১৯৯৩ সাল হতে এদেশে এদিবসটি পালিত হয়ে আসছে।কিছু মিডিয়া এটিকে বেশ সাপোর্ট দেয়।আসলে কোন পরিবার তাদের যুবক যুবতী ছেলে মেয়েদের ভালবাসার নামে নোংরামী পথে পা বাড়াতে দিবে এটি আমার বিশ্বাস হয়না।তাহলে কেন খোলামেলা মানে ওপেন সিকরেট ভাবে এটিকে বৈধতা দিয়ে যাচ্ছে জানিনা।
ভালবাসা কি?
স্বর্গ ছোঁয়া এক পবিত্র ফিলিংস বলা যায় ভালবাসাকে।
অন্য ভাষায়ঃ
ভালোবাসা মানব চিত্তের আল্লাহ প্রদত্ত একটি অনুভুতির নাম,যা মানুষের জীবনের প্রত্যেক বন্ধনকে মজবুত করে,যা দিয়ে কল্যাণকর সমাজ,ও প্রেমময় পরিবার গঠিত হয়।এবং প্রত্যেক পরিবার, সমাজ, রাস্ট্র, ও পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করে,আর পরিবারের মূল উপাদান হচ্ছে ভালোবাসা।সমাজের কিছু নষ্ট কীট যারা পরিবার ভুক্ত নয়,তারা নৈতিকতা সম্পন্ন পরিবার ধংসের উদ্দেশ্যে, পরিবারের এই উপাদানকে পরিবার থেকে বাজারে টেনে এনে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উৎযাপন করছে।
প্রশ্ন হচ্ছে কোন ১৮-২৫ বছরের ছেলে মেয়ে এক সাথে রাত কাটানোর পরেও যদি কেউ বলে তাদের ভালবাসা পবিত্র এটি চরম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নই।মুখোশ পরা ভদ্র সমাজের কিছু পরিবারের মধ্যে এটিকে ওপেনলি বৈধতা দিয়েছে।বাবা মা তা দেখেও অনেকটা না দেখার ভান করে।
সেদিন এক বন্দ্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম বন্দ্ধু তোমার ক্লাস মেইট যার সাথে এতদিন ভালবাসা বাসি ছিল তাকে বিয়ে করলেনা কেন? তখন সে বন্দ্ধু বলল আসলে তাকে ভালবেসেছি বাট তাকে লাইফ পার্টনার করতে মন চাইনি।অনেকের ক্ষেত্রে তাই হচ্ছে।তাই কথায় আছে প্রেম করবো একজনের সাথে আর বিয়ে করবো আরেকজনকে।এটাই বাস্তবতা যে অনেক সময় যাকে বিয়ে করলো সে আরেক জনের বয় ফ্রেন্ড কিংবা গার্ল ফ্রেন্ড ছিল।
বিশ্ব ভালবাসা দিবস কি :
এক নোংরা ও জঘন্য ইতিহাসের স্মৃতিচারণের নাম বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ ইতিহাসটির বয়স সতের শত সাঁইত্রিশ বছর হলেও ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ নামে এর চর্চা শুরু হয় সাম্প্রতিক কালেই। দুই শত সত্তর সালের চৌদ্দই ফেব্রুয়ারির কথা। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন ক্লডিয়াস। সে সময় ভ্যালেন্টাইন নামে একজন সাধু, তরুণ প্রেমিকদেরকে গোপন পরিণয়-মন্ত্রে দীক্ষা দিত। এ অপরাধে সম্রাট ক্লডিয়াস সাধু ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করেন। তার এ ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এ দিনটির নাম করণ করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ যা আজকের ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’।
যখন হতে বাংলাদেশে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয় তখন হতে কিছু ব্যবসায়ীর মদদে এটি জৌলুশ পায়। অপরিণামদর্শী মিডিয়া কর্মীরা এর ব্যাপক কভারেজ দেয়। আর যায় কোথায় ! লুফে নেয় বাংলার তরুণ-তরুণীরা। এরপর থেকে ঈমানের ঘরে ভালবাসার পরিবর্তে ভুলের বাসা বেঁধে দেয়ার কাজটা যথারীতি চলছে। আর এর ঠিক পিছনেই মানব জাতির আজন্ম শত্রু শয়তান এইডস নামক মরণ-পেয়ালা হাতে নিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। মানুষ যখন বিশ্ব ভালবাসা দিবস সম্পর্কে জানত না, তখন পৃথিবীতে ভালবাসার অভাব ছিলনা। আজ পৃথিবীতে ভালবাসার বড় অভাব। তাই দিবস পালন করে ভালবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হয়! আর হবেই না কেন! অপবিত্রতা নোংরামি আর শঠতার মাঝে তো আর ভালবাসা নামক ভালো বস্তু থাকতে পারে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হৃদয় থেকে ভালবাসা উঠিয়ে নিয়েছেন।
বিশ্ব ভালবাসা দিবসকে চেনার জন্য আরও কিছু বাস্তব নমুনা পেশ করা দরকার। দিনটি যখন আসে তখন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো একেবারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপা-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে। শুধুই কি তাই ! অঙ্কন পটীয়সীরা উল্কি আঁকার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকে রাস্তার ধারে। তাদের সামনে তরুণীরা পিঠ, বাহু আর হস্তদ্বয় মেলে ধরে পছন্দের উল্কিটি এঁকে দেয়ার জন্য। তারপর রাত পর্যন্ত নীরবে-নিবৃতে প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে খোশ গল্প। এ হলো বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কর্মসূচি! বিশ্ব ভালবাসা দিবস না বলে বিশ্ব বেহায়াপনা দিবস বললে অন্তত নামকরণটি যথার্থ হতো।
বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালনের ক্ষতিকর কিছু দিক :
১. ভালবাসা নামের এ শব্দটির সাথে এক চরিত্রহীন লম্পটের স্মৃতি জড়িয়ে যারা ভালবাসার জয়গান গেয়ে চলেছেন, পৃথিবীবাসীকে তারা সোনার পেয়ালায় করে নীল বিষ পান করিয়ে বেড়াচ্ছেন।
২. তরুণ-তরুণীদের সস্তা যৌন আবেগকে সুড়সুড়ি দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও ফাসাদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। অথচ আল্লাহ তা‘আলা ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ
‘‘আর তারা তো পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়। আর আল্লাহ ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না।’’(সূরা আল মায়িদাহ : ৬৪)
৩. নৈতিক অবক্ষয় দাবানলের মত ছড়িয়ে যাচ্ছে।
৪. নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি লাভ করছে। যারা ঈমানদারদের সমাজে এ ধরণের অশ্লীলতার বিস্তার ঘটায়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَنْ تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ
‘‘ যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি..।’’(সূরা আন-নূর :১৯)
বস্তুত যে সমাজেই চরিত্র-হীনতার কাজ ব্যাপক, তথায় আল্লাহর নিকট থেকে কঠিন আযাব সমূহ ক্রমাগত অবতীর্ণ হওয়া অবধারিত, আব্দুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন :
… لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا إِلَّا فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالْأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلَافِهِمِ…
‘‘যে জনগোষ্ঠীর মধ্যে নির্লজ্জতা প্রকাশমান, পরে তারা তারই ব্যাপক প্রচারেরও ব্যবস্থা করে, যার অনিবার্য পরিণতি স্বরূপ মহামারি, সংক্রামক রোগ এবং ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ এত প্রকট হয়ে দেখা দিবে, যা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে কখনই দেখা যায় নি।’’(ইবনু মাজাহ, কিতাবুল ফিতান, হাদিস নং-৪০০৯)
৫. তরুণ-তরুণীরা বিবাহ পূর্ব দৈহিক সম্পর্ক গড়তে কোন রকম কুণ্ঠাবোধ করছে না। অথচ তরুণ ইউসুফ আলাইহিস সালামকে যখন মিশরের এক রানী অভিসারে ডেকেছিল, তখন তিনি কারাবরণকেই এহেন অপকর্মের চেয়ে উত্তম জ্ঞান করেছিলেন। রোমান্টিক অথচ যুব-চরিত্রকে পবিত্র রাখার জন্য কী অতুলনীয় দৃষ্টান্ত! আল্লাহ জাল্লা শানুহু সূরা ইউসুফের ২৩-৩৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন এ ভাবে-
‘‘সে যে স্ত্রীলোকের ঘরে ছিল সে তার কাছ থেকে অসৎকাজ কামনা করল ও দরজাগুলো বন্ধ করে দিল এবং বলল, ‘আস।’ সে বলল, ‘আমি আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তিনি আমার প্রভু; তিনি আমার থাকার সুন্দর ব্যবস্থা করেছেন। নিশ্চয়ই সীমালঙ্ঘনকারীরা সফলকাম হয় না। সে রমণী তো তার প্রতি আসক্ত হয়েছিল এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ত যদি না সে তার প্রতিপালকের নিদর্শন দেখতে পেত। আমি তাকে মন্দ-কাজ ও অশ্লীলতা হতে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে তো ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। ওরা উভয়ে দৌড়ে দরজার দিকে গেল এবং স্ত্রীলোকটি পিছন হতে তার জামা ছিঁড়ে ফেলল, তারা স্ত্রীলোকটির স্বামীকে দরজার কাছে পেল। স্ত্রীলোকটি বলল, ‘যে তোমার পরিবারের সাথে কুকর্ম কামনা করে তার জন্য কারাগারে প্রেরণ বা অন্য কোন মর্মন্তুদ শাস্তি ছাড়া আর কি দণ্ড হতে পারে? ইউসুফ বলল, ‘সে-ই আমার কাছ থেকে অসৎকাজ কামনা করছিল।’ স্ত্রীলোকটির পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিল, ‘যদি তার জামার সামনের দিক থেকে ছিঁড়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী, কিন্তু তার জামা যদি পিছন দিক থেকে ছিঁড়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি মিথ্যা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী। গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পিছন দিক থেকে ছেঁড়া হয়েছে তখন সে বলল, ‘নিশ্চয়ই এটা তোমাদের নারীদের ছলনা, তোমাদের ছলনা তো ভীষণ। হে ইউসুফ! তুমি এটা.............
উপসংহারঃ
ভ্যালেন্টাইন'স ডে নামে আমাদের দেশে কয়েক বছর ধরে একটি নতুন যৌন চর্চা শুরু হয়েছে।
ভ্যালেন্টাইন'স ডে নামে আমাদের দেশে কয়েক বছর ধরে একটি নতুন যৌন চর্চা শুরু হয়েছে।
ব্যবসায়িক স্বার্থ ও মুনাফা অর্জনের প্রত্যাশায় এক শ্রেণীর যৌন রোগে আক্রান্ত নারী স্বাধীনতা কামি ও হোটেল ব্যবসায়ীরা এই দিবস পালনের জন্য উৎসাহিত করছে। মুলত অলি বুযুর্গানে দ্বীনদের এই দেশে কচি ছেলেমেয়েদেরকে দিয়ে ভালোবাসার নামে পশ্চিমাদের লিভ টু গেদারের সংস্কৃতি চালাচ্ছে, এমেরিকান ৮৫% নারী পুরুষ এই যৌন রোগে আক্রান্ত, তাই মুসলিম সংস্কৃতি ধবংস করার জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি এইদিনকে ভালোবাসা দিবস হিসেবে বেছে নিয়েছে। মুসলিম কোনো নারী পুরুষ এই দিবস পালন করতে পারেনা। এই দিবসটি শত শত নারীকে মরণব্যাধি এইডস ও আত্মহত্যার দিকে দাপিত করছে, তাই আসুন,বন্ধুরা আমরা এই দিন পালন করা থেকে আমাদের ভাই, বোন বন্ধুদেরকে বিরত রাখি।
এবং মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ যেন আমাদেরকে এই অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করে।""আমিন""
বিঃদ্রঃ আমি কিন্ত সব ভালবাসাকে মন্দ বলিনাই,আমি তাদের কাছেই একটি মেসেজ দেয়ার চেষ্টা করছি যারা নোংরামী করার পরেও বলে আমাদের ভালবাসা পবিত্র.....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন