ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

কারাগারে আল্লামা সাঈদীকে যেমন দেখেছি -মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত


বাংলাশে বার্তাঃ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আসা আর নির্যাতনের শিকার হয়ে যে দুঃখ কষ্ট ও যাতনার শিকার হয়েছি তা অনেকাংশে লাঘব হয় জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ হয়ে। ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে বন্দী আছেন বিশ্ববরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ২০১১ সালে আমি যখন প্রথম কারাবন্দী হই তখন কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কোর্টে যাওয়ার পথে একদিন হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ হয়। তাও কয়েক সেকেন্ডের জন্য মাত্র। আমরা কোর্টে যাওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম এ সময় সাঈদী সাহেবও ট্রাইব্যুনালে যাচ্ছিলেন। কারারক্ষীদের বাধার মুখেও তখন হুজুরের সাথে সালাম বিনিময় আর মোসাফাহ করার সুযোগ পাই। তখন কেন্দ্রীয় কারাগারে বেশি কড়াকড়ি থাকায় আর সুযোগ হয়নি। আমাদের কিছু ভাই তখন ট্রাইব্যুনালে যাওয়া-আসার সময় শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সাহেবসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ লাভের আশায় কারা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বন্দীদের জন্য ব্যবস্থাকৃত মৎস্য প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেয়। উদ্দেশ্য একটাই পাশ দিয়ে নেতৃবৃন্দ যখন যাবেন তখন সালাম ও দোয়া নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। মৎস্য প্রশিক্ষণ কোর্সের কেন্দ্রটি ছিল কারাগারের মূল গেটে যাতায়াতের রাস্তার পাশেই। কিছুদিন পর বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষের নজরে এলে কারা কর্তৃপক্ষ মৎস্য প্রশিক্ষণ কোর্সে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বন্দীদের অংশগ্রহণ করা মাইকে ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেয়। কয়েকজনের ওয়ার্ড কেটে শাস্তিস্বরূপ আমদানি ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়। এত কিছুর মধ্যেও দমানো যেত না বন্দীদের। ফাঁকফোকর খুঁজে বের করে নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ ও দোয়া লাভের প্রত্যাশায় সুযোগ খুঁজে বেড়াত তারা। শুধু যে জামায়াত বা ছাত্রশিবিরের বন্দীদের মধ্যেই এই প্রবণতা ছিল তা নয় বরং সাধারণ বন্দীরাও চাইত জামায়াত নেতৃবৃন্দের সাথে একটু হ্যান্ডশ্যাক করতে, একটু বুক মেলাতে। 

২৫ মে ২০১৩ কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হই। বন্দী হওয়ার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২১ অক্টোবর ২০১৩ চালানে কাশিমপুর-১ এ আমাকে পাঠানো হয়। তখন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হুজুর কাশিমপুর-১ এর মেডিক্যাল এলাকায় ফাঁসির সেলের ৩ নম্বর কক্ষে বন্দী ছিলেন। আমার অবস্থান ছিল চিত্রা বিল্ডিংয়ের ১১ নম্বর কক্ষে। এখানে আসার পরও ব্যাকুল ছিলাম সাঈদী সাহেবের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ লাভের অপেক্ষায়। এখানেও কড়াকড়ি হুজুরের সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে। চিত্রা বিল্ডিং থেকে দূরে ছিল মেডিক্যাল ওয়ার্ড এলাকা। এই এলাকায় মেডিক্যালের একটি ওয়ার্ডের পাশেই ফাঁসির সেলে বন্দী ছিলেন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। অবশেষে কাশিমপুরে আসার প্রায় ১৫ দিন পর মেডিক্যালে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সুযোগে হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ লাভ করি। দুপুরে খাওয়ার পর তিনি একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। কয়েকটি সাদামাটা কম্বল দিয়ে মেঝেতে পাতা বিছানায় তিনি শুয়ে ছিলেন। হুজুরের সেলটির আয়তন ছিল প্রায় ১২/৫ ফিটের মতো মাত্র। আমি সালাম দিয়ে প্রবেশ করতেই তিনি উঠে বসলেন, আর আমি সামনে পাতা জায়নামাজে বসে পরিচয় দিয়ে কথা বললাম। কক্ষের ভেতরেই কোমর সমান দেয়ালে আড়াল করা টয়লেটে দেখলাম বাথ চেয়ার বসানো, কোমরে সমস্যার কারণে এই চেয়ার ব্যবহার করতে হয়। মাথার পাশে কুরআনের তাফসির আর কিছু ইসলামী সাহিত্য, জামা-কাপড়গুলো দড়িতে ঝুলানো। অন্ধকার ছোট্ট একটি কক্ষের ভেতরে বন্দী হয়ে আছেন বিশ্ববরেণ্য মুফাসসির কোটি কোটি জনতার নয়নের মণি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ভাবতেই আমার গা শিউরে উঠলো, প্রচন্ড কষ্ট নিয়েও নিজেকে সামলে নিলাম। তিনি আমাকে ভালোভাবেই চিনতে পারলেন কারণ, এর আগে কয়েকটি প্রোগ্রামে হুজুরের সাথে আমার দেখা ও কথা হয়েছিল। সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া,ঢাকার সভাপতি থাকা কালীন শহীদবাগে উনার বাসায় গিয়ে একবার দেখাও করেছিলাম। তা ছাড়া ২০০৫ সালে ঢাকা আলিয়ার সেক্রেটারি থাকা অবস্থায় ৪ এপ্রিল ছাত্রদলের সাথে সংঘর্ষে মারাত্মক আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে তিনি আমাকে দেখতে যান এবং আমার শিয়রে দাঁড়িয়ে আমার সুস্থতা কামনায় দোয়া করেন। সেই দিনটির কথাও হুজুরের স্মরণে ছিল।

কাশিমপুরে বন্দী থাকা অবস্থায় এরপরও আরো কয়েকবার সাঈদী সাহেবের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয়। ১৬ এপ্রিল ’১৪ কোর্টে যাওয়ার পথে দেখা হলে তিনি তার কক্ষ থেকে আমাদেরকে এক প্যাকেট বিস্কিট দেন কোর্টে অবস্থানকালীন খাওয়ার জন্য। কাশিমপুর-১ এর বন্দীদের কোর্টে নিয়ে যাওয়া উপলক্ষে সবাইকে মেডিক্যাল এলাকায় নিয়ে আসা হয় আর সেই সুবাদেই হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ হয়। আর হুজুর সে সময়টাতে হাঁটতে বের হন। কড়াকড়ির কারণে হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ করতে না পারা নেতাকর্মীরা নানানভাবে সুযোগ খুঁজতেন। একদিন শিবিরের এক কর্মী (মেঘনা ওয়ার্ডের) রাত ১১টার দিকে হঠাৎ বমি শুরু করে। তার অবস্থা বেগতিক দেখে রাত্রেই কারারক্ষীরা তাকে মেডিক্যাল ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়। পরদিন সুস্থ হয়ে দুপুর নাগাদ সে আবার মেঘনা ওয়ার্ডে ফিরে আসে। তার ওয়ার্ডের লোকজন কৌতূহলী হয়ে তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, সে মূলত অসুস্থ ছিল না, মুখের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে বমির ভান করেছে মাত্র, কারণ অসুস্থতা দেখালে তাকে মেডিক্যাল ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হবে। আর পরদিন ভোরে সাঈদী হুজুর যখন হাঁটতে বের হবেন তখন হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ করে দোয়া নেয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে। হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ করে দোয়া নেয়ার সুযোগ তৈরির জন্যই সে অসুস্থতার ভান করেছিল মাত্র। কারাবন্দী থাকা অবস্থায় কারা কর্তৃপক্ষের শৃঙ্খলার ব্যত্যয় সাঈদী হুজুর করতেন না। একদিন কোর্ট থেকে বিকেলে লোকজন ফেরত এলে সবাই হুজুরকে দেখে সালাম দেন। হুজুর তখন বিকেলে ফাঁসির সেলের বারান্দায় পায়চারি করছিলেন। এ সময় একজন বলে উঠল হুজুর সবাই আপনার সাথে একটু হাত মেলাতে চায়, আপনি কি একটু গেটের বাইরে আসবেন? হুজুর তখন বিনয়ের সাথে জানালেন, আপনাদের আবেগকে আমি শ্রদ্ধা করি, আপনাদের প্রতি আমার সালাম ও দোয়া থাকল, কিন্তু এই মুহূর্তে গেটের বাইরে যাওয়ার অনুমতি আমার নেই এ জন্য দুঃখিত। বন্দী থাকা অবস্থায়ও কর্তৃপক্ষের নিয়মের প্রতি তিনি এমন শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। উপজেলা নির্বাচনে হুজুরের ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী ভাই পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হলে আমি হুজুরের কাছে মিষ্টি এবং খেজুর পাঠাই। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে হুজুরের সাথে যেদিন মাসুদ সাঈদী ভাই দেখা করতে আসেন সেদিন আমার সাথেও মাসুদ সাঈদী ভাইয়ের দেখা হয়।

সর্বশেষ জামিনে ২৫ জুন’১৪ জামিনে মুক্ত হয়ে বের হওয়ার আগে ৭ জুন শনিবার বিকেল ৪টায় হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ করি। হুজুর তখন সালাতুল আসরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আমার জামিনের সংবাদটি হুজুরকে জানিয়ে সহি সালামতে মুক্তি পাওয়ার প্রত্যাশায় দোয়া চাইলাম। কারণ জেলগেটে রিঅ্যারেস্ট ছিল সাধারণ ঘটনা। এর আগেও আমি কারা ফটকে দুইবার রিঅ্যারেস্ট হয়েছিলাম। সাথে সাথেই হুজুর দোয়া করলেন, আল্লাহ যেন আমাকে বিপদমুক্ত অবস্থায় বের করে দেন এবং সহি সালামতে মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন। পাশাপাশি আমি গ্রেফতারের পর আমার বাবার স্ট্রোক করার বিষয়টি জানাই, আমার আম্মা জায়নামাজে বসে হুজুরের জন্য দোয়া করেন জানালে তিনি আব্বা এবং আম্মার জন্য আল্লাহর দরবারে উত্তম জাযাহ এবং নেক হায়াত কামনা করেন। আমি হুজুরের সাথে আমিন আমিন ধ্বনি তুলি। র্যা বের নির্যাতনে আমার কোমরে, কাঁধে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ঘটনা হুজুর প্রথম সাক্ষাতেই জেনেছিলেন তাই তিনি আমার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবরও নেন। বিশেষ করে আমার কোমরের কী অবস্থা জানতে চান। কথাবার্তার এক পর্যায়ে তরুণদের উদ্দেশে বিশেষ করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হুজুরকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করি যে কথাগুলো আমি মুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের বলতে পারবো। তিনি বলতে শুরু করলেন- “আমি নিজের জন্য কখনো চিন্তা করি না, কারণ আল্লাহ তায়ালা আমার নসিবে যা রেখেছেন তাই হবে- কিন্তু আমি সবসময় চিন্তা করি বৃহত্তর আন্দোলন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, ছাত্রীসংস্থা ও মহিলা জামায়াতকে নিয়ে। তাদের ওপর বর্তমানে যে ভয়াবহ জুলুম-নির্যাতন চলছে তা নিয়ে টেনশন করি। তিনি বলেন, রাতের আঁধারে দড়িতে ঝুলে মিথ্যা অপবাদে নয়, বরং কুরআনের ময়দানে, জিহাদের ময়দানে আমি সরাসরি শাহাদাত বরণ করতে চাই। আমি সবসময় লক্ষ লক্ষ জনতাকে সাথে নিয়ে শহীদি মৃত্যু কামনা করেছি। আমার এ কামনায় আমি কখনো ভান করিনি বরং আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকেই শহীদি মৃত্যু চেয়েছি। সাঈদী হুজুর আরো বলেন, কলিজার টুকরা সংগঠন ছাত্রশিবিরের যুবকদের জন্য আমি সবসময় দোয়া করি। যখন দেখি শিবিরের তরতাজা যুবকরা পঙ্গু হয়ে, চোখ হারিয়ে নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত হয়ে একের পর এক জেলে আসছে, ক্র্যাচ ভর দিয়ে হাঁটছে তখন আর নিজের অশ্রুকে সামলাতে পারি না। আমি দেখলাম এ কথা বলতে বলতে হুজুরের দু’চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি ঝরছে। হাত দিয়ে চোখের পানি মুচতে মুচতে তিনি বলছিলেন, আমি সবসময় দোয়া করি হে আল্লাহ! তুমি বাংলাদেশকে রক্তাক্ত মিসর বানাইয়োনা, বাংলার সবুজ জমিনকে ধর্মনিরপেক্ষাতাবাদীদের করদরাজ্যে পরিণত করো না। হুজুরের এ কথার প্রত্যুত্তরে আমি আমিন আমিন বলছি আর আমার দু’চোখ দিয়েও তখন অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল।

সাঈদী হুজুর আরো বলেন- তবে এ অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র আল্লাহপ্রেমিক যুবকরাই। তিনি রাসূল (সা)-এর একটি হাদিস উল্লেখ করে বলেন, রাসূল (সা) বলেছেন, যুবকরাই সমাজ পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার। যুবকদেরকে নিয়েই তিনি ইসলাম প্রতিষ্ঠার লড়াই করেছেন। ইসলামের প্রাথমিক যুগে ত্যাগ-তিতিক্ষার যুগে যারা ইসলাম কবুল করেছিল তাদের অধিকাংশই ছিল যুবক, তাদের অনেকেরই বয়স ছিল ৪০-এর নিচে। আর যারা ইসলামের বিরোধিতা করেছিল তারা ছিল বৃদ্ধ, ৪০-এর ঊর্ধ্বে বয়স। সাঈদী হুজুর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যুবকরা যদি যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে তাহলে একদিন বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। তিনি আরো বলেন, আমার দৃঢ়বিশ্বাস জেল জুলুম নির্যাতনের ফলে বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলন ৫০ বছর এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের ওপর দমন, নিপীড়ন, জুলুম নির্যাতন দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ এখন মক্কি যুগের শেষ অধ্যায়ে উপনীত হয়েছে। আমরা যদি ধৈর্য ধারণ করে ঈমানী শক্তিকে মজবুত করে এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য সুদিন অপেক্ষা করছে। তিনি তার লেখা ‘নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্যে’ বইটি আমাকে উপহার দেন। এরপর হুজুরের ইমামতিতে সালাতুল আসর আদায় করি। নামাজ শেষে হুজুর আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেয়ে দোয়া করেন। এরপর আমার কাঁধে ভর দিয়ে হেঁটে হেঁটে মেডিক্যাল এরিয়ার গেট পর্যন্ত এসে আমাকে বিদায় জানান আর বিদায় মুহূর্তে বলেন, ‘যাও, মুক্ত হয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়, আল্লাহ তোমাদের সহায় হবেন, ইনশাআল্লাহ। 

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হুজুর সকাল-বিকাল দু-বেলা একজনের কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করেন। তিনি নিয়মিত লেখালেখি করেন। বিছানায় বসে লিখতে লিখতে ওনার কোমর ও হাঁটুর ব্যথা বেড়ে গেছে। আমাদের পক্ষ থেকে একটি ছোট্ট টেবিলের ব্যবস্থা করা হলেও কারা কর্তৃপক্ষ ৩ মাস গেটে রেখে পরে ওনাকে দেয়া সম্ভব না জানিয়ে ফেরত দেয় টেবিলটি। শেষ দিন সাক্ষাতে ওনাকে আমি নিজ হাতে টেনে বিছানা থেকে উঠতে সাহায্য করি। তখন হুজুর আক্ষেপ করে বলছিলেন, টেবিল না থাকায় ওনার কোমর ও হাঁটু ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। স্মৃতিচারণমুলক এই লেখাটি কারাগারে থাকা অবস্থায়ই লিখেছিলাম। জানি না এখন বিশ্ববরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন, কোটি কোটি যুবকের হৃদয়স্পন্দন কুরআনের পাখি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হুজুর কারাগারে কেমন আছেন। মহান প্রভুর দরবারে দোয়া করছি আল্লাহ যেন ওনাকে মুক্ত করে আবার কুরআনের মাহফিলে ফিরিয়ে দেন, আমিন।

লেখকঃ কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

‘পরামর্শ ফি ৫০০ টাকা, কষ্ট হলে নির্ধিদ্বায় বলুন’!

বাংলাদেশ বার্তাঃ ‘চেম্বারে রোগী দেখা মানেই হাজার হাজার টাকা ভিজিট’ আপনার এমন ধারণা হয়তো পাল্টে যেতে পারে চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকলে। বাংলায় লিখা এবং মার্কার দিয়ে হাইলাইট করে টেবিলের উপরে রাখা “পরামর্শ ফি ৫০০ টাকা, কষ্ট হলে নির্ধিদ্বায় বলুন” প্রতি মঙ্গলবার গরীব রোগী ফ্রি দেখা হবে।
প্রায় পত্রপত্রিকায় বা ফেইসবুকে আমরা দেখি মানবসেবার নামে অনেক চিকিৎসক রোগীর সাথে কি আচরণ করছেন আবার আমরা অনেক ভালো ডাক্তারও দেখি তবে ভালো ডাক্তারের সংখ্যা সমাজে খুব নগণ্য! খারাপ চিকিৎসকের ভিড়ে ভালো চিকিৎসকরা হারিয়ে যায় কেউ খোঁজ রাখেও না, তারা তাদের লালিত স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে মানবসেবার কাজ চালিয়ে যান নীরবে নিভৃতে।
একটু পেছন ফিরে তাকালেই মনে পরে ছোটবেলার কথা! এসএসসি পরিক্ষায় এ প্লাস বা ভালো রিজাল্ট করলে কেউ যখন জিজ্ঞাসা করত তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও? তখন বেশিরভাগরের উত্তর "ডাক্তার হতে চাই”। অনেকেই স্বপ্ন দেখতো বড় হয়ে চিকিৎসক হবে, ভালো একজন চিকিৎসক হয়ে গরিব অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবে কিন্তু অনেকেই পারেননা তবে তারাই পারেন যারা ছোটবেলা থেকে লেখাপড়ায় সফল একমাত্র তারাই কাঙ্গিত স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেন।
চিকিৎসক হওয়ার পরে পেশা যখন চিকিৎসক হিসাবে গ্রহণ তার মধ্যে কয়জন তার ছোট বেলায় দেওয়া কথা রক্ষা করেন? অধিকাংশ চিকিৎসক বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার পরে আবেগে বলা সেই কথা আর রক্ষা করতে পারেন না কিন্তু যাদের মন ছোটবেলা থেকে গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের কষ্ট গুলো মনের বারান্দায় জায়গা দিয়েছিলেন তারাই তাদের সেই লালিত স্বপ্ন পূরণে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
আজকে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো তেমনি একজন মহান মানুষের সাথে যিনি সিলেটে দীর্ঘদিন থেকে মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। উনাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য কোন বিশেষণের দরকার আছে বলে মনে করিনা। উনার বিশেষণের স্বাক্ষর তিনি কাজের মাধ্যমে বহুবার দিয়ে রেখেছেন। ডাঃ হোসাইন আহমদ, এমবিবিএস, (সিসিডি) ডায়াবেটিস, বারডেম – ঢাকা, এম.ফিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ। বর্তমান তরুন প্রজন্মের জন্য আল্লাহর অশেষ নিয়ামত। আর্ত মানবতার সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন পাশাপাশি একজন সুচিকিৎসক গড়ার কারিগর তিনি। বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করা রোগ ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ হিসাবে চিকিৎসা সেবার কাজ শুরু করেছেন। সিঙ্গাপুর, ইন্ডিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় তিনি উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ডায়বেটিস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে তিনি ইতোমধ্যে সিলেটের চিকিৎসা জগতে নিজেকে স্বরুপে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন সেবার মাধ্যমে। সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে তিনি কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
শ্রদ্ধাভাজন ডা. হোসাইন আহমদ এখন নিয়মিত রোগী দেখছেন নগরীর রিকাবীবাজারস্থ ইবনে সিনা ডায়গনষ্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে। তিনি শুক্রবার ব্যাতিত প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রোগী দেখেন এখানেই এবং প্রতি মঙ্গলবারে গরীব রোগী ফ্রি দেখেন। “পরামর্শ ফি ৫০০ টাকা, কষ্ট হলে নির্ধিদ্বায় বলুন” লিখা সংবলিত সাইনবোর্ড টেবিলের উপরে রাখা যে কেউ চেম্বারে ঢুকলেই চোখে পড়বে। “কষ্ট হলে নির্ধিদ্বায় বলুন” এই চার শব্দের বাক্যটি মানুষকে বলে দিচ্ছে মানবতা আছে, মরে নাই। জয় হোক মানবতার, এগিয়ে যাক সিলেট ডায়াবেটিস সেন্টার, রিকাবীবাজার, সিলেট।
ডা. হোসাইন আহমদ ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভ কামনা। মহান মাবূদের দরবারে দোয়া করি তিনি যেনো আপনার কাঙ্গিত মঞ্জিলে আসীন করেন। আপনার মাধ্যমে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অসহায় মানুষের সেবা নিশ্চিত করুন। আমীন!

সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

পিলখানা ট্রাজেডি সভ্যতার ইতিহাসে কালিমা লেপন করেছে- মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া

বাংলাদেশ বার্তাঃ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বেদনা বিধূর দিন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে যে নির্মম নৃসংশ হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছিল তা ইতিহাসে নজিরবিহীন এবং সভ্য সমাজে যা কল্পনা করাও যায় না। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই এ দু’দিনে ৫৭ জন চৌকস মেধাবী ও দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তা সহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্য করা হয়েছিল এবং তাদের পরিবার পরিজনের উপর চালানো হয়েছিল নির্মম ও পাশবিক নির্যাতন যা সভ্যতার ইতিহাসে কালিমা লেপন করেছে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় গোটা জাতি স্তম্ভিত হয়েছে এবং বিশ্ববিবেক হয়েছে বিস্ময়ে বিহবল। এই ঘটনায় দেশ ও জাতির যে অপুরনীয় ক্ষতি হয়েছে তা পুরন হবার নয়। ইতিহাসের এই কলঙ্কজনক অধ্যায় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে দীর্ঘমেয়াদে হুমকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। একদিকে এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী সেনাবাহিনীকে দূর্বল করে ফেলা হয়েছে। অপরদিকে এ ঘটনার মধ্যে দিয়ে এদেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মনোবল ধ্বংস করে আমাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সীমানাকে অরক্ষিত করে দেয়া হয়েছে।


সোমবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত পিলখানা ট্রাজেডির শহীদদের স্মরণে ‘আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল’ এ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি এ্যডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, মো: ফরিদ উদ্দিন, মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য নাইমুল হক প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মন্জুরুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ইসলাম ও ইসলাম প্রিয় জনতা হচ্ছে এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবজ। বর্তমান সরকার ইসলামী চেতনাকে মুছে ফেলার পাশাপাশি ইসলামী সংগঠন ও নেতৃত্বকে নিশ্বেষ করে দিতে চায়। এজন্য আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ, সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ সহ দেশপ্রেমিক জামায়াত নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে অন্তরীণ করে রেখেছে। সরকার এ দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকেও ধ্বংস করতে চায়। এজন্যই বর্তমান আওয়ামী সরকার দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতিসত্তাবিরোধী অপতৎপরতা শুরু করেছে। নেতৃত্ব ও মেধাশূন্য করে দেশকে পরাশ্রয়ী, নতজানু ও করদরাজ্য বানানোর জন্যই জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে তাদের নিয়মিত কার্যক্রম বাদ দিয়ে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ধরপাকড় ও গুম-খুনের মহোৎসব চালাচ্ছে। ফলে চুরি-ডাকাতি, খুন-ধর্ষন বৃদ্ধি পেয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। কিন্তু সরকারের দমন-পীড়ন ও সীমাহীন ব্যর্থতার বিরুদ্ধে জনগণ যাতে কোনোভাবেই প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে সে জন্যই ক্ষমতাসীনরা দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের দেশ, জাতি ও গনতন্ত্র বিরোধী ষড়যন্ত্রের কারনে দেশ আজ অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে গনতন্ত্র চর্চার অধিকার নেই, মিছিল মিটিং সমাবেশের অধিকার নেই। সরকার বিরোধী দলের নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপ্রিয় কর্মসূচীতে হামলা করে ও মন্ত্রীদের উস্কানি মুলক বক্তব্যের মাধ্যমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পায়তারা করছে। তিনি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গনতন্ত্র পূনরুদ্ধারের দাবীতে এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার উদাত্ত আহ্বান জানান এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত জামায়াত নেতৃবৃন্দ সহ বিরোধী সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবী করেন।
ড. হেলাল উদ্দীন বলেন, পিলখানার নির্মম হত্যাযজ্ঞ কোনো তাৎক্ষণিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করার জন্য এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যে অপশক্তি দেশে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল, সেনাবাহিনীর সমান্তরালে দেশে রক্ষীবাহিনী তৈরি করে গণমানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছিল। এখনও জাতির ক্রান্তিকালীন সময়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে দূর্বল করতেই তাদেরই নীলনকশার অংশ হিসাবে পিলখানা ট্রাজেডি ঘটেছে। তিনি এই ষড়যন্ত্রের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং দেশ ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে পিলখানা হত্যাকান্ডের স্বীকার পরিবার সমূহের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে এবং নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে দ্য়ো করা হয়।।

সম্ভাবনাময় বিজ্ঞানীকে থামিয়ে দেয়া হলো : প্রশ্নপত্রে দাগ দেওয়ার এত বড় শাস্তি?


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ইচ্ছে ছিলো নাসায় কাজ করার। ৯ বার রোবোটিকসে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সে। এছাড়া সে মাইন্ড ওয়েব ডিভাইস আবিষ্কার করে আলোচনায় আসে। বিএমসি সুপার স্মার্ট বাল্ব আবিষ্কার করে পত্রিকার শিরোনামও হয়েছে। এত সব অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষের একটি সিদ্ধান্ত। আর মাত্র দুটি পরীক্ষা বাকি ছিল তার।

রসায়ন পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নে পেন্সিলের দাগ দেয়ার অপরাধে তাকে বহিষ্কার করে দেয়া হয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করেন। তবুও কাজ হয়নি কর্তৃপক্ষ তার সিদ্ধান্তে অটল থাকে। চট্টগ্রামের ঘটনা এটি। তবে যার ভাগ্যে এমনটি হয়েছে তিনি হতে পারতেন ন্যাশনাল হিরো। সামান্য অপরাধে তার শিক্ষাজীবনটাই এলোমেলো করে দেয়া হয়েছে।
ক্ষুদে এই বিজ্ঞানীর নাম তারিক আমিন চৌধুরী। চলমান মাধ্যমিক পরীক্ষায় রসায়নের প্রশ্নপত্রে দাগ দেয়ার কারণে বহিষ্কৃত তিন শিক্ষার্থীর একজন এই তারিক। স্বপ্ন ছিলো এসএসসি পরীক্ষার পর বিজ্ঞানে দেশকে আরো ভালো কিছু উপহার দেবে।
জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের জন্য অন্যরকম একটা টান তারিকের। গত বছর বিএমসি’র স্মার্ট বাল্ব নিয়ে গবেষণা করে এর বহুবিধ ব্যবহার উদ্ভাবন করে তারিক। তাকে সহায়তা করেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র শান্তনু ভট্টাচার্য। ব্লুটুথ ও ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এই বাল্বকে।
বাল্বটি যে ঘরে লাগানো হবে তার ১০ মিটার এলাকার মধ্যে কি ঘটছে সেই তথ্য আহরণ করতে পারবে। মোবাইলের স্ক্রিনে এসব যেকোন জায়গা থেকে দেখা যাবে। হোম সিকিউরিটি অর্থাৎ বাল্বে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ঘরে অপরিচিত কেউ ঢুকেছে কিনা তাও দেখা যাবে। আবার সেন্সরের মাধ্যমে আগুন ধরেছে কিনা কিংবা গ্যাস ছড়াচ্ছে কিনা দেখা যাবে। সঙ্গে অনেককিছু নিয়ন্ত্রণও করা যাবে।
তারিক ও শান্তনুর এই উদ্ভাবনে খুশি হয়ে তাদের প্রযুক্তিটি লুফে নেয় ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান বিএমসি। তাদের দুজনের সাথে চুক্তি হয়, এই বাল্বটি উন্নত করতে সব ধরনের সহায়তা করবে বিএমসি।
এর আগে ২০১৬ সালে তারিক উদ্ভাবন করে মাইন্ড ওয়েব ডিভাইস। যা মনের চিন্তাকে কাজে রূপান্তর করে। তারিকের এই উদ্ভাবনটি চট্টগ্রাম বিসিএসআইআর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা’২০১৫-এ প্রথম পুরস্কার লাভ করে। এছাড়াও যন্ত্রটি প্রদর্শন করা হয় ঢাকা বিসিএসআইআর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহে। সেখানে তৃতীয় স্থান লাভ করে তার উদ্ভাবিত যন্ত্রটি।
রোবোট নিয়ে কাজ করায় বেশ আগ্রহ তারিকের। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে রোবোটিকসে ৯ বার ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সে। প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার সুবাদে পরিচয় হয় বুয়েট ও চুয়েটের কয়েকজন প্রযুক্তিবিদের সাথে। রোবোটিকসে তার আগ্রহ ও কাজ দেখে ২০১৬ সালে তাকে রোবো ল্যাব বিডি তে জুনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৭ সালের শেষের দিকে একই পদে আলফা বাইটে যোগ দেয় সে। রোবোটিকসের বিভিন্ন প্রজেক্ট, ডেভেলপিং নিয়ে কাজ করে এসব সংগঠন।
ইউটিউবে নিজের একটি চ্যানেলও আছে তারিকের। যেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে তার বেশ কিছু ভিডিও আছে। শুধু বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে থাকে যে ছেলে, ডিবেটিংয়েও রয়েছে তার দক্ষতা। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় দুইবারের ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন এই তারিক।
ওই স্বপ্নবাজ তরুণের জীবন ওলট পালট করে দেয়া হয়েছে একটি সিদ্ধান্ত। চলতি বছর আর এসএসসি পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না তার। আর একারণে মেধাবী ওই তরুণ দেশ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে আর দেশে থাকবেন না বলে জানিয়েছে।
তারিক জানায়, ‘আমাদের তিনজনকে পরীক্ষার হল থেকে বহিষ্কার করার সাথে সাথেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। সবগুলো গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। অনেক উঁচু পদবীর কর্মকর্তাও সুপারিশ করেছেন পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে। কিন্তু কিছুই হলো না। এত কিছুর পরও যেখানে কিছু হয়নি, সেই দেশে থাকতেও ইচ্ছে করছে না। আগামী মাসেই সে আমেরিকা অথবা কানাডায় চলে যাবে সে। এমনটাই সে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, বন্দর নগরী চট্টগ্রামে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন রসায়নের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রে পেন্সিলের কালি দিয়ে দাগ দেয়ায় তিন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেন ম্যাজিস্ট্রেট। বহিষ্কৃতরা হলেন- সেন্ট প্লাসিড স্কুলের ইমাম হোসেন, তারিক আমিন চৌধুরী ও স্কলাসটিকা স্কুলের সায়মা আক্তার।
মজা না? আমরা কি অদ্ভুত তাই না? নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রে সামান্য পেন্সিলের কালি দিয়ে দাগ দেয়ায় তিন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয় আর প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দেয় বাকিরা।
একটা অখ্যাত পত্রিকায় পেলাম খবরটা। জানাতে ইচ্ছে হলো। যে আমরা কিভাবে অংকুরে জীবন গলা টিপে মেরে ফেলি। স্বপ্ন দেখা বারন আমাদের। কোচিং করান। প্রশ্ন কেনেন অভিভাবক গন। স্বপ্ন দেখা ছেলে মেয়েগুলোকে পেন্সিল দিয়ে প্রশ্ন দাগানোর অপরাধে বহিষ্কার করেন। 

রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

কক্সবাজারের চকরিয়ার বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও স্বনামধন্য আলেমে-দ্বীন মাওলানা মোজাহের আহমদের জানাযায় শোকার্ত মানুষের ঢল

বাংলাদেশ বার্তাঃ চকরিয়া আনওয়ারুল উলুম কামিল (এম.এ) মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ও শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব মাওলানা মোজাহের আহমদের জানাযার নামাযে শোকাহত মানুষের ঢল নেমেছে। এক নজরে প্রিয় হুজুরকে দেখতে হুমড়ি খেয়ে ছাত্র-শিক্ষকসহ আবাল বৃদ্ধ-বণিতারা দূর-দূরান্ত ছুটে আসেন জানাযাস্থলে। ততক্ষণে জানাযার মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এতে সর্বস্তরের জনতা অংশগ্রহণ করেছেন।
শনিবার ২৪ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে ৩টায় মাইজঘোনা পুরাতন জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মরহুমের ছেলে মাওলানা সরওয়ার আলমের ইমামতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে মরহুমের বিশাল নামাযে জানাযা।
জানাযাপূর্ব সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন মুহাদ্দিস আলহাজ্ব মাওলানা মকছুদ আহমদ, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের এমপি মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সাবেক এমপি ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, জামায়াত নেতা অধ্যাপক এনামুল হক মনজু, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলম, চকরিয়া আনওয়ারুল উলুম কামিল (এম.এ) মাদরাসার অধ্যক্ষ ও জাতীয় ইমাম সমিতি চকরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা রুহুল কুদ্দুস আনোয়ারী আল আযাহারী, রাজাখালী ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা কফিল উদ্দিন ফারুকী, খুটাখালী তমিজিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ওমর হামজা, ডুলাহাজারা মারুফিয়া সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুর রহমান আজাদ, বারবাকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা বদিউল আলম, বদরখালী এম.এস ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল বশর, সাহারবিল মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র চকরিয়া মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ হেদায়াত উল্লাহ, মাওলানা শিব্বির আহমদ ওসমানী।
মাওলানা আ.ক.ম ছাদেক, মাওলানা কফিল উদ্দিন, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম, বর্তমান চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল, এম. আবদুল মান্নান এম.এ, মাস্টার হেলাল উদ্দিন, সাইফুল্লাহ নূরী ও মরহুমের ছেলে মাওলানা সরওয়ার আলম।
বিশাল নামাযে জানাযায় উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, বরইতলী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এ.টি.এম জিয়াউদ্দীন চৌধুরী জিয়া, অধ্যক্ষ মাওলানা নূরুদ্দোজা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গসহ মরহুমের অসংখ্য ছাত্র, শুভাকাংখি ও সর্বস্তরের জনসাধারণ।
এদিকে চকরিয়ার বরেণ্য আলেমেদ্বীন মাওলানা মোজাহের আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক কামাল হোসেন আজাদ, চকরিয়া উপজেলা দক্ষিণ জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, চকরিয়ার কৃতী সন্তান কক্সবাজার শহর জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল্লাহ আল ফারুক, মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা নূরুজ্জামান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী মাওলানা মোহাম্মদ এনামুল হক প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। শোকদাতাগণ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, চকরিয়া আনওয়ারুল উলুম কামিল (এম.এ) মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ও শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব মাওলানা মোজাহের আহমদ (৭৮) দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় শাহারবিল ৫নং ওয়ার্ডস্থ মাইজঘোনা উত্তরপাড়া গ্রামের নিজ বাসভবনে ইন্তিকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে স্ত্রী, ৭ছেলে, ৩মেয়ে, শিক্ষক বন্ধু ও অগণিত ছাত্রসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান।

পিলখানা ট্রাজেডি: একটি পদানত রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র - ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম


বাংলাদেশ বার্তাঃ  আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্রাজেডির ৭ম বার্ষিকী। বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন। ২০০৯ সালের এই দিনে বিশ্বের ইতিহাসে পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে ঘটে এক মর্মান্তিক ও নৃশংস ঘটনা। পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌত্বের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। দেশ রক্ষার অতন্ত্র প্রহরী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর ও পদানত রাষ্ট্রে পরিনত করার চক্রান্ত শুরু হয়েছিল সেদিন থেকে। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার এ হত্যাযজ্ঞে জাতি হারিয়েছে ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তা, একজন সৈনিক, দুইজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ জন বিডিআর সদস্য ও ৫ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে। পিলখানায় পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তর। ঘটনার পর পিলখানা থেকে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় দারুন ভাবে। এ ঘটনায় সারাদেশের মানুষ আজও বিষ্মিত হতবাক। আজও উদ্ধার হযনি এর নেপথ্য রহস্য। উন্মোচিত হয়নি মুল ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ। তাই আজও থামেনি শহীদ পরিবারের কান্নার আওয়াজ। এখনো দাবী উঠছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের। কিন্তু কেউই জানেনা আসলে এর শেষ কোথায়! বাংলার জনগন কি জানতে পারবে ঘটনার পেছনের ইতিহাস?

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় নিহত সেনাসদস্যদের স্মরণ করা হয়। ‘শহীদ পরিবারবর্গ’ এবং ‘দেশ উই আর কনসার্নড’ নামক সংগঠন যৌথভাবে এ আয়োজন করে। স্বাগত বক্তব্যে নিহত কর্নেল কুদরত এলাহী রহমানের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন- কেন এই বর্বরোচিত হত্যাকান্ড হলো, নিহত সেনা সদস্যদের কী অপরাধ ছিল? তিনি বলেন, শহীদদের মধ্যে এমন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন, যিনি ওই দিনই অথবা মাত্র এক মাস আগে অন্য কর্মস্থল থেকে বিডিআরে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের কী অপরাধ ছিল? কারাইবা এই নৃশংসতার পরকিল্পনা করেছিল?

হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির অধীনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠিত হলে এই হত্যাকান্ডের মূল রহস্য হয়তো উন্মোচন হতো। তাই এমন একটি কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি নিহত সেনাদের স্মরণে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘শহীদ সেনা দিবস’ এবং দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করার দাবি জানান। নিহত কর্নেল এম মুজিবুল হকের স্ত্রী নেহরিন ফেরদৌস বলেন, ‘সবার মনে ধারণা জন্মেছে, আমরা সরকারের কাছ থেকে অনেক টাকা পেয়েছি। যেখানেই যাই, সবাই আমরা কেমন আছি, কী করছি, বাচ্চারা কেমন আছে সে বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস না করে আমরা কী পেয়েছি তা জানতে চায়। এটা খুবই বিব্রতকর। আমরা যা পেয়েছি তা আমাদের স্বামীর ন্যায্য টাকাটা পেয়েছি। তার চেয়ে বেশি কিছু নয়।’

নেহরিন ফেরদৌস বলেন, তাঁরা কারও কাছ থেকে সহানুভূতি চান না। সবকিছুর ঊর্ধ্বে তাঁদের একটাই চাওয়া, এই দিনটাকে বিশেষ দিবস হিসেবে পালন করা হোক। আগামী প্রজন্ম জানুক, এই দিনে এমন একটা নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল। মেজর মো. সালেহর স্ত্রী নাসরিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা আসল ঘটনাটি জানতে চাই। এত বড় একটা ঘটনা, এর পেছনে কারা ছিল, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল, বিচার আদৌ কি হলো, আমরা কিন্তু কিছুই জানি না। এসব কিছু আমরা জানতে চাই। আমাদের সন্তানেরা জানতে চায়।’

মেজর মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী রিতা রহমান বলেন, ‘২৫ ফেব্রুয়ারি যদি সরকার শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে, তাহলে হয়তো একটা কিছু পেয়েছি বলে মনে হবে। কারণ বিচার তো কী হয়েছে তা সবার দেখা। আমরা যা দেখেছি, এটা আসলে কিছু কি হলো! আচ্ছা যতটুকু দেখেছি, যা হলো তা না হয় মেনে নিলাম। মেনে নেওয়া ছাড়া এখন আর কিছু করার নেই।’ নিহত কর্নেল কুদরত এলাহী রহমানের ছেলে সাকিব রহমান বলেন, পেছনের ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো বের হয়ে আসেনি। বিচার কিন্তু তখনই হবে যখন পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা যাবে এবং তাদের আইনের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে। তিনি বলেন, ‘চার বছর ধরে আমরা একটি বিচার বিভাগীয় কমিশনের কথা বলে এসেছি। এই কমিশন তদন্ত করে জানাবে, ঘটনাটা কেনো ঘটল, কারা ঘটাল এবং সে অনুযায়ী ফৌজদারি আইনে তাদের বিচার হবে।

সাকিব রহমান বলেন, সরকারের তদন্ত প্রতিবেদনের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে স্পষ্ট করে লেখা আছে, পেছনের ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু পর্দার আড়ালেই রয়ে গেছে। তাই ষড়যন্ত্রকারীদের বের করে আনার দায়িত্বটা সরকারের ওপরই পড়ে। ( সুত্র: প্রথম আলো)

আমরাও শহীদ পরিবারের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির মাধ্যমে গোটা জাতিকে কলংক মুক্ত করা হোক । আল্লাহ তায়ালা শহীদ পরিবারকে শোক বহনের শক্তি দান করুণ। শহীদেরকে দান করুন সর্বোত্তম মর্যাদা। আমীন..

ফাতেহাতুল জান্নাত এলমিনের মৃত্যুতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার শোক প্রকাশ

বাংলাদেশ বার্তাঃ ফেনী শহরের মেধাবী ছাত্রী ফাতেহাতুল জান্নাত এলমিনের মৃত্যুতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কেন্দ্রীয় সভানেত্রী তাসলিমা মুনিরা ও সেক্রেটারী জেনারেল তুনজী বিনতে সুলতানা গভীর শোক প্রকাশ করছেন।

নেত্রীদ্বয় দুটি পৃথক পৃথক শোক বানীতে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং তার রুহের মাগফেরাতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

অনুশোচনা: সিদ্দিক আবু বকর

বাংলাদেশ বার্তাঃ  সাততলা ফ্ল্যাটের কোন এক কিচেনের ফাক গলে দুম্ করে আছড়ে পড়ল গিট্টুমারা পলিথিনের পোটলাটা। শব্দের রেশ ধরেই উপরের দিকে ঘাড় বাঁকালেন সাদিক সাহেব। কিন্তু সর্বনাশ যা হবার তা হয়ে গেছে। বহুদিনের পুরনো টিনের ছাওনি। জংধরা টিনের বেরসিক আচড়ে পলিবেগের নরম শরীর ফেড়েচিড়ে একাকার। বুঝে উঠতে না উঠতেই একগাদা আলুর খোসা, ডিমের খোল আর মুরগীর তাজা ছাল হুড়মুড়িয়ে পড়ল সাদিক সাহেবের গায় চাপানো ধবধবে জামাটায়। দেখে এখন আর বুখার উপায় নেই, জামাটা নিরেট সাদাই ছিলো। এখন ওটা যেন কোন শিল্পীর আকা দুর্বোদ্ধ পেইন্টিং। গতকালই কিনা সাবিহা শরীরের জ্বর উপেক্ষা করে ধুয়ে রেখেছিলেন জামাটা।
যতটা না মেজাজ বিগড়ালো তার চে অধিক রিরি করে উঠলো পুরো গা। সাবিহার চাপাচাপিতে সাত সকালে পেটে দেয়া ব্রেকফাস্ট যেন উদর ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে। নগরীর কাকের মতো মানুষগুলোও যে কত বেপরোয়া সাদিকের অজানা নয়। তবুও কিছু কিছু ঘটনায় তাল সামলাতে পারেন না সাদিক। আজকের বিষয়টা খুব ব্যথিত করলো তাকে। আরো তিন তিনজন নিকট প্রতিবেশীর বসবাস মহল্লায়। ভাগ্যের কী নির্মম খেয়াল, কইতরের বিষ্ঠা কিংবা বেল্কুনিতে দাঁড়িয়ে ছোট্ট শিশুর ছেড়ে দেয়া হিসুর ছিটেফোটাও স্পর্শ করে না তাদের।
চোখের সামনেই ঘটলো ব্যাপারটা। রাগে দু:খে শরীরে আগুন ধরে যায় সাবিহার। শিকার ধরা বাঘের মত কটমট করে তাকান সাদিকের দিকে। কষ্টের প্লাবন কান্না হয়ে বেরোয় সাবিহার দুচোখ বেয়ে। দাঁতে দাঁত চেপে রাগ দমাতে চান কিন্তু পারলেন না। কাপা কাপা গলায় বলে ওঠেন, "বুঝুন সাদিক সাহেব...। সততা সহমর্মিতা আর পরোপকারের মেওয়া হাল আমলে এভাবেই সম্বর্ধনা জানায়! জানতাম নগর জীবনে লোক দেখানো সৌজন্যতা রেওয়াজ কিছুটা পাল্টেছে। এতোটা যে পাল্টে গেছে আন্দাজ করিনি। আরো যে কত সৌজন্যের তেতো স্বাদ বরাতে আছে আল্লাহ মালুম।" খোসা ছেঁড়া পেয়াজের ঝাঝ মেশানো কথাগুলো সাদিকের কানে ঠিক বিছুটি পাতার মতো ঠেকলো। এ মুহুর্তে কথার পিঠে কথা আগুনে ঘি ঢালার শামিল। বুঝেই চুপ মেরে থাকলেন সাদিক সাহেব। জেদের চুলোয় বুদ্ধির পানি ঢালতেই খুব নিরবে ঘরে ঢুকে গেলেন সাবিহার অলক্ষে।অনিচ্ছায় গায় চাপালেন ঘামের অত্যাচারে ঠাসা শার্টটা। যা কিনা ধুয়ে দেবে ভেবে ময়লা কাপড়ের স্তুপে রেখেছিলেন সাবিহা।
এই জ্যামের শহরে ভাগ্যটা ভালই বলতে হয় সাদিক সাহেবের। রাস্তায় দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই পেয়ে গেলেন বাস। যুৎসই জায়গা দেখে বসে গেলেন নিরবে। মিনিট দুই যেতে না যেতেই মথা চাড়া দিয়ে ওঠলো সকালের কান্ডটা। নিজের অজান্তেই নাক কুচকালেন বার দুয়েক। সবার অলক্ষে ঘড়ের কাছটায় শুঁকে দেখতেই ব্রয়লার মুরগীর উটকো গন্ধটা ঝাপটা মেরে গেলো নাকের ডগায়। এক ধরনের অপরাধবোধে খচখচ করতে লাগলো ভিতরটা। গন্ধটা বুঝি তার শরীর বেয়ে মুহুর্তে ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো বাস্টায়। মনের অস্বস্তি কাটাতেই কি না বার কয়েক তাকালেন পাশে বসা লোকটার দিকে। আয়েশ করে খবরের কাগজ পড়ার ভাব দেখেই বুঝলেন গন্ধটন্ধ কিছু পাচ্ছে না লোকটা। আস্তে করে নেমে যায় সাদিকের বুকে চেপে বসা সন্দেহের পাথরটা । অবাক ব্যাপার তার কাছেও এখন আর গন্ধ-টন্ধ লাগছে না!
যোহরের নামায শেষে খেতে খেতেই মনে পড়লো কথাটা। গতরাতে সাবিহার কন্ঠে ভারী ভারী শোনাচ্ছিল কথাগুলো- জানো রাবুর বাপ, আজ না পাশের ফ্ল্যাটের জলিল সাহেবের মিসেস মানে রেহনুমা ভাবী এসেছিলেন।
চিনতে পাড়লেন না সাদিক। বরাবরের মতোই জিজ্ঞেস করলেন, "কোন জলিল সাহেব?"
প্রশ্ন শুনে ক্ষেপে যান সাবিহা।
- বলি... এ মহল্লার কয়জন জলিলকে চেনো তুমি?চেনো তো অফিস আর অই পড়ার টেবিল। তোমার অফিস কলিগ জলিল সাহেবের স্ত্রীর কথা বলছি। উনি আজ যুক্তিহীন বেশ কটা বাজে কথা বলে গেলেন।
- বাজে বকবেন কেনো? গায়ে পড়ে ঝগড়া বাধাতে চায় নাকি?
- ঝগড়া কী না জানিনা। তবে একটা কিছু যে বাধাতে চান, তা তার কথায় স্পষ্ট। কাল তার মেয়েকে দেখতে এসেছিলো ধানমন্ডির এক পরিবার। আমেরিকা প্রবাসী ছেলে।পিএইচডি শেষে সেখানেই সেটেল্ড। মেয়ে তাদের পছন্দ। সমস্যা অন্য জায়গায়।আমাদের জরাজীর্ণ টিনশেডই নাকি যত্ত অনিষ্টের মূল!
খানিকটা চিন্তায় পড়ে যান সাদিক। হিসেবটা ঠিক মেলাতে পারেন না। মেয়ে ওদের অথচ সমস্যা আমার টিনশেড!
- কী যে বলো রাবুর মা। রীতিমতো হাসি পাচ্ছে আমার। ওরা সাত তলার মানুষ। আর আমি...! আমার টিনশেডই কি আর ছন শেডই কি! ওরা তো আর আমার মেয়েকে নিচ্ছে না যে জাত যাবে?
- এই তো সরল মনের তরল উত্তর। জনাব, তোমার সাধের টিনশেড সাত তলার জানলা দিয়ে তাকালে সিটি কর্পোরেশনের ডাস্টবিন বলে মনে হয় ভেবে দেখেছো একবার! তোমার এ কবুতরের ছাপড়া জঞ্জালের চাইতে বেশি কিছু না।
- বাদ দাও ওসব। এতো রাতে তোমার সাথে তর্কে যেতে চাইনা। ঘুমাও দেখি। সকাল সকাল আবার অফিস দৌড়াতে হবে।
সাদিক সাহেবের এ কথায় আরো রেগে যান সাবিহা।
- সাত সকালে কেনো কেবল তোমাকেই অফিস দৌড়াতে হয়? জলিল সাহেবরা তো তোমার অফিসেই চাকরি করে। কই তারা তো তোমার মতো দৌড়ঝাপ করেন না। দৌড়ঝাপের পরও কি না লেটকামার খেতাব জোটে তোমার কপালে!
- ওদের মতো কাড়ি কাড়ি টাকা থাকেনা আমার পকেটে, যে রিক্সায় চড়ে চিপাচাপা দিয়ে চলে যাবো। আমার থাকতে হয় লোকাল বাস কৃপায়। রাজ্যের জ্যাম ঠেলে তবে না অফিস।
- রেহনুমা ভাবীর সাফ কথা। হয় তুমি ফ্ল্যাট বানাবে অন্যথায় জায়গা বেচে দেবে অদেরই কাছে। আমাদের কারণে ওদের প্রেস্টিজ হ্যাম্পার্ড হতে দেবে না। ওরা ফ্ল্যাট মালিকরা নাকি একজোট হয়েছে। 
ধৈর্য আর কুলায় না সাদিক সাহেবের। গলার স্বর স্বাভাবিকতা হারিয়ে চড়ে যায়।
- জায়গা বেচার তো প্রশ্নই আসে না। আর তুমি তো জানো সাবিহা, শহরের প্রাণকেন্দ্রে এ একচিলতে জায়গা বাপমার স্মৃতি বয়ে বেড়ায়। গলা ধরে আসে সাদিকের। ওদের বলে দিও অত দেমাগ আল্লাহ সইবে না। আরে এতো আমার অক্ষমতা নয়! এ আমার অহংকার। একই চাকরি একই সুযোগ সুবিধা! অথচ ওরা থাকে সাত তলায় আর আমি.....!
একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কি জানি কি ভেবে কিচুক্ষণের জন্য চুপ মেরে যান তিনি। নিরবতা ভাঙেন সাবিহাই।
- রাবুর বাপ আমাদের কথা না হয় বাদই দিলাম! মেয়েটার কথা ভেবেও তো ভাগে ফ্ল্যাটটা করে ফেলা যায়। তোমার প্রভিনেন্ট ফান্ড, আমার একাউন্টের যতসামান্য আর ব্যাংকলোন মিলালে তো হয়েই যায়।
- নাহ সাবিহা। অই কালোটাকার কুমিরদের সাথে তোমার ঘামের মূল্যে কেনা সঞ্চয় জেনে শুনে মেশাতে পারিনা। তুমি কী ভাবো এই নাগরিক রেসে বার বার হোচট খেতে আমারও খুব ভালো লাগে? লাগে না। কিন্তু কি আর করা...!

কি একটা ফাইলে ডুবেছিলেন সাদিক। হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলেন জলিল সাহেব। কাপাকাপা গলায় এক নিশ্বাসে বলে গেলেন কথাগুলো- ভাই সর্বনাশ হয়ে গেছে! আপনার ভাবী হাসপাতালে। তড়িঘড়ি সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে আচমকা পড়ে অজ্ঞান। প্রচুর ব্লিডিংও নাকি হয়েছে! আপনার মিসেস'ই মাত্র জানালো। হাতের ফাইল থেকে মুখ তুলে চাইলেন সাদিক সাহেব। জলিল সাহেবের অস্থিরতা বুঝতে পারলেন। 
- অস্থির হবেন না জলিল ভাই। আল্লাহ মেহেরবান। কিচ্ছু হবে না ভাবীর। আর হ্যা, আপনার যা অবস্থা। একা ছাড়ার সাহস পাচ্ছি না। চলুন বসের কাছে।

আতকে ওঠেন সাদিক সাহেব। সাবিহা পেশেন্ট বেডে কেনো? সাদিকের অস্থিরতা ভাঙেন সাবিহা নিজেই।
- প্রচন্ড ব্লিডিং হয়েছে ভাবীর। রক্তের গ্রুপ মিলে গেলো। তাই রিস্ক নিতে দিলাম না। বাইরের রক্তে আজকাল কতরকম সমস্যা।

ওটি থেকে বেরিয়ে এলেন ডাক্তার।
- সি ইজ আউট অব ডেঞ্জার। চাইলে দেখতে পারেন। পেশেন্ট ঘুমোচ্ছে, জোরে কথা বলবেন না প্লিজ। আর হ্যা অন্তত: আজকের রাতটা পেশেন্টকে এখানেই রাখতে হবে। কেউ থাকলে ভালো হয়। বুঝতেই পারছেন ফিমেল ওয়ার্ড। পুরুষ এলাও না।
জলিল সাহেবের চেহারাটা জ্বলেই দেয়াশলাইয়ের কাঠির মতো দপ করে নিভে গেলো।
- কি যে করা এখন। মেয়েটাও বাড়ি নাই। শিক্ষাসফরে রাংগামাটি।
-এতো ভাবাভাবির কিছু নাই জলিল ভাই। আমি তাও আছি।
চটজলদি অভয় দেন সাবিহা।
- আর কত ঋণে জড়াবেন ভাবী?
জলিল সাহেবের মুখের দিকে তাকান সাদিক।
-ঋণ বলছেন জলিল ভাই! কর্তব্য কেন নয়?
দীর্ঘ একটা শ্বাস ফেলেন জলিল সাহেব।
- কর্তব্যই যদি হবে সাদিক সাহেব...আমার আড়াই হাত দূরের প্রতিবেশীর জন্য তো সেটা আরো বেশী কিছু! কই রোগীর সাথে আসাতো দূরের কথা ফোনটা পর্যন্ত করলেন আপনার মিসেস!
-ওসব কিছু না। মানুষের কত রকম সমস্যা থাকতে পারে ভাই।
সাদিক আলতো করে পিঠ চাপড়ে দেন জলি সাহেবের।
জানলার কাচ গলে শেষ বিকেলের টকটকে লাল আলোটা এসে পড়ছে ঠিক ক্লান্তিতে তন্দ্রায় ঢলে পড়া সাবিহার ফর্সা গালে। জীবনের পদে পদে এতো টানাপোড়েন। তবু যেন কী এক তৃপ্তিরেখা ঝুলে থাকে সাবিহার ঠোঁটের কোণে। দৃশ্যটা রেহনুমাকে ভীষণ ভাবিয়ে তোলে।
বেশ খানিকটা সময় গড়িয়ে গেছে। রেহনুমা জেগেই আছে। জলিল সাহেবের সংসারে এমন কোন চাওয়া নেই যা পূর্ণ হয়নি রেহনুমার। একজন নারী হয়ে আরেকজন নারীর কাছে আজ কেন জানি নিজেকে বড় বেশী নি:স্ব মনে হয়। সাবিহার এতো বড়ো ত্যাগ আর অকৃত্রিম মহানুভবতার কাছে নিজেকে বড় বেশি দরিদ্র মনে হয়। রেহনুমার বুঝতে পারে ঐশ্বর্যের চাইতেও ঐশ্বর্যময় কিছু মানুষের মধ্যে থাকে যার মূল্য টাকায় পরিমাপ করা যায়না। কাল শেষ বিকেলে সাবিহাকে বলে আসা কথা গুলো যেন আজ রেহনুমার হৃদপিন্ডে বিষকাটালির মতো বিঁধছে। কৃতজ্ঞতা আর নিদারুণ অনুশোচনায় দু'চোখ বেয়ে পানি নেমে আসে রেহনুমার। চোখের পানিতে ঝাপসা হয়ে আসা দৃষ্টিও সাবিহার তৃপ্তিতে ঠাসা মুখটি দেখতে সামান্যতম কষ্ট হয় না রেহনুমার।

শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফের নামাজে জানাযা সম্পন্ন


বাংলাদেশ বার্তাঃ বিশিষ্ট আলেম দ্বীন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সাবেক আমীরে শরীয়ত, হাফেজ্জী হুজুরের জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফের নামাজে জানাযা সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার আসর নামাজের পর রাজধানীর কামরাঙ্গীচরে অবস্থিত জামিয়া নুরিয়া আশরাফাবাদে হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর কনিষ্ঠপুত্র ও খেলাফত আন্দোলনের বর্তমান আমীর আল্লামা শাহ্‌ আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর ইমামতীতে জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, এ বর্ষীয়ান আলেম আজ শুক্রবার সকাল ৭ টা৩০ মিনিটে রাজধনীর ধানমন্ডির শংকর এলাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ জামায়াতে ইসলামীর


বাংলাদেশ বার্তাঃ বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সাবেক আমীরে শরীয়ত, হাফেজ্জী হুজুরের জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আজ ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ এক শোকবাণী প্রদান করেছেন।
শোকবাণীতে তিনি বলেন, মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফের ইন্তেকালে জাতি একজন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ও জাতীয় নেতাকে হারালো। তিনি একজন উদার গণতন্ত্রমনা, দেশপ্রেমিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার ইন্তেকালে যে শূন্যতার সৃষ্টি হলো তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তার অবদানের জন্য তিনি দেশবাসীর নিকট স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। 
শোকবাণীতে তিনি আরও বলেন, মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ (রাহিমাহুল্লাহ) কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাকে নিরাপত্তা দান করুন। তাকে সম্মানিত মেহমান হিসেবে কবুল করুন ও তার কবরকে প্রশস্ত করুন। তার গুণাহখাতাগুলোকে নেকিতে পরিণত করুন। তার জীবনের নেক আমলসমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দান করুন। তিনি শোকবাণীতে তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদেরকে এ শোকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন।

শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে -শিবির সেক্রেটারি জেনারেল


বাংলাদেশ বার্তাঃ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, অব্যাহত বিকৃতিতে বাংলা ভাষা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সর্বস্তরে মাতৃভাষা প্রচলণের নিদের্শনা আজো কাগজেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। আর ভিনদেশী ভাষার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরকারের ভূমিকা রহস্যজনক। তাই বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিম আয়োজিত শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। মহানগরী সভাপতি আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্পোর্টস সম্পাদক সরওয়ার কামাল, মহানগরী সেক্রেটারি যোবাইর হোসেন রাজনসহ মহানগরী নেতৃবৃন্দ। 

তিনি বলেন, ভাষার বিকৃতি ক্রমশ বাড়ছেই। এর সাথে আর্থসামাজিক ব্যবস্থার পরিবর্তন, রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাব, শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিসহ আরও অনেক বিষয় সম্পৃক্ত। এ ছাড়া সিনেমা নাটকে বিকৃত ভাষার ব্যবহার, সম্প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত কিছু বিজ্ঞাপনের সংলাপ ভাষা বিকৃতির কারণ সমূহের অন্যতম। পার্শবর্তী দেশের টিভি চ্যানেলের অবাধ সম্প্রচারের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালালেও সরকার এ ব্যাপারে রহস্যজনক ভাবে নীরব। জাতীয় সংসদেও কথা বলার সময় অনেকেই শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণে কথা বলেন না। এভাবেই বিভিন্ন পর্যায়ে ধাপে ধাপে বিকৃতির ফলে বাংলা ভাষা তার স্বকীয়তা হারাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকার কার্যকর কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। এ জন্য উচ্চ আদালতের নিদের্শনা থাকলেও সরকার তা মানছে না। 

শিবির সেক্রেটারি আরও বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পরও সর্বস্তরে মাতৃভাষা আজ উপেক্ষিত। ভাষার জন্য জীবন দিয়েও আমরা মাতৃভাষাকে যথার্থ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। এখনো বাংলাকে রাষ্ট্রের সকল বিভাগে চালু করা সম্ভব হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ও উচ্চ শিক্ষায় বাংলা ভাষা এখনো উপেক্ষিত। রাষ্ট্রের সকল স্তরে মাতৃভাষা চালুর জন্য বার বার গণদাবি উঠলেও স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি সরকারই তা অবহেলা করে আসছে। ভাষার মাস এলে ক্ষমতাসীনরা বাংলার মর্যাদা নিয়ে উচ্চবাচ্য করলেও রাষ্ট্রীয় অবহেলা ও দীর্ঘকালের পরিক্রমায় মহান একুশের চেতনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে শাসক গোষ্ঠি। কিন্তু এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরী। বিকৃতির বলয় থেকে বাংলা ভাষাকে রক্ষা করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাতৃভাষার প্রতি অবহেলা রোধ, সর্বস্তরে বাংলা চালু এবং প্রিয় ভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাংলা ভাষার বিকাশ সাধনে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে।

মাওলানা মোস্তফা আযাদের ইন্তেকালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের গভীর শোক প্রকাশ

বাংলাদেশ বার্তাঃ মুহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহ: এর বড় ছেলে, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সাবেক আমীর, আলেমে দ্বীন, মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ ও মীরপুর আরজাবাদ মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মোস্তফা আযাদের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ শোকবার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, আজ শুক্রবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজীউন)। তার ইন্তেকালে জাতি এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালো। জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি দেশে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের প্রসার, আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করণ ও ইসলামী বিরোধী সকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ইসলাম, স্বাধীনতা ও মানুষের অধিকার রক্ষায় তিনি ছিলেন আপোষহীন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তার ভূমিকা ছিলো অত্যান্ত বলিষ্ঠ। দেশ ও জনগণের জন্য তার গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা আলেম সমাজ ও জাতি চিরকাল মনে রাখবে। তার ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।
অন্যদিকে আজ সকায় ৯টায় ইন্তেকাল করেন মীরপুর আরজাবাদ মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলান মোস্তফা আযাদ(ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজীউন)। তিনি একদিকে যেমন হাজারো ছাত্রকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন। অন্যদিকে দ্বীনের দায়ী হিসেবে ইসলামের পথে আহবানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। নাস্তিক্যবাদীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের এই সংকট কালে তাঁদের মত প্রবীণ আলেমে দ্বীনদের ইন্তেকালে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
আমরা মরহুমের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের স্মরণে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে অনলাইন ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিত অংশ গ্রহণের আহবান

বাংলাদেশ বার্তাঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, অনেক ত্যাগ ও কোরবানীর বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছি। মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয়া বিশ্ব ইতিহাসে নজীরবিহীন। কিন্তু আমরা ভাষা শহীদদের স্বপ্নপূরণে পুরোপুরি সফল হইনি। এমনকি ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস আজও জাতির কাছে অজানাই রয়ে গেছে। তাই নতুন প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির জন্যই আমরা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের স্মরণে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে অনলাইন ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিত অংশ গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ভাষা
শহীদদের স্মরণে অনলাইনভিত্তিক ‘কুইজ প্রতিযোগিতা’র উদ্বোধনকালে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম, শিবিরের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি জামিল, জামায়াত নেতা আব্দুল কাইয়ুম ও জাকির হোসেন প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল তমদ্দুন মজলিসের ব্যানারে। আর এই তমদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে দেশের আপামর ইসলামপ্রিয় তৌহিদী জনতা তাদের তাহযিব-তামুদ্দন ও মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্যই এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের অগ্রনায়ক ছিলেন অধ্যাপক গোলাম আযম। ডাকসুর তৎকালীন জিএস হিসেবে তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে তৎকালীন সরকারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ক্ষমতাসীনদের হীন্যমন্যতা, বিভাজন ও প্রতিহিংসা পরায়ণতার কারণেই মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযমকে ভাষা সৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। এমনকি প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির কারণেই ডাকসুর জিএসের নামফলক থেকে ভাষা আন্দোলনের এই বীর সেনানীর নাম মুছে ফেলা হয়েছে। তিনি সরকারকে হীন্যমন্যতা পরিহার করে অধ্যাপক গোলাম আযম সহ প্রকৃত ভাষা সৈনিকদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের আহবান জানান।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনই স্বাধীনতা আন্দোলনের জোড়ালো ভিত্তি দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের দায়িত্বহীনতা ও নেতিবাচক রাজনীতির কারণে অর্জিত স্বাধীনতা পুরোপুরি অর্থবহ হয়ে ওঠেনি বরং তাদের উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণেই দেশের মানুষ আজ অধিকার বঞ্চিত। সরকার দেশে সুশাসন উপহার দিতে পারেনি। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া সরকারে দায়িত্ব হলেও তারাই পরিকল্পিতভাবে জননিরাপত্তায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই জনপ্রিয় জাতীয় নেতাদের একের পর এক হত্যা ও কারারুদ্ধ করে রেখেছে। কিন্তু জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অতীতে কোন স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী সরকার জনসমর্থন আদায় করতে পারিনি, এ সরকারেরও হবে না। তিনি সরকারকে প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে সুস্থ্যধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার আহবান জানান। অন্যথায় ইতিহাস কাউকে ক্ষমতা করবে না।
২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস উপলক্ষে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা ২০১৮
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের নিয়মাবলী-
# প্রতিযোগিতায় যেকোনো বয়সের ও সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারবে।
# প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে সরাসরিhttps://goo.gl/forms/NZI66GGI5A76nK8w1 এই লিংকে অথবাwww.jamaatdhakacitynorth.org অথবা facebook.com/bji.dcn এই লিংকে ভিজিট করুন। 
# প্রতিযোগিতা ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ ইং সকাল ১০টা থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ ইং সকাল ১০টা পর্যন্ত চলবে।
# একজন প্রতিযোগী কেবলমাত্র একবারই অংশগ্রহণ করতে পারবে।
# সর্বাধিক সঠিক উত্তর দাতাদের মধ্য থেকে লটারীর মাধ্যমে পুরস্কারের জন্য বিজয়ী নির্বাচিত করা হবে।
# যেকোনো বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
১ম পুরস্কারঃ নগদ ১০,০০০/- টাকা
২য় পুরস্কারঃ নগদ ৮,০০০/- টাকা
৩য় পুরস্কারঃ নগদ ৬,০০০/- টাকা
এছাড়াও ৫ জনকে আকর্ষনীয় বিশেষ পুরস্কার দেয়া হবে।
আমাদের সাথেই থাকুন ।
চোখ রাখুন আমাদের ওয়েব সাইটঃ www.jamaatdhakacitynorth.org অথবা
ফেসবুক অফিসিয়াল পেজঃ facebook.com/bji.dcn

বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

পথশিশু ও নৃগোষ্ঠির মাঝে বাংলা ভাষা শিক্ষার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে-শিবির সভাপতি


বাংলাদেশ বার্তাঃ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, পথশিশুসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কোমলমতি শিশুরা মাতৃভাষা লালন ও চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা আগামীর বাংলাদেশের জন্য সুখকর হবে না। শিশুদের মাতৃভাষা থেকে বঞ্চিত করা অনাকাঙ্খিত। পথশিশু ও নৃগোষ্ঠির মাঝে বাংলা ভাষা শিক্ষার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আজ রাজধানীতে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পথশিশুদের মাঝে বর্ণমালার বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী সভাপতি জামিল মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক শাহ মাহফুজুল হক। এসময় মহানগরী সেক্রেটারি আজিজুল ইসলাম সজিব সহ মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, শিক্ষা সবার জন্মগত মৌলিক অধিকার। শিশুদের যে কোনো ধরণের অনাচারের কবল থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ পথশিশু রয়েছে, যারা প্রায় সকল অধিকার ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত। শিক্ষার অভাব ও রাষ্ট্রের দায়িত্বহীনতার কারণে পথশিশুদের বেশির ভাগই নানা রকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। সময়ের ব্যবধানে এরা ভয়ঙ্কর অপরাধিতে পরিণত হয়। যার খারাপ প্রভাব পড়ছে রাষ্ট্র ও সমাজে। এই বিরাট সংখ্যক পথশিশুকে বাদ দিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে পর্যাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়েও শিশুদের বাংলা বিমুখ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিশুরা বাংলা ভাষা লালন ও চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিজ মাতৃভাষাকে নিয়ে অসতর্কতা, অবহেলা আর চর্চার অভাবে এরা এদেশে থেকেও মাতৃভাষার প্রতি অনিহা নিয়ে বড় হচ্ছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে নিজের অস্তিত্বকে অন্যের কাছে বিলীন করে দেয়ার কোন অর্থ হতে পারেনা। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি ও উপজাতিদের মধ্যেও বাংলাভাষা চর্চা নিয়ে অনিহা রয়েছে। তাদের জন্য বাংলা চর্চায় পর্যাপ্ত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যে জাতির বীর সন্তানেরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে সেই জাতির আগামী প্রজন্ম ভাষা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে তা কোন ভাবেই কাম্যনয়। এই চিত্র বিশ্ব দরবারের বাংলাদেশের মর্যাদাহানি করবে। যা কোন ভাবে মেনে নেয়া যায় না। 

তিনি বলেন, নিরক্ষরতা একটি সামাজিক অভিশাপ। এই অভিশাপ থেকে পথশিশুদের রক্ষা করতে হবে। অনেক স্বপ্ন, ত্যাগ আর সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত এ প্রিয় বাংলা ভাষাকে অবহেলা কোন ভাবেই কাম্য হতে পারে না। শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। কিন্তু সমাজের অসচেতনতা ও রাষ্ট্রের অবহেলার কারণে শিশুদের বিরাট একটি অংশ মাতৃভাষা চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান ঘটানো প্রয়োজন। অবিলম্বে বিপুল সংখ্যক এই পথশিশুকে শিক্ষার আওতায় আনতে সরকারীভাবে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। বেসরকারি ভাবে ও সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাভাষা চর্চা বাধ্যতামূলক করতে হবে। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। উপজাতিদের স্ব স্ব মাতৃভাষার পাশাপাশি বাংলাভাষা চর্চায় রাষ্ট্রীয় ভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় শুধু ভাষার জন্য জীবন দেয়া শহীদদের ত্যাগই ম্লান হবে না বরং আগামীর বাংলাদেশের সম্ভাবনাও হুমকির মুখে পড়বে।

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস ২০১৮ উদযাপন


বক্তব্য রাখছেন ভিসি প্রফেসর কে. এম. গোলাম মহিউদ্দিন
বাংলাদেশ বার্তাঃ আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর উদ্যোগে নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা মহান শহীদ দিবস ২০১৮ উদযাপন 
২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ তারিখ একুশের আলোচনা সভা দোয়া অনুষ্ঠান 
 আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা মহান শহীদ দিবস ২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম কর্তৃক ঘোষিত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার সর্বশেষ কর্মসূচী ছিলো আলোচনা সভা দোয়া অনুষ্ঠান
২১ ফেব্রুয়ারী১৮ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর . মোঃ দেলাওয়ার হোসাইন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ভাষা শহীদদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়

র‌্যালিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রফেসর কে. এম. গোলাম মহিউদ্দিন
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মা্ন্যবর ভাইস-চ্যান্সলর প্রফেসর কে. এম. গোলাম মহিউদ্দিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফিনেন্স কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহসানুল্লাহ অন্যান্যের মধ্যে রেজিষ্ট্রার কর্নেল মোঃ কাশেম পিএসসি (অবঃ), স্টুডেন্ট এ্যাফেয়ারর্স ডিভিশনের পরিচালক . . . ওবায়দুল্লাহ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করেন

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা মহান শহীদ দিবস ২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে ১৯-২১ ফেব্রুয়ারী তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা ঘোষণা করেছিল। সে কর্মসূচীর আলোকে- ১৯ ফেব্রুয়ারী১৮  আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর সহযোগিতায় জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ চারু শিল্পী পরিষদের উদ্যোগে আই.আই.ইউ.সি অডিটরিয়ামেসিম্পোজিয়াম বাংলো ক্যালিগ্রাফি প্রতিযোগিতাঅনুষ্ঠিত হয় 
শহীদ মিনারে ভিসি প্রফেসর কে. এম. গোলাম মহিউদ্দিন

উল্লেখ্য, “সিম্পোজিয়াম বাংলো ক্যালিগ্রাফি প্রতিযোগিতাঅনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর কে. এম. গোলাম মহিউদ্দিন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর . মোঃ দেলাওয়ার হোসাইন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খ্যাতীমান শিল্পী কার্টুনিস্ট বাংলাদেশ চারু শিল্পী পরিষদের সভাপতি ইব্রাহিম মন্ডল প্রধান আলোচক ছিলেন খ্যাতিমান শিল্পী শিল্পতাত্ত্বিক, ঢাকা চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক . আবদুস সাত্তার নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ক্যালিগ্রাফার শিল্পী আবদুর রহিম িএবং অরবিট শরীফা আর্ট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আমিরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্টুডেন্ট এ্যাফেয়ারর্স ডিভিশনের পরিচালক . . . ওবায়দুল্লাহ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্টুডেন্ট এ্যাফেয়ারর্স ডিভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক কবি চৌধুরী গোলাম মাওলা