বাংলাদেশ বার্তাঃমুলত দুটো কারনেই আরাস্তু খানকে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ডেইলী স্টারের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, ২১ জন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত না করায় এবং দুটো বড় কোম্পানীকে বিশাল আকারের ঋন দিতে অস্বীকার করায় আরাস্তুর চেয়ারম্যান পদটি দায়িত্ব নেয়ার এক বছর ও ৩ মাসের মাথায় শেষ হয়ে যায়।
জানা যায়, একটি অদৃশ্য মহল থেকে কয়েকমাস আগে আরাস্তুু খানের কাছে ব্যাংকের ২১ জন কর্মকর্তার একটি তালিকা যায়। বলা হয় এদের সবাইকে বরখাস্ত করতে হবে কেননা এদের সাথে জামায়াত-শিবিরের সম্পৃক্ততা আছে। এই তালিকায় ব্যাংকের এএমডি, ডিএমডি এবং মধ্যম সারির বেশ কিছু কর্মকর্তাও ছিলেন।
এই ২১ জনের মধ্যে একজন এএমডি, ৩ জন ডিএমডি এবং একজন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টকে জোর করে গত ৩ এপ্রিল পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহনও করা হয় দুদিনের মধ্যে।
কিন্তু এর পরপরই আরাস্তুু খানের উপর চাপ আরও বেড়ে যায় যাতে তালিকায় থাকা বাকি ১৬ জনকেও অনতিবিলম্বে বরখাস্ত করা হয়। সমস্যা শুরু হয় সেখান থেকেই। কেননা আরাস্তুু খান একসাথে এত কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিতে রাজী হননি। তিনি জানিয়েছিলেন, এতগুলো সিনিয়র অফিসারকে একসাথে সরিয়ে দিলে ব্যাংক সমস্যায় পড়ে যাবে।
আরাস্তু খানের এই অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংকের একজন পরিচালক সরকারকে বোঝান যে আরাস্তুু খানকে দিয়ে জামায়াত-শিবিরের লোকজনকে সরানো যাবেনা। আর তখনই আরাস্তুকে বলা হয় তিনি যাতে পদত্যাগ করেন। প্রবল এই চাপ সইতে না পেরে ১৭ এপ্রিল পদত্যাগ করেন তিনি আর সাথে সাথেই তার পদত্যাগপত্র গৃহীতও হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক নাজমুল হাসান। এর আগে নাজমুল হাসান ছিলেন স্বতন্ত্র পরিচালক। তাকে নতুন করে আরমাদা স্পিনিং মিলসের প্রতিনিধির দায়িত্ব দেয়া হয়, যেটা আগে আরাস্তুু খান নিজেই করতেন।
দ্বিতীয় যেই কারনে আরাস্তুুকে চলে যেতে হলো তাহলো তিনি বড় ঋন না দেয়ার ব্যপারে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন। একটি বড় কোম্পানী (যার রিয়েল এস্টেট ও সিমেন্টের ব্যবসা আছে) ইসলামী ব্যাংকের কাছে ১৪শ কোটি টাকা ঋন চায়। কিন্তু ব্যাংকের তহবিল সংকট আছে এই অজুহাত দেখিয়ে আরাস্তু এত বড় ঋনটি দিতে অস্বীকার করেন। এর পর আরেকটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানীও ৫০০ কোটি টাকা ঋন চাইলে আরাস্তু সেটাও না করে দেন। ঐ রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর মালিক সরকারের একজন গুরুত্বপুর্ন ব্যক্তি হওয়ায় এই ঋনটি স্যাংকশন না হওয়ার বিষয়টি সরকারের উপরমহলে চলে যায় ফলে কপাল পোড়ে আরাস্তুু খানের।
আরাস্তুুকে এই বিষয়ে ফোন দেয়া হলে তিনি ঋন না দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে সিনিয়র অফিসারদের বরখাস্তের প্রসংগে তিনি কোন কথা বলেননি। তিনি জানান, ইসলামী ব্যাংক নিয়ে তিনি আর কোন মন্তব্য করবেন না।
Courtesy: Ali Ahmad Mabrur
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন