বাংলাদেশ বার্তাঃ হেফাজতের এক নেতা সেদিন ইনিয়ে বিনিয়ে জামায়াতের আক্বীদার বিষয়টি তুলে ধরলেন।তিনি বললেন, আক্বীদার বিষয়ে কোন আপোষ ওলামায়ে দেওবন্দ কখনো করেনি, আর করবেও না।জামায়াত যদি বিষয়টি বুঝতো তাহলে দেশের ইসলামপন্থীদের ঐক্য হয়ে যেতো।ফেসবুকেও দেখি অনেক বড় বড় আলেম ওলামা, কবি সাহিত্যিকরা নরম স্বরে জামায়াত বিরোধী গান গাচ্ছেন।
বললাম, ভাই দেশে এখন আর জামায়াত নামে কিছু আছে নাকি? সব জায়গায় দেখি কওমীদের জয় জয়কার।আপনারা কেন অযথা জামায়াত নিয়ে ভাবছেন।জামায়াত তো শেষ, এবার আপনারা ওলামায়ে দেওবন্দীরা এক ফ্লাট ফরমে এসে দেখান আপনাদের আক্বীদায় কোন সমস্যা নেই।পাবলিক দেখুক, কওমী হুজুররা এক হতে পারে।পারবেন কোন কালে? কেন পারবেন না সেটা জানতে হলে ফি দিতে হবে, ফ্রি তদবির করা বাদ দিয়ে দিয়েছি।
আচ্ছা ভাই, চরমোনাইর নেতারা এরশাদের সাথে, পরে তার অসুস্থ্যতায রওশান এরশাদের নেতৃত্বে জোটোবদ্ধ আন্দোলন, নির্বাচন করলো।তখন কোন কিসিমের পাল্লা দিয়ে এরশাদ কাকুর আক্বীদা পরিমাপ করা হয়েছিলো? থাকলে দিয়েন, আমরাও মেপে দেখি আমাদের আক্বীদা এরশাদ কাকুর বরাবর যায় কিনা!
আল্লামা আজিজুল হক (রহ.) সাহেব জলিল মিয়ার সাথে হ্যান্ডশ্যাক করে রাজনৈতিক সমঝতা করলেন।কিছু দাবি দাওয়াকে কেন্দ্র করে ততকালিন জোট সরকারের বিরুদ্দে ফতোয়া দেওয়া শুরু হলো।পরবর্তিতে নির্বাচনে আওয়ামী ফ্যাাবারে অনেক হুজুরা বয়ান শুরু করলেন, জানতে মন চায় আওয়ামী আক্বীদা কি ফিল্টার করানো হয়েছিলো ?
আচ্ছা, ভাই ইসলামী ঐক্য জোট থেকে একজনকে মন্ত্রী করার বিষয়ে যখন জোটের ফোরামে আজিজুল হক সাহেবের উপস্থিতিতে পরামর্শ হচ্ছিলো তখন মরহুম আমিনী সাহেবে আলাদা করে আরেকটি ইসলামী ঐক্যজোটের ঘোষনা দিয়ে আজিজুল হক (রহ.) সাহেবের নেতৃত্বে প্রতি অনাস্থা দিলেন এবং নিজেকে নতুন ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান ঘোষনা করলেন।বলতে পারেন মরহুম আজিজুল হক সাহেবে আক্বীদায় কি সমস্যা ছিলো?
নাস্তিক বিরোধী আন্দোলনে শাহবাগের বিপরিতে হেফাজতের উত্থান ঘটলো, অথচ কওমী বেশ ধরা, ওলামায়ে দেওবন্দের নাম বিক্রি করা চরমোনাইর পীরের দল সেটা বিরুদ্ধে লিফলেট বিলি করতে শুরু করলো।শুধু তাই নয়, হেফাজতের ঘোষনার সমান্তরাল আরেকটি আন্দোলণ, লংমার্চ, সম্মেলন ঘোষনা করলো চরমোনাইর পীর সাহেব।আল্লামা আহমদ শফীর (দা. বা. ) নেতৃত্বের প্রতি এরকম চরম অনাস্থা কওমী ঘরনার কেউ কোন দিন দেখায়নি।প্রশ্ন হচ্ছে, আহমাদ শফী হুজুরের আক্বীদায় কি গলদ ছিলো?
সেদিনও দেখলাম, অতি প্রাচিন সংগঠন জমিয়তের ভাঙ্গন, নেতৃত্বে প্রতি অনাস্থা জানিযে বিচ্ছিরি কুৎসা রটানোর খেলা।এরকম প্রাচীন সংগঠনের ভিতরে বিজ্ঞ ওলামাদের উপস্থিতিতে যখন ভাঙ্গন দেখা দেয়, তখন তো প্রশ্ন করতে মন চায়, ওনাদের অনৈক্যের মুলে কি আছে? ক্ষমতার দন্ধ নাকি আক্বীদার গলদ?
এরকম শত শত উদাহারণ দেওয়া যাবে কিন্তু বেশি দুর যাবো না।জামায়াতর আক্বীদা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছে।বুঝতে পারছি না আক্বীদার এই ভ্রান্তী কমিশন থেকেও আপনারা কম বুঝেন নাকি? তবে এটা বুঝতে পারছি, আরো কয়েকটি শাপলা চত্তর চোখে না দেখার আগ পর্যন্ত জামায়াতের আক্বীদার দুর্গন্ধ আপনাদের নাক থেকে যাবে না।তবে আল্লাহর ইচ্ছায় জামায়াত তার গঠণতন্ত্র, সংবিধান, দলের কর্মসুচী, লক্ষ উদ্দেশ্যের ওপর সমালোচনামুলক পরামর্শ দেওয়ার জন্য দুনিয়ার অসংখ্য আলেমেদের দরবারে প্রেরন করেছে।জামায়াত গোড়ামী থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করছে।এটা তাদের সৎ সাহসের নমুনা।
এরকম সৎ সাহসের কারনেই আজ অব্দি জামায়াতের আক্বীদা নিয়ে দলের ভিতরে বাহিরে কোন প্রবলেম হয়নি এবং এর সাংগঠনিক গঠনে, নেতাকর্মীদের পারস্পরিক আস্থার ক্ষেত্রে কোন ঘাটতি দেখা যায়নি।আমার মনে হচ্ছে, বাংলার জমিনে জামায়াতই একমাত্র সংগঠন, যারা একটি ইসলামী সংগঠনের সকল নীতিমালা অনুসরন করে প্রতিষ্টিত এবং পরিচালিত হচ্ছে।এই সংগঠনের নেতৃত্বে বাপদাদা, মুরব্বির বংশ পরস্পরার কোন বালাই নেই।
অথচ খোজ নিলে জানা যাবে যে, কওমী ঘরনার প্রতিটি দল বংশানুক্রমিক ধারায় নেতৃত্ব তৈরি করে বার বার ভাঙ্গনের কবলে পড়ছে।এরকম দল ও আক্বীদার লোকেরা জামায়াতের আক্বীদা নিয়ে প্রশ্ন তোলার নৈতিক অধিকার সংরক্ষন করেন কিনা সেটাই হলো কোটি টাকার প্রশ্ন !!!
By-Apu Ahmed .
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন