ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০২০

চট্টগ্রামবাসীর প্রতি ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নগর নেতৃবৃন্দের বিবৃতি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কুরবাণী গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত

আগামী ১ আগষ্ট ২০২০ইং, ১৪৪১ হিজরীর ১০ জিলহাজ্ব ও ১৪২৭ বাংলা, ১৭ শ্রাবন, রোজ শনিবার বাংলাদেশে উদযাপিত হবে কুরবানীর ঈদ পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা তথা কুরবানীর ঈদ উপলক্ষে চট্টগ্রাম বাসীর প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন।
বিবৃতিতে নগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, ঈমানদার মুসলমানদের জীবনে কুরবানির ঈদ বা ঈদুল আযহার দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু জবাই করা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হযরত ইব্রাহীম (আ:) আত্মত্যাগের মহান নজরানা থেকেই শুরু করে হযরত মুহাম্মদ (স:)এর নবুয়াতী জীবনের মদিনার দশ বছর তিনি এই ইবাদত পালন করেছেন। গোটা মুসলিম জাতি আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের লক্ষ্যে এ হুকুম পালন করে আসছে। পশু কুরবানির মাধ্যমে ইব্রাহীম (আ:) যেমন আল্লাহর হুকুমের সামনে আত্মসর্ম্পন করেছিলেন আমরাও আল্লাহ প্রভুত্বের সামনে নিজেদেরকে সেভাবে পেশ করছি।
জামায়াত নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক মহামারির সময়ে এ মহান ইবাদাতকে নিয়ে প্রশ্ন এবং সন্দেহ সংশয়ের এক ধরনের অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। কিছু কিছু মানুষ বুঝে হোক না বুঝে হোক বিভ্রান্ত হচ্ছে। করোনা কালীন এ সময়ে কুরবাণী না করে কুরবানীর অর্থ দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করে দিলে মানুষ উপকৃত হবে। কুরবানীর মতো একটি মহিমান্বিত ইবাদতের বিকল্প কি আসলেই আছে ? ঈদুল আযহার দিনে পশুর রক্ত প্রভাহিত করার মাধ্যমে কুরবানী করার ইবাদতকে হীনগন্য করে তার বিকল্প কোন সুযোগ ইসলাম কাউকে দেয়নি। ইসলাম তো মানুষকে স্বাভাবিকভাবেই অসহায়, দরিদ্র, পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আদেশ দিয়েছেন। একটি ইবাদাত বন্ধ করে কি ঐ সকল কল্যাণকর কাজ করতে হবে ? মানবতার সেবা করা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, এতিমকে খাদ্য দান অতীব সওয়াবের কাজ। এ কাজ সকল প্রেক্ষাপটে একটি কল্যাণকর কাজ। মুসলমানদের জন্য আল্লাহর নির্দেশ হচ্ছে “হে নবী আপনি বলুন নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সবই আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন শরিক নেই। আর ঐ বিষয়ে আমাকে আদেশ করা হয়েছে। সুতারাং আমি হলাম প্রথম আত্মসর্ম্পনকারী“।
নগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য শুধু মুসলিম নয় ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ছুটে চলেন ঈদ যাত্রায় গ্রামের পথে। এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন বৈশ্বিক মহামারির ঝুকি এড়াতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরে ভ্রমন করা, অপরিচিত গাড়িতে উঠা পরিহারসহ যানজট এড়াতে সাবধানতা অবলম্বন করলে নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত হবে। এমন পরিস্থিতিতে ঈদুল আযহার সময় সর্ব্বোচ্ছ সতর্কতা অবলম্বন না করলে ক্ষতিকর হতে পারে। তাই কুবানীর ঈদে চট্টগ্রামবাসীর ঈদ যাত্রা শুভ হোক, স্বাস্থ্য বান্ধব, নিরাপদ এবং নির্বিঘœ হোজ এই কামনায় ঈদ মুবারক।

দেশবাসীকে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এর পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ২৯ জুলাই ২০২০ নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেনঃ-

“কুরবানীর ঐতিহাসিক শিক্ষা ও তাৎপর্য নিয়ে পবিত্র ঈদুল আযহা সমাগত। ঈদুল আযহা আমাদেরকে ত্যাগ ও কুরবানীর আদর্শে উজ্জীবিত করে। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে সবকিছু বিলীন করে দেয়ার চেতনা জাগ্রত করে ঈদুল আযহা। সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ, শোষণমুক্ত ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় কুরবানী আমাদেরকে অনুপ্রেরণা দেয়। ত্যাগ ও কুরবানীর মানসিকতা নিয়ে ব্যক্তিগত, সমাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ন্যায় এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে। আর এর মাধ্যমেই কেবল মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব।

একদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ, চাকুরী-কর্ম হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে মানুষ। অপরদিকে আমফান ও বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বন্যায় আক্রান্ত পরিবারে ঈদের আনন্দের পরিবর্তে বিরাজ করছে বুকভরা বেদনা। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত ও বেদনাহত হৃদয় নিয়ে আমি আমার প্রিয় দেশবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

এবারের ঈদুল আযহায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে অসহায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত যারা ইন্তিকাল করেছেন আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করছি। করোনা মহামারি, বন্যা ও সকল প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট কায়মনোবাক্যে এ দোয়া করছি, তিনি যেন আমাদের সকল প্রকার বিপদ-আপদ দুর করে দেন এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দ্রুত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার তাওফিক দান করেন।

প্রিয় দেশবাসীর ভালবাসায় সিক্ত সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং আমার নিজের পক্ষ থেকে আমি দেশবাসী সকলের সুখ-সমৃদ্ধি, সার্বিক নিরাপত্তা ও শান্তি কামনা করছি। সেই সাথে আমি আবারো সবাইকে আন্তরিকভাবে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।”

সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০২০

বেলজিয়ামে গবেষণার জন্য ডাক পাওয়া রাইসা আনসারি এখন রাস্তায় ফল বিক্রি করেন ইন্দোরে

Add caption
বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ প্রাক্তন পিএইডি গবেষক রাইসা আনসারি। বেলজিয়ামেও ডাক পেয়েছিলেন একটি বেষণায় যোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু হায় বিধাতা! ইন্দোরের বাজারে এখন তাঁকে ফল বিক্রি করতে হয়। তাও ক্রেতার আকাল। বড়িতে ২৫ জন সদস্য। কাকে কীভাবে খাওয়াবেন তিনি। লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি ভিডিওয়ে তিনি সরকারের দিকে আঙুল তোলেন। তখনও কেউ চিনতেন না রাইসাকে।

একজন ফল বিক্রেতাকে ঝরঝরে ইংরেজিতে কথা বলতে দেখে গোটা দেশ অবাক। তার ইংরাজি শুনে সেখানে উপস্থিত সবাই তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে সবজি বিক্রেতা জানান, তিনি ইনদোরের দেবী অহল্যা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেটেরিয়াল সায়েন্সে পিএইচডি করেছেন।

তারপরেই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ঘটনাটি ঘটে গত সপ্তাহে। সম্প্রতি তাঁর বিষয়ে আরও তথ্য সামনে আসায় চমকে গিয়েছে দেশ। বেলজিয়ামে গবেষণায় ডাক পেয়েছিলেন তিনি! যেতে পারেননি কারণ তাঁর পিএইচডি গাইড তাঁর সেসব কাগজপত্রে সই করতে রাজি হননি।

গাইডের অনুমতি ছাড়া এই পদক্ষেপ নেওয়ার উপায় ছিল না তাঁর। তিনি ইন্দোরের দেবী অহিল্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায় পাশ করেছিলেন এবং সেখানেই মেটিরিয়াল সায়েন্স নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। কিন্তু যখন তিনি এই সুযোগটি পেয়েছিলেন তখন কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএসইআর)–এ কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের ওপর গবেষণা করছিলেন। তঁর এক সিনিয়র বেলজিয়ামে গবেষণা করছিলেন। তার রিসার্চ হেড রাইসাকে তাঁদের গবেষণায় যোগদান করার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কলকাতায় তাঁর রিসার্চ গাইড যখন অনুমতি দিলেন না, তিনি হতাশ হয়ে কলকাতা থেকে ফের ইন্দোরে চলে আসেন। এদিকে তাঁর ভাইয়ের স্ত্রীয়েরা ছোট ছোট বাচ্চাদের রেখে পালিয়ে গেলে তাঁর কাছে দেখভালের ভার পড়ে। তখনই তাঁকে তাঁর স্বপ্ন ভুলে কজে নেমে পড়তে হয়। কিন্তু কারা তাঁকে চাকরি দেবে? রাইসার মতে, গোটা দেশ যখন ভাবে যে মুসলিমদের থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে, তখন তাঁর নাম শুনে তাঁকে কে চাকরি দেবে? তাই তাঁকে নিজের বাবার পেশাতেই চলে আসতে হয়। ফল বিক্রি করা। তাঁর কাচে বেসরকারি কোনও সংস্থায় কাজ খোঁজার চেয়ে ফল বিক্রি করাই ভাল। কিন্তু তাতেও যদি বাধা পড়ে লকডাউনের জন্য। তবে পরিবারকে দু’বেলা কী খাওয়াবেন
সৌজন্যেঃবি.বি নিউজ ওয়েবডেস্কঃ

বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০

জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকের গুরুত্ব অপরিসীম।


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আলহামদুলিল্লাহ্ শুরু হয়ে গেল বরকতময় জিলহজ্ব মাস। জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকের গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন কারীমে যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশদিনের ফদ্বীলতের ব্যাপারে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। যেমন-

...وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ

অনুবাদ : ..... এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে যেন তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করে..।

তাফসীরে ইবন কাছীর এ হযরত ইবন আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে এখানে أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ 'নির্দিষ্ট দিনসমূহ' দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে যিলহজ্জের ‘দশ রাত’।

অনুরূপ আল কুরআন আল কারীমের সূরা ফাজরে আল্লাহ তা’আলা এই দশ রাত্রির কসম করেছন। -
والفجر * وليال عشر
ফজরের শপথ, আর দশ রাত্রির শপথ। (সূরা ফজর, আয়াত : ১-২)

এ আয়াতের ব্যাপারেও ইমাম তাবারী বলেন- ‘দশ রাতের শপথ’ এর দ্বারাও যিলহজ্জ- এর প্রথম দশ রাত উদ্দেশ্য। কেননা এ ব্যাপারে কুরআন বিশেষজ্ঞগণ ইজমা পোষণ করেছেন।

আর ইবন কাসীর তার তাফসীরে সূরা ফজরের এ আয়াতের ব্যাপারে বলেন- হযরত ইবন আব্বাস (রা.), ইবনু যুবায়র (রা.), মুজাহিদসহ পূর্বাপর প্রায় সবাই এমত পোষণ করেন যে এর দ্বারা যিলহজ্জের ১ম দশ রাত উদ্দেশ্য।

ইবন হিব্বান সূত্রে বর্ণিত হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন

"যিলহজ্জের প্রথম ১০ দিনের মত উত্তম দিন আল্লাহর কাছে আর কোনটিই নয়। (ইবন হিব্বান, খ-৯, হাদীস নং-৩৮৫৩)"

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

"যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের ‘আমলের চেয়ে অন্য কোন দিনের ‘আমলই উত্তম নয়। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, জিহাদও কি (উত্তম) নয়? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জিহাদও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ছাড়া যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়েও জিহাদে যায় এবং কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না।"
(বুখারী ৯৬৯)

যিলহজ্বের প্রথম দশকের এতো ফদ্বীলত বর্ণিত হয়েছে যে আলিমগণ রমযানের শেষ দশকের এবং এর মধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে বলেন-

রমযানের প্রথম দশক ‘রাতের’ বিবেচনায় সর্বোত্তম কেননা, এর মধ্যে রয়েছে লাইলাতুল কদর। আর এটা রাতসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম। অন্যদিকে যিলহজ্জের প্রথম দশক ‘দিনের’ বিবেচনায় উত্তম, কেননা এর মধ্যে রয়েছে আরফার দিন যা দিনসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম। (মিরকাত)

এই দশ রাত্রির এতো মর্যাদার কারণ হিসাবে উলামায়ে কিরাম বলেন এই সময়ের মধ্যে সকল আমল করা যায়। নামায, রোযা, যাকাত, সদকাহ সব আমল অন্য সময়ে করা যায় কিন্তু কুরবানী, হজ্জ করা যায় না। আর এই দশ দিনের মধ্যে নামায, রোযা, যাকাতের সাথে সাথে কুরবানী ও হজ্জ সহ অন্যান্য সকল ইবাদত করা যায়। সে জন্যে এর মর্যাদা আলাদা। (দ্র. ইবন হাজার; ফাতহুল বারী)

এ দশকে আমরা নিম্নলিখিত আমল করতে পারি--

১. বেশি বেশি আল্লাহর যিকর করাঃ
এ সময়ে যিকর করার জন্য সরাসরি কুরআন শরীফের নির্দেশনা পাওয়া যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَّعْلُومَاتٍ

তোমরা নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নামের যিকর করো। জমহুর মুফাস্সিরীনের মতে এই আয়াত দ্বারা যিলহজ্জের প্রথম দশ দিনকে বুঝানো হয়েছে।

মুসনাদে আহমদে বর্ণিত আছে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন-

এই দশ দিনের মর্যাদার সমতুল্য এবং এই দশ দিনের আমল অপেক্ষা অধিক প্রিয় আমল আল্লাহর কাছে নেই। সুতরাং তোমরা এই দিন সমসূহে অধিক পরিমাণে তাসবীহ (সুবহানআল্লাহ), তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) এবং তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পড়।

২. রোযা রাখাঃ যিলহজ্জের প্রথম দিন থেকে নবম দিন পর্যন্ত আমরা রোযা রাখতে পারি। কিছু দূর্বল হাদিসে এসেছে রাসূল (সা.) এই সময়ে টানা রোযা রাখতেন। এছাড়া দিনের আমল হিসেবে রোজা বেশ ফজিলতপূর্ণ।

৩. রাত জেগে ইবাদত করাঃ যিলহজ্জের দশ রাত্রিসমূহে রাত জেগে ইবাদতের গুরুত্ব অপরিসীম। হানাফী ও হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী এ দশকের রাতসমূহে জাগ্রত থেকে ইবাদত করা মুস্তাহাব।
প্রখ্যাত তাবিঈ হযরত সাঈদ ইবন জুবায়র (রা.) বলেন-
لاَ تُطْفِئُوا سُرُجَكُم لَيَالِيَ العَشْرِ
তোমরা দশ রাত্রিতে তোমাদের ঘরের বাতি সমূহ নিভিয়ে ফেলো না।

৪. আরাফার দিন রোজা রাখা।

আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

"ইয়াওমে আরাফার (নয় যিলহজ্ব) রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, তিনি এর দ্বারা এর আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।"
সহীহ মুসলিম, ১১৬২; জামে তিরমিযী, ৭৪৯; সুনানে আবু দাউদ, ২৪২৫

৫. বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা।

এছাড়া অন্যান্য ফরজ, সুন্নত আমলের ব্যাপারে আমাদের যত্নশীল হওয়া উচিত এবং গোনাহ থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকা দরকার। আল্লাহ্ তা'আলা আমাদের এই দশক থেকে যথাসম্ভব উপকৃত হওয়ার তৌফিক দিন।

কেন্দ্রীয় ওলামা মাশাইখ সম্মেলন ২০২০

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ কেন্দ্রীয় ওলামা মাশায়েখ অনলাইন সম্মেলনে অশ্রুসিক্ত নয়নে নবীদের ওয়ারিশ হিসেবে আলেমদের দায়িত্ব তুলে ধরে আমীরে জামায়াত ড. শফিকুর রহমানের হৃদয়গ্রাহী বক্তব্যে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন হাজার হাজার আলেম ।
'ভয় ভীতির কিছু নাই, জামায়াত ইসলামী কারো ঘাড়ের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকা দল নয় । জামায়াতের নিজস্ব প্রতীক, বিশাল জনবল সহ ৩০০ আসনে প্রতিদ্ধন্দিতা করার মতো যোগ্য প্রার্থীও আছে । প্রয়োজন আলেমদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ।
( ১) আলিয়া ও কওমিয়ার মাঝখানের ওয়াল ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে ।
(২) নিজে ভালো কাজ না করে, সেটা অন্যকে বলা যাবে না ।
(৩) মতানৈক্য সৃষ্টি হয় এমন কোন বক্তব্য, বিবৃতি দেওয়া যাবে না ।
(৪) অন্যের মত‌ ও চিন্তাকে সম্মান প্রদর্শন করা ।
(৫) কাউকে প্রতিপক্ষ না ভেবে ভালোবাসা ও উদার মন নিয়ে কাছে টেনে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করা ।
(৬) মাঠে ময়দানে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা করা ।
(৭) নিজকে ভাইরাল, বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কোন কাজ না করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করা ।
(৮) সর্বদা মনে রাখতে হবে,সকল মানব গোষ্ঠীর পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম এবং মাতা হচ্ছেন হযরত হাওয়া আলাইহিস সালাম ।
(৯) জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে সকল ওলামা মাশায়েখদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই, তাই সকল আলেম-ওলামাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান ।
(১০) জীবনের সকল ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার জন্য চোখের পানি ফেলে দোয়া করা ।
হে আল্লাহ্, সারাবিশ্বে তুমি মজলুমের নেতৃত্ব ও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আলেমদের কবুল করো, আমীন।

অনেক গুলো নসিহত অতিথিবৃন্দের বক্তৃতায় ও আলোচনায় প্রকাশ পেয়েছে, তার থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আপনাদের খেদমতে পেশ করলাম।
শিক্ষা সমুহঃ
১. সকল মতের আলেমদের নিকট ইকামাতে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।
২. ময়দানে কথা বলার জন্য যোগ্য মুফাসসির তৈরী করা।
৩. ইখতেলাফ আছে এমন বিষয়ে কথা বলে ময়দানে ফেতনা সৃষ্টি না করা।
৪. সমালোচকদের সমালোচনার জবাব না দিয়ে বরং নিজেদের কাজে মনোযোগ দেয়াটাই আমাদের কাজ।
৫. দক্ষ শিক্ষক তৈরী করে মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
৬. ময়দানে কথা বলার সময় দালিলিক ও যুক্তিক আলোচনা করতে হবে।
৭. ঐক্য নষ্ট হবে এমন কোন বক্তব্য এড়িয়ে চলুন।
৮. শিক্ষা ব্যবস্থায় ভাগ না করে বরং দুনিয়া ও আখিরাতের ইলমের সমন্বয় করে এগিয়ে যেতে হবে।
৯. হক কথা বলার জন্য সত সাহস ও ঈমান আরো মজবুত করতে হবে।
১০. সমাজ গঠনে আলেম ওলামাদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে।
১১. সততা ও আমানতদারী হিসেবে আলেমদের দৃষ্টান্ত স্হাপন করতে হবে।
১২. আলেমদের সব সময় ইলম বা জ্ঞান অর্জনে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে।
১৩. ইখলাসের সাথে ময়দানে কথা বলতে হবে।
১৪. তাওহীদের দাওয়াত মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে।
১৫. কারোর বিরুদ্ধে সমালোচনা বা মাঠ গরম করে কথা বলে পরিবেশ বা ময়দান নষ্ট করা যাবে না।
১৬. যুব সমাজের নিকট ইসলামের দাওয়াত সঠিক ভাবে পৌঁছাতে হবে।
১৭. তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসলাম তথা ইকামাতে দ্বীনের দাওয়াত এগিয়ে নিতে হবে।
১৮. ব্যক্তি জিবনে ইসলামের সকল হুকুম আহকাম মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে।
১৯. কোন ব্যক্তির কথায় প্রভাবিত না হয়ে কুরআন হাদিসের বক্তব্যকে নিজের জিবনের মিশন হিসেবে গ্রহন করতে হবে ।
২০. বাতিলের রক্ত চক্ষুকে ভয় না করে, হকের উপর অটল থাকার চেষ্টা করতে হবে।
২১. দ্বীন কায়েমের আন্দোলনে যারা জিবন দিয়ে দৃষ্টান্ত স্হাপন করে গেছেন, সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহন করা।
২২. সকল বিষয়ে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা।
২৩. সংগঠনের সাথে নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখা।
২৪. পরিবারের সকলকে ইসলামের খেদমতে নিয়োজিত করা।
২৫. আলেমদের মাঝে ঐক্য তৈরী করার চেষ্টা করা।
২৬. তাকওয়াপূর্ণ জিবন যাপন করা।
২৭. সুন্নাতের খেলাফ কোন কাজ না করা।
২৮. নিজেদের মাঝে ভাতৃত্ব তৈরী করে তা টিকিয়ে রাখা।
২৯. কুরআন হাদিস বেশি বেশি করে গবেষণা করা
৩০. মসজিদে ও ময়দানে বিষয় ভিত্তিক আলোচনা করা। Copy post

ঝুঁকি জেনেও কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার !!

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চার নাম্বার (চান্দগাঁও) ওয়ার্ডের নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি সড়কের খোলাপাড়া হাসিম মহল্লদার বাড়ির সামনে রাস্তার অংশে জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেইন নির্মাণের কাজ দীর্ঘ দিন যাবত পরিত্যক্ত অবস্থায় বন্ধ রয়েছে। 
পাঁচ ফুট গভীর মাটি খননে ও বর্ষার প্রবল বৃষ্টির পানির স্রোতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে একটি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, একটি দ্বিতল ভবন, কয়েকটি সেমিপাকা দোকান ঘর। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে প্রান নাশ সহ যে কোন দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
এ অবস্থার কারণে এলাকার জনসাধারণ আতংকের মধ্যে 
রয়েছে  । কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটার পূর্বে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে  অনুরোধ  জানানো হচ্ছে।
সচেতন এলাকাবাসাসী সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছে।

বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০

ডবলমুরিং থানা জামায়াত নেতা আবদুর রব সরকারের ইন্তেকালে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দের শোক

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ নগরীর ডবলমুরিং থানার প্রবীণ রুকন (সদস্য) ও জামায়াত নেতা আব্দুর রব সরকারের বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তোকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান ও সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ডবলমুরিং থানা জামায়াতের আমীর ফারুকে আজম ও সেক্রেটারী মোস্তাক আহমদ এক যৌথ শোক বাণী প্রদান করেন।
শোক বাণীতে নগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবার বর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
জামায়াত নেতার পিতা নুর হোসাইন পাটোয়ারীর ইন্তেকালে
চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দের শোক
নগরীর ডবলমুরিং থানার ২৪নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড সেক্রেটারী মুহাম্মদ ইলিয়াছ পাটোয়ারীর পিতা, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার ঘাটলাবাদ ইউনিয়ন নিবাসী ও পিডিবির সাবেক কর্মকর্তা আলহাজ্ব নুর হোসাইন পাটোয়ারীর বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তোকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান ও সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ডবলমুরিং থানা জামায়াতের আমীর ফারুকে আজম ও সেক্রেটারী মোস্তাক আহমদ এক যৌথ শোক বাণী প্রদান করেন।

শোক বাণীতে নগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবার বর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

সোমবার, ২০ জুলাই, ২০২০

মধ্যম মোহরা নিবাসী হাজী সালেহ আহম্মদের বাড়ীর মোঃ নুরুল আবসার এর ইন্তেকালে শোক প্রকাশ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ২০ জুলােই,২০২০; মোহরা ৫নং ওয়ার্ডের মধ্যম মোহরা নিবাসী হাজী সালেহ আহম্মদের বাড়ীর মরহুম সুলতান আহম্মদের কনিষ্ঠ পুত্র ও জনাব ইলিয়াছ ভুট্টোর ছোট ভাই মোহাম্মদ নুরুল আবসার আজ সকাল ৭টায় ইন্তেকাল করেন।(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
চান্দগাঁও থানা(দক্ষিণ) জমামায়াত এবং জনাব সরকার মোহাম্মদ নুরুল আবসার এর ইন্তেকালে গভীর ষোক প্রকাশ করে এক বিবৃতি প্রদান করেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। নেতৃবৃন্দ মহান আল্লাহর দরবারে মরহুমের সকল গুনাহ সমূহ মাফ করে দিয়ে জান্নাতে মাকামে আ'লা দান করার ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সবাই কে সবরে জামিল দান করার দোয়া কামনা করেন। মরহুমের নামাজে জানাযা আজ বাদে যোহর সদরিয়া জামে মসজিদের মাঠ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

শনিবার, ১৮ জুলাই, ২০২০

স্বনামধন্য ইসলা‌মি স্কলার মাওলানা আবদুস শহীদ না‌সিম

মাওলানা আবদুস শহীদ না‌সিম
বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার কুরআন গবেষক আবদুস শহীদ নাসিম ইসলামি জ্ঞান চর্চার জগতে একটি সুপরিচিত স্বনামধন্য নাম। একজন বিশ্ব‌বিদ্যালয় অধ্যাপক ব‌লে‌ছেন: 'আশির দশকেই মাস্টার্সে তাফসির পরীক্ষায় সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে তাঁর বই পড়েছি।'
পরবর্তীতে তিনি অনেক অনেক ইসলামি সাহিত্য রচনা করেছেন। অনুবাদ করেছেন অনেকগুলো গ্রন্থ। সম্পাদনাও করেছেন অনেক গ্রন্থ।
আবদুস শহীদ নাসিম শুধু একজন সুসাহিত্যিকই নন, সেইসাথে তিনি একজন সুবক্তা এবং দক্ষ সংগঠকও । তিনি বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। প্রায় তিন দশক আগে তিনি কুরআনুল কারীমের শিক্ষা ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া প্রায় চার দশকব্যাপী তিনি একটি নামকরা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দুই যুগেরও অধিককাল ইসলামি ব্যাংক শরিয়া বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখনো কোনো কোনো ব্যাংকের শরিয়া কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দেশের একজন বিশিষ্ট শরিয়া বিশেষজ্ঞ।
খ্যাতিমান চিন্তাবিদ, লেখক, গবেষক আবদুস শহীদ নাসিমের চিন্তাধারা ও লেখনীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো:
০১। তিনি বিশেষ কোনো ধর্মীয় মসলক নয়, কুরআন সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের নীতি ও আদর্শের অনুসারী।
০২। তিনি অমৌলিক ও সাধারণ বিষয়ে অন্য অনেকের মতো কট্টরপন্থী নন।
০৩. তিনি দীনের অনেক কঠিন বিষয়কে সহজভাবে উপস্থাপনে সুদক্ষ।
০৪। তিনি ইসলামে এখতেলাফি বিষয়ে বিরোধ বিবাদ, ফেরকাবাজি ও দলবাজির ঘোর বিরোধী।
০৫। তার গ্রন্থাবলী আধুনিক উন্নত ও সহজ সাবলীল বাংলা ভাষা ব্যবহারের দিক থেকে অনবদ্য অন্যন্য।
০৬। তার অনুবাদ সাহিত্যগুলোর ভাষাও মৌলিক রচনার মতই শিল্পগুণ সম্পন্ন সহজ সাবলীল।
০৭। তার অনূদিত "আল কুরআন: সহজ বাংলা অনুবাদ" -এর মত কুরআনের অনুবাদ বাংলা, ইংরেজি এবং উর্দু ভাষায়ও দেখিনি।
ক) এ অনুবাদে তিনি বিশেষ রীতির শিল্প সম্মত সাবলীল বাংলা ভাষা ব্যবহার করেছেন।
খ) এ অনুবাদে তিনি প্রতিটি সুরার শুরুতে সে সুরার আয়াত ভিত্তিক আলোচ্য বিষয় উল্লেখ করেছেন।
গ) তার একটি সাহসিকতার বিষয় হলো, কুরআনে যেসব স্থানে আল্লাহ্ নিজের জন্যে সম্মানজনক ও রাজকীয় বহুবচন ব্যবহার করেছেন, তিনিও সেসব স্থানে হুবহু 'আমরা' ও 'আমাদের' অনুবাদ করেছেন, যা আর কোনো অনুবাদক 'পাছে লোকে কিছু বলে'র ভয়ে ব্যবহার করেননি।
আবদুস শহীদ নাসিমের বয়েস এখন ৭১ পেরিয়ে ৭২ চলছে। আলহামদুলিল্লাহ এখনো তিনি গবেষণার কাজে রত আছেন, লিখে যাচ্ছেন, কুরআনের উপর আলোচনা করে যাচ্ছেন, ইসলামের উপর প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান করছেন।
বি‌শিষ্ট ইসলা‌মি স্কলার মাওলানা অাবদুস শহীদ না‌সিম -এর জন্ম ২১ ফেব্রুয়া‌রি ১৯৪৯ সা‌লে, চাঁদপুর জেলার ফ‌রিদগ‌ঞ্জে। ১৯৭০ ও ১৯৭২ সা‌লে তি‌নি কৃতিত্বের সাথে অা‌লিয়া মাদরাসা থে‌কে ফাজিল ও কা‌মিল ডি‌গ্রি অর্জন ক‌রেন। ১৯৭৫ এবং ১৯৭৬ সেশনে তিনি রাজশাহী বিশ্ব‌বিদ্যালয় থে‌কে বাংলা সা‌হি‌ত্যে যথাক্র‌মে অনার্স ও মাস্টার্স ‌ডি‌গ্রি অর্জন ক‌রেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছুদিন পড়ালেখা করেন।
কামিল পাশ করার পর কিছুদিন তিনি একটি ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন (১৯৭৩-১৯৭৪-এ)। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স মাস্টার্স পড়ার জন্যে তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব ছেড়ে দেন। তিনি চাঁদপুরের বিখ্যাত আল আমিন একাডেমীতেও কিছুদিন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।
আবদুস শহীদ নাসিম ছাত্র জীবন থে‌কেই বি‌ভিন্ন পত্র প‌ত্রিকায় লেখা‌লে‌খি শুরু ক‌রেন। পরবর্তীতে আল্লাহ পাক তাকে ইসলামি সাহিত্য জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।
সুসাহিত্যিক অাবদুস শহীদ না‌সিম একজন সুপ্র‌তি‌ষ্ঠিত সৃজনশীল লেখক। এ যাবৎ তি‌নি ছোট বড় প্রায় ১০০টি মৌ‌লিক গ্রন্থ রচনা ক‌রেছেন।
এছাড়াও তি‌নি কুরঅান ম‌জি‌দের সহজ বাংলা অনুবাদ করাসহ প্রায় ৪০টি গ্রন্থ অনুবাদ ক‌রে‌ছেন। সম্পাদনা করেছেন অনেক গ্রন্থ।
তার প্র‌তি‌ষ্ঠিত "বাংলা‌দেশ কুরঅান শিক্ষা সোসাই‌টি" অাল কুরঅান ও ইসলা‌মি অাদর্শ প্রচা‌রের উ‌দ্দে‌শ্যে বি‌ভিন্নমু‌খি কার্যক্রম প‌রিচালনা করে যাচ্ছে।
ব্যাক্তি জীবনে আবদুস শহীদ নাসিম একজন পরিচ্ছন্ন, সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক ও স্বল্পভাষী মানুষ। তিনি তিন কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের পিতা। তার দুই কন্যাই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।
মাওলানা আবদুস শহীদ নাসিমের পিতা মরহুম মাওলানা আব্দুল হামিদও (১৯১২-১৯৮৮) ছিলেন একজন বিশিষ্ট আলেম দীন। আবদুস শহীদ নাসিমের একটি লেখা থেকে জানা যায়, তার পিতা ১৯৪০ সা‌লে দেওবন্দ মাদরাসায় পড়‌তে যান। সেখান থে‌কে দাওরা পাশ ক‌রে সুরাট ডা‌বিল সিমল‌কে অাল্লামা অা‌নোয়ার শাহ কাশ্মী‌রি প্র‌তি‌ষ্ঠিত মাদরাসায় অাল্লামা শি‌ব্বির অাহমদ উসমা‌নি রহ.-এর কা‌ছে হা‌দিস পড়‌তে অা‌সেন। এখা‌নে হা‌দি‌সে দাওরা করার পর তাঁর এখানকার সহপা‌ঠী (অাল্লামা) অাবুল হাস‌ান অালী নদভীসহ লা‌হোরে চ‌লে যান অাল্লামা অাহমদ অালী লাহ‌রির কা‌ছে তফ‌সির পড়‌ার জ‌ন্যে। সেখান থে‌কে ফিরে এ‌সে তি‌নি অাজীবন এক‌টি অা‌লিয়া মাদরাসার হেড মাওলানা হি‌সে‌বে দা‌য়িত্ব পালন ক‌রেন।
মাওলানা অাবদুস শহীদ না‌সিমরা দুই ভাই। ছোট ভাই ড. মুহাম্মদ অাল ফারুক। তি‌নি ঢাকা বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ে সহকা‌রি অধ্যাপক ছি‌লেন, পরে ১৯৮৫ সালে কানাডার ট‌রো‌ন্টো ইউ‌নিভা‌র্সি‌টি‌তে ডক্ট‌রেট করতে যান। ডক্টরেট শেষে টরেন্টো ইউনিভার্সিটিতে কিছুকাল চাকু‌রি ক‌রেন। ‌সেখান থে‌কে এ‌সে কয়েক বছর মাল‌য়ে‌শিয়ার IIUM-এ অধ্যাপনা ক‌রে‌ন। পরবর্তী‌তে অাবার তি‌নি যুক্তরা‌ষ্ট্রে চ‌লে যান। স্ট্যান‌ফোর্ড বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ে চাক‌ু‌রি ক‌রেন, প‌রে ই‌লিনয় (শে‌ম্পেন) ইউ‌নিভার্সি‌টি‌তে অধ্যাপনা ক‌রেন। এখন তি‌নি অবস‌রে যুক্তরা‌ষ্ট্রে অা‌ছেন। যুক্তরা‌ষ্ট্রে বাংলা‌দেশী স্কলার‌দের একটা এ‌সো‌সি‌য়েশন অা‌ছে, তি‌নি সেটার সভাপতির দা‌য়িত্ব পালন কর‌ছেন।
আবদুস শহীদ নাসিমের নানাও ছিলেন একজন বড় ইসলামি স্কলার। তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার মুফতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সাথে রিপন কলেজে ইসলামি বিষয়ে অনারারী অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
আবদুস শহীদ নাসিম এমন একটি পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছেন, যে পরিবারের পূর্ব পুরুষরাও ছিলেন ইসলামের দা'য়ী।
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মাওলানা আবদুস শহীদ নাসিমকে দীর্ঘ হায়াতে তাইয়েবা দান করুন এবং সুস্থ সালামতে দীনের খেদমত করে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন!
লেখক:
সাজেদা হোমায়রা
মাহমুদা শিফা