প্রশ্নগুলো করলেন। হযরত আবু বকর (রা) তাকে যে জবাব দিয়েছিলেন নবীও (ﷺ) তাঁকে সেরূপ জবাব দিলেন। এ সময় হযরত উমর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে যে কথাবার্তা বলেছিলেন তার জন্য তিনি পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত লজ্জিত ও অনুতপ্ত ছিলেন। তাই তিনি অধিক পরিমাণে দান-খয়রাত এবং নফল নামায আদায় করতেন। যাতে আল্লাহ তা’আলা তাঁকে মাফ করে দেন।

হুদাইবিয়া সন্ধির প্রভাব ও বিজয়
সন্ধি-চুক্তি সম্পাদিত হবার পর রাসুল (ﷺ) সেখানেই কুরবানী করার জন্যে লোকদেরকে হুকুম দিলেন। সর্বপ্রথম তিনি নিজেই কুরবানী করলেন। সন্ধি চুক্তি সম্পাদনের পর হযরত (ﷺ) তিন দিন সেখানে অবস্থান করলেন। ফিরবার পথে সূরা ফাতাহ নাযিল হলো। তাতে এই সন্ধির প্রতি ইঙ্গিত করে একে ‘ফাতহুম মুবীন’ বা সুস্পষ্ট বিজয় বলে অভিহিত করা হলো। কিন্তু পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ স্পষ্টত প্রমাণ করে দিলো যে, ইসলামের ইতিহাসে হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিলো একটি বিরাট বিজয়ের সূচনা মাত্র।

“এতদিন মুসলমান ও কাফিরদের মধ্যে পুরোপুরি একটা যুদ্ধংদেহী অবস্থা বিরাজ করছিলো। উভয় পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক মেলামেশার কোনোই সুযোগ ছিলো না। এই সন্ধি-চ্ুিক্ত সেই চরম অবস্থার অবসান ঘটিয়ে রুদ্ধ দুয়ার খুলে দিলো। এরপর মুসলমান ও অমুসলমানরা নির্বাধে মদীনায় আসতে লাগলো। এভাবে তারা এই নতুন ইসলামী সংগঠনের লোকদেরকে অতি নিকট থেকে দেখার ও জানার সুযোগ পেলো। এর পরিণতিতে তারা বিস্ময়কর রকমে প্রভাবিত হতে লাগলো। যে সব লোকের বিরুদ্ধে তাদের মনে ক্রোধ ও বিদ্বেষ পুঞ্জীভূত হয়েছিলো, তাদেরকে তারা নৈতিক চরিত্র, আচার-ব্যবহার ও স্বভাব-প্রকৃতির দিক দিয়ে আপন লোকদের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত মানের দেখতে পেলো। তারা আরো প্রত্যক্ষ করলো, আল্লাহর যে সব বান্দাহর বিরুদ্ধে তারা এতোদিন যুদ্ধংদেহী মনোভাব পোষণ করে আসছে, তাদের মনে কোনে ঘৃণা বা শত্রুতা নেই; বরং তাদের যা কিছুই ঘৃণা, তা শুধু বিশ্বাস ও গলদ আচার-পদ্ধতির বিরুদ্ধে। তারা (মুসলমানরা) যা কিছুই বলে, তার প্রতিটি কথা সহানুভূতি ও মানবিক ভাবধারায় পরিপূর্ণ। এতো যুদ্ধ-বিগ্রহ সত্ত্বেও তারা বিরুদ্ধবাদীদের সঙ্গে সহানুভূতি সদাচরণের বেলায় কোনো ত্রুটি করে না।

ইসলাম সম্পর্কে অমুসলি মরা কতোখানি ভ্রান্ত ধারণায় নিমজ্জিত ছিলো, তা তারা মর্মে-মর্মে উপলব্ধি করতে পারলো। এই পরিস্থিতি এমনি এক আবহাওয়ার সৃষ্টি করলো যে, অমুসলিমদের হৃদয় স্বভাবতঃই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হতে লাগলো। এর ফলে সন্ধির-চুক্তির মাত্র দেড়-দুই বছরের মধ্যে এতো লোক ইসলাম গ্রহণ করলো যে, ইতঃপূর্বে কখনো তা ঘটেনি। এরই মধ্যে কুরাইশদের কতিপয় নামজাদা সর্দার ও যোদ্ধা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হলো এবং অমুসলিমদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে মুসলমানদের সঙ্গে হাত মিলালো। হযরত খালিদ বিন্ ওয়ালিদ (রা) এবং হযরত আমর বিন্ আস (রা) এ সময়ই ইসলাম গ্রহণ করলেন। এর ফলে ইসলামের প্রভাব-বলয় এতোটা বিস্তৃত হলো এবং তার শক্তিও এতোটা প্রচন্ড রূপ পরিগ্রহ করলো যে, পুরনো জাহিলিয়াত স্পষ্টত মৃত্যু-লক্ষণ দেখতে লাগলো। কাফির নেতৃবৃন্দ এই পরিস্থিতি অনুধাবণ করে অত্যন্ত শঙ্কিত হয়ে উঠলো। তারা স্পষ্টত বুঝতে পারলো, ইসলামের মুকাবিলায় তাদের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। তাই অনতিবিলম্বে সন্ধি-চুক্তি ভেঙে দেয়ার এবং এর ক্রমবর্ধমান সয়লাবকে প্রতিরোধ করার জন্যে আর একবার ইসলামী আন্দোলনের সাথে ভাগ্য পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ তারা খুঁজে পেলো না। এ চুক্তি যে সত্যিই একটা বিরাট বিজয় সে ব্যাপারে আর কারো মনে কোন সন্দেহ থাকলো না।

এ চুক্তির মাধ্যমে আরবে প্রথমবারের মতে ইসলামী রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে নিল। কুরাইশরা এ যাবত ইসলামকে ধর্মহীনতা বলে আখ্যায়িত করে আসছিলো। তারা এও স্বীকৃতি দিল যে, ইসলাম কোন ধর্মহীনতা নয়। দশ বছরের জন্য যুদ্ধ বিরতি চুক্তি হওয়ার ফলে মুসলমানগণ নিরাপত্তা ও শান্তি লাভ করলেন এবং গোটা আরবের আনাচে কানাচে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এত দ্রুত ইসলামের প্রচার চালালেন যে, হুদাইবিয়ার সন্ধি পরবর্তী দু’বছর লোক মুসলমান হলো সন্ধি পূর্ববর্তী পুরো ১৯ বছরেও তা হয়নি। সন্ধির সময় যেখানে নবীর (ﷺ) সাথে মাত্র ১৪ শত লোক ছিলেন। সেখানে মাত্র দুই বছর পরেই কুরাইশদের চুক্তি ভঙ্গে ফলে নবী (ﷺ) যখন মক্কায় অভিযান চালান তখন দশ হাজার সৈনিকের এক বিশাল বাহিনী তাঁর সাথে ছিল। এটা ছিল হুদাইবিয়ার সন্ধির সুফল। 

মুহাম্মদ (ﷺ)-এর রাজনৈতিক বিচক্ষণতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্ম
হুদাইবিয়ার সন্ধির মাত্র তিন মাস পরেই ইহুদীদের সবচেয়ে বড় দুর্গ খায়বার বিজিত হয় এবং তারপর ফাদাক, ওয়াদিউল কুরা, তায়ামা ও তাবুকের মত ইহুদী জনপদেও একের পর এক মুসলমানদের কর্তৃত্বধীনে চলে আসে। হুদাইবিয়ার সন্ধি এভাবে মাত্র দু’বছরের মধ্যে আরবে শক্তির ভারসাম্য এতটা পাল্টে দেয় যে, কুরাইশ এবং মুশরিকদের শক্তি অবদমিত হয়ে পড়ে এবং ইসলামের বিজয় নিশ্চিত হয়ে যায়।

আল্লাহ পাক যে রাসূল (ﷺ) ও মুসলমানদের ওপর স্থিরতা নাজিল করেছেন, তোমাদের আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ এনে দিয়েছেন, এবং তোমাদেরকে খোদাভীতি ও সংযমের ওপর বহাল রেখেছেন, সেটা ছিল আল্লাহর অনুগ্রহ। নচেত তোমরাও যদি উত্তেজিত হয়ে যেতে, তাহলে সংঘর্ষ বেধে যেত এবং সহজে যে সুযোগ ও সাফল্য অর্জিত হচ্ছিল, তা হাতছাড়া হয়ে যেত। 

সূরা ফাতাহ শুরই হয়েছে-‘‘ইন্না ফাতাহ্না লাকা ফাতহাম মুবিনা’’ ‘‘আমি তোমাকে সুস্পষ্ট বিজয় দিয়েছি’’ এই কথাটা দিয়ে। হযরত ওমর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কি যথার্থই সুস্পষ্ট বিজয়? রাসূল (ﷺ) বললেন, ‘হ্যাঁ, এটাই সুস্পষ্ট বিজয়।’ 

ঐতিহাসিক হোদায়বিয়ার সন্ধি, যা ফলাফলের দিক থেকে একটা মহাবিজয় ছিল। এই চুক্তিতে মুহাম্মদ (ﷺ)-এর রাজনৈতিক বিচক্ষণতা ও নেতাসুলভ প্রজ্ঞারই পরিচায়ক ছিল। এ সন্ধি রাসূল (ﷺ) এর রাজনৈতিক দক্ষতার এক অতুলনীয় নমুনা এবং তাঁর এক অসাধারণ কীর্তি। এদ্বারা পরবর্তীকালের মুসলমানরাও কেয়ামত পর্যন্ত শিক্ষা লাভ করতে থাকবে। 

এ জন্য জর্জ বার্নার্ড শ তাঁর "Getting Marred’ গ্রন্থে লিখতে বাধ্য হয়েছেন- "If all the world was to be united under one leader then Muhammad (S.M) would have been the best fitted man to lead the people of various needs dogmas and ideas to peace and happiness." “যদি সমগ্র বিশ্বের ধর্ম, সম্প্রদায়, আদর্শ ও মতবাদসম্পন্ন মানবজাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে কোন নায়কের শাসনাধীনে আনীত হতো, তা একমাত্র মুহাম্মদই (ﷺ) সর্বাপেক্ষা সুযোগ্য নেতারূপে তাদের শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালিত করতে পারতেন।” তাই সারা জাহানের অনাগত কালের মানবগোষ্ঠীর জন্য তিনি রাহমাতুল্লিল আলামীন ও উসয়ায়ে হাসানা।

তথ্যসূত্র:
তাফহীমুল কুরআন
মানবতার বন্ধু মুহাম্মদ (ﷺ)
রাসুলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
'চিরভাস্বর মহানবী (ﷺ)

লেখকঃ কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।