ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ময়মনসিংহ জেলা শাখার জামায়াত সদস্য ইউসুফ আলীর জানাযা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্য, বিশিষ্ট সমাজসেবক জনাব মোঃ ইউসুফ আলীর ১ম জানাযা ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ সদরের আকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ময়মনসিংহ জেলা ও জেলার বাহির থেকে আগত বিপুল সংখ্যক মুসুল্লী অংশগ্রহণ করেন। জানাযায় ইমামতি করেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন শাইখুল হাদীস হাফেজ মাওলানা আল্লামা নুরুল ইসলাম।


জানাযা পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি জনাব মতিউর রহমান আকন্দ, জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহ জেলা শাখার আমীর জনাব আব্দুল করিম, টাঙ্গাইল জেলা শাখা জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক আব্দুল হামিদ, ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক আমীর অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, ময়মনসিংহ জেলা শাখা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দ। এছাড়া জানাযায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আমীর জনাব কামরুল আহসান এমরুল, এডভোকেট আমানুল্লাহ বাদল।

জামাযা পূর্ব সমাবেশে বক্তব্যে জনাব মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, জনাব ইউসুফ আলী আল্লাহর দ্বীনের একজন আহবানকারী ছিলেন। প্রবাস জীবনে সৌদি আরবে থাকাবস্থায় তিনি ইসলামী দাওয়াহ’র কাজে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে হজের মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে আগত হাজীদের খেদমতে তিনি অনন্য ভূমিকা পালন করতেন। তিনি অনেক সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ময়মনসিংহ শহরে তার ব্যক্তিগত জমিটি নামমাত্র মূল্যে ইয়াতিমখানার জন্য ছেড়ে দেন। সারাজীবন তিনি আল্লাহর দ্বীনের পথে একজন দায়ী ইলাল্লাহর ভূমিকা পালন করেছেন। জানাযা পূর্ব সমাবেশে তার কথা স্বরণ করে উপস্থিত জনতা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি জনাব মোঃ ইউসুফ আলীর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দান করার জন্য মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করেন।

এরপর ময়মনসিংহ সদরের ঘাঘড়ায় তার গ্রামের বাড়িতে দুপুর ২টায় দ্বিতীয় জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

হাসান মাহমুদ চৌধুরীর মৃত্যুতে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দের শোক

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব হাসান মাহমুদ চৌধুরীর মৃত্যুতে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দের শোকঃ

রাউজান উপজেলা নিবাসী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, চট্টগ্রাম চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সভাপতি, সাবেক ছাত্রনেতা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলহাজ্ব হাসান মাহমুদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এক শোকবাণী প্রদান করেন।
শোকবাণীতে জামায়াত নেতৃবৃন্দ মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
মরহুম হাসান মাহমুদ চৌধুরী মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন সামাজিক এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন এবং অসহায় দরিদ্র মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন।

রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

অ্যাটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ অ্যাটর্নী জেনারেল মাহবুব আলম আর নেই। রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মৃত্যুকালে তা বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর জ্বর ও গলা ব্যাথা নিয়ে তিনি সিএমএইচে ভর্তি হন। ঐ দিনই করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তিনি বাংলাদেশে ১৩ তম অ্যাটর্নী জেনারেল ছিলেন। মাহবুবে আলম ২০০৯ সালে অ্যাটর্নী জেনারেল পদে নিয়োগ পান। পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। 


মোনাজাত : মল্লিক মাহমুদ

 

আলেয়ার ডাকে ছুটে গেলো যারা

শপথের সারি থেকে,
ছলনার জালে স্বপ্নকে বেঁধে
পথ চলে এঁকে বেঁকে।
তাদের জন্য অশ্রু ভাসিয়ে
করে যাই মোনাজাত—
প্রভূ তুমি সেই ভাইদের প্রতি
বাড়াও দয়ার হাত।।
চির মধুময় এ আঙিনা থেকে
চলে গেছে যারা সরে,
নেফাকীর কালি জমেছে যাদের
হৃদয়ের সরোবরে।
ক্ষমার চাদরে জড়িয়ে তাদের
দিয়ে দাও হেদায়াত।।
দুনিয়ার মোহে ডুবেছে তাদের মন—
অগণিত বার এহতেসাবেও
হয় না সংশোধন!
ব্যাথিত মনেও অভিযোগ নয়
অনুরোধ করি তবু,
শহীদের এই মিছিলে তাদের
ফিরিয়ে আনো গো প্রভূ।
কোরানের সাথে আবারো তাদের
হয় যেন মোলাকাত।।
.
২৫।০৯।২০

শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

হাফেজ মুহাম্মদ তৌহিদুজ্জামানের ইন্তেকালে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দের শোক

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম মহানগরীর ধনিয়ালাপাড়াস্থ বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (মাস্টার্স) মাদ্রাসার ২য় বর্ষের এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী শিবির নেতা হাফেজ মুহাম্মদ তৌহিদুজ্জামানের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এক শোক বাণী প্রদান করেন।

শোক বাণীতে নগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবার বর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য মরহুম তৌহিদুজ্জামান কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার শিকলঘাটা গ্রামের হাফেজ কামাল উদ্দিনের ছেলে।

চবি’র সাবেক ভিসি নূরুদ্দিন চৌধুরীর ইন্তেকাল

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এ. জে. এম. নূরুদ্দিন চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ৮:৩৫ মিনিটে রাজধানীল একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই শিক্ষাবিদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জানা যায়, অধ্যাপক নূরুদ্দিন চৌধুরী দীর্ঘদিন যাবত ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। আগষ্ট মাসের শুরুতে করোনা ভাইরাসে আক্ত্রান্ত হলেও পরে সুস্থ হয়ে উঠেন তিনি।

অধ্যাপক নূরুদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায়িক অনুসদের ডিন ছিলেন।  এ ছাড়া বেসরকারী  সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এই বরেণ্য শিক্ষক।

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব দূরীকরনে জামায়াতের রিকশা-ভ্যান বিতরণ

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে কোভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসন ও আত্মকর্সংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজধানীতে অসহায়, বেকার ও শ্রমজীবী মানুষদের মাঝে বিনামূল্যে রিকশা-ভ্যান সহ প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ ও ব্যবসায়িক পুঁজি হিসেবে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নুরুল ইসলাম বুলবুল গত ২০সেপ্টেম্বর/২০ রবিবার সকালে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় এই রিকশা-ভ্যান সহ প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও কদমতলী থানা উত্তরের আমীর আব্দুর রহীম জীবন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও কদমতলী থানা পশ্চিমের আমীর মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য শাহীন আহমদ খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
রিকশা-ভ্যান বিতরণের সময় নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দেশে করোনাকালীন সময় হতে অদ্যাবধি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও শ্রমজীবী মানুষ নানাবিধ কারণে অভাব অনটনে বেশ কষ্টে আছেন । করোনার কারনে দিনমজুর, শ্রমিক ও ছোট ব্যবসায়ীদের আয় হ্রাস পেয়েছে এবং দীর্ঘদিন কাজের পরিবেশ না থাকায় চাকুরী হারিয়ে একটি অংশ বেকার হয়ে পড়েছে। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন যাপনে অধিকাংশের ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এমতাবস্থায় একটি দায়িত্বশীল ও আদর্শবাদী সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী নির্লিপ্ত থাকতে পারে না। তাই আমরা এসব মানুষের দুর্দশা লাঘবে সীমিত সামর্থ নিয়ে এগিয়ে এসেছি। আশা করি আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস বেকারত্ব দুরীকরণ ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে। সুনানে আবু দাউদের একটি হাদিস উল্লেখ করে তিনি বলেন দুনিয়াবাসীর প্রতি যদি আমরা রহম না করি তাহলে আল্লাহও আমাদের প্রতি রহম করবেন না। ফলে সমাজের মানুষের জন্য আমাদের এই কল্যাণকামী কর্মসুচী আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
নুরুল ইসলাম বুলবুল আরও বলেন, সরকার করোনার এ দুর্যোগে দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তারা জনগণকে সুশাসন উপহার দিতে পারেনি। ক্ষমতাসীনরা আজ জনগনের মৌলিক চাহিদাগুলো পুরণ করতে পারছেনা। ব্যবসা ও চাকুরী হারিয়ে বেকারত্বের যাঁতাকলে যুবসমাজ আজ অসহায়। ক্ষতিগ্রস্থ এসকল মানুষের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব দূরীকরনে সরকারের কার্যক্রম অত্যন্ত অপ্রতুল। পিঁয়াজ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির ফলে তা এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনৈতিক সেক্টর এখন ধ্বংসের মুখোমুখী। যা আমাদের এই সোনারদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাই দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে এ অবস্থা থেকে মুক্ত করতে ইসলামের সুমহান আদর্শের আলোকে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি সকলকে এই কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর পাশে থাকার উদাত্ত আহবান জানান।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ইসলাম সামাজিক ও মানবতার ধর্ম । তিনি সুরা ইমরানের ১০ নম্বর আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন মানব জাতীর কল্যাণের জন্যই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। ফলে আল্লাহর নির্দেশ ও মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই সমস্যাগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। জামায়াতে ইসলামী কোন গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয়, বরং একটি আদর্শবাদী গণমুখী রাজনৈতিক সংগঠন। জামায়াতের সে কল্যাণকামীতার অংশ হিসেবেই বেকারত্ব দুরীকরনে আজ আমরা শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দুর্দশা লাঘবে সীমিত সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এসেছি। তিনি দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসার জন্য জামায়াত নেতাকর্মীসহ সকল রাজনৈতিক দল ও মানুষের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

সকলের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান এর একটি আহবান-

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে অবস্থানরত দ্বীনি বন্ধুগণ, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আশা করি মহান রবের খাস মেহেরবাণীতে সকলেই সুস্থ আছেন। যে যেখানে আছেন দোয়া করি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনাদেরকে সুস্থ রাখুন এবং তাঁর মেহেরবাণীর চাদর দিয়ে ঢেকে রাখুন।

অতিসম্প্রতি বাংলাদেশের বিশাল মাপের একজন সম্মানিত দ্বীনি ব্যক্তিত্ব আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহিমাহুল্লাহু দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তিনিসহ অতীতে যে সমস্ত আল্লাহর নেক বান্দাগণ সীমাহীন ত্যাগ-কোরবানী ও নেক আমলের নজরানা পেশ করে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন মহান প্রভুর দরবারে দোয়া করি তিনি তাঁদের সকলের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দিয়ে নেক আমলগুলো কবুল করে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন এবং আমাদেরকে আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করুন।
আল্লামা আহমদ শফী রাহিমাহুল্লাহু-এর ইন্তিকালে গোটা দেশের মুসলমানেরা শোকাহত। সকলেই তাঁকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছেন। এই মহান ব্যক্তির জানাযায় শরিক হওয়া সত্যিই একটি সৌভাগ্যের ব্যাপার ছিল। যারা শরিক হতে পারেননি তারাও আল্লাহর দরবারে উনার জন্য দোয়া করছেন। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কোনভাবেই নেতিবাচক কোন চর্চা একান্তই দুঃখজনক।
আমরা সকল মহলের সকল দ্বীনি ভাইদের প্রতি আন্তরিক অনুরোধ জানাই আসুন, পরস্পরের ব্যাপারে সকল প্রকার নেতিবাচক ধারণা ও চর্চা পরিহার করি। পরস্পরের ব্যাপারে একান্ত শ্রদ্ধাবোধ, সু-ধারণা, ভালোবাসা এবং সম্প্রীতির চর্চা করি। একে অন্যের প্রতি অন্তরের অন্তস্তল থেকে মহান প্রভুর দরবারে পারস্পরিক কল্যাণ কামনা করি।
সকল প্রকার জুলুম ও জুলমাত থেকে আমাদের প্রিয় জাতিকে রক্ষা করার জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ালার সাহায্য চেয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করি। পরস্পর ভাই হিসেবে একে অন্যকে ক্ষমা করি। কুরআন-সুন্নাহর দেখানো পথে পরস্পরের সহযোগী ও সহযাত্রী হই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা আমাদেরকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলার জন্য তাওফিক দান করুন। আমীন।।

শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

প্রবীন আলেমে দ্বীন শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালে চট্টগ্রাম জামায়াতের শোক প্রকাশ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ দেশবরেণ্য আলেমে দ্বীন আল্লামা শাহ আহমদ শফী (মঃআ) আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন,
উপমহাদেশের প্রখ্যাত এ উস্তাদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
শোকবানীতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আল্লামা আহমদ শফি (মঃআঃ) কেবল মাত্র আলেমে দ্বীন ও আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম ছিলেন না বরং দীর্ঘদিন তিনি ছিলেন এদেশে ইসলাম প্রিয় মানুষের ঐক্যেরও কান্ডারী।
তাঁর মৃত্যুতে জাতি এক অন্যতম অভিভাবককে হারালো।
আমরা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং রুহের মাগফিরাত কামনা করছি,পাশাপাশি তাঁর রেখে যাওয়া জিম্মাদারী পালনে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। জাতির ক্রান্তিকালে একে একে আমাদের এই সব অভিভাবকের মৃত্যুতে গভীরভাবে ব্যথিত করছে।
মহান আল্লাহ যেনো তাঁর পরিবারের সদস্যদের সবরে জামিল এবং ঐতিহ্যবাহী হাটহাজারী মাদরাসার গৌরব উঁচু করে রাখার তৌফিক দান করেন।

হেফাজত ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও লাখো আলেমের উস্তাজ আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব রাহিমাহুল্লাহু-এর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ এক শোকবাণী প্রদান করেছেন।

শোকবাণীতে তিনি বলেন, উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমীর, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক, লাখো আলেমের উস্তাজ আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব রাহিমাহুল্লাহু-এর ইন্তিকালে জাতি একজন অভিভাবককে হারাল। তিনি হাটহাজারী মাদরাসার অধীনে বহু মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা ও দাতব্য চিকিৎসালয়সহ অনেক দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি লাখো আলেমের উস্তাজ। তিনি অনেক দ্বীনি এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। দেশ-বিদেশে তার অসংখ্যা ছাত্র ও গুণগ্রাহী রয়েছেন। তাঁর রেখে যাওয়া কাজ যুগ-যুগ ধরে মানুষকে ইসলামের পথে চলবার জন্য আলো দেখাবে। আমি তাঁর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি। দ্বীনের এই রাহবারের জীবনের সকল নেক আমলসমূহ কবুল করে মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসে উচ্চ মাকাম দান করুন এই দোয়া করছি।
শোকবাণীতে তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদেরকে এ শোকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন।

প্রখ্যাত আলেম আল্লামা শফী আর নেই

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ হেফাজতে ইসলামের আমীর, হাটহাজারী মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী আর নেই। আজ সন্ধ্যায় তিনি পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া আজগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০৪ বছর।

আল্লামা মফির ইন্তেকালের খবরটি নিশ্চিত করেন আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী। তিনি জানান শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিইউতে থাকা আল্লামা শফীকে এয়ার এম্বুলেন্সে করে আজ শুক্রবার সন্ধ্যার আগে ঢাকায় আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টের থাকা অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।

জানা যায়, হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন আল্লামা শফী। রাতে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মেডিকেল বোর্ড বসেন। দেশের শীর্ষ এ আলেমের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বিকালে তাকে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  এখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

প্রসঙ্গত, দেশের এই শীর্ষ কওমী আলেম আল্লামা আহমদ শফী ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। ফলে তাকে প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। গত কয়েক মাসে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিলে একাধিকবার চট্টগ্রাম ও ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয় আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে।

শাহ আহমদ শফী চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়ারটিলা গ্রামে ১৯১৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আল জমিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী মাদ্রাসা) এবং ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করেন। তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২০১০ সালে হেফাজতে ইসলাম নামে একটি ধর্মীয় সংগঠন প্রতিষ্ঠ করেন।

বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

রাতারাতি পিঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা দেশবাসীর নিকট রহস্যজনক

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পিঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ১৬ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেনঃ-

“দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এক দিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি পিঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। একদিন আগেও প্রতি কেজি পিঁয়াজ ৪০ থোকে ৫০ টাকা করে বিক্রি হতো। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে দেশে পর্যাপ্ত পিঁয়াজের মজুদ রয়েছে। তারপরেও এভাবে রাতারাতি পিঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা দেশবাসীর নিকট রহস্যজনক।

পিঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির পেছনে যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে মজুতদারির বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণেই রাতারাতি পিঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা সরকার দলীয় লোকজনের মদদে কারসাজি করে জনগণের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ইতোপূর্বেও কেজি প্রতি পিঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়ে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়েছিল। জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার কোনোভাবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস-পত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সকল ক্ষেত্রেই সরকারের সীমাহীন অনিয়ম, দূর্নীতি ও ব্যর্থতার করুণ চিত্রই ফুটে উঠছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পিঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ এবং সকল প্রকার পণ্য সামগ্রীর দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

অধ্যক্ষ 'আবু তাহের ভাই' আমার জীবনে পাওয়া সেরা জান্নাতি উপহার।

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে একটা বক্তৃতা শুনে থমকে দাঁড়াই। সাধারণতঃ চিৎকার করে যে সব বক্তৃতা গুলো তখন শুনতাম, তাতে আবেগ থাকতো বেশি। রক্ত উছলে উঠতো। হাত মুষ্টিবদ্ধ হতো। মুখে না’রাহ ধ্বনি উচ্চকিত হতো। এগুলোকে বলা চলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবীয় নির্ঘোষ, অথবা শায়খ আব্দুল হামিদ কিশকের উন্মাতালকরা ওয়াজ। এই দুইটার কোনটাই আমার ছোট বেলা থেকে পছন্দ নয়।

১৯৮৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই ধরণের বক্তৃতা আমাকে শুনতেই হচ্ছিলো। অধ্যক্ষ আবু তাহরের নাম হতেই মাথায় টুপি পরা ছিপছিপে খুব সাদামাঠা একজন ভাইয়ের নাম বলা হলো। পরিচয়ে বলা হলো প্রাক্তন সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট। তিনিও তার আলোচনায় ‘গতে’ থাকার কোশেশ করলেন, আলোচনায় তর্জন গর্জন করলেন, তর্জনীর ব্যবহার করলেন। কিন্তু আলোচনা সবটাই করলেন ইসলামের সম্মোহনী দলীলের ভিত্তিতে। কুরআনের আয়াত পড়লেন, ব্যাখ্যা দিলেন। হাদীসের প্রসঙ্গ আনলেন। নবী (সা) এর জীবনের সাথে আন্দোলনের রিলেট করলেন। ইরশাদ শাহীর মুন্ডপাতের চেয়ে তার ক্ষমতা দেশের অভ্যন্তর ও বাইরের জগতে বাংলাদেশের কি কি ক্ষতি নিয়ে এসেছে তার বর্ণনা দিলেন। আমি জ্ঞানের কিছু পেলাম, শেখার কিছু নিলাম, এবং অন্তরে কিসের একটা ছোঁয়া অনুভব করলাম।
আমি ছাত্র শিবিরের সাথে যুক্ত হবো কিনা এই ব্যাপারে পরামর্শ নেই আমার বড় চাচা ডঃ প্রফেসর ইয়াহইয়া আর রাহমানের কাছে। তিনি তার পরামর্শে কখনো ডিসাইসিভ কিছু বলেন না। তিনি বললেন, ইস্তেখারা করো। তবে ওদের একজন খুব ভালো নেতা আছেন। চিটাগাংএর আবু তাহের। আমি বললাম, কিভাবে জানেন? চাচাজান বললেন, আমি তখন ঢাকার তারা মসজিদের ইমাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এক ভাই আমাকে বললেন, আমাদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবু তাহের আপনাকে দেখা করতে বলেছেন। আমি গেলাম। তিনি বললেন, ইয়াহইয়া ভাই, আমি চেষ্টা করছিলাম দুনিয়ার প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে আমাদের দেশের ছাত্রদের পাঠায়ে ভালো শিক্ষিত করে নিয়ে আসি। আমি দেশের ভালো ছাত্রদের খবর নিয়ে দেখলাম, আপনি একজন সম্ভাবনাময় ছাত্র। আপনি আপনার কাগজ পত্র গুলো নিয়ে আসুন আমি সাঊদী আরব সহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়ে দেই।
চাচাজান বলেছেন, আমি তাজ্জব হলাম। ভালো সুযোগ নিতে সাতক্ষীরার এলাকার ছাত্ররা কারো নজরে পড়বে ভাবতাম না। দেখলাম এই একমাত্র ছাত্র নেতা, যার নজরে কোন মলিনতা নেই, এবং অন্তরে কোন এলাকাপূজা নেই। যদিও আমি বাইরে যাবার ব্যাপারে চিন্তা করিনি বলে তার ডাকে সাড়া দেইনি। তবু তার ব্যবহারে আমি আজো আপ্লুত। আমি এই গল্পে বুঝলাম ছাত্র শিবিরের এই একজন নেতাকে তিনি অনেক শ্রদ্ধার সাথে মনে রেখেছেন।
১৯৯১ সালে আমি রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। ঐ বছর একটা বড় ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাস বাংলাদেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চল লন্ড ভন্ড করে দেয়ে। চিটাগাং এর আনোয়ারা হয়ে যায় একদম শেষ। সেই দূর্যোগে অধ্যক্ষ আবু তাহেরের পরিবার মারত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য তিনি সাঊদির সাহায্যের ব্যাপারে উদ্গ্রীব হন। ঐ বছরেই আমার সাথে তার পরিচয় হয়, এবং আল্লাহর কসম, এই দূর্যোগে তার যে এতো বড় ক্ষতি হয়েছে, তা আমাদের বুঝতেও দেননি। নিজের দিকে না তাকিয়ে অন্য মানুষের খিদমতে রাতদিন খেটেছেন তিনি। আমার চোখে তিনি অনেক বড় হয়ে আছেন সেই থেকেই।
১৯৯৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চিটাগাঙে আমি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেই। যোগ দেয়ার এক মাসের মাথায় আমার মুহাব্বাতের দাওয়াত আসে মাওলানা আবু তাহেরের অফিসে। আমি যাই। তার অফিসের দিকে আমার পা, দেখি কী এক স্বর্গীয় হাসি নিয়ে তিনি মসজিদের দোতলায় দাঁড়িয়ে আমার অপেক্ষা করছেন। আমাকে নিয়ে গেলেন অফিসে। চিটাগাঙের ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুটের সাথে দেশি চায়ের কাপ সামনে নিয়ে নিজেই হাতে ধরিয়ে দিলেন। এরপরে বসলেন আমীরের চেয়ারে। অনেক কথা হলো। আমার সংসারের গভীরে গেলেন, আমার ওয়াইফের মা মরার ঘটনা জানতে চাইলেন, আমাদের ইনকামের সোর্স জানতে চাইলেন। পি এইচডি কবে করবো, কিভাবে করবো তার প্লান জানতে চাইলেন। তার নাকি ধর্মীয় ও ইলমি ব্যাপারে আমা্কে সাহায্য করতে হবে জানালেন। তাই তার পাশে দাঁড়ায়ে তাকে কোন কোন ক্ষেত্রে আমি সাহায্য করতে পারবো তার ব্যাপারে জানতে চাইলেন। আমাকে বিদায় দেয়ার সময় রিক্সা ভাড়া এগিয়ে দিলেন। আমি এক অনাস্বাদিতপূর্ব ইসলামি নেতার পরিচয় পেলাম। জামাআতে ইসলামির মধ্যে এমন বিনয়ী, সহজ সরল ও ইলম পাগল মানুষ থাকে দেখে অভিভূত হলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে দ্বায়িত্বশীল ছিলেন। ফলে নানান দিকে তার সাথে মিশে গেলাম। ভাবী মুহতারামাহ ফজিলা তাহেরের সাথে আমার স্ত্রীর সুন্দর সম্পর্কে আরো কাছে এলাম। তার ছেলে মেয়েদের শিক্ষক হওয়ায় সম্পর্কটা মুরুব্বিয়ানায় যেয়ে পৌঁছায়। নানা ব্যপারে তার সাথে দেখা হওয়া জরুরি হয়ে যেতে লাগলো। এবং আমি মনে করা করা শুরু করলাম, চিটাগাংএ আমার যারা আত্মার আত্মীয়, তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। ছেলে ফারুক কোথায় যেতো তার হিসেব দিতে হত। কিন্তু আমার বাসায় ঘন্টার পর ঘন্টা কাটালেও তিনি খুশি হতেন।
একবার পারিবারিক এই জটিলতায় কি সিদ্ধান্ত নিবেন তার জন্য আমাকে ও আমার বন্ধু শায়খ আব্দুর রহমান মাদানীকে তিনি দাওয়াত দিলেন বাসায়। জামাআতে ইসলামির নেতাদের বাসায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার নেই বললেই চলে। তিনিই হলেন দ্বিতীয় নেতা যার বাসায় আমি দাওয়াত খেতে যাই। আমরা দুইজন গেলাম। ভেতরে ঢুকলাম। যেখানে বসলাম, যে সব আসবাব পত্র দেখলাম- তা দেখে আমার অন্তর হু হু করে কেঁদে উঠলো। একি দৈন্য দশা?!
আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ভাড়া করা ফ্লাটে থাকি। সোফাটা চিটগাংএর সেরা সেগুনকাঠের। বইএর আলমিরা অনেক দামের সেগুনের জ্বলজ্বলে পলিশ। কিন্তু উনার বাসায় যা দেখলাম তা অসলেই ইসলামের ইতিহাসের প্রথম দিককার সালফে সালেহীনের জীবনে থাকতো বলে পড়েছি। আমি খাওয়া দাওয়া করলাম। ভাবীর হাতের রান্নায় যৌগিকতা ছিলো। চিটাগাং ও ঢাকাইয়া রান্নার কম্বিনেশান ছিলো। এরপর যে সমস্যাটার কথা শুনলাম তা শুনে হাসি এলো। তিনি ফারজানার লেখাপড়া নিয়ে চিন্তা করছেন। ভাবী চান ছেলে মেয়েগুলোকে দীনের দাঈ ইলাল্লাহ বানাবেন। ভাই চান ছেলে মেয়েদের প্রতিভা ও মেধার সাথে তাদের ইচ্ছার স্বাধীনতা দেবেন। সব শুনে আমি ভাবীর পক্ষে মত দিলাম, মাদানী সাহেব ভায়ের কথাটাকে প্রাধান্য দিলেন। আমরা চলে এলাম। এবং তার বিনয়, সারল্য ও দীনী মেজাজ দেখে মন ভরে দুয়া করে এলাম।
চিটাগাংএ জামাআতে ইসলামের একটা বড় অনন্যতা আমার চোখে পড়েছে। তা হলো সেখানে উলামায়ে কিরামের সাথে জামাআতের উলামায়ে কিরামের সদ্ভাব। এটা আমি আর কোথাও দেখিনি। আমরা আই আই ইউ সির শিক্ষক। এটা জেনেও আমাদের পটিয়াতে আমন্ত্রণ জানানো হতো। হাটহাজারীতে যাইতে চাইলে শায়খ আহমাদ শফী হাফিযাহুল্লাহ আমাদের বুকে টেনে নিতেন। দারুল মাআরিফের শায়খ আদীবে বাংগাল সুলতান যাওকের নয়নমনি ছিলাম আমরা। লালখান মাদ্রাসাকে আমরা নিজেদেরই মনে করতাম। তারাও আমাদের প্রিয়তা দিতেন। আর বায়তুশ শরফের পীরের দরবার ছিলো আমাদের নিত্যদিনের পছন্দের যায়গা। এই সবের পেছনে ছিলো মাওলানা আবু তাহের সাহেবের উদার বুকের বিস্তীর্ণ জমিন।
ক’বছর আগে আস্ট্রেলিয়ায় যাই এক প্রোগ্রামে গেস্ট হয়ে। আমার হোস্টগণকে বললাম, আমার সারা প্রোগ্রাম আপনাদের ইচ্ছে মত সাজান, তবে ডঃ ফারুক আমীনের সাথে আমার একটা রাত কাটাবার ব্যবস্থা করবেন। ফারুকের বাসা থেকে কথা হলো মারাত্মক অসুস্থ অধ্যক্ষ আবু তাহের ভায়ের সাথে। তিনি আমার অনেক কথা জানতে চাইলেন। ইসলামি শিক্ষার জন্য কিছু করছি কিনা তারও খোঁজ নিলেন। আই আই ইউ সিতে আবার ফিরবো কিনা তার জন্য সকাতর আবেদন জানালেন। এবং বললেন, ফারুকের ঐখানে যখন গেছেন, ফারজানাকেও দেখে দুয়া দিয়ে আসবেন। আমিও তার নির্দেশ পালন করে আসি।
অনেকদিন তাহের ভাইএর সাথে কথা হয়নি। তবে তিনি খুব অসুস্থ তার খবর পেতাম ফারুকের মাধ্যমে। তার জন্য মুহতারামা ভাবীর অনবদ্য কুরবানী আমাদের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে।
আজ তিনি আল্লাহর কাছে হাজিরা দিয়েছেন। বাংলাদেশের এমন কোন উপজেলা নেই, ইসলামের সেবায় তার পা যেখানে পড়েনি। আল্লাহর কাছে দুয়া করি বাংলাদেশের ইসলামি রাজনীতিতে ক্ষণজন্মা এই শায়খ কে আল্লাহ যেন ক্ষমা করেন। দীর্ঘ দিনের রোগ ভোগের কারণে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দিন ও মর্যদা বৃদ্ধি করে দিন। তার শোক সন্তপ্ত পরিবারকে শোক কাটিয়ে ওঠার তাওফীক্ব দিন। ভাবীকে কি বলবো, তিনি আমাদের রৌলমডেল। তিনি হবেন ধৈর্যের পারাকাষ্ঠা এই দুয়া করি। আমার নয়নজোড়া ডঃ ফারুক ও ডঃ ফারজানাকে আল্লাহ সবর দিন।
Dr. Abdus Salam Azadi সাহেবের ওয়াল থেকে।

শতবর্ষী অসহায় কিরণ বালার ঘর করে দিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীর

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ অবশেষে মাগুরার শ্রীপুরের ১০৮ বছর বয়সী অসহায় বৃদ্ধা মহিলা কিরণ বালা মন্ডলের ঘর করে দিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীর ডা:শফিকুর রহমান ,এ নিয়ে

এলাকার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে পড়েছে ব্যাপক সাড়া।
মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চিলগাড়ী গ্রামের এক অসহায় বৃদ্ধা মহিলা কিরণ বালা মন্ডল। বয়স ১০৮ বছর। জীবনের এতোগুলো বছর পেরিয়ে তিনি অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছিলেন।
সম্প্রতি বৃদ্ধা মহিলাটিকে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃইয়াছিন কবীর ভাতার ব্যবস্থা করলেও তাঁর থাকার জন্য তেমন কোনো ভালো ব্যবস্থা ছিল না। প্রেস মিডিয়ার মাধ্যমে খবরটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমানের দৃষ্টি গোচরে আসে।
এমতবস্থায় তিনি মহিলাটির বসবাসের জন্য একটি ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ৭ আগষ্ট ২০২০ যথারীতি ঘরটির নির্মান কাজ শুরু হয়ে তা ১ মাসের ভীতরেই নির্মিত হয়। সব মিলে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২ কক্ষ বিশিষ্ট ২৫ বন্দের (হাফ ওয়ালের) আধাপাঁকা ঘর, সাথে রয়েছে ২টি সিলিং ফ্যান, খাট, বাক্স, তোষক বালিশ ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রসহ কিরণ বালাকে তালা চাবি দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
অতি সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রেীয় আমীর ডা: শফিকুর রহমান কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের অন্যতম সদস্য মোবারক হোসাইনকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে আসেন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর সদর ইউনিয়নের চিলগাড়ী গ্রামের কিরণ বালা মন্ডলের বাড়ীতে। শতবর্ষী মহিলাটি তাকে পেয়ে আবেগে উদ্বেলিত হয়ে উঠেন। তার চোখ থেকে পানি নির্গত হতে থাকে। তার আনন্দ আর উচ্ছাস কান্নায় রূপান্তরিত হয়ে এক আবেগময় পরিবেশের অবতারণা করে, মহিলাটির যেন এ এক পরম পাওয়া। কিরণ বালার কোনো পুত্র সন্তান নেই। তার দু কন্যা সন্তান, আবার তার কন্যাদেরও কোনো পুত্র সন্তান নেই, তবে কিরণ বালার নাতনীর “মনি কুমার নামে” একমাত্র পুত্র সন্তান আছে। জামায়াতের আমীর কিরণ বালার নাতনীর পুত্র মনি কুমার বিশ্বাসের কর্মসংস্থানের জন্য আর্থিক সহায়তা দেন।
এ সময় তার সাথে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন ছাড়াও কেন্দ্রীয় ও জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান সরকারের পক্ষ থেকে অসহায় বৃদ্ধা কিরণ বালার ঘর অনেক আগেই পাওয়া উচিৎ ছিলো, কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেল কিন্তু কেউই অসহায় এই কিরণ বালার ঘর করে দেয়ার জন্য এগিয়ে এলোনা, বরং এগিয়ে এলো জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীর, তারা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে, জামায়াত যে মানবতার সেবাই এত বেশি ভালো কাজ করে সেটা আগে আমাদের জানা ছিলো না, বেঁচে থাক তাঁরা, বেঁচে থাক মানবতা, তাদের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে রইলো অসংখ্য দোয়া ও আর্শিবাদ। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত প্রকার ভেদাভেদ ভূলে মানবতার এই মহৎ সেবাই সরকার, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সমাজের বিত্তবানেরা আরো এগিয়ে আসবেন এমনটায় প্রত্যাশা করছেন সমাজের বিশিষ্টজনেরা ।

রূপালী ইলিশ বনাম পেঁয়াজের গল্প॥

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতকে বাংলাদেশ এক হাজার পাঁচশো টন ইলিশ পাঠাবে। এর মধ্যে প্রথম চালানে ২০ টন ইলিশ ঢুকেছে ভারতে। আর এ ইলিশ বাজারে পেয়ে আত্মহারা কলকাতার ক্রেতারা।
সেই আনন্দ আত্মহারা দাদারা বাংলাদেশে পেঁয়াজ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ তারা বাংলাদেশে যদি পেঁয়াজ পাঠিয়ে দেয়, তাহলে ভাল করে বাংলাদেশের রূপালী ইলিশ রান্না করতে পারবে না।
হাজার হলেও তারা বাংলাদেশের বন্ধু ত।
তাই বাংলাদেশ বন্ধুত্বের মর্যাদা দিয়েছে তাদের জন্য ইলিশ পাঠিয়ে আর ভারত ও দিয়েছে বন্ধুত্বের মর্যাদা বাংলাদেশকে পেঁয়াজ বন্ধ করে দিয়ে।
প্রত্যেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ীই প্রতিদান দেয়। যার যা সামর্থ্য আছে সে ত তাই দেবে। এই আর বিচিত্র কী !
সেই 1972 সাল থেকে আজ অবধি বাংলাদেশ দিয়ে যাচ্ছে বন্ধু ভারতকে। বন্ধুত্বের এই ঋণ কখন যে শেষ হবে আল্লাহ্ ভাল জানেন।
তবে শেষ হওয়া দরকার এখন। অনেক ত হলো আর কত ? ঋণ শোধ করতে করতে আমরা ক্লান্ত, শ্রান্ত আর পরিশ্রান্ত।
সেই 1972 সাল থেকে ঋণ শোধ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ, স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাপ্ত হাজার হাজার কোটি টাকার গণিমতের মাল দিয়ে। তারপর থেকে দিয়ে ই যাচ্ছে-----সেই পারাক্কা থেকে আর্মি (57-অফিসারকে হত্যার মাধ্যমে), পুলিশ, বিডিআর, প্রশাসন, দেশের সরকারি দল-বিরোধী দল, ব্যবসায়ী নেতা, বিচারপতি, আইনজীবী এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতার চাবিসহ সব কিছু।
তারপরও লোকে বলবে আমরা অকৃতকার্য, অকৃতজ্ঞ। বন্ধুত্বের মর্যাদা দিতে পারি না !!!
এখন মনে হয় সময় হয়ছে, দাদা বাবুদের কাছে আবার নতুন করে 'ছবক' নিতে হব, কিভাবে বন্ধুত্বের মর্যাদা দিতে হয় ???
দাদা মানে ত মুরুব্বি ! আর শিক্ষা ত নিতে হবে মুরুব্বির কাছ থেকেই।
শিক্ষা টা যত তাড়াতাড়ি নেবে প্রিয় জন্মভূমি, ততই ভাল হবে জন্মভূমির জন্য !!!

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

"তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছিলেন" আমি তুরস্ককে কোথা হতে কোথায় নিয়ে এসেছি..!!

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ যে দেশে আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্বেও আমার মেয়ের মাথায় হিজাব থাকার কারনে আমার সাথে একটা অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি সেদেশে আমি আমার লক্ষ লক্ষ মেয়ের মাথায় হিজাব পরিয়েছি।

আপনারা যারা আমার সমালোচনা করেন তাদের বলতে চাই আপনার দেহ থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ আসে কিন্তু আমার দেহ থেকে এখোন সেকুলারের দুর্গন্ধ বের হয়। আপনি মজবুত ঈমানের অধিকারী আমি হয়তে ততটা ঈমানের ধারেকাছেও নেই।
.
অথচ আমাকে আপনারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে উসকানি দেন যেন আমি তাদেরকে ধ্বংস করি। আমি আপনার মত চুপ করে বসে নেই। আপনি আপনার ঈমানের জোরে দোয়া করে কোটি কোটি ফেরেশতা নামিয়ে এনে মুহুর্তে ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে পারেন। তবে সেটা করেননা কেন? আমিত আপনার মত বসে নেই।
.
আমার চাচা আমাকে বলেছিল মাদ্রাসায় পড়ে আমার মরা মানুষের গোসল করে সংসার চালাতে হবে৷ অথচ আপনার চাচা হয়তে আপনাকে মাদ্রাসায় পড়ার জন্য পুরস্কৃত করেছিল। আমি বলতে চাই চাচা আপনি দেখে যান মাদ্রাসায় পড়ে আমি কি করে সাংসার চালাচ্ছি। পৃথিবীর সব কাফেরদেরকে হত্যা করতে বলেন আমাকে। অথচ আমি অতটা বোকা নই।
.
যে দেশে আযান চালুর দায়ে প্রধানমন্ত্রী কে ফাঁসিতে ঝেলানে হয়েছিল সে দেশে আপনি জন্ম নেননি আমি নিয়েছি। যে দেশে মসজীদ নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করার জন্য মেয়রকে জেলে দেয়া হয় সে দেশে আপনি জন্ম নেননি আমি নিয়েছি। আজকের তুরস্ক আর আগের তুরস্ক আপনি দেখে যান।
.
আমি আপনাকে তুরস্ক ভ্রমনের আমন্ত্রণ জানাই। কি করতে হবে তা আমি ভালভাবেই জানি। আপনার মত লোকের সমালোচনা আমি ডাস্টবিনে ছুড়ে মারি। কোন মূল্য নেই আমার কাছে। আমি যেটা করছি সেটা করে যাবো ইনশাআল্লাহ।

সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

রবি ঠাকুরের বিয়েতে আমি অবশ্যই বাল্যবিবাহের দোষ খুঁজছিনা।

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আজ থেকে প্রায় ১৩৭ বছর আগে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে বিয়ে হয় এক মহিলার। নাম মৃণালিনী দেবী৷ আসল নাম ভবতারিনী। এই ভবতারিনীর বয়স যখন দশ বছর, তখন তার সাথে বিয়ে হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের।

দশ বছর বয়সী মৃণালিনীর সাথে তাগড়া রবি ঠাকুরের বিয়েতে আমি অবশ্যই বাল্যবিবাহের দোষ খুঁজছিনা। মৃণালিনীর সমাজ, তার পরিবার এবং সে নিজে জানে যে ওই দশ বছরেই সে বিয়ের উপযুক্ত ছিলো। তার সমাজ, পরিবার এবং সে নিজে সবটা জেনেবুঝেই সর্বসম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। আরো উল্লেখ্য, তৎকালীন সময়ে এই বিয়েকে কেউই বাল্য বিবাহ তকমা দিয়ে সমালোচনার বিষবাক্যে এফোঁড়ওফোঁড় করে ছাড়েনি৷ কারণ, ঘটনাটা আদৌ সমালোচনার মতো ব্যাপার ছিলোই না।
সমস্যা বেঁধেছে রবীন্দ্রানুসারীদের নিয়ে৷ রবীন্দ্র ভক্তরা নিজেদের খুব আধুনিক, প্রগতিশীল আর সংস্কৃতিমনা ভাবতে গিয়ে প্রায়ইশ ধর্ম নিয়ে খোঁচাখুঁচি করে থাকে৷ তারা সুযোগ পেলেই রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার বিয়ে নিয়ে কটুবাক্য আওড়ায়। অথচ, তাদের আরাধ্য গুরু, পূজিত সংস্কৃতি দেবতাই দশ বছর বয়েসীএকজন কিশোরীকে বিয়ে করেছিলেন আজ থেকে মাত্র ১৩৭ বছর আগে। আরবের সেই সময়ের তুলনায় রবি ঠাকুরের সময়টা অত্যন্ত নিকট অতীত।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এসব রবীন্দ্র ভক্তরা কেবল আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার বয়সটাই দেখে, কিন্তু রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তত্ত্বাবধানে উনি যে উম্মাহর একজন 'শিক্ষক' হয়ে উঠেছিলেন, বিশাল জ্ঞানের ধারক হয়ে উঠেছিলেন- সে কথা তারা বেমালুম চেপে যাবে।
-আরিফ আজাদ

শুধু পোশাক‌ই একটি ছবিকে অনন্য করে দিয়েছে

 

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ শুধু পোশাক‌ই একটি ছবিকে অনন্য করে দিয়েছে। কারণ, মেয়েদের হাতে ব্যাট থাকা এখন নৈমিত্তিক স্বাভাবিক ব্যাপার। মহিলা ক্রিকেট টিম ও আছে। গঞ্জে গ্রামে ও মেয়েদের ব্যাট বা বলহাতে ছবি অহরহ দেখছি। কিন্তু সব ছাপিয়ে হেজাবী মায়ের ছবিটি নেটিজেনদের তুমুল আলোচনার বিষয় হয়ে গেল। পক্ষে বিপক্ষে বিপুল হৈচৈ। কিন্তু আমি কেবল মায়ের সেই গর্বিতপোশাকটি নিয়ে ভাবছি যেটি একটি নির্দিষ্ট ধর্মের নান্দনিক ইউনিফর্ম। যেটাকে ধারণ করে হাজারো তরুণী আজ হৃদয়ের শান্তি খুঁজে পেয়েছে।

২০০১ সালের কথা। ইংরেজী বিভাগে আমাদের সেশনে ৩৭ টি মেয়ে ছিলো। জাতীয় নির্বাচনের পরে ক্যাম্পাস খোলার পরে হঠাৎ দেখা গেলো এ সহপাঠীনীদের বড় একটা অংশ বোরকা পরে ক্লাসে এসেছে। একজন প্রফেসর তো ক্লাসে মন্তব্য করে বসলেন নির্বাচনের প্রভাব তো ক্লাসের ডানপাশে ব্যাপকভাবে লক্ষনীয়। তাঁর তীর্যক মন্তব্য আমরা সকলেই বুঝতে পেরেছিলাম। কিন্তু বিজ্ঞ প্রফেসর বুঝেননি এটা ছিলো তাদের দীর্ঘ দিনের ক্ষুধা। শুধু অনুকূল পরিবেশের জন্য অপেক্ষা করছিলো। মনে থাকার কথা এরপরে একটা আন্তর্জাতিক জার্নালে রিপোর্ট হয়েছিলো ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশে বোরখা পরার হার ৫০০% বেড়েছে!
ঢালাও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার নামে পুঁজিবাদের দানবদের ভুড়ি মোটার প্রতিযোগিতায় মেয়েদেরকে যখন পন্যের অনুঘটক বা সরাসরি পন্য বানিয়ে গন্তব্য বিহীন ট্রেনে তুলে দিচ্ছে, যখন নারীমুক্তির নামে তাদের নারীত্ব হরণের ফন্দি এঁটে শেষবেলায় ছুড়ে ফেলে হতাশায় বন্দি করে ফেলতে চাচ্ছে তখন পোশাকের স্বাধীনতা বলতে তারা স্বল্প বসনা কে বুঝায়। প্রয়োজনে ব্যবহার করে স্বস্থা পলিথিনের মত ফু দিয়ে উড়িয়ে ফেলে দেয়ার নোংরা খেলার ফিকির আজ অগুনিত বোনদের কাছে স্পষ্ট। তাই তারা শিকড়ে ফিরতে চায়, নিজস্বতে ফিরতে চায়, ইসলামী অনুশাসনে ফিরতে চায়। এ তাকিদ তাদের নিজস্বতার, তাদের অহংকারের।
এদেশের প্রকৃত সংস্কৃতি ঠিক কোনটি তা আজো ডিফাইন করা হয়নি। রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব আমাদের এমন বেকুব বানিয়ে রেখেছে যে আমরা যা ন‌ই তাকে বলা হচ্ছে সংস্কৃতি, আমাদের যা নয় তাকে বানাচ্ছি আমাদের সংস্কৃতি। বোরকা পরা মা তাই তাদের কাছে বাংলার মা নয়। বাংলাদেশের মা নাকি পেট বের করে শাড়ি পরে কপালে টিপ দিয়ে হতে হবে।
বছরের শুরুর দিকে ভারতীয় অভিনেতা, অভিনেত্রী এবং নৃত্য শিল্পীদের নিয়ে কনসার্ট হয়েছিল। আয়োজনের যে ডামাডোল ছিলো উপস্থিতিতে সে পরিমান লোক হয়নি। বলা যায় অর্ধভর্তি স্টেডিয়ামে কনসার্ট করে হতাশ হতে হয়েছিলো আয়োজক ও অভ্যাগত শিল্পীদের।
কিন্তু ঠিক উল্টোটা দেখা গেলো তরুণ বক্তাদের মাহফিল গুলোতে। উপচে পড়া ভীড় কোনো মাঠে আর সংকুলান হয়ে উঠছিলোনা। ঘরের ছাদে গাছের মাথায় উঠে হৃদয় কাড়া বক্তব্যে পাগল হয়ে উঠলো তরুণ যুবা বৃদ্ধ। ঐশি বানীর শৈল্পিক উপস্থাপনে আত্মার ক্ষুধাটা মিটিয়ে নেয়ার এ যেনো বিশাল উপলক্ষ।
এ প্রজন্মের কাছে জ্ঞানের সকল উৎস উন্মুক্ত। প্রাচ্য-পাশ্চাত্য, ভাববাদ, বিপ্লব, নান্দিকতা, রসবোধ, নাস্তিকতা- আস্তিকতা, গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, মোডিফাইড সমাজতন্ত্র, আন্ত:ধর্মীয় ধারণা, ভূরাজনীতির খেলা ইত্যাদির সকল মিশেলে এক অদ্ভুত শরবত বানিয়ে খাচ্ছে আজকের প্রজন্ম। কিন্তু হৃদয়টি শূন্য হয়ে পড়ছে ক্রমশ। শূন্যতা থেকে ফাঁকা হাহাকারময় মহাশূন্যতায় খাবি খাচ্ছে এ প্রজন্ম।
রবীন্দ্রনাথের চতুরঙ্গের শচীশের জ্যাঠা জগমোহনের মত অদ্ভুত প্যারাডক্স নিয়ে বড় হচ্ছে এ প্রজন্মের বড় একদল তরুণ। জগমোহন বলেন:
যদি ঈশ্বর থাকে তবে তিনি আমাকে বুদ্ধি দিয়েছেন। সেই ঈশ্বরের দেয়া বুদ্ধি নিয়ে বলছি ইশ্বর নেই। সুতরাং ঈশ্বর নেই।
এসব অদ্ভুতড়ে দর্শনের কবলে পড়ে খে হারানো প্রজন্মের মনে 'নেই' শূন্যতার ফাঁকা জায়গাটি পূর্ণ করার জন্য শ্বাশত বিধান কুরানের ব্যাখ্যাকে সকল আধুনিকতম বিষয়গুলোর সাথে প্রাসঙ্গিক করে তোলাটা একান্ত জরুরি। যারা এ সংকটে বিভিন্ন ডিসকোর্সে অংশ নিয়ে মানুষের জাগতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক ক্ষুধাকে নিবারণের চেষ্টা করছে তাঁরা এ যুগের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা, নতুন বসন্তের সুরেলা কোকিল।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী পাঠকক্ষে এক অপরাহ্ন: সাঈদ চৌধুরী

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ কিংবদন্তী তুল্য রম্যলেখক সৈয়দ মুজতবা আলীকে জানার সুবিধার্থে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সৈয়দ মুজতবা আলী আবাসিক হলে একটি পাঠকক্ষ চালু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ও আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য পাঠকক্ষ তত্ত্বাবধান করেন।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের কৃতিমান সাধক বিখ্যাত ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, অনুবাদক ও রম্যরচয়িতা সৈয়দ মুজতবা আলী সিলেটের এক ক্ষণজন্মা পুরুষ। তিনি ১৯০৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতে আসামের অন্তর্ভুক্ত সিলেটের করিমগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা খানবাহাদুর সৈয়দ সিকান্দার আলী সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। তার পৈতৃক নিবাস সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার উত্তরসুর গ্রামে। তবে তিনি সিলেট শহরেই বড় হয়েছেন।
সৈয়দ মুজতবা আলী সিলেট গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। ১৯২১সালে তিনি শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রথমদিকের ছাত্র। সেখানে তিনি ইংরেজি, আরবি, ফার্সি, হিন্দি, সংস্কৃত, গুজরাটি, জার্মান ও ইতালীয় ভাষা শিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৬ সালে তিনি আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। সেখান থেকে ১৯২৭ সালে কাবুলের শিক্ষাদপ্তরে যোগ দেন। কাবুল কৃষি বিজ্ঞান কলেজে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার শিক্ষক ছিলেন। পরে স্কলারশিপ নিয়ে যান জার্মানির বার্লিন ও বন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৩২ সালে। তিনি ১৯৩৪-১৯৩৫ সালে মিশরের রাজধানী কায়রোতে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
সৈয়দ মুজতবা আলী ১৯৩৫ সালে বরোদার মহারাজার আমন্ত্রণে বরোদা কলেজে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি আট বছর কাটান। এরপর দিল্লির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের খণ্ডকালীন প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেন।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক-সাহিত্যিক মাওলানা আবুল কালাম আজাদের আমন্ত্রণে সৈয়দ মুজতবা আলী সচিব হিসেবে যোগ দেন ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেসান্সে। এরপর পরিচালক হিসেবে যোগ দেন অল ইন্ডিয়া রেডিওতে। আকাশবাণীর স্টেশন ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন পাটনা, কটক, কলকাতা এবং দিল্লিতে। ১৯৬১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে প্রত্যাবর্তন করে বিশ্বভারতীর ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে তিনি অবসরগ্রহণ করেন।
বহুভাষাবিদ সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনা একই সঙ্গে পাণ্ডিত্য এবং রম্যবোধে পরিপুষ্ট। ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার নানা দেশে কর্মসূত্রে সঞ্চয় করেন বিচিত্র অভিজ্ঞতা। ভ্রমণকাহিনীর জন্য তিনি বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
সৈয়দ মুজতবা আলী দেশ বিভাগের পর বেশির ভাগ সময় কাটান জন্মভূমি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে। ১৯৪৭ সালেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সপক্ষে বক্তৃতা করেন সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে। বগুড়া আজিজুল হক কলেজে থাকাকালীন বাংলা ভাষার সমর্থনে ‘পূর্ব-পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ শীর্ষক প্রবন্ধ লিখে ব্যাপক আলোচনায় আসেন।
সৈয়দ মুজতবা আলী বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন ভ্রমনকাহিনী। বিবিধ ভাষা থেকে শ্লোক ও রূপকের যথার্থ ব্যবহার, হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং এর মধ্য দিয়ে গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাকে বাংলা সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। তিনি বাংলা রসরচনায় মৌলিক অবদানের জন্য অবিস্মরণীয়। তার উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থের মধ্যে ভ্রমণকাহিনী: দেশে বিদেশে (১৯৪৯), জলে ডাঙ্গায় (১৯৬০).মুসাফির, উপন্যাস: অবিশ্বাস্য (১৯৫৪), শবনম (১৯৬০), শহর ইয়ার (১৯৬৯), অবিশ্বাস্য, ছোটগল্প: চাচা কাহিনী (১৯৫২), টুনি মেম (১৯৬৪), রম্যরচনা: পঞ্চতন্ত্র (১৯৫২), ময়ূরকন্ঠী (১৯৫২),‘ভবঘুরে ও অন্যান্য , গল্পমালা: রাজা উজির, ধূপছায়া, বেচে থাক সর্দি-কাশি, পুনশ্চ, পাদটীকা, তীর্থহীনা, কর্ণেল, রাক্ষসী, বিধবা বিবাহ, ক্যাফে-দে-জেনি, মা জননী, বেল তুলে দু-দু'বার, স্বয়ংবরা, রস-গোল্লা (ইংরেজি), প্রবন্ধ রচনা: 'হিটলার', পূর্ব-পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, ইত্যাদি।
সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়ার সময় বিশ্বভারতী নামের হস্তলিখিত ম্যাগাজিনে নিয়মিত লিখতেন। পরবর্তীতে ‘সত্যপীর’, ‘ওমর খৈয়াম’, ‘টেকচাঁদ’, ‘প্রিয়দর্শী’ প্রভৃতি ছদ্মনামে দেশ, আনন্দবাজার, বসুমতী, সত্যযুগ, মোহাম্মদী প্রভৃতিতে কলাম লিখেছেন। এছাড়া চতুরঙ্গ, মাতৃভূমি, কালান্তর, আল-ইসলাহ্ সহ বিভিন্ন কাগজে নিয়মিত লেখক ছিলেন।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাংলা সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের কারণে ১৯৪৯ সালে তিনি অর্জন করেন নরসিং দাস পুরস্কার। ১৯৬১ সালে অর্জন করেন আনন্দ পুরস্কার। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিশেবে তাকে প্রদান করা হয় একুশে পদক ২০০৫ (মরণোত্তর)।
লেখক, ভাষাবিদ, গবেষক ও শিক্ষক সৈয়দ মুজতবা আলী ১৯৭৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি চলে যান না ফেরার দেশে। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যে হাস্যরসের প্রাণভ্রমরা। একজন অমর কথাশিল্পী। এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার চিন্তা ও পরিবেশন শৈলীর নৈপুণ্যে পাঠক বিস্মিত না হয়ে পারেন না। যতদিন বাংলা সাহিত্য থাকবে, ততোদিন অনবদ্য সাহিত্য কর্মের মধ্য দিয়েই তিনি থাকবেন চির জাগ্রত, চির ভাস্বর।

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ক্লাস শুরু হওয়ার আগে রোজ "আই লাভ ইউ অল্" বলতেন l কিন্তু তিনি জানতেন, তিনি সত্য বলছেন না

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ একটা শহরের প্রাথমিক স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষিকা, যাঁর অভ্যাস ছিল তিনি ক্লাস শুরু হওয়ার আগে রোজ "আই লাভ ইউ অল্" বলতেন l কিন্তু তিনি জানতেন, তিনি সত্য বলছেন না l তিনি জানতেন ক্লাসের সবাইকে একই ভাবে তিনি ভালবাসেন না l

ক্লাসের রাজু নামে একটা বাচ্চা যাকে তিনি মোটেও সহ্য করতে পারতেন না l রাজু ময়লা জামাকাপড়ে স্কুলে আসত l তার চুলগুলো থাকত উষ্কো-খুষ্কো , জুতোর বকলস্ খোলা, শার্টের কলারে ময়লা দাগ। ক্লাসে পড়া বোঝানোর সময়ও সে ছিল খুব অন্যমনস্ক l মিসের বকুনি খেয়ে সে চমকে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকত l কিন্তু তার শূন্য দৃষ্টি দেখে স্পষ্ট বোঝা যেত যে রাজু শারীরিকভাবে ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও তার মন অন্য কোথাও উধাও হয়ে গেছে, ধীরে ধীরে রাজুর প্রতি মিসের মনে ঘৃণার উদ্রেক হলো l ক্লাসে ঢুকতেই রাজু মিসের সমালোচনার শিকার হতো l সবরকম খারাপ কাজের উদাহরন রাজুর নামে হতে থাকল l বাচ্চারা তাকে দেখে আর খিলখিল করে হাসে, মিসও তাকে অপমান করে আনন্দ পান l রাজু যদিও এইসব কথার কোনও উত্তর দিতনা l মিসের তাকে নিষ্প্রাণ পাথর বলে মনে হতো, যার মধ্যে অনুভূতি নামে কোন জিনিস ছিলনা l সমস্ত ধমক, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ আর শাস্তির জবাবে সে শুধু নিজের ভাবনাটা শূন্য দৃষ্টিতে মেলে দিত আর মাথা নীচু করে নিত l এইভাবে সে মিসের অত্যন্ত বিরাগভাজন হয়ে উঠলো l
প্রথম সেমিস্টার শেষ হয়ে রিপোর্ট বেরোনোর সময় হলে মিস রেজাল্ট কার্ডে তার সম্পর্কে সব খারাপ কথা লিখে দিলেন l মা -বাবাকে দেখানোর আগে রিপোর্ট কার্ড হেড মিস্ট্রেসের কাছে পাঠাতে হতো l তিনি রাজুর রিপোর্ট দেখে মিসকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, "মিস ! রিপোর্ট কার্ডে কিছু তো অনুপ্রেরণার কথা লেখা উচিৎ, আপনি তো যা কিছু লিখেছেন তার থেকে রাজুর বাবা একদম নিরাশ হয়ে যাবেন l" মিস বললেন, "আমি মাফ চাইছি, কিন্তু রাজু এক খারাপ আর নিষ্কর্মা বাচ্চা l আমার মনে হয়না আমি ওর সম্পর্কে ভালকিছু লিখতে পারবো !" মিস ঘৃণার সাথে এই কথা বলে সেখান থেকে উঠে এলেন l
হেড মিস্ট্রেস অদ্ভুত একটা ব্যাপার ঘটালেন l তিনি চাপরাশির হাত দিয়ে মিসের ডেস্কের ওপরে রাজুর আগের বছরের রিপোর্ট কার্ড রেখে দিলেন l পরের দিন যখন মিস ক্লাসে ঢুকলেন তখন রিপোর্টের ওপরে নজর পড়তে, উল্টে দেখেন সেটা রাজুরই রিপোর্ট কার্ড ! ভাবলেন আগের বছরও নিশ্চয়ই সে এইরকম আচরণ করেছে ! ভাবার সাথে সাথেই তৃতীয় শ্রেণীর রিপোর্টটা খোলেন l রিপোর্টের মন্তব্য পড়ে ওনার আশ্চর্যের সীমা রইলনা, রাজুর উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় রিপোর্ট কার্ডটি ভরা - তাতে লেখা আছে, "রাজুর মতো বুদ্ধিমান বাচ্চা আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি l অতি সংবেদনশীল বাচ্চা এবং নিজের সহপাঠী আর শিক্ষকের প্রতি সম্মান এবং সহযোগিতা করে l" অন্তিম সেমিস্টারেও রাজু প্রথম স্থান আধিকার করে নেয় l অস্থিরভাবে মিস চতুর্থ শ্রেণীর রিপোর্ট খোলেন, সেখানে লেখা আছে "রাজুর লেখাপড়ার ওপর তার মায়ের অসুখের গভীর প্রভাব পড়ছে, পড়াশোনার প্রতি অমনোযোগী হয়ে উঠছে l" রাজুর মা মারা গেছে এবং সঙ্গে রাজুর জীবনের যাবতীয় আশা ভরসা আর সুন্দর ভবিষ্যতের আলোও l তাকে বাঁচাতে হবে, আরও দেরী হয়ে যাওয়ার আগেই। মিসের মাথায় যেন অত্যন্ত ভারী বোঝা চেপে আছে, কাঁপা হাতে তিনি রিপোর্ট কার্ড বন্ধ করেন l তার নয়ন অশ্রুসজল হয়ে উঠলো, টপ টপ করে কয়েক ফোটা চোখের জল ঝরে পড়ল।
পরের দিন যখন ক্লাসে ঢুকলেন তাঁর নিজের চির অভ্যস্ত বাক্যের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন "আই লাভ ইউ অল্" l কিন্তু বুঝতে পারছিলেন আজও তিনি সত্যের অপলাপ করছেন l কারণ এলোমেলো চুলে এই ক্লাসে বসে থাকা বাচ্চাটা, রাজুর প্রতি যে স্নেহ তিনি হৃদয়ে অনুভব করছিলেন, তা' ক্লাসের অন্য বাচ্চাদের জন্য হওয়া সম্ভবই ছিলনা l পড়া বোঝানোর সময় রোজের দিনচর্চার মতো রাজুর দিকে একটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, আর রাজুও রোজের মতো মাথা নীচু করে নিলো l যখন বেশ কিছুক্ষণ পর্যন্ত মিসের ধমক বা শ্লেষাত্মক কথার কোনটাই বা সহপাঠীদের সম্মিলিত হাসির শব্দ কানে এলোনা তখন সে আচমকা মাথা উঁচু করে তাঁর দিকে চেয়ে রইলো l অপ্রত্যাশিতভাবে তার মাথা আজ মুন্ডিত, কেশহীন ছিল l
তাঁর মুখে মৃদু হাসি l তিনি রাজুকে কাছে ডাকলেন এবং প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়ে তা' আওড়াতে বললেন l
রাজু তিন-চারবার চেষ্টার পর অবশেষে বলতে পারলো l তার জবাব দেওয়ার সাথে সাথে মিস খুশি হয়ে শুধু নিজে তালি দিলেন না, বরং অন্য সব বাচ্চাদের দিয়েও দেওয়ালেন l তারপরে এটা প্রত্যেক দিনের দিনচর্চা হয়ে গেল l মিস সব উত্তর নিজের থেকে দিতেন, তারপর সস্নেহে রাজুকে বাহবা দিতেন l সব ভালো কাজের উদাহরণে রাজুর নাম বলা হতে লাগলো l ধীরে ধীরে বিষণ্ণতার কবর ফুঁড়ে রাজু বেরিয়ে আসলো l এখন থেকে আর মিসকে প্রশ্নের সাথে উত্তর বলে দেওয়ার প্রয়োজন হতোনা l সে রোজ সঠিক উত্তর দিয়ে সবাইকে প্রভাবিত করতো এবং নতুন নতুন প্রশ্ন করে হয়রানও l
তার চুলগুলো এখন অনেকটা পরিপাটি থাকত, জামাকাপড়ও যথেষ্ট পরিষ্কার থাকতো, হয়তো সে নিজেই কাচতে শুরু করেছিল l দেখতে দেখতে বছর শেষ হয়ে গেল, রাজু দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হলো l
বিদায়কালীন সমারোহে সব বাচ্চারা মিসের জন্য সুন্দর সুন্দর উপহার নিয়ে এলো আর মিসের টেবিলের ওপর একের পর এক পাহাড় জমে গেল l এত সুন্দরভাবে প্যাক করা উপহারের মধ্যে পুরানো কাগজে অগোছালো ভাবে মোড়া একটা উপহার পড়েছিলো l বাচ্চারা তাই দেখে হাসতে লাগলো l কারও জানতে বাকি রইলো না যে, উপহার হিসেবে সেটা রাজুই এনেছে l মিস উপহারের এই ছোট পাহাড় থেকে সেটা বের করে আনলেন l খুলে দেখলেন তার ভিতরে মহিলাদের আতরের অর্ধেক ব্যবহার করা একটা শিশি আর এক হাতে পরার মতো বড় একটা বালা যার বেশিরভাগ মোতি ঝরে গিয়েছিলো l মিস চুপচাপ শিশি থেকে নিজের গায়ে আতর ছিটিয়ে দিলেন এবং বালাটা হাতে পরে নিলেন l বাচ্চারা এই দৃশ্য দেখে খুব অবাক হয়ে যায়, রাজু নিজেও l শেষ পর্যন্ত রাজু থাকতে না পেরে মিসের কাছে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো l কিছুক্ষণ পর সে থমকে থমকে মিসকে বলল, "আজ আপনার গা' থেকে আমার মায়ের মতো গন্ধ আসছে l "
সময় পাখা মেলে উড়তে লাগলো l দিন সপ্তাহ মাস যায়, সময় বদলাতে আর সময় লাগেনা। কিন্তু প্রত্যেক বছরের শেষে রাজুর কাছ থেকে একটা চিঠি নিয়মিতভাবে আসতো যাতে লেখা থাকতো, "এই বছর অনেক নতুন টিচারের সংস্পর্শে এসেছি কিন্তু আপনার মতো কেউ ছিলনা l" তারপর রাজুর স্কুলপর্ব শেষ হয়ে গেল এবং চিঠির ধরাবাহিকতাও l কয়েক বছর পর মিসেরও রিটায়ার হওয়ার সময় হয়ে গেল l একদিন তাঁর নিজের মেলে রাজুর চিঠি পেলেন যাতে লেখা ছিলো, "এই মাসের শেষে আমার বিয়ে, আপনাকে ছাড়া বিয়ের কথা ভাবতে পারছিনা, আরেকটা কথা, জীবনে আমি অনেক লোকের সাথে মিশেছি, আপনার মতো কেউ নেই ...ডক্টর রাজু
সাথে প্লেনে যাওয়া আসার টিকিটও খামের মধ্যে ছিল।
মিস নিজেকে কিছুতেই আটকে রাখতে পারছিলেন না l তিনি স্বামীর থেকে অনুমতি নিয়ে অন্য শহরে যাওয়ার জন্য রওনা দিলেন l বিয়ের দিনে যখন বিয়ের আসরে উপস্থিত হলেন তখন খানিকটা দেরী হয়ে গেছিলো l তাঁর মনে হয়েছিল বিয়ের অনুষ্ঠান নিশ্চয়ই শেষ হয়ে গেছে.....কিন্তু এটা দেখে তাঁর আশ্চর্য হওয়ার সীমা ছিলনা ; শহরের বড় বড় ডাক্তার, বিজনেসম্যান, এমনকি বিয়ে দেবেন যিনি সেই পণ্ডিতজীও ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন যে এখনও কার আসা বাকি আছে ....কিন্তু রাজু বিয়ের অনুষ্ঠানের মণ্ডপের বদলে গেটের দিকে চোখ লাগিয়ে তাঁর আসার অপেক্ষা করছিলো l তারপর সবাই দেখে ছোটবেলার এই টিচার গেটের ভিতরে ঢুকতেই রাজু তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হাত ধরেছে যে হাতে তিনি এখনও সেই খারাপ হয়ে যাওয়া বালাটা পরেছিলেন ; তাঁকে সসম্মানে মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হলো l মাইক হাতে নিয়ে সে এইরকম কিছু বলল, "বন্ধুরা ! আপনারা সবাই সবসময় আমাকে আমার মায়ের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন আর আমি আপনাদের সবার কাছে প্রতিজ্ঞা করতাম যে খুব শিগগির আপনাদের সবাইকে তাঁর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো l l l ......ইনি আমার মা - ----------"
(কার্টিসি ঃআরিফুল আলম )।