ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

ড. মাসুদকে গ্রেফতারের জন্য সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে’

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাকে কারাফটকে ফের আটকের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর আমির মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতেই জামায়াতসহ বিরোধী দলের উপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। আদালত থেকে জামিন নেয়ার পরও তাদেরকে কারা ফটকে আবারও গ্রেফতার করে নতুন করে মামলা দিয়ে কারাগারে অন্তরীণ করছে। সরকারের এসব আইন ও সংবিধান বিরোধী কর্মকা- ফ্যাসিবাদী, বাকশালী ও গণবিরোধীতার পরিচয়ই বহন করে।
তিনি বলেন, ড.মাসুদ জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। সরকার তাকে প্রায় দেড় বছর আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি ঘরোয়া বৈঠক থেকে গ্রেফতার করে নির্মম ও নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। কিন্তু তিনি সকল মামলায় জামিন নিয়ে শুক্রবার মুক্তি পেলেও সরকার তাকে কারাফটকে আবারও অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে গ্রেফতার করে। এ গ্রেফতার কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বরং এজন্য সরকারকে একদিন দেশের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫

হাজারীবাগে জামায়াতের শীতবস্ত্র বিতরণ


গতকাল বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামী হাজারীবাগ থানার উদ্যোগে এলাকার গরীব, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়
জামায়াতে ইসলামী হাজারীবাগ থানার উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার এলাকার গরীব ও অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। শীতবস্ত্র¿ বিতরণ করেন মহানগরী জামায়াতের মজলিসে শূরার সদস্য ও হাজারীবাগ থানার আমীর শেখ শরীফ উদ্দীন আহমদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন থানার সেক্রেটারি আবু জারিফ। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা শাহ জামাল, মাহফুজ আলম, ছাত্র নেতা রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
থানা আমীর বলেন, আওয়ামী সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই দেশের গরীব-অসহায় মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে এবং গরীব-অসহায় ও শীতার্ত মানুষের প্রতি সরকারের কোন দায়বদ্ধতা নেই। সরকার মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ভূলুন্ঠিত করছে। সরকার বড়গলায় গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও উন্নয়নের কথা বলেন অথচ দেশে বাস্তবে চলছে একদলীয় বাকশালী শাসন। জামায়াতে ইসলামী গরীব অসহায় মানুষের মাঝে প্রকাশ্যে শীতবস্ত্র¿ও বিতরণ করতে পারছে না।
তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার নেশায় মত্ত। প্রতি দিন দেশে হত্যা, গুম ও নারী ধর্ষণের মত কর্মকান্ড চলছে। মানুষের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। সরকার তার কর্মকান্ডে প্রমাণ করছে, জনগণের কল্যাণ নয়, ক্ষমতাই তাদের মূল লক্ষ্য। তাই ক্ষমতা লিপ্সু স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে দেশ ও জাতি যত দ্রুত মুক্তি লাভ করবে ততই মংগল। এর পরও এলাকার বিত্তবান লোকদেরকে তাদের যার যার সাধ্য অনুযায়ী শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

জামিনে মুক্তির পর জেলগেট থেকে জামায়াত নেতা ডঃ মাসুদ ফের আটক


জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে জেল গেট থেকে পুনরায় আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

শুক্রবার দুপুরে জামিনে মুক্ত হয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের গেট দিয়ে বের হওয়ার পর পরই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে ফের আটক করে বলে শীর্ষ নিউজকে জানিয়েছেন ড. মাসুদের আইনজীবী এডভোকেট নুরুজ্জামান।
নুরুজ্জামান আরও জানান, ড. মাসুদের বিরুদ্ধে ৫২টি মামলা আছে। সবগুলো মামলাই তিনি জামিন পেয়েছেন।

মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫

স্বামীর ভালবাসা ও প্রীতি অর্জন করার জন্য মুসলিম নারীদেরকে কিছু মূল্যবান উপদেশঃ


স্বামীর ভালবাসা ও প্রীতি অর্জন করার জন্য মুসলিম নারীদেরকে কিছু মূল্যবান উপদেশঃ
(১) বিভিন্ন উপলক্ষে স্বামীর হাতে, কপালে চুম্বন করা।
(২) স্বামী বাইরে থেকে এলে সাথে সাথে স্বাগতম  জানানোর জন্য দরজায় এগিয়ে আসা। তার হাতে কোন বস্তু থাকলে তা নিজের হাতে নেয়ার চেষ্টা করা।
(৩) সময় ও মেজাজ বুঝে স্বামীর সামনে প্রেম-ভালবাসা মিশ্রিত বাক্যালাপ করা। তার সামনে তার প্রশংসা করা।
সম্মান ও শ্রদ্ধা মূলক আচরণ করা।
(৪) স্বামীর পোশাক-আশাকের পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা। (পরিচ্ছন্ন পুরুষ মানেই তার স্ত্রী পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন)। রান্নার ক্ষেত্রে স্বামী যা পছন্দ করেন তা নিজ হাতে প্রস্তুত করতে সচেষ্ট থাকা।
(৫) সর্বদা স্বামীর সামনে হাসি মুখে থাকা।
(৬) স্বামীর জন্য নিজেকে সুসজ্জিত রাখা। শরীরে দুর্গন্ধ থাকলে বা রান্না ঘরের পোষাকে তার সম্মুখে না যাওয়া। মাসিক ঋতুর সময়ও সুসজ্জিত অবস্থায় থাকা।
(৭) স্বামীর সামনে কখনই নিজের কন্ঠকে উঁচু না করা। নারীর সৌন্দর্য তার নম্র কন্ঠে।
(৮) সন্তানদের সামনে স্বামীর প্রশংসা ও গুণগান করা।
(৯) নিজের এবং স্বামীর পিতা- মাতা, ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজনদের সামনে আল্লাহর কৃতজ্ঞতার সাথে সাথে স্বামীর প্রশংসা করা ও তার শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরা। কখনই তার বিরুদ্ধে তাদের নিকট অভিযোগ না করা।
(১০) সুযোগ বুঝে স্বামীকে নিজ হাতে লোকমা তুলে খাওয়ানো।
(১১) কখনো স্বামীর আভ্যন্তরীন গোপন বিষয় অনুসন্ধান না করা। কেননা পবিত্র কুরআনের সুরা হুজুরাতের ১৩নং আয়াতে আল্লাহ্ বলেন, তোমরা কারো গোপন বিষয় অনুসন্ধান কর না।” আর নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, তোমরা কারো প্রতি কুধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা।”
(১২) স্বামী কখনো রাগান্বিত হলে চুপ থাকার চেষ্টা করা। সম্ভব হলে তার রাগ থামানোর চেষ্টা করা। যদি সে নাহক রেগে থাকে তবে অন্য সময় তার মেজাজ বুঝে সমঝোতার ব্যবস্থা করা।
(১৩) স্বামীর মাতাকে নিজের পক্ষ থেকে (সাধ্যানুযায়ী) কিছু হাদিয়া-উপহার প্রদান করা।
(১৪) সম্পদশালী হয়ে থাকলে স্বামীর অভাব অনটনের সময় তাকে সহযোগিতা করা।
(১৫) স্বামীর অনুমতি ছাড়া; কখনই নিজ গৃহ থেকে বের না হওয়া।
(১৬) স্বামীর নির্দেশ পালন, তার এবং তার সংসারের খেদমত প্রভৃতির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রতিদানের আশা করা।
আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সকল মুসলিম মেয়েদেরকে মূল্যবান এই নসীহতগুলো মেনে চলার তৌফিক দাণ 
করুক। আমিন

সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫

ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হত্যা সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ, সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ নৈরাজ্যকারীদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে বন্ধ হল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে-ছাত্রশিবির


ইবি ও চট্টগ্রাম কলেজ সহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ধারাবাহিক সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে আগামী ২১ ডিসেম্বর সোমবার সারাদেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষনা করে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে হাজারো ছাত্র-ছাত্রীর জীবনকে জিম্মি করে রেখেছে। এই সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধারাবাহিক নৃশংসতায় ক্যাম্পাস গুলো বার বার রক্তাক্ত হচ্ছে। আজও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র উচিয়ে একে অন্যর উপর হায়েনার মত ঝাপিয়ে পড়ে যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবিসহ প্রকাশ হয়েছে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৭জনসহ ১১ জন আহত হয়েছে। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চিহ্নিত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেছে। যা চরম দায়িত্বহীনতা ও সন্ত্রাসীদের প্রতি নতজানুমূলক আচরণ। সম্প্রতি ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজ বহিঃরাগত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা হামলা চালালে পুলিশ ও প্রশাসন অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করে নিরাপরাধ ছাত্রদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে। মূলত ক্যাম্পাসে হামলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। ছাত্রলীগ ধারাবাহিক সশস্ত্র হামলা ও তান্ডব চালিয়ে রাবি, চবি, ইবি, ঢাবিসহ দেশের প্রতিটি ক্যাম্পাস সন্ত্রাসের আখরায় পরিণত করেছে। খুন জখম করছে নিজ দল ও প্রতিপক্ষ দলের নেতাকর্মীদের। কিন্তু দুঃজনক ভাবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসে মদদ ও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে অবৈধ সরকার। পুলিশ প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সামান্য ছুতায় অন্য ছাত্রদের ব্যপারে কঠোর আচরণ করলেও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের ব্যপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। বরং ব্যর্থতা ঢাকতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছেন। সরকার, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনের এই দায়িত্বহীন ভূমিকা মূলত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের নৃশংসতার চালানোর লাইসেন্স দেয়ার শামিল। সন্ত্রাসীদের তোষন নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র-শিক্ষক সবার জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। ছাত্রলীগ ও প্রশাসনের এই যৌথ নৈরাজ্যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের পায়তারা ছাড়া কিছু নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন তাহলে তাদের উচিৎ পদত্যাগ করা। আমরা অবিলম্বে চিহ্নিত অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা, বিশ্ববিদ্যালয়েরর বন্ধ হল খুলে দেয়া, নিরীহ ছাত্রদের মুক্তি ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষনাঃ
এদিকে ইবি ও চট্টগ্রাম কলেজ সহ ক্যাম্পাস গুলোতে ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাসের প্রতিবাদ ও অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় এনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখার দাবীতে আগামী ২১ ডিসেম্বর সোমবার সারাদেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষনা করে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, গুটি কয়েক সন্ত্রাসীর কাছে লাখো ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষা জীবন জিম্মি হয়ে থাকতে পারেনা। আমরা ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতাকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। নেতৃবৃন্দ নেতাকর্মীসহ ছাত্রসমাজকে এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে স্বতস্ফুর্ত ভাবে অংশ গ্রহণ করার জন্য আহবান জানান। একই সাথে পুলিশ প্রশাসনকে ছাত্রশিবিরের কর্মসূচিতে সহায়তার জন্য আহবান জানান

রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৫

মুজাহিদের আজান, জায়নামাজ থেকে ফাঁসির মঞ্চে


কালের আবর্তনে আদর্শ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অনেক ঘটনাই ঘটেছে। কিন্তু সকল ঘটনা কি ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে বা সকল ঘটনাই কি স্মরণীয় হয়েছে? বাংলাদেশে আদর্শ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে প্রাচীনতম দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয় ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর শনিবার রাতে। কী অপরাধে, কোন প্রক্রিয়ার বিচারে তাকে এ দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে তা আলোচনা করা আমার উদ্দেশ্য নয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগ হতে তার ফাঁসির দণ্ড বাতিলের রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় নিশ্চিত পরিণতি জানার পরেও তাঁর দৃঢ়তা, বলিষ্ঠতা, দলের প্রতি আনুগত্যের পরাকাষ্ঠা, মহান আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতা, আদর্শ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের তরে স্বহাস্যে জীবন কুরবানির ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত সত্যিই বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহর মাঝে প্রেরণার শিহরণ যোগাবে।
ফাঁসি কার্যকর হওয়ার দিনে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট মহামান্য প্রেসিডেন্ট বরাবর তাঁর লিখিত চিঠি, ফাঁসির পূর্বক্ষণে পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎকালে সুনির্দিষ্ট পয়েন্ট ভিত্তিক বক্তব্য অবশ্যই সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অনুগামীদের জন্য যুগ যুগ ধরে অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
পরিবারের সদস্যগণ সর্বশেষ সাক্ষাতের বিবরণ পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন যে রাতে তার ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে সে রাতে একজন মানুষ নিশ্চিত মৃত্যুপরোয়ানা মাথায় নিয়ে এশার নামাজ শেষে স্বস্তির সাথে গুংরিয়ে গুংরিয়ে ঘুমোচ্ছেন! এ আবার কী ধরনের মানুষ? কীভাবে এটি সম্ভব হতে পারে? কী প্রশান্তির ঘুম এটি? সাধারণত আদেশ শোনার পর ফাঁসির আসামিগণ মৃত্যু পেরেশানিতে খাবার দাবার, ঘুম, গোসল ছেড়ে দেন, আবোল তাবোল বকতে থাকেন, অনেকে পাগল পর্যন্ত হয়ে যান। কিন্তু জনাব মুজাহিদের ফাঁসির পূর্বক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিন্তে জায়নামাজ বিছিয়ে ফোরে প্রশান্তির ঘুমের ঘটনা সত্যিই স্বর্গীয়। পরিবারের লোকজন শেষ সাক্ষাতে সেলের সামনে গিয়ে কয়েকবার ডাকার পর তিনি ঘুম থেকে জেগেছেন। আবার ঘুম থেকে জেগে উঠার সাথে সাথে কথা বলতে ছুটে আসেননি। স্বাভাবিক ঘুম থেকে উঠলে পরে মানুষ যেমন ঘুমের রেশ কাটাতে, চোখ স্বাভাবিক করতে একটু সময় নিয়ে থাকেন, তিনি সেদিন মৃত্যু উত্তেজনাকর মুহূর্তেও কিছু সময় পর পরিবারের সদস্যদের সামনে স্বাভাবিকভাবে হাজির হয়েছেন। পরিবারের সাথে সাক্ষাতে তিনি জানতে পারলেন আজ রাতেই তাঁর ফাঁসি কার্যকর হতে যাচ্ছে। তিনি বললেন, “আমাকে তো এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি।” তদোপুরি তিনি “আলহামদুলিল্লাহ, তাওয়াক্বালতু আলালল্লাহু” বলে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে এ সংবাদ গ্রহণ করে প্রশাসন, জেল কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সাংগঠনিক বিষয়ের পাশাপাশি ট্রাইব্যুনাল আইন, মানবাধিকার, তাঁর বিচারকার্য প্রক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কিত প্রায় ৪০ মিনিটের বক্তব্য পেশ করলেন। বক্তব্যের শেষদিকে জেল কর্তৃপক্ষ, দেশবাসীকে সালাম জানিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হয়ে সত্যের উপর ইসতিকামাত থাকতে এবং তাদের ত্যাগ-কুরবানির প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন ও নিজের শহীদী মৃত্যুর জন্য দোয়া কামনা করেছেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত জনাব মুজাহিদের সর্বশেষ বক্তব্যটি পর্যালোচনা করলে মনে হয়, তিনি যেন একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের ডেলিগেটদের উদ্দেশ্যে তাৎপর্যপূর্ণ ও অত্যন্ত বিশ্লেষণধর্মী একটি ঐতিহাসিক বক্তব্য পেশ করে গেছেন। ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষা নাটকের ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে। পিসিতে রক্ষিত কারাগারের টাকাগুলো সেবকদের মাঝে এবং তাঁর জেলখানায় ব্যবহৃত জিনিপত্রাদি স্মৃতিস্বরূপ বিভিন্নজনের মাঝে নিজেই বণ্টন করে গেছেন। সুদৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেনÑ তাঁকে হত্যা করা হলেও এ দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ অব্যাহত থাকবে। তাঁর রক্তের বিনিময়ে মানবতার মুক্তির আন্দোলন আরো বেগবান হবে। পরিবারের সদস্যদের হালাল পথে উপার্জন ও হালাল রুজি ভক্ষণের উপদেশ দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অনন্য। দীর্ঘ পাঁচ বছর মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব থেকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতা ও আমানতদারিতার সাথে পালন করেছেন। এতে তিনি উচ্চকিত করেছেন আন্দোলনের নেতৃত্ব ও ইসলামের সুমহান মর্যাদাকে। তিনি বড় জনসভায়, ওয়ান-ইলেভেনের শুদ্ধি অভিযানে, বিভিন্ন আলাপচারিতায় প্রকাশ্যে স্বীয় আঙ্গুল পেটের দিকে ইঙ্গিত করে বারবার বলেছেন, “এই পেটে কোনো হারাম-অবৈধ একটি পয়সাও ঢুকেনি।” মঈন ফখরুদ্দিন সেনাশাসিত আমলে বিশেষ অভিযানে তাঁর পরিচালিত মন্ত্রণালয়ে ন্যূনতম দুর্নীতি কেহ প্রমাণ করতে পারেনি।
জনাব মুজাহিদের সাথে বিদায় সাক্ষাৎ সমাপ্ত করে পরিবারের সদস্যরা তাঁদের প্রিয়জনের লাশ গ্রহণ ও দাফনের জন্য রাতেই রওয়ানা হয়ে গেলেন ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে। পুরো পথেই তাদের মাঝে ছিল শঙ্কা, আতঙ্কÑ তারা কি স্বাভাবিকভাবে তাদের প্রিয়জনের দাফনে, জানাজায় অংশ নিতে পারবে? পারবে কি শেষবারের মতো শহীদ সিংহ শার্দুল মুজাহিদের চেহারা মুবারক দেখতে? কারণ ইতঃপূর্বে শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার পরিবারের উপর ফাঁসির রাতেই হামলা হয়েছে। বাধা দেয়া হয়েছে শহীদ কামরুজ্জামানের জানাজাতেও।
ভোর সাড়ে চারটার দিকে পরিবারের সদস্যগণ পৌঁছলেন জনাব মুজাহিদের স্মৃতিধন্য ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর নিজ বাসস্থানে। এর একটু দূরেই জনাব মুজাহিদের প্রতিষ্ঠিত মাওলানা আব্দুল আলী ফাউন্ডেশনের আদর্শ ক্যাডেট মাদরাসা প্রাঙ্গণে কবর খনন করে রাখা হয়েছে। পুরো শহরের মোড়ে মোড়ে শত শত র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবির সশস্ত্র অবস্থান আর সতর্ক টহল। সারাদিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পশ্চিম খাবাসপুরে জনাব মুজাহিদের এলাকায় কাউকে ঢুকতে দেয়নি। পথে পথে তল্লাশি আর জিজ্ঞাসাবাদ। এতো প্রতিবন্ধকতার পরেও ভোর রাতে পশ্চিম খাবাসপুরে জনাব মুজাহিদের বাড়ি ঘিরে হাজার হাজার নারী-পুরুষের বিনিদ্র অবস্থান। ক্রমেই যেন মানুষের স্রোত বাড়ছে। সকলের চোখে আহাজারি। প্রিয়জন হারানোর বেদনার অশ্রু, মুখে কালিমা শাহাদাতের উচ্চারণ। মসজিদে চলছে কুরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ।
জনাব মুজাহিদের প্রতিষ্ঠিত মসজিদে ফজরের আজানের সাথে সাথেই প্রথম জামায়াত সম্পন্ন হলো। মুসল্লিদের অতিরিক্ত ভীড় সামলাতে মূল জামায়াতের পূর্বেই দু’টি জামায়াত করতে হলো। অতঃপর দেখা গেল অন্যরকম দৃশ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিসের ভয়ে যেন বেশ তৎপর হয়ে গেল। মসজিদকে ঘিরে ঐ এলাকায় কোনো মুসল্লিকে মসজিদের মূল জামাতে আসতে দিচ্ছে না। মহল্লার মুসল্লিগণ নামাজের জামাতে আসতে অনেক অনুনয় বিনয় করলো, কিন্তু কে শুনে কার কথা? কোনো কোনো মুসল্লি উঁচু স্বরে বলতে থাকলেন, মুজাহিদকে তো মেরে ফেলা হয়েছে। মৃত মুজাহিদকে এখনো এত ভয় কেন? আমরা কি আমাদের মহল্লার মসজিদে নামাজও পড়তে পারবো না। হায় আল্লাহ ... ইত্যাদি ইত্যাদি।
ভোরের আলো বাড়ার সাথে সাথে পুলিশ র‌্যাবের ব্যারিকেডের বাইরে অসংখ্য জনতার ঢল ঘুরপাক খাচ্ছিলো। সকলেই উন্মুখ হয়ে শহীদ মুজাহিদের জানাজা স্থানে আসার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রশাসনের লোকেরা সবাইকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। এক পর্যায়ে জনস্রোত ঠেকাতে লাঠিপেটা পর্যন্ত করেছে। জনসাধারণকে জানাজায় স্বাভাবিক উপস্থিত হবার সুযোগ দেয়া হলে সেটি হয়তো এ যাবতকালের ফরিদপুরের বৃহত্তর জনসমাগম। এতো কিছুর পরও দেখা গেল কেহ শেষবারের মতো তাদের প্রিয় মুখটিকে দেখতে গ্রেফতার, লাঠিপেটা, সবকিছু উপেক্ষা করে চুপিসারে বিল্ডিং এর এক ছাদ হতে অন্য ছাদে লাফিয়ে সেনিটারি পাইপ বেয়ে, টিনের ঘরের ছাউনির উপর দিয়ে বাঁশ ঝাড় বেয়ে, কেহবা লাউয়ের মাচার উপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে জানাজাস্থলে সমবেত হচ্ছে।
সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে একটি সাদা এম্বুলেন্সে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে হাজির হলো জনাব মুজাহিদের লাশের কফিন। এ এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। এম্বুলেন্স হতে পরিবারের সদস্যগণ লাশের কফিন কাঁধে নিয়ে জানাজার জন্য মসজিদের সামনে মাঠে রাখলেন। পুরো মাঠে পড়ে গেল কান্নার রোল। উপস্থিত নারী-পুরুষ ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা হাউমাউ করে কেঁদেছে তাদের প্রিয় মানুষটির জন্য। প্রিয় নেতার জন্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যরাও কেঁদেছে সকলের সাথে। এ দৃশ্য ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। আকাশের দিকে দু’হাত তুলে আসমান-জমিনের মালিকের নিকট ফরিয়াদ করে পাঠিয়েছে এ বিচারের ভার। জানাজা পড়ান শহীদ মুজাহিদের নির্দেশনানুযায়ী তাঁর বড় ভাই জনাব আলী আফজাল মোহাম্মদ খালেছ।
জানাজার মাঠে যখন কান্নার রোল তখন মুজাহিদের সন্তানরা ছিল ইস্পাত কঠিন দৃঢ়চেতা। উপস্থিত জনতাকে উল্টো তারাই সান্ত্বনা দিয়েছেন। গর্বের ধন বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন। পিতৃহারানোর মর্মান্তিক বেদনাকে তারা হজম করেছেন, নিয়েছেন সুসংবাদ হিসেবে। প্রেরণা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন পরকালে জান্নাতের সিঁড়িতে বাবার সাক্ষাতের। এমন একটি পরিবারই প্রকৃত হকদার ‘শহীদ পরিবার’ হওয়ার।
জানাজা শেষে সফেদ সাদা কাপড়ে মোড়ানো বাঁধ খুলে উপস্থিত সকলকে দেখানো হলো শহীদ মুজাহিদের চেহারা মুবারক। পুরো চেহারাটি যেন আজ আরো উজ্জ্বল, শুভ্র, তেজোদীপ্ত। সবাইকে যেন কিছু একটা বলতে চান তিনি, কিন্তু তাতো সম্ভব নয়। আজ তিনি মহান রবের দিকে না ফেরার দেশের অভিযাত্রী। পুরো গলাটি ব্যান্ডেজের কাপড় দ্বারা পেছানো রক্তে ভেজা, আশেপাশে ছোপ ছোপ রক্ত। ঢুকরে ঢুকরে কেঁেদছে স্বজনেরা, মাথায় কপালে হাত বুলিয়ে শেষ শ্রদ্ধা ভালোবাসা জানিয়ে চিরবিদায় জানিয়েছেন তারা।
সকাল দশটায় একই স্থানে গায়েবানা জানাজা ঘোষণা করা হলো। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হলো। বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মতো চতুর্দিক হতে শহীদ মুজাহিদের কবর জিয়ারত করতে মানুষ সমবেত হতে থাকলো। কেহই কারো কান্না থামাতে পারেনি। কবরের পাড়ে দাঁড়িয়ে শাহাদাত কবলিয়াতের দোয়া করেছে, শহীদের রক্তের বিনিময় সত্য-ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের বিজয় চেয়েছে সকলে।
শোক বই খোলা হলো শহীদ মুজাহিদের স্মরণে। বিভিন্ন পেশা, দল, মতের লোকেরা কবর জিয়ারত শেষে শোক বইতে লিপিবদ্ধ করেছে তাদের মনের অনেক কথা। বিপুল উপস্থিতির কারণে একই স্থানে পর পর ৫টি গায়েবানা জানাজা করতে হয়েছে। দাফনের দিন থেকে দলে দলে মানুষ আসছে শহীদ মুজাহিদের কবর জিয়ারতে। জিয়ারতের এ ধারা অব্যাহত থাকবে, থামবে না কখনো, থামাতে পারবে না কেহ।
মহান রবের নিকট সবকিছু বলে কয়ে শাহাদাতের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে মাটিতে জায়নামাজেই ডান কাত হয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। জনাব মুজাহিদের প্রশান্তির ঘুমের ঘোর ভেঙ্গে গেল ছেলেমেয়েদের আব্বু আব্বু ডাকে। জায়নামাজ থেকে উঠলেন, বসলেন স্বাভাবিক হলেন। হেঁটে এসে দাঁড়ালেন ১৪ শিকের কারাগারের নিজ কক্ষের সামনে। শহীদী মাল্যবরণের সংবাদ শুনে কয়েকবার হামদে বারীতায়ালা উচ্চারণ করে প্রশাসনের লোকদের উপস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে ধীরস্থিরভাবে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ভাষণ পেশ করলেন। তিনি দিয়ে গেলেন মানবতার মুক্তির আজান, গেয়ে গেলেন মজলুম মানবতার মুক্তির জয়গান।
মুছাফাহ করলেন হাত মেলালেন সকলের সাথে। সালাম জানালেন তাঁর প্রিয় দেশবাসীকে, চলে গেলেন ফাঁসির মঞ্চে, অনন্তকালের গর্ভে। হাঁসতে হাঁসতে জীবন দিয়ে তিনি তো চলে গেলেন। তাতে কি থেমে যাবে তাঁর সত্য প্রতিষ্ঠার মিশন? ইতিহাস বলে, যুগে যুগে মহাময়দের রক্তপিলারের উপরই নির্মিত হয়েছে শোষিত মানবতার বিজয়ী প্রাসাদ, পরাজিত হয়েছে শোষকের প্রতিহিংসা।

-জুয়েল রহমান

আরব নিউজের নিবন্ধ 'প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে জামায়াত'


মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী সংবাদপত্র আরব নিউজের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, স্থানীয় সমর্থন, বিদেশী যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক শক্তি বিবেচনায় জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা উচিত। এতে আরো বলা হয়েছে, আগামী দিনে ইসলামী আদর্শের দ্বারা জামায়াত মুসলিম-প্রধান দেশটিতে একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।
নিবন্ধটি ১৮ ডিসেম্বর আরব নিউজের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে। নয়া দিগন্তের পাঠকদের উদ্দেশে সেটি সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো-
দেশের সবচেয়ে সংগঠিত ও সর্ববৃহৎ ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের চিন্তাভাবনা করে নিজের পায়েই কুড়াল মারতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী ও বেশ কিছু সরকার সমর্থক রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতের কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানাতে শুরু করেছে। যা বর্তমানে দলটিকে ভীষণ চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দলের তিনজন শীর্ষ নেতাকে এরই মধ্যে মৃত্যদণ্ড দিয়ে তা কার্যকর করা হয়েছে। আরো অনেকের বিচারকাজ চলছে।
যদি জামায়াতকে রাজনীতির বাইরে রাখা হয়, তবে এর দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সদস্য ও কর্মীরা, যাদের অধিকাংশের বয়সই ৪৫ বছরে নিচে, আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যেতে পারে। এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশ অনুসারে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করায় ইতিমধ্যেই নির্বাচনী রাজনীতির বাইরে রয়েছে জামায়াত। এখন দলটিকে নিষিদ্ধ করলে তা হবে কফিনে শেষ পেরেক। সম্ভবত তখন টিকে থাকার জন্য পাল্টা জবাবের বিকল্প থাকবে না দলটির জন্য।
এটা অনুধাবন করা কঠিন নয় যে, দেশকে ঝাঁকুনি দেয়ার মতো রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা জামায়াতের আছে।
ভারতীয় উপমহাদেশের একটি পুরনো দল জামায়াত। ভারতে ইংরেজ শাসনামলে দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ইন্ডিয়া ও পাকিস্তান সৃষ্টিকালে দলটির জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান নামে কাজ শুরু করে। সেসময় বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ ছিল। রাজনীতির সাথে গভীর সংযোগের ফলে দলটির অনেক উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
জামায়াতের আছে অর্থনৈতিক সামর্থ ও রাজনৈতিক প্রভাব। এটা শুধু দেশেই নয় দেশের বাইরেও। প্রায় ১০ মিলিয়ন প্রবাসী বাংলাদেশীর মধ্যে জামায়াতের প্রতি সহানুভূতিশীল, সক্রিয় সদস্য ও নিবেদিতপ্রাণ সমর্থক আছে। যারা উপসাগরীয় দেশগুলো, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে বাস করছেন। শুধু সৌদি আরবেই আছেন ১৫ লাখ বাংলাদেশী। প্রায় পাঁচলাখ ব্রিটিশ নাগরিক বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত।
কথিত আছে, একটা বড় সংখ্যক প্রবাসী জামায়াতকে অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দিয়ে থাকে। যা বর্তমান সরকারের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ। ঢাকা ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে কিছু দেশকে সতর্ক করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- যুক্তরাজ্যের কথা। বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাজ্যকে জানিয়েছে, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ব্রিটিশ নাগরিক বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের উত্থানে ইন্ধন যোগাচ্ছে।
শেখ হাসিনার সরকার হাজার হাজার কর্মী-সমর্থককে জেলে রেখে জামায়াতকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এর লক্ষ্য শুধু দলটিকে শেষ করাই নয়, বরং বিএনপি থেকে দূরে রেখে বিরোধী দলের সম্মিলিত শক্তিকেও দুর্বল করা।
এখন সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা। তবে এতে বিএনপিই লাভবান হতে পারে। কারণ জামায়াত নিষিদ্ধ হলে দলটির প্রায় সবাই বিএনপিতে যোগ দিতে পারে।
স্থানীয় সমর্থন, বিদেশী যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক শক্তি বিবেচনায় জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা উচিত। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে আগামী দিনে ইসলামী আদর্শের দ্বারা জামায়াত মুসলিম প্রধান দেশটিতে একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৫

প্রাকৃতিক নয়, দেশের উপর বর্তমানে রাজনৈতিক দূর্যোগ স্থায়ী ভাবে চেপে বসেছে

ji
 ডেস্ক, ০৩ ডিসেম্বর: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চান্দগাঁও থানার নেতৃবৃন্দ বলেছেন খরা, বন্যা, জলোচ্ছাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ দেশের জন্য একটি বড় সমস্যা সন্দেহ নাই। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলায় এ দেশের মানুষ অনেকটাই অভ্যস্ত ও দক্ষ হয়ে পড়েছে। কিন্তু প্রাকৃতিক নয়, দেশের উপর বর্তমানে রাজনৈতিক দূর্যোগ স্থায়ী ভাবে চেপে বসেছে। রাজনৈতিক দূর্যোগের কারণেই গুম, খুন, হত্যা, গণগ্রেপ্তার ক্রমাগত বেড়ে চলছে। এই রাজনৈতিক দূর্যোগের কাছে দেশের মানুষ আজ অসহায় হয়ে পড়েছে। নেতৃবৃন্দ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগের মত এদেশের মানুষ একদিন রাজনৈতিক দূর্যোগ মোকাবেলাও অভ্যস্ত ও সক্ষম হয়ে উঠবে।
ডিসেম্বর মাসের চান্দগাঁও থানা জামায়াতের মাসিক কর্মপরিষদ বৈঠক জামায়াত নেতা আবু জাওয়াদের সভাপতিত্বে অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। কর্মপরিষদ বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে সর্বজনাব এম.এম. হোসাইন, মোস্তফা, আলতাফ, আবু আফরিন, রফিকুল ইসলাম, মুহাম্মদ জে. সরকার প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। 
কর্মপরিষদ বৈঠকে নেতৃবৃৃন্দ নিয়মিত কর্মসূচী ছাড়াও দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সরকারের সকল প্রকার অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ড ও জামায়াতসহ দেশের জনগণের উপর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। নেতৃবৃন্দ দেশব্যাপী জামায়াতসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দাবী করেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চান্দগাঁও থানার মাসিক কর্মপরিষদ বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এই আহবান জানান।