পৃথিবীতে এখন শতকরা ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ জন তরুণ- যুবক।
এরাই আগামীর পৃথিবী গড়ার কারিগর। জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে যাদের বয়স ১৪-৩০ তারাই তরুণ। যাদের বয়স ২৫-৪০ এর মধ্যে তারাই যুবক। আজ গোটা সমাজের সকল বিপদই যেন তরুণ-যুবকদের তাড়া করছে। অজানা এক আতঙ্ক আর উদ্বিগ্নতা তরুণ-যুবকদের উপর ভর করেছে। অপসংস্কৃতির কালো থাবা, ইন্টারনেট প্রযুক্তির অভিশাপ, ড্রাগের মরণ কামড় যেন গোটা জাতি, সভ্যতা, সমাজকে অক্টোপাশের মতো আটকে ফেলেছে। নৈতিকতা মুক্ত উন্নতি যেন তরুণ-যুবকদের অশান্তি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। মায়ের জাতি নারীকে ব্যবহার করেছে পণ্য হিসেবে। ধর্মীয় শৃঙ্খলমুক্ত শিক্ষিত যুবক তরুণ যেন হিংস্র, অসভ্য আর ইতর প্রাণীর স্বরূপ। কিন্তু সকল বাধা উপেক্ষা করেও বিশ্বব্যাপী শাশ্বত বিধান ইসলামের দিকেই ঝুঁকছে তরুণ-যুবকরা। ইসলাম আজকের আধুনিক জাহিলিয়াতকে মোকাবেলা করছে প্রতিনিয়ত। ইসলামের প্রগতিশীলতা পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান স্থান, কাল পরিবেশ অনুযায়ীই বৈজ্ঞানিক ও যৌক্তিক। ৭৫০ খৃ. থেকে ১৭০০ খৃ. পর্যন্ত প্রায় এক হাজার বছর পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস; আচরণ ও কর্মধারার নিয়ন্ত্রণ করেছে ইসলামী জীবন বিধান। ১৭৫০ খৃ:. থেকে ২০০০ পর্যন্ত মুসলমানগণ শিক্ষা ও জ্ঞান বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়ার কারণে পৃথিবীর নেতৃত্বের আসন থেকে ছিটকে পড়ে। আধুনিক পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে আগামীদিনের জীবন আদর্শ হিসেবে ইসলামের পূর্ণতা, বাস্তবতা, প্রগতিশীলতা নির্ভুলতা এবং প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে সঙ্গতিপৃর্ণ জীবন বিধান হিসেবে এর কোনো বিকল্প নেই? এটাই আজ সারা পৃথিবীর স্কলার পণ্ডিতদের ধারণা। আজকের পৃথিবীব্যাপী ইসলামের মূল চালিকা শক্তির উৎস হচ্ছে ছাত্র-যুব আন্দোলন। তাই বিরোধীদের সকল পরিকল্পনা যুবক-তরুণদের উত্থানরোধে ব্যয়িত। এক্ষেত্রে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন, অপপ্রচার, বিভেদ, বিভ্রান্তি, অনৈক্য, আর নৈতিক চরিত্র ধ্বংসের সকল আয়োজন চলছে প্রতিনিয়ত। শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে নাস্তিক্যবাদী চিন্তা দিয়ে ঢেকে ফেলা হচ্ছে তরুণদের কোমলমতি মন-মানষিকতাকে। ইসলামের পুনঃজাগরণের ক্ষেত্রে মুসলমান যুব সমাজের ভূমিকা অনন্য। বাংলাদেশে তার ব্যতিক্রম নয়। অনুমান করা যায় একবিংশ শতাব্দীতে যুবক-তরুণদের স্রোত আরো বেড়ে যাবে। কিন্তু পাশ্চাত্য আজ তাদের সকল শক্তি নিয়োগ করেছে ইসলামের বিরুদ্ধে। তবুও হাসান আল বান্না, সাইয়্যেদ কুতুব কর্তৃক মিসরীয় মুসলিম ব্রাদারহুডের সংগঠন গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে নাড়া দিয়েছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নকে সবাই মিলে স্বৈরাচারী, নির্লজ্জ এবং অগণতান্ত্রিক কায়দায় উৎখাত করতেও দ্বিধা করেনি। প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সর্বোচ্চ শক্তির প্রয়োগ মুসলিম তরুণীরা যেভাবে মোকাবেলা করছে তাতে মনে হয়, লাল রক্তের সিঁড়ি আবার বিজয় আনতে বেশি সময় নেবে না। সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদূদী’র জামায়াতে ইসলামী নাড়া দিয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশসহ প্রাচ্য-পাশ্চাত্য এবং বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনকে। ফলে দিশেহারা ভারতসহ পশ্চিমারা। ভারত ইসলামের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। বাংলাদেশে সেই নির্লজ্জ, জঘন্য, অবৈধ ও কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত মহড়া এখন প্রকাশ্য। এখানেও ইসলাম প্রিয় তরুণ-যুবকরা হাজী তিতুমীর ও ব্রেলভীর চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জীবন দিয়ে সেই ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়িয়েছে। ভারতের ভেতরে বিশ কোটি আর এখানের ১৫ কোটিকে হিসেবে নিয়েই এগুতে হবে। পশ্চিমা সূত্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আমেরিকা এবং জার্মানিতে এখন সবচেয়ে বেশি মুসলিমের বসবাস। ব্রিটেন, ফ্রান্সেও মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে, তবু এ সংখ্যাই অনেক বড় এবং দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে। Cordoba-র অদ্ভুত সুন্দর সেই পুরনো মসজিদের কাছেই, আবার মুয়াজ্জিনের আজান শোনা যাচ্ছে। স্পেনের মাটি থেকে শেষ মুসলিমটিকে বিতাড়িত করার পাঁচশ’ বছর পর এই ঘটনা বড়ই আশার আলো ছড়াচ্ছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে যে ইসলামই একমাত্র বিস্তার লাভকারী ধর্র্ম। মসজিদগুলোতে আধুনিক শিক্ষিত যুবক-তরণদের সংখ্যাই বেশি। যাদের সামনে ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা ব্যাখ্যা, অবৈজ্ঞানিক আর অযৌক্তিক কোনোটাই যেন দাঁড় করানো কঠিন। নাস্তিকতা নয় আল কুরআনের বৈজ্ঞানিক আলোয় তরুণ প্রজন্মকে ইসলামমুখী করছে সবচেয়ে বেশি। যারা সত্যকে জানার জন্যই প্রচেষ্টারত, অন্য কোনো উদ্দেশ্য নয়। এমনটি বলেছেন- ড, আহমদ দিদাত, জন এল এসপোসিতো, ড. তারিক রমাদান, ইয়াহিয়া এমেরিক, মুরাদ হফম্যান এর মতো পণ্ডিতগণ। কারণ বর্তমান পৃথিবীতে ১৫০ কোটি মানুষ দ্বিধাহীন চিত্তে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনকে আল্লাহর বাণীরূপে গ্রহণ করেছে। তা হচ্ছে- A miracle of purity of style, of wisdom and of truth. আজ যারা পৃথিবীকে বদলাতে চান তারা কি নিজেকে বদলাতে পেরেছেন? অথচ আজকের বিুব্ধ পৃথিবীতে মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনাদর্শ প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যে নাড়া দিচ্ছে। আজ পৃথিবী যতই মানবাধিকার, ন্যায়বিচার আর আইনের শাসনের কথা বলুক না কেন, ইসলামের ধারে কাছেও কেউ যেতে পারেনি এবং পারবে না। প্রাচ্য-পাশ্চত্যে কোথাও আর মিথ্যা আবরণ দিয়ে তা আড়াল করা যাচ্ছে না। তরুণ বয়সে বালক মুহাম্মদ (সা.) তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে গড়ে তুলেছে হিলফুল ফুযুল। হজরে আসওয়াদ স্থানান্তরের মাধ্যমে সমাজের বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আর কলহের অবসান করেছেন মাত্র কয়েক মিনিটে। মুহাম্মদ (সা.)-এর উপর মাত্র ৪০ বছর বয়সে আল্লাহর কালামের উপর্স্থিতি তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে বিশ্বময়। মাত্র অল্প সময়ের মধ্যে ৫০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার গড়ে তোলেন ইসলামের ছায়াতলে। আজকের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরাও গবেষণা করে ঠিক করতে পারছেন না এটা আসলেই কিভাবে সম্ভব!। সম্প্রতি প্যারিস থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক lenouvel observation পত্রিকা মুসলমানদের দ্বীন ও দাওয়াতী কার্যক্রমের সম্পর্কে ফরাসী গোয়েন্দা রিপোর্টের মাধ্যমে জানা যায়- সংবিধান অনুগত মুসলমানদের কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে এমন শিল্পাঞ্চলীয় এলাকার মানুষ ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। রশিদ নামের এক ফরাসী যুবক জেলখানা থেকে বেরিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে-আমি নেশায় চরমভাবে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। চাহিদা মেটানোর জন্য চুরি ডাকাতি করতেও আমার কোনো অনুশোচনা হতো না। শেষ পর্যন্ত চুরি করার অভিযোগে আমাকে জেলখানায় যেতে হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যাওয়ার পর একজন টেক্সিচালক আমাকে অত্যন্ত আদর-যতœ করে মসজিদে নিয়ে যান। সেখানে কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করার পর আমার মনোজগতে এক অভাবনীয় বিপ্লব শুরু হয়। এখন আমি শুধু নেশা থেকেই তাওবা করিনি, বরং ইসলাম গ্রহণ করে এবাদত-বন্দেগীর মধ্যে মানসিক যে তৃপ্তি পেয়েছি সারা দুনিয়ার নেশা এবং ঐশ্বর্য আমাকে এতো মানসিক তৃপ্তি ও প্রশান্তি দিতে পারবে না; ইসলামিক সেন্টার, জাপান মুসলিম এসোসিয়েশন জাপানের তাহজীব তামাদ্দুনে, জীবনধারা ও শিক্ষা সংস্কৃতিতে মুসলমানদের মাধ্যমে এক নীরব বিপ্লব সাধিত হতে চলেছে। চীনের উওর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত গাংসু প্রদেশে প্রায় ১৩শ বছর আগে ইসলামের আবির্ভাব হয়; তবে হুই জাতির লোকেরাই অধিক হারে ইসলাম গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি জেন্স এর ডিফেন্স উইকলীকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে ইসলাম শুধু গ্রীসের জন্য নয় বরং গোটা ইউরোপের জন্য এক বিরাট আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য বিভাগের প্রধান থমাস ইরভিং পবিত্র কুরআনের অনুবাদ প্রকাশ করেছেন। বুদ্ধিজীবী এবং সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে কয়েক হাজার অমুসলিম আমেরিকান এই কুরআন অনুবাদগ্রন্থ ক্রয় করেন। তরুণ-যুবকদের ইসলামের দিকে ঝুঁকে পড়াকে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করেছে- দ্য ক্যাশ অব সিভিলাইজেশনস গ্রন্থে-শ্যামুয়েল পি হান্টিংটন ইসলামের দিকে তরুণ-যুবকদের ঝুঁকে পড়াকে দেখছেন আতঙ্ক হিসেবে। অনুসন্ধান করেছেন এর কারণ। তিনি লিখেছেন- “ইসলামের পুনঃজাগরণে যখন এশীয়রা তাদের অর্থনীতির বিপুল বিকাশের ফলে ক্রমান্বয়ে আরও দৃঢ় শক্তিসম্পন্ন হচ্ছে, মুসলমানেরা একই সঙ্গে তরুণরা ইসলামের ভেতর ফিরে যাচ্ছে; যেখানে তারা মনে করে তাদের পরিচয়, জীবনের অর্থ, স্থায়িত্ব, স্থিরতা, বৈধতা, উন্নয়ন, ক্ষমতা, আশা-আকাক্সা ইত্যাদির সূতিকাগার। তারা এক্ষেত্রে একটি স্লোগান দ্বারা সবকিছু বুঝাতে চায়, আর তা হলো, ‘ইসলামই হলো সমাধান’। কিন্তু পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকে প্রত্যাখ্যান করে এবং চূড়ান্তভাবে ইসলামের মধ্যে যাবতীয় সমস্যার সমাধান খুঁজে ফেরে। সুতরাং, তাদের মতে ইসলামই অধুনা বিশ্বের একমাত্র পথ। ইসলামী পুনঃজাগরণের মাধ্যমে মুসলমানেরা সকল বুদ্ধিবৃত্তিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলন যা সমগ্র মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাওয়া হয়। ধর্মীয় পুনঃজাগরণ আসলে একটি প্রধানধারা, তবে তা চরমপন্থী নয়, আর তা বিস্তৃত, কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো ছিটানো নয়। ইসলামী প্রতীক, বিশ্বাসসমূহ, আমলসমূহ, প্রতিষ্ঠানাদি. রাজনীতি এবং সাংগঠনিক তৎপরতা সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের দৃঢ়তা, আজ্ঞা এবং সমর্থন লাভ করে। যার পরিমাণ হবে বিলিয়ন মুসলমান, যার ব্যাপ্তি মরোক্কো থেকে ইন্দোনেশিয়া এবং নাইজেরিয়া থেকে কাজাকিস্তান অবধি। তাছাড়া বামপন্থী রাজনীতি সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আর তেমন শক্তভাবে দাঁড়াতে পারেনি। উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন নানা কারণে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি। কেননা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেবার জন্য যে বুদ্ধিমত্তা ও শক্তি প্রয়োজন তা অপাশ্চাত্য দেশে খুবই সীমিত মানুষের মধ্যে রয়েছে। তাই এটি একটি পাশ্চাত্যমুখী এলিটভিত্তিক আন্দোলন, যার গণভিত্তি নেই বললেই চলে”। মার্কিন মি. প্যাট্রিক বুকানন তাঁর ‘পাশ্চাত্যের মৃত্যু’ নামক গ্রন্থে লেখেন, ‘২০৫০ সাল পর্যন্ত আমেরিকার অবস্থা বর্তমান তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতো হয়ে যাবে। সেখানে মুসলমানদের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাবে। ২০৫০ সাল নাগাদ ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১৫ মিলিয়নে গিয়ে দাঁড়াবে। মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা বিবেচনা করে চ্যা›েসলর এঙ্গেলা মার্কেল মন্তব্য করেছেন- “জার্মানি একদিন ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত হবে এবং ডয়েসল্যান্ডে ইসলামের সবুজ অর্ধচন্দ্র পতাকা উড়বে। জার্মানি শিগগির ইসলামের একটি শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হবে। জার্মানিতে মুসলমানদের সংখ্যা ৫০ লাখ। আমেরিকায় ৩০ বছরের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যা ইহুদিদের ছাড়িয়ে যাবে আশঙ্কা করা হয়েছিল। আঠারো বছর আগে আমেরিকার ম্যাসাচুসেট্স বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সি¤েপাজিয়ামে বলা হয়েছে-স্থানীয়ভাবে মুসলমানদের গ্রহণযোগ্যতা ও মুসলমানদের প্রতি ধর্মীয় সহনশীলতাও বাড়ছে। পাবলিক স্কুলসমূহে সাপ্তাহিক ছুটির ¯¦ীকৃতি এবং ক্যাফেটেরিয়ায় শূকরের মাংস পরিবেশন বন্ধ করা হয়েছে। মুসলিম ছাত্রীরা আলাদা কাসে সাঁতার শিখতে পারে ও জিমনেসিয়ামে পা সমান লম্বা স্লাক্স পরতে পারে। এই সবই হচ্ছে -৯/১১ ঘটনার এক বছরের মধ্যেই অমেরিকাতে মুসলমানদের সংখ্যা ৩০ হাজার এবং ইউরোপে বিশ হাজারেরও অধিক বৃদ্ধির ফল। বিশ্ব এখন পশ্চিমাবলয়ের বাইরের পানে ছুটে চলেছে। ধর্মীয় ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো তার স্থান দখল করে চলেছে। ওয়েস্টফালিয়া (Westphalia) অনুযায়ী আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে ধর্মনিরপেক্ষ করার অর্থাৎ রাজনীতি থেকে ধর্মকে বাদ দেয়ার অপচেষ্টা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে পড়ছে। পাশ্চাত্য সভ্যতা প্রায় নিঃশেষ হতে চলেছে। এডওয়ার্ড মরটিমার বলেন, ধর্ম ক্রমাগত আন্তর্জাতিক বিষয়াদির ওপর কর্তৃত্ব ও প্রভাব বৃদ্ধি করছে। সুদূর ভবিষ্যতে মোহাম্মদ জয়ী হয়ে বেরিয়ে আসবেন। আর সেটাই ইসলামী বিশ্ব। মুহাম্মদ (সা.) এর আন্দোলনে সবচেয়ে তরুণ যুবকরাই আলোড়িত করেছিল। দশ বছরের তরুণ আলী আবুজেহেল আর আবু সুফিয়ানের রক্তচুকে উপেক্ষা করে রাসূলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। বিজয়ের সেনানায়ক তরুণ সেনাপতি খালিদই মুসলিম জাহানের বিজয় পতাকা রোম-পারস্য পর্যন্ত ছুয়ে দিয়েছে। জিব্রাল্টার পাড়ি দিয়ে তরুণ সেনানায়ক তারেক স্পেনের বুকে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করেছিল। ১৭ বছরের তরুণ মুহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধুপাড়ি দিয়ে ভারত বর্ষে ইসলামের বিজয় মশাল জ্বালিয়েছে। তারুণ্যের চেতনায় উজ্জীবিত সতের সাওয়ারী নিয়ে লক্ষণ সেনের বাংলায় মজলুম মানুষের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি। যুবক বাবর পেরেছিল বিশাল ভারতবর্ষে নতুন ইতিহাস রচনা করতে। মাত্র সতের বছর বয়সে সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী তার লেখনী, চিন্তা আর আন্দোলন সংগঠন গড়ে তুলে রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করেন। সাইয়েদ কুতুব, হাসান আল বান্নার মতো জগৎ সেরা ব্যক্তিরা তরুণ-যুবক হিসেবেই তাদের চিন্তা, লেখনী, আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে যুগের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করেছেন অত্যন্ত দৃঢতা, বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে। ইসলাম যুবকদের অনেক মর্যাদা দিয়েছে। যৌবনের ইবাদতই আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। কাল কিয়ামতের দিন আরশের ছায়ার নিচে ুসৎ চরিত্রশুুুীল যুবকদের জন্যই আসন হবে। সুতরাং আজকের তরুণ-যুবকরা যেভাবে ইসলামকে নিজের জীবনাদর্শ হিসেবে গ্রহণ করছে তাতে একথা সত্য আগামীর পৃথিবী হবে ইসলামের পৃথিবী। আজকের পৃথিবীর অবস্থা যেন রাসূল (সা.) এর ভবিষ্যৎ বাণীরই প্রতিচ্ছবি। mrkarim_80@yahoo.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন