ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬

সাহায্য নিয়ে বন্যাদুর্গত লোকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ সাহায্য নিয়ে বন্যাদুর্গত লোকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বন্যাদুর্গত জেলাসমূহের সকল শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর জনাব মকবুল আহমাদ আজ ৩১ জুলাই প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৮টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অথচ বন্যাদুর্গত লোকদের জন্য সরকারী সাহায্য দেয়া হয়েছে জনপ্রতি মাত্র ২১ টাকা করে।
ভারত থেকে ধেয়ে আসা বন্যার পানিতে বাংলাদেশের ১৮টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। জলপাইগুরি জেলার গজলডোবা বাঁধ, মহানন্দা নদীর ওপর দেয়া চাকমাঘাট বাঁধ, মনু নদীতে দেয়া কলসী বাঁধ ও গঙ্গা নদীর ওপরে দেয়া ফারাক্কা বাঁধের সবকটি গেট খুলে দেয়ার ফলে বন্যার পানি বাংলাদেশে ঢুকে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, শেরপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ঢাকা দক্ষিণ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর প্রভৃতি জেলায়। বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি ঘটছে। সরকারী হিসাব মতে বন্যার করাল গ্রাসে ১৪ জন এবং বেসরকারী হিসাব মতে ২৭ জন লোক নিহত হয়েছে। প্রায় ৫০ লক্ষ লোক পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার কাঁচা ঘর-বাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। ছয় শতাধিক ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। 
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ। বন্যার পানিতে জমির ফসল তলিয়ে গিয়েছে, পুকুরের মাছ ভেসে গিয়েছে, বীজতলা, শাক-সবজির আবাদী জমি, রোপা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। বন্যাদুর্গতদের মধ্যে পেটের পীড়াসহ পানিবাহিত নানা রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে। বন্যাদুর্গত মানুষ খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসা ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে হাহাকার করছে। সরকারী সাহায্য নেই।
এ অবস্থায় পানিবন্দী বন্যাদুর্গত লোকদের অতিদ্রুত উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় দান করে তাদের জন্য খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, বস্ত্র, গৃহ নির্মাণ বাবদ নগদ অর্থ, চিকিৎসা সামগ্রীসহ মেডিকেল টীম পাঠানো প্রয়োজন। দ্রুত সাহায্য সামগ্রী পাঠানোর জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বন্যদুর্গত লোকদের জন্য সাহায্য নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সকল স্বচ্ছল দানশীল ব্যক্তি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বন্যাদুর্গত অঞ্চলের সকল শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতি আমি নির্দেশ দিচ্ছি।
বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করার জন্য আমি দেশবাসী সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ আল্লাহই আমাদের যাবতীয় বিপদ-আপদ এবং বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা করতে পারেন। কাজেই আল্লাহর কাছেই আমাদের কায়মনো বাক্যে সাহায্য চাইতে হবে এবং বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একমাত্র তার কাছেই দোয়া করতে হবে। 
বন্যায় যারা নিহত হয়েছেন আমি তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও বন্যাদুর্গত লোকদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।” 

ইউজিসি’র সকল শর্ত মেনে আইআইইউসি কুমিরায় সকল একাডেমিক কার্যক্রম শুরু’ কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভায় ডঃ সোবহানী

মঞ্চে ডঃ ফরিদ আহমেদ সোবহানীসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ 
বাংলাদেশ বার্তা ৩০ জুলাই ২০১৬ ইং তারিখ শনিবারঃ আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ইউজিসির শর্ত মেনে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিশ্বাবদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম গুটিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস কুমিরাতে স্থানান্তর এবং ০১ আগষ্ট ২০১৬ থেকে কুমিরা ক্যাম্পাসে  একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। 
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডীন প্রফেসর ডঃ ফরিদ আহমেদ সোবহানী আজ কর্মকর্তাদের এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। 
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত মহিলা ও পুরুষ কর্মকর্তাদের একাংশ
সম্প্রতি হাইকোর্টের এক আদেশে দারুল ইহসান বেসরকারী বিশবিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষামন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বেসরকারী বিশবিদ্যালয় সমূহের সকল আউট ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ইউজিসির শর্ত মেনে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিশ্বাবদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম গুটিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস কুমিরাতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।  জনাব সোবহানী আরো বলেন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ০১ আগষ্ট ২০১৬ থেকে কুমিরা ক্যাম্পাসে  ছাত্র-ছাত্রীদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। 
জনাব সোবহানী ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম সম্পর্কে কিছু বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ কমিটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ফলে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চতর ডিগ্রী নিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে কোথাও কোন বাধা নেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিী নিয়ে দেশে-বিদেশে চাকুরী পেতেও কোথাও কোন রকম বাধা নেই। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ইউজিসির শর্তাবলী মেনে স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করার কারণে (*) স্টার মার্ক ও উঠে যাবে।
তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ০১ আগষ্ট ২০১৬ থেকে কুমিরা ক্যাম্পাসে  একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে; নিজ নিজ ডিপার্টমেন্টের সাথে যোগযোগ করে নিয়মিত ক্লাসে হাজির থাকার জন্য তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের আহবান জানান। 

শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০১৬

জামায়াত-বিএনপি জোট ভাঙ্গার মতলবটা বুঝতে হবে ॥ মুহাম্মদ আবদুল জব্বার॥


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা ও ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজের প্রাক্কালে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও দল মত নির্বিশেষে প্রধানমন্ত্রীকে “জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য” গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও “জাতীয় ঐক্য” গড়ে তোলার ব্যাপারে রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে তার কার্যালয়ে মতবিনিময় করেছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বিএনপিকে ‘জাতীয় ঐক্য’ গঠন করতে হলে জামায়াতকে ছেড়ে আসার আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপাররসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে জামায়াত ছাড়া প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য না আসলেও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে কেউ কেউ মনে করেন ‘জাতীয় ঐক্যে’র জন্য এটা মোক্ষম সময়। এজন্য জামায়াতকে ছাড়তে হলে তাতেও তারা রাজি। মিডিয়ার সামনে তাদের উচ্ছ্বসিত বক্তব্যে মনে হয় জামায়াত ছাড়লে তারা সহজেই ক্ষমতার নাগাল পেয়ে যাবেন!
“জামায়াত ছাড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ যুগান্তরকে বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ নয়, অনেকেই জামায়াত ছাড়ার ব্যাপারে তাদের মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ যদি লিখিতভাবে কোনো প্রস্তাব দেয় তাহলে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনে নিশ্চয় আমরা তা বিবেচনা করব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমাদের প্রধান ল্য জাতীয় ঐক্য। ধরুন, বডিটা হলো জাতি। তাতে যদি চুল লম্বা হয়ে যায় কাটতে আপত্তি নেই। নখ কাটতে আপত্তি নেই। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব। যাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি। তাতে দু’একটা ছিটেফোঁটা এদিক-সেদিক হয়ে যেতে পারে।” সুত্র : দৈনিক যুগান্তর ১৮ জুলাই, ২০১৬।
উনার সহজ সরল বক্তব্যে বুঝা যায় জামায়াত-বিএনপিকে আওয়ামী লীগ কেন দীর্ঘদিন ধরে আলাদা করতে চায় তা তিনি ভুলে গেছেন অথবা তিনি মনে করছেন ‘জাতীয় ঐক্য’ প্রতিষ্ঠিত হলে এর মাধ্যমে বহু প্রতিক্ষিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম হতে পারে। উনার মতো বিএনপিতে যারা এমন অংক কষছেন তাদের এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দূরদর্শিতা আসলে কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। দেশের সচেতন নাগরিক মাত্রই জানেন যে, আওয়ামী লীগ প্রকৃত পক্ষে যেকোন মূল্যে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার নিমিত্তে যে কোনো ছল-চাতুরি করতে পারে। সে লক্ষ্যেই তারা দেশকে বিরোধীদল শূন্য করে হাতে গোনা ক’টি গৃহপালিত বিরোধী দল বাঁচিয়ে রাখতে চায়। আর এখন সেই আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা জামায়াতকে বিএনপি থেকে কেন আলাদা করতে চাইছে তা বুঝতে বিএনপির কিছু সিনিয়র নেতাদের এখনো দেরি হচ্ছে! ওনাদের জন্য আফসোস করা ছাড়া কিইবা করার আছে?
আওয়ামী লীগের ‘জাতীয় ঐক্য’ ‘জাতীয় ঐক্য’ (!) খেলা করতে বিএনপি যত পেরেশান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তত পেরেশান নন-
“প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল, গুলশান হামলার পর জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার কথা বলছে অনেক রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এই ঐক্যের প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন কি না? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ইতিমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, যুদ্ধাপরাধ ও আগুন-সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, তাদের কথা আলাদা। এদের বাইরে যাদের মধ্যে ঐক্য দরকার, যাদের সঙ্গে ঐক্য হলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে, তাদের মধ্যে ঐক্য হয়েছে।” সুত্র : দৈনিক প্রথম আলো ১৭ জুলাই, ২০১৬।
প্রধানমন্ত্রীকে সর্বমহল থেকে জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে আহ্বানের পর এমন বক্তব্য সচেতন মহলকে হতাশ করেছে। এরপরও বিএনপি ‘জাতীয় ঐক্য’ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিএনপির ভেতরে যারা জামায়াতকে বাদ দিয়ে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়তে চান তারা কি মনে করেছেন আওয়ামীলীগ এত তাড়াতাড়ি তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের পরিবর্তন করছে বা করেছে? সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোর সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রকৃত মনোভাব সহজে অনুমেয়-
“আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের আটজন নেতার সঙ্গে কথা বলে দলটির এই চিন্তা ও উদ্যোগের কথা জানা গেছে। তাঁরা বলেন, জামায়াত ছাড়লেই বিএনপির সব বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে, এমনটা নয়। তখন প্রশ্ন আসবে, তাহলে বিএনপি কি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ও বর্তমান সরকারকে মেনে নিচ্ছে? আর সরকারকে মেনে নিলে সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালে নির্বাচন হবে, এটাও মেনে নিতে হবে। একই সঙ্গে ২০১৩-২০১৫ সালে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের বিষয়েও বিএনপিকে ভুল স্বীকার করতে হবে। এসব রাজনৈতিক হিসাব চুকে যাওয়ার পর বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভূমিকা কী হবে, সেটাও সামনে চলে আসবে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, তারা মনে করে, বিএনপিতে জামায়াত ছাড়ার আওয়াজ উঠেছে জঙ্গিবাদের বদনাম ঘোচানোর জন্য। তবে জামায়াতকে পুরোপুরি ছাড়বে না। দেশে-বিদেশে জঙ্গিবিরোধী যে মনোভাব তৈরি হয়েছে, তা থেকে বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়। এ জন্য জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগের নামে সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবিরোধী একটি জাতীয় সম্মেলন করার পরিকল্পনা করছে। তাতে হয়তো জামায়াতকে ডাকবে না, তবে সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে মতা থেকে নামানোর বিষয়টিও আলোচনায় আসবে। এই অবস্থায় বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে দলটিকে রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের সুযোগ দিতে রাজি নয় সরকার ও আওয়ামী লীগ।” সুত্র : প্রথম আলো ২৩ জুলাই, ২০১৬।
বিএনপি কি তাহলে উপরোক্ত শর্তগুলো মেনে নিচ্ছে? যেখানে দলের চেয়ারপারসনকে তার স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে লাঞ্ছিত করে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যে দল নতুন করে গুলশান এলাকায় অবৈধ স্থাপনা সরানোর নামে বিএনপির গুলশান কার্যালয় সরানোর ব্যাপারে ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার প্রদর্শন করছেনা, সে দল খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াকে মামলা-মোকাদ্দমার ফাঁদে ফেলে বিএনপিকে সর্বস্বান্ত করবেনা তার গ্যারান্টি কি?
ইতিহাস কারো অজানা নয়। একটু অতীতের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায় আওয়ামী লীগ ও বাম দলগুলো ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জামায়াতের সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। দেশে কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শুধু আওয়ামী লীগ কেন, অন্যান্য বামপন্থী দলকেও জামায়াতের সঙ্গে সংসদে ও রাজপথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক হয়ে আন্দোলন করতে দেখা গেছে। আন্দোলন নিয়ে শেখ হাসিনা ও মাওলানা নিজামীসহ দু’দলের নেতারা প্রকাশ্য দিবালোকে বৈঠক করেছেন তার প্রমাণও রয়েছে। শেখ হাসিনার সভানেত্রীত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মাওলানা নিজামীর পাশে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে বসে থাকতে দেখা গেছে সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবিতে। দেশে কেয়ারটেকার সরকার ফর্মুলা উপস্থাপনের দাবিদার জামায়াতের সঙ্গে এই ইস্যুতে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রবল গণআন্দোলন গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ধর্মনিরপেবাদী ও বামপন্থী জোটের কোনোই সমস্যা দেখা যায়নি। এখন আবার তারাই বলছে জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকারের দল! স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে যুগপৎ আন্দোলনের সময় কি তারা ভুলে গিয়েছিল জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী? আর এখন সেই জামায়াতকে নেতৃত্বশূণ্য করতেই আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা একের পর জামায়াত নেতাদেরকে পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছে। এসব ঘটনা থেকে সহজে অনুমেয় যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য যেকোন পথ বেছে নিতে পারে।
আওয়ামী লীগ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের নামে কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠে। অথচ বিএনপি তার মিত্র শক্তির এমন দুর্দিনেও টু-শব্দ পর্যন্ত করেনি। তারা মনে করেছিল যা হবার জামায়াতের হবে, তাতে আমাদের কি! আর এখন? স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য সালাউদ্দীন কাদের চেীধুরীর ফাঁসি হলো, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ড. ওসমান ফারুকের ব্যাপারে ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং ২১ জুলাই ২০১৬ একটি মামলায় হাইকোর্ট তারেক জিয়াকে ৭ বছর কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করে! এখন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলছেন তারেককে দেশে আনা হবে! এটি মনে হচ্ছে সবে মাত্র শুরু। আওয়ামী লীগ জামায়াতের সাথে যে মরণ খেলায় মেতে উঠেছে, বিএনপির সাথে তা করবেনা এর গ্যারন্টি কোথায়?
অনেকে মনে করেন, আওয়ামী লীগের ‘জাতীয় ঐক্য’র নামে জামায়াত ও বিএনপি ভাঙনের পিছনে মূল টার্গেট ভোটের রাজনীতি। কারণ ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১-এর নির্বাচনসমূহ এই বার্তা দেয় যে, বিএনপি-জামায়াত জোটবদ্ধ থাকলে বিপুল বিজয় নিশ্চিত হতে পারে। আর পৃথক হলে তার বিরূপ ফলাফল অবধারিত। পরবর্তী সময়ে এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও সাংঘাতিক সরকারি চাপ, সন্ত্রাস, কেন্দ্র দখল প্রভৃতির মধ্যেও বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা প্রভৃতি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অনেকটা সাফল্য লাভ করতে সমর্থ হয়। বিশেষ করে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত চার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের বিপুল বিজয় এর উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত। সুতরাং জামায়াত থেকে বিএনপি আলাদা হলে বিএনপির ক্ষতি কি তা সহজে অনুমেয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক । এই দলটি সবসময় সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা, অগণতান্ত্রিক ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার। নানা টোপে ফেলে সরকার জামায়াতের মাধ্যমে জোটে ভাঙন সৃষ্টি করতে অপচেষ্টা চালিয়েছে। সরকার এই অপচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েই জামায়াত নেতাদের হত্যা, জেল, জুলুম-নির্যাতনের পথ বেছে নেয়। জামায়াত মনে করে ২০ দলীয় জোটের ঐক্য দেশ ও জাতির প্রয়োজনে অটুট থাকা জরুরি। অবশ্য এজন্য জামায়াতকে অনেক চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। অনেকেই মনে করেন শুধু বিএনপি জোটের সাথে থাকার কারণেই জামায়াত দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে শীর্ষ নেতাদের হারিয়েছে। কথিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও রাজপথে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে জামায়াত ও শিবিরের অনেকে নিহত হয়েছেন, যা এখনো অব্যাহত আছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী পুলিশ ও সরকার দলীয় ক্যাডারদের আক্রমণে আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অসংখ্য কর্মী কারান্তরীণ। হাজার হাজার মিথ্যা মামলায় লাখ লাখ নেতা-কর্মী এখন ফেরারি জীবন যাপন করছেন। দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে মনে করেন জোট থেকে বেরিয়ে আসলে সরকারের জুলুম-নির্যাতন কমতে পারে। তাদের প্রশ্ন জোটে থেকে জামায়াতের লাভ কি? যেখানে সরকার জামায়াত নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা অভিযোগে হতাযজ্ঞে মেতে উঠলেও বিএনপি একটি বিবৃতিও দিতে পারেনা! অবশ্য তাদের অনেক মান-অভিমান থাকা সত্ত্বেও তারা দেশ ও জাতির প্রয়োজনে জোটে থাকা জরুরি বলে মনে করেন। তবে শুধু ভোটের রাজনীতির জন্য জোট না হয়ে নতুন করে কর্মপরিকল্পনা ও করণীয় করা জরুরি।
সচেতন মহলের অনেকে মনে করেন, জামায়াত-বিএনপি সম্পর্ক ছিন্নের কাজে যারা লিপ্ত তারা ভিন্ন কোনো পক্ষের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কাজ করছেন। আর এমন লোকদের যথাযথ ভূমিকার অভাবেই বিগত আন্দোলন সফল হতে পারেনি। সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের কারণে মাঠে অনেক তাজা ইস্যু থাকা সত্ত্বেও কার্যত এখনো সরকারবিরোধী কোনো সফল আন্দোলন ২০ দলীয় জোট গড়ে তুলতে পারেনি, কিন্তু তারপরেও দেশের চলমান নাজুক পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোট ভাঙা কোনোভাবেই সমীচীন হবেনা। এই জোটই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ত্বরান্বিত করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার শেষ ভরসা। জনগণ সরকারের অব্যাহত জুলুম-নির্যাতন ও মামলা-হামলার কারণে শুনশান নীরবতা পালন করলেও দেশের সিংহভাগ মানুষ সরকার বিরোধী মনোভাব পোষণ করছে। সফল আন্দোলন ও পরিবর্তনের জন্য হয়ত আরো কিছু কালক্ষেপণ করতে হবে, কিন্তু মনে রাখতে হবে ফ্যাসিবাদী কোনো শাসক কোনো দেশেই বেশি দিন টিকে থাকতে পারেনা। তবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগের পাতানো ফাঁদে পা দিলে দেশ ও দলের অবস্থা বিপন্ন হবে যা সহজেই অনুমেয়।
লেখকঃ সাবেক কেন্দ্রিয় সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৬

কল্যাণপুরের অভিযান নিয়ে সন্দেহ, তর্ক-বিতর্ক

".... প্রশ্ন হচ্ছে, যাদের নাম, ঠিকানা, পরিচয় এখনো পুলিশ জানে না, তাদের জঙ্গি পরিচয়, শিক্ষাগত যোগ্যতা, গুলশান হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে কীভাবে নিশ্চিত হলো পুলিশ? নিহতরা আসলে কারা?এই চার পিস্তল দিয়ে হাজার খানেক পুলিশের সঙ্গে কতক্ষণ লড়াই সম্ভব?..."
জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলের ব্লগে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে ‘কল্যাণপুরে অভিযান: আমরা যা এখনো জানি না’ শিরোনামে এক লেখায়।
বাংলাদেশের ঢাকার কল্যাণপুরে পুলিশের যৌথবাহিনীর ‘অপারেশন স্টর্ম টুয়েন্টি সিক্স’ নামে পুলিশের গভীর রাতের অভিযানে নয়জন নিহত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে এমন প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। এমন প্রেক্ষাপটে পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তার পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার জবাব সহকারে পোস্টিং দেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস লিখেছেন।
যেসব প্রশ্ন আলোচিত হচ্ছে, তার থেকে কয়েকটি উল্লেখ করে পুলিশের কর্মকর্তা মি ইসলাম পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, "নাম-ঠিকানা না জেনে জঙ্গি বলছেন কিভাবে?" "জঙ্গিরা এ রকম পাঞ্জাবি, কেডস পরে ঘুমাতে গিয়েছিল কেন?" "৪টি পিস্তল দিয়ে কিভাবে সারারাত মূর্হূ মূর্হূ গুলি চালানো সম্ভব?" "কেন তাদের জীবিত ধরা গেল না?" এ রকম অনেক যৌক্তিক প্রশ্ন কারো মনে আসতেই পারে। আমি যদি বলি আপনি বুঝে ও না বোঝার ভান করছেন আপনি খণ্ডাবেন কি করে?”
আবার পুলিশের এই অভিযানকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসামূলক অনেক পোস্টিংও এসেছে। মোস্তাফা বাবুল নামে একজন লিখেছেন, “জার্মানিতে হামলা চেষ্টাকালে পুলিশ এক জঙ্গীকে গুলি করে হত্যা করেছে। একই ঘটনা ঘটেছে আমেরিকাতেও। ফ্রান্সেও দুষ্কৃতকারীকে হত্যা করতে পুলিশ দ্বিধা করেনি। ...এসব দেশে কোনো দুষ্কৃতকারীকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করলে কেউ প্রশ্ন তুলে না। ...এসব প্রশ্ন করা যায় কেবল বাংলাদেশে। বাংলাদেশে জঙ্গিরা নির্দয়ভাবে মানুষ হত্যা করবে আর তাদেরকে হত্যা করতে পারবে না নিরাপত্তা বাহিনী। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে নিরাপত্তা বাহিনী কি করবে না করবে সেটা তাদের এখতিয়ার। এ নিয়ে পৃথিবীর কোথায়ও প্রশ্ন তোলা হয়না”।
তবে একটা বড় অংশই এই অভিযানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংশয় এবং সন্দেহ প্রকাশ করছেন। বিরোধী দল বিএনপির নেতা আসম হান্নান শাহ ‘এই অভিযানে নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে’ বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তার বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এই খবর আসে।
পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের স্ট্যাটাসে লেখেন - “গোটা সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে আলোচনা হচ্ছে যে প্রতিবেশীরা বলছে, ঐ বাসার লোকেরা সারারাতই কথিত জিহাদের স্বপক্ষে শ্লোগান দিয়েছে, তাদের রুমে কথিত আইএসের পতাকা পাওয়া গিয়েছে, প্রচুর সংখ্যক উগ্রবাদী বই-পুস্তক পাওয়া গেছে। তারপরও এরা জঙ্গি কিনা তা বোঝার জন্য কি রিসার্চের প্রয়োজন আছে?”
অভিযানটির পর পুলিশের সাফল্য নিয়ে অনেকেই লিখলেও এ বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন বিবিসি বাংলার সামাজিক ফোরামেও তুলেছেন অনেক পাঠক-শ্রোতা।
মোহাম্মদ কামাল আজমী এ সংক্রান্ত খবরের নিচে লিখেছেন “করলো গোলাগুলি, ছুঙলও গ্রেনেড, কিন্তু মরার পরে হাতে আপেল কাটার ছুরি কেন?? পুলিশের গুলিতে বুক ঝাঁঝরা হলেও,হাতের আপেল কাটা ছুরি ফেলে দেননি জঙ্গিরা..!!?”
সাইফুল্লাহ বাবু নামে আরেকজন মন্তব্য করেছেন“...পাশের ঘরেই লোকজন ছিল। তাদেরকে বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখে পুলিশ। তার মানে উপর থেকে গোলাগুলির খবর পুরাটাই বানোয়াট। আগেই ওখানে গিয়ে পুলিশ পজিশন নিয়ে ঘটনা ঘটায়। পুলিশের সাথে গোলাগুলি সত্যি হলে পাশের রুমের লোকও গুলিবিদ্ধ হতো। সেটা হয়নি”।
Image copyright bangladesh police Image caption ভবনের ভেতরে আইএস এর পতাকার ছবি পাওয়ার বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন কেউ কেউ। মানুষের এই সন্দেহ প্রকাশের বিষয়টি নিয়ে আবার সামাজিক মাধ্যেমে প্রশ্ন তুলেছেন লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক।
ফেসবুকে তার স্ট্যাটাস, “এই দেশের মানুষের হইলটা কী। তারা খালি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দেখে কেন? সকাল থেকে টেলিভিশনে আশেপাশের বাডড়র লোকেরা বলল, রাতে প্রথম পুলিশ তল্লাসি করতে যাওয়ার পর থেকেই ওরা স্লোগান দিছে, গাজি বা শহীদ হইতে চাইছে, তারপর সকালে পুলিশ অভিযান চালাইছে। সাধারণ লোকদের সাক্ষাৎকার বিভিন্ন চ্যানেলে দেখলাম। এগুলা সব বানানো? এখন বলেন, হাসান ওরফে রিগ্যানও বানানো। তার মা, বগুড়ার বাড়ি, এক বছর আগে নিখোঁজ হওয়া–– সেসবও বানানো। যেই দেশের মানুষ এত অবিশ্বাসী, তাদের সঙ্গে থাকা মানে যেই দেশে তেলঘির দর সমান সেই দেশে থাকা”।
অভিযানকে ঘিরে সন্দেহ কেন?
কিন্তু এ ধরনের একটি অভিযানের পরও তা বিশ্বাস করতে পারছে না কেন অনেক মানুষ?
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ বিবিসিকে বলেছেন, “এই সন্দেহের কারণ গুলশান হামলার পর অনেকে জঙ্গিদের অনেক বেশি ভয়ংকর ভাবতে শুরু করেছেন। সে কারণে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের এই অভিযানকে তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না”। মি রশিদ বলেন, “সাধারণ মানুষ জীবিত কাউকে ধরতে পারলে হয়তো এসব প্রশ্ন তুলতেন না। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর কৌশলই হচ্ছে কারও হাতে মারণাস্ত্র থাকলে নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের গুলি করা হবে”।
তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক হিসেবে তিনি নিজে এই অভিযানকে ‘সাজানো’ বলে মনে করেন না। স্থানীয় লোকজনের সাক্ষাতকার বা টেলিভিশন ফুটেজ দেখে সেটাই মনে হয়েছে বলে জানান।
কল্যাণপুরে নিহত নয়জনের গায়ে ‘মধ্যরাতে কালো পোশাক কেন’ এমন সন্দেহ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, গুলশানের হত্যাকান্ডের পর হামলাকারীদের আইএসএর পতাকা নিয়ে কালো পোশাক পরা ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল। এখানেও নিহতরা এ ধরনের কোনও ছবি তোলার আয়োজন করছিল বলে তিনি‘সম্ভাব্য অনুমান’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি এও বলেন, ‘হয়তো তারা সামনেই কোনও হামলার পর সেগুলো ব্যবহার করতো’। সূত্র বিবিসি।
শীর্ষ নিউজ

রাজধানীর কল্যাণপুরে কথিত জঙ্গি আস্তানায় সংঘটিত ভয়াবহ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ২৫ জুলাই দিবাগত রাতে রাজধানীর কল্যাণপুরে কথিত জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের গুলিতে ৯ জন নিহত হওয়ার ভয়াবহ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ২৬ জুলাই প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “কল্যাণপুরে সংঘটিত ভয়াবহ ঘটনায় গোটা জাতি উদ্বিগ্ন ও আতংকিত। এ ঘটনায় গোটা জাতির সাথে আমরাও উদ্বিগ্ন। 
নিহত ব্যক্তিদের সঠিক পরিচয় উদ্ঘাটন এবং আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন কথিত হাসানকে সুচিকিৎসা প্রদান করার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠার সার্বিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন যাতে তার কাছ থেকে পুলিশের দাবিকৃত সন্ত্রাসীদের সঠিক পরিচয় এবং তাদের মোটিভ জানা যায়। হাসান বেঁচে থাকলে সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনের সম্ভাবনাও বেঁচে থাকবে। এ ব্যাপারে কোন অবস্থাতেই যেন রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার অপপ্রয়াস চালানো না হয়। নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে কাজ করতে পারে। এর যে কোন ধরনের ব্যতিক্রম জাতিকে অধিকতর উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তা ও আতংকের দিকেই ঠেলে দিবে। 
অতীতের পুরনো রাজনৈতিক দোষারোপের ঘৃণিত এই প্রবণতার সাথে কেউ যাতে কোনভাবেই যুক্ত না হন, আমরা তার জন্য সকল মহলের প্রতি আহ্বান জানাই।”

বন্যাদুর্গত লোকদের সাহায্যার্থে প্রয়োজনীয় সাহায্য সামগ্রী নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জামায়াতে ইসলামীর

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ বন্যাদুর্গত লোকদের সাহায্যার্থে প্রয়োজনীয় সাহায্য সামগ্রী নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি দানশীল সচ্ছল ব্যক্তি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সংস্থা এবং বিশেষভাবে জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্ট শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 জনাব মকবুল আহমাদ বলেন, বন্যাকবলিত অঞ্চলের পানিবন্দী লোকদের জরুরী ভিত্তিতে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় দেয়া প্রয়োজন। সেই সাথে বন্যাদুর্গত লোকদের জন্য জরুরী ভিত্তিতে খাদ্য, বস্ত্র, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ ও অসুস্থদের চিকিত্সার জন্য চিকিত্সা সামগ্রীসহ চিকিত্সক দল পাঠানো এবং গৃহহীনদের জন্য গৃহ-নির্মাণ সামগ্রী পাঠানোর জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। 
সেই সাথে বন্যাদুর্গত লোকদের সাহায্যার্থে প্রয়োজনীয় সাহায্য সামগ্রী নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি দানশীল সচ্ছল ব্যক্তি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সংস্থা এবং বিশেষভাবে জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্ট শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”


মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে আমরা ঘৃণা করি : জামায়াত


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  দুটি জাতীয় পত্রিকায় ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করার জন্যই গুলশানে হামলা চালানো হয়েছে’ এবং ‘গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী চিহ্নিত’ শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্ট দুটি প্রত্যাখ্যান করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক মো: তাসনীম আলম গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট দুটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জামায়াতে ইসলামীর ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ করার হীন উদ্দেশ্যেই এ রিপোর্ট দুটি প্রকাশ করা হয়েছে। জামায়াতের মতো একটি বৈধ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা এ ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ তথ্য দিতে পারে তা আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। যদি তারা সত্যিই এ ধরনের কোনো তথ্য দিয়ে থাকে তা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। 
তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। কোনো সন্ত্রাসী হামলার সাথে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই। জামায়াত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে সবসময়ই ঘৃণা করে থাকে। গুলশান হামলার পর সেই মধ্য রাতেই জামায়াত এ ভয়াবহ হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছিল এবং এ হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের যাতে চিহ্নিত করা যায় সে জন্য হামলাকারী দুর্বৃত্তদের জীবিত গ্রেফতার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। অথচ সরকার যে নোংরা রাজনৈতিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তা দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষকে হতাশ করেছে। সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভূমিকা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা দারুণভাবে ক্ষুণœ করেছে। সরকারের এ ভূমিকায় প্রকারান্তরে প্রকৃত সন্ত্রাসী ও ঘটনার নেপথ্য নায়করা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকার আশঙ্কাই দেখা দিয়েছে।
মন্ত্রীদের বক্তব্যের প্রতিবাদ : গত ২৪ জুলাই জাতীয় প্রেস কাবে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং আওয়ামী লীগের সমাবেশে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ জামায়াতে ইসলামীকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন তার মধ্যে সত্যের লেশমাত্রও নেই। দেশে যে সব জঙ্গি ধরা পড়েছে তাদের কেউই জামায়াত করত না। বরং ধরা পড়া জঙ্গিদের অনেকেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ করত। ধরা পড়া আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের জঙ্গিদের বাঁচানোর জন্যই মন্ত্রীরা বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। বিজ্ঞপ্তি। 

সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬

পদদলিত করলেন, পেটালেন, এরপর ১০ হাজার টাকাও নিলেন

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ গাড়ি চালকের শার্ট ছেঁড়া। দেখে মনে হচ্ছে একদফা তাকে পেটানো হয়েছে। চালক মোবাইল ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলছেন। চালকের শার্ট বাম হাতে খামচে ধরে দাঁড়ানো ট্রাফিক সার্জেন্ট। ডান হাতে পকেটের কিছু একটা বের করে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক কনস্টেবলের হাতে দিলেন। তারপর চালকের ওপর শুরু করলেন চড়-থাপ্পড়। এরপর তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে বুট দিয়ে সজোরে আঘাত করে চেপে ধরলেন তার মাথা। এমন সময় প্রতিবাদ করতে করতে এগিয়ে এলেন চারপাশের মানুষ। তারা সেই ট্রাফিক সার্জেন্টকে টেনে সরালেন খানিকটা।
এমন এক দৃশ্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। এক মিনিট ২১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছে শনিবার রাত সাড়ে ১০টায়। এরপর থেকে তা দেখা হয়েছে লক্ষাধিকবার। আর শেয়ার হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি। ইন্টারনেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ট্রাফিক সার্জেন্টের নিষ্ঠুরতার এই চিত্র। সাধারণ মানুষ পুলিশের এই আচরণকে ধিক্কার জানাচ্ছেন মন্তব্যের ঘরে।
গতকাল সরেজমিন অনুসন্ধান করে পাওয়া গেছে ঘটনার সত্যতা। এমনকি গাড়িচালককে পিটিয়ে থানায় নেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তবে রাতেই বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। গাড়িচালকের পক্ষ থেকে ট্রাফিক সার্জেন্টকে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা। সার্জেন্টের মোবাইল, চশমা ও ঘড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা বলে নেওয়া হয় এই টাকা। পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান এই চালক, যার নাম ইউসুফ ফরাজী।
চালক ইউসুফ ফরাজীর গাড়ির মালিক আরিফুল ইসলাম জানান, শনিবার একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল। তা মীমাংসা হয়েছে। আমরা নিজেরাই তা সমাধান করে নিয়েছি।
ঘটনার বর্ণনায় জানা গেছে, শনিবার বিকেলে মালিকের ছেলেকে নিয়ে ধানমণ্ডির ৭/এ সড়কের কেএফসি রেস্টুরেন্টে নামিয়ে দেন চালক ইউসুফ ফরাজী। এরপর গাড়িটি রাস্তার পাশে পার্কিং করেন। এ সময় ৭/এ সড়কের ট্রাফিক বক্সের সার্জেন্ট মেহেদী ইউসুফের কাছে কাগজপত্র দেখতে চান। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে চালককে বেধড়ক মারধর করেন সার্জেন্ট মেহেদী। পরে পথচারীরা এগিয়ে এলে সার্জেন্ট মেহেদী মারধরে ক্ষান্ত দিয়ে চালককে পাশের পুলিশ বক্সে নিয়ে যান। গাড়িটি রেকারিং করে নিয়ে যান ধানমণ্ডি থানায়। ইউসুফ ফরাজীকে ঢোকানো হয় থানার লকাপে। খবর পেয়ে গুলশানের বাসিন্দা গাড়ির মালিক আরিফসহ অন্যরা ছুটে আসেন থানায়। তারা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি রফাদফা করেন। সার্জেন্ট মেহেদী তার একটি মোবাইল, একটি চশমা ও একটি ঘড়ি ভেঙেছে দাবি করে ক্ষতিপূরণ চান। পরে তাকে গাড়িচালকের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে নয়টায় ধানমণ্ডি থানায় একটি জিডি নোট করা হয়। যার নম্বর ১০৫০। গতকাল দুপুরে ধানমণ্ডি ট্রাফিক বক্সে গিয়ে কথা হয় সার্জেন্ট মেহেদীর সঙ্গে। তিনি এ সময় দাবি করেন, তিনি চালক ইউসুফের কাছে কাগজপত্র চাইলে তিনি প্রথমে দিতে অস্বীকার করেন। পরে কাগজপত্র দিলেও বলেন, ‘আমার বস আপনার মতো পুলিশ সদস্যদের পকেটে রাখেন।’ তিনি এ কথা শুনে কাগজপত্র নিয়ে ট্রাফিক বক্সের দিকে এগিয়ে যান। এ সময় পেছন থেকে চালক তার শোল্ডার ব্যাজ ধরে টান দেন। তিনি ঘুরে চালককে একটি থাপ্পড় দেন।
সার্জেন্ট মেহেদী জানান, এ সময় ইউসুফ তাকে একটা ঘুষি মারেন। এতে তার চশমা ভেঙে যায়। পরে তিনি কোমরে থাকা পিস্তলটি সহকর্মীর হাতে দিয়ে চড়-থাপ্পড় দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
মাটিতে ফেলে মাথায় বুট দিয়ে চেপে ধরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাকে অ্যারেস্ট করতে চাইছিলাম। এটি আমাদের অ্যারেস্ট করার কৌশল। তবে আমি মাথায় বুট দিয়ে চেপে ধরিনি। চেপে ধরেছি ঘাড়ে, যাতে সে পালাতে না পারে। মেহেদী বলেন, এ সময় কয়েকজন লোক এগিয়ে আসেন। যাদের পরনে কোর্ট-টাই পরা ছিলো। মুখে দাড়ি ছিলো। তাদের জামায়াত-শিবিরের লোক বলে মনে হয়েছে। আমার ওপর তারা হামলার চেষ্টা করেন। পরে আমি চালককে নিয়ে থানায় যাই। গাড়িটিও রেকারিং করে থানায় নিয়ে যাই।
ধানমণ্ডি থানা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি রাতেই মীমাংসা হয়। গাড়ি চালকের পক্ষে তার লোকজন আসেন। তারা পুরো ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। রেকারিংয়ের বিল পরিশোধ করেন। এছাড়া সার্জেন্ট মেহেদীকে ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণও দেন। চালক ইউসুফ দোষ স্বীকার করে পা ধরে মাফও চান। সবকিছুই ঠিকঠাকই ছিলো। কিন্তু ফেসবুকে কে বা কারা ভিডিওটি আপলোড করে দিয়ে পরিস্থিতি উল্টে দিয়েছে।
সার্জেন্ট মেহেদীর সহকর্মীরা দাবি করেন, পুরো ঘটনার ভিডিও দেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়েছে খণ্ডিতাংশ। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এটি পূর্ব পরিকল্পিত বলে মনে করেন তারা।
এদিকে ফেসবুকে আপলোড হওয়া ভিডিও নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে পুলিশ প্রশাসনে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এমনতিইে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে গেছে। তার ওপর ট্রাফিক সার্জেন্টের এমন আচরণ এবং তার ভিডিও ছড়িয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মনে পুলিশের প্রতি বিদ্বেষ বাড়বে।
ঘটনার পর করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি দক্ষিণ) খান মোহাম্মদ রেজোয়ান বলেন, ওই ট্রাফিক সার্জেন্টকে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ট্রাফিক দক্ষিণের এডিসি সোমাকে বিষয়টি অনুসন্ধান করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সার্জেন্টের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ব্যাচে যোগ দেওয়া সার্জেন্ট মেহেদী এখনও শিক্ষানবীশ পর্যায়ে রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলায়।
উৎসঃ   বাংলা ট্রিবিউন

খুতবা নির্দিষ্ট করে নয় হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যসূচী সংশোধন করতে হবে -আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী

স্টাফ রিপোর্টার : জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, ইসলামী শিক্ষা সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকার কারণেই কিছুসংখ্যক যুবক বিপদগামী হয়ে জঙ্গিবাদের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ সমস্যা উৎরাতে জুমার খুতবা নির্দিষ্ট করে কোনো লাভ হবে না। বরং নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যসূচী সর্বাগে সংশোধন করতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা এ আহ্বানকে স্বাগত জানাই। কিন্তু স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় বর্তমান পাঠ্যসূচি পাঠদান করে জঙ্গিবাদ সমস্যার সমাধান হবে না এবং প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দেয়াও সম্ভব নয়। সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হলে শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। বর্তমান জঙ্গি সমস্যা প্রেক্ষাপটে এটা সময়ের দাবী। গতকাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ঢাকা মহানগর আয়োজিত “সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব প্রতিবাদ-সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জমিয়তের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া, মহানগর জমিয়তের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতী বশীরুল হাসান, মুফতী মাহবুবুল আলম, মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম, মাওলানা নূর মোহাম্মাদ, যুব জমিয়ত সভাপতি মাওলানা শরফুদ্দীন ইয়াহইয়া কাসেমী, ছাত্র জমিয়ত সভাপতি মুফতী নাসির উদ্দীন, যুব জমিয়ত ঢাকা মহানগর সেক্রেটারী তোফায়েল গাজালী, ছাত্র নেতা বুরহানুদ্দীন ও সুহাইল প্রমুখ। আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আরো বলেন, যুগ যুগ ধরে এদেশের লাখ-লাখ মসজিদে খতীবগণ শান্তি ও ন্যায়ের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকল সমস্যা নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। কিন্তু জঙ্গিবাদ সমস্যা উত্তরণে নির্দিষ্ট খুতবা দিয়ে খতিবদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। ফলে মুসল্লীদের কাছে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে বাধাগ্রস্ত হবে। তাই জুমার খুতবা নির্ধারণের নামে ইমাম খতীবদের হয়রানি না করে ইসলামী ভাবধারার আলোকে পাঠ্যসূচী প্রণয়ন এবং বর্তমান হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যসূচী বাতিল করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, “ইসলামের ইমেজ ক্ষুণœ করে ইসলামের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করতে গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলা চালানো হয়েছে। এসব সন্ত্রাসী কর্মকা-ে যারাই জড়িত তারা ইসলাম ও মানবতার শত্রু। এদেশের সকল শিক্ষার্থী যদি ইসলামের মর্মবাণী ভালভাবে অনুধাবন করতে পারে তাহলে তাদের কেউ আর মিস গাইড করে জঙ্গিবাদে নিতে পারবে না। তাই ইসলামভিত্তিক পাঠ্যসূচি প্রণয়নে সরকারকে দ্রুত প্রদক্ষেপ নিতে হবে। সৌজন্যে:দৈনিক ইনকিলাব

তুরস্কের সঙ্কটকালে এরদোগানের পাশে আবদুল্লাহ গুল

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল: ফাইল ছবি
বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল। তুরস্কের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার অবদান অপরিসীম। ফলে রাজনীতি থেকে অবসর নিলেও এই সঙ্কটময় মুহূর্তে তিনি ক্ষমতাসীন ডেভলপমেন্ট এন্ড জাস্টিস পার্টি’র (একেপি) পাশে দাঁড়িয়েছেন। 
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান, প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম, তুর্কি পার্লামেন্টের স্পিকার ইসমাঈল করামান এবং সেনাবাহিনী প্রধান হুলুসি একারে সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন। তবে ওইসব বৈঠকের মূল এজেন্ডা জানা যায়নি। খবর সিএনএন তুর্কের।
বৈঠকের পর সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল বলেছেন, ১৫ জুলাই (শুক্রবার) রাতে দেশকে এক অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা করা হয়েছিল তা ব্যর্থ হওয়ায় তুরস্কে ফের পুরানো দিন ফিরেছে। তিনি আরো বলেন, বিপদগামি সেনাদের ষড়যন্ত্র, হত্যা, রাস্তায় সংঘর্ষ ও পার্লামেন্টে বোমাবর্ষণের ঘটনা তুরস্কের জন্য এক ‘অন্ধকার দাগ’। এমন কিছু ঘটতে পারে, কেউ তা কল্পনাও করতে পারেনি। 
তিনিও এই ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফেতুল্লাহ গুলেনকেই দায়ি করেছেন। তিনি গুলেনের ‘রাষ্ট্রের মধ্যে বিকল্প রাষ্ট্রব্যবস্থা’ এর কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন তার দলের বন্ধুরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের উদ্দেশ্যে হাসিলে সফল হবেন। কোনো ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো চক্রান্তই সফল হবে না। 
এই ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনার পর তুর্কি পার্লামেন্টে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ার আলোচনাকে তিনি স্বাগত জানিয়ে বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এটা একটা গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।
ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রপতির জারি করা জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি পর গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে অনুমোদন করায় তিনি পার্লামেন্ট মেম্বারদের প্রশংসা করেন। 
রাজনীতি থেকে অবসর নিলেও তুরস্কের রাজনীতি এখনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত। তিনি সর্বদা একজন পরামর্শক হিসেবে কাজ করে আসছেন। গেল জুন মাসের নির্বাচনের আগে একটা রাজনৈতিক গুঞ্জন উঠেছিল তুরস্কের এই সাবেক প্রেসিডেন্ট ফের রাজনীতিতে আসছেন। ক্ষমতাসীন ডেভলপমেন্ট এন্ড জাস্টিস পার্টি’র (একেপি) মনোনয়ন নিয়ে তিনি হয়তো আবার সংসদে ফিরবেন এবং রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হবেন। 
সেসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আর সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশ নেব না। বরং যখনই প্রয়োজন হবে তখনই আমার চিন্তা-গবেষণা দিয়ে তাদেরকে (একেপি) সাহায্য করে যাব। সারাজীবন জাতির জন্য নি:স্বার্থভাবে কাজ করে যাব।’
কে এই আব্দুল্লাহ গুল? 
আবদুল্লাহ গুল ১৯৫০ সালের ২৯ অক্টোবর কায়সারি প্রদেশে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করে দুই বছর লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি ইউনিভার্সিতে শিক্ষকতা করেন। 
ব্যক্তি জীবনে ১৯৮০ সালে তিনি হাইরুনিসাকে বিয়ে করেন। স্ত্রী হাইরুনিসাও একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ইসলামী চিন্তাবিদ। তিনি তিন ছেলেমেয়ের জনক। 
তুরস্কের কায়সেরি এলাকা থেকে ১৯৯১, ১৯৯৫, ১৯৯৯, ২০০২ এবং ২০০৭ সালে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি ইসলামপন্থী ভার্চু পার্টিতে যোগ দেন। পরবর্তীতে তৎকালীন সরকার ভার্চু পার্টি নিষিদ্ধ করলে তার দীর্ঘদিনের মিত্র রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানসহ অন্যদের সঙ্গে মিলে ২০০১ সালে একেপি পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। 
মূলত: তার জীবনের স্মরণীয় অধ্যায় শুরু হয় ২০০১ সালে থেকেই। অতি অল্পসময়ের মধ্যেই নতুন প্রতিষ্ঠিত দলটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। দেশের মানুষ একে পার্টিকে মনে প্রাণে গ্রহণ করে নেয়। ২০০২ সাল থেকে দলটি প্রতিটি নির্বাচনে জয়লাভ করে আসছে। তিনি ২০০২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন । পরে ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশটির ১১তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেন।
এছাড়াও তিনি তুরস্কের উপ-প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। 
৬৫ বছর বয়সী এই প্রভাবশালীর নেতার সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার জন্যে বয়সটা খুব বেশি নয়। এরপরও তিনি সহকর্মীদের জায়গা করে দিতে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। তবে ২০০১ সালে যে আবদুল্লাহ গুল নিজেকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, সেই আবদুল্লাহ গুল এখনো বেশ জনপ্রিয় এবং জনগণের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র। দীর্ঘদিন একটানা দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। নেতা হিসেবে পুনরায় দলে ফিরে আসার ব্যাপারটা ২০১৪ সালের আগস্টের আগ পর্যন্ত বেশ আলোচিত হয়। ওই সময় তিনি সহকর্মীদের সাফল্য কামনা করে সুষ্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেন, তিনি আর সক্রিয় রাজনীতে ফিরবেন না। প্রয়োজনে সব সময় পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে যাবেন। 
আব্দুল্লাহ গুলের বাংলাদশে সফর 
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুলের দক্ষিন এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে ২০১০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ করেন। এর আগে তিনি ভারতে ৬ দিনের দীর্ঘ এবং সফল রাষ্ট্রীয় সফর শেষ করেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এটাই ছিল গেল ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্রপতির প্রথম সফর। এছাড়াও বিগত ১৯ বছরের মধ্যে প্রথম কোন তুর্কি রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফর এটি। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রজতজয়ন্তী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা সফরে এসেছিলেন তুরস্কের সাবেক রাষ্ট্রপতি সুলেইমান দেমিরেল। 
এর আগে তুরস্ক সফর করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান। ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির (কমসেক) ২৫তম অর্থনৈতিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। ওই সময় তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রপতির এ আমন্ত্রনে সাড়া দিয়ে আব্দুল্লাহ গুল বাংলাদেশে এসেছিলেন। সফর সঙ্গী হিসেবে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং প্রায় শ’খানেক ব্যাবসায়ী প্রতিনিধি তার সঙ্গে ছিলেন।
উৎসঃ   আরটিএনএন

মীর কাসেমের রিভিউ শুনানি পিছিয়ে ২৪ আগস্ট

নিউজ ডেস্ক : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায়ের বিরুদ্ধে মীর কাসেম আলীর করা রিভিউ (পুনর্বিবেচনার আবেদন) শুনানি পিছিয়ে ২৪ আগস্ট নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে আসামিপক্ষের এক আবেদনের শুনানি নিয়ে এ দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।
মীর কাসেম আলীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুনানির প্রস্তুতি না থাকায় দুই মাসের সময় আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন গ্রহণ করে আগামী ২৪ আগস্ট পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে রোববার বিকালে সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে কাসেম আলীর রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য আজকের কার্যতালিকার ৬৩ নম্বরে রাখা হয়। একইসঙ্গে শুনানি মুলতবির একটি আবেদনও সেখানে দেখা যায়।
মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় ৬ জুন প্রকাশের পর তা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ১৯ জুন আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এরপর রিভিউ আবেদন শুনানির দিন ধার্যের জন্য আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ জুন চেম্বার বিচারপতি বিষয়টি ২৫ জুলাই নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠায়। এর ধারাবাহিকতায় সোমবারের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় মামলাটি এল।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এরপর গত ৮ মার্চ আপিলের রায়ে ওই সাজা বহাল থাকে।
এখন রিভিউ আবেদন খারিজ হলে সরকারের সিদ্ধান্তে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে শুরু হবে ফাঁসির রায় কার্যকরের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া। অবশ্য শেষ আইনি সুযোগ হিসেবে মীর কাসেম আলী তার অপরাধ স্বীকার করে ও ক্ষমা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানাতে পারবেন। সেটি না করা হলে বা প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হলে তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝোলানোর ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকবে না।
মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে অপহরণ ও হত্যার ১১ নং অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারকের ঐক্যমতের ভিত্তিতে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এ রায় আপিলেও বহাল থাকে।
এছাড়া আরও ছয়টি অভিযোগে মোট ৫৮ বছরের কারাদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ

নাপাসহ ৫১ ওষুধ নিষিদ্ধ: জনগণকে না কেনার অনুরোধ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বেশ কয়েকটি কোম্পানির উত্পাদিত ৫১টি ওষুধের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে।
জনগণকে এসব ওষুধ না কেনার অনুরোধ করা হয়েছে।ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেশের খ্যাতিসম্পন্ন ওষুধ কোম্পানিসহ বেশ কিছু ওষুধ কোম্পানির ৫১টি ওষুধ নিষিদ্ধ করেছে। রেনাটা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো, অপসোনিন, দ্য ইবনে সিনাসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির উত্পাদিত ৫১টি ওষুধের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে।
প্যারাসিটামল, পায়োগ্লিটাজন ও রসিগ্লিটাজন গ্রুপের বাতিলকৃত
৫১টি ওষুধসমূহের উত্পাদন, ক্রয়, বিক্রয়, বিতরণ, মজুদ এবং প্রদর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জনসাধারণকে এসব ওষুধ ব্যবহার না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও লাইসেন্সিং অথরিটি (ড্রাগস) মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিষিদ্ধ ঘোষিত ওষুধসমুহ হলো রেনাটা লিমিটেড, মিরপুর ও রাজেন্দ্রপুরের প্যারাডট ট্যাবলেট, মিরপুরের পায়োগ্লিন ৩০ ট্যাবলেট স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস: এইস সফট ট্যাবলেট, টস-৩০ ট্যাবলেট, টস-৪৫ ট্যাবলেট, সেনসুলিন ২ ট্যাবলেট বেক্সিমকো ফার্মা: নাপাসফট ট্যাবলেট, পায়োগ্লিট ৩০ ট্যাবলেট, পায়োগ্লিট ৪৫ ট্যাবলেট ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল: ফিভিমেট ট্যাবলেট, পায়োজেনা ৩০ ট্যাবলেট, রোমেরল ২ ট্যাবলেট, রোমেরল ৪ ট্যাবলেট দ্য একমি ল্যাবরেটরিজ: ফাস্ট-এম ট্যাবলেট।
আরও রয়েছে: বায়োফার্মা: এসিটা সফট ট্যাবলেট, প্রিগলিট-৩০ ট্যাবলেট অপসো স্যালাইনের জিসেট ট্যাবলেট অপসোনিন ফার্মা: রেনোমেট ট্যাবলেট, পাইলো ৩০ ট্যাবলেট এসকেএফ: টেমিপ্রো ট্যাবলেট ইউনিমেড এন্ড ইউনিহেলথ: একটোস ৩০ ট্যাবলেট এসিআই লিমিটেড: ডায়াট্যাগ ৪৫ ট্যাবলেট জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস: রসিগ্লিট ২ ট্যাবলেট, রসিগ্লিট ৪ ট্যাবলেট এরিস্টোফার্মা: গ্লুকোরস ২ ট্যাবলেট, গ্লুকোরস ৪ ট্যাবলেট, গ্লুকোজন ৩০ ট্যাবলেট ডেল্টা ফার্মা: রসিট-৪ ট্যাবলেট মিল্লাত ফার্মা: পায়োট্যাব ৩০ ট্যাবলেট ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস: পায়োডার ৩০ ট্যাবলেট কেমিকো ফার্মাসিউটিক্যালস: ওগলি ৩০ ট্যাবলেট, ট্যাজন -৪ ট্যাবলেট ডক্টরস কেমিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড: পায়োজন ৩০ ট্যাবলেট অ্যালকো ফার্মা: পায়োলিট ৩০ ট্যাবলেট।
দ্য হোয়াইট হর্স ফার্মা: লিট-৩০ ট্যাবলেট আদ-দ্বীন ফার্মাসিউটিক্যালস: পিজোবেট ৩০ ট্যাবলেট নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস: ডায়াটাস ৩০ ট্যাবলেট শরীফ ফার্মাসিউটিক্যালস: প্যারামিন ট্যাবলেট, পিগজন ৩০ ট্যাবলেট সোমাটেক ফার্মাসিউটিক্যালস: একটেল-এম ট্যাবলেট লিওন ফার্মাসিউটিক্যালস: মেটেস ট্যাবলেট জিসকা ফার্মাসিউটিক্যালস: পামিক্স এম ট্যাবলেট নোভেল্টা বেস্টওয়ে ফার্মাসিউটিক্যালস: নরসফট ট্যাবলেট প্যাসিফিক ফার্মাসিউটিক্যালস: পিগ্লিট ৩০ ট্যাবলেট, রগ্লিট ৪ ট্যাবলেট মেডিমেট ফার্মা লিমিটেড: ডায়াপায়োট্যাব ৩০ ট্যাবলেট।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির ২৪৪তম সভায় এসব ওষুধের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে এসব ওষুধ নিজস্ব চ্যানেলের মাধ্যমে বাজার হতে প্রত্যাহার করে তার পরিমাণসহ অধিদপ্তরকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেজিস্ট্রেশন বাতিলকৃত ওষুধসমূহের উৎপাদন, ক্রয়-বিক্রয়, বিতরণ, মজুদ এবং প্রদর্শন সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

সুত্রঃ এনটিভি

রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৬

এরদোগানের কাছে প্রশ্ন ছিল, বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ইস্তাম্বুল এয়ারপোর্টে নামার ঝুকি কিভাবে নিলেন, যখন পরবিারের সবাই আপনার সাথে ছিল?


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ এরদোগানের কাছে প্রশ্ন ছিল,  বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ইস্তাম্বুল এয়ারপোর্টে নামার ঝুকি কিভাবে নিলেন, যখন পরবিারের সবাই আপনার সাথে ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে এরদোয়ান বলেন,

“একজন মুসলমান হিসেবে ক্বাদর বা ভাগ্যের উপর আমাদের বিশ্বাস রয়েছে। ক্বাদর আমাদের ঈমানের শর্তগুলোর অন্যতম একটি। কাজেই ভাগ্যের পরিকল্পনার মাঝে যা থাকে তাই হবে। আমি পাইলটকে বললাম, আমরা সব ধরণের রিক্স নিতে প্রস্তুত। আমার স্ত্রী, মেয়ে, নাতি-নাতনি, জামাতা আমরা একসাথে ছিলাম। আমার বডি গার্ডরাও আমার সাথে ছিল। আমি পাইলটকে বললাম, তুমি শুধু বলো ইস্তাম্বুল এয়াপোর্টে ল্যন্ড করতে পারবে কিনা? সে বললো, আমি ল্যান্ড করছি কিন্ত এই এই ঝুকি রয়েছে। এমন সময় রাণওয়ের এক দিকে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হলো, আমরা অবতরণ করলাম।
অবশ্যই, প্রত্যেক হিসাবের উপরে একটা হিসাব রয়েছে। সেটা হলো আল্লাহর হিসাব। আর আল্লাহর হিসাবের বাইরে অন্য কারো হিসাব চলে না। আর সেই হিসাব আমাদের জন্য নির্ধারিত পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে এই ভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে সেদিন।
সেখানে সেনাদের অস্ত্রের সাথে, কি লজ্জার বিষয় সেনা পোষাক পরে অস্ত্র নিয়ে হামলায় অংশ নেয়া সন্ত্রাসীদের সাথে লড়াই করে, ট্যাংকের সামনে ও নিচে পড়ে শহীদ হওয়া নারীরা ও আমার ভাইরা মৃত্যুকে ভালো বাসতে বাসতে আলিঙ্গন করেছে। মৃত্যু তাদের ভয় দেখাতে পারেনি, তারাই মৃত্যুকে ভয় দেখিয়েছে।

একদিন কি আমরা সবাই মারা যাবনা? মারা যাব, গাড়ী এক্সিডেন্টেও তুমি মারা যেতে পার। কোন পাথরের সাথে ধাক্কা খেয়েও তুমি মারা যেতে পার। হার্ট এ্যাটাকেও তুমি মারা যেতে পার। কিন্তু এরকম তেজদীপ্ত ও সম্মানিত মৃত্যু পুরোপুরি অন্যরকম ব্যাপার। সংগৃহীত

শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬

তিন কোটি ৫৪ লাখ টাকার সোনার গয়নায় মুড়ে মেয়েকে বিয়ে দিলেন ব্যবসায়ী

সন্তান স্নেহ, না কি নিছক বিত্তের প্রদর্শনী! মেয়েকে আপাদমস্তক সোনার গয়নায় মুড়ে বিয়ে দিলেন ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী। কনের অঙ্গের গয়নার মোট মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। ধনীর মেয়ের বিয়েতে সোনার অভূতপূর্ব প্রদর্শনীর সাক্ষী থাকল অন্ধ্রপ্রদেশের মন্দিরশহর তিরুপতি। স্থানীয় এক মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী প্রায় ৩ কোটি ৫৪লক্ষ টাকা মূল্যের সোনার গয়না সহ বিয়ে দিলেন একমাত্র মেয়ের। বিয়ের অনুষ্ঠানে পাত্রীর বাবার সঙ্গেও শোভা পেল কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের সোনার গয়না, যা দেখে উপস্থিত অভ্যাগতর চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম। মাথা থেকে পা, সর্বাঙ্গ সোনায় মুড়ে স্থানীয় মন্দিরের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন কনে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কন্যাদায়গ্রস্ত বাবা, যাঁর হাত ও গলাতেও ছিল সোনার গয়নার ছড়াছড়ি। হতদরিদ্র লোকালয়ের মধ্যে দিয়ে স্বর্নালী এই শোভাযাত্রা দেখে তাক লেগে যায় স্থানীয়দের। তবে কনে ও তাঁর বাবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সতর্ক ছিল পুলিশ। বিয়ের অনুষ্ঠানে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী।
 - সূত্র : এই সময় -

'একটি ক্যামেরা কিনতে ৩ কর্মকর্তা যাচ্ছেন জার্মানি'

প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম কাভারেজের জন্য এক সেট (একটি ডিজিটাল ক্যামেরা আর সেই ক্যামেরার কিছু যন্ত্রপাতি) ক্যামেরা আনতে জার্মানি যাচ্ছেন তথ্য মন্ত্রণালয় ও চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের পদস্থ তিন কর্মকর্তা।  আর এ ঘটনা নিয়ে দেশের সোশাল মিডিয়া বেশ সরগরম হয়েছে। ভাগ্যবান এই তিন কর্মকর্তা হলেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী খান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নূরুল ইসলাম ও অধিদপ্তরের উপপরিচালক শিপলু জামান।  এ বিষয়ে সোশাল মিডিয়া ফেসবুকে একজন নিজের প্রোফাইলে লিখেছেন, জ্বি আপনার-আমার টাকা দিয়েই এই বিদেশ ভ্রমণ। তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নিলুফার নাজনীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আমদানিতব্য একসেট ডিজিটাল ক্যামেরা ও সরঞ্জামাদির প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশনের জন্য তারা জার্মানিতে যাচ্ছেন। চিঠির তথ্য অনুযায়ী তাদের ব্যয়ভার আয়োজক সংস্থা (যাদের কাছ থেকে ক্যামেরা নেওয়া হচ্ছে) বহন করবে এবং এতে বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ নেই। নিলুফার নাজনীনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কমিটির অনুমোদনের পর তারা শুধু ভ্রমণের আদেশ সম্পর্কিত চিঠি ইস্যু করে থাকেন। কেন একটি ক্যামেরা আনতে তিনজন কর্মকর্তাকে জার্মানি যেতে হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর বা ডিএফপির মহাপরিচালক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী খান বিবিসিকে বলেন সংশ্লিষ্ট কম্পানি থেকে শিপমেন্টের আগে তাদের তাতে স্বাক্ষর করতে হবে। তিনি বলেন, ডিএফপি অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করছে। তার অংশ হিসেবেই ডিজিটাল সিনেমাটোগ্রাফি আনা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম কাভারেজের জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা প্রয়োজন। যাতে হাই পাওয়ার লেন্স সহ আরও অনেক আধুনিক উপকরণ থাকবে। তিনি জানান ক্যামেরার মূল অংশের দাম পড়েছে ৩৫ হাজার ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা) যেটি অনুমোদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে কর্মকর্তারা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের প্রতিনিধি ছিল। এখন তারা সেটির শিপমেন্টের আগে নিশ্চিত হবে যে সঠিক জিনিস দেওয়া হচ্ছে কি-না এবং ডিএফপির ডিজিটাইজেশনে নতুন প্রকল্পের জন্যও ধারণা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি। তারা কি প্যাকেট করছে এবং ঠিকমতো দিচ্ছে কি-না সেটাও তো দেখার বিষয় আছে। কিন্তু একটি ক্যামেরার জন্য তিনজন কর্মকর্তার যারা ক্যামেরা বিষয়ক এক্সপার্টও নন তাদের জার্মানি সফর কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএফপি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে ওই ধরনের এক্সপার্ট নেই। বরং দুই বছর কাজ করে আমাদের ধারণা সম্পর্কে আমরা আত্মবিশ্বাসী। লাইটিং, পোস্ট এডিটিং সহ নানা বিষয়ে আমরা ধারণা নেবো এই সফরে। আগের বছর দুজনকে পাঠিয়েছিলাম কিন্তু তাদের রিপোর্ট আমাকে সন্তুষ্ট করেনি। তাই ভাবলাম এবার নিজেরাই যাবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যসচিব মরতুজা আহমেদ বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এ ধরনের কার্যক্রম রয়েছে মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। তারাই মূলত এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু একটি ক্যামেরার জন্য তিনজন কর্মকর্তার জার্মানি যাওয়াটা আদৌ প্রয়োজন কি-না জানতে চাইলে তিনি ডিএফপির মহাপরিচালকের কাছ থেকে বিস্তারিত জানার পরামর্শ দেন। এদিকে সোশাল মিডিয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এই চিঠির অংশ বিশেষ ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিষয়টিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ বলছেন, 'তিনজন তো কম হয়ে যায়। পুরো বিমান নিয়েই ক্যামেরা কিনতে যাওয়া উচিত ছিল।'
 - See more at: http://www.kalerkantho.com/online/national/2016/07/21/383658#sthash.sVzwsI5Y.utgC1uXz.dpuf

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬

খুতবা চাপিয়ে দেওয়া হয়নি: ইফা

দেশের মসজিদগুলোতে পাঠানো জুমার খুতবাকে নমুনা হিসেবে উল্লেখ করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) জানিয়েছে, খুতবা কারও ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়নি, কিংবা কারও জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।
জুমার খুতবা সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের খুতবা প্রণয়ন কমিটি মঙ্গলবার এক বক্তব্যে এ কথা জানিয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের খুতবা প্রত্যাখ্যান করে গত ১৭ জুলাই হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ একে ‘ধর্মীয় বিষয়ে অবৈধ হস্তক্ষেপ’ বলে আখ্যায়িত করে তীব্র প্রতিবাদও জানিয়েছে। দেশের প্রায় সব ইসলামী রাজনৈতিক দলও এর নিন্দা জানিয়েছে বিবৃতি দেয়।
খুতবা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুহাম্মদ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘দেশের অন্যান্য মসজিদের খতিব ও ইমামগণ যাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জন্য প্রণীত খুতবা থেকে ধারণা নিয়ে খুতবা উপস্থাপন করতে পারে, এ উদ্দেশ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক দেশের বিভিন্ন মসজিদে শুধুমাত্র নমুনা হিসেবে খুতবা প্রেরণ করা হয়। উক্ত খুতবা কারও ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়নি কিংবা কারও জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।

শিবির নেতা সাইফুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার তীব্র নিন্দাঃ সরকারের পাশবিকতা ও বর্বরতা সকল সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে- ডাঃ শফিকুর রহমান


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা সাইফুল ইসলামকে পুলিশের অন্যায়ভাবে গুলি করে হত্যা করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ১৯ জুলাই প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “পুলিশ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা সাইফুল ইসলামকে অন্যায়ভাবে গুলি করে হত্যা করে দেশের আইন, সংবিধান ও মানবাধিকার চরমভাবে লংঘন করেছে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা সাইফুল ইসলামকে পুলিশ গত ৩ জুলাই নিজ বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় এবং আটক করার কথা অস্বীকার করতে থাকে। গত ১৮ জুলাই দিবাগত রাতে তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধের নাটক সাজিয়ে পুলিশ তাকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। এভাবে ছাত্র ও যুবকদের আটক করে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে সরকার গোটা ঝিনাইদহ জেলাকে এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। আজ ঝিনাইদহ জেলায় পুত্র হারা পিতা-মাতা এবং ভাই হারা ভাই-বোনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। এত মায়ের বুক খালি হওয়া সত্বেও সরকারের হৃদয়ে কোন দয়া ও করুনা হচ্ছে না। আর কত মায়ের বুক খালি হলে সরকার এ হত্যা লীলা বন্ধ করবে? সরকারের পাশবিকতা ও বর্বরতা সকল সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
এখনো ঝিনাইদহে ইসলামী ছাত্রশিবিরের যে সব নেতা-কর্মী পুলিশের হাতে বন্দী আছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান এবং সাইফুল ইসলামকে পুলিশের গুলি করে হত্যা করার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

৭ মেধাবী ছাত্রকে পুলিশ কর্তৃক গুলী করে হত্যার প্রতিবাদ বুধবার দেশব্যাপী ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ঝিনাইদহে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়, পরপর ৭ মেধাবী ছাত্রকে পুলিশকর্তৃক গুলী করে হত্যার প্রতিবাদ ও গুমকৃত নেতাদের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল বুধবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
গতকাল সোমবার দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, মিথ্যা অজুহাতে পরিকল্পিতভাবে ঝিনাইদহের নিরপরাধ মেধাবী ছাত্রদের হত্যা করে সরকার ও পুলিশ দেশে বর্বরতার নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে। বিগত কয়েকদিনে ঝিনাইদহে সরকার ও পুলিশের টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছে নিরপরাধ ৭ জন মেধাবী ছাত্র। তাদেরকে গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার ও নির্যাতনের পর রাতের আঁধারে গুলী চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের নৃশংসতা এখানেই থেমে থাকেনি। একই সাথে চলেছে সরকার, পুলিশ ও কিছু গণমাধ্যমের যৌথ প্রযোজনায় স্বীকারোক্তির সাজানো নাটক ও মিথ্যাচার। গত রোববার ঝিনাইদহে শাহিনুর রহমান ও সবুজখান নামে দুই শিবির নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ যে স্বীকারোক্তির নাটক সাজিয়েছে তা পুরোটাই বানোয়াট। এই দুইজনসহ আরো ৩ শিবির নেতাকে বহু আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সন্ধান দাবি করে পরিবার ও গত ১৬ই জুলাই ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়। পুলিশ তাদের বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করে গুম করে রেখেছিল এই নাটক সাজানোর জন্যই তা এখন পরিস্কার। এখনো পুলিশ আরও ৩ শিবির নেতাকে গ্রেপ্তারের পর গুম করে রেখেছে। এতে প্রমাণ হয় নিজেদের হত্যাযজ্ঞ আড়াল ও সংখ্যালঘু হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ছাত্রশিবিরকে টার্গেট করে যৌথ মিশনে নেমেছে সরকার ও পুলিশ। এ অত্যাচার ও নিপীড়ণ কিছুতেই মেনে নেয়া যায়না। 

নেতৃদ্বয় বলেন, ঝিনাইদহে চলমান সংখ্যালঘু হত্যাকাণ্ডের সাথে যখন জঙ্গি নিবরাসের নাম উঠে আসছে ঠিক তখনই পুলিশ নতুন স্বীকারোক্তি নাটক সাজাতে চাইছে। মূলত নিজেদের অপকর্ম থেকে দায়মুক্তির জন্যই এই স্বীকারোক্তির নাটক সাজাচ্ছে বলে জনগণ মনে করে। বিগত কয়েক মাসে কোন প্রকার যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ঝিনাইদহে প্রায় ২৭ জন নিরপরাধ ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছে। যার দায় পুলিশ কিছুতেই এড়াতে পারে না।
নেতৃদ্বয় ঝিনাইদহে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়, পরপর ৭ মেধাবী ছাত্রকে পুলিশ কর্তৃক গুলী করে হত্যার প্রতিবাদ ও গুমকৃত নেতাদের মুক্তির দাবিতে বুধবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং ছাত্রশিবিরের সকল নেতা-কর্মী, দেশপ্রেমিক জনতা ও ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এ কর্মসূচি পালন করার জন্য আহ্বান জানান।

সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬

দলীয় একচোখা রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীকে জামায়াতের আহ্বান

অনলাইন ডেক্স : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৭ জুলাই বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে “দেশে ইতোমধ্যেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়ে গেছে” মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির পরিবর্তে দোষারোপের রাজনীতি করে জাতিকে বিভক্তির দিকেই ঠেলে দিয়েছেন। 
আজ সোমবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশ-বিদেশের সচেতন মানুষ ও বুদ্ধিজীবীগণ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যে মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়ার আহবান জানানো হচ্ছে ঠিক সেই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্য জাতিকে হতাশ ও হতবাক করেছে। সেই সাথে আমরাও হতবাক হয়েছি। তার এ বক্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘জাতীয় ঐক্য ইতোমধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে।’ জাতীয় ঐক্য বলতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের কথা যদি প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে থাকেন, তাহলে তার বক্তব্য ঠিক আছে। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে যে, এর নাম জাতীয় ঐক্য নয়। প্রধানমন্ত্রী যদি দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে রাজনৈতিক দলসমূহসহ সকল শ্রেণি-পেশার লোকদের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিতেন, তাহলে তা জাতীয় ঐক্য হত। কিন্তু তার পক্ষ থেকে সকলের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানানো তো দূরে থাক, এখানেও তিনি দোষারোপের রাজনীতি করেছেন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস যেখানে আজকে জাতীয় দুর্যোগের রূপ ধারণ করেছে, দেশের কোন নাগরিক যেখানে স্বস্তিতে নেই, গোটা জাতি যেখানে আতঙ্কগ্রস্ত, সেখানে প্রধানমন্ত্রী সরকারী দল, বিরোধী দল নির্বিশেষে জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিবর্গসহ গোটা জাতির দাবি এবং প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করে কার্যতঃ জাতিকে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। জঙ্গি দমনের নামে বহুলাংশে নাটকীয়তা সৃষ্টি করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে অব্যাহতভাবে খুন করা হচ্ছে। অনেকেই গুম হয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকের ওপর সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে বিভিন্ন ঘটনার দায় স্বীকার করার জন্য মিথ্যা জবানবন্দী আদায় করা হচ্ছে। এ সমস্ত কার্যক্রম প্রকারান্তরে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদেরকেই আড়াল করা এবং আস্কারা দেয়ার শামিল। সন্ত্রাসের এ দুর্যোগ থেকে জাতিকে মুক্ত করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ দেয়ার জন্য দলীয় একচোখা রাজনীতির বৃত্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বেরিয়ে আসতেই হবে।
তিনি বলেন, আমরা তাই মনে করি, প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়ে গেছে’ বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা একেবারেই অন্যায্য ও অর্থহীন। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে আবারও অনুরোধ করবো, দলীয় দৃষ্টি ভঙ্গির ঊর্দ্ধে উঠে এবং দোষারোপের রাজনীতি থেকে বের হয়ে এসে কার্যকর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সরকারী দল, বিরোধী দল নির্বিশেষে চিন্তাশীল, বিবেকবান এবং সকল পর্যায়ের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

আগুণের উপর দাঁড়িয়ে তুরস্ক! অভ্যুত্থানের পেছনের কথা... -আবু সালেহ ইয়াহইয়া

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  তুরস্কের বর্তমান অবস্থা অনেকটা আগুন নিয়ে খেলার মতই। প্রথমে প্রচন্ড দেশপ্রেমিক আটকোটি মানুষের এই দেশটিতে আগুন লাগাতে উদ্যত হয় গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিশালী বিদ্রোহীরা। এরা সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, প্রশাসন ও সমাজে সমানভাবে প্রভাব বিস্তারে সক্ষম। এরদোগান ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে সমান ভাবে তারা প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। জনগণের সাপোর্ট না থাকায় নিজ নামে কোন রাজনৈতিক দল তারা প্রতিষ্ঠা করেনি। অথচ সরকারের ভেতরে প্যারালাল সরকার হিসেবে সব সাময় সোচ্চার ছিল তারা। এরদোগান তাদের এমন তৎপরতা আগে থেকে সহ্য এবং তাদের দাবি পুরণ করে আসলেও গেল কয়েক বছর থেকে তিনি বিভিন্ন ভাবে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন। গুলেন মুভমেন্ট নামে প্যারালাল এই শক্তি ইসলামের নামে এবং বাহ্যত ইসলামী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় মুসলিম বিশ্বের অনেকেই এই মুভমেন্টের বিরুদ্ধে পরিচালিত এরদোগানের পদক্ষেপকে সাপোর্ট করতে পারছিলেন না। এই মুভমেন্টের ব্যাপারে স্বয়ং টার্কিশদের মনের ধোয়াশাই যেন কাটছেনা। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই মুভমেন্টের মুল নেতা অনেক বছর থেকেই আমেরিকায় স্বেচ্ছায় নির্বাসনে আছেন। তার বিরুদ্ধে পরিচালিত এরদোগানের প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু এ সবে কান না দিয়ে তাদের তাদের রিক্রুটমেন্ট বন্ধ করতে গুলেন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মিডিয়া, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালগুলোর কোন কোনটি সরকারের অধীনে নিয়ে আসতে শুরু করেন এরদোগান। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে তাদের ধীরে ধীরে বরখাস্ত করতে শুরু করেন। সরকারের এই আচরণ সহ্য করতে না পেরে ২০১৩ সালে তারা সেনা ক্যু করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। গতবছর গুলেনপন্থী ২৮ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে বহিস্কার করতে উদ্যত হলে গোটা পশ্চিমা বিশ্ব এরদোগানের গলা চেপে ধরার উপক্রম করেছিল।
গুলেনপন্থীদের চুড়ান্ত আক্রমণ?
পরিস্থিতি যখন এমন, এই অবস্থায় গত ১৫ জুলাই সর্বশক্তি নিয়ে সরকারকে হটাতে উদ্ধত হয় তারা। এতে অংশ গ্রহন করে সব সেক্টরে লুকিয়ে থাকা গুলেনপন্থী সদস্যরা। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এবারও তারা এখনো সফল হতে পারেনি। তবে তাদের এবারের প্লানটি ছিল আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক গভীর ও সুদুরপ্রসারী। ক্ষমতা দখল অথবা এরদোগানকে অন্তত দুনিয়া থেকে শেষ করে দেয়া ছিল উদ্দেশ্য। কিন্তু শুরুতেই সেনা প্রধানকে কাবু করতে না পারা কিংবা এরদোগানকে এরেস্ট করতে না পারায় প্রতিটি পদক্ষেপে হোচট খায় তারা।
পাল্টা আক্রমণে এরদোগান?
স্বাভাবিক কারনেই বিদ্রোহ পরবর্তি পদক্ষেপ হিসেবে এরদোগান পাল্টা আক্রমণে ব্যস্ত এখন। এ পর্যন্ত বিদ্রোহের ভেতরের বাইরের ৬০০০ জনের মত গুলেনপন্থীদের এরেস্ট করা হয়েছে। এদের মধ্যে সেনা বাহিনীর জেনারেল পর্যায়ের অনেকেই রয়েছেন। যেহেতু এরদোগানকে শেষ করতে চেয়েছিল তারা, কাজেই এরদোগানও এখন তাদের শেষ দেখতে চাচ্ছেন।
হামলায় কি আমেরিকার হাত রয়েছে?
বিদ্রোহের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের পাশাপাশি আমেরিকায় থাকা গুলেন মুভমেন্টের প্রধান গুরু মি. গুলেনকে তুরস্কে ফিরিয়ে দিতে আমেরিকার প্রতি আহবান জানিয়েছেন এরদোগান। এ দিকে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী তার এক বক্তব্যেও এ ক্যুর সাথে আমেরিকার জড়িত থাকার ইংগিত দিয়েছেন। আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এমন অভিযোগ তুরস্কের সাথে আমেরিকার সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে। গুলেনকে ফিরিয়ে দেয়া না দেয়ার ব্যাপারে তার ও তার মুখপাত্র জন কিরবির বক্তব্যে কোন ইংগিতই দেয়নি আমেরিকা।
আমেরিকার বিমান উড়তে নিষেধাজ্ঞা
এ দিকে তুরস্কের আদানা শহরে অবস্থিত (১৯৯০ সাল থেকে) আমেরিকার বিমান ঘাটি থেকে যে কোন বিমান উঠানামার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তুরস্ক। ১৬ জুলাই এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। অন্য দিকে এ বিদ্রোহের মাঠের মাস্টার মাইন্ড হিসেবে বিবেচিত বিমান বাহিনির সাবেক কমান্ডার জেনারেল আকিন অজতুরক ১৯৯৮ থেকে ২০০০ পর্যন্ত ইসরাইলের সামরিক এটাচী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে সে সময় থেকেই তিনি অন্তরে এমন বিদ্রোহের আগুণ পুষে আসছিলেন। ঘটনার সাথে এমন ব্যক্তির জড়িত থাকার ফলেই এ বিদ্রোহের সাথে আমেরিকা ও ইসারাইলের সম্পর্ক রয়েছে, এরদোগান ও টার্কিশ জনগণের বদ্ধমুল ধারণ এমনই। আর এ ধারনাই টার্কিশ জনগণ ও সব রাজনৈতিক দলকে একত্রিত করতে পেরেছে একই মঞ্চে একই পয়েন্টে। সব গুলো মিডিয়া একযোগে সেনাদের বন্দুকের নলের সামনে জীবন বাজি রেখে সরকারকে সাপোর্ট করার মুলেও এই ধারনাই।
আশংকা কি কেটে গেছে?
ঘটনার পেছনে যারাই থাকুক সাদা চোখে দেখতে গেলে আপাতত তাদের পরাজয় হয়েছে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। যুদ্ধের মাঠে শত্রুর পরাজয় হলেও এখনই সেটাকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছেন না এরদোগান, তার দল একে পার্টি কিংবা তুরস্কের জনগণ। ১৫ জুলায়ের ঘুমহীন রাত কেটে গেলেও এখনই বিছানায় গিয়ে আরাম করার কোন ইচ্ছেই নেই টার্কিশদের। টানা ৩ য় দিনের মত এখনো তারা রাজপথে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সাহস যুগিয়ে যাচ্ছেন টার্কিশদের ভাগ্য বদলে দেয়া এক স্বপ্ন পুরুষ রেজেপ তাইয়্যেপ এরদোগানকে।
রাজপথ কেন ছাড়ছেনা টার্কিশরা?
টারকিশ জনগণ ও একে পার্টির নেতাদের ধারণা, এরদোগানকে শেষ করে দেয়াই এ হামলার পেছনের মুল কারণ।আর এ জন্যই বিদ্রোহীরা এরদোগানের অবস্থানরত হোটেল ও রাষ্ট্রপতি ভবনে বিমান থেকে বোমা হামলা করেছে কয়েক দফায়। একে পার্টির নেতারা মনে করছেন, এ ধরণের বড় হামলায় শত্রুরা কমপক্ষে তিনটি প্লান নিয়ে মাঠে নামে। সে হিসেবে তাদের এ প্লান সফল না হলেও এখন তারা বি প্লান নিয়ে কাজ করছে নিশ্চয়। অতএব, এ প্লানের মত বি প্লানও ব্যর্থ করে দিতে জনগণকে বাসা কিংবা অফিসে নয়, রাজপথেই দেখতে চান এরদোগান। সে জন্য বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছেন সরকার দলীয় নেতারা। মোবাইল টেলিকম গুলো নিয়মিত বিরতিতে জনগণকে মেসেজ পাঠাচ্ছে এরদোগানের পক্ষ থেকে। এরদোগান আজও দলীয় নেতা কর্মিদের (প্রয়োজনে) কমপক্ষে এক সপ্তাহ রাজপথে থাকার প্রস্তুতি নিতে দলীয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বুরসা শহর একে পার্টির যুব নেতা এবুবকর আরমান।
এখনো অনিরাপদ রাজধানী আংকারা
এ দিকে ইস্তাম্বুলসহ তুরস্কের সব গুলো শহর পুরোপুরি সরকারের কন্ট্রলে থাকলেও রাজধানী আংকারার ভিতরের অবস্থা এখন সরকারের পক্ষে আসে নি। প্রচুর কাজ প্রিয় টার্কিশরা বাহ্যত সব কিছুতে স্বাভাবিকতা বজায় রাখলেও আংকারা সেনা রেজিমেন্টের সব কিছু এখনো নিরাপদ মনে করছেন না সরকারী নেতারা। যার ফলে রাষ্ট্রপতি এরদোগান রাজধানীতে যেতে চাইলেও এখনো তিনি নিজ শহর ইস্তাম্বুলেই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
হেলিকপ্টার ও বিমান নিখোজের গুঞ্জন
বিদ্রোহের রাতে সেনা ও নৌবাহিনীর ব্যবহার করা বিমানগুলোর মধ্যে ২/৩ টি এবং ৪০ টিরও বেশি হিলিকপ্টার নিখোজ রয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে সরকার দলীয় নেতা কর্মিদের মাঝে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিদ্রোহীরা একে একে সারেন্ডার করলেও আংকারা রেজিমেন্টের বিদ্রোহীরা সহজেই সারেন্ডার করতে রাজি হয় নি। এক সময় এমনও শোনা গিয়েছিল যে, তারা আলোচনা করতে চায় সরকারের সাথে। কিন্তু ব্যর্থতার ষোল আনার মধ্যে পনের আনাই পুরণ হতে যাওয়া বিদ্রোহীদের সাথে আলোচনায় বসতে বড় ঠেকা পড়েছে এরদোগানের। ফলশ্রুতিতে বিদ্রোহের রাতে ভোর হওয়া পর্যন্ত আকাশেই উড়াউড়ি করেছে বিমান ও হেলিকপ্টারগুলো। পরবর্তীতে মাটিতে ল্যান্ড করে তারা সারেন্ডার করলেও সব গুলো ক্যাম্পের ভিতরে ল্যান্ড করেনি বলে কারো কারো ধারণা। একই সাথে বিদ্রোহী সেনাদের একটা ক্ষুদ্র অংশ জনগণের সাথে মিশে পালিয়ে গেছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে তুরস্কের চা বাহচেগুলোর টেবিলে। এদের মধ্যে ৮ জন একটি হেলিকপ্টারসহ পালিয়ে আশ্রয় নেয় গ্রিসে। এরদোগানের অনুরোধের এক দিনের মধ্যেই তাদের তুরস্কে ফিরিয়ে দেবার প্রক্রিয়া শুরু করেছে গ্রীস সরকার।
গুলেনপন্থীদের পুরোপুরি নির্মুল করতে পারবেন কি এরদোগান?
ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরে গৃহীত এরদোগানের পদক্ষেপ দেখে মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতে গুলেনপন্থীদের আর কোন সুযোগ করে দিতে মোটেই রাজি নয় এরদোগান সরকার। আর এ উদ্দেশ্যেই সব গুলো সেক্টরেই গুলেন পন্থীদের খোজে বের করতে দিন রাত কাজ করছেন গোয়েন্দারা। কিন্তু যুগের পর যুগ ধরে বিভিন্ন সেক্টরে ঘাটি গাড়া এ শক্তির সব খবর কি জানে গোয়েন্দারা? যদি জেনেই থাকে, তাহলে এত বড় আকারের বিদ্রোহের কোন অাঁচই করতে পারে নি কেন গোয়েন্দারা? তাছাড়া বিদ্রোহের রাতে প্রথম পদক্ষেপগুলো ব্যর্থ হওয়ায় অভ্যুত্থানটি সফল হবে না বুঝতে পেরে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন রেজিমেন্ট, বিমান ও নৌ বাহিনীর অনেকেই তখন সুর পাল্টে ' আমরা বিদ্রোহের সাথে নেই' বলেন নি এটা কে বলতে পারে? তার চেয়েও বড় আশংকার বিষয় হচ্ছে, টার্কিশদের ধারণা অনুযায়ী এ ঘটনার পেছনে আমেরিকা ও ইসরাইলের হাত কি নেই?? যদি থেকেই থাকে তাহলে এরদোগান সরকারের " গুলেনপন্থীদের শেষ দেখে ছাড়া"র শেষ কি বসে বসে দেখতে থাকবে আমেরিকা ইসরাইল গং? আপাতত করার কিছু নেই মনে হলেও গোটা মুসলিম বিশ্বকে জাহান্নামে পরিণত করতে প্রয়াসী এই অপশক্তি যে হাল ছেড়ে পরাজয় মেনে নেবে না এটা সহজেই অনুমেয়। তাই যদি হয় তাহলে ছবির মত সুন্দর, গোছালো, সবুজে সবুজে ভরা, একাধিক নবি-সাহাবির জন্ম ও কবর ধারণ কারী মুসলিম মিল্লাতের প্রত্যাশার কেন্দ্রভুমির ভাগ্যে কি অপেক্ষা করছে কে জানে।
অবস্থাদৃষ্টে তুরস্ককে আগুনের উপর দাড়িয়ে আছে মনে হলেও নো রিটার্ণ ওয়ে'তে দ্রুত বেগে ছুটতে থাকা তুরস্কের স্বপ্ন পুরুষ এরদোগান যদি এ দফায় শতভাগ জয়ী হতে পারেন, তাহলে এটিই হবে নির্যাতিত মুসলিম বিশ্বের জন্য এ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় সুসংবাদ।