বাংলাতেশ বার্তা ডেস্কঃ ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৭’ যুক্তরাজ্যের লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আর্থার অ্যালিসন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি খ্রিস্ট ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। মূলত ধর্মের ওপর গবেষণা করতে গিয়েই তিনি ইসলামের সঙ্গে পরিচিত হন। সম্প্রতি একটি সাপ্তাহিক দৈনিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি তার ইসলাম গ্রহণের কাহিনী বর্ণনা করেছেন।
অধ্যাপক অ্যালিসনের মতে, ইসলাম হচ্ছে সত্যের ধর্ম ও এর সহজাত প্রকৃতি হচ্ছে আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল।
সাপ্তাহিক অ্যারাবিক ‘আল-আলমুসলিমুন’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার পাঠ্যধারা মনোবিজ্ঞান এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় ‘ব্রিটিশ সোসাইটির মানসিক এবং আধ্যাত্মিক স্টাডিজ’ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমি ধর্মের সঙ্গে পরিচিত হই। আমি হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য কিছু ধর্ম ও তাদের আকীদা ও বিশ্বাস নিয়ে গবেষণা করেছি। ইসলাম নিয়ে গবেষণা করার পর আমি এটার সঙ্গে অন্য ধর্মের তুলনা করি।’
কোরআনে মেডিকেল সাইন্সের অসীম অবদানের ওপর বক্তব্য দেয়ার জন্য প্রথম ইসলামি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যেটি ১৯৮৫ সালের সেপ্টেম্বরে মিশরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘ওই সম্মেলন চলাকালীন সময়ে আমি ইসলামের সুস্পষ্ট পার্থক্য উপলব্ধি করতে পারি। তারপর আমি উপলব্ধি করতে পারি ইসলামই হচ্ছে সবচেয়ে সঠিক ধর্ম; যা আমার সহজাত প্রকৃতি ও আচার-আচরণের সঙ্গে মানানসই। আমি আমার হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয়কে মিলিয়ে অনুভব করতে পারি যে, কেউ একজন এই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তিনি হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা।’
তিনি আরো বলেন, ‘এছাড়াও, আমি ইসলাম নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছি যে, এটা যুক্তি ও বিজ্ঞানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। আমি বিশ্বাস করি, ইসলামই একমাত্র আল্লাহর কাছ থেকে অবতীর্ণ ধর্ম।’
অ্যালিসন বলেন, ‘আমি সত্যের সাক্ষী হিসেবে দুটি বাক্য উচ্চারণ করেছি। যেই মুহূর্তে আমি কালেমা শাহাদা উচ্চারণ করি তখন থেকেই আমার ভিতরে আরাম এবং সন্তুষ্টি মেশানো এক অদ্ভুত অনুভূতির জন্ম দেয়।’
তিনি জানান, কোরআনের ৩৯:৪২ নং আয়াতটি অবশেষে তাকে ইসলামের পথে পরিচালিত করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ যিনি তাদের মৃত্যুর সময়ে আত্মাকে নিয়ে নেন এবং ঘুমের সময় আত্মার মৃত্যু হয় না। তিনি এসব আত্মাকে মৃত্যুর জন্য নির্ধারিত করেছেন। কার্যত, এগুলো চিন্তাশীল মানুষের জন্যে নিদর্শনাবলী।’
এই আয়াতটি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে মানুষ প্রমাণ করতে পারে যে, মৃত্যু ও ঘুম উভয়ই একই ঘটনা। দুটি ক্ষেত্রেই আত্মা শরীর থেকে প্রস্থান করে। পার্থক্য হচ্ছে ঘুমের ক্ষেত্রে আত্মা শরীর ফিরে আসে কিন্তু মৃত্যুর ক্ষেত্রে এটা আর ফিরে আসে না।’
তিনি বলেন, ‘এই আয়াত আমাদের স্বরণ করিয়ে দেয় যে, ‘আত্মার গ্রহণের’ মানে হল ঘুম ও মৃত্যু। আমার মানসিক গবেষণায় এই সত্যটি প্রমাণিত হয়েছে; যা তিনটি প্রধান ডোমেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত।’
নাইজ ডটকম অবলম্বনে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন