ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন খবর প্রকাশের নিন্দা ও প্রতিবাদ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  দৈনিক ইত্তেফাক, কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন সহ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ‘প্রেমে রাজি না হওয়ায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে কুপিয়েছে শিবির ক্যাডার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন খবর প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। 

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারী জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, এই প্রতিবেদন সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং নীতিহীন সাংবাদিকতার নিকৃষ্ট নজির। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে প্রেমে রাজি না হওয়ায় জামায়াত নেতার ছেলে শিবির ক্যাডার জাহিদুল ইসলাম মাদ্রাসা ছাত্রীকে কুপিয়েছে। এর পক্ষে ‘শিবির ক্যাডার’ এই বিদ্বেষমূলক মুখস্ত বুলি ছাড়া প্রতিবেদক তার সাংগঠনিক পরিচয় বা কোন তথ্য-প্রমাণ দেননি। আহত ছাত্রী, তার পরিবার বা ছাত্রশিবিরের কোন দায়িত্বশীলের বক্তব্যও নেয়া হয়নি। শুধুমাত্র বিদ্বেষমূলক মনোভাব থেকে চাতুরতার সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এই ঘৃণ্য অপপ্রচার চালানো হয়েছে। 

মূলত হামলাকারী জাহিদুল ইসলাম শিবিরের কেউ নয় বরং ছাত্রসেনা হোয়ানক ইউনিয়ন এর ২ নং ওয়ার্ড সেক্রেটারী এবং তার বাবার সাথেও জামায়াতে ইসলামীর দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। একটি মিথ্যা সংবাদ পরিকল্পিতভাবে স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিকগুলোতে সিন্ডিকেট করে প্রচার করা হলুদ সাংবাদিকতা ছাড়া কিছু নয়। সত্য গোপন করে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর এই ঘৃণ্য প্রচেষ্টা সাংবাদিকতার কোন নীতিমালার মধ্যে পড়ে তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা এই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সত্যকে পাশ কাটিয়ে যেখানে সেখানে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে অপপ্রচার করা কোন সাংবাদিকতা নয় বরং সাংবাদিকতার লেবাসে প্রতারণার শামিল। জনগণ কোন গণমাধ্যম থেকে এমন বিতর্কিত ভূমিকা আশা করেনা। আমরা আশা করি ইত্তেফাক, কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন কর্তৃপক্ষ ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন এবং সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে বিভ্রান্তি নিরসন করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবেন। 

নেতৃবৃন্দ এ ধরণের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক ও গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানান।

সরকার অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করে গণদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে----ড. রেজাউল করিম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, জনমত ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি প্রমাণ করে সরকার জনগণের কল্যাণের চেয়ে নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত। মূলত এই গণবিরোধী সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই। তাই গণবিচ্ছিন্ন সরকারের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি গ্যাসের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় সরকারকে গণরোষের মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি আজ রাজধানীতে দফায় দফায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচীর অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে একথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি ১০ নং গোলচত্তর থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ ১১নং এ গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক আনোয়ারুর করিম, আবুল হাসান, আশরাফুল আলম, এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল, আলাউদ্দীন মোল্লা, নাসির উদ্দীন ও আব্দুস সাকী এবং ছাত্রনেতা আব্দুল আলীম প্রমূখ।

ড. রেজাউল করিম বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণেই গণদুর্ভোগ এখন চরমে ওঠেছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি না পেলেও দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি এখন লাগামহীন। উপর্যুপরি জনগণের উপর একের পর এক করের বোঝা চাপিয়ে অনির্বাচিত সরকার নিজেদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাস ও কামনা-বাসনা চরিতার্থ করতে তৎপর। মূলত আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই গণদুর্ভোগ বৃদ্ধি পায় এবং দেশে দুর্ভিক্ষের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মূলত অনির্বাচিত ও গণবিরোধী সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন গণদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই ফ্যাসীবাদী ও স্বৈরাচারি সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। 

তিনি বলেন, দেশের গ্যাস খাত কোন লোকসানী বা অলাভজনক খাত নয়। বিগত অর্থবছরে পেট্রোবাংলা প্রভূত মুনাফা করলেও সরকার কোন কারণ ছাড়াই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। এ বিষয়ে জনমত ও বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামতও উপেক্ষিত হয়েছে। একদিকে সরকার রাষ্ট্রের লোকসানী খাতগুলোকে অযৌক্তিকভাবে ভর্তূকি দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের লুটপাটের সুযোগ করে দিচ্ছে, অপরদিকে সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিতভাবে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করে জনজীবনকে দুর্বিসহ করে তোলা হচ্ছে। এই মূল্যবৃদ্ধির ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। ফলে নিম্মমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের মানুষের মধ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পরবে। তিনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে গণদুর্ভোগ থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে গ্যাসের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবীতে চান্দগাঁও জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং; গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে চান্দগাঁও থানা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত। 
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চান্দগাঁও থানার উদ্যাগে জামায়াত নেতা আবু জাওয়াদের নেতৃত্বে অসাভাবিক, অযৌক্তিক ও অন্যায়ভাবে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে  বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ নগরীর বহদ্দারহট এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়।
 বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে ইবনে হোসাইন, এস. এম. মাহমুদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। 
বক্তারা আরো বলেন, সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনজীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে ক্রমেই গণদুর্ভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে। একের পর এক সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পরছে। সরকারের গণবিরোধীতার ধারাবাহিকতায় আগামী ১ মার্চ ও ১ জুন দু’দফায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তা নতুন করে গণদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে এবং দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটবে।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার প্রথম ধাপে ১ মার্চ থেকে একচুলা ৭৫০ টাকা, দুই চুলা ৮০০ টাকা, সিএনজি প্রতি ঘন মিটারে ৩৮ টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় ১ জুন থেকে ১ চুলা ৯০০ টাকা, দুই চুলা ৯৫০ টাকা, সিএনজি গ্যাসের দাম প্রতি ঘন মিটারে ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। সরকারের এ অন্যায় সিদ্ধান্তে জাতীয় অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে। যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছবে।

বক্তারা আরো বলেন, মূলত সরকার জনগণের কথা না ভেবে দুর্নীতি ও লুটপাটকে নির্বিঘ্ন করতেই সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। বক্তারা অবিলম্বে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করতে আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারির শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচী সফল করতে ঢাকা মহানগরী উত্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের অধস্তন সংগঠন ও সকল স্তরের নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান।

সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

সরকার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা গণদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে এবং দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতির মারাত্নক অবনতি ঘটাবে------------মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং গণবিরোধী সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী কেন্দ্র ঘোষিত আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারির শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচী সর্বাত্মকভাবে সফল করতে ঢাকা মহানগরী উত্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের অধঃস্তন সংগঠন ও সকল স্তরের নগরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
এক বিবৃতিতে মহানগরী উত্তর আমীর বলেন, সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনজীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে ক্রমেই গণদুর্ভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে। একের পর এক সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পরছে। সরকারের গণবিরোধীতার ধারাবাহিকতায় আগামী ১ মার্চ ও ১ জুন দু’দফায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তা নতুন করে গণদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে এবং দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটবে।
তিনি বলেন, সরকার প্রথম ধাপে ১ মার্চ থেকে একচুলা ৭৫০ টাকা, দুই চুলা ৮০০ টাকা, সিএনজি প্রতি ঘন মিটারে ৩৮ টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় ১ জুন থেকে ১ চুলা ৯০০ টাকা, দুই চুলা ৯৫০ টাকা, সিএনজি গ্যাসের দাম প্রতি ঘন মিটারে ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। সরকারের এ অন্যায় সিদ্ধান্তে জাতীয় অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে। যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছবে।

তিনি আরও বলেন, মূলত সরকার জনগণের কথা না ভেবে দুর্নীতি ও লুটপাটকে নির্বিঘœ করতেই সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। তিনি অবলম্বে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করতে আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারির শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচী সফল করতে ঢাকা মহানগরী উত্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের অধস্তন সংগঠন ও সকল স্তরের নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান।

'আম্মা ডাবল’-এর জ্বালা এবং অবৈধতার ভারঃ মিনার রশিদ

একজন মানুষ যখন অন্যকে গালি দেয়, অভিশাপ দেয়, ভেঙচি কাটে কিংবা কটুকথা বলে, তখন তাতে ওই ব্যক্তির প্রতি তার আক্রোশ, ক্ষোভ, হতাশা, হিংসা ইত্যাদিই প্রকাশ পায়। সাধারণত অশান্তি বা আনকমফোর্টে থাকা ব্যক্তি অধিকতর কমফোর্টে থাকা ব্যক্তির প্রতি এ ধরনের রসায়ন দেখিয়ে থাকে।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বেগম খালেদা জিয়া- এ দু’জনের মধ্যে যেকোনো বিচারে নিঃসন্দেহে অধিকতর সুখশান্তিতে কিংবা কমফোর্টে আছেন শেখ হাসিনা।
এ অবস্থায় প্রতিপক্ষকে উদ্দেশ করে কটুকথা বেশি উচ্চারিত হওয়ার কথা বেগম খালেদা জিয়ার মুখ থেকে। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে তার উল্টো। দুই নেত্রীর একজন আরেকজন সম্পর্কে এযাবৎ যত মন্তব্য করেছেন এবং এখনো সময়ে সময়ে করছেন, সেসবের দিকে সামান্য দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেই পার্থক্যটি যে কারো কাছে স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়বে। খালেদা জিয়ার পরনের শাড়ি-ব্লাউজ, ঘুমানোর অভ্যাস থেকে শুরু করে পরীক্ষার মার্কশিট- এমন কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নেই যা উচ্চারিত হয়নি। তবে বেগম জিয়ার স্বল্প কথা বলার অভ্যাস জাতিকে এ ব্যাপারে অনেকটা রক্ষা করেছে। তিনিও প্রতিপক্ষের মতো একই মাইন্ডসেট বা মানসিক গড়নের হলে নারীজাতির জন্য আসলেই ‘খবর’ ছিল।
কাজেই কী এমন বিষয় রয়েছে যা এখনো বেগম জিয়ার প্রতি আক্রোশ, ক্রোধ বা ক্ষোভ কমাতে পারেনি তা মনোবিজ্ঞানী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের গবেষণার বিষয়। বেগম খালেদা জিয়া নীরবে বা নিভৃতে এমন কী কথা উচ্চারণ করেন, যার কারণে প্রতিপক্ষ এমনভাবে অগ্নিশর্মা হয়ে পড়ে।
এই উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমার মনে পড়ে যায় আমাদের এক স্কুলশিক্ষকের গল্প। সেই স্যার পড়ার ফাঁকে ফাঁকে মজার মজার গল্প বলতেন। স্যারের বলা সেই গল্পগুলো হতো জীবনমুখী ও হাস্যরসে ভরপুর। ক্লাসের কোনো মেয়ে ভবিষ্যতে দজ্জাল শাশুড়ির পাল্লায় পড়লে কিভাবে আত্মরক্ষা করতে হবে, সেই কৌশলও শিখিয়ে দিতেন। সেই স্যারের বলা মজার একটি গল্প এখানে প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে হচ্ছে।
এক দজ্জাল শাশুড়ি। ছেলেবউকে উঠতে বসতে বকাঝকা করে। তখন গ্রামের এক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি ওই বউকে কিছু বুদ্ধি বাতলে দেন।
পরদিন ঘুম থেকে উঠে শাশুড়ি যথারীতি বউকে গালিগালাজ শুরু করে দেয়। বউ কাছে গিয়ে আস্তে করে বলে- ‘আম্মা, এতক্ষণ আপনি আমাকে যা যা বলেছেন আমি আপনাকে তার ডাবল মানে দুই গুণ বললাম।’ এই কথা শুনে শাশুড়ি ক্ষেপে গিয়ে আরো জোরে বকাবকি শুরু করে দেয়। বউ আবারো কাছে গিয়ে আস্তে করে বলে, ‘আম্মা ডাবল’।
এখন শাশুড়ি যতবার গালি দেয় বউ ততবার কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে, ‘আম্মা ডাবল’। গ্রামের মানুষ বলাবলি শুরু করে দিয়েছে, ‘এত মাটির মতো একটা মেয়েকে এমন গালাগালি কেন করছে? বুড়িটা কি শেষমেশ পাগল হয়ে গেল নাকি?’
এভাবে বকতে বকতে এক সময় শাশুড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একদিন বউকে ডেকে বলেÑ ‘দেখো বউমা, তোমার পায়ে পড়ি। তুমি আমাকে আর ‘আম্মা ডাবল’ এ কথাটি বোলো না। আমিও তোমাকে আর কোনো দিন গালি দেবো না।’
আমার মনে হচ্ছে, স্বল্পভাষী নেত্রী তার প্রতিপক্ষকে ‘আম্মা ডাবল’ স্টাইলের কোনো কথা বলে থাকতে পারেন। যে শব্দটি ছোট্ট কিন্তু প্রতিপক্ষের ওপর সেটা কাজ করে মারাত্মক। সেই ছোট্ট কথাটি সম্ভবত ‘অবৈধ’। এই অবৈধতার একটা ভার রয়েছে। সেই ভারের কারণেই সরকার এবং সরকারবান্ধব সুশীলসমাজের এত উসখুস, এত ছটফট, এত লেফরাইট। এই ভার লাঘবের কারণেই হয়তো এখন বিএনপিকে যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে নেয়া দরকার হয়ে পড়েছে।
আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল অধিবেশনে দলটির দীর্ঘ দিনের সভাপতি এবং ২০১৪ সালের বিতর্কিত ও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসা প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু সুন্দর ও প্রীতিকর কথা উচ্চারণ করেছেন। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আর কোনো দুর্নাম কুড়াতে চান না। তিনি সামনে একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাসনা পোষণ করেছেন। আবার একই মুখে বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতকে আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না।
নেত্রীর এই জটিল মনোবাসনা পূর্ণ করতেই পুরো পলিটিক্যাল, ইন্টেলেকচুয়াল ও কালচারাল মেশিনারিজ কাজে নেমে পড়েছে। অবৈধতার যে একটা ভার আছে, সেটাই স্পষ্ট হয়ে পড়েছে খোদ নেত্রীসহ শাসক শ্রেণীর বিভিন্ন উচ্চারণ ও আচরণে। তাই মরিয়া হয়ে উঠছে যেকোনোভাবে বিএনপিকে সামনের নির্বাচনে নিয়ে এসে বৈধতা সংগ্রহ করতে।
এ কারণেই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে প্রেসিডেন্টের সংলাপ, সার্চ কমিটি গঠন এবং অন্য সব লেফরাইট। পুরো বিষয়টি হয়েছে পর্বতের মূষিক প্রসবের মতো। এটাকে গ্রহণযোগ্য বানানোর জন্য পুরো জাতিকে নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক লেফরাইটটুকু করা হয়েছে। কিন্তু দেশের ভেতরে ও বাইরে সবার কাছেই সরকারের মতলবটি স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। অনেক লেফরাইট করে সিইসি নির্বাচনের পর পরই বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ইকোনমিক্স তাদের সর্বশেষ একটি আর্টিক্যালে এটাকে আখ্যায়িত করেছেন ‘কন্ট্রোলড ডেমোক্র্যাসি’। কাজেই এই ভার লাঘব এত সহজ হবে না।
এ দেশের কিছু সুশীল এবং তাদের তথাকথিত দু’টি নিরপেক্ষ পত্রিকার নড়াচড়াও লক্ষ করার মতো। এরা এখন জনতার মঞ্চের নেতা ও বিশেষ ক্যাডার হিসেবে বিশেষভাবে চিহ্নিত কমিশনকে গ্রহণযোগ্য করার মিশনে নেমে পড়েছেন। সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের নিয়ে কোনো মন্তব্য করে ফেললে সুশীলসমাজ পাপ, পাপ বলে আঁতকে উঠছেন। নির্বাচন কমিশনারদের একটি বিশেষ শব্দ বলে ফেলায় ৫০০ কোটি টাকার মানহানি মামলাও দায়ের হয়ে গেছে।
অথচ এই পত্রিকাগুলো একই সাংবিধানিক পদে থাকা বিচারপতি এম এ আজিজকে নিয়ে কী কাণ্ডকীর্তিই না করেছিলেন। যদিও বিচারপতি হিসেবে তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কোনো অনৈতিকতার প্রমাণ মেলেনি। এই সমালোচনার আগে তাকেও তার নিরপেক্ষতা প্রমাণের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। আরেক মহামান্য প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। বিচারপতি আজিজের মুখকে যতভাবে বিকৃত করা সম্ভব এই পত্রিকাগুলো তা করে বিভিন্ন কার্টুন আঁকা হয়েছে। এই পত্রিকা ও তাদের সুশীলসমাজ ইনিয়ে-বিনিয়ে নতুন কমিশনকে নিরপেক্ষ প্রমাণ করার সুযোগ কামনা করছে।
এই নির্বাচন কমিশন কেমন হবে সে সম্পর্কে সবচেয়ে দামি ভবিষ্যদ্বাণীটি করে গেছেন বিদায়ী সিইসি রকীবউদ্দিন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, নতুন সিইসি তাদের মতোই ‘সুনামের’ সাথে দায়িত্ব পালন করবেন। দেশবাসীও সেটাই অনুমান করছেন।
এ দেশে সিভিল সোসাইটি তথা সুশীলসমাজ শব্দটিকে জোকারের প্রতিশব্দ বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এরা জাতির মোরাল ব্রিগেইড হিসেবে কাজ না করে বিভিন্ন সময় জোকারদের মতোই প্যারেড বা লেফরাইট করেন। মিডিয়াগুলো সুশীলসমাজ হিসেবে ঘুরেফিরে এদের কয়েকজনকেই প্রদর্শন করে।
ব্যাপারটা অনেকটা গল্পের ধূর্ত শিয়ালের মতো। এক কুমির তার বাচ্চাদের শিয়াল পণ্ডিতের আবাসিক পাঠশালায় পড়তে পাঠায়। কিন্তু পণ্ডিত সাব খেয়ে খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। মাত্র একটি কুমিরছানাকে প্রদর্শনের নিমিত্তে রেখে দেয়। কুমির নিজের সন্তানদের দেখতে এলে সেই একটি ছানাকে আমাদের মিডিয়ার সুশীল প্রদর্শনের মতো বারবার এনে দেখায়। এক সময় শেষ ছানাটিকেও খেয়ে ফেলে। তখনই কুমির বিষয়টি ঠাওর করতে পারে। তখন শিয়ালকে ধরার সুযোগ খুঁজে। একদিন শিয়াল নদী পার হতে গেলে কুমিরের কাছে ধরা পড়ে যায়। কুমির শিয়ালের পা জড়িয়ে ধরে। তখন নদীর স্রোতকে উদ্দেশ করে শিয়াল বলে, আরে দেখো কী বোকা কুমির। আমার পা রেখে লাঠিতে জড়িয়ে ধরেছে। এ কথা শুনে কুমির বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং শিয়ালের পা ছেড়ে লাঠি জড়িয়ে ধরে। সেই সুযোগে শিয়াল পগারপার হয়ে যায়।
এ দেশের কিছু মিডিয়া গণমাধ্যম না হয়ে, ফ্যাসিবাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে ধূর্ত শিয়ালের ভূমিকায় নেমেছে। বিরোধী দল যখন শিয়ালের পা জড়িয়ে ধরে তখন এরা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে লাঠিতে ধরায়।
নির্বাচন কমিশনার খুঁজে বের করতে প্রথম ছয়জনকে নিয়ে সার্চ কমিটি করা হলো। এরা আবার আরো ১৬ জনকে প্রদর্শন করলেন। এরা প্রত্যেকেই হেভি ভাব নিয়ে জাতির সামনে হাজির হলেন। পর্বতের মূষিক প্রসবের মতো নতুন কমিশনকে উপস্থাপন করে বিদায় নিয়েছেন। তাদের কথা যে রাখা হয়নি তা নিয়ে কোনো অনুতাপ, ক্ষোভ বা মনোকষ্ট নেই। যারা তাদেরকে এ রকম জোকার বানিয়ে ফেলল তাদেরকে কোনো প্রশ্নও জিজ্ঞেস করে না।
আসলে মতলববাজ এই গোষ্ঠীটি দেশের সিভিল সোসাইটির বিরাট শক্তিকে সম্পূর্ণ অকেজো করে রেখেছে এবং জাতিকে আজকের এই বিপদে ফেলেছে। এদের কল্যাণেই এ দেশে এক-এগারো এসেছে এবং দেশ ও জাতিকে সম্ভবত ৪০ বছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এদের বদৌলতে ও পৃষ্ঠপোষকতায় আইয়ুব খানের প্রেতাত্মা জাতির মাথায় আবারো চেপে বসেছে। ২০২১ সালে এ জাতিকে শুনতে হয়, গণতন্ত্রের আগে উন্নয়ন। সেই এক-এগারোর সময় থেকে শুরু হয়েছে।
এখনো সেই কাজ অব্যাহত রয়েছে। প্রতিটি দলেই কিছু বসন্তের কোকিল থাকে। অনুকূল পরিবেশে এদের চেনা কষ্ট হলেও প্রতিকূল পরিবেশে এদেরকে সহজেই চেনা যায়। বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামোকে এমনভাবে তছনছ করা হয়েছে যে দলের ভেতর থেকে এ ধরনের একটা ‘গৃহপালিত বিএনপি’কে বের করে আনা মোটেই কঠিন নয়। কিন্তু এদের পথে মূল বাধা স্বয়ং বেগম খালেদা জিয়া এবং তার পরিবার। কারণ তাকে বাগে আনতে না পারলে অন্য কাউকে বসালেও তিনি অন্য এক রাজনৈতিক ভাঁড় হয়ে পড়বেন। পরিস্থিতির চাপে পড়ে এ দেশের মানুষ মুখ বন্ধ করে রেখেছে, কিন্তু মগজ বন্ধ করে রাখেনি। মগজের কোষগুলো এখনো সক্রিয়। যেকোনো ড্রামা তারা ধরতে পারে। সময়ের বাঁকে বাঁকে রাজনৈতিক ভাঁড়কে এ দেশের মানুষ সহজেই চিনে ফেলে। কাজেই বিএনপির ভেতর থেকে নতুন এক এরশাদ কিংবা রাজনৈতিক ভাঁড় তৈরি করে সরকারের খুব একটা লাভ হবে না।
সরকার বাইরে থেকে স্বাভাবিকতার বেশ ধারণ করলেও ভেতরে ভেতরে একটা দারুণ অস্বস্তিতে রয়েছে। কারণ অবৈধতার একটা ভার রয়েছে। সেই ভারটিই অনুভূত হচ্ছে শাসক দলটির বিভিন্ন আচরণ ও উচ্চারণে। এদের কথাবার্তা অসংলগ্ন।
একটা সভ্য ও প্রায় শত বছর ধরে গণতন্ত্রের চর্চা করা একটা জাতিকে এরা সাব-হিউম্যান লেবেলের প্রাণী জ্ঞান করেছে। এর শাস্তি বা প্রতিফল আজ হোক বা কাল হোক এদেরকে পেতেই হবে। ইতিহাস এদের এই পাপকে কখনোই ক্ষমা করবে না।
যুগে যুগে স্বৈরশাসকেরা নিজেদের রক্ষা করার জন্য বাহিনী তৈরি করেছে। কিন্তু প্রয়োজনের সময় এই বাহিনী কোনো কাজে আসে না। এরা তখন নিজেদের রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ক্ষমতায় থাকতে এরা জনগণের ওপর স্টিমরোলার চালায়। ফলে এদের ওপর জনতার রোষ বাড়তেই থাকে। নীরব জনগণ সুযোগ খুঁজতে থাকে।
অনেকের মনেই প্রশ্ন, বিএনপির কি উচিত হবে অবৈধতার এই ভার মুক্ত করা?
অনেকেই ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করাকে বোকামি বলে মনে করছেন। এখানে একটা জিনিস লক্ষ করা দরকার। এই সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছিল তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে। সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণকারী ফোরাম। ভুল হোক শুদ্ধ হোকÑ সেটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। ২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনার মন্তব্যটি লক্ষণীয়, ‘বিশ্বাস করুন আমরা ইচ্ছা করলেই এরশাদকে বিরোধী দল বানাতে পারতাম। বিশ্বাস করুন, একটু ইচ্ছা করলেই পারতাম।’ ইউটিউব থেকে সেই ভিডিওটি আরেকবার দেখে নিতে পারেন।
নামমাত্র হলেও তখন একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল। তার পরও সেই নির্বাচনের ওপর যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সে তুলনায় ২০১৪ ছিল সম্পূর্ণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে। ২০১৪-তে এরশাদকে বিরোধী দলে বসিয়ে বিএনপিকে আট-দশটি সিট ধরিয়ে দিলে আসলেই কী করার ছিল, বরং আজ যে অবৈধতার ভার সরকারের মাথায় চেপেছে, তা তখন থাকত না।
কাজেই সামনের নির্বাচনের আগে নির্বাচন সহায়ক সরকার না এলে বিএনপির কখনোই উচিত হবে না সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। দলের কয়েকজন নেতার এমপি হয়ে একটু নিরাপত্তা ও আরামের ব্যবস্থা হলেও সারা দেশের মানুষ ও গণতন্ত্র মারাত্মক সঙ্কটে পড়বে। জোর করেই যদি ক্ষমতায় থাকতে চায়, তবে গা থেকে অবৈধতার ভারটি লাঘব করে বিএনপির ফায়দা কোথায়?
এই সরকারের পলিসি হলো, নিজেদের অবস্থান থেকে সরবে না। কিন্তু তাদেরকে গণতান্ত্রিক ডাকতে হবে। দশ ঘাটের জল খাবেন, পুরনো অভ্যাস বন্ধ করবেন না, অনুতপ্ত হবেন না। কিন্তু তাদেরকে বৈধতার সার্টিফিকেট বা স্বীকৃতি দিতে হবে। ভালো কাজ না করে শুধু ভালো কথা বলে এই সরকার পার পেতে চাচ্ছে। কথায় আর কাজে দূরত্ব বেড়েই চলছে।
বর্তমান এমপিদের জনগণ নির্বাচিত করেননি। এই এমপিরা ওবায়দুল কাদেরদের তৈরি করা সিইসি রকীবের ফ্যাক্টরিতে সৃষ্টি। এনালগ সিস্টেমে রকীবদের অনেক দুর্নাম শুনতে হয়েছে। এখন খেদমতের সামনে আসছে ডিজিটাল ভোটিং মেশিন। তখন এই এমপিরা আরো বড় আব্দুল হয়ে পড়বেন। কপালে আরো চড়-থাপ্পড় অপেক্ষায় আছে।
কাজেই শুধু বিরোধী দলকেই নয়, সরকারি দলের গণতান্ত্রিক অংশকে বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার। একটি উত্তম সিস্টেম ধ্বংস করে খারাপ সিস্টেম চালু কারো জন্যই কল্যাণকর হবে না।
বিএনপি তথা সব বিরোধী দলের সামনে পথ এখন একটাই। তা হলো জনগণকে সম্পৃক্ত করা। অন্য কোনো সহজ পথ সামনে নেই। বিএনপির এই সার্বিক দৃঢ়তাই সরকারের বাড়াবাড়ির ফণা নোয়াতে পারে। নেতৃত্ব নিয়ে টেনশনের কিছু নেই। পুরনো ও টায়ার্ড নেতৃত্বের কিছু ঝরে পড়বে, যারা টিকে থাকবেন তারা আরো দৃঢ় হবেন। প্রয়োজনে আরো নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে।
এখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবেন দেশনেত্রী।
এ দেশের মানুষ কামনা করে, তার জীবনের শেষ উচ্চারণটা থাকবে নিঃসন্দেহে কালেমা শাহাদত। কিন্তু এর আগের শব্দটি থাকবে,এই সরকার ‘অবৈধ’। নেত্রীর এই দৃঢ়তাতেই এ দেশে একদিন গণতন্ত্র ফিরে আসবে ইনশাআল্লাহ।

এমপি লিটন হত্যা : জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত,,,,,,,,,,,,,,,,,

কথায় বলে, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। আসলেই ধর্মের কল বাতাসে নড়ে উঠেছে। অন্তত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের এমপি লিটন হত্যার ক্ষেত্রে এ কথাটি আর একবার সত্য প্রমাণিত হয়েছে। লিটনকে খুন করা হয়েছে গত বছরের ৩১শে ডিসেম্বর। একজন এমপি’র হত্যাকাণ্ড যে সে ব্যাপার নয়। যে কোন মূল্যে সেই হত্যা রহস্যের উদঘাটন করতে হবে। এ জন্য পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফুল এনার্জি দিতে হবে। কিন্তু তাই বলে মানুষ হত্যার মত এমন মারাত্মক বিষয় নিয়ে পলিটিক্স করা যাবে না। দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে মানুষ হত্যা নিয়ে সেই ঘৃণ্য পলিটিক্সই বারবার করা হয়েছে। এমপি লিটন হত্যা নিয়েও সেই পুরানা পলিটিক্যাল গেম খেলার অপচেষ্টা করা হয়েছে। হত্যা কাণ্ডের পরদিন থেকেই উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর ষড়যন্ত্র হয়েছে। নতুন বছর শুরুই হয়েছে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সমস্ত দায় জামায়াতে ইসলামীর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার চক্রান্তের মধ্য দিয়ে।
কিন্তু সত্যের ঢাক বেজে উঠেছে। এরশাদের জাতীয় পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) আব্দুল কাদের খান গ্রেফতার হওয়ার পর জামায়াতকে জড়িত করার সরকারী ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে। এখন দেখা যাচ্ছে যে, কর্নেল কাদেরই এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা। গত ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারীর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, বিশেষ করে দৈনিক “প্রথম আলোর” প্রথম পৃষ্ঠায় হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন বিস্তারিতভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে কি বলবেন? কারণ এই হত্যাকাণ্ডের পর পরই তিনি যাবতীয় দায়-দায়িত্ব জামায়াতের ঘাড়ে চাপান। গত ৪ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “মন্জুরুল ইসলাম লিটনের ওপর জামায়াতের ক্ষোভ ছিল। তিনি সব সময় জামায়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। গাইবান্ধায় গোলাম আযমের সমাবেশ করতে বাধা দিয়েছিলেন। সেটাই কি তার হত্যার কারণ? স্বাধীনতার পক্ষশক্তির পক্ষে থাকার কারণেই তাকে জীবন দিতে হয়েছে। লিটনের ওপর বারবার হামলা হয়েছে। মাঝে একটা ঘটনা ঘটার পর তার কাছ থেকে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নিয়ে নেয়া হয়। তার পর থেকে তিনি আতঙ্কে থাকতেন, সবসময় কখন তার ওপর হামলা হয়। শেষ পর্যন্ত তাই হলো, তাকে হত্যা করা হলো।” এসব কথা তিনি একবার নয়, একাধিক বার বলেছেন।
এত গেল প্রধানমন্ত্রীর কথা। প্রধানমন্ত্রীর নিচে আওয়ামী লীগ এবং প্রশাসনের যত স্তর রয়েছে তারা সকলেই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি
করেছেন। এমপি লিটন খুন হয়েছেন ৩১ ডিসেম্বর। পর দিন পহেলা ডিসেম্বর প্রাক্তন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, “জামায়াত-শিবির আবারো দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে তা-ব চালাচ্ছে। এমপি লিটন হত্যাকা-ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে জামায়াত-শিবির এখনো তৎপর। তাদের রুখে দিতে হবে।” একই দিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, ‘তাকে তারাই হত্যা করেছে যারা ধর্মের নামে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়েছে।’
কথায় বলে, রাজা যাহা বলে, পারিষদ দল বলে তার শত গুণ। যেহেতু কেন্দ্রীয় নেতারা বিশেষ সুরে গান ধরেছেন তাই মফস্বলের পাতি নেতারাও সেই সূরে তাল ধরেছেন। তাই দেখা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফাও একই দিনে সুন্দরগঞ্জের প্রতিবাদ সভায় বলেছেন, ‘জামায়াত-শিবিরের লোকজনই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তিনি সুন্দরগঞ্জ থানার ওসিকে জামায়াত-শিবিরের দোসর বলেও মন্তব্য করেন।’
॥দুই॥
আবার আওয়ামী নেতৃত্বের ওপর দিকে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগের দুই নম্বর ব্যক্তি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আস্থাভাজন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ৩ জানুয়ারী বলেছেন, ‘সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম বছরের প্রথম সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার।’ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ গত ৩ জানুয়ারী বলেছেন, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি ও জামায়াত এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আর এই অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক বিএনপি।’
গাইবান্ধা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসানুল করিম চাঁদ একই দিন বলেছেন, ‘জামায়াত-শিবিরের লোক পুলিশ হত্যা মামলায় জামিনে এসে মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়িয়ে আবারো এমপি লিটনকে হত্যা করেছে। পুলিশ ব্যর্থ হলে আমরা আওয়ামী লীগের লোকজন এমপি’র খুনি জামায়াত-শিবিরদের চিহ্নিত করবো।’ 
উপজেলা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক ছামিউল ইসলাম ছামুও একই দিন এক ডিগ্রী আগ বাড়িয়ে বলেছেন, ‘সংসদ সদস্য লিটনের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে যদি পুলিশ খুনি জামায়াত-শিবিরকে বের করতে না পারে, তাহলে আমাদের ওপর ছেড়ে দেয়া হোক। আমরা সেই খুনি জামায়াত-শিবিরদের বের করে দেবো।’
এতক্ষণ ধরে আমরা রাজনৈতিক দল বিশেষ করে আওয়ামী লীগের কথা বললাম। এবার দেখুন প্রশাসনের কথা। পুলিশ প্রশাসন রাজনৈতিক দলের কোন অঙ্গ দল নয়। তার পরেও পুলিশের সর্বোচ্চ অফিসার আইজিপি গত ৩১শে ডিসেম্বর বলেছেন, ‘এলাকার সাধারণ লোক ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, খুনের সাথে জামায়াত-শিবির জড়িত থাকতে পারে। সংসদ সদস্য লিটন জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন।’ 
রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক ২রা জানুয়ারী বলেছেন, ‘এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের দিকে ইঙ্গিত করেই মামলা করেছে পরিবার। ওই বিষয় নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।’
॥তিন॥
অথচ তদন্তের পর এসব অফিসারই সম্পূর্ণ উল্টা কথা বলেছেন। তারাই তদন্ত করে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি কর্নেল কাদেরকে গ্রেফতার করেছেন। আরও গ্রেফতার করেছেন তিন কিলারকে, যাদের সাথে জামায়াতের বিন্দুমাত্র সংশ্রব নাই। তাদের বক্তব্য আমরা একটু পর তুলে ধরব। তার আগে অন্যদের কথা।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বাংলাদেশে অতি পরিচিত একটি নাম। টেলিভিশনে টকশো-তে যে ক’টি নাম মনে আসে তার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় নাম হলো আসিফ নজরুল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক। সেই আসিফ নজরুল এ সম্পর্কে ফেসবুকে তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “এমপি লিটন হত্যায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী জামায়াতকে দায়ী করেছিলেন: আসিফ নজরুল। এমপি লিটন হত্যার জন্য স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী জামায়াতকে দায়ী করেছিলেন। তারপরও পুলিশ তদন্ত করে বের করছে যে এজন্য দায়ী জাপার একজন সাবেক এমপি। তার মানে কারো কথায় প্রভাবিত না হয়ে স্বাধীনভাবে তদন্ত চালানোর নির্দেশ ছিল এখানে। তারমানে স্বাধীনভাবে তদন্ত করলে যে কোন অপরাধীকে খুঁজে বের করার ক্ষমতা আছে আমাদের পুলিশের। আমার প্রশ্ন, এই পুলিশ তাহলে কেন পারে না সাগর-রুনি হত্যাকা-ের তদন্ত করতে? কেন পারে না সমাজকে স্তব্ধ করে দেয়া অন্যান্য গুম বা হত্যাকা-গুলো তদন্ত করতে? পুলিশ বা স্বগোত্রীয় কেউ নিজেই এসবের সংগে জড়িত বলে? অথবা জড়িত যেই হোক, স্বাধীনভাবে তা তদন্তের নির্দেশ নেই বলে?
আর একজন কলামিষ্ট হলেন মিনার রশিদ। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি লিটন নিহত হওয়ার পর পরই জামায়াতসহ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে দায়ী করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।” 
সঙ্গত কারণেই আওয়ামী লীগের টপ টু বটম সকলের মনেই এই ধারণাটিই গেঁথে যায়। জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এমপি লিটনকে হত্যা করেছে জঙ্গি ও জামায়াত। ডেপুটি স্পিকার জানান, জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসের ধারাবাহিকতায় লিটন খুন, খুনের তদন্তের অগ্রগতি।
লিটনের স্ত্রীও একই ধরণের বিবৃতি দেয়। জামায়াত-শিবির চক্র তার স্বামীকে হত্যা করেছে বলে জানান লিটনের স্ত্রী।
কিন্তু লিটনের ভাইবোন এই ধরনের দোষারোপ থেকে বিরত থাকেন। তারা এই ধরনের দোষারূপ বন্ধ রেখে প্রকৃত খুনীকে বের করার জন্যে চাপ প্রয়োগ করেন। মূলত লিটনের ভাইবোনের দৃঢ়তাতেই সরকার চাপে পড়ে যায়। প্রকৃত খুনীকে বের করার উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়।
এখন মনে হচ্ছে, অল্পের উপর দিয়েই গেছে। আরো মারাত্মক কিছু বের হয়ে যেতে পারতো। মানুষের আশংকা আরো ভয়ংকর ছিল।
 মানুষের মনে এই ধরনের সন্দেহ সৃষ্টির জন্যে সরকার দায়ী। সরকার পুরো বিচার ব্যবস্থাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে মানুষ আর এই সরকারের উপর আস্থা রাখতে পারছে না। নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াকে ব্যবহার করে ঢাকায় বসে সিনেমার কাহিনীর মত কাহিনী সাজানো হয়। পরিস্থিতির মতিগতি বুঝে ঘটনা প্রচার করা হয়। সরকারের এই ভয়ংকর খেলা কোথা গিয়ে শেষ হবে, তা একমাত্র আল্লাহ্ই জানেন। 
এখন যদি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও প্রাক্তন এমপি কাদের খানই মূল হত্যাকারী হন, তবে প্রধানমন্ত্রী কেন কোনরূপ অনুসন্ধান ব্যতিরেকে জামায়াত শিবিরকে দোষারূপ করেছিলেন ? এই জাতির বিবেক বলে কি আদৌ কিছু আছে যেখানে আজ এই প্রশ্নটি রাখা যাবে? 
আসলে আমরাই আমাদের এই দেশটিকে ভয়ংকর এক জনপদ বানিয়ে ফেলছি। যে কেউ যে কোনও সময় এর করুণ শিকার হয়ে পড়তে পারে। আমাদের মধ্যে কেউ হবে লিটন, কেউ হবে নন্দঘোষ, কেউ হবে স্কেপ গোট আর কেউ হবে কাদের খান। বিএনপি জামায়াতকে নন্দঘোষ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না হলে গৃহপালিত বিরোধী দল থেকে কাউকে বলির পাঠা বানানো হবে।
এই ছিল মিনার রশিদের মন্তব্য। এবার পুলিশের আইজি’র সর্বশেষ মন্তব্য দিয়ে আজকের লেখা শেষ করব।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন কাগজে যে রিপোর্ট বেরিয়েছে, সেই সব রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকান্ডের পর টেলিফোনে আড়ি পেতে আরও একজনকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানতে পারেন পুলিশ সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। সেই সূত্র ধরে শুরু হয় অনুসন্ধান। আর এতেই আওয়ামী লীগের এমপি মনজুরুল হত্যায় জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি আবদুল কাদের খানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক গত ২২ ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, এমপি মনজুরুল হত্যার পরিকল্পনাকারী আবদুল কাদের খান। তাঁর ইচ্ছা ছিল মনজুরুলকে সরিয়ে পথ পরিষ্কার করে পরবর্তী সময়ে এমপি হবেন। তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের এমপি মনজুরুল হত্যা মামলায় গত মঙ্গলবার কাদের খানকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল বুধবার গাইবান্ধার আদালতে তাকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। কাদের খান ওই আসনের সাবেক এমপি। 
মনজুরুল হত্যা মামলা তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, আবদুল কাদের খান ছয় সাত মাস আগেও একবার মনজুরুল হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সর্বশেষ গত ৩১ ডিসেম্বর তিন যুবক তাঁর বাড়ি থেকেই মনজুরুলকে খুন করতে যান। খুনের পর তাঁরা আবার সেখানেই ফিরে আসেন। হত্যায় ব্যবহার করা অস্ত্রটিও তাঁরই ছিল বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। 
এর পর আর কোনো কথা থাকে না। জামায়াত ও শিবিরের বিরুদ্ধে সরকারের তরফ থেকে মিথ্যার যথেষ্ট বেসাতি হয়েছে। এবার সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে যে সব জামায়াত ও শিবির নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের কে মুক্তি দিন। আর সাংবাদিক নামধারী চন্দন সরকার নামের যে আওয়ামী লীগ নেতাটি ভারতে পালিয়ে গেছে তাকে ধরে আনুন এবং কঠিন শাস্তি দিন।

(আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ - ০৮:১৯ | প্রকাশিত: রবিবার ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট সংস্করণ Asif Arsalan's column in daily Sangram)

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ২৮ ফেব্রুয়ারী দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা জামায়াতে ইসলামীর

অন্যায় ও অযৌক্তিভাবে দফায় দফায় গ্যাসের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারী দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২৬ফেব্রুয়ারী প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,“সরকার আগামী ১ মার্চ ও ১ জুন দু’দফায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অযৌক্তিক।
সরকার প্রথম ধাপে ১ মার্চ থেকে একচুলা ৭৫০ টাকা, দুইচুলা ৮০০ টাকা, সিএনজি প্রতি ঘন মিটারে ৩৮ টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় ১ জুন থেকে ১ চুলা ৯০০টাকা, দুইচুলা ৯৫০ টাকা, সিএনজি গ্যাসের দাম প্রতি ঘন মিটারে ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দেশের দরিদ্র ও সাধারণ জনগণের অর্থনৈতিক দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত দরিদ্র ও সাধারণ জনগণের প্রতি মরার উপর খাড়ার ঘায়ের শামিল। সরকারের এ অন্যায় সিদ্ধান্তে দেশের গোটা অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। দরিদ্র ও সাধারণ জনগণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়বে। সরকারের এ সিদ্ধান্তে জনগণ বিক্ষুব্ধ।
সরকারের গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এ অন্যায় ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করছি।
ঘোষিত এ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখা ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”

শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

মানিকগঞ্জে ইসলামী ব্যাংক হাসপতালে কনসালটেন্টদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত: একসাথে এতো সৎ মানুষের সমন্বয় আমি জীবনে দেখিনি : আরাস্তু খান

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নতুন চেয়ারম্যান আরাস্তু খান বলেছেন, আমি অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করেছি কিন্তু এতো সৎ লোকের সাথে আমি জীবনে পূর্বে কখনো কাজ করার সুযোগ পাইনি এক সাথে এতো সৎ মানুষের সমন্বয় দেখে আমি অভিভূত
আজ শুক্রবার সকালে মানিকগঞ্জ ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালের কনসালটেন্টদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন
তিনি বলেন, মানুষ সম্পূর্ণ সততার সাথে হাসিমুখে, তুলনামূলকভাবে কম বেতনে এভাবে তখনই কাজ করতে পারে যখন মানুষ কমিটেড থাকে। আমি দেখেছি ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী সৎ। তারা এতোটা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে বলেই আজ ইসলামী ব্যাংক সবচেয়ে বেশি লাভ করেছে আবার মানুষকে বেশি সেবা দিয়েছে। মানুষের আস্থা অর্জন করতে হলে কি করতে হয় তা ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ, এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা দের্খিয়ে দিয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে জঙ্গি অর্থায়নের কোনো প্রমাণ নেই
আমি ব্যাংকের স্টাফদের বেতন বাড়ানোর কথা বলেছি। অনেক ব্যাংকের এমডি পযর্ন্ত বেশি বেতন পেলে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে কিন্তু ইসলামী ব্যাংকের একজন কর্মচারীও বেতনের আশায় প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যায়নি। আমি এতো সৎ মানুষের সাথে কাজ করতে পেরে সত্যিই গর্বিত।
তিনি সময় মানিকগঞ্জে ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালের নিজস্ব জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন
হাসপাতালের নিজস্ব জায়গার অনুষ্ঠিত হাসপাতালের চেয়ারম্যান এস এম রইস উদ্দীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মানিকগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, ডা: প্রফেসার মো: সিরাজ উদ্দিন, ডা: প্রফেসার মোহাম্মদ আলী, ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের হাসপাতাল সেকশনের পরিচালক মোস্তফা কামাল, হাসপাতালের এমডি সরকার মোহাম্মাদ মাসুদউর রহমান, পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ জামাল কোম্পানী, অ্যাড. পরিচালক মো: আওলাদ হোসেন, সুপার মো: আবুল কালাম আযাদ প্রমুখ
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, সরকারের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল মানুষের যে সেবা করে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। বিত্তশালী মানুষদের শুধু অর্থের জন্যে নয়, মানুষের সেবা করার জন্যে এমন মহৎ কাজে এগিয়ে আসতে হবে

সভাপতির বক্তব্যে এস এম রইস উদ্দীন বলেন, আমরা হাসপাতাল পরিচালনা করছি অর্থ উর্পাজনের জন্যে নয়, মানুষের সেবা করার জন্যে। আমাদের আর্দশ অব্যাহত থাকবে। আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি। Daily Naya Diganta