ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ, ২০১৭

ঘুমে নাকডাকা: কারণ ও জটিলতা: অধ্যাপক নইম কাদের

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ   ঘুমের মধ্যে নাকডাকা একটি বিরক্তিকর ও জটিল উপসর্গ। নাকডাকার এই সমস্যা সব বয়সের মানুষের হয়। তবে, মধ্যবয়ষ্ক লোকদের মাঝে এ উপসর্গ বেশি দেখা দেয়। বিশেষ করে যারা চল্লিশোর্ধ। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সারা বিশ্বে প্রায় ৬০% ভাগ সুস্থ মানুষ কোন না কোনভাবে ঘুমে নাকডাকা উপসর্গে ভোগেন। এর মধ্যে প্রায় ৪০ভাগ পুরুষ ও ২৫ভাগ নারী। অর্থাৎ নাক ডাকায় মহিলাদের তুলনায় পুরুষের হার বেশি। ৪৫ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের নাক ডাকা অনিয়মিত, ২৫ভাগ মানুষ নিয়মিত নাক ডাকেন। কারো নাক ডাকা হয় মৃদু, কারো উচ্চৈঃস্বরে। কেউ কেউ দিনের বেলায়ও ঘুমে নাক ডাকেন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নাকডাকার এই শব্দ কারো কারো ৯০ ডেসিবেল পর্যন্ত হয়।
নাকডাকা এমন এক বিরক্তি ও অস্বস্তিকর উপসর্গ যে, এর কারণে স্বামী-স্ত্রী আলাদা রুমে রাত যাপন করে। এমনকি অনেকের বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটে। মজার ব্যপার হলো যারা ঘুমে নাক ডাকেন, তারা কিন্তু বিষয়টি একেবারেই টের পান না।

নাকডাকা কী :

ঘুমের মধ্যে কোন কারণে শ্বাসনালীতে বাধা সৃষ্টি হয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে এক ধরণের শব্দ-কম্পন তৈরি হয়। এর ফলে যে শব্দ শোনা যায় তাকেই নাকডাকা বলা হয়। অর্থাৎ নাকডাকা হলো শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় শ্বাসনালীর উপরিভাগের কম্পনজনিত শব্দ।
অটোল্যারিঞ্জোলজিস্ট ড্যানিয়েল প্লিটার এর গবেষণা অনুযায়ী যারা নাক ডাকেন তাদের মধ্যে শতকরা ৭৫ভাগের ঘুমের মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে বলে অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিন্ড্রোম। গবেষকরা নাকাডাকা বিষয়ে যে ভায়াবহ তথ্যটি দিয়েছেন তা হলো, যাদের উচ্চস্বরে নাক ডাকার অভ্যাস, তারা পরবর্তীতে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এর ফলে ঘুমের মধ্যে শ্বাসরোধ হয়ে ঘুমে মৃত্যু হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগীদের ঘুমের মধ্যে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৪৬ভাগ।
এছাড়াও নাকডাকার ফলে ঘনঘন ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় সুনিদ্রায় ব্যঘাত ঘটে। দৈনন্দিন কাজ-কর্মে বিরক্তি ও মনোযোগের অভাব সৃষ্টি হয়, স্মৃতিলোপ, মানসিক অশান্তি ও বিষন্নতা বৃদ্ধি পায়। নাকডাকার বিরক্তিকর শব্দে শয্যাসঙ্গি ও আশে পাশে যারা থাকেন তারা বিরক্ত হন, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়, কার্বনডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায়, যৌনকর্মে আগ্রহ কমে যায়। সর্বোপরি পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হতে হয়

কারণ :

নাকডাকার প্রধান কারণ শ্বাসনালীর সংকোচনা। শরীরে যে শ্বাসপথ রয়েছে, কোন কারণে যদি তাতে ঠিকমত বাতাস প্রবেশ করতে না পারে, অথবা পথটি সরু হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি হয় তাহলে এক ধরণের শব্দ-কম্পন তৈরি হয়। বিভিন্নভাবে এটা হতে পারে। যেমন- নাকের হাঁড় বাঁকা হয়ে যাওয়া, নাকের এলার্জি বা সাইন্যাস, পলিপ, বৃদ্ধ বয়সে বাতাসের পথ নরম হয়ে যাওয়া বা তাতে চর্বি জমা, শরীরের ওজন বৃদ্ধি, অতিরিক্ত পরিশ্রমজনিত কারণে শারীরিক ক্লান্তি ও অবসাদ, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ক্লান্তি ও অবসাদ, ধূমপান, অ্যালকোহল পান, ঘুমের ওষুধ সেবন, থাইরয়েড সমস্যা, গ্রোথ হরমোনের আধিক্য ইত্যাদি। শিশুদের নাকডাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো- নাকের পেছনে এডিনয়েড গ্রন্থির স্ফীতি এবং সর্দিজনিত কারণে নাক জ্যাম হয়ে থাকা।

নাকডাকা প্রতিরোধে করণীয় :

নাকাডাকা কোন রোগ নয়, বরং রোগের উপসর্গ। এই উপসর্গ ঘুমের মধ্যে দেখা দেয়। তাই শোয়ার আগে ও শোয়ার সময় কিছু নিয়ম মেনে চললে এই উপসর্গ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

পাশ ফিরে বা কাঁত হয়ে শোয়া :

পিঠে ভর দিয়ে চিত হয়ে শুলে জিহ্বার মূল এবং নরম প্যালেট গলার পেছনের দেয়ালে সাথে লেগে যায়। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসে এক ধরণের শব্দ কম্পন তৈরি হয়। ঘুমানোর সময় চিত হয়ে না শুয়ে পাশ ফিরে বা কোল বালিশ ব্যবহার করে একপাশ হয়ে শুলে ভাল ফল পাওয়া যায়। কেউ যদি ঘুমে নাকডাকা শুরু করে, বিরক্ত হয়ে তার শয্যা-সঙ্গির রুম ত্যাগ করার দরকার নেই, আস্তে করে তাকে পাশ ফিরিয়ে দিলে নাকডাকা বন্ধ হয়ে যাবে।

উঁচু বালিশ ব্যবহার :

ঘুমানোর সময় বুকের চাইতে মাথা কিছুটা উঁচু থাকে এমন বালিশ ব্যবহার করলে নাকডাকা কমে যায। খেয়াল রাখতে হবে, বালিশ বেশি উঁচু হলে ঘাড় ব্যথা করতে পারে।

মুখ বন্ধ করে ঘুমানো :

অনেকে মুখ হা করে ঘুমান এবং মুখে শ্বাস নেন। এটা নাকডাকার সহায়ক। মুখ বন্ধ করে ঘুমানোর অভ্যাস করলে নাকাডাকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

নির্ধারিত সময়ে ঘুমানো :

নিয়ম মনে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো এবং একই সময়ে বিছানা ত্যাগের চেষ্টা করতে হবে।

রাতের আহার এবং নিদ্রা :

গবেষকরা রাতের বেলায় কম খাওয়া এবং ঘুমানোর অন্তত দু ঘণ্টা আগে আহার গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। মসলাযুক্ত খাবার পাকস্থলিতে গ্যস সৃষ্টি করে, অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে।

ওজন কমানো :

শরীরের ওজন বৃদ্ধি নাকডাকার অন্যতম কারণ। ঘাড়ের দিকে স্থুলতা বেড়ে গেলে গলার ভেতরের পরিধি কমে যায। ঘুমের মধ্যে তা আরো সংকুচিত হয়ে নাকডাকা শুরু হয়। বাড়তি ওজন কমাতে পারলে নাকডাকা বন্ধ হয়ে যাবে।
ধূমপান, ঘুমের ওষুধ ও অ্যালকোহল : ধূমপানের ফলে ফুসফুসের উপর চাপ সৃষ্টি হয় যা শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে ঘুমে নাকডাকা হয়। ঘুমের ওষুধ ও অ্যালকোহল গলার পেছনের অংশের মাংসপেশিকে স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে বাধা দেয়। গবেষণায় এর সাথে নাকডাকার সম্পর্ক পাওয়া গেছে। নাকডাকা বন্ধে ধূমপান, ঘুমের ওষুধ ও অ্যালকোহল পরিহার করতে হবে।

পর্যাপ্ত পানি পান করা :

শরীরে পানি শূণ্যতা দেখা দিলে নাক দিয়ে একপ্রকার আঁঠালো পিচ্ছিল পদার্থ বের হয়। যা নাকাডাকা বাড়িয়ে দেয়। তাই নারী-পুরুষ প্রত্যেককে পর্যাপ্ত পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

নাসারন্দ্রের পথ পরিষ্কার রাখা :

সর্দি-কাশিজনিত কারণে অনেক সময় নাক জ্যাম হয়ে যাায়। সব সময় নাক পরিষ্কার করা দরকার।

ডিভাইস ব্যবহার :

বাজারে নাকডাকা বন্ধে বিভিন্ন ডিভাইস বিক্রি হয়, অনেকে এগুলি কিনে ব্যবহার করেন। এসব ডিভাইস ব্যবহার কতটা নিরাপদ? জে এফ কে মেডিকেল সেন্টারের Clinical neurophysiology and sleep medicine এর পরিচালক সুধাংশু চক্রবর্তী বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ডিভাইস ব্যবহার করা উচিৎ নয়।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা :
যে বয়সেই হোক, বিষয়টিকে হাল্কাভাবে না নিয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। যদি সহজে নাকডাকা বন্ধ না হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হোমিওপ্যাথিতে নাকডাকা উপসর্গের ভাল চিকিৎসা আছে।
জিঙ্কাম মেট, কার্বোভেজ, নাক্সভম, অ্যামন কার্ব, ক্যাল্কেরিয়া কার্ব, লাইকোপোডিয়াম, এগারিকাস, ওপিয়াম প্রভৃতি মেডিসিন থেকে লক্ষণ অনুযায়ী প্রয়োগ করে ভাল ফল পাওয়া যায়। স্থুলতা, ভীরুতা, অল্পে ঠাণ্ডালাগা ও শ্লেষ্মা প্রবণতা, নিদ্রাকালে মাথায় প্রচুর ঘাম প্রভৃতি লক্ষণে ক্যাল্কেরিয়া কার্ব এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, পক্ষাঘাতসদৃশ দুর্বলতা, নিদ্রালুতা, ঘুমে নাকডাকার সাথে গলায় ঘড়ঘড়শব্দ প্রভৃতি লক্ষণে ওপিয়াম প্রয়োগ করে আমি নাকাডাকা রোগীর চিকিৎসায় ভাল ফল পেয়েছি।
ভুল ধারণা- ঘুমে নাকডাকলে অনেকে এটাকে গভীর ঘুমও সুনিদ্রার লক্ষণ মনে করে থাকেন। আসলে বিষয়টি তা নয়। বরং নাকডাকা নানাবিধ জটিলতার লক্ষণ।

সরিষার তেল :

‘নাকে সরিষার তেল মেখে ঘুমানো’ একটি প্রবাদ আছে। মজার ব্যপার, গবেষণায়ও প্রমাণিত হয়েছে যে, শোয়ার আগে নাকে ২ফোটা খাঁটি সরিষার তেল নাকে দিয়ে ঘুমালে নাকের ছিদ্রপথ পরিষ্কার থাকে, নাকডাকা বন্ধ হয়।

চেম্বার : হোমিও হেলথ হোম, বহদ্দারহাট, চট্টগ্রাম।
মোবাইল : ০১৯৯১৯৪৮৫৯১, ০১৮১৯৩৯৮৩৩৮
ইমেইল : nayeemquaderctg@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন