ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০২০

জামায়াতে ইসলামী ও মানবতার মুক্তি আন্দোলন: মিয়া গোলাম পরওয়ার

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আগস্ট ২৯, ২০২০মানুষের চরিত্র, সমাজ ও রাষ্ট্র সংশোধনের জন্য একটা হাতিয়ার প্রয়োজন। এ হাতিয়ার শুধু ইসলামের কাছেই রয়েছে। এ হাতিয়ার মহান আল্লাহ পাঠিয়েছেন নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে মানবতার মুক্তির জন্য। সে হাতিয়ার হলো একটি আদর্শের উপর বিশ্বাস ও দৃঢ় প্রত্যয়। যার ভিত্তিতে মানসিকতা, চরিত্র, রুচি ও জীবনের মূল্যবোধ গড়ে তোলা হয়। যে বিশ্বাস একটা জীবন দর্শন পেশ করে। জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শিক্ষা দেয়। জীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ শিক্ষা দেয়। জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। তা হলো আখিরাত বা পরকালের উপর দৃঢ় বিশ্বাস। যা এক অদৃশ্য শক্তির কাছে প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতার তীব্র অনুভূতি সৃষ্টি করে।

এ বিশ্বাস শিক্ষা দেয় যে, মানুষকে সৃষ্টি করে এখানে লাগামহীন ছেড়ে দেয়া হয়নি যে, সে এখানে যা খুশি তাই করবে। সে কোনো ভালো কাজ করলে তার পুরস্কার দেওয়ার কেউ নেই এবং অসৎ কাজ করলে তার জন্য শাস্তি দেবার কেউ নেই- এমনটি মোটেও নয়। বরং আসল কথা, যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন মরনের পর তার কাছেই তাকে ফিরে যেতে হবে। তারপর তার দুনিয়ার জীবনের প্রতিটি ভাল মন্দ কাজের হিসাব তার কাছে দিতে হবে।
দুনিয়ার জীবনে অন্যায় করে থাকলে, দুষ্কৃতিকারী হলে, সন্ত্রাসবাদী হয়ে মানুষের জীবন ও ধন সম্পদ ধ্বংস করলে, ইনসানিয়াত নষ্ট করলে তার সমুচিত শাস্তি তাকে পেতেই হবে। শাস্তিদাতার শাস্তিকে ঠেকাবার কোন শক্তিই কারো হবে না সেদিন। তখনকার শাস্তি হবে চিরন্তন, কারণ সে জীবনের শেষ হবে না। এটাই হলো পরকালে বিশ্বাস। সেদিনের শাস্তি অথবা পুরস্কারদাতা স্বয়ং আল্লাহ তাআলা নিজেই।
একমাত্র এ বিশ্বাসই মানুষকে “মানুষ” বানাতে পারে। নির্দয় পাষণ্ড কে স্নেহময় ও দয়াশীল বানাতে পারে, পৃথিবীর নিপীড়িত মানুষদের মুক্তি দিতে পারে। চরিত্রহীন কে চরিত্রবান, দুষ্কৃতিকারী লুটেরাকে বানাতে পারে মানুষের জীবন ও সম্পদের রক্ষক। সন্ত্রাসীকে বানাতে পারে মানবদরদি ও মানবতার বন্ধু। দুর্নীতিবাজকে করতে পারে দুর্নীতি নির্মূলকারী। পৃথিবী জুড়ে সৃষ্টি করতে পারে ইনসানিয়াত সমৃদ্ধ নতুন দুনিয়া।
আল্লাহ তায়া’লা ও আখেরাতের প্রতি এমন বিশ্বাসী হয়ে বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা) এর আদর্শিক নেতৃত্বের অধীনে যদি বিশ্বের পথহারা মানুষ তাদের পথ খুজে পায়, তাহলে সর্বত্র মানুষের রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হয়ে যাবে। প্রত্যেকে তার জানমালকে নিরাপদ মনে করবে। দুর্নীতির মানসিকতা দূর হয়ে যাবে। প্রশাসন ব্যবস্থা, আইন ব্যাবস্থা, ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষা ব্যাবস্থা , চিকিৎসা, বিচার-আচার বা আদালত সবকিছুই চলতে থাকবে সঠিকভাবে এবং মানুষের কল্যাণের জন্য।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিজেই আইন ভঙ্গ করবে না। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার হবে না। রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করবে না। কেউ কারো সাথে প্রতারণা করবে না। অস্ত্রের সাহায্যে কেউ জাতির ঘাড়ে ডিক্টেটর হয়ে বসবে না। মজলুমের আহাজারি থাকবে না।
কাউকে গোলামীর শৃংখলে আবদ্ধ হতে হবে না। অন্ন বস্ত্রের অভাবে কারো হাহাকার শোনা যাবেনা। চিকিৎসার অভাবে কাউকে যন্ত্রণায় কাতরাতে হবে না। আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসের এসবই হল পার্থিব মঙ্গল ও সুফল।
কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য যে, ক্ষমতাগর্বী লোকেরা, স্বৈরাচারী শাসকরা এবং মহান আল্লাহ ও আখেরাতে অবিশ্বাসী বস্তুবাদী পাশ্চাত্য সভ্যতার ধারক -বাহক ও সেবাদাসরা এ মহান সত্য উপলব্ধি করতে পারে না।
বস্তুত ইসলামী সমাজ ও সভ্যতাই পারে আজকের নীপিড়িত মানবতার প্রকৃত মুক্তি নিশ্চিত করতে।
তাই জীবনের যেসব ক্ষেত্র ও বিষয়ের সাথে মানুষের জীবন-জীবিকা সুখ-দুঃখ জানমাল ও ইজ্জত-আব্রু ওতপ্রোতভাবে জড়িত, এককথায় ব্যক্তি, পরিবার, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, যুদ্ধ, সন্ধি বন্ধুত্ব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি ক্ষেত্রে আল্লাহর আইন -শাসন ও প্রভুত্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাই আখেরাতের উপর ঈমানের প্রকৃত দাবী।
এ দাবী আদায়ের সংগ্রামকে বলা হয় ” আল জিহাদু ফী সাবিলিল্লাহ ” আল্লাহর পথে জিহাদ। আর এর সফল পরিণতিই হলো ইক্বামাতে দ্বীন বা দ্বীন ইসলামের প্রতিষ্ঠা। যার জন্য হয়েছিল সকল নবীর আগমন। আখেরাতের সাফল্যের জন্য এ কাজ অপরিহার্য। শেষ নবীর ( সা) জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত এ কাজের জন্যই ব্যয়িত হয়েছে। এ কাজের পূর্ণ অনুসরণ প্রকৃত মুমিনের একমাত্র কাজ। এরই আলোকে একজন মুমিনের সারা জীবনের কর্মসূচি নির্ধারিত হওয়া অপরিহার্য কর্তব্য।
জামায়াতে ইসলামী এই আদর্শেরই এক সংগ্রামী কাফেলার নাম। এই কাফেলার দীর্ঘ চলার পথে ঈমানের অগ্নি পরীক্ষায় দগ্ধ হয়ে নেতা কর্মীরা সত্যের সে মহান সাক্ষ্য পেশ করে চলেছেন নিরন্তর ও বিরামহীন গতিতে।
এ শ্বাস্বত আদর্শের জন্য পৃথিবীর সবকিছুকে তুচ্ছ প্রমান করে কাফেলার প্রিয় শহীদ নেতৃবৃন্দ ফাঁসির মঞ্চে আল্লাহপ্রেমের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ন হবার উজ্জ্বল উদাহরন পেশ করেছেন। যা দুনিয়াবাসীর কাছে সত্যের পথে আত্ননিবেদনে অনন্য ও চির প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে যুগ যুগান্তর ধরে।
এ কাফেলা অদম্য, অপ্রতিরোধ্য ও মৃত্যুভয়হীন চেতনায় উজ্জীবিত।

রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পবিত্র আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ দশই মহররম পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান ২৮ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,

“সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পবিত্র আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। মহান আল্লাহ এই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে। আশুরার দিন আল্লাহ পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আ:)-কে সৃষ্টি করেছেন। এই দিন হযরত নূহ (আ:)-এর আমলের প্লাবন শেষ হয় এবং নূহ (আ:)-এর জাহাজ তুরস্কের ‘জুদি’ নামক পর্বতে গিয়ে থামে। আশুরার দিন হযরত ইব্রাহিম (আ:) জালিম বাদশাহ নমরুদের অগ্নিকুন্ড থেকে নিরাপদে মুক্তি পান। এই দিন হযরত ইউনুস (আ:) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আশুরার দিনে হযরত আইয়ুব (আ:) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এই দিন আল্লাহ জালিম বাদশা ফিরাউনকে দল-বলসহ পানিতে ডুবিয়ে মেরেছেন এবং মুসা (আ:) ও তাঁর অনুসারীরা ফেরাউনের হাত থেকে নাজাত লাভ করেছেন। আশুরার দিন হযরত সুলাইমান (আ:) তাঁর হারানো রাজত্ব ফিরে পান। এই দিনে হযরত ইয়াকুব (আ:) হারানো ছেলে হযরত ইউসুফ (আ:)-কে ফিরে পেয়েছিলেন। এই দিনে হযরত ঈসা (আ:) জন্মগ্রহণ করেন এবং এই দিনেই তাঁকে দুনিয়া থেকে আকাশে উঠিয়ে নেওয়া হয়।
দশই মহররম কারবালা প্রান্তরে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হোসাইন (রাঃ)-এর শাহাদাতের ঘটনা মুসলিম জাতির ইতিহাসে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা। এই ঘটনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। আজও মুসলিম উম্মাহ অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয় কারবালার ঘটনা স্মরণ করে আবেগ আপ্লুত হয়।
হযরত হোসাইন (রাঃ) অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে সেদিন কারবালা প্রান্তরে পরিবার-পরিজন নিয়ে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। রাসূল (সা:) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং তাঁর সাহাবীদের প্রবর্তিত খেলাফতি শাসন ব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন। ইসলামী খেলাফতের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপোষ না করার কারণেই কারবালার ঘটনা ঘটেছিল। কারবালার ঘটনা আমাদেরকে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করার কথাই শিক্ষা দেয়।
আজকে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে যে শোষণ, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন চলছে তা থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়ার জন্য আহ্বান করছি।

