আইরিনাকে চিনেন? নাম শুনেন নি কোনোদিন। না শুনারই কথা। অং সান সুচিকে চেনেন? তাকে অবশ্যই চিনবেন। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী। আসুন আগে,একটু আইরিনাকে চিনি।
২য় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আইরিনা প্লাম্বিং/সুয়ারেজ পরিষ্কারের কাজ করতেন। স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বড় তাঁর একটা টুলবক্স ছিলো। টুলবক্সের ভিতরে ছিলো দুটো চেম্বার। প্রথমটা নানারকমের যন্ত্রে ভর্তি। আর ২য় লুকানো চেম্বারটি ছিলো ফাঁকা। ভিতরে কিছুই নাই। কিছু নাই বলতে যন্ত্রপাতি কিছুই না। তবে চ্যাম্বারের ভিতর চারপাশ কাপড়ে মোড়ানো ছিলো। টুলবক্সের ওপর নাজিফ্ল্যাগের লগো ছিলো । যাতে আইরিনা বিনা অনুমতিতে যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন। এই টুলবক্সের ভিতর করেই আইরিনা- বন্দিদশা থেকে শিশুদের মুক্ত করা শুরু করেন। আইরিনা যেখানেই যেতেন-সবসময় তাঁর সাথে থাকতো বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটা কুকুর। আইরিনা এমনভাবে তাঁর কুকুরটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন-যাতে শিশুরা যদি কান্না শুরু করে তখন কুকুরটি এতো জোরে ঘ্যাঁও ঘ্যাঁও করতো- যাতে নাজি সৈন্যরা বুঝতে না পারে টুলবক্সের ভিতরে কোনো শিশু আছে। যখনই কোনো শিশু কাঁদতো তখনই কুকুরটি গ্যাঁও গ্যাঁও করা শুরু করতো। কান্না থেমে গেলে কুকুরটির গ্যাঁও গ্যাঁও করাও থেমে যেতো।
যেভাবেই হোক কুকুরটিও বুঝতে পেরেছিলো- আইরিনা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুদের প্রাণ রক্ষা করছেন। এভাবে জীবনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে আইরিনা ২য় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার মাঝে ২৫০০ শিশুর জীবন বাঁচান।
একদিন নাজি সৈন্যদের সন্দেহ হয়। আইরিনা টুলবক্স সাথে নিয়ে দৌড়াতে থাকেন। সেনাদের গুলি থেকে টুলবক্সটি বাঁচাতে কুকুরটি টুলবক্সের সামনে ঝাঁপদিলে নাজি সেনার গুলি খেয়ে কুকুরটি মারা যায়। আর আইরিনাও ধরা পড়েন। তাঁর ওপর প্রচণ্ড নির্যাতন করা হয়। ভেঙ্গে দেয়া হয়- হাত-পা। তিনি সারা জীবনের জন্য খুড়া হয়ে যান। আইরিনা প্রতিটি শিশুর নাম-কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন-আনুমানিক বয়স ইত্যাদি একটা কাঁচের জারের ভিতর লিখে নিজের বাড়ির পেছনে একটা গাছের নীচে পুঁতে রাখেন। যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে-তিনি এইসব শিশুদের পিতামাতা যারা জীবিত ছিলেন তাদের খুঁজে বের করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন।
আইরিনা নোবেল পুরস্কারের জন্য বেশ কয়েকবার মনোনীত হন-কিন্তু একবারও তিনি নির্বাচিত হননি। নির্বাচিত হয়ে পুরস্কার পেয়েছেন বর্মার সুচি।
নোবেল বিজয়ি সুচি যার হাতে মুসলমানের রক্ত লেগে আছে সেতো আইরিনার সেই কুকুরের কাছেও নগণ্য।
একটা অধম কুকুর মানব সন্তানের দূর্দশা বুঝেছে আর শান্তিতে নোবেল বিজয়ি সুচি মানব সন্তান বুঝেন না। অদ্ভূত! ভালোই হয়েছে আইরিনা পুরস্কার পাননি- এসব পুরস্কার দিলে তার জীবনটাই বরং ছোট করা হতো।
এই দুনিয়ার তাবত সভ্যতার মুখে পেচ্ছাব করে দিয়েছিলেন কে জানেন? বাজ অল্ড্রিন। যিনি চাঁদে হেঁটেছিলেন। নীল আর্মস্ট্রং যখন প্রথম চাঁদের মাটিতে পা রাখেন- ঠিক তখন চাঁদের মাটিতে পেচ্চাব করেন অলড্রিন। "নো ড্রিম ইজ টু হা" বইয়ে অলড্রিন নিজেই লিখেছেন- মানুষ জানবে চাঁদের মাটিতে প্রথম হাঁটা মানুষ নীল আর্মস্ট্রং। সাথে এও জানুক চাঁদে প্রথম পেচ্ছাব করা মানুষটি হলো অলড্রিন। সভ্য দুনিয়ার কক্ষপথে চন্দ্রের সাথে অলড্রিনের মূত্রও ঘুরতে থাকুক।
মাটিতে মুসলমানের রক্ত লাগলে মিডিয়া কভারেজ দিবেনা- শান্তির ভবনে মূত্র লাগিয়েও যদি একটু কভারেজ পাওয়া যায়? দুনিয়ার সভ্যতা বল? কত মুসলমানের রক্তে মাটি সিক্ত হলে তোমাদের চোখে একফোটা কান্না আসবে??? অলড্রিন চাঁদে ওঠে পেচ্চাব করেছিলেন। প্রচণ্ড দুঃখে- আজ জাতিসংঘ ভবনের ছাদে ওঠে পেচ্চাব করার কেউ কি আছে দুচোখ অন্ধ এই সভ্যতার মুখে???
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন