ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

সোমবার, ২ মার্চ, ২০২০

গণসংযোগ পক্ষ: (০১-১৫ই মার্চ পুরুষ এবং ১৬-৩১শে মার্চ মহিলা ২০২০) উপলক্ষ্যে দেশবাসীর প্রতি আমীরে জামায়াতের আহবান

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীমঃ
সম্মানিত দেশবাসী ভাই ও বোনেরা
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আপনারা জানেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পদ্বতীতে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সে লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে এদেশের জনগনের পাশে থেকে মানুষের মুক্তি ও কল্যানের জন্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এ কাজ মহান আল্লাহ নির্দেশিত কাজ যা মহান আল্লাহ প্রেরিত সকল নবী-রাসূলগণ করে গেছেন। আমাদের প্রিয় নবী শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা,) নবুয়তী জীবনের সবটুকু সময়ই আল্লাহর দেয়া বিধান ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার ও প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন।
মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা,) কে শুধু ইসলাম প্রচার করার জন্যই পাঠাননি বরং অন্য সকল মতবাদের উপর ইসলামকে বিজয়ী করার দায়িত্বও দিয়েছিলেন। তাঁর অবর্তমানে উম্মতের উপরও একই দায়িত্ব বর্তায়। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন- "তিনিই সেই সত্তা যিনি তাঁর রাসুলকে হিদায়াত ও একমাত্র সত্য দ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেন যেন সেই দ্বীনকে আর সব দ্বীনের উপর বিজয়ী করেন।" (সূরা আত তাওবা : ৩৩, আল ফাতহ : ২৮. আস সফ: ৯ আয়াত)
শেষ নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর পূর্বে যত নবী-রাসূল এসেছেন তাঁদের প্রতি এ একই দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষনা করেছেন-"তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের সেই নিয়ম-বিধান নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, যার হুকুম তিনি নুহকে দিয়েছিলেন। আর যা (হে মুহাম্মাদ !) এখন তোমার প্রস্তুতি আমরা অহীর সাহায়্যে পাঠিয়েছি। আর যার হিদায়াত আমরা ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে দিয়েছিলাম এই তাকীদ সহকারে যে, কায়েম কর এ দ্বীনকে এবং এতে বিভেদ-বিভক্তি-বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করো না। " (সূরা আশ শূরা : ১৩)
কুরআনের অন্যত্র ঘোষনা করা হয়েছে "যে কেউ ইসলাম ছাড়া কোন ধর্ম-মতাদর্শ গ্রহন করতে চাইবে তার থেকে তা কখনো গ্রহন করা হবে না। আখেরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্থদের একজন।" (আলে ইমরান:৮৫)
সূরা বাকারার ২০৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে "হে ইমানদার গন তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরন করো না। কারন শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য ও ঘোষিত শত্রু।" ইসলাম কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্য আল্লাহ পাকের উপহার নয়, এটি সমগ্র মানবতার জন্য মহান রবের এক বিশাল করুনা। যে কোন পরিচয়ের উর্ধ্বে উঠে সকল মানুষই এ থেকে উপকৃত হবে। আল্লাহ পাক সকলেরই মহান স্রষ্ঠা।
সচেতন দেশবাসী
রাষ্টীয় শক্তি ইসলামী না হলে কোন মুসলমানের পক্ষেই ইসলাম পরিপূর্ণভাবে মানা সম্ভব নয়। এজন্যই নবী-রাসুলগন সমাজে দ্বীন কায়েমের সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ইকামাতে দ্বীন বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব একা একা পালন করা সম্ভব নয় বলে নবীগন (আ:) সংঘবদ্বভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। পবিত্র কুরানে আল্লাহ রব্বুল আলামীন ঘোষনা করেছেন-

" সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জু শক্তভাবে ধারন কর এবং দলিতলিতে লিপ্ত হয়ো না। "(সূরা আলে ইমরান:১০৩) সূরা আস সফের ৪নং আয়াতে বলা হয়েছে "আল্লাহ সে সব লোকদের ভালোবাসেন যারা তাঁর পথে সংগ্রাম করে সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় সুসংঘবদ্ধ হয়ে, মযবুতভাবে।"
মহান আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন যে, মেষের পাল থেকে আলাদা একটি মেষকে যেমন নেকড়ে বাঘ ধরে খায়, তেমনি জামায়ত থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলে শয়তান নামক নেকড়ে বাঘের কবলে পড়তে হয়। তাই জামায়াতে ইসলামী সংঘবদ্ধ ভাবে ইসলাম বিজয়ের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইসলামের পক্ষে বৃহৎ ঐক্য গড়ে তোলার কাজ করছে।
ঐক্যবদ্বভাবে দ্বীন পালন ও প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্নক চেষ্টা বা আন্দোলন করাকে সবচেয়ে বড় লাভজনক ব্যবসা বলে সূরা আস সফের ১০ থেকে ১৩ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে " হে ইমানদার লোকেরা আমি কি তোমাদের এমন এক ব্যবসার সন্দ্বান দেবো যা তোমাদের নাজাত (মুক্তি) দিবে বেদনা দায়ক আযাব থেকে ? তা হলো তোমরা ইমান রাখবে আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রসূলের প্রতি, আর জিহাদ (চেষ্টা-সংগ্রাম) করবে আল্লাহর পথে তোমাদের অর্থ-সম্পদ এবং জান-প্রান দিয়ে।। তোমাদের জন্য এটাই কল্যাণকর যদি তোমরা জনো। এব্যসা করলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন তোমাদোর গুনাহসমূহ এবং তোমাদের প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে যার নীচ দিয়ে থাকবে বহমান নদ-নদীর নহর। আরো থাকবে স্থায়ী জান্নাতে চমৎকার আবাস। (বাসগৃহ) সমূহ। এটাই মহা সাফল্য। তোমাদের জন্য আরো থাকবে যা তোমরা (দুনিয়ার জীবনে) আকাঙ্খা করো সেটা, অর্থাৎ আল্লাহর সাহায়্য আর নিকটবর্তী বিজয়। হে নবী মুমিনদের সূ-সংবাদ দাও।
এ ব্যবসাকে সফল পরিনতিতে পৌঁছানোর জন্যই ঐক্যবদ্ব হতে হবে। আর ভাতৃত্বের বন্দ্বনই ঐক্যকে অটুট রাখতে পারে। এ ঐক্যই হলো শয়তান ও বাতিল শক্তি থেকে আত্নরক্ষাকারী ঢাল এবং গুরুত্বপূর্ণ ফরজ। আল্লাহর প্রিয়ভাজন হবার উৎকৃষ্টতম উপায়।
সম্মানিত ভাই ও বোনেরা
আপনারা জানেন যে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। বর্তমান ক্ষমতাসীনদের কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা, অমানবিক কায়দায় প্রতিপক্ষকে দমন, হয়রানী হামলা-মামলা দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দুূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, চাঁদাবাজি, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, মাদকের ভয়াবহ ছোবল ইত্যাদি কারণে মানুষ আজ দিশেহারা। জনগন তাদের ভোটাধিকারটুকুও হারিয়েছে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্বে মিথ্যা প্রচারনা, অপবাদ, ইসলাম ও ইসলাম শিক্ষার বিরুদ্বে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চলছে যার মাধ্যমে প্রকারান্তরে সূ-কৌশলে ইসলামের ভিত্তিমূলে আঘাত হানা হচ্ছে। আলেম-ওলামা ও ধর্মপরায়ন মানুষসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও নানা ভাবে নিগৃহীত হচ্ছে। নৈরাজ্য, নিরাপত্তাহীনতা, হতাশা, উদ্বেগ, উৎকন্ঠা আজ নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের বাইরের অবস্থাও উদ্বেগজনক। বর্তমান বিশ্বে ৫৭ টি মুসলিম দেশ, প্রায় ১৫০ কোটি মুসলিম জনসংখ্যা, বিশ্ব সম্পদের প্রায় ৫৫% মুসলমানদের হাতে কিন্তু সারা বিশ্বে মুসলিমগন নির্যাতিত, নিপীড়িত, অবহেলিত ও পদদলিত।

আজ সমস্ত আরব বিশ্ব একটি টালমাটাল অবস্থার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে, অনৈক্য, হানা-হানি, এক ভাইয়ের রক্তে অপর ভাইয়ের হাত রন্জিত। মাত্র কয়েক লাখ ইহুদির হাতে মুসলমানতের ইজ্জত আব্রু ও সম্মান ভুলুন্ঠিত। মাযানমারের মুসলমানরা আজ নির্বাসিত, রাষ্টহীন ও মযলুম। কাশ্মীরের ভাগ্যাহত মুসলমান, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, সীরিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের অবস্থা আমাদের অজানা নয়। প্রতিপক্ষ শক্তি মুসলমানদের বিরুদ্বে আজ ঐক্যবদ্ব আর আমরা মুসলিমরা অনৈক্য ও প্রতিহিংসায় লিপ্ত। অথচ মুসলমানদেরই হওয়ার কথা ছিল সীসাঢালা প্রাচীরের মত ঐক্যবদ্ব।
এমতাবস্থায় আল্লাহ রব্বুল আলামীনের সেই আয়াতের প্রতিধ্বনিই যেন আমরা শুতে পাই যেখানে মহান আল্লাহ বলেন-
"তোমাদের কী হয়েছে, কেন তোমরা সংগ্রাম করছো না আল্লাহর পথে ! সেই সব দুর্বল অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্যে, যারা ফরিয়াদ করে বলছে: "আমাদের প্রভু ! আমাদের বের করে নাও এই জনপদ থেকে। এর অধিবাসীরা যালিম। আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে একজন অলির (অভিভাবকের) ব্যবস্থা করে দাও এবং ব্যবস্থা করে দাও একজন সাহায্যকারীর। " (সূরা আন নিসা: ৭৫)

সূ-প্রিয় দেশবাসী
বস্তুত: আজ আমাদের দেশের মানুষ এ কঠিন সংকট থেকে পরিত্রান চায়। কায়েমী স্বার্থবাদী মহলের ভয়ে অনেকেই হক কথা বলতে সাহস পায় না। অথচ পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় প্রতিটি সমাজ বিপ্লবে প্রভাবশালী ও স্বার্থবাদী মহল নয় সাধারন মানুষের আহাজারী ও আকাঙ্খারই বিজয় হয়েছে। সংকটাপন্ন সভ্যতায় মহান আল্লাহই বিপন্ন মানুষের মুক্তির জন্য নতুন শক্তির জন্ম দেন। আমরা বাংলাদেশের রাজনীতির বিপর্যস্থ অবস্থায় জনগনের মনে আশার আলো জালাতে চাই। যে রাজনীতি প্রতিসিংসার বদলে রক্তপাতহীনভাবে মক্কা বিজয় ও পরম শত্রুকে নিরাপত্তা দিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরার শিক্ষা দেয় সে রাজনীতি দিয়ে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র এদেশের জনগনকে উপহার দেয়ার জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি, একাজ ইমানের দাবী, শেষ নবীর (সা,) মূল মিশন ও সাহাবায়ে কেরামের পবিত্র জীবন ধারা। মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন বলেছেন- "যদি জনপদের লোকেরা ইমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতো তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর বরকতসমূহের দুয়ার খুলে দিতাম।।" (সূরা আল আরাফ : ৯৬)

এ ধরনের একটি সৎ, আল্লাহভীরু, জবাবদিহিতার সমাজ, জান্নাতি সমাজের কারিগর তৈরীর স্কীম হাতে নিয়েই জামায়াত অগ্রসর হচ্ছে।
তাই এদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ, সুশীল সমাজ, আলেম-উলামা, শ্রমিক-জনতা সকলের কাছে আবেদন আসুন! এমন একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলি যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই জানমালের নিরাপত্তাসহ পরম শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।
আর একাজে প্রচেষ্টারত শত-শত শহীদের দ্বীনি কাফেলা "বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে আপনিও শামিল হয়ে দুনিয়ার কল্যাণ ও আখেরাতের নাজাতের পথে এগিয়ে আসবেন, এটাই আমার প্রত্তাসা।।
মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সহীহ বুঝ দান করুন এবং আল্লাহ তা'য়ালা প্রদত্ত ইকামতে দ্বীনের কাজে যথার্থ ভূমিকা রাখার তৌফিক দান করুন। আমীন।।
আল্লাহ হাফিজ
ডা: মো: শফিকুর রহমান
আমীর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন