বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ করোনা ভাইরাসে চট্টগ্রাম এখন হট ¯পট। যতই দিন যাচ্ছে ততই মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলায় ৩ হাজার ১৯১ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মারা গেছেন ৭৮ জন। গতকাল সীতাকুন্ড ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি ল্যাবে ২১২টি নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রামের ৪৭ জনের করোনা পজিটিভ, চমেক হাসপাতালে ২৬১টি নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রামের ১০১ জন, এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৯৬ জন। ভেটেরেনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৮ জন পজিটিভ, এর মধ্যে ৮ জন মহানগরীর। করোনার বড় ঝুঁকিতে এখন চট্টগ্রাম মহানগরী। চট্টগ্রাম মহানগরীর করোনা রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা অত্যন্ত অপ্রতুল। ইতোমধ্যে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এখনও পর্যন্ত তা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি আক্রান্ত রোগীরা। আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এক যুক্ত বিবৃতি প্রদান করেন।
বিবৃতিতে জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের চিকিৎসা সেবা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। কোন নাগরিক বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না এটাই জনগণের প্রত্যাশা। এ ক্ষেত্রে আজ করোনায় আক্রান্ত রোগীরা অবহেলার শিকার। ন্যুনতম সেবা পাওয়া জনগণের নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার। করোনা আক্রান্ত হট¯পট চট্টগ্রামে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও চিকিৎসা সুবিধা বাড়ছে না। হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা একেবারেই কম। ফলে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে আক্রান্তরা। আইসিইউ ও অক্সিজেন পাওয়া যেন চিন্তাই করা যায় না। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। শয্যা বাড়ানোর কোন অগ্রগতি নেই। দিন দিন মৃত্যুহার বেড়েই চলেছে। অথচ সে তুলনায় নমুনা টেস্টের হার বাড়েনি। চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার করোনা রোগীর জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৪২০টি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ ৬০% রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেয়া প্রয়োজন। বাস্তবে তা সম্ভব হচ্ছে না। কঠিন সংকটময় পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হলেও হাসপাতালে রোগীর ঠাঁই মিলছে না। হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে যেতেই আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। ফলে মৃত্যু হারও দিন দিন বাড়ছে। চট্টগ্রাম নগরীর সংকট মোকাবেলায় চমেক হাসপাতালেও পর্যাপ্ত বেড নেই। জেনারেল হাসপাতালে ৫০ শয্যা বৃদ্ধির কাজও শেষ হয়নি, পর্যাপ্ত জনবল ও নেই। হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল প্রস্তুত হলেও এখনও পর্যন্ত চালু করা যায়নি। ই¤েপরিয়াল ও ইউএসটিসি অধিগ্রহণ করা হয়, এতে ৫০টি আইসিইউ ও ৩৫০ শয্যা আছে তবে তা কবে নাগাদ চালু হবে তা অনিশ্চিত।
বিবৃতিতে জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, মৃত্যুর দিক থেকে ঢাকার পর চট্টগ্রামের অবস্থান। করোনা ভাইরাস বিস্তারে রেড জোনে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম। অবিলম্বে চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাস আক্রান্তরোগীদের পর্যাপ্ত শয্যা, আইসিইউ সুবিধা এবং অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা সহ করোনা মোকাবেলায় পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন