ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

কোথাও আক্রান্ত হলেই মুসলিমরা জঙ্গি, কিন্তু আজ বৌদ্ধদেরকে তো জঙ্গি বলা হচ্ছে না - তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিপেস তাইয়্যেপ এরদোগান


বাংলাদেশ বার্তাঃ মায়ানমারের রাখাইনের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিপেস তাইয়্যেপ এরদোগান বলেন, আজকে কোথাও মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত হলে তাদেরকে জঙ্গি বলা হয়। কিন্তু এখন বৌদ্ধদের দ্বারা মুসলমানরা আক্রান্ত। কিন্তু তাদেরকে জঙ্গি বলা হচ্ছে না। এটাই আজ চরম বাস্তবতা। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে নিউইয়কের্র একটি হোটেলে তার্কিস আমেরিকান ন্যাশনাল স্টিয়ারিং কমিটি আয়োজিত এক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্ষায় যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, রোহিঙ্গাদের চোখ ভিন্ন হতে পারে কিন্ত এ চোখের পানি বিশ্বের সকল মুসলমানের।

এরদোগান আরো বলেন, আমার স্ত্রী ও সন্তান ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সফর করেছে। রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশার বর্ণনা শুনে গাঁ শিউরে উঠে। আজকে এ জনগোষ্ঠীকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের রক্ষায় তুরস্ক বাংলাদেশের পাশে রয়েছে বলেও জানান তিনি। 

এরদোগান জানান, তুরস্ক ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের জন্য ৭০ মিলিয়ন ডলারের ত্রাণসহায়তা দিয়েছে। ভবিষ্যতে এটি অব্যাহত থাকবে।

এসময় তিনি একটি হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, তিনিই প্রকৃত মুসলমান যার হাত ও মুখ থেকে অপর মুসলমান নিরাপদে থাকে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশি আমেরিকানদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এরদোগানের বক্তব্য শুরুর ৫ মিনিটের পরই বিতর্কিত তুর্কি নেতা ফতুল্লাহ গুলেনের এক সমর্থক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কিছু সময়ের জন্য পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। এর পর আরো তিনবার অনুরূপভাবে প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে বাকী তিনজনকেও উপস্থিত লোকজন উত্তম-মধ্যম দেন। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। চার দফা বাধার পরও এরদোগান সাবলিল ভাষায় তার বক্তব্য শেষ করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। এরদোগানের এই থামিয়ে দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে।

কোটি টাকার প্রশ্ন ! উত্তর দেবেন কে ???

বাংলাদেশ বার্তাঃ  হেফাজতের এক নেতা সেদিন ইনিয়ে বিনিয়ে জামায়াতের আক্বীদার বিষয়টি তুলে ধরলেন।তিনি বললেন, আক্বীদার বিষয়ে কোন আপোষ ওলামায়ে দেওবন্দ কখনো করেনি, আর করবেও না।জামায়াত যদি বিষয়টি বুঝতো তাহলে দেশের ইসলামপন্থীদের ঐক্য হয়ে যেতো।ফেসবুকেও দেখি অনেক বড় বড় আলেম ওলামা, কবি সাহিত্যিকরা নরম স্বরে জামায়াত বিরোধী গান গাচ্ছেন।
বললাম, ভাই দেশে এখন আর জামায়াত নামে কিছু আছে নাকি? সব জায়গায় দেখি কওমীদের জয় জয়কার।আপনারা কেন অযথা জামায়াত নিয়ে ভাবছেন।জামায়াত তো শেষ, এবার আপনারা ওলামায়ে দেওবন্দীরা এক ফ্লাট ফরমে এসে দেখান আপনাদের আক্বীদায় কোন সমস্যা নেই।পাবলিক দেখুক, কওমী হুজুররা এক হতে পারে।পারবেন কোন কালে? কেন পারবেন না সেটা জানতে হলে ফি দিতে হবে, ফ্রি তদবির করা বাদ দিয়ে দিয়েছি।
আচ্ছা ভাই, চরমোনাইর নেতারা এরশাদের সাথে, পরে তার অসুস্থ্যতায রওশান এরশাদের নেতৃত্বে জোটোবদ্ধ আন্দোলন, নির্বাচন করলো।তখন কোন কিসিমের পাল্লা দিয়ে এরশাদ কাকুর আক্বীদা পরিমাপ করা হয়েছিলো? থাকলে দিয়েন, আমরাও মেপে দেখি আমাদের আক্বীদা এরশাদ কাকুর বরাবর যায় কিনা!
আল্লামা আজিজুল হক (রহ.) সাহেব জলিল মিয়ার সাথে হ্যান্ডশ্যাক করে রাজনৈতিক সমঝতা করলেন।কিছু দাবি দাওয়াকে কেন্দ্র করে ততকালিন জোট সরকারের বিরুদ্দে ফতোয়া দেওয়া শুরু হলো।পরবর্তিতে নির্বাচনে আওয়ামী ফ্যাাবারে অনেক হুজুরা বয়ান শুরু করলেন, জানতে মন চায় আওয়ামী আক্বীদা কি ফিল্টার করানো হয়েছিলো ?
আচ্ছা, ভাই ইসলামী ঐক্য জোট থেকে একজনকে মন্ত্রী করার বিষয়ে যখন জোটের ফোরামে আজিজুল হক সাহেবের উপস্থিতিতে পরামর্শ হচ্ছিলো তখন মরহুম আমিনী সাহেবে আলাদা করে আরেকটি ইসলামী ঐক্যজোটের ঘোষনা দিয়ে আজিজুল হক (রহ.) সাহেবের নেতৃত্বে প্রতি অনাস্থা দিলেন এবং নিজেকে নতুন ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান ঘোষনা করলেন।বলতে পারেন মরহুম আজিজুল হক সাহেবে আক্বীদায় কি সমস্যা ছিলো?
নাস্তিক বিরোধী আন্দোলনে শাহবাগের বিপরিতে হেফাজতের উত্থান ঘটলো, অথচ কওমী বেশ ধরা, ওলামায়ে দেওবন্দের নাম বিক্রি করা চরমোনাইর পীরের দল সেটা বিরুদ্ধে লিফলেট বিলি করতে শুরু করলো।শুধু তাই নয়, হেফাজতের ঘোষনার সমান্তরাল আরেকটি আন্দোলণ, লংমার্চ, সম্মেলন ঘোষনা করলো চরমোনাইর পীর সাহেব।আল্লামা আহমদ শফীর (দা. বা. ) নেতৃত্বের প্রতি এরকম চরম অনাস্থা কওমী ঘরনার কেউ কোন দিন দেখায়নি।প্রশ্ন হচ্ছে, আহমাদ শফী হুজুরের আক্বীদায় কি গলদ ছিলো?
সেদিনও দেখলাম, অতি প্রাচিন সংগঠন জমিয়তের ভাঙ্গন, নেতৃত্বে প্রতি অনাস্থা জানিযে বিচ্ছিরি কুৎসা রটানোর খেলা।এরকম প্রাচীন সংগঠনের ভিতরে বিজ্ঞ ওলামাদের উপস্থিতিতে যখন ভাঙ্গন দেখা দেয়, তখন তো প্রশ্ন করতে মন চায়, ওনাদের অনৈক্যের মুলে কি আছে? ক্ষমতার দন্ধ নাকি আক্বীদার গলদ?
এরকম শত শত উদাহারণ দেওয়া যাবে কিন্তু বেশি দুর যাবো না।জামায়াতর আক্বীদা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছে।বুঝতে পারছি না আক্বীদার এই ভ্রান্তী কমিশন থেকেও আপনারা কম বুঝেন নাকি? তবে এটা বুঝতে পারছি, আরো কয়েকটি শাপলা চত্তর চোখে না দেখার আগ পর্যন্ত জামায়াতের আক্বীদার দুর্গন্ধ আপনাদের নাক থেকে যাবে না।তবে আল্লাহর ইচ্ছায় জামায়াত তার গঠণতন্ত্র, সংবিধান, দলের কর্মসুচী, লক্ষ উদ্দেশ্যের ওপর সমালোচনামুলক পরামর্শ দেওয়ার জন্য দুনিয়ার অসংখ্য আলেমেদের দরবারে প্রেরন করেছে।জামায়াত গোড়ামী থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করছে।এটা তাদের সৎ সাহসের নমুনা।
এরকম সৎ সাহসের কারনেই আজ অব্দি জামায়াতের আক্বীদা নিয়ে দলের ভিতরে বাহিরে কোন প্রবলেম হয়নি এবং এর সাংগঠনিক গঠনে, নেতাকর্মীদের পারস্পরিক আস্থার ক্ষেত্রে কোন ঘাটতি দেখা যায়নি।আমার মনে হচ্ছে, বাংলার জমিনে জামায়াতই একমাত্র সংগঠন, যারা একটি ইসলামী সংগঠনের সকল নীতিমালা অনুসরন করে প্রতিষ্টিত এবং পরিচালিত হচ্ছে।এই সংগঠনের নেতৃত্বে বাপদাদা, মুরব্বির বংশ পরস্পরার কোন বালাই নেই।
অথচ খোজ নিলে জানা যাবে যে, কওমী ঘরনার প্রতিটি দল বংশানুক্রমিক ধারায় নেতৃত্ব তৈরি করে বার বার ভাঙ্গনের কবলে পড়ছে।এরকম দল ও আক্বীদার লোকেরা জামায়াতের আক্বীদা নিয়ে প্রশ্ন তোলার নৈতিক অধিকার সংরক্ষন করেন কিনা সেটাই হলো কোটি টাকার প্রশ্ন !!!
By-Apu Ahmed .

জাতিগত নির্মুলের গণহত্যা বন্ধ,তাদের প্রত্যাবসান, নাগরিকত্ব পুর্নবহাল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবেঃ নিহত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য গায়েবানা জানাজায় : মুহাম্মদ শাহজাহান



বাংলাদেশ বার্তাঃ চট্টগ্রাম, ২২ সেপ্টেম্বর-২০১৭ ইং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর আলহাজ¦ মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠিকে জাতিগতভাবে নির্মুলের লক্ষ্যে সেনাবাহিনী গণহত্যা,গণধর্ষণ,বাড়িতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগত, স্কুল,কলেজ,মসজিদ,মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জা¦লিয়ে দিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষকে সে নিজ দেশ থেকে বিভিন্ন দেশে তাড়িয়ে দিয়েছে। অবিলম্বে এই জঘণ্য মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য অং সান সূচি এবং সেনা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করতে হবে। গত ২৫ আগষ্ট থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানেরা বাঁচার জন্য বাংলাদেশে শরণার্থী হিসাবে পালিয়ে এসে আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
ইতিমধ্যে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ১৯৮২ সাল থেকে এই রোহিঙ্গা নাগরিকদের নাগরিকত্ব হরণ করেছে মিয়ানমার সরকার। অথচ তারা শত শত বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিরীহ নারী,শিশু,বৃদ্ধ এবং যুবক-যুবতিকে গণহারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। তিনি অবিলম্বে আন্তর্জাতিক আদলতে মিয়ানমারের সেনা কর্মসর্তাদের বিচারের দাবী জানান।
রোহিঙ্গা মুসলমান নাগরিকদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন এবং তাদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল গঠন করে তাদের নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করতে হবে। অবিলম্বে গণহত্যা,ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ বন্ধ করতে হবে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এবং মগ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত রোহিঙ্গা মুসলমানদের রুহের মাগফিরাত,আহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তাদের হেফাজতের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া দিবস উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত গায়েবানা জানাজা পূর্ব সমাবেশে তিনি সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের উদ্যোগে পুরাতন রেল ষ্টেশন চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,নগর জামায়াতের সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম,এসিসটেন্ট সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ, ছাত্রশিবির নগর উত্তর সভাপতির তাওহিদুল ইসলাম, নগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদমান সালেহ্, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি কাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গির হোসাইন। গায়েবানা জানাজা পূর্ব সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা: মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ,মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী ও এম.এ.আলম প্রমুখ।

মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

সুচির নোবেল ও নীল আর্মস্ট্রংঃ ইসমাইল আহমেদ

আইরিনাকে চিনেন? নাম শুনেন নি কোনোদিন। না শুনারই কথা। অং সান সুচিকে চেনেন? তাকে অবশ্যই চিনবেন। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী। আসুন আগে,একটু আইরিনাকে চিনি।
২য় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আইরিনা প্লাম্বিং/সুয়ারেজ পরিষ্কারের কাজ করতেন। স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বড় তাঁর একটা টুলবক্স ছিলো। টুলবক্সের ভিতরে ছিলো দুটো চেম্বার। প্রথমটা নানারকমের যন্ত্রে ভর্তি। আর ২য় লুকানো চেম্বারটি ছিলো ফাঁকা। ভিতরে কিছুই নাই। কিছু নাই বলতে যন্ত্রপাতি কিছুই না। তবে চ্যাম্বারের ভিতর চারপাশ কাপড়ে মোড়ানো ছিলো। টুলবক্সের ওপর নাজিফ্ল্যাগের লগো ছিলো । যাতে আইরিনা বিনা অনুমতিতে যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন। এই টুলবক্সের ভিতর করেই আইরিনা- বন্দিদশা থেকে শিশুদের মুক্ত করা শুরু করেন। আইরিনা যেখানেই যেতেন-সবসময় তাঁর সাথে থাকতো বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটা কুকুর। আইরিনা এমনভাবে তাঁর কুকুরটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন-যাতে শিশুরা যদি কান্না শুরু করে তখন কুকুরটি এতো জোরে ঘ্যাঁও ঘ্যাঁও করতো- যাতে নাজি সৈন্যরা বুঝতে না পারে টুলবক্সের ভিতরে কোনো শিশু আছে। যখনই কোনো শিশু কাঁদতো তখনই কুকুরটি গ্যাঁও গ্যাঁও করা শুরু করতো। কান্না থেমে গেলে কুকুরটির গ্যাঁও গ্যাঁও করাও থেমে যেতো। 

যেভাবেই হোক কুকুরটিও বুঝতে পেরেছিলো- আইরিনা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুদের প্রাণ রক্ষা করছেন। এভাবে জীবনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে আইরিনা ২য় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার মাঝে ২৫০০ শিশুর জীবন বাঁচান।

একদিন নাজি সৈন্যদের সন্দেহ হয়। আইরিনা টুলবক্স সাথে নিয়ে দৌড়াতে থাকেন। সেনাদের গুলি থেকে টুলবক্সটি বাঁচাতে কুকুরটি টুলবক্সের সামনে ঝাঁপদিলে নাজি সেনার গুলি খেয়ে কুকুরটি মারা যায়। আর আইরিনাও ধরা পড়েন। তাঁর ওপর প্রচণ্ড নির্যাতন করা হয়। ভেঙ্গে দেয়া হয়- হাত-পা। তিনি সারা জীবনের জন্য খুড়া হয়ে যান। আইরিনা প্রতিটি শিশুর নাম-কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন-আনুমানিক বয়স ইত্যাদি একটা কাঁচের জারের ভিতর লিখে নিজের বাড়ির পেছনে একটা গাছের নীচে পুঁতে রাখেন। যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে-তিনি এইসব শিশুদের পিতামাতা যারা জীবিত ছিলেন তাদের খুঁজে বের করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন।
আইরিনা নোবেল পুরস্কারের জন্য বেশ কয়েকবার মনোনীত হন-কিন্তু একবারও তিনি নির্বাচিত হননি। নির্বাচিত হয়ে পুরস্কার পেয়েছেন বর্মার সুচি।
নোবেল বিজয়ি সুচি যার হাতে মুসলমানের রক্ত লেগে আছে সেতো আইরিনার সেই কুকুরের কাছেও নগণ্য।
একটা অধম কুকুর মানব সন্তানের দূর্দশা বুঝেছে আর শান্তিতে নোবেল বিজয়ি সুচি মানব সন্তান বুঝেন না। অদ্ভূত! ভালোই হয়েছে আইরিনা পুরস্কার পাননি- এসব পুরস্কার দিলে তার জীবনটাই বরং ছোট করা হতো।

এই দুনিয়ার তাবত সভ্যতার মুখে পেচ্ছাব করে দিয়েছিলেন কে জানেন? বাজ অল্ড্রিন। যিনি চাঁদে হেঁটেছিলেন। নীল আর্মস্ট্রং যখন প্রথম চাঁদের মাটিতে পা রাখেন- ঠিক তখন চাঁদের মাটিতে পেচ্চাব করেন অলড্রিন। "নো ড্রিম ইজ টু হা" বইয়ে অলড্রিন নিজেই লিখেছেন- মানুষ জানবে চাঁদের মাটিতে প্রথম হাঁটা মানুষ নীল আর্মস্ট্রং। সাথে এও জানুক চাঁদে প্রথম পেচ্ছাব করা মানুষটি হলো অলড্রিন। সভ্য দুনিয়ার কক্ষপথে চন্দ্রের সাথে অলড্রিনের মূত্রও ঘুরতে থাকুক।
মাটিতে মুসলমানের রক্ত লাগলে মিডিয়া কভারেজ দিবেনা- শান্তির ভবনে মূত্র লাগিয়েও যদি একটু কভারেজ পাওয়া যায়? দুনিয়ার সভ্যতা বল? কত মুসলমানের রক্তে মাটি সিক্ত হলে তোমাদের চোখে একফোটা কান্না আসবে??? অলড্রিন চাঁদে ওঠে পেচ্চাব করেছিলেন। প্রচণ্ড দুঃখে- আজ জাতিসংঘ ভবনের ছাদে ওঠে পেচ্চাব করার কেউ কি আছে দুচোখ অন্ধ এই সভ্যতার মুখে???

রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ত্রাণ নিতে গিয়ে দুই দিনে তিন রোহিঙ্গার মৃত্যু ত্রাণ বিতরণে চলছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা; দীর্ঘ যানজটে দুর্ঘটনার আশংকা!


জসিম উদ্দিন টিপু,টেকনাফ:: কার কথা কে শোনে! এমন অবস্থা এখন কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়াতে। রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের নামে চরম বিশৃংখলা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশনা না মেনে রাস্তার ধারে যেখানে সেখানে ত্রাণ বিতরণ করায় দীর্ঘ যানজটে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। কক্সবাজার টেকনাফ সড়কে রোহিঙ্গাদের বিক্ষিপ্ত চলচল, হ-য-ব-র-ল ত্রাণ ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা ও পুলিশ ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলা পরবর্তী সহিংসতায় নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এখনো অনেক রোহিঙ্গা সীমান্তের ওপারে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। নিজ দেশে নির্যাতিত নিপীড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গা এখন টেকনাফ-উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং গ্রামে গঞ্জে বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান করছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কেউ ক্যাম্পে, কেউ পাহাড়ে, কেউ গ্রামে গঞ্জে, কেউ বা রাস্তার ধারে বসে বসে দিন রাত পার করছে। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে খেয়ে না খেয়ে লাখো রোহিঙ্গা মানবেতর জীবন যাপন করছে। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন স্বয়ং সরকার প্রধান থেকে শুরু করে দেশের সব শ্রেনীর মানুষ। রাজনীতিবিদ ও কুটনীতিকরা দলে দলে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের স্বচক্ষে দেখতে ছুটে আসছেন। সাধ্যমত সকলে সহযোগীতাও করছেন। 
তবে রোহিঙ্গারা কিছু পাওয়ার আশায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দু’পাশে বসে থাকে। কোন গাড়ী দেখলে তারা দৌঁড়ে আসে। কার আগে কে নিতে পারে তাদের মধ্যে এমন প্রতিযোগীতা চলে। স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিন চলন্ত গাড়ী থেকে বিক্ষিপ্তভাবে ত্রাণের প্যাকেট ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এসময় দৌঁড়াদৌড়িতে অনেক রোহিঙ্গা হতাহতও হয়েছে। ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতার অভাবে গত দুই দিনে তিন রোহিঙ্গা নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। রোহিঙ্গা যুবকরা নারী এবং শিশুদের কাছ থেকে ত্রাণের প্যাকেট ছিনিয়ে নিচ্ছে। অনেকে ত্রাণ দেওয়ার নামে ফটোসেশন করতে গিয়ে সড়কে গাড়ী দাঁড় করিয়ে রোহিঙ্গাদের মাঝে নিছক অপ্রয়োজনীয় কিছু বিতরণ করেই যাচ্ছে। গাড়ী দেখলে ছুটে আসা রোহিঙ্গাদের হুড়াহুড়িতে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগেই থাকে। এ কারণে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে যান চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। সীমান্তে ত্রাণ বিতরণে চরম হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। 
এদিকে রোহিঙ্গাদের মাঝে যত্রতত্র ত্রাণ না দিতে জেলা প্রশাসন নির্দেশনা দিলেও কেউ মানছেন না। আগ্রহী প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং সংশ্লিষ্টদের জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিলে জমা দিতে বললেও কেউ কারো কথা শুনছেন না। “কে শোনে কার কথা” উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে চলছে এমন অবস্থা। হ্নীলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সি: সহ সভাপতি বাহাদুর শাহ তপু জানান, লোক দেখানো ত্রাণ তৎপরতা বন্ধ করে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের মাঝে সাধ্যমত খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে গাড়ী দিয়ে রাস্তার ধারে বসে থাকা এবং গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে দিতে তিনি লোকজনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের টেকনাফ উপজেলা সভাপতি ও নাফ মেরিট স্কুলের অধ্যক্ষ মমতাজুল ইসলাম মনু জানান, ত্রাণ বিতরণের নামে সড়কে চরম অব্যবস্থাপনা দেখা যাচ্ছে। ত্রাণের নামে বিশৃংখলা এবং জনদুর্ভোগ বাড়ছে। তিনি সড়কের উপর সব ধরণের ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। টেকনাফ উপজেলা ত্রাণ সেলের সমন্বয়ক সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রণয় চাকমা জানান, যত্রতত্র ত্রাণ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিতরণের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে টেকনাফেও একটি ত্রাণ সেল খোলা হয়েছে। ঐ সেলের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তায় সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহবান জানান। জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন জানান, যেখানে সেখানে ত্রাণ দেওয়া যাবেনা। জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ দেওয়া যাবে

বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ মোহাম্মদ শফির মৃত্যুতে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দের শোক

বাংলাদেশ বার্তাঃ চট্টগ্রাম পাহাড়তলীস্থ শফি মোর্টস এর সত্ত্বাধিকারী বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ মোহাম্মদ শফির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, পাহাড়তলী থানা জামায়াতের আমীর আলহাজ মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন এক শোক বাণী প্রদান করেন।
শোক বাণীতে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবার বর্গের প্রতি সমবেদনা জানান।

অমলিন স্মৃতি: জান্নাতের পথে সুরভিত গোলাপ শহীদ আহমদ ছাফা

বাংলাদেশ বার্তাঃ হিমালয়ান উপমহাদেশের এই ভূখন্ড এক সময় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে “দারুল ইসলাম” বা “মুসলিম রাষ্ট্র” হিসেবে পরিচিত ছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিণতিতে আজ এই দেশ মুসলমানদের উপর জুলুম অত্যাচার আর চরম নিপীড়নের কেন্দ্রভূমিতে পরিণত হয়েছে।
এই অঞ্চলের মুসলিম মিল্লাতের শাশ্বত ঈমানী প্রাণ প্রবাহ অক্ষুন্ন রাখার লক্ষ্যে রাসূল (সা:) এর কর্মসূচী অনুসরণ করেই শহীদ আব্দুল মালেকের পথ ধরে ত্যাগের প্রতিযোগিতাই বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলন শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে।
তাই দ্বীন প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলনে জীবন মরণ সংগ্রামে অবতীর্ণ মজলুম ভাইয়েরা।

বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে রয়েছে সুগভীর ষড়যন্ত্র। ক্ষমতাসীন সেক্যুলার গোষ্টি আওয়ামীলীগের হিংস্র বর্বরতায় আক্রান্ত হাজার হাজার দ্বীনের সৈনিক। প্রতিনিয়ত টার্গেট করে হত্যা, গুম, অপহরণ,পঙ্গুত্ববরণ,আর্থিকভাবে চরমক্ষতি, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলায় আঘাত করাই ক্ষমতাসীনদের অন্যতম উদ্দেশ্য। এই ভাবে আজ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চরম নির্যাতন, নিপীড়নে অকালেই প্রিয় বাবা, ভাই,স্বামীকে হারিয়ে হাজারো স্বজনের করুন আর্তনাদের দরিয়া সৃষ্টি হয়েছে। 
একমাত্র প্রিয় অভিভাবক হারিয়ে অসংখ্যা শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে ভবিষ্যতের ভাল মানুষ হওয়ার স্বপ্ন পন্ড হয়ে গেছে। বাবার কোলে বসে ভাল মানুষ হওয়ার স্বপ্ন আর শুনতে পায় না। 
প্রতিনিয়ত শুনতে পায় বাবা, ভাইয়ের নির্মম মৃত্যুর প্রতিধ্বনি। হায়েনার ছোবলে বিষাক্ত ফণা আবার যে কখন কোন স্বজনের উপর পতিত হচ্ছে সেই উৎকন্ঠাতে আতংকিত মুহুর্ত কাটে সবসময়।

অসংখ্য হত্যাকান্ডের জনপদ সাতকানিয়া
বর্তমান ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠির নির্মম নির্যাতনের ভয়াবহ উপত্যকা খ্যাত জনপদ দক্ষিণ চট্রগ্রামের সাতকানিয়া। একের পর এক নির্মম রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার এই জনপদের দ্বীন প্রিয় যুবক।২০১১ সালে শাসক গোষ্ঠির চিহিৃত সন্ত্রাসীরা প্রকাশে্য ঘোষনা দিয়ে সশস্ত্রভাবে হামলা করে সম্ভাবনাময়ী দুই তরুণ প্রিয় আব্দুল হাকিম এবং কামাল উদ্দিনকে জবাই করে হত্যা করে।
খুনিরা এখনও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়ায়। এই ভাবে সন্ত্রাসীরা দলীয় ভাবে হত্যা সন্ত্রাসের মদদ পায়।
২০১৩ সালে মাওলানা দেলোওয়ার হোসেন সাঈদী সাহেবকে মিথ্যা সাজার বিরুদ্ধে শান্তপ্রিয় জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ অবস্থানে পুলিশের নির্বিচার গুলি বর্ষনে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় ছদাহার তিন যুবক আবু তাহের, ওসমান, শহীদ। 
লোহাগাড়াতে নিহত হয় আমিরাবাদের মিসবাহ উদ্দীন।কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় এই উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের আবু ছালেহ । 
সিলেটে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় চরতির মাষ্টার মাহফুজুর রহমান।
কিছুদিন পর শহরে বাসায় সাতকানিয়া লোহাগাড়ার সাবেক এম.পি. শাহাজাহান চৌধুরীর প্রিয় ভাগিনা সাহসী যুবক মুন্নাকে বর্বরোচিত কায়দায় নিমর্মভাবে হত্যা করে। 
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি প্রহসনের নিবার্চনে পুলিশ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের যৌথ হামলায় নিহত হয় লোহাগাড়া উপজেলার বড় হাতিয়ার শিবির কর্মী এনামুল হক লালু। একই হামলায় পঙ্গত্ববরণ করেন শিবিরের সাথী গিয়াস উদ্দীন। 
কিছুদিন পর গ্রেপ্তার করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ছদাহার কৃতি সন্তান জসিম উদ্দিনকে।
২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারী চুনতি সিরাত মাহফিল শেষে পথিমধ্যে আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলায় শাহাদাত বরণ করেন নগরীর মহসীন কলেজের ছাত্র শিবিরের সাথী চুনতি গ্রামের জুবাইর হোসেন।
একই বছর ২৬ জানুয়ারি নগরিতে পুলিশের বর্বরোচিত হামলায় বিনা চিকিৎসায় শাহাদাত বরণ করেন লোহাগড়ার পুটিবিলার কৃতি সন্তান শিবিরের সদস্য প্রার্থী সাকিবুল ইসলাম। 
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর পুলিশের নির্মম গুলিবর্ষনে স্পটেই মৃত্যুবরণ করেন কাঞ্চনার বীর সাহসী যুবক আবুল বশর। 
ক্ষমতাসীন গোষ্টির নির্মম বর্বরতায় এইভাবে প্রাণ হারায় সাতকানিয়া-লোহাগড়ার ১৪ জন মর্দে মুজাহিদ।
বর্বরোচিত ভাবে পঙ্গুত্বের শিকার যুবকরা
পঙ্গুত্ববরনের আহাজারীতে ও সাতকানিয়া বর্বরোচিত কায়দায় নিমর্মভাবে রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের পর সাতকানিয়ায় কয়েকজন বীর তরুণ ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে পঙ্গু করে দেয়া হয়। পুলিশ নিরাপদ জায়গা থেকে গ্রেপ্তর করে নির্জন স্থানে নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে গুলি করে। পরবর্তীতে হাসপাতালে জীবন রক্ষাত্বে পা কেটে ফেলা হয়। ঘটনাটিকে পুলিশ কথিত "বন্দুকযুদ্ধ "নাটক উপাধি দিয়ে রমরমা সংবাদ পরিবেশ করে উল্টো অস্ত্র মামলা করে পঙ্গু ভাইদেরকে কারাগারে আটক রাখে। পা হারিয়ে আজীবনের জন্য চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায় এওচিয়ার আবু তাহের, শহীদুল ইসলাম, মোহাম্মদ এনাম। কাঞ্চানার কামাল উদ্দীন , ছদাহার রফিক ড্রাইভার, কেওচিয়ার বিবাহিত মহিলা সাজু আরা বেগম। এই সকল ভাইদের উপর অত্যাচারের ভয়াবহতা মানবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আইন মানবাধিকারের চরম দৈন্যদশা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে।
সাতকানিয়ায় হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতায় নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করলেন প্রিয় ছাফা ভাই:
বিগত কয়েক বছর ধরে পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন আহম্মদ ছফা ভাই। এই বছর উপজেলা সংগঠনের সাংগঠনিক সংবাদ পৌঁছে দেয়া, ইউনিট টীম বৈঠক সহ বিভিন্ন কাজে তাকে সহযোগিতার দায়িত্ব ছিল আমার। তাই বছরের শুরু থেকেই পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের অনেক বৈঠকেই ছাফা ভাইয়ের সাথে ছিলাম। ছফা ভাই থানা সংগঠনের দায়িত্বশীলের সাথে নিয়মিত ফোনে আলাপ করে প্রতিদিন কাজ বুঝে নিতেন। এই বছর পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নে সংগঠন মজবুতির দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে অল্প সময়ে অনেক বৈঠক, অনেক জনশক্তির সাথে যোগাযোগ করেন। 
সুন্দর দিনটি ছিল ২৪শে মে সোমবার। সুবহে সাদিকের আলোর সাথে ঝলমলে দিন শুরু হয়। ভোরে ছোট ছেলে মেয়ের সাথে নাস্তা সেরে কর্মব্যস্ততায় বেরিয়ে যায় ছাফা ভাই। অনেক কাজের মধ্যে রুটিন মাফিক নিয়মিত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ইকামাতে দ্বীনের কাজ।এই দিন চট্রগ্রাম শহরে অবস্থানরত বাছাইকৃত কর্মীদের পাঠচক্র ছিল।এক সপ্তাহ আগেই পাঠচক্রেরর দাওয়াত দেয়া হয়। বিগত ৫ দিন ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত থেকে একটু সুস্থ হয়েছে। অসুস্থতার মাঝেও পাঠচক্রে আসতে উদগ্রীব ছিল। যথাসময়ে বাদে মাগরিব ছারওয়ার ভাইয়ের বাসায় উপস্থিত হয়েছে ছাফা ভাই। মেহমান ছিলেন মুহতারাম থানা আমীর মাওলানা আবুল ফয়েজ ভাই। রাত ৮টায় শেষ হয়। পাঠচক্রের নির্ধারিত বিষয়ে ছাফা ভাই প্রাণবন্ত আলোচনাও করেন। পরবর্তী প্রোগ্রাম রমজানে তাহার বাসায় ইফতার সহ করার জন্য প্রোগ্রামে সবাইকে দাওয়াত দেন। আমরা সবাই ছাফা ভাইয়ের প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করি।

হঠাৎ প্রোগ্রাম শেষে সরকারের পেটুয়া বাহিনী ডিবি পুলিশ ৫ম তলা বাসায় আমাদেরকে ঘিরে ফেলে। সবাইকে গ্রেপ্তার করে লালদিঘী ডিবি অফিসে নিয়ে যায়। তখন রাত ৮:৩০টা। ডিবিতে কর্মরত অফিসারের সহযোগিতায় আমরা সবাই নিজের মোবাইলে নিজ নিজ পরিবারের সাথে কথা বলি। আমরা প্রশান্তি অনুভব করি।খুবই ঘনিষ্ট দুই বন্ধু হেলাল সহ রাত ৯টার দিকে ছফা ভাইয়ের সাথে দেখা করেন। পারিবারিক, ব্যবসায়িক, মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে দুই বন্ধুর সাথে আলোচনা করেন। ডিবি থেকে মোবাইলটি নিয়ে বন্ধুকে দিয়ে দেন ছফা ভাই।
ছারওয়ার ভাইয়ের কয়েক জন আত্বীয়ও দেখা করেন। ডিবি অফিসারদের সৌহার্দ্যপূর্ন আলোচনার পরে আমরা টেনশন মুক্ত হয়ে যায়। রাত ১টার দিকে কোতেয়ালি থানায় নিয়ে যায়। রাতে ইবাদাত, গল্পে, সামান্য ঘুমে ফজর হয়। খুব ভোরে কয়েক জন ভাই হাজতে দেখা করেন। আমার ভাই,স্ত্রী, ছারওয়ার ভাইয়ের ভাইয়েরা, ফয়েজ ভাইয়ের আত্বীয়রাও দেখা করেন। 
সকাল ১১টার দিকে আবার ডিবি অফিসে নিয়ে আসে। সেখানে পারিবারিক তথ্য, ছবি তোলা সহ বিভিন্ন আনুস্টানিকতা শেষে বিকাল ৫টার দিকে নতুন মামলায় আসামী করে আদালতে নিয়ে যায়। উদ্বিগ্ন সংঠনের ভাইয়েরা ও
সবার আত্বীয় স্বজন দেখা করেন। আমাদের দেখে তারা কিছুটা স্বস্তি পাই, টেনশন মুক্ত হয়। আদালত থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই কারাগারে প্রবেশ করি। কারাগারে প্রবেশ করেই ছাফা ভাইয়ের আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় আমদানিতে না গিয়ে আমরা সরাসরি পদ্মা ৫ ওর্য়াডে চলে যাই । বিগত দুই দিনে ডিবি অফিসের ঝামেলা, কোতেয়ালি থানার হাজতের রাত, র্কোটের হাজত রুমের চরম ভোগান্তি শেষে সরাসরি ওর্য়াডে প্রবেশ আমাদের জন্যে ছিল পরম প্রশান্তি। গোসল,খাবার, নামাজ দুআ শেষে তিনদিনের নিদ্রাহীন ক্লান্ত শরিরে সহজেই বিশ্রামের সুযোগ হয়। বিষয়টি একান্তই ছাফা ভাইয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টাই।

কারাগারে জুমাবার, শনিবার ছাফা ভাইকে ইবাদত বন্দেগিতে খুবই ব্যস্ত দেখি। অল্প দিনেই ওর্য়াডের সবার সাথে সুসর্ম্পক গড়ে তুলেন। রবিবার রিমান্ড শুনানিতে র্কোটে আসি। ম্যাজিস্ট্রেট এডভোকেটদের যাবতীয় যুক্তি, কারণকে নাকচ করে সবাইকে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড মঞ্জুরের পর থেকে একটুু বিচলিত দেখা যায় ছাফা ভাইকে। ছাফা ভাই পারিবারিক এবং ব্যাসায়িক বিষয়ে একটু বেশি চিন্তিত ছিল।
দ্বিতীয়ত ব্যবসায়িক ঝামেলা। ব্যবসায় বিগত সময়ে প্রচুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ব্যবসায়িক মামলায় কারাগারেও এসেছিলেন। নতুন ভাবে ব্যবসায় শুরু করেছেন। সেখানে আবার গ্রেপ্তার। পরিবার এবং ব্যবসায় নিয়ে খুব চিন্তা করতেন। রিমান্ড মনজুর হয়েছে, রিমান্ডে যেতে হবে। এই রিমান্ড নিয়ে টেনশনে ছিলেন। শারিরীক ভাবে বিভিন্ন রোগে অসুস্থতাও ছিল।

তারপরেও সোমবার, মঙ্গলবার, বুধবার দুপুর র্পযন্ত কুরআন-হাদীস এবং ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নে খুবই ব্যস্ত থাকেন। কুরআনের বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান র্অজনে খুবই আগ্রহী দেখতাম। প্রতিদিন সকালে নামাজ পড়ে নিয়মিত কুরআন অধ্যয়ন করতেন। মাঝে, মাঝে কুরআন হাদীসের বিভিন্ন বিষয়ে নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করতেন। ইবাদত,বন্দেগী, দ্বীনি ইলম অর্জনে ব্যস্ত থাকতেন। বুধবার বিকাল ৪ টায় রিমান্ডে যেতে ডাক আসে। সাথে সাথে সবাই ৪ রাকাত নফল নামাজ আদায় করি। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সবাইকে ডান্ডাবেড়ি পড়ার জন্যে কারারক্ষীকে র্নিদেশ দেন। ছাফা ভাই আগে থেকে বিচলিত ও অসুস্ত ছিল।থানা আমির ফয়েজ ভাই বয়স্ক এবং অসুস্থ। তাই থানা আমির এবং ছাফা ভাইকে ডান্ডাবেড়ি না পড়াতে অনুরোধ করি। কিন্তু আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে দুই জনকেই ডান্ডাবেড়ি পড়ানো হয়। তখন ছাফা ভাই আরো অসুস্থ হয়ে পড়েএবং সারা শরির খুব ঘেমে যায়।
এই অবস্থায় আসর নামাজ পড়ে কারা ফটকে প্রবেশ করি। সেখানে ফ্লোরে বসে যায় তিনি।
বিকাল ৫:৩০ টায় ডিবি অফিসে পৌছি। অসুস্থায় তিনি আরো বেশি ছটফট করেন। দোয়া ,দরুদ পড়তে থাকেন। একটু দাড়ান আবার বসে পড়েন। আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়েন কিছুক্ষণ। আমাদের একজন ভাই তাকে বললেন, আপনি হতাশ হচ্ছেন কেন? তিনি সাথে সাথে মৃদু প্রতিবাদে শক্ত করে বললেন,"আমি এগুলোকে ভয় পায়না, ঈমানের সাথে কিভাবে মৃত্যবরন করতে হয় তা আমি জানি। আমি মানসিক ভাবে খুব শক্ত। আপনি বুঝতেছেন না। আমি বাস্তবে খুব অসুস্থতা অনুভব করতেছি"।
থানা আমিরকে আবার তিনি বললেন আমার খুব খারাপ লাগতেছে। আমি এখন কি করব? আমির সাহেব রোজা ভাংতে বললেন। তিনি রাজি হচ্ছে না। আমাদের ফরমান ভাই খুব জোর দিয়ে বললেন, "আপনি গ্রেপ্তার, রিমান্ডে, খুব অসুস্থ, রোজা আপনার উপর ফরজ নয়"। এইভাবে অনুরোধে কিছু পানি পান করালাম। আবার একটু খারাপ বেশি লাগতেছে। আমরা ডিউটি অফিসারকে ডেকে ডিউটি অফিসারের রুমে তাকে পাঠালাম। আমরা ভাবলাম তাকে খুব দ্রুত মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হবে। না! ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে আবার আমাদের রুমে চলে আসলেন। সবার সাথে ইফতার করলেন। সব কিছু অল্প অল্প খেলেন। নামাজের জন্য দাড়ালেন। একটু পায়চারি করলেন। হঠাৎ দেখি বমির ভাব ভাব। সাথে সাথে দরজার পাশে আল্লাহু আকবর বলে পড়ে গেলেন। দ্রুত ডিউটি অফিসারের রুমে নিয়ে গেলেন। কতক্ষণ পর মেডিকেলে নিয়ে গেল।
কি হল আমরা আর জানলাম না। আমরা খুব চিন্তিত হয়ে পড়লাম। কারো কাছ থেকে কোন খবর পাচ্ছি না। মনে হয় ২০ মিনিট পর মেডিকেলে দিকে যাত্রা করলেন। এইভাবে অজানা আশংকায় আমাদের সময় কাঠতে লাগল।

কোন আত্বীয় স্বজনও আমাদের সাথে দেখা করতে আসেনি। কত্যর্বরত পুলিশকে জিজ্ঞেসা করলেও কোন সংবাদই বলেনা। সময় যত যাচ্ছে ততই আমাদের চিন্তা, টেনশন বেড়েই যাচ্ছে। এইভাবে রাত ৮টা। হঠাৎ এক সিনিয়ার অফিসার এসে আমাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করলেন। তারপর ডিবি সিনিয়ার অফিসের রুমে নিলেন। ছাফা ভাই কারাগার থেকে মেডিকেলে যাওয়া পর্যন্ত ঘঠনা লিপিবদ্ধ করে আমাদের ৫ জন থেকে আলাদা কাগজে স্বাক্ষর নিলেন। তারাও ছাফা ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ আমাদের জানায়নি। জবানবন্ধি শেষ হয় রাত ১টা। তারপর কোতেয়ালী থানাতে রেখে আসলেন। সেখানে সেহেরীর খাবারের ব্যবস্থা করেন। আমারা সেহেরী খেয়ে বাদে ফজর ঘুমালাম। ভোর ৮টায় ছারওয়ার ভাইয়ের বড় ভাই আসলেন। ছাফা ভাই সিরিয়াস অসুস্থ মেডিকেলে আছে বলে চলে গেলেন। সারারাত দুশ্চিন্তার মেঘ কাটল। ছফা ভাই জীবিত আছে জেনে আমরা খুব খুশি হলাম। সকাল ১০টার দিকে ছারওয়ার ভাইয়ের ছেলে আশিক আসলেন। আশিকই জানাল ছাফা ভাই গত রাতে ইন্তেকাল করেছে। সবাই খুব ভেঙ্গে পড়লাম। মনকে বুঝানো, মৃত্যু সংবাদ মেনে নেয়া খুব কঠিন হয়ে দাড়াল আমাদের জন্য।
একসাথে প্রোগাম, গ্রেপ্তার, আদালত, কারাগার, রিমান্ডে যেন সবাই একাকার ছিলাম। আজ অস্বাভাবিক ভাবে ছাফা ভাই আমাদের মাঝে নেই। আমাদের প্রিয় ভাই চলে গেলেন মহান রবের খুব কাছে আপন ঠিকানায়। দুনিয়ার লোভ-লাসার উর্ধ্বে উঠে ইকামাতের দ্বীনের কাজেই সরকারের চরম জুলুমের কাছে শাহাদাত বরণ করলেন অত্যন্ত প্রিয় আহম্মদ ছাফা ভাই।

আদর্শ জীবন চরিত্র:
শহীদ আহম্মদ ছাফা ভাই বাল্যকাল থেকেই ইসলামী আন্দোলনের সাথে গভীর সর্ম্পক তৈরি করেন। তার নিজের গ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য ছাত্রদের নিকট দ্বীনের দাওয়াত পৌছান। দাওয়াতী চরিত্রের মৌলিক গুণ ছিল তার জীবনে। সত্য কথা বলা, হাসিমুখে থাকা, বিপদে চরম ধৈর্য ধারণ করা, জনশক্তির বিপদে নিরলস ভাবে সহযোগিতা করা, সংগঠনের কাজে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করাই ছিল অন্যতম গুণ। পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের সকল জনশক্তি দল মত নির্বিশেষে সবার নিকট গ্রহণযোগ্য আদর্শনীয় ব্যক্তি ছিলেন ছাফা ভাই। এই গুণের মানুষ সমাজে খুবই বিরল।
শহীদের গ্রামে রামপুর
সাতকানিয়া উপজেলা সদরের ৪ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে ডলুনদীর তীর ঘেষে ঐতিহ্যবাহী রামপুর গ্রাম। এই গ্রামের মানুষ খুবই সহজ সরল। খুবই দ্বীনদার। অধিকাংশই ইসলামী আন্দোলনকে মনে প্রাণে ভালোবাসে। জন্ম লাভ করেছে ইকামতে দ্বীনের জন্য অনেক সিপাহ সালার। এই গ্রামের প্রত্যেক বাড়ীতে রয়েছে দ্বীনের জন্য নিবেদিত কর্মী। আল্লাহর রহমতে এই গ্রামের পবিত্র মাঠিতে শায়িত আছেন শহীদ আহম্মদ ছফা ভাইয়ের প্রিয় বন্ধু সহপাঠী দ্বীনের সহযাত্রী শহীদ আনোয়ার হোসেন।
১৯৯৫ সালের ২৩ অক্টোবর সাতকানিয়া সরকারী কলেজে ছাত্রদলের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র সংগঠনের সদস্যপ্রার্থী শহীদ আনোয়ার হোসেন। আনোয়ার ভাইয়ের সাথে একসাথে পড়ালেখা ও সংগঠন করতেন আহম্মদ ছফা ভাই। আনোয়ার ভাইয়ের শাহাদাৎ বার্ষিকিতে প্রতিবছর ছাফা ভাই সৃতিচারণ করতেন। আনোয়ার ভাইকে নিয়ে গর্ব করে বলতেন আমি দ্বীনের জন্য নিবেদিত একজন শহীদের বন্ধু ছিলাম। প্রিয় বন্ধুর শহীদি মিছিলে শামিল হয়ে শহীদ আহম্মদ ছফা ভাই রামপুর মাটি ও মানুষকে ধন্য করলেন। 
এই রামপুর গ্রামে শায়িত আছেন ছাত্রশিবিরে শহীদ বোরহান উদ্দিন। ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন। এইভাবে তিন জন শহীদের পবিত্র ভূমি রামপুর গ্রাম। আরো সত্য হলো এই গ্রামের আধা-কিলোমিটর পশ্চিমে শায়িত আছেন শহীদ সালাহউদ্দিন ভাই, জামায়াতে ইসলামীর কর্মী শহীদ আকবর হোসেন। এক কিলোমিটার দক্ষিণে গাটিয়াডেঙ্গায় শায়িত আছেন শ্রমিক কল্যানের কর্মী শহীদ মোনায়েম মুন্না।

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পরিচয়:
শহীদ আহম্মদ ছফা সাতকানিয়া উপজেলার তৎকালিন মাদার্শা ইউনিয়নের বর্তমান পশ্চিম ঢেমশা রামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২ ভাই ২ বোনের মাঝে তিনি ৪র্থ। দুই বছর আগে বাবা মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯৩ সালে এস এস সি পাস করেন। সাতকানিয়া কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। এক মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। শহরের স্কুলে মেয়ে সপ্তম শেণীতে, ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। শহরে অনেক বছর থেকেই মোটর-পার্টসের ব্যবসা করে আসছেন।
জানাজা ও দাফন
বুধবার রাতেই ডিবি হেফাজতে আকষ্মিকভাবে আহম্মদ ছাফা ভাইয়ের শাহাদাতের সংবাদ দ্রুতই গ্রাম,শহর,দেশে বিদেশের সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। আত্বীয় স্বজন পরিবার ও সংগঠনের সকল জনশক্তি সবাই হতবাক ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। অসহায় নিরপরাধ নিরহংকার খুব সাদাসিধে সহজ সরল মানুষ ছাফা ভাইকে এই ভাবে হারিয়ে সবাই খুবই বিমূর্ষ হয়ে যায়। পরদিন শুক্রবার পরিকল্পিত পোস্টমটেম শেষ করে পুলিশ প্রহরায় শহীদের কফিন গ্রামের দিকে নিয়ে যায়। শহরে অগণিত শহীদের সাথী স্বজনরা জানাজা পড়ার আগ্রহ করলেও নির্দয় প্রশাসন সুযোগ দেয়নি। শহীদের কফিন বাদে আছর নিজ গ্রামে পৌঁছলে পূর্বেই সাতকানিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজার হাজার শোকাহত জনতা জানাজা স্থলে চলে আসে। গ্রামবাসী শোকাহত জনতার ক্রনদন আর্তনাদে সশব্দে ভেসে উঠে। শোকাহত জনতার উদ্দেশ্যে রামপুর বায়তুশশরফ মাদ্রাসা মাঠে জানাজার পূর্বে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর জনাব জাফর সাদেক, নায়েবে আমীর মুহাম্মদ ইছহাক, চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রামপুর গ্রামের কৃতি সন্তান মাওলানা নেজাম উদ্দীন, সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রামপুরের কৃতি সন্তান জসিম উদ্দীন। আরো অনেক নেতৃত্ববৃন্দ জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
সন্তানের আকুতি:

৭ম,৬ষ্ট শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা কোথায় পাবে বাবার আদর স্নেহ। প্রতিদিনের আবদার কে মিঠাবে। এই এতিম সন্তানেরা কি পড়ালেখা করতে পারবে? যে সন্তানেরা মৃত্যুর পূর্বে বাবার পাশে দাড়াতে পারেনি। তাদের ভয়াল আকুতি সবখানে। আমার বাবাকে কেন গ্রেপ্তার করা হল? বিনা কারণে কেন রিমান্ডে নেয়া হল? আমার বাবার কি দোষ ছিল?

এই নিরীহ এতিম সন্তানদের হাজারো প্রশ্নের জবাব কে দিবে?
দানব এই সরকার কি শিশুদের এই অব্যক্ত কথা বুঝবে! বৃদ্ধ মায়ের আশাগুলো অচিরেই শেষ করে দিল।অসহায় অসুস্থ মায়ের দিনগুলি কিভাবে কাটবে।দু:খ-যন্ত্রনা কে মুছে দিববে।
আজ শহীদের শাহাদাতে নির্মিত সাতকানিয়ার জনপদ। সেখানে অসংখ্য লোকের শাহাদাত বরণ, গ্রেফতার, পঙ্গুত্ববরণ, প্রশাসনের সীমাহীন লুটপাট, ভাংচুর ও ছন্নছাড়া অসংখ্য পরিবার। এমনকি অনেক মেধাবী ছাত্রের ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে গেছে এই আওয়ামী দু:শাসনে। চরম নির্যাতন, নিষ্পেষণে ক্ষত-বিক্ষত সাতকানিয়ার সর্বত্রই আজ মানবতার আর্তনাদ আর আহাজারি।
শুকরিয়ার বিষয় হলো এ ক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলনের ভাইয়েরা কখনো বিচলিত হয়নি। তাদের ঈমানের গতি পূর্বের তুলনায় আরো দৃঢ় হয়েছে। হাসি মুখে প্রাণ বিলিয়ে দিতেও শপথে উজ্জ্বীবিত। অসংখ্য দ্বীনের মুজাহিদ আল্লাহর ভালবাসায় সিক্ত হয়ে সংগঠনের প্রয়োজনে দুনিয়ার সমস্ত ভালোবাসা উপেক্ষা করে প্রশান্তমনে দ্বীনি দায়িত্বে ব্যাকুল।
মহান রবের উপর ভরসাই ছিল তাদের একমাত্র সম্বল। তাইতো দ্বীনের মুজাহিদরা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছেন। ঈমানের এই অগ্নি পরীক্ষা যত বড় সফলতাও তত বড়। তারা প্রচন্ডভাবে বিশ্বাস করেন এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াতে সফলতা যদি নাও আসে তারপরেও তারা সফল।
আজ ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা নিশ্চিত এই সফলতার জন্য ঈমানের এই পথে সর্বোচ্চ ত্যাগের বহি:প্রকাশ ঘটাতে সদা প্রস্তুত। তাইতো শহীদি জনপদের এই ময়দানে অনেকেই হারিয়েছেন তাদের প্রিয় সন্তানকে, বোন তার ভাইকে, প্রিয়তমা স্ত্রী হারিয়েছেন তার প্রিয় স্বামীকে। কেউ হারিয়েছেন তার উপার্জিত সম্পদ কিংবা সর্বশেষ সম্বল। তারপরেও এই পথের সৈনিকেরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (স:) কে হারায়নি।
এই
শহীদেরাই ইসলামী আন্দোলনের
চিরন্তন দায়িত্বশীল। তাদের
কুরবানী সাক্ষ্য দিবে অনন্তকাল।
বাতিলের হৃদয়ে আগুন
জ্বালাবে নিরন্তর। এই শাহাদাত
সময়ের আবর্তনে বিজয়ের মহাকাব্য
রচনা করবে- ইনশাল্লাহ।
তারেক হোসাইন

আমরা কি জাতি হিসাবে এতটাই চরিত্রহীন ?

বাংলাদেশ বার্তাঃ আরাকানে মুসলমানদের উপর পরিচালিত গণহত্যা, ধর্ষন, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের শিকার ভাই-বোনগুলো অনন্যোপায় হয়ে আমাদের মাতৃভুমিতে আশ্রয় নিচ্ছে। আরাকান বলেন আর বাংলাদেশ বলেন, এটি আল্লাহর সৃষ্ট জমিন। পৃথিবীতে প্রাকৃতিক ভুমিকম্পে , বিপর্যয়ে কত দেশ , ভুখন্ড়, জাতি তলিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে ইতিহাস থেকে ও। আমরা ও কিছু দিন পর মারা গেলে সব হারিয়ে আমল নামার মুখুমোখি হবো। আমাদের বা আমার বলে আর কিছু থাকবে না। আমার বাংলাদেশ, তোমার আরাকান বলার মানসিকতাও জাগবে না্ । সবাই নিজেকে নিয়ে প্রচন্ড়ভাবে চিন্তিত হয়ে পড়বে। টেকনাফ বা বাংলাদেশ বলে কিছু থাকবে না যদি আল্লাহর ক্রোধের শিকার হয়ে একটি ভুমিকম্প গ্রাস করে । মাটির গহীনে তলিয়ে যেতে বেশী সময় লাগবে না। (আল্লাহ হেফাজাত করুন)
তাহলে কিসের এত বড়াই, এত বাহাদুরী , যে আমাদের দেশে রোহিঙ্গারা এসেছে , তাই বলে তাদের সাথে যা ইচ্ছা ব্যবহার করব ! কেউ বলছে যে এত রোহিঙ্গারা এসেছে তাদের আমরা খাওয়াব কেন ? তারা ফিরে যাক , হ্যা, তারা অবশ্যই ফিরে যাবে যদি তাদের দেশে বসবাসের পরিবেশ পায়। নিজের মাতৃভুমির চেয়ে আপন আর কি আছে ? তা রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি আমরা যারা মাতৃভুমি ছেড়ে পরদেশে থাকি তারা হাড়ে হাড়ে উপলদ্ধি করি। যতই মুসলিম দেশ হোকনা কেন , যখন বলে তোমরা বাংলাদেশীরা খুব ফকির , অমুক দেশে তোমাদের দেশের লোকদের খুব হীন কাজ করতে দেখেছি, তুমি পড়াশুনা শেষ করতে আর কত দিন লাগবে ? তুমি কখন চলে যাবে, চলে যাবে নাকি এখানে থেকে যাবে? ইত্যাদি । তখন মাতৃভুমির জন্য নিজের অজান্তেই অশ্রুগড়িয়ে পড়ে। আমার দেশে অন্তত কেউ আমাকে কখন চলে যাবে প্রশ্ন করেনা বা আমি অন্য কোথাও চলে যাওয়াটা আশা করে না। আর যারা অমুসলিম দেশে থাকে তাদের তো কথা নেই। আজ আরাকানীরা ও হাজারগুন কঠিন বিপদের সম্মুখীন । কিন্তু তাই বলে কি তাদের এ বিপদে তাদের সাথে উপহাস করতে হবে ? তাদের জন্য আসা সাহায্য , ত্রাণ, টাকা পয়সা লোট করে খেতে হবে ? তাদের সর্বস্ব হারানো মা-বোনদের ইজ্জতে আঘাত করতে হবে? তাদের পতিতালয়ে পাঠাতে হবে? মা, বাবা, ভাই, বোন , স্বামী, ছেলে - মেয়ে হারানো অসহায় এ নারীদের আবার বাংলাদেশে ও ধর্ষণ করতে হবে ? সেই পরিস্থিতিতে আপনি আমি পড়লে কি করব ? 
এ কেমন জাতি আমরা ? যেই করুক, ব্যক্তি, দল, বংশ পরিচয় তার যাই হোক , সে বা তার দল , ওরা কি মানুষ ? আপনিকি ওদের এখনো মানুষ মনে করেন ? অসহায় এ মানুষগুলোর কিছু করার ক্ষমতা নাই বলে কি আপনি তার ইজ্জত আব্রু সব ছিনিয়ে নিবেন ? তাদের কিছু করার ক্ষমতা না থাকলেও কি আল্লাহর কাছে চোখের পানি ফেলে বিচার দেয়ার ক্ষমতা ও নেই মনে করেন ? আর মাজলুমের দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে রাসুল (সা) কি বলেছেন সবার কম বেশী জানা থাকার কথা । 
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, তিন ধরনের লোকের দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ১. রোজাদার , ইফতারের সময় করা দোয়া, ২. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া, ৩. মজলুমের দোয়া। মজলুম ব্যক্তির দোয়াকে আল্লাহ মেঘমালার ওপর উঠিয়ে নেন এবং এ জন্য আসমানের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়। আল্লাহ বলেন, আমার ইজ্জতের কসম! আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব, যদিও তা কিছুকাল পরে হয় (তিরমিযি)। (অারেক হাদীসে মা- বাবার দোয়ার কথা আছে)

মিয়নমারে হিংস্র- বৌদ্ধরা তাদের নারীদের সাথে যা করেছে , বাংলাদেশে বাঙ্গালী নামধারী মুসলমানরাও যদি একই আচরণ করে, তাহলে আল্লাহর গজব যদি আসে , শুধু মায়ানমারে কেন বাংলাদেশেও তো আসতে পারে, খুব দুরে নয়তো।
আর তাদের নারীদের যদি আপনার এতই পছন্দ হয় তাহলে তারা মুসলিম আপনিও মুসলিম, শরীয়াত মেনে বিয়ে করে নেন। অবশ্যই এতে অনেকের আপত্তি থাকবে, কারণ তারা গরিব এবং মুসলিম , কিন্তু হাসিনা বা আসাদুজ্জমান নুরদের ছেলে মেয়েরা সাদা চামড়াওয়ালা- ওয়ালীদের বিয়ে করলে তখন অসুবিধা হয় না, তখন হয় প্রগতির আরেকধাপ অগ্রগতি। বাংলাদেশী যুবকরা, হিন্দু নায়ক-নায়িকা সেজে আসা পতিতাদের বিয়ে করলে ও তা প্রগতি হিসাবে চালানো হয়। আর যারা রোহিঙ্গা মেয়েদের বিয়ে করাকে আপত্তি জনক মনে করেন তারা একটু এগিয়ে এসে তাদেরকে যৌন হয়রানী কারীদের ঠেকান না। তার বাপের নাম ভুলিয়ে দেন না। না সে ক্ষেত্রে কেউ নেই।
বিশেষ করে যে সব কুলাঙ্গার অসহায় আরাকানী বা বাংলাদেশী যেদেশীই হোক নারীদের গায়ে হাত দেয় তাদের সরকারী আইনের মুখোমুখি করা উচিৎ , কঠিন শাস্তি দেয়া উচিৎ যেন সে নরপশুরা সমাজের অন্যদের আর ক্ষতি করতে না পারে। এটি আইন শৃংখলা রক্ষার জন্য ও খুবই জরুরী। আর রাস্ট্র যদি তাদের শাস্তির পরিবর্তে আশ্রয়- প্রশ্রয় দেয়, কোন দলের লাইসেন্সধারী হুমরা-চোমরা হয়, তাহলে জনগনের উচিৎ তাদের হাত-পা ভেঙ্গে ইতিহাস থেকে নাম- নিশানা মুছে ফেলা। কারণ এই ধর্ষক - লুটেরাদের কৃত অপরাধের ফলে প্রিয়মাতৃভুমি অপমানিত হচ্ছে। আল্লাহর গজবের শিকার হচ্ছে। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশী জনগণের এতগুলো মানবিক আচরণের প্রচার না পেয়ে খারাপ গুলো প্রচার পাচ্ছে। 
পরিচিত বিদেশীদের অনেকেই আমার কাছে জানতে চায় , সারা পৃথিবী থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য আসা সাহায্যগুলো কি সত্যিই রোহিঙ্গারা , মানে নতুন আসা অসহায় রোহিঙ্গারা পাচ্ছে ? আমি দেশের ইজ্জত বাচানোর জন্য জোর গলায় হ্যা- সুলভ জবাব দিলে ও আসল চিত্র আপনার যারা রোহিঙ্গাদের পাশে থেকে দেখছেন, তারাই ভাল জানেন। অসহায় রোহিঙ্গারা পাচ্ছে নাকি সরকারী দলের চির দরীদ্র প্রভাবশালী নেতা কর্মী, আমলা - পুলিশরা খাচ্ছে। 
বিদেশীদের ত্রাণ পেলে কিছু কিছু আল্লামা, মাওলানা, ফাউন্ড়েশন, এমপি,মন্ত্রী, সবাই গরিব হয়ে যায় । লুটে- পুটে খেতে হোমড়ি খেয়ে পড়ে। হিংস্র হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজেরাই সাবাড় করে ফেলে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আবার বলতে হবে ”এত কোটি মানুষের এত কোটি কম্বল, আমারটা কই, সবাই পায় সোনার খনি , আমি পাই চোরের খনি “। চোরের দল - চাটার দল , আবার সব চেটে খাওয়ার জন্য হাজির। 
তখন ভুখা নাঙ্গাদের সাথে সুর মিলিয়ে সকল মাজলুম চিৎকার করে বল , ভাত দে হারামজাদা - নয়লে তোর মানচিত্র চিবিয়ে খাব।

বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

যেই বর্বরতা আইয়্যামে জাহেলিয়াতকেও হার মানায়।


বাংলঅদেশ বার্তাঃ ওদের ঘর-বাড়ী, চাষযোগ্য জমি, দোকান-পাট, আত্বীয়-স্বজন সবই ছিল। সুন্দর সুখী জীবনও চলে ঠিকঠাক মতো। হঠাত বার্মার মগদের জুলুম-নির্যাতন, হত্যার মধ্য দিয়ে চলছে বর্বরতা। যেই বর্বরতা আইয়্যামে জাহেলিয়াতকেও হার মানায়। ও এখন ফকির, মিসকিন,পথের ভিকারী উদ্বাস্তু, রিফোজী ও শরনার্থী।
যারা দেখেছেন বা তাদের কাছ থেকে সরাসরি শুনেছেন তারা ছাড়া হয়তো বাকীদের বিশ্বাস করতে কষ্ঠ হবে।
জাতিসংঘ কিংবা আন্তর্জাতিক জরিপে মৃত্যুর সংখ্যা যাই বলা হউক না কেন বার্মায় লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে নির্মমভাবে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করেছে। মায়ের সামনে ছেলেকে, বউ এর সামনে জামাইকে, দুধুের শিশুকে মায়ের কোলে হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে বার্মা থেকে আগত রোহিঙ্গারা নির্বাক। বিয়ের মাত্র ৭দিনের মাথায় ঘটনা শুরু হলে স্বামী নিয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টাকালে জামাইকে দাঁড়ানো অবস্থায় জবাই করে মগ সেনারা। তার বর্ণনা দিতেই জ্ঞান হারায় স্বামী হারা ফাতেমা। ৭৫ বছর বয়সী মোস্তফা ৯০ বছরের মাকে নিয়ে দু জনই লাঠি ধরে দীর্ঘ ৭দিন হেঠে অবশেষে হ্নীলা খানজার পাড়া গ্রামে প্রবেশ করলেও পরিবারের বাকীদের কোন খবর জানেন না। ২৫ বছর বয়সী মরিয়ম জানান তারা মংডুর পাহাড়ের পূর্বপাড় থেকে ৭০ জনের মতো দল বেঁধে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার জন্য রওয়ানা দেয়। দুই দিন হাটার পর সীমান্তের কাছে মগ সেনারা তাদের ঘিরে ফেলে। নারীদের নিয়ে যায় তাদের ক্যাম্পে। নিয়ে যাওয়ার সময় পাহাড়ে গুটি কয়েকজন পালিয়ে গেলেও বাকীদের অবস্থা কি জানেনা আর যুবক যারা ছিল তাদের সবাইকে পথের ধারেই জবাই করে হত্যা করে মগ সেনারা। জঙ্গলে আশ্রয় নেয়া মরিয়ম আরো জানান ২দিন জঙ্গলে থেকে একটি পাহাড়ের উপর দিয়ে কোন রকম নাফ নদীর পাড়ে আসে। রাতে যখন নাফ নদী পার হওয়ার জন্য নৌকায় উঠি তখনও মগ সেনারা গুলি চালায় এমন কি বাংলাদেশের সীমানায় আসার পরও ধান ক্ষেতের মধ্যেও ওপার থেকে গুলি চালায় তারা। এভাবে হাজারো ঘটনা, হাজারো ইতিহাস, হাজারো করূন অবস্থা শুনতে বেশী দূর যেতে হচ্ছে না। এই নির্মমতা থেকে মানবতা কখন মুক্তি পাবে। যারা প্রাণী হত্যা মহাপাপ বলে তারাই লক্ষ লক্ষ প্রাণী না, মানবজাতিকে হত্যা করছে। হে আল্লাহ তুমি সব ক্ষমতার অধিকারী। তুমি ফায়সালা দাও।

মিয়ানমার থেকে আসা দুই ভাই এর গল্প

বাংলাদেশ বার্তাঃ  একটি খাবার হোটেলের সামনে গলাগলি করে দাঁড়িয়ে আছে দুটি শিশু। দৃষ্টি হোটেলের ভেতরে। কাছে গিয়ে জানা গেল, তারা দুই ভাই। মোহাইয়ের বয়স ১২ বছর ও ইয়াজের ৮ বছর।
চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তারা ক্ষুধার্ত। মঙ্গলবার দুপুরে যে হোটেলের সামনে তারা দাঁড়িয়ে ছিল, সেটি টেকনাফ শহরের উত্তরে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের কাছে অবস্থিত। হোটেলটির কোনো নাম বা সাইনবোর্ড নেই। তবে এর খাবারের খ্যাতি স্থানীয় সবার মুখে মুখে। তাই ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু ক্ষুধার্ত হলেও শিশু দুটি সেই খাবারের স্বাদ নিতে পারছে না। কারণ, খাবার কেনার টাকা নেই। কারও কাছে চাইবে, সেই সাহসও পাচ্ছে না। কিংবা অভ্যস্ত নয় বলে ইতস্তত করছিল।
টেকনাফ শহরে এমন দৃশ্য এখন স্থানীয় লোকজনের চোখ সওয়া। অনেক রোহিঙ্গা শিশু-কিশোর এখন টেকনাফের পথে পথে ঘুরছে। খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকছে। মোহাই ও ইয়াজও যে রোহিঙ্গা।
মোহাই ও ইয়াজের সঙ্গে কথা বলা শুরু করলে কৌতূহলী অনেকে এগিয়ে এলেন। তাঁরা সাহায্যও করলেন ওদের আরাকানি বাংলা, প্রমিত বাংলায় অনুবাদ করে দিতে। তাতে জানা গেল, এই দুই ভাই সকালেই নৌকায় করে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংগদু থেকে শাহপরীর দ্বীপে এসে নেমেছে। তারপর সেখান থেকে ট্রাকে করে এসেছে টেকনাফ শহরে। স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবক ছোট ছোট ট্রাকে করে বিনা ভাড়ায় এপারে আসা রোহিঙ্গাদের শাহপরীর দ্বীপ থেকে টেকনাফ শহরে আনার ব্যবস্থা করেছেন।
নাফ নদী পার হতে নৌকা ভাড়া এখন কিছুটা কমেছে। তবু জনপ্রতি বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা লাগছে। ওরা দুই ভাইও নাফ নদী পার হয়েছে, তবে বিনা ভাড়ায়। তাদের প্রতি এই সহানুভূতির কারণ, দুনিয়ায় ওদের আর কেউ নেই। নৌকায় তারা অন্যের মালামাল তুলে ও নামিয়ে দিয়েছে। মাঝিরা তাদের দুঃখের কথা শুনে ভাড়া নেননি।
মংগদুর মংনিপড়া গ্রামের উত্তরপাড়ায় ছিল মোহাইদের বাড়ি। বাঁশ-কাঠের দেয়াল আর গোলপাতার ছাউনির ঘর। বাবা আইয়ুব উদ্দিন কৃষক। অল্প কিছু জমি ছিল। মূলত অন্যের জমিতেই দিনমজুরি করতেন। পরিবারে আর ছিলেন মা আঞ্জুমান আরা ও বড় বোন ১৬ বছরের শাহানাজ বেগম।
ঘটনা ঘটেছিল ঈদের পরের দিন বিকেলে। বাড়ির পাশেই মাঠে প্রতিদিনের মতো তারা দুই ভাই খেলতে গিয়েছিল। বাড়িতে ছিলেন মা-বাবা আর বোন। ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর লোকেরা আগুন লাগিয়ে দেয়। পুরো পাড়াটিই জ্বালিয়ে দিয়েছিল তারা। ওরা দুই ভাই অন্যদের সঙ্গে পালিয়ে যায় পাহাড়ের জঙ্গলে।
ছোট ভাইটির গলা জড়িয়ে মোহাইউদ্দিন যখন দুর্বিষহ দিনগুলোর কথা বলছিল, একটা পর্যায়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করে ইয়াজউদ্দিন। সেই কান্না খানিক পরে সংক্রমিত হয় বড় ভাইয়ের চোখেও।
সকালে শাহপরীর দ্বীপ থেকে রওনা দেওয়ার আগে লোকজনের দেওয়া এক প্যাকেট বিস্কুট খেয়েছিল দুই ভাই। তাদের কান্না, তাদের কষ্ট স্পর্শ করে গেল উপস্থিত অনেকেরই হৃদয়।

নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে জনাব শামীম সাঈদী !


বাংলাদেশ বার্তাঃ নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়িয়েছেন জনাব শামীম সাঈদী ! নির্যাতিত, অনাহারক্লিষ্ট ও ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গাদের পাশে ত্রাণ-সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছেন বিশ্ব-বরেণ্য মুফাস্সিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সুযোগ্য সন্তান জনাব শামীম সাঈদী ।
জনাব শামীম সাঈদীকে সার্বক্ষণিক সঙ্গ দিয়েছেন টেকনাফের ১নং হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী ও কক্সবাজারের আইয়ূব মোল্লাভাইসহ আরো অন্যান্য ভাইগণ !
মহান আল্লাহ ভাইদের ত্যাগ-শ্রমকে কবুল করুন ও নিপীড়িত মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিজ গায়েবী মদদ দিয়ে হেফাজত করুন ! আমীন !!!

বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

Myanmar government may start new military operations to root out Rohingya Muslims: Jamaat Ameer calls for deploying UN peace keeping troops in Rakhine state of Myanmar


বাংলাদেশ বার্তাঃ Bangladesh Jamaat-e-Islami’s Ameer Maqbul Ahmad has issued the following statement on 11th September, 2017 expressing deep concern at the ongoing mass killings of Myanmar government against the Rohingya Muslims and also to deploy UN supervised peace troopers in Rakhine state on emergency basis in a bid to stop the ongoing brutalities against the Rohingya Muslims.
“I am deeply worried at the continuous mass killings of the Myanmar government against the Rohingya Muslims. The world communities are deeply worried and concerned about the fate of the Rohingya Muslims of Myanmar.
Though the peoples across the world have raised voice against the ongoing brutal mass killings against the Rohingya Muslims, but the United Nations and the international communities have not taken any instant effective initiative so far. Ignoring and defying the calls of different nations and states, the authorities of Myanmar is continuing their mass killings to deport the Rohingya Muslims forcefully from their own land. The government of Myanmar is paying no heed to the views of the world communities.
It has been reported in different sources that the government of Myanmar is going to start another military drive soon to root out the Rohingya Muslims. In this backdrop, I am urging the United Nations to deploy peace keeping forces in Myanmar’s Rakhine state on emergency basis in order to stop the ongoing brutalities of the Myanmar government, to take the deported Rohingya peoples back to their own land and also to ensure security through restoring their citizenships.
The Rohingya peoples who have taken refuge in Bangladesh are helpless. I am also calling upon the international forums, Muslim countries, voluntary organizations and world communities to send relief and other necessary assistance for these oppressed peoples immediately.”

খাদ্যমন্ত্রী এড: কামরুল স্ব-স্ত্রীক মিয়ানমারে খাদ্য ক্রয়ের উদ্দেশ্যে সফর করার লজ্জাজনক ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ: মিয়ানমার থেকে খাদ্য ক্রয়ের লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান


বাংলাদেশ বার্তাঃ মিয়ানমার সরকার যখন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর জঘন্যতম গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়ে তাদের বাড়ী-ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য করছে ঠিক সে মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী এড: কামরুল ইসলামের স্ব-স্ত্রীক মিয়ানমারে খাদ্য ক্রয়ের উদ্দেশ্যে সফর করার লজ্জাজনক ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান আজ ১০ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “মিয়ানমারের সরকার যখন সে দেশের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়ে তাদের বাড়ী-ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য করছে ঠিক সে মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী এড: কামরুল ইসলামের স্ব-স্ত্রীক মিয়ানমার থেকে খাদ্য ক্রয়ের উদ্দেশ্যে মিয়ানমার সফরে যাওয়ার লজ্জাজনক ঘটনায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। 

খাদ্যমন্ত্রী এড: কামরুল ইসলাম ইতোপূর্বে বিদেশ থেকে পচা গম আমদানী করে কুখ্যাতি অর্জন করেছেন। দেশের মানুষ পচা গম কেনার ঘটনার তদন্ত করে খাদ্যমন্ত্রীর বিচার দাবী করেছিল। কিন্তু সরকার তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে সে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে পচা পগম হজম করতে জাতিকে বাধ্য করেছে। সম্প্রীতি যখন মিয়ানমার সরকার সে দেশের নিরীহ ও নিরাপরাধ রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর গণহত্যা চালিয়ে হাজার হাজার মহিলাকে ধর্ষণ করে তাদের ঘর-বাড়ী জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য করছে ঠিক সে মুহূর্তে রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্তের উপর পা দিয়ে বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রী এড: কামরুল ইসলামের স্ব-স্ত্রীক মিয়ানমারে খাদ্য ক্রয় করতে যাওয়ার লজ্জাজনক ঘটনায় বাংলাদেশের দুঃখভারাক্রান্ত জনগণ বিস্মিত, লজ্জিত ও মর্মাহত। তিনি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মাথা নীচু করে দিয়েছেন এবং বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করেছেন। তার এ সফর মিয়ানমারের খুনীদের আরো উৎসাহিত করবে এবং এতে বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্র নীতিই প্রমাণিত হলো। 

বাংলাদেশ মিয়ানমারের পরিবর্তে থাইল্যান্ড, কেম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম বা অন্য কোন দেশ থেকেও খাদ্য ক্রয় করতে পারত। কিন্তু তা না করে খাদ্যমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে খাদ্য ক্রয় করতে গিয়ে দেশের জনগণকে ভয়ংকর লজ্জায় ফেলে দিয়েছেন। 
আমি আশা করি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং মিয়ানমার থেকে খাদ্য ক্রয়ের লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত বাতিল করবেন ও অবিলম্বে খাদ্যমন্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনবেন।”

মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

রাখাইনে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করুন: জাতিসংঘকে জামায়াত

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০৩:৪৬ অপরাহ্ন
শীর্ষ নিউজ, ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ।
সোমবার দুপুরে গণমাধ্যামে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
মকবুল আহমাদ বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সে দেশের সরকারের অব্যাহতভাবে পরিচালিত গণহত্যায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ব্যাপারে বিশ্ববাসী শংকিত ও মর্মাহত। মিয়ানমারের মুসলমানদের উপর সে দেশের সরকারের অব্যাহতভাবে পরিচালিত গণহত্যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বের মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া সত্ত্বেও গণহত্যা বন্ধের ব্যাপারে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ত্বরিত কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে মিয়ানমার সরকার পরিকল্পিতভাবে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অব্যাহতভাবে গণহত্যা চালিয়ে তাদের বিতাড়িত করছে। মিয়ানমার সরকার বিশ্ববাসীর মতামতের কোন তোয়াক্কাই করছে না।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, মিয়ানমার সরকার সে দেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের সম্পূর্ণরূপে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে শীঘ্রই আরো বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ শুরু করতে যাচ্ছে। সুতরাং মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ করে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অবিলম্বে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জরুরি ভিত্তিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করার জন্য আমি জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা মুসলমানগণ অসহায় অবস্থায় আছে। তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য পাঠানোর জন্য সকল মুসলিম দেশসহ আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা, সংগঠন ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি।

ইমাম আব্দুস সালামের মৃ্ত্যুতে শ্রমিককল্যান ফেডারেশন এর শোক প্রকাশ,,,


বাংলাদেশ বার্তাঃ   সিলেট জেলার বিয়ানী বাজার উপজেলার দক্ষিণ চক্রবানি গ্রামের মাওলানা আব্দুস সালাম তরুন বয়সে আজ (১২-০৯-২০১৭) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ ঘটিকায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন " ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
দীর্ঘ প্রায় ২৪/২৫ পূর্বে বিশ্বনাথে আসেন লেখাপড়া করার উদ্দেশ্যে। একসময় লেখাপড়া শেষ করে প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথকেই তিনি তার কর্মক্ষেত্রের জন্য বেচে নেন। শুরুতেই স্থানীয় ওমর ফারুক (রাঃ) একাডেমীতে কিছুদিন শিক্ষকতা করে ইমাম হিসেবে যোগদেন স্থানীয় সুড়িরখাল মসজিদে। একনাগাড়ে দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর ধরে তিনি উক্ত মসজিদে ইমামতি করে আসছিলেন । এর পাশাপাশি বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের পার্শ্ববর্তী বড় কারিকোনার মসজিদে গত ২২ বছর পবিত্র রমজান মাসে মাসব্যাপী কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রে শুরুতে সহকারী ক্বারী ও পরবর্তীতে প্রধান ক্বারী হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ।

বিশ্বনাথে সালাম হুজুর হিসেবে ব্যাপক পরিচিত এই ইমাম সাহেবের অমায়িক ব্যবহারে সবাই ছিল তারই গুনমুগ্ধ। গত ৭ রমজান সুড়িরখাল মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে হঠাৎ করে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুড়িরখাল গ্রামবাসী তখন তাকে জরুরী ভিত্তিতে ডাঃ শামসুদ্দীন হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় তাঁর চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসেন প্রবাসে ও দেশে তাঁর ছাত্র-ছাত্রী, বিশ্বনাথের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার শুভাকাংখিরা। পরবর্তীতে সিলেট শহরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করেন। উচ্চ ডায়াবেটিকস ও কিডনীতে জঠিল সমস্যার কারণে দ্রুত তার পায়ে দুটি অপারেশন করা হয়। এরই মধ্যে পা থেকে মাংস কেটে ফেলায় সেই ক্ষত স্থানটি শুকায়নি। যার কারণে তিনি দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিলো এবং অবশেষে ইবনে সিনা হাসপাতাল থেকে ওসমানী মেডিকেলে স্থানান্তরিত করা হয়। 
মাওলানা আব্দুস সালাম বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরবিশ্বনাথ উপজেলা শাখার সাবেক সাথী ও থানা শাখার বায়তুলমাল সেক্রেটারী ছিলেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিশ্বনাথ ইউনিয়ন শাখার সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ইমাম সমিতির বিশ্বনাথ ইউনিয়নের সেক্রেটারির দায়িত্বে ছিলেন। 

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন সিলেট (দক্ষিণ) জেলা শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম খান ইসলামী আন্দোলনের নিরব এই নিবেদিত প্রাণ কর্মীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ এবং তাঁর শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ঞ্জাপন করেন এবং আল্লাহ তায়া'লার কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করেন যেন মহান আল্লাহ তাঁর সমস্ত খাতা-কসুর ক্ষমা করে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করেন।

Protest Rally, Ctg City Jamaat: Stop ethnic cleansing by brutal militarism & Ensure citizenship rights of Rohingyas City Secretary

Bangladesh Barta:,11 Sept 2017; Bangladesh Jamaat-e-Islami Chittagong City brought out a protest rally at Chittagong City and demanded: 

1. Stop ethnic cleansing by brutal militarism

From this gathering of Chittagong City Jamaat-e-Islami, we strongly protest the brutal militarism of Aung Sun Su Ki & her military backed government. The innocent Rohingyas including Muslims & Hindus are being forced to leave their native places jointly by her state forces & communal terrorists. Brutal killing including just born babies, barbaric raping of women including adolescents, 

ablazing houses & religious institutions, looting wealth & assets etc. all inhuman criminal offenses are being carried out for ethnic cleansing of Rohingyas. Blind support by China & India, using Israeli weapons & no meaningful protest from USA, Russia and other global forces deepens the problem & making Rohingyas into victims of their interests. We do protest & appeal to global foces & muslim countries to press Myanmer government to stop their brutal militarism.

2. Ensure citizenship rights of Rohingyas

We strongly demand the full citizenship rights & repatriation of Ruhingya refugees as the long term & permanent solution of the problem. Historically Rohingyas are Citizens of Myanmar. In 1960 Myanmar (Burma) Parliament, 3 Muslim members were elected & thats a great historical proof of their citizenship. The communal mentality of ex president General Thane Shane & so called Vante Ribattu created the problem. Under the slogan of 'Protection of Race & Religion' followed by the black Citizenship Law 1982 cause communal & racial oppressions on Rohingyas treating them as stateless citizens. We strongly demand and appeal to Global forces & Muslim countries to press Myanmar government to revive the citizenship rights of Rohingyas and to repatriate all refugess from 1978 till the date to their native places. We strongly demand to implement recommendations made by 9 members' Cofi Annan Commission. We strongly declare that citizenship rights of Rohingyas ensure their peaceful living & participation in democratic & development activities and which is a must for rigional as well global stability.

3. Stand beside Refugees with all supports

We strongly demand Bangladesh Govt. to play effective role to create national consensus with all political & religious forces to deal the refugee issue effectively. The influx of thousands of refugees is definitely a national problem, but its our moral as well as humanitarian duty to ensure their basic needs including shelter, food, water, clothing, medicine etc. Digitalized full registration of all refugees is also equally important to effectively manage the relief works, repatriation and other risk factors. Bangladesh government role is being questioned because of not playing strong deplomatic role to bring all global forces including our neighbors India & Chaina to play positively. Forceful pushing back the helpless Rohingyas, declaration of joint military actions with Myanmar, pleasure trip of one minister with wife, irresponsible talks by party secretary & other senior leaders frustrated major citizens of Bangladesh. We earnestly requests to correct mistakes to develop national consensus. 
We appreciate different governments & groups from home & abroad who played positive roles to address the Rohingya issue. The leading role of Turkey & Indonesia definitely lesson worthy. Maldwip's role to boycott Myanmar goods also appreciable on moral ground. Bangladesh government has to play strong diplomatic role to activate all regional & global bodies including UN, EU, ASEAN, SAARC, BRICS, OIC, etc. to solve the issue effectively.

বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

" সবুজ এর খোঁজে - প্রিয় চুনতি "


Bangladesh Barta: বিশেষজ্ঞ মতে একটি আবাসভূমির ২৫% এলাকা বন তথা গাছ-গাছালি ভরা থাকলে মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য ও আদর্শ মান হিসেবে বিবেচ্য।  
সুজলা, সুফলা, শস্য, শ্যামল বাংলাদেশ প্রকৃতির অপরূপ সাজে ধন্য। একদা এদেশ বনভূমিতে কাংখিত মানে (২৫%) এর ও অধিক ছিল যা বর্তমান গড় ৮%-১২% এ নেমে এসেছে। ফলে বিনষ্ট হচ্ছে ধারাবাহিক ঋতু বৈচিত্র্য। অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি দুই ই ক্ষতিকর। বৃক্ষ আর মানবকুল কা'বন ডাই অক্সাইড ও অক্সিজেন সরবরাহে একে অপরের পরিপৃরক। এদের ভারসাম্যহীনতা বায়ূতে ক্ষতিকর সীসার মাত্রা ক্রমশ বাড়াচ্ছে। গাছ গাছালী ভূমিক্ষয় রোধ করে পাশাপাশি জলীয়বাষ্প সংরক্ষা ও বৃষ্টি বাদল নিয়মিত করে আরো কত কি ? 


কাউকে শিক্ষা দেয়ার জন্য এ লেখনি নয় বরং আমাদের আগামী প্রজম্মের জন্য বাসযোগ্য ধরণী নিশ্চিত করার উদ্যোগ / সচেতনতা হোক প্রাধান্য।
আমাদের প্রিয় চুনতি সবুজ এর সমারোহ ও প্রাকৃতিক রুপে অনন্যা, এর পাহাড় সমভূমি মনভোলানো, পরিবেশ ও ভারসাম্যপূর্ণ। তাইতো বারে বারে ফিরে আসি প্রিয় ভূমিতে প্রকৃতির স্বাদ অন্বেষণে।
চুনতির সূর্য সন্তান মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন (বাচ্চু) চাচার পরশে আমাদের ভৌত অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়নকাজ প্রিয় চুনতি কে বসবাসের জন্য কাংখিত মানে পৌঁছাবে ইনশাআল্লাহ।
যোগাযোগব্যবস্থা বিশেষত রাস্তাঘাট এর সংস্কার ও সম্প্রসারণ, সেই সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর নবতর সংযোজনা জনপদে আলোড়ন এনেছে। " ইসহাক মিয়া সড়ক " অবহেলিত মানুষ দের নতুন স্বপ্ন ও প্রেরণা দিয়েছে/ দিচ্ছে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অভিষ্ট লক্ষ্যে প্রাণপণ এগিয়ে যাওয়ার।
আজ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইং চুনতিতে " ইসহাক মিয়া সড়ক " শোভিত হলো ফলজ, ওষধি ও ব্যতিক্রম ধর্মী স্বপ্নিল চারাগাছ রোপণ এর মাধ্যমে।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিল
১. দীপিত ক্লাব
২. অর্কিড
৩. চিরহরিৎ
৪. অর্ণব
৫. নিরেট
৬. প্রয়াস
৭. শিখড়
এবং www.chunati.com

রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মায়ানমারকে যিনি যুদ্ধে সহজেই হারিয়েদিয়েছিল: নাফযুদ্ধঃ মিয়ানমারের অসহায় আত্মসমর্পণ

২০০০ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ‘নাফযুদ্ধ’ হয়েছিল। এতে বাংলাদেশের কোনো জোয়ান মারা না গেলেও মিয়ানমারের ছয়শো সেন্য নিহত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত পরাজয় মেনে নিয়ে মিয়ানমার সন্ধিচুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিল।

তৎকালীন বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল ফজলুর রহমানের বর্ণনায় মিয়ানমারকে যুদ্ধে হারানোর ইতিহাস তুলে ধরা হলোঃ

"আমি সবে বিডিআর মহাপরিচালক হয়েছি। দেখলাম মিয়ানমারের নাসাকা বাহিনী (বর্তমানে বর্ডার পুলিশ) আমাদেরকে মানে বিডিআর সদর দপ্তরে মাঝে মাঝে চিঠি লিখে সতর্ক করে। মিয়ানমারের নাসাকা বাহিনীর লেখা চিঠির ভাষা হুবহু নয়, তবে কিছুটা এইরূপ বা এর চেয়ে জঘন্য: “From NASAKA HQ to BDR HQ Bangladesh. We are warning you to behave otherwise we will teach you lessons you will never forget.”
সাধারণত যখন কোন চিঠি লেখা হয়, তখন প্রথা অনুযায়ী চিঠির শুরুতে অভিবাদন/নিবেদন এবং শেষ সাবমিশন থাকে। যেমন সালাম দিয়ে বা সমপর্যায়ের শব্দ দিয়ে চিঠি আরম্ভ করে চিঠির শেষে যেমন লিখতে হয় আপনার একান্ত বিশ্বস্ত বা সমপর্যায়ের শব্দ। আমাদেরকে লেখা নাসাকার চিঠিতে তার কোন বালাই নেই। ভাষা এবং শব্দচয়ন অতীব নিম্নমানের এবং অসম্মানজনক।
এই রকম কয়েকটা চিঠি আসার পর আমি পরিচালক অপারেশন বিডিআর কর্নেল রফিককে আমার অফিসে ডেকে মিয়ানমারের নাসাকা সদরে একটি জবাবী চিঠি উত্তর হিসাবে পাঠাতে নির্দেশ দিলাম এবং জবাবী চিঠির ভাষা কী হবে তা যখন তাকে বললাম, তখন কর্নেল রফিক আমাকে অনুরোধ করতে লাগলেন, “স্যার, এমন কড়া ভাষায় নাসাকা সদরে চিঠি পাঠানো ঠিক হবে না। ওরা স্যার ইংরেজি ভাল জানে না বলে কী লিখতে কী লিখে তারা নিজেরাই হয়তো জানে না।”
আমি বললাম, “রফিক, দেখ। আমরা যেমন ব্রিটিশ রুলে ছিলাম, তেমনি বার্মাও ব্রিটিশ রুলে ছিল। আমরা যদি ইংরেজি জানতে, বুঝতে এবং ভাল লিখতে পারি, তাহলে মিয়ানমারের নাসাকাও ভাল ইংরেজি লিখতে পারবে সন্দেহ নাই।”
তারপরেও যখন দেখলাম কর্নেল রফিক সম্মত হচ্ছেন না, তখন আমি তাকে চলে যেতে বললাম এবং আরো বললাম, “আমি নিজে ডিকটেশন দিয়ে একটা চিঠি টাইপ করে তোমার কাছে পাঠাচ্ছি নাসাকা সদরে পাঠানোর জন্য।”
আমি চিঠিটার শুরুতে সেলুটেশন ও শেষে সাবমিশন ঠিক রেখে যা লিখেছিলাম তার ভাষা মোটামুটি এইরূপ: “Excellency, the letters we receive intermittently from your HQs are worst in choice of words and construction of sentences. Often you use filthy and uncivilized words which are never written to any Forces HQs like BDR. Henceforth any such of your letters will be viewed seriously by us and you will be liable to face grime consequences. Be gentle and civilized, else we will teach you lessons how to be civilized and behave properly.”
যাইহোক, এই ধরনের একটা চিঠি সময় মতো নাসাকা সদরে পাঠানো হল। আশ্চর্য হলেও সত্য, এই চিঠির পরে নাসাকা সদর থেকে যত চিঠি আমি মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় বিডিআর সদরে এসেছিল, সব ছিল সুন্দর এবং মার্জিত ভাষায় লেখা। এরপরে মিয়ানমারের সাথে আমাদের নাফযুদ্ধ হল।
নাফ হচ্ছে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের বিভক্তিকারী নদী। প্রকৃতপক্ষে এটি ১২ টি শাখায় বিভক্ত। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান এবং বার্মা সরকার এই মর্মে চুক্তি সাক্ষর করে যে, তারা কেউই নদীর কিংবা এর শাখাগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহে হস্তক্ষেপ করবে না। তাছাড়া প্রাকৃতিক কারণে নদীর গভীরতায় তারতম্য তৈরী হলে সেই অনুপাতে দু দেশের সীমান্তও পরিবর্তিত হবে।
তো যখন আমি বিডিআর এর মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেলাম তখন আমাকে জানানো হল যে, বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের ২৮০০ একর জায়গা মিয়ায়ানমার কর্তৃক নদীতে অবৈধভাবে দখল হয়েছে। কারণ, তারা ১৯৬৬ সালে সাক্ষরিত চুক্তির অবৈধ অপব্যবহারের উদ্দেশ্যে নাফ নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে বাঁধ নির্মাণ করেছে।
হঠাৎই তারা নাফ নদীর সর্বশেষ শাখাটিতেও বাঁধ নির্মাণ আরম্ভ করল এবং যদি তারা একাজে সফল হত, তবে পুরো টেকনাফ অঞ্চলটিই বঙ্গোপসাগরে বিলীন হয়ে যেত।
আমরা প্রতিবাদ জানালাম, কিন্তু মিয়ানমার এটিকে আমলে নিল না এবং তাদের কাজ অব্যাহত রাখল। তারা তাদের স্থাপনা (৯ বাঁধ) রক্ষার্থে বার্মিজ সেনা ও নৌবাহিনী হতে একজন একজন করে মোট দুজন মেজর জেনারেলের নেতৃত্বে দুই ডিভিশন সৈন্য মোতায়েন করল।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিডিআর এর প্রায় ২৫০০ সৈন্যকে প্রস্তুত করলাম সরাসরি আমার নেতৃত্বে। আমি প্রায় পঁচিশ লক্ষ পরিমাণ যুদ্ধ সামগ্রী (রাইফেল, গুলি, বোমা, গান পাউডার) কক্সবাজারে প্রেরণ করলাম যার অর্ধেক কক্সবাজারেই মজুদ রাখলাম এবং বাকি অর্ধেক টেকনাফে প্রেরণ করলাম।
২০০০ সালের পয়লা জানুয়ারি দুপুর ০২:৩০-এ আমি আমাদের সৈন্যদেরকে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার নির্দেশ দিলাম এবং তারাও (মিয়ানমার) পাল্টা আক্রমণ আরম্ভ করল। এই যুদ্ধ তিনদিনব্যাপী স্থায়ী ছিল, যাতে প্রায় ৬০০ বার্মিজ সেনা নিহত হয়।
৪ জানুয়ারী তারিখে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপ্রধান জেনারেল থান সুই রাজধানী রেঙ্গুনে কূটনীতিকদের ডেকে বলেন যে তারা বাংলাদেশের সাথে আর যুদ্ধ চায় না। আক্রমণ বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশের কাছে মিয়ানমার একটি চিঠি পাঠায় যাতে লিখা ছিল, “আমরা চাই বাংলাদেশ ও আমরা কোনরূপ পূর্বশর্ত ছাড়া একসাথে আলোচনায় বসে বিবাদমান বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি করি।”
অতঃপর মিয়ানমারের মংডুতে এ নিয়ে সচিব পর্যায়ে আলোচনা শুরু হল, (রাজনৈতিক ব্যাপার) যাতে বাংলাদেশের হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব জানিবুল হক। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলাকালীন মিয়ানমার পক্ষ এতটাই বিমর্ষ/উত্তেজিত ছিল যে তারা টাইপ রাইটার পর্যন্ত সরবরাহ করেনি এবং চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত হাতেই লিখতে হয়েছিল।
অবশেষে মায়ানমার নদী থেকে বাঁধ সরিয়ে নিতে বাধ্য হলো। ফলশ্রুতিতে আমরা টেকনাফকে বঙ্গোপসাগরে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারলাম। তো এভাবেই বাংলাদেশের পক্ষ হতে কোন প্রাণহানি ছাড়াই আমরা মিয়ানমার বাহিনীকে পরাজিত করলাম। এটাই হচ্ছে নাফযুদ্ধের সত্যিকার কাহিনী।"