।।এক।।
জামায়াত নিছক কোন রাজনৈতিক দল নয়।এটা একটি পূর্নাংগ ইসলামী আন্দোলন।রাজনীতি ইসলামী আন্দোলনের একটি অংশ ।আল্লাহভীরু সৎ, যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের ইহলৌকিক কল্যান সাধনের লক্ষেই জামায়াত রাজনীতি করে।জামায়াত মনে করে মানুষের সামগ্রিক জীবনের মুক্তি ও কল্যাণ আল্লাহর বিধান অনুসরনের মাধ্যমেই হতে পারে।
নেতৃত্বের পরিবর্তনের জন্য জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক পথ অনুসরন করে।জবর দস্তি করে ক্ষমতা দখলের কোন লক্ষ জামায়াতের নেই।এ ধরনের কোন কর্মসূচিও জামায়াতের নেই।
যে কোন আন্দোলনের সফলতা কতগুলো বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে যার অনেকগুলোই জামায়াতের মধ্যে বিদ্যমান:
1. আদর্শ: আদর্শ ছাড়া কোন আন্দোলন সফল হতে পারেনা।ইসলাম মানবজাতির মুক্তির একমাত্র আদর্শ। জমায়াতের আদর্শ হচ্ছে ইসলাম।জামাতের আকীদা ত্রুটিপূর্ণ বলে যত কথা বলা হয়েছে তা সঠিক প্রমানিত হয়নি।
2. তরুনদের অংশগ্রহন: কোন আন্দোলনে তরুনরা যখন ব্যাপক ভাবে অংশগ্রহন করে তখন বুঝতে হবে ঐ আন্দোলন সাফল্যের দিকে যাচ্ছে।শত প্রতিকুলতা সত্বেও প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রশিবিরে যোগদিচ্ছে।ছাত্রজীবন শেষ হবার পর এদের প্রায় সকলেই জামায়াতে যোগ দিচ্ছ ।ছাত্র জীবনে যারা ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পায়নি এমন বহু যুবক কর্মজীবনে প্রবেশ করে জামায়াতে যোগ দিচ্ছে।
3. সংগঠন: যে কোন আন্দোলনের সফলতার জন্য প্রয়োজন সংগঠন।মজবুত সংগঠন ছাড়া কোন আন্দোলনই সফলতা অর্জন করতে পারেনা।সংগঠনের জন্য চিন্তার ঐক্য,ভ্রাতৃত্বপূর্ন সম্পর্ক,পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ,স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার,আভ্যন্তরীন প্রানবন্ত পরিবেশ ইত্যাদি অপরিহার্য।এর সবগুলোই জামায়াতে ইসলামীতে বিদ্যমান।
4. নেতৃত্ব :আন্দোলন-সংগঠন মানেই নেতৃত্ব। নেতৃত্বকে কেন্দ্র করেই সংগঠন গড়ে উঠে।ইসলামী আন্দোলন নেতৃত্ব কেন্দ্রীক।গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে জামায়াত তার যাত্রালগ্ন থেকেই শত বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করে সামনে অগ্রসর হয়েছে।সাধারন শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও জামায়াত নেতৃবৃন্দ কুরআন হাদীসের উপর গভীর জ্ঞান রাখতেন।একাধারে ইসলাম ও আধুনিক জ্ঞানের উপর দখল, লেখনী ও বিশ্লেশনী শক্তি, বাগ্নিতা,উত্তম আমল, উন্নত নৈতিকতা, ঈমানের দৃঢতা,আল্লাহর উপর নির্ভরশীলতা,কর্মীদের সাথে আচরন জামায়াত নেতৃবৃন্দকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছিল।শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ফাঁসি হওয়ার পর নেতৃত্বের সংকট তৈরী হয়েছে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু জামায়াত এমন এক ‘সিস্টেম’- তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে যে জামায়াতের সিস্টেমটাই নেতৃত্ব। সুতরাং জামায়াতে নেতৃত্বের সংকট হবেনা ইনশাআল্লাহ।মানুষকে প্রভাবিত করার যে সম্মোহনী চরিত্র তা যৌথভাবেই জামায়াত নেতৃত্বের মধ্যে তৈরী হবে ইনশাআল্লাহ।
5. ত্যাগ কোরবানী: আন্দোলনের জন্য প্রয়োজন ত্যাগ ও কুরবানীর।নবীকরিম (সা:) ও তার সংগী সাথীদের সীমাহীন ত্যাগ ও কুরবানীর বিনিময়ে রাসুল (সা:) এর নেতৃত্বে ইসলাম কায়েম হয়েছিল।বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির দীর্ঘদিন যাবত সীমাহীন জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। হাত-পা-চোখ সর্বোপরি শাহাদতের নজরানা পেশ করে অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।জামায়াত নেতৃবৃন্দ মাথা উঁচু করে ফাঁসির মন্চে গিয়েছেন। এসব ঘটনা মানুষের হৃদয়কে আন্দোলিত করছে। কালামে হাকীমে আল্লাহ বলেছেন:"নিশ্চয়ই যেসব লোক মহান আল্লাহর মনোনীত জীবনাদর্শ ইসলামের প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করেছে, এ বিধান অনুসারে সৎকর্মসমূহ সম্পাদন করেছে এবং
এ বিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষে আন্দোলন -সংগ্রাম করতে গিয়ে নির্যাতন সহ্য করেছে, করুনাময় আল্লাহ তায়ালা অতি শীঘ্রই তাদের জন্যে সাধারন মানুষের অন্তরে প্রবল আকর্ষণ ও মমত্ববোধ সৃষ্টি করে দেবেন। "(সূরা মার্ ইয়াম-৯৬)। জামাতের প্রতি সাধারন মানুষের সহানুভূতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
6. দেশ ও জাতি গঠনে অবদান: যে দল বা সংগঠন দেশ ও জাতি গঠনে কোন অবদান রাখতে পারেনা তারা সফলতার আশা করতে পারেনা।জামায়াত বিগত ৪৮ বছর যাবত দেশকে গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে চলছে।স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জামায়াতের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্হার প্রবর্তক হচ্ছে জামায়াত। এ ব্যবস্হার অধীনে ৩ টি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহনযোগ্য নির্বাচন সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়ে প্রমানিত হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জামায়াত উদ্ভাবিত কেয়ারটেকার সরকারের বিকল্প নেই। জামায়াতের মন্ত্রীগণ সততা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে জাতির উন্নয়নে যে অবদান রেখেছেন তা সর্ব মহলে স্বীকৃত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন