ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯

দেশের দরিদ্র শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করার জন্য আহ্বান

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ দরিদ্র শীতার্ত জনগণের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য দেশবাসী এবং বিশেষভাবে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২০ ডিসেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “দেশে হঠাৎ করে প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় দরিদ্র সাধারণ জনগণ ও শ্রমজীবি মানুষ শীতে কষ্ট পাচ্ছে। তাদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিলি করার মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সারাদেশে এবং বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে প্রচণ্ড শীত পড়েছে। ইতোমধ্যেই চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ৭.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমেছে। অনেক এলাকায় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় ভীষণ কুয়াশা পড়ছে। ফলে শীতের প্রকোপ বেড়ে গিয়েছে। দেশের দরিদ্র সাধারণ জনগণ ও শ্রমজীবি মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে শীতে কষ্ট পাচ্ছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে একদিকে শীত বাড়ছে, অন্যদিকে শীতবস্ত্র না থাকায় দরিদ্র লোকদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত কারণে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভার হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় শীত নিবারণের জন্য দরিদ্র লোকদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
শীতার্ত দরিদ্র লোকদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের প্রধানতম দায়িত্ব হলো সরকারের। কিন্তু সরকার জনগণের দুঃখ-দুর্দশায় তাদের পাশে দাঁড়াতে বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। বর্তমান সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না বিধায় জনগণের সুখ-দুঃখের কোনো খবর সরকার রাখে না। এ অবস্থায় শীতবস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলের কর্তব্য।
দেশের দরিদ্র শীতার্ত মানুষের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে শীতবস্ত্র বিতরণ করার জন্য আমি সরকার, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, সংগঠন ও দানশীল বিত্তশালী ব্যক্তিবর্গ এবং বিশেষভাবে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্খীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯

দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয় ভাংচুর, সম্পাদকের উপর হামলা ও গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয় ভাংচুর, সম্পাদকের উপর হামলা ও গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান বলেন “১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধায় দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর মূল্যবান আসবাবপত্র তচনচ করার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
প্রবীণ সাংবাদিক, দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক বয়োবৃদ্ধ আবুল আসাদের উপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত দু:খজনক। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকের উপর এ হামলা সংবিধান, বাঁক স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের উপর এক বেদনাদায়ক আঘাত। একটি গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ এ দৃশ্য দেখতে চায়না।
আমরা অবিলম্বে জনাব আবুল আসাদের মুক্তি দাবী করছি। সেই সাথে পত্রিকা, সাংবাদিক ও সংবাদ কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”

আবুল আসাদ: প্রিয় লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এবং কলামিস্ট

আবুল আসাদ লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এবং কলামিস্ট
বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আবুল আসাদ রাজশাহী জেলার বাগমারা থানার নরসিংহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালে। পিতা এ,কে, ছামছালুল হক ভারতের বেনারসের বিখ্যাত মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা লাভকারী স্বনামধন্য একজন আলেম ছিলেন। তার মাতার নাম মজিদা বেগম।
আবুল আসাদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ পাশ করেন। ছাত্রজীবন থেকে তার লেখক ও সাংবাদিকতা জীবনের শুরু। তিনি কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিকে রাজশাহী সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করেছেন। ছাত্র জীবনে কলেজ ম্যাগাজিনসহ পত্র-পত্রিকায় লিখিত তাঁর রাজনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রবন্ধাদি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
১৯৭০ সালে ১৭ই জানুয়ারী দৈনিক সংগ্রামে সহকারী সম্পাদক হিসাবে যোগদানের মাধ্যমে তিনি সার্বক্ষণিক সাংবাদিক জীবনের শুরু করেন। ১৯৮১ সালে তিনি দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি সুপরিচিত একজন প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট। এ পর্যন্ত প্রকাশিত তাঁর গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ইতিহাস গ্রন্থ 'কাল পঁচিশের আগে ও পরে' এবং 'একশ' বছরের রাজনীতি', ঐতিহাসিক ঘটনার চিত্রধর্মী গল্প 'আমরা সেই সে জাতি' (তিন খন্ড) এবং প্রবন্ধ সংকলন 'একুশ শতকের এজেন্ডা'।
তাঁর সবচেয়ে সাড়া জাগানো সাহিত্যকর্ম হলো 'সাইমুম সিরিজ'। রহস্য, রোমাঞ্চ, ইতিহাস ও নৈতিকতার সমন্বয়ে গড়া এ এক অনন্য রহস্য সিরিজ। এ পর্যন্ত এই সিরিজের ৬১ টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বর্তমানে সংগ্রামের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও তাঁর বহুমুখী সাহিত্যকর্ম অব্যাহত রেখেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে জুলুমবাজ, ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠীর লেলিয়ে দেয়া গোন্ডাবাহিনী দৈনিক সংগ্রাম অফিসে হামলা ও ভাংচুর এবং লুটপাট চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
আল্লাহ তাকে হেফাজত ও হায়াতে তাইয়্যেবা দান করুন। আমিন
Copyright Muhammed Imam Uddin

দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ

দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ
বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯ শনিবার আজ বিকেলে দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয়ে যান বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালাম। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের খোঁজ খবর নেন।পরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেন।

সংগ্রাম অফিস পরিদর্শন করলেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ

সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ কর্তৃক সংগ্রাম অফিস পরিদর্শন
বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ জাতীয় দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার অফিসে হামলা এবং ভাঙচুর ও প্রবীণ সাংবাদিক আবুল আসাদের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন(ডিইউজে) প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেন। পরে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ দৈনিক সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ যান। 
 এদিকে  প্রবীণ সাংবাদিক আবুল আসাদকে ৩দিনের রিমান্ডে নেয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

উনি এখনও লিখছেন।

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ সারা রাত থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে । এই চেয়ারটাতেই বসে আছেন সারা রাত। তবুও উনি লিখছেন।
আজকে সকালে হাতিরঝিল থানায় দেখা করতে যাওয়া একজন এই ছবিটা আমাকে পাঠিয়েছে। খেয়াল করে দেখলাম, উনি এখনও লিখছেন।
৭৮ বছর বয়স। শ্বাস কষ্টে ভুগছেন। শরীরে হিমগ্লবিনের পরিমাণ অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় ডাক্তার চিকিৎসার সাথে সাথে বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। কিন্তু উনি এখনও লিখছেন।
ঠাণ্ডায় শ্বাস কষ্টটা বেড়ে গেছে। বেশ কিছুদিন ধরে আম্মা অফিসে আসতে নিষেধ করছিলেন। কিন্তু উনি সপ্তাহে সাত দিনই অফিস করছেন এবং উনি লিখছেন।
গতকাল সন্ধ্যায় বিশাল ঝড় বয়ে গেছে উনার উপর দিয়ে। একদল চরমপন্থি আওয়ামী জঙ্গি উনার অফিস তছনছ করেছে। আবরার, বিশ্বজিতদের খুনিদের আক্রমণের স্বীকার হয়েছেন উনি। তবুও উনি লিখছেন।
তার ৭৮ বছর জীবনে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। এরশাদের স্বৈরশাসন আমলেও উনার অফিসের নিচে পুলিশ-আর্মি ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল বেশ কয়েকদিন। কিন্তু ভেতরে ঢুকে তাকে গ্রেফতার বা হেনস্তা করেনি। দেশে তখনও প্রতিটা সংবাদপত্রের একটা সম্মান ছিল, সাংবাদিকদের সম্মান ছিল। সেই সম্মানের কারণেই এরশাদের পুলিস বাহিনী সেদিন অফিসের ভেতরে ঢোকেনি । কিন্তু আজ দেশ জঙ্গিদের হাতে, মাফিয়াদের হাতে । সম্মান, শ্রদ্ধা এগুলো তো জঙ্গি – মাফিয়াদের কাছে হাঁসি- ঠাট্টার বিষয় । এই ৭৮ বছর বয়সের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল উনার জীবনে। কিন্তু উনি এখনও লিখছেন।
অভিজ্ঞ সাংবাদিক হিশেবে দল মত নির্বিশেষে সবার কাছে শ্রদ্ধা পেয়ে এসেছেন সবসময়। ১৯৯৩/৯৪ সালের দিকের ঘটনা, আওয়ামী ঘরানার ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা, কাজল ভাই আমাকে বলছিলেন, “যে যেই দলেরই হই না কেন ভাই, উনাকে আমরা সবাই খুব শ্রদ্ধা করি”। কিন্তু দেশটা তো এখন আর আগের মত নেই । প্রবল ঘৃণা চাষের ফলে সাংবাদিকরাও বিভক্ত। অঞ্জন রায়দের মত শিব-সেনা, আরএসএসের দখলে এখন সবকিছু। উনার মত প্রবীণ সাংবাদিকরা আজ অঞ্জন রায়দের ঘৃণা চাষের স্বীকার । কিন্তু উনি লিখছেন।
লিখেই চলেছেন।
Sibley sohail

জিজ্ঞাসা -মল্লিক মাহমুদ

প্রবীণ সাংবাদিক আবুল আসাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা
তিরিশ লক্ষ প্রাণ বিলিয়ে কী লাভ হলো বলো,
কী লাভ হলো ঢেলে দিয়ে
রক্ত টলোমলো।
কী লাভ হলো একাত্তরে
পাক হানাদার রুখে,
শত শত গুলি খেয়ে
পায়ে,পিঠে,বুকে।
দেশটা যদি যায় ভরে যায়
হলুদ সাংবাদিকে,
কী লাভ বলো বিশ্ব সভায়
''স্বাধীন বাংলা'' লিখে।
দেশ বরেণ্য বুদ্ধিজীবীর
জামার বোতাম টেনে,
কী লাভ হবে তাদের তরে
হাজার দিবস মেনে।
সত্য কথা বুক ফুলিয়ে
যদি না যায় বলা,
এঁকে কী লাভ লাল-সবুজের
রঙিন চিত্রকলা।
.
১৪।১২।১৯

দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয়ে হামলায় বিএফইউজে-ডিইউজে’র উদ্বেগ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ দেশের প্রাচীন সংবাদপত্রগুলোর অন্যতম দৈনিক সংগ্রামের মগবাজারস্থ কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর, তছনছের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। একই সাথে পত্রিকাটির বয়োজ্যেষ্ঠ সম্পাদক, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী আবুল আসাদকে পুলিশ ধরে থানায় আটকে রাখায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দুই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও মহাসচিব এম আবদুল্লাহ এবং ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বলেন, একটি সংবাদপত্র অফিসে ঢুকে কম্পিউটার, আসবাবপত্র, দরজা-জানালাসহ সব কিছু তছনছ করা ফ্যাসিবাদী আক্রমণ ছাড়া কিছুই নয়। কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত সংবাদে সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিবাদ জানানো এমনকি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও অধিকার রয়েছে। কিন্তু তা না করে পেশিশক্তির মহড়া কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়।

সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

আবদুল মাবুদের ইন্তেকালে চান্দগাঁও থানা জামায়াতের শোক প্রকাশ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ পূর্বশোল শহর (৬নং ওয়ার্ড) নিবাসী মরহুম আবুল হেসেন কন্টাক্টরের পুত্র বড় মুহাম্মদ আবদুল মাবুদের ইন্তেকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চান্দগাঁও থানার নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
পূর্বশোল শহর (৬নং ওয়ার্ড) নিবাসী মরহুম আবুল হেসেন কন্টাক্টরের বড় পুত্র মুহাম্মদ আবদুল মাবুদের ইন্তেকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চান্দগাঁও থানার আমীরসহ কর্ম পরিষদ সদস্যগণ গভীর শোক প্রকাশ করে এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছে।
উল্লেখ্য মরহুম আবুল হেসেন কন্টাক্টরের বড় পুত্র মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ ১৯সেপ্টেম্বর ভোর ৬টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। ঐদিন বাদ আসর স্থানীয় সিদ্দিক হাজী জামে মসজিদে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং পাশের কবরস্থানে দাফন করা হয়। 
শোকবানীতে নেতৃবৃন্দ মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। 

বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের ১০ টি উপায়:-

১। অন্যের বিষয় নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবেন না।
আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন তা নিয়ে খুশি থাকুন আর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। অন্যের কি আছে আর আপনার কি নেই, এসব নিয়ে পড়ে থাকবেন না।

২। সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা কাঁধে তুলবেন না। আপনার যতটুকু দায়িত্ব ও কতর্ব্য ততটুকু পরম আন্তরিকতার সাথে পালন করুন।

৩। অতি লোভ করবেন না। অল্প তুষ্টি মানসিক শান্তির জন্য খুব গুরুত্বর্পূণ এবং এটি তাকওয়াও পরিচায়ক।

৪। আজকের দিনটি ভালভাবে উপভোগ করুন আগামীকাল কি হবে সেটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিন। দুনিয়াবি বিষয়ে আগামীর চিন্তায় আস্থির হয়ে মানসিক চাপ বৃদ্ধি করবেন না।

৫। প্রতিদিন একান্ত নির্জনে কিছু সময় কাটান। এ সময় আত্নসমালোচনা করুন এবং আল্লাহর নিকট দু’আ করুন।

৬। নেককার পূর্বসূরীদের জীবনী পড়ুন তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা ও উপদেশ দুনিয়ার জীবনে আপনার চলার পথকে সহজ করে দেবে, ইনশাহআল্লাহ।

৭। দুশ্চিন্তা করবেন না। জীবনে আসা বিপর্যয়গুলোকে সহজভাবে মেনে নিন। মনে রাখুন আল্লাহর লিখিত তাকদিরের বাইরে কিছুই ঘটেনা।

৮। সব কিছুই গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করবেন না, মানুষের প্রতিটি কথা বা কাজ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা ঠিক নয়। সব কিছুতে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে যাবেন না।

৯। দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজের রুটিন করুন, অগোছালো কার্যক্রম মানসিক অস্থিরতা বাড়ায়। তাই রুটিন অনুযায়ী আগের কাজ আগে, পরের কাজ পরে করুন।

১০। প্রতিটি কাজ ১০০% নিভুল হতে হবে, এই চিন্তা মাথা থেকে সরান কেননা, নির্ভুলতার গুণ কেবল মাত্র আল্লাহর। আমরা কেউ'ই ভুলের উর্ধ্বে নই।

বাংলাদেশ ভ্রমণের অপূরণীয় অভিলাষ * ড. ইউসুফ আল কারজাভী

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ যখন বাংলাদেশ বৃহৎ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিলো তখন আমার বাংলাদেশ ভ্রমণের সুযোগ হয় নিই। তদানীন্তন তার নাম ছিলো পূর্ব পাকিস্তান। আজকের পাকিস্তানের নাম ছিলো পশ্চিম পাকিস্তান। যখন ১৯৬৯ সালে আমি প্রথম বারের মত পাকিস্তান সফর করি তখন পাকিস্তানের লাহোর শহরে তিন সপ্তাহ অবস্থান করেছি। লাহোর হলো পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক রাজধানী যেমন করাচী তার বাণিজ্যিক রাজধানী। তখন ইমাম মওদুদি রঃ জীবিত ছিলেন। যদিও তিনি তখন জামায়াতে ইসলামীর আমীরের দায়িত্ব তাঁর সহচর উস্তায তোফায়েল আহমাদের নিকট অর্পণ করেছেন।তখন ইমাম মওদুদি রঃ খুবই চাইতেন আমি যেন পূর্ব পাকিস্তানের ( বাংলাদেশ) রাজধানী ঢাকায় ভ্রমণ করি। অতঃপর বাংলাদেশের অনেক জনগণের পক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আভাস পাওয়া গেলো, ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটলো, পৃথক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ পেলো। তখন তদানীন্তন আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য ক্ষমতালিপ্সু নেতার সেটাকে সুযোগ হিসাবে ইউজ করলো। পৃথক হওয়ার যুক্তি ছিলো বাঙ্গালী সাম্প্রদায়িকতা যে যারা পাকিস্তান শাসন করতেছে তারা হলো পাশ্চিম পাকিস্তানের অধিবাসী আর পূর্ব পাকিস্তান ( বাংলাদেশ) কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তারা যা কিছু বলতো সেগুলোর কিছু সত্য ছিলো। তবে এমন দুটো দেশ কিংবা জনপদের মাঝে একতা বজায় রাখা সম্ভব হয় না যারা অনুভব করে যে তারা নিপীডিত ও নির্যাতিত আর তার অপরপক্ষ তাদের উপর জুলুম করতেছে। তারা পাচ্ছে খেজুর বিচি আর তাদের অপরপক্ষ পাচ্ছে খেজুর। দেশীয় জাতীয়তা ও বিচ্ছিন্নতার প্রবণতা মোকাবেলার জন্য ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করাই ছিলো উত্তম সমাধান। অনেক বড় বড় মুসলিম রাষ্ট যেই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। আর সেটাই ছিলো বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর দুর্বলতা। সেটার কারোণেই তাতার ও খ্রিস্টান ক্রোসেড় যোদ্ধারা সেই সকল দেশগুলো দখল করতে পেরেছিলো।
কতিপয় বাংলাদেশী বলতো যে আমাদের সাথে পশ্চিম পাকিস্তানীদের সাথে শুধুমাত্র দুটো জিনিস মিল রয়েছ একটা হলো লা ইলাহা ইল্লাহর সাক্ষ্য দেওয়া আর অপরটি হলো পাকিস্তান এয়ার লাইন্স। বৃটিশ উপনিবেশের সময় বাংলাদেশীদের উপর যেসকল জুলুম পতিত হয়েছিলো সেগুলো পাকিস্তান আমলেও ছিলো। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানিদের উপর আবশ্যক ছিলো পূর্ব পাকিস্তানকে সাথে নিয়ে সামনে চলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা প্রয়োগ করা এবং তাদেরকে উন্নতি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি প্রতিশ্রতি দেওয়া।
যাতে করে উন্নতির দিক থেকে উভয় অংশ সমান হয়। কমপক্ষে যাতে তার নিকটবর্তী হয়। যেন একেবারে সীমাহীন পিছিয়ে না থাকে। সকল অবস্থাতে উস্তায মওদুদি রঃ এর সেই আকাংখা আর পূরণ হয় নিই যে আমি পূর্ব পাকিস্তান ভ্রমণ করি। কিন্তু তিনি আমাকে এই বলে উৎসাহ দিতেন যে পূর্ব পাকিস্তান ( বাংলাদেশ) হলো আল্লাহর যমীনে একটা জান্নাত। আর তার নদীগুলো হলো একেকটা সাগর সমতুল্য।
শায়েখ মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবের পক্ষ থেকে দাওয়াত :
আল্লাহর ইচ্ছায় কাতারে তৃতীয় বিশ্ব সুন্নাহ ও সীরাত সম্মেলন হলো। সেখানে পৃথিবীর দিগ - দিগন্ত ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিদিগণ উপস্থিত হলেন। আর এসকল প্রতিনিধিদের একজন হলেন ছিলেন বাংলাদেশের চট্রগ্রামের পটিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল শায়েখ মুহাম্মদ ইউনুস আব্দুল জব্বার। সম্মেলনে শায়েখের সাথে আমার পরিচয় হলো। তিনি আকাংখা প্রকাশ করলেন যাতে আমি তাদের মাদ্রাসা পরিদর্শন করি। মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের সাথে মিলিত হই। সেখানে দু হাজারেরো বেশী ছাত্র আছে। সেটি একটি দ্বিনি মাদ্রাসা যেখানে দেওবন্দি আলেমদের পদ্ধতিতে আরবী ভাষা ও দ্বিনি এলেম শিক্ষা দেওয়া হয়।
শায়েখ বললেন সেটি পরিদর্শনে আপনার ভালো লাগবে এবং আপনার পরিদর্শনে সেখানকার ছাত্ররা আনন্দিত হবে। আমি শায়েখকে বললাম আমিও বাংলাদেশে আপনাদের সাক্ষাতে খুবই আনন্দিত হবো। আর এটা আমার উপর আপনাদের হক। দুনিয়ার অনেক দেশই ভ্রমণ করেছি কিন্তু আপনাদের প্রিয় বাংলাদেশটি আমার ভ্রমণ করার সুযোগ হয় নিই।আল্লাহ চাহে তো আশা করি অতি নিকটেই সেই আকাংখা বাস্তবায়ন হবে। আপনার জন্য দাওয়াতনামা পাঠাবো যাতে আপনি আমাদের বাৎসরিক বিদায়ী ছাত্রদের অনুষ্ঠানে তাশরিফ আনেন। আমি বললাম আল্লাহ বরকত দান করুক। শায়েখ মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কিছুদিন পর পটিয়া মাদ্রাসা থেকে আমার নিকট একটি দাওয়াতনামা আসলো যাতে করে আমি তাদের মাদ্রাসার বিদায়ী ছাত্রদের বার্ষীক অনুষ্ঠানে তাশরিফ আনি। মনে আছে যে আমার ভ্রমণ ছিলো ভারত হয়ে। সেখান থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। ঢাকায় দুদিন ছিলাম। সেখানকার মাদ্রাসাগুলো পরিদর্শন করলাম। মাদ্রাসাগুলো আমাদের দেশের মক্তবখানার মত।তাদেরকে পেলাম তারা চাটায়ে বসে পড়তেছে। আর আমরা কাঠের তেপায়ার উপর বসে কিতাব পডাশুনা করতাম। তারা আমার সামনে ছোট্ট একটি শিশুকে এগিয়ে দিলো। শিশুটির বয়স নয় বছর ও পূর্ণ হয় নিই।শিশুটি এই বয়সেই পুরো কোরআন মাজিদ ভালোভাবে মুখস্ত করে ফেলেছে। তাকে কোরআনে কারীমের বিভিন্ন জায়গা থেকে পরীক্ষা নিলাম দেখলাম একটি হরফ ও এদিক সেদিক হয় না। যদিও সে আরবী ভাষা জানে না। আর এটাই এই কিতাবের বড় মুজেজা। আর যেই আমার ভ্রমণ সম্পর্কে জেনেছেন তিনিই দ্রুত আমার সাক্ষাতে চলে এসেছেন। তাদের একজন হলেন ড. ফুয়াদ আব্দুল হামিদ খতীব। তিনি বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত। আর সত্য হলো তিনি বাংলাদেশে ইসলামের দূত ছিলেন। বাংলাদেশে কোন আলেম বা দায়ি পরিদর্শনে গেলে তিনি তাদের খেদমতে থাকতেন। তিনি বিভিন্ন পরিদর্শনে আমার সাথে ছিলেন। অতঃপর তিনি আমার সাথে চট্টগ্রাম গেলেন একটি গণ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার উদ্দেশ্যে যেখানে বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দাওয়াত করা হয়েছে। অতঃপর দোহার উদ্দেশ্যে আমি ঢাকায় ফিরে আসার পর তিনি একটি বিরাট অনুষ্ঠান করলেন। সেখানে তিনি রাষ্টের বড় বড় ব্যক্তিবর্গ, আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রদূত এবং বড় বড় আলেমদেরকে দাওয়াত করলেন।
ঢাকায় আমার সংক্ষিপ্ত অবস্থানের পর পটিয়া মাদ্রাসার প্রতিনিধিগণ আমার জন্য আভ্যন্তরীণ বিমানের টিকট বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন। শায়েখ ইউনুস ও তার সহচরবৃন্দ মুফতি আব্দুর রহমান ও অন্যান্যরা আমার অপেক্ষায় ছিলেন।
বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু কথা :
এই মুসলিম দেশে এটি ছিলো আমার সর্বোপ্রথম সফর। যেই দেশটি জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের পরই যার অবস্থান। পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। মানচিত্রের দিকে লক্ষ্য করলে যে কেউ সেটাকে ছোট্ট বাংলাদেশ দেখতে পাবে সংকীর্ণ আকারের ছোট্ট অংশ। তবুও সেখানে সেই সময় বারো কোটি বা এরও বেশী লোক বাস করতো। এদেশের অধিবাসীরা মূলত কৃষির উপর জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তাদেরকে ঘনঘন বিরাট বন্যা আক্রান্ত করে। ফলে তাদের শস্য- ফসল বিনষ্ট হয়ে যায় এবং তাদের দুর্বল বসতিগুলো ধ্বসে যায়। তাদের জন্য পানি প্রতিরোধের বিরাট বিরাট বাধ প্রয়োজন। কিন্তু এগুলোর জন্য লক্ষ লক্ষ অর্থের প্রয়োজন। তাদের সেই অর্থের সামর্থ্য নেই। দারিদ্রতা আরো দারিদ্রতার দিকে ঠেলে দেয়।সেখানে পাটকল ছাড়া কোন কল - কারখানা নেই। পাটকলটি আমি পরিদর্শন করেছি। শিল্পের এই অবহেলা সেখানে বৃটিশ আমল থেকে। অধিবাসীরা সেখানে দারিদ্রতা ও নিরক্ষরতায় কবলিত। যদিও সেটি অতি সুন্দর একটি দেশ যেমনটা উস্তায মওদুদি র : বলেছিলেন। সেটি আল্লাহর কুদরতি হাতে বুনা সবুজ বিছানা। সেখানে রয়েছে নারিকেল গাছ, পেঁপে গাছ ও অন্যান্য বৃক্ষলতা।
জাতিসংঘ ও তার বিভিন্ন সংস্থা, পৃথিবীর উত্তরের উন্নত দেশগুলো, শিল্পে সমৃদ্ধ বড় বড় দেশগুলো, ওআইসি ও মুসলিম দেশগুলো বিশেষকরে উপসাগরীয় দেশগুলোর পক্ষ থেকে এদেশকে সহায়তা করা প্রয়োজন যাতে করে এদেশটি ধীরে ধীরে উন্নত বিশ্বের কাতারে শামিল হয়। এদেশের অধিবাসীদের রোগ, মূর্খতা ও দারিদ্রতার কারণে খ্রিস্টান মিশনারিগুলো এগুলো সুযোগ হিসাবে বেছে নিয়েছে। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করেছে যেগুলো তাদের দূরাস্থাগুলোকে সুযোগ হিসাবে ইউজ করবে।যাতে তাদেরকে ধর্ম থেকে বিমুখ করে ফিতনায় ফেলতে পারে যেমনটা তাদের চিরচারিত অভ্যাস। এজন্য ইসলামী এনজিও ও সংস্থাগুলোর উপর জরুরি হলো দ্রুত বাংলাদেশে তাদের মুসলিম ভাইদের পাশে গিয়ে দাড়িয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করা এবং তাদেরকে খ্রিস্টান মিশনারীর হিংস্র থাবা থেকে উদ্ধার করা।
পটিয়া মাদ্রাসা :
পটিয়া মাদ্রাসাটি চট্টগ্রামের একটি গ্রামে অবস্থিত। কৃষি জমি ও সবুজ ভূমির মাঝে অবস্থিত কিন্তু সেখানে থাকার হোটেল বা মেহমানদের বিশ্রামের জন্য জায়গা নেই। সেইজন্য তারা আমাকে মাদ্রাসা থেকে দূরে একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করলেন। সেটি অতি সাধারণ একটি হোটেল তবে রাতে ঘুমানোর জন্য উপযোগী। দিনের বেলায় সারাক্ষণ আমি মাদ্রাসাতেই থাকি। আর এই সফরে আমি আরাম আয়েশ চাই না। যাস্ট মানুষের মৌলিক চাহিদার নূন্যতম প্রয়োজন চাই।আর এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। আর আলহামদুলিল্লাহ আমি তাদের মত নই যারা সোনার চামচ মুখ নিয়ে বড় হয়েছে।বরং আমি গ্রামে প্রতিপালিত হয়েছি সেখানকার কঠিন জীবনের সাথে অভ্যস্ত হয়েছি যেমনটা বন্দি ও জেলজীবনে অভ্যস্ত হয়েছি। সুতরাং যে হোটেলে তারা আমাকে থাকার ব্যবস্থা করেছে তাতে কোন আশ্চর্যবোধ নেই। মিসরের হারবি কারাগারের জায়গাগুলোর চেয়ে এটা অনেক উত্তম। এই মাদ্রাসাটিকে আমি পেয়েছি তালিবুল ইলমে ভরপুর। তাদের অধিকাংশই মাদ্রাসার আভ্যন্তরীণ ছাত্রাবাসে থাকে। মাদ্রাসা তাদের জন্য থাকা, খাওয়া, কিতাব ও অন্যান্য সামগ্রীর ব্যবস্থান করে থাকে মুসলিমদের দান - খয়রাত থেকে। মনে হয় সেখানে ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে যেগুলো সেগুলোর উপর ওয়াকফ করা হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষকবৃন্দের সাথে সাক্ষাত করলাম। তাদের সাথে এলমি ও তারবিয়তি দায়িত্ব সম্পর্কে আলোচনা করলাম। বিশেষ করে তাদেরকে এ যুগ থেকে অনেক দূরে পেয়েছি। তারা শুধু পুরানো কিতাব পুস্তকের উপর বসবাস করে। তাদের গায়ে এই যুগের হাওয়া লাগে নিই যাতে রয়েছে কত আশ্চর্যজনক বিষয় ও বিবিধ সমস্যা।এমনিভাবে আমি ছাত্রদের সাথে সাক্ষাত করলাম দেখলাম তারা মানুষের দুনিয়া থেকে পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে আছে।আধুনিক জ্ঞান- বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, যুগের স্রোত ও সমসাময়িক সমস্যা সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না।সেই জন্য তারা স্বজাতির আধুনিক স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাসম্পন্নকারী বুদ্ধিজীবীদের থেকে অনেক দূরে থাকে ।তারা শুধু সাধারণ জনগণ ও নিরক্ষর লোকদের সাথে মুআমালত করে। এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করলাম তোমরা জামালুদ্দিন আফগানী সম্পর্কে কিছু জানো।অতঃপর সে মাথা নাড়ালো যে সে এই নাম কখনো শুনে নিই এবং ফিকহ, হাদীস ও তাফসীরের কোন কিতাবে পড়ে নিই। এভাবে ইমাম মুহাম্মদ আবদু, আল্লামা রশীদ রেজা, শায়েখ হাসানুল বান্না, শহীদ সায়্যেদ কুতুব, শায়েখ মুহাম্মদ গাজ্জালির কথা জিজ্ঞাসা করলাম অতঃপর সেই আগের মতই রিপ্লাই পেলাম।
কিন্তু যখন তাদেরকে মওদুদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম তখন তারা ক্রোধে উত্তেজিত হয়ে গেলো এবং বললো মওদুদি একজন পথভ্রষ্ট ও ইসলাম বিকৃতকারী।
এই আবহাওয়ার উপর সেই মাদ্রাসার ছাত্ররা বাস করতেছে। তারা এই সম্পর্কে কম - বেশী কিছুই জানে না আজহারে যেগুলোর নামকরণ করা হয়েছে মডার্ন সায়িন্স : পদার্থ, রসায়ন, প্রাণীবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, ভৌগোলিক, ইতিহাস, মনস্তত্ত্ববিদ্যা, নৈতিকবিদ্যা, সামাজিক বিজ্ঞান এবং দর্শন। নিজেকে এমন একটি বাহ্যিক অবস্থার সামনে পেলাম যেখানে নম্রতা, বুদ্ধিমত্তা ও ধীর - স্থিরতার সাথে আচরণ করা প্রয়োজন।আর তাদেরকে ধাক্কাদিয়ে কঠিনভাবে কিছু বলতে চাই নিই। তাহলে তারা আমার সমগ্র উপদেশ প্রত্যাখান করবে এবং আমার নসীহত থেকে কান বন্ধ করে রাখবে। তাদের কিছু দরসসমূহে উপস্থিত হলাম এবং তাদেরকে আরবী ভাষা ও শরয়ী এলেম সম্পর্কে প্রশ্ন করতে লাগলাম। তারা আমাকে হাদীসের একটি দরস দিতে বললো আর আমি বুখারীর প্রথম হাদীস ( আমলের প্রতিদান নিয়তের উপর নির্ভর করে, প্রতিটি ব্যক্তি তাই পাবে যা সে নিয়ত করে ..................। তাদের সামনে আমার মুখস্ত থেকে হাদীসটির সনদ বর্ণনা করলাম আর তাদেরকে বললাম হাদীসটি খবরে ওয়াহিদ পর্যায়ের। তবে পরবর্তীতে ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আনসারীর পর হাদীসটি মুতাওয়াতির হয়েছে। আর মুতাওয়াতির হওয়ার শর্ত হলো সাহাবীদের থেকে শুরু হওয়া। তাদের সামনে উলামায়েকেরামের কাছে হাদীসটির গুরুত্ব ও ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব আলোচনা করলাম এবং হাফিজ মুনযিরি রঃ তারগীব তারহীব কিতাবে নিয়তের বিষয়ে যে সকল হাদীস বর্ণনা করেছেন সেগুলোও আলোচনা করলাম এবং কোন জায়গাগুলোতে নিয়ত প্রভাব ফেলতে পারে আর কোন জায়গাগুলোতে প্রভাব ফেলতে পারে না সেগুলোও আলোচনা করলাম। এই হাদীসটির ব্যাখ্যা ফাতহুল বারী ও বোখারীর অন্যান্য ব্যাখ্যগ্রন্থে পড়েছি। তেমনিভাবে সেটির ব্যাখ্যা ইবনে রজব হাম্বলির জামিউল উলুম ওয়াল হুকমি ফি শারহে খমছিনা হাদিস মিন জাওয়ামিউল কালিম কিতাবে পড়েছি। শিক্ষক ও ছাত্ররা সবাই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে আর আমি হাদীসটি তাফসীর, ফিকহ, আকীদা ও আরবী সাহিত্য মিশিয়ে আমার নিকট বিদ্যমান অত্যাধিক উপাদান দিয়ে ব্যাখ্যা করে চলছি।
তারা আমার নিকট তাফসীর বিষয়ে একটি দরস প্রদানের অনুরোধ করলো আমি তাদের অনুরোধে সাড়া দিলাম। আমার মনে হচ্ছে সেটি ছিলো সূরা ফাতিহার তাফসীর আর কিছু ফিকহের দরসে উপস্থিত হলাম এবং তাদেরকে প্রশ্ন করলাম এবং বললাম আজহারে আমি হানাফি মাজহাব পড়েছি। আর সেটাই আমার রসমি মাজহাব। নুরুল ইজাহ পড়েছি এবং তার ব্যাখ্যাগ্রন্থ মারাকিয়াল ফালাহ পড়েছি। কুদুরী পড়েছি তার ব্যাখ্যাগ্রন্থ আললুবাব আলাল কিতাব পড়েছি এবং তার প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ আলমাইদানী আলাল কুদুরী পডেছি এবং ইবনে মওদুদ হানাফীর আলইখতিয়ার ফি শারহিল মুখতার পড়েছি। এই কিতাবগুলো আমি আজহারী মাদ্রাসাগুলোর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক লেবেলে পড়েছি। এরপর পার্সোনালভাবে আমি অনেক স্টাডি করেছি। যেমন ইবনে হুমামের হিদায়াহ ও তার ব্যাখ্যা, কাসানির আলবাদাইআ, ইবনে নাজিমের আলবাহরুর রইক, রদ্দুল মুহতার আলাদদুররুল মুখতার যেটি হাশিয়াহ ইবনে আবিদিননামে পরিচিত।
এবং নাহুর দরসসমূহে প্রবেশ করলাম এবং তাদেরকে অনেক প্রশ্ন করলাম সেগুলোর মাধ্যমে তারা আমার আরবীর ক্ষেত্রে আমার সক্ষমতা ও দখল জানতে পারলো। তাদেরকে প্রসিদ্ধ আলফিআতে ইবনে মালিক গ্রন্থ থেকে কিছু কবিতার লাইন পড়ে শুনালাম। আর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল শাইখ ইউনুস শিক্ষদের বললেন এই লোক দেখি আল্লাহর এক নিদর্শন। আমরা তাকে যাস্ট অল্প মৌলিক এলেমের অধিকারী সমসাময়িক দায়ী মনে করেছিলাম এখন দেখি তিনি তরঙ্গিত সমুদ্র । পুরানো ও আধুনিক সব এলেম হাসিল করে নিয়েছেন। তার মত কাউকে দেখি নিই। আর এটি আমার উপর আল্লাহর রহমত ছাড়া কিছুই ছিলো না। তিনি তাদের সামনে আমাকে সুসজ্জিত করেছেন এবং আমার দোষ - ত্রুটি গোপন করেছেন। আর ইবনে আতাউল্লাহ তার প্রজ্ঞাসমূহে বলেছেন যখন কেউ তোমার প্রশংসা করে তখন সেটি আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার উপর অনুগ্রহ। এবং অনুগ্রহ তার জন্য যিনি তোমাকে সম্মানিত করেছেন এবং তোমার দোষ গোপন করেছেন। অনুগ্রহ তার জন্য নয় যে তোমার প্রশংসা করেছে এবং কৃতজ্ঞতা করেছে। মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা সবাই আমার উপর অন্তরঙ্গতা প্রকাশ করেছে। তারা আমার পাশে দীর্ঘ সময় বসে থাকতো এবং ইসলাম সম্পর্কে, দাওয়াত সম্পর্কে, উম্মাহ সম্পর্কে এবং ইসলামের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে শুনতো। যা কোন দিন তাদের চিন্ত - ফিকিরে আসে নিই এবং তারা কোন দিন সেগুলো গুরুত্ব দেয় নিই। আমার ভিজিট থেকে তারা যেগুলো ইস্তাফাদা করেছে সেগুলোর সবচেয়ে গুুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তারা জেনেছে যে এলেম শুধু কিতাবেই সীমাবদ্ধ নয়। তাদের অধ্যয়নকৃত কিতাব ছাড়াও কিছু কিতাব আছে। তারা যে সকল শায়েখদের কাছে পড়েছে তারা ছাড়াও অনেক আলেম আছে যারা একেম ও ফিকিরে পরিপূর্ণ ছিলেন। এলেম হলো এমন সাগর যার কোন সৈকত নেই। আর আমাদের জন্য দ্বীন বুঝতে সহায়ক এমন কিছু দুনিয়ার নলেজ ও শিখা জরুরি। তাদেরকে একান্ত ভাবে বলেছি যাতে করে তারা মাদ্রাসার পাঠাগারে কিছু কিতাব সংযোজন করে। যেমন তাফসীরে মানার এবং শায়েখ জামালুদ্দিন কাসেমীর তাফসীর এবং আরো কিছু বই যেগুলো তাদের নাহু ও বালাগাত শিখাতে সহজ হবে যেমন আলি জারিম ও মুস্তফা আমিনের আননাহফুল ওয়াদিহ ও আলবালাগাতুল ওয়াদিহা। এছাড়াও তারা যাতে কিছু ইসলামী ম্যাগাজিনো রাখে যেমন কাতারের মাজাল্লাতুল উম্মাহ, কুয়েতের আলওয়াআইউল ইসলামী এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানারুল ইসলাম। তাদের আবদ্ধ পরিবেশে এই কথাগুলো শুনা ছিলো তাদের জন্য নিছক স্পষ্ট বিজয়। হয়তো তারা এগুলোর এক অক্ষরও বাস্তবায়ন করে নিই। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ছিলো ছাত্রদের কর্ণ কুহরে কথাগুলো পৌছানো যাতে তারা উপলব্ধি করতে পারে যে তাদের মাদ্রাসায় ছাড়াও অন্য জায়গায় আলেম আছে।
তাদের দেশেই খ্রিস্টান মিশনারীরা ইসলাম নিয়ে চক্রান্ত করছে যা তারা স্বচক্ষে দেখতেছে। পাশ্চাত্যের চিন্তা - চেতনাধারীরা তাদের চিন্তা - ফিকিরে বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এর চেয়েও ভয়ংকর হলো পশ্চিমাদের দোসর ধর্মনিরোপেক্ষবাদীরা। এই চক্রান্ত মোকাবেলা করার জন্য আবশ্যক হলো উপকারী এলেম, অন্তরদৃষ্টি সম্পন্ন ফিকির, মুক্ত সংস্কৃতি দিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করা। এই আবদ্ধতা শুধু পটিয়া মাদ্রাসার পরিবেশ নয়। বরং এটা বাংলাদেশের সকল দ্বিনি মাদ্রাসাগুলোর পরিবেশ। আমি তার অনেকগুলো পরিদর্শন করেছি।। যেমন হাটহাজারী মাদ্রাসা ও অন্যান্য। সেখানেও আমি একই পরিবেশ পেয়েছি। যদিও এক মাদ্রাসা থেকে অন্য মাদ্রাসার পর্যায়টা ভিন্ন। অনেককাল আগে আজহার ও প্রায় এসকল মাদ্রাসার মত ছিলো। কিন্তু তা সংস্করণের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে এবং তাদের সিলেবাসে আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান প্রবেশ করিয়েছে। যেমন : প্রাকৃতিক বিদ্যা, গণিত ও সামাজিক বিজ্ঞান। এগুলো মূলত আধুনিক জ্ঞান নয়। বরং এগুলোও আমাদের ইলম। অনেক শতাব্দী পর্যন্ত আমরা এসমস্ত বিষয়ে বিশ্বের উস্তাদ ছিলাম।
পাশ্চাত্যরা এগুলো আমাদের থেকে গ্রহণ করেছে আর এখন সেগুলো তাদের থেকে আমরা গ্রহণ করতেছি।
সেগুলো আমাদের পণ্য আমাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
পটিয়া মাদ্রাসার ভাইয়েরা আমাদের উপস্থিতিকে সুযোগ মনে করলো এবং অনেকগুলো প্রকল্প শুরু করলো এবং আমি নিজে হাতে সেগুলোর ভিত্তি প্রস্তর উদ্ভোধন করলাম। সেগুলোতে আমার নাম স্থাপন করা হলো। কামোনা করি যাতে সেগুলো প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেগুলোর মেসেজ পৌঁছানো হয়।
চট্টগ্রামে অবস্থানকালীন সময়ে আর্থিকভাবে দুর্বল সেখানকার ছোট ছোট অনেক দ্বিনি মাদ্রাসা পরিদর্শন করেছি। মাদ্রাসাগুলোর আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন যাতে সেগুলো নিজ পায়ে দাড়াতে পারে। কাতারের কিছু ভাই আমাকে তাদের জাকাত ও সদকার মালের দায়িত্ব দিয়েছিলো এবং আমাকে বলা হয়েছিলো আমি যেখানে ভালো মনে করি সেখানে যাতে এগুলো খরচ করি। অতঃপর আমি মনে করলাম। এই সকল জাকাতও সদকার মালের অধিক হকদার হলেন এই সমস্ত মাদ্রাসাওয়ালারা। তারা অল্প পরিমাণেই খুশি হতো এবং স্বল্পতেই তারা তুষ্ট হতো। আল্লাহর তাদের স্বল্প পরিমাণের মাঝে বরকত দান করুক এবং বৃদ্ধি করে দিক।
তারপর গণবক্তৃতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিরাট শহরের পরিদর্শনের সমাপ্তি করলাম যেটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। যেমনটা ইতিপূর্বে ইংগিত দিয়েছি।
তারপর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইসলাম , তার মেসেজ , তার সভ্যতা ও উম্মাহর সমস্যা সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিলাম। তারপর পটিয়া মাদ্রাসার ভাইদের থেকে বিদায় নিয়ে তাদের কিছু ভাইদের সঙ্গে চট্রগ্রাম ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। তারা ঢাকায় একটি বিশাল মসজিদে আমাকে জুমুআর খুতবা দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন। কিছু আলেম নামাজের পর খুতবার অনুবাদ করলেন।
আমার জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় পরিদর্শনের সুযোগ হলো এবং সেখানে আমি ভাষণ দিলাম। তারপর তাদের সাথে বিশেষভাবে সাক্ষাত করলাম। যাতে করে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি। আমি তাদেরকে আরব বিশ্বে তাদের ভাইদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থাসমূহ জানালাম। আর জামাতের প্রথম লোক প্রফেসর গোলাম আজম সাহেবের তখনো দেশে প্রবেশের অনুমতি হয় নিই। কেবনা তিনি পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানের পৃথক হওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। ফলে তারা তার নাগরিক্ত রহিত করেছিলো। অথচ তিনি এই মূল দেশের সন্তান।
এই পরিপূর্ণ অবস্থানের পর বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সে দোহায় ফিরে আসাটা জরুরী ছিলো। ঢাকা থেকে দোহায় সরাসরি ফ্লাইটে প্রায় পাঁচ ঘন্টার সফর ছিলো।
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। অনুবাদক : মুফতি আহমাদ শাওকি আফিফি
Courtesy- Ahmad Shawki Afifi.

শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯

চট্টগ্রাম মহানগরী আমীরসহ ১২ জন নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে নেতৃবৃন্দের বিবৃতি


চট্টগ্রাম, ৩০ আগষ্ট-২০১৯ইং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর জননেতা মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলামসহ নগর জামায়াতের ১২ জন নেতাকে ঘরোয়া বৈঠক থেকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তির দাবী জানিয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচালক, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ.ন.ম.শামসুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী অধ্যাপক আহছানুল্লাহ্, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আমিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর জনাব মুহাম্মদ জাফর সাদেক, কক্সবাজার জেলা আমীর মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, রাঙ্গামাটি জেলা আমীর অধ্যাপক আবদুল আলিম, খাগড়াছড়ি জেলা আমীর অধ্যাপক আবদুল মোমেন ও বান্দরবান জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুস সালাম আজাদ এক যুক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন। 
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি বৈধ গণতান্ত্রিক দল। সকল প্রকার সভা,সমাবেশ ও ঘরোয়া মিটিং করার অধিকার জামায়াতের রয়েছে। এ অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানই জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দলকে দিয়েছে। অতএব ঘরোয়া বৈঠককে গোপন বৈঠক আখ্যা দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে নগর জামায়াত নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করা শুধু অনৈতিকই নয় বরং সংবিধানের চরম লঙ্গন, সম্পুর্ণ অন্যায়,অনভিপ্রেত ও মহাজুলুমের শামিল। আমরা এহেন অন্যায় ও ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেফতারের তীব্র নিন্দ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তির দাবী করছি। সাথে সাথে সরকার ও প্রশাসনের এহেন জঘন্যতম জুলুম ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্বচ্ছার হওয়া ও ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯

১৯৭২সাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন রাষ্ট্রপতি।হারামজাদাদেরকে তো ইসলামি কোন পত্রিকা বন্ধ করতে বলিনি! -------------------বঙ্গবন্ধু।


অনেক পত্রিকার সাথে মাসিক মদীনার ডিকলারেশন তথ্য মন্ত্রণালয় বন্ধ করে দিয়েছে।
এই সময়ে হঠাৎ মাসিক মদীনার সম্পাদক মুহিউদ্দীন খানের কাছে একটি চিঠি এলো টুঙ্গিপাড়া থেকে।
লিখেছেন বঙ্গবন্ধুর সম্মানিত পিতা শেখ লুৎফুর রহমান।
শ্রদ্ধেয় সম্পাদক সাহেব!
সালাম নিবেন। আশাকরি কুশলেই আছেন। পর কথা হল, আমি মাসিক মদীনার একজন নিয়মিত গ্রাহক। গত দু’মাস ধরে মদীনা পত্রিকা আমার নামে আসছে না। তিন মাসের বকেয়া বাকি ছিল। তাই হয়তো আপনি পত্রিকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি মুজিবকে চিঠি লিখে বলে দিব, সে যেন আপনার টাকা পরিশোধ করে দেয়। আমি বৃদ্ধ মানুষ। প্রিয় মদীনা পত্রিকা ছাড়া সময় কাটানো অনেক কষ্টকর। আশাকরি আগামী মাস থেকে মদীনা পড়তে পারব। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমিও আপনার জন্য দোয়া করি।
ইতি
শেখ লুৎফুর রহমান
টুঙ্গিপাড়া, ফরিদপুর।
মুহিউদ্দীন খান চিঠি পাওয়া মাত্রই পকেটে ভরে বঙ্গভবনে চলে গেলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে দেখে বললেন, তুই এতোদিন পর আমাকে দেখতে এলি। এখানে বসার পর সবাই যেন দূরে চলে গেছে। পর হয়ে গেছে। মুহিদ্দীন খান বললেন, আমার পত্রিকার ডিকলারেশন তো তথ্য মন্ত্রনালয় বাতিল করে দিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু বললেন ‘তুই তো রাজাকার ছিলি না, তাহলে তর পত্রিকা ওরা বন্ধ করবে কেন?
পিএসকে বললেন, তথ্য সচীবকে কল লাগাও।’
(বিস্তারিত দেখুন, আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে, শাকের হুসেন শিবলী)
তখন মুহিদ্দীন খান শেরওয়ানীর পকেট থেকে চিঠিটা বের করে বঙ্গবন্ধুর হাতে দিলেন। বাবার হাতের পরিচিত লেখা দেখেই তিনি একশ্বাসে পড়ে ফেললেন। পড়া শেষ করার আগেই চোখ পানিতে ভড়ে গেল। দাড়িয়ে মুহিউদ্দীন খানকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকলেন। বললেন, তুই আমার কাছে আরো আগে কেন আসলি না? হারামজাদাদেরকে তো ইসলামি কোন পত্রিকা বন্ধ করতে বলিনি। আজ আমার বাবা দুনিয়াতে নেই। গত কয়েকদিন আগে তিনি ইন্তেকাল করেছেন।
বঙ্গবন্ধু পরে তথ্য সচীবকে ফোন করে বকাঝকা করলেন। এখন মদীনার ডিকলারেশন চালু করে দিতে হুকুম দিলেন।
বঙ্গবন্ধু হাত ধরে তার স্নেহভাজন খানকে গাড়িতে তুলে বাসায় নিয়ে গেলেন। সাথে বসিয়ে দুপুরের খাবার খাইয়ে বিদায় দিলেন।
(সাপ্তাহিক মুসলিম জাহান মার্চ ২০০৯, আস সিরাজ, মুহিউদ্দীন খান সংখ্যা)
আরো আগের ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর ১৯৫১ সালের কথা।
মুহিউদ্দীন খান প্রথম ঢাকাতে এলেন। উঠেছেন বাবার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরীর লালবাগ মাদরাসায়। ফরিদপুরীর কাছেই থাকতেন।
সেখানে নিয়মিত আসা যাওয়া করতেন তরুন ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা। তারপর থেকে বঙ্গবন্ধু খানকে তুই তুকার করে ডাকতেন ছোট ভাইর মতো।
৫২ ভাষা আন্দোলনের সময় উভয় কারাগারে বন্দি হন। দেড় মাস জেল খাটেন মুহিউদ্দীন খান সাহেব।
এখন শোকাবহ আগষ্ট মাস। বঙ্গবন্ধু নেই। নেই মুহিউদ্দীন খান। কিন্তু তাদের স্মৃতি রবে চির অম্লান।
(সংগৃহীত)
Mukhlesur Rahman ভাই থেকে।

সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯

মিনিকেট চালের নামে প্রতারণা

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ মিনিকেট বা মিনিকিট নামে কোনো ধান বা চাল নেই, অথচ এই চালে বাজার ছয়লাপ। (মিনিকেট নামের যে ধান/চাল টা পাওয়া যায় তার আসল নাম #IEP_4786.) কেনাবেচার শীর্ষে থাকা এই চালের উৎস খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে যে মোটা চাল ইচ্ছেমত ছাঁটাই ও পালিশ করে মিনিকেট নামকরণ করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। পুষ্টিহীন এই ধরনের চালের ভাতে অভ্যস্ত হলে কোলেন ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসের মত মারণ রোগের ঝুঁকি বাড়ে বলে সতর্ক করেছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। রাইসমিলে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত্য ছাঁটাইয়ের অনুমোদন থাকলেও , ছাঁটাই হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চাল । পালিশ করতে প্রয়োগ হচ্ছে নানাবিধ ক্ষতিকর কেমিক্যালস । ফলস্বরূপ চাল হচ্ছে সদা ,ঝকঝকে ও চিকন সুন্দর । তৈরী হচ্ছে দেখতে সুন্দর ও আকর্ষনীয় একপ্রকার সরু চাল, যার নাম মিনিকেট । আসলে এটি মোটা নিম্ন মানের চালের ভিতরের অংশ । এভাবে তৈরী হচ্ছে নাজির শাল ও পাজাম নামের চালও । অত্যধিক ছাঁটাইয়ের ফলে এই চালের খাদ্যগুণ অর্থাৎ মিনারেল, ভিটামিন, ফাইবার , প্রোটিন, এন্টিঅক্সিডেন্ট কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না । থাকে শুধু কার্বোহাইড্রেট। এই চালের ভাতের অভ্যস্তদের লাইফস্টাইল ডিসিস হবার ঝুঁকি প্রবল । ডায়াবেটিস , ক্যান্সার , রক্তচাপ , অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদির সম্ভাবনা বহুগুনে বেড়ে যায় । বার্ধক্য আসে দ্রুত । তবে রোগের এই সম্ভাবনা স্বত্তেও নেই কোনো সচেতনতা । এই চাল দ্রুত রান্না হয় ও ভাত দেখতে হয় সাদা ধপধপে এবং সুন্দর । তাই এই চালের জনপ্রিয়তা বাড়ছে প্রতিদিন । জনস্বাস্থ্য ঠিক রাখতে মিনিকেট চাল পরিহার করতে নাগরিকদের আহ্বান করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি চালকলগুলিতে সরকারী নজরদারি বাড়াতে সুপারিশ করছেন তাঁরা।
□ মিনিকেট চালের আসল সত্য
****************************
১৯৯৫ সালের দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতের কৃষকদের মাঝে দেশের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন জাতের চিকন শতাব্দী ধান বীজ বিতরণ করে। মাঠপর্যায়ে চাষের জন্য কৃষকদেরকে এ ধান বীজের সঙ্গে আরো কিছু কৃষি উপকরণসহ একটি মিনিপ্যাকেট প্রদান করে ভারতীয় সরকার।যে প্যাকেটটাকে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বলতো ‘মিনি কিটস’ সেখান থেকেই সেই ধানের নাম হয়ে যায় ‘মিনিকেট’। আবার অনেকে বলেন ‘মিনিপ্যাকেটে করে দেয়ায় ভারতীয় কৃষকদের কাছে এ ধান শেষমেষ মিনিকিট বলে পরিচিতি লাভ করে। কৃষকরা মিনিপ্যাকেট শব্দটির মধ্য থেকে ‘প্যা’ অক্ষরটি বাদ দিয়ে মিনিকেট বলে পরিচয় দিতে শুরু করে’। তবে ঘটনা যাই হোক মিনিকেট নামে কোনো চাল বাজারে নেই এটাই সত্য কথা।

□ মিনিকেট চাল প্রস্তুত প্রণালী
***************************
মোটা চালকে পলিশ করে মিনিকেট চাল বলে বিক্রি করা হচ্ছে। অটোরাইস মিলে রয়েছে একটি অতি বেগুনি রশ্মির ডিজিটাল সেন্সর প্ল্যান্ট। এর মধ্য দিয়ে যেকোনো ধান বা চাল পার হলে সেটি থেকে প্রথমে কালো, ময়লা ও পাথর সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর মোটা ধান চলে যায় অটোমিলের বয়লার ইউনিটে। সেখানে পর্যায়ক্রমে ৫টি ধাপ পার হবার পর লাল কিংবা মোটা চাল সাদা রংয়ের আকার ধারণ করে। এরপর আসে পলিশিং মেশিনে। অতি সূক্ষ্ম এই মেশিনে মোটা চালের চারপাশ কেটে চালটিকে চিকন আকার দেওয়া হয়। এরপর সেটি আবারও পলিশ ও স্টিম দিয়ে চকচকে শক্ত আকার দেওয়া হয়। শেষে সেটি হয়ে যায় সেই কথিত এবং আকর্ষণীয় মিনিকেট চাল।
(সংগৃহীত)
মিনিকেট নামের ধান আছে এবং সেটা আমরা চাষ করু। obviously সেই ধান থেকে চালও হয়। কিন্তু সেই ধান টির অফিসিয়াল নাম IET 4786 (ডাকনাম- শতাব্দী). IET stands for initial evaluation trial. বাস্তব হল কোনো একসময় IET-4786 নামের ধানটি মিনিকেট হিসাবে কৃষকদের বিলি করা হয়েছিল। সেই ধানটা জনপ্রিয় হয়ে যায়। কৃষকরা ঐ নাম মনে রাখতে পারেন নাই। মিনিকেট পেয়েছেন, তাই ধানের নাম মিনিকেট হয়ে যায়। ( Jaydeep Mukhopadhyay এর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য।)
Towfique Ahmed Chowdhury.

ডাঃ জাকির নায়েক ইস্যু:মালয়েশিয়া রাজনীতি উত্তপ্ত! : মাওলানা মামুন হোসাইন হাবিবীর ওয়াল থেকে ।


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ডা. জাকির নায়েক ইস্যুতে মালয়েশিয়ান রাজনীতি বেশ টালমাটাল। নানান কথা আলোচনার টেবিলে। পক্ষ-বিপক্ষের তর্কাতর্কি তুঙ্গে। ড. জাকির নায়েক পুলিশের নজরদারিতে। মালয় পুলিশ প্রধান বলেছেন, "আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ইনভেস্টিগেশন করছি।” শেষ পর্যন্ত ঘটনাটি যে আদালত পাড়ায় যাচ্ছে তা মোটামুটি নিশ্চিত। ফাইলবন্দি হয়ে জজের টেবিলে ঠাঁই নিবে পুরো ঘটনা। 

মন্ত্রীপরিষদ দু ভাগে বিভক্ত। অধিকাংশরা ডা. জাকির নায়েকের মন্তব্যকে খুব সাধারণ কথা মনে করলেও বাকিরা তার মন্তব্যকে ধর্মীয় বিদ্বেষ হিসাবে আমলে নিয়েছেন। তিনজন মন্ত্রী আদাজল খেয়ে লেগেছেন ড. নায়েকের বিরুদ্ধে। একজন হিন্দু, একজন শিখ অন্যজন বৌদ্ধ। এই তিনে মিলে হয়েছেন এক। তারা ইন্ডিয়া এবং ভারতের ডিপ্লোম্যাটিক সাপোর্ট এবং কু পরামর্শ খুব ভালো করেই পাচ্ছেন। ভারত সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার ধরার চেষ্টায় আছে মোদী সরকার। সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ড. জাকির নায়েককে ভারতে ফেরত আনতে।

তবে মালয়েশিয়ান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মুহাম্মদ বলেছেন, "আমরা তাঁকে ভারত পাঠালে তিনি নিহত হতে পারেন। একাজ করতে চাইনা। অন্যকোন দেশ তাঁকে নিতে চাইলে অবশ্যই সাধুবাদ জানাবো।”

যে মন্তবের জেরে তিনি বিরোধীদের চক্ষুশূল।

গত ৮ আগস্টে একটি সেমিনারে তাঁর কিছু মন্তব্য কাটছাঁট করে সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। আর তাতেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে ইসলাম বিদ্বেষীরা। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে ডা. জাকির নায়েককে আইনের আওতায় আনতে মালয় সরকারের উপর চাপ বাড়াতে থাকে। এই চাপাচাপি বাড়ছে বৈ কমছে না।

মন্তব্য ১।

তাঁকে বেশ কিছুদিন যাবৎ কট্টর ইসলাম বিদ্বেষীরা 'নতুন গেস্ট' (বাংলায় যাকে নতুন পাগল বলা হয়) বলে তিরস্কার করা হচ্ছিল। নতুন অতিথিকে তার দেশে ফেরত পাঠাতে সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছিল। তাদের এমন অযৌক্তিক কথাবার্তার জবাবে বলেন,

"আমাকে নতুন অতিথি বলে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার আগে চাইনিজদেরকে আগে পাঠানো উচিত। কারণ, চাইনিজরা এ দেশে অতিথি হয়েই এসেছিল। তারপর তারা নাগরিক হয়। সুতরাং নতুন অতিথিকে ফেরত পাঠানোর আগে পুরনো অতিথিকে ফেরত পাঠানো যৌক্তিক।"

মন্তব্য ২।

দ্বিতীয় মন্তব্যটি করেন ইসলামের মহানুভবতা নিয়ে। বিষয়টি পরিষ্কার করতে একটি উদাহরণ টানেন।
তিনি বলেন,

"মালয়েশিয়াতে মাত্র ৬.৫ ভাগ মানুষ হিন্দু। তবুও তারা ইন্ডিয়ান মুসলিমদের থেকে ১০০ গুণ বেশি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। এতো বিশাল সুবিধা নিয়েও সাপোর্ট করার সময় তারা মাহাথির মুহাম্মদের চেয়ে নরেন্দ্র মোদীকেই প্রেফার করে। আমি বলছিনা যে, এটা বন্ধ করতে হবে। বুঝাতে চাচ্ছি, ইসলাম যথেষ্ট সহনশীল। অন্যায়ভাবে কাউকে আঘাত করে না।”

তাঁর এই দুই মন্তব্যকেই লুফে নেয় বিরোধীরা। তারা মনে করছে, এসব কথার মাধ্যমে সম্প্রীতির মালয়েশিয়াতে জঙ্গিবাদের সূচনা হবে। আর তারা সেই কাটছাঁট মন্তব্যের ক্লিপ হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে দেয় নেট দুনিয়ায়। মুহূর্তেই হৈচৈ পড়ে যায় সর্বত্র। সুযোগকে কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠে অনেকেই। ড. জাকির নায়েক যে নতুন করে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছে তা মোটামুটি নিশ্চিত।

ডা. জাকির নায়েকের মাসলাক ভিন্ন হতে পারে। তাঁর মতাদর্শের সাথে পূর্ণ একমত নাও হতে পারি। তদুপরি তিনি আমাদের। তিনি আমাদের ভাই। তিনি আজ চূড়ান্ত মজলুম। একের পর এক শত্রুর তালিকা লম্বা হচ্ছে। তাঁর সাথে যারা শত্রুতা করছে তারা কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশে করছে না। সম্পদের জেরে শত্রুতা তৈরি হচ্ছে না। বৈরিতা সৃষ্টি হচ্ছে শুধু ইসলামের কারণে। তাঁর লেকচারের এফেক্ট দেখেই বিরোধীরা রক্তচোষা শত্রুতে পরিণত হচ্ছে।

আমরা বাংলাদেশ থেকে তেমন কিছু করতে পারবো না। আমাদের সেই সক্ষমতা নেই। লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়াও অসম্ভব। আশ্রয়ও দিতে পারবো না। আমরা পারবো শুধু দুয়া করতে। আর আমাদের জন্য আপাতত দুয়াই প্রধান অস্ত্র। মজলুম এই দা'ঈ-এর জন্য রবের দরবারে কায়মনোবাক্যে দুয়া করি। আল্লাহ যেন তাঁকে সব ধরনের মুশকিলাত থেকে মুক্তি দেন।

সব ধরনের সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে আপাতত তাঁর জন্য দুয়া করি। কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নন। সুতরাং তাঁকেও ভুলের ঊর্ধ্বে ভাবি না। ভাবাটা ঠিক নয়।

তবে এখন সেই ভুলগুলো প্রচার করা তাঁর প্রতি আরেক ধরনের জুলুম। এখন ইহসানের সময়; সমালোচনার নয়।

শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯

ডেঙ্গুজ্বর থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য ২ আগস্ট শুক্রবার থেকে আগামী ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধের জন্য ২ আগস্ট শুক্রবার থেকে আগামী ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমত ও সাহায্য কামনা করে দোয়া করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান। 

১ আগস্ট’১৯ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এডিস মশার কামড়ে সৃষ্ট ডেঙ্গুজ্বর ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ডেঙ্গুজ্বরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সতর্ক হতে হবে এবং জনগণকে সচেতন করতে হবে ও এডিস মশা ধ্বংস এবং ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

এ পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫০ জনের অধিক সংখ্যক লোক ইন্তেকাল করেছেন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৫ হাজারের অধিক সংখ্যক লোক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন।

প্রতি মিনিটে ১জন করে লোক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশের জনগণের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ লাভ করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ২ আগস্ট শুক্রবার থেকে আগামী ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী নিম্নোক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করছিঃ-

১) এডিস মশাসহ সকল মশার আবাসস্থল ধ্বংস করতে হবে; 
২) বাড়ির আশ-পাশে অবস্থিত খাল, পুকুর, ডোবা, নালা-নর্দমা ইত্যাদি থেকে কচুরিপানাসহ সকল আগাছা ও ময়লা আবর্জনা তুলে ফেলতে হবে এবং ঝোঁপ-ঝাড় কেটে পরিস্কার করতে হবে;
৩) বাড়ী-ঘরে সকাল-সন্ধ্যা দু’বেলা ধূপ জ্বালাতে হবে; 
৪) বাড়ি-ঘর, বাগান, উঠান এবং এর চার পাশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে; 
৫) ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, ভাঙ্গা হাড়ি-পাতিল, বালতি- কনটেইনার ইত্যাদিতে যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে নজর দিতে হবে। ঐ সব পাত্রে তিন দিনের বেশি যেন পানি জমে না থাকে সে দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে;
৬) এসি ও ফ্রিজের পানি নিয়মিত অপসারণ করতে হবে;
৭) যে সমস্ত ডোবা ও নালা-নর্দমায় মাছ বা পানিতে বসবাসকারী কোন প্রাণী নেই সেখানে নিয়মিত ঔষধ ছিটিয়ে মশার লার্ভা ধ্বংস করতে হবে; 
৮) দিনে বা রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে; 
৯) সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত রোগীর পাশে দাঁড়াতে হবে। সর্বোপরি জ্বরে আক্রান্ত হলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে;
১০) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের সর্বাত্মকভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে;
১১) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের আতংকিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ ও শান্ত্বনা দিতে হবে।

ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ঘোষিত উপরোক্ত সপ্তাহ ব্যাপী কর্মসূচি সফল করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল সাংগঠনিক শাখার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এবং দেশবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। সেই সাথে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের রাহমাত ও সাহায্য কামনা করে বিগলিত চিত্তে কায়মনো বাক্যে দোয়া করার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

রবিবার, ১৯ মে, ২০১৯

ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য পীযূষ বন্দোপাধ্যায় আইন ও সংবিধান লংঘন করেছেন : জামায়াত

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামক একটি সংগঠনের প্রধান পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় “দাঁড়ি, টুপি এবং টাখনুর ওপর কাপড় পরা জঙ্গিবাদের লক্ষণ” মর্মে ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে যে কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
এ ব্যাপারে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, “সম্প্রীতি বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠনের প্রধান পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘দাঁড়ি, টুপি এবং টাখনুর ওপর কাপড় পরা জঙ্গিবাদের লক্ষণ’ মর্মে ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করে দেশের আইন ও সংবিধান লংঘন করেছেন। আমি তার এ ধরনের গর্হিত আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার কোনো এখতিয়ার তার নেই। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অধিকারের উপর আঘাত দিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করেছেন। তার মন্তব্য থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, তিনি একজন চরম সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি। তার এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য আমি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় তাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
৪৫ নারীকে গ্রেফতারের নিন্দা 
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাট বোয়ালিয়া গ্রামের একটি বাড়িতে আয়োজিত ইফতার মাহফিল থেকে বাড়ির মালিকসহ ৪৫ নারীকে গ্রেফতার করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর এবং সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, তাদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করার মাধ্যমে সরকার তাদের ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছে।

তিনি বলেন, রমযানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকেরই আছে। এ অধিকারে বাধা দিয়ে নারীদের গ্রেফতার করে সরকার দেশের সংবিধান ও আইন লংঘন করেছে। দেশের মানুষের ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ করা সরকারের দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালন না করে সরকার সংবিধান লংঘন করেছে।
সরকারের এহেন অন্যায় আচরণের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের আইন ও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে অবিলম্বে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাট বোয়ালিয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতারকৃত সবাইকে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। 

বুধবার, ১ মে, ২০১৯

চট্টগ্রামে ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত। শোষণ,ক্ষুধা,দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত একটি ইনসাফপুর্ণ সমাজ গড়তে হবে। ...........শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চ,মহানগরী।

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন ১লা মে নির্যাতিত নিপীড়িত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় ও স্বীকৃতি পাওয়ার দিন। বিশ্বব্যাপী এ দিবস শ্রম জাগরণের দিবস। পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র,ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ ও জাতীয়তাবাদ যুগের পর যুগ ধরে শ্রমিক অধিকারের পক্ষে মন ভুলানো চটকদার কথা বললেও শ্রমিকদের কল্যাণে ভুমিকা রাখেনি, বরং শ্রমিকদের স্বার্থ খর্ব করেছে। আদর্শহীন রাজনীতি শ্রমিকদের কল্যানের পরিবর্তে বঞ্চনা করেছেই বেশী। এসব রাজনৈতিক নেতারা শ্রমিকের বন্ধু সেজে মুলত শ্রমিকদেরকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসাবে ব্যাবহার করেছে।
বক্তারা বলেন শ্রমিকদের মুক্তির পথ কেবলমাত্র একটি তা হলো ইসলামী শ্রমনীতি। ইসলামী শ্রমনীতিই শ্রমিকদের মুক্তির একমাত্র সনদ। ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠিত হলে শোষন, ক্ষুধা,দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত একটি ইনসাফপুর্ণ সমাজ গড়া সম্ভব। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করছে। সমাবেশে বক্তারা পবিত্র মাহে রমযানে হোটেল শ্রমিক ছাঁটাই ও নির্যাতন বন্ধ,সর্বস্তরের শ্রমিকদের ১৫ রমযানের পুর্বেই বেতন বোনাস প্রদান করার দাবী জানান।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী উদ্যোগে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের খান। কেন্দ্রীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরী সাধারণ সম্পাদক এস,এম,লুৎফর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন মহানগরী সহ-সভাপতি ডা: আব্দুল ওয়াছি, বন্দর শ্রমিক নেতা কাজী জাহাঙ্গীর হোসাইন, পতেঙ্গা থানা সভাপতি এনামুল কবির,সদর অঞ্চল সভাপতি মকবুল আহমদ, ডক শ্রমিক নেতা আবু তালেব চৌধুরী, বাকলিয়া থানা সভাপতি আসাদুল্লাহ আদিল, বায়েজিদ থানা সভাপতি মো: জাহাঙ্গীর আলম, চকবাজার থানা সভাপতি আবদুল আজিজ শোয়াইব, নির্মান শ্রমিক নেতা মো: ইব্রাহিম, হোটেল শ্রমিক নেতা মো: নুরুন্নবী, সদরঘাট থানা সভাপতি রফিকুল আলম, ইপিজেড থানা সভাপতি আবুল কাশেম আযাদ, পাহাড়তলী থানা সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমদ, রিকসা শ্রমিক নেতা মো: আলমগীর, শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে এক বিশাল মিছিল নগরীর বড়পুল থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে।

সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৯

মজিবুর রহমান মন্জু ভাই -ড. আবদুস সালাম আজাদী


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আমি যখন চিটাগাং এ, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় এর দায়িত্বশীল। পরে সিপি হয়েছেন। তিনি একজন সংবেদনশীল সমাজদরদী ও চতুর্মুখী যোগ্যতার অধিকারী ব্যক্তি। জীবনে তার সাথে কথা হয়নি, মত বিনিময় হয়নি, তার সহবত ও পাইনি কোন দিন। কিন্তু তার কথা ভালো লাগে। 

তাকে জামায়াতে ধরে রাখা যায়নি এটা জামায়াতের ব্যর্থতা, তবে তিনিও জামায়াতে থাকতে পারেননি এটাও বলবোনা। 

তিনি নতুন দল গঠন করেছেন, এবং ইসলামি রাজনীতির ভিন্ন ধারা তৈরী করার ইচ্ছা করেছেন এটা অত্যন্ত প্রশংসার কাজ।

জামায়াত কোন অর্বাচীন দল নয় যে এই পরিবর্তন ট্যাকল করতে পারবেনা। এটা এমন দল নয় যে তার জীবনে ভাঙন আসেনি। ইমাম আবুল হাসান আলী নাদভীর পদত্যাগ, মাওলানি মনজুর নো'মানীর পদত্যাগ, ড: ইসরার আহমাদের ভাঙন, কাজী হুসায়ন আহমদের প্রথম ভাঙন, শায়খ আবদুর রহীমগণের জামায়াত ত্যাগের কাছে মন্জু ভাইয়ের টা নস্যি। এটা জামায়াতের কাজের কন্টিনিউয়েশান।

জামায়াতে ইসলামী প্রধানত: দ্বীন মেনে রাজনীতি করতে চায়, ফলে তার পরিবর্তন আনা হয়ত সম্ভব হয়না। তাই আজ কতকটা স্ট্যাগনান্ট। কিন্তু মন্জু ভাইরা আলাদা কনসেপশান নিয়ে আসতে চান। ফলে আমার প্রতিটি জনতার আকাঙ্খা জামায়াতের থ্রেট হবেনা। 

তিনি রাজনীতি সামনে নিয়ে কাজ করবেন। ফলে দেশের মিডিয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসার ক্ষেত্রগুলোতে, ব্যাংকিংসহ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তার কাজ শুরু হবে। সেখানে তিনি নিরবে কাজ করতে থাকবেন। 

জামায়াত শিবিরের ভাইয়েরা পোড় খাওয়া দাঈ ইলাল্লাহ, আত্মত্যাগকারী, ময়দানের খুঁটি ও ইসলামের সেবক। তাদের সময় কই নিজেদের ভাইদের সাথে ঝগড়া করার।

মন্জু ভাই দেশের মানুষকে আশা দিতে চান। পানির স্রোতে চলা মানুষকে তিনি টানতে থাকুন। জামায়াতের কাজ যখন তার মত চলেনি, তখন ঐদিকে আর তাকায়ে লাভ কি?

আমার আব্বা ও চাচা পৃথক হলে দোকানের খরিদ্দারদের নিয়ে বিপদ শুরু হয়। তারা আগে এক দোকান থেকে কিনতেন। এখন দুই দোকান। দুই ভাই তাদের পণ্যের দাম কমিয়ে ক্লায়েন্ট ধরার চেষ্টা করতেন। পরে দুইজনের দোকান লাঠে ওঠে। 

আমি মনে করি জামায়াত ভাঙেনি। জামায়াতের একজন ভাই একটা দল বানায়েছেন। যার সাথে জামায়াতের মৌলিক পার্থক্য আছে। কাজেই কারো মধ্যে “নিসবতে তাবায়ুন” থাকবেনা। থাকবে “নিসবতে আম খাছ মিন অজহিন”।

ইসলামী চিন্তাবিদ ও সাবেক প্রফেসর, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম।

সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৯

“সেপারেশন সন্তানের জন্য অভিশাপ"

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ সেদিনটির কথা আমি কখনোই ভুলবো না, যেদিন কোর্টে বাবা মায়ের সেপারেশনের সময় মা কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, "আপনি কাকে চান, ছেলে কে না মেয়েকে?? "
মা তখন ছেলেকে চেয়েছিল, আমাকে চায়নি। বাবাও তখন আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। কারণ তিনি আবার বিয়ে করে নতুন সংসার করার স্বপ্ন দেখেছিলেন, অযথা আমাকে নিয়ে নতুন সংসারে বোঝা বাড়াতে চাননি।
কাঠের বেঞ্চিতে বসে যখন অঝোরে কাঁদছিলাম তখন বুকে আগলে ধরেছিলেন এক লেডি কনস্টেবল। আশ্রয় দিয়েছিলেন তার বাড়িতে। কিন্তু তার মাতাল স্বামীর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছিল আমার উপর। শিশু বয়সে অত কিছু না বুঝলে ও কেমন যেন খারাপ লাগতো। রাতে যখন আন্টি বাসায় ফিরতেন, আমি তাকে সব বলে দিতাম। মহিলা দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। অতঃপর আমার নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি আমাকে একটা এতিমখানায় রেখে আসলেন। যাবার সময় আমাকে দু হাতে জড়িয়ে ধরে যেমন করে কাঁদলেন, আমার মাও আমাকে রেখে যাওয়ার সময় ওভাবে কাঁদেনি।
দিন যায়-মাস যায়, এতিমখানাতেই জীবন কাটতে থাকে আমার। খুব অসহায় লাগতো নিজেকে। বাবা মা বেঁচে থাকতে ও যে শিশুকে এতিমখানায় থাকতে হয় তার থেকে অসহায় বুঝি আর কেউ নেই!!
বছর দু'য়েক পরের কথা। এক নিঃসন্তান ডাক্তার দম্পতি আমাকে দত্তক নেন। জীবনটাই পাল্টে গেল আমার। হেসে খেলে রাজকীয় ভাবে বড় হতে লাগলাম আমি। আমার নতুন বাবা মা আমাকে তাঁদের মতই ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার একগুঁয়ে ইচ্ছে ছিল একটাই, আমি ল'ইয়ার হবো। আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে আজ আমি একজন ডিভোর্স ল' ইয়ার। যারাই আমার কাছে তালাকের জন্য আসে, আগেই আমি বাচ্চার কাস্টোডির জন্য তাদের রাজি করাই। কারণ বাবা মা ছাড়া একটা শিশু যে কতটা অসহায়, তা আমি ছাড়া কেউ জানে না!!

চেম্বারে বসে খবরের কাগজ পড়ছিলাম। হঠাৎ একটা নিউজে চোখ আটকে গেল। এক বৃদ্ধা মহিলাকে তার ছেলে আর বউ মিলে বস্তায় ভরে রেলস্টেশনে ফেলে রেখে গেছে। পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। নিচে বৃদ্ধা মহিলার ছবি দেয়া। মুখটা খুব চেনা চেনা লাগছিল। কাছে এনে ভালো করে ছবিটা দেখলাম। বুকের মাঝে ধক করে উঠলো। এ তো সেই মহিলা যে আমাকে অনেক বছর আগে আদালতে ছেড়ে গিয়েছিল, আমার মা। নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে ছুটে গেলাম হাসপাতালে।
সেই মুখটা কিন্তু চেনার উপায় নেই। চামড়াটা কুঁচকে আছে, শরীরটা রোগে শোকে জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে খুব মায়া লাগছে, ভেতরটা ভেঙে ভেঙে যাচ্ছে। আচ্ছা, সেদিন কি তার একটু ও কষ্ট লাগেনি, যেদিন তার ১০ বছরের শিশু কন্যাটি মা-মা করে পিছু পিছু কাঁদতে কাঁদতে দৌড়াচ্ছিল?? হয়তো লাগেনি। নয়তো এভাবে ফেলে যেতে পারতো না।
একবার ভেবেছিলাম চলে যাবো। হঠাৎ দেখি তিনি ঘুম ভেঙে চোখ পিটপিট করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। বুঝলাম চিনতে পারেন নি, চেনার কথা ও নয়!! আমি আমার পরিচয় দিলাম। কয়েক সেকেন্ড নিষ্পলক তাকিয়ে থেকে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। নিজের কৃতকর্মের জন্য বারবার ক্ষমা চাইতে থাকে। নিজের বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি মাকে।
মাকে পাওয়ার পর বাবার জন্য ও মনটা উতলা হয়ে উঠে। মায়ের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে বাবার অফিসে যোগাযোগ করি। জানতে পারি, কয়েক বছর আগেই রিটায়ার্ড করেছেন তিনি। বাসার ঠিকানায় গিয়ে দেখি উনি নেই। উনার দ্বিতীয় পক্ষের ছেলেমেয়েদের জিজ্ঞেস করে জানলাম, রিটায়ার্ড করার কিছু দিনের মধ্যেই তিনি প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়েন। অযথা একটা রুম দখল করে নোংরা করত, তাই বিরক্ত হয়ে ছেলেমেয়েরা তাকে একটা সরকারি বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে, অযথা ঘরে বোঝা বাড়িয়ে কি লাভ!!!
ওদের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে বৃদ্ধাশ্রম গেলাম। চিনতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো, মনে হলো একটা জীবিত লাশ পড়ে আছে বিছানায়। পাশে বসে হাতটা ধরলাম, পরিচয় দিতেই মুখ ফিরিয়ে কাঁদতে লাগলেন।
বাবা মা এখন আমার সাথে একই বাড়িতে আছেন। একসময় তারা আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু আমি পারিনি ছাড়তে। হাজার হোক আমার বাবা মা তো !

সংগৃহীত

রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯

শ্রীলঙ্কায় গির্জা ও হোটেলে বোমা হামলা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৮

শ্রীলঙ্কায় তিনটি চার্চ ও তিনটি হোটেলে ভয়াবহ সিরিজ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৫ শতাধিকেরও বেশি।
রবিবার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ইস্টার সানডে উদযাপনকালে রাজধানী কলম্বো ও তার আশেপাশের তিনটি গির্জা এবং তিনটি হোটেলে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
কলম্বোর কোচিচিকাদের সেন্ট অ্যান্থনি চার্চে প্রথম বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় হামলাটি ঘটে কুতুয়াপিটায়ে-এর সেন্ট সিবাস্তিয়ান চার্চে দ্বিতীয় হামলা হয়। আর তৃতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে নেগোম্বো শহরের বাত্তিকালোয়া চার্চে। এছাড়া কলম্বোর তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে ইস্টার সানডে’র অনুষ্ঠান চলার মধ্যে এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
শ্রীলঙ্কার পুলিশ এসব হামলা ও প্রাণহানির সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে ঠিক কী কারণে কারা এ হামলা চালিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন তারা বিস্ফোরণের বিষয়ে তথ্য খতিয়ে দেখছেন। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে শিগিগরই জরুরি বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন।
কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি চার্চে প্রথম বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই বিস্ফোরণের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন বিস্ফোরণে পুরো ভবন কেঁপে ওঠে। দ্বিতীয় আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটেছে রাজধানী কলম্বোর উত্তরে নেগোম্বো শহরের আরেকটি চার্চে। নিজেদের ফেসবুক পাতায় সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছে ওই চার্চ কর্তৃপক্ষ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে কুতুয়াপিটায়ে-এর সেন্ট সিবাস্তিয়ান চার্চের অভ্যন্তরণে ছিন্নভিন্ন ছাদের ছবি দেখা গেছে। মেঝেতে রক্ত পড়ে থাকার ছবিও দেখা গেছে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দেশ শ্রীলঙ্কার মাত্র ছয় শতাংশ মানুষ ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। দেশটির দুই নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী তামিল ও সিংহলিজ উভয়ের মধ্যেই এই ধর্মাবলম্বীদের দেখতে পাওয়া যায়।
শীর্ষকাগজ/জে

শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শুভেচ্ছা -১লা বৈশাখ বাংলা শুভ নববর্ষ উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ নববর্ষ উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আজ শুক্রবার এক বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ।
শুভেচ্ছা বাণীতে আমীরে জামায়াত বলেন,‘বাংলা নববর্ষ আমাদের সামনে সমাগত। মোঘল সম্রাট আকবরের আমল থেকে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে ১লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, জাতি এমনি এক সংকটকালে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে যাচ্ছে যখন গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার দেশ থেকে নির্বাসিত।
দেশে অবাধে চলছে হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, ঘুষ, দুর্নীতি ও লুটপাট। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার মত বর্বর ঘটনাও ক্রমেই বেড়ে চলছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাক-স্বাধীনতাসহ মানুষের সকল মৌলিক অধিকার পদদলিত। বাংলা নববর্ষে মঙ্গল প্রতীক ও মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে আমদানী করা হচ্ছে ভিন্ন ধর্মের অপসংস্কৃতি।
ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে জাতি মুক্তি চায়। বাংলা নববর্ষ মুক্তির সেই আহ্বান নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়েছে।
জামায়াতের আমীর আরো বলেন, আসুন জাতি হিসেবে সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াবার শপথ নিই, যাতে দেশের সকল জনগণ শান্তি ও স্বস্তির সাথে বাঁচার জন্য নিজেদের মত করে বাংলাদেশটাকে গড়ে তুলতে পারে।
আমি দেশবাসী সকলের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য কামনার পাশাপাশি জুলুম ও শৃঙ্খলমুক্ত বাংলাদেশ কামনা করছি এবং আমার দলের পক্ষ থেকে প্রিয় দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের উষ্ণ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।
বিবৃতিতে ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে একটি জুলুম-নির্যাতনমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধশালী জনকল্যাণকামী, ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে এগিয়ে আসার জন্য দেশবাসী সকলের প্রতি আন্তরিকভাবে আহ্বান জানান তিনি।

ফেনীর পুলিশ-প্রশাসন নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে ওই জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। ফেনীতে হওয়া বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জেলার সাবেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা। তার স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো:

দিনে দুপুরে ছিনতাই হয়েছে বিজয়সিং দিঘীতে৷ ছিনতাইয়ের শিকার যুবকের করা মামলা নেয়নি ওসি রাশেদ চৌধুরী। মামলা নিতে চাপ প্রয়োগ করতে হয়েছে। তারপরও নেয়নি মামলা। এরপর, অন্তত ১০ টি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমি থানায় পাঠিয়েছি ভিকটিমদের। ওসি মামলা নেয় নাই। জিডি করতে বাধ্য হয়েছে ভিকটিমেরা। আমার জিজ্ঞাসা কেন মামলা নেয়নি ওসি? ছিনতাইয়ের কি জিডি হয়?

ফেনীতে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে জায়গা দখল করেছে এক কাউন্সিলর, অন্যখানে আর একজন প্রভাবশালী নেতা। তাকে জায়গা দখলে সুরক্ষা দিয়েছে স্বয়ং সদর থানার ওসি। আমি বাধা দিতে চেয়েছি, আমাকে থামানো হয়েছে। কে থামাতে চেয়েছে সেটা আর না-ই বললাম।

ফেনী শহরজুড়ে অনেকগুলো পতিতালয় আছে৷ যেখানে মানুষকে নিয়ে ভিকটিম বানিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এবং তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে টাকা উদ্ধার করা হয়। এরকম ঘটনা আমার কাছে এসেছে অসংখ্য। এসব পতিতালয়ের নিয়ন্ত্রক কারা?

প্রকাশ্যে জনিকে অস্ত্রসহ ধরার পর পুলিশকে আসতে বলি স্পটে। সেখানে পুলিশ আসে এবং আমাকে সাহায্য করে। আমি পুলিশকে অস্ত্র আইনে মামলা করতে বলি, পুলিশ মামলা করতে অপারগতা জানায়। কেন? আমাক পুলিশ এও বলে যে আমি ধরেছি আমাকেই মামলা করতে হবে। অথচ পুলিশ আমার সাথেই ছিলো। হাস্যকর না!

ফেনীর এক চেয়ারম্যান আমাকে চোরাচালানের তথ্য দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক বড় নেতা থেকে শুরু করে সিন্ডিকেটের সবাই তাকে শাসিয়েছে। ডিবির এএসপি আমিনুল তাকে বলেছে সে কিভাবে নির্বাচন করে সেটা সে দেখে নিবে।

ফেনীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষি জমির মাটি কাটা নিয়ে শুরু করে, মাদক, স্বর্ণ চোরাচালান প্রায় প্রতিটি বিষয়ে যতটা না অপরাধীদের সাথে তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি আমাকে যুদ্ধ করতে হয়েছে এই সিন্ডিকেটের সাথে। ফেনীর বালুমহাল নিয়ন্ত্রকদের শাস্তি প্রদানে কাজ করতে পারিনি আমি। একটা বছর ধরে পুরো সিন্ডিকেট মিলে আমাকে পদে পদে বাধা প্রদান করেছে। নির্বাচনে আমার গাড়ি থেকে প্রটেকশন উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। সারারাত জেগে আমার পরিবারকে পাহাড়া দিতে হয়েছে।

এই শহরের প্রতিটি ইঞ্চি আমি চিনি। শহরের প্রতিটি ইটের ভাষাও আমি জানি। সংগ্রামটা অবিশ্বাস্য হলেও শুধু আমার একারই ছিলো, আমি ভয়ানক একাই ছিলাম। শুধু আমার দুএকজন বস আর ফেনীর সাধারণ মানুষ ছিলো সাথে। তাদের কারণেই এক ইঞ্চি মাঠও ছাড়ি নাই। তবে অনেক সময়ই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারি না, থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্য নিজেকে প্রায়ই অপরাধী মনে হয়।

পুরো প্রশাসন হয় উদাসীন, নয় অপরাধের সাথে জড়িত, সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত, অন্যায়ের সাথে, দুর্নীতির সাথে জড়িত। ঔদাসীন্যও এক ধরণের অপরাধ। এদের মুখে বঙ্গবন্ধুর কথা শুনলে আমার থুতু দিতে ইচ্ছে হত। এগুলো কিছুই সাংবাদিকরা লেখেনি। আমি লিখতে বলেছি, এরা ভয়ে লেখে নাই।

রয়েছে এমন শত শত ঘটনা। এসব ঘটনা বলার কারণ, এগুলো অন্যায়, ভয়াবহ অন্যায়। এই সমাজ এই অন্যায়গুলোর ধারক ও বাহক। এদের কাছে আপনি কিভাবে নুসরাত হত্যার বিচার পাবেন?

স্বেচ্ছায় বিদেশে এসেছি পড়তে, দেশে ফিরব পড়াশোনা করে। সরকার চাইলে কাজ করব, নাহলে চাকরি ছেড়ে দিব। প্রত্যয় এটুকুই- যুদ্ধের জীবন চলছে, চলবে।