হাসান মাহমুদ চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সভাপতি, সেচ্ছাসেবী সংস্থা কাশেম নুর ফাউন্ডেশন এর কো-চেয়ারম্যান, দরদী সমাজ গঠনের রুপকার, এলাকার মানুষের অত্যন্ত আপনজন জনাব হাসান মাহমুদ চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিচিত ও আপনজনদের অনেকেই সুস্থতা কামনা করে স্টেটাস দিয়েছেন।

জনাব জমির উদ্দিন সিদ্দিকী লিখেছেন, আল্লাহপাকের দরবারে ফরিয়াদ জানাই, তিনি যেন তাঁকে আশু সুস্থতা দান করেন, তাঁকে হায়াতে তাইয়্যেবা ও সেহেতে কুল্লিয়া বখশিশ করেন,তাঁর পরিবার,আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু বান্ধব ও পরিচালিত সব প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরের জনশক্তিকে নিরাপদ ও সুস্থ রাখেন। আমিন ইয়া রাব্বাল আ'লামীন।

জমির উদ্দিন সিদ্দিকীর স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছেন, অধ্যাপক জাকির হোসেন হাওলাদার, তহুর আহমেদ হেলালী, সাইয়েদ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন, সোয়াইব ইসলাম, আব্দুল আজিজ চৌধুরী প্রমূখ। চট্টগ্রাম ইউনিভারসিটির রাজনীতি বিভাগের ছাত্র জনাব চৌধুরী অত্র এলাকায় সংস্কারমূলক ভালোকাজের জন্য অত্যন্ত পরিচিত।


শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২০

৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম দিবস

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে

৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ২৯ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,
“৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম দিবস। এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের হিসেব মতে বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী-ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মোট ৫ শতাধিক মানুষকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা অপহরণ করে গুম করেছে। তাদের মধ্যে খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ২শত ৫০ জনের। অজ্ঞাতবাস থেকে যারা ফিরে এসেছেন তারা কেউই অপহরণকারীদের ব্যাপারে মুখ খোলেননি। অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
যারা গুম হয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের পুত্র সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য শহীদ মীর কাসেম আলীর পুত্র সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আরমান আহমদ বিন কাসেম, হাফেজ জাকির হোসাইন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আল মোকাদ্দাস, মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ এবং বিএনপি’র নেতা জনাব ইলিয়াস আলী ও সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলম।
যারা গুম হয়েছেন তাদের পরিবার-পরিজন অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে জীবন যাপন করছেন। অনেকেরই পিতা-মাতা এবং স্ত্রীসহ আপনজন শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট আবেদন-নিবেদন করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি।
সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজন সাংবাদিক সম্মেলন করে আপনজনকে পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়ার জন্য বক্তব্য দেওয়া সত্তে¡ও সরকার কোন সাড়া দিচ্ছেন না।
কার্যত বাংলাদেশে মানুষের সকল অধিকার আজ গুম হয়ে গিয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার, অন্ন-বস্ত্র-চিকিৎসা এক কথায় মানুষের সকল অধিকার হরণ করেছে বর্তমান সরকার।
এ অবস্থা অনন্তকাল চলতে পারে না। এ থেকে জাতির মুক্তি ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য জাতিকে ইস্পাত কঠিন প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে।”

বিচার ব্যবস্থা ও প্রশাসনের ভূমিকায় জামায়াত নেতার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বিচার ব্যবস্থা ও প্রশাসনের ভূমিকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২৭ আগষ্ট এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “গত ৪ জুলাই নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকা থেকে দিশা মনি নামে একটি মেয়ে নিখোঁজ হয়। ৬ আগষ্ট মেয়েটির বাবা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করে দফায় দফায় তাদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে। জোরপূর্বক ১৬৪ ধারায় ধর্ষণ ও খুনের স্বীকারোক্তি আদায় করে। অথচ নিখোঁজ হওয়ার ৫১ দিনের মাথায় মেয়েটিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। মামলা দায়েরের পর নিখোঁজ মেয়েটি নিহত হয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো তদন্ত না করেই নিরীহ মানুষকে অন্যায়ভাবে আটক করে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে এবং মোটা অংকের অর্থও আদায় করছে।
প্রশাসনের হাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোটা বিচার ব্যবস্থা বন্দী হয়ে পড়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীগণ দীর্ঘদিন যাবৎ বলে আসছেন ‘নিম্ন আদালত সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।’ ১৬৪ ধারায় স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দী নিয়ে বহু পূর্ব থেকেই আপত্তি উত্থাপিত হয়ে আসছে। নারায়ণগঞ্জের নিখোঁজ মেয়েটিকে ৫১ দিন পর ফিরে পাওয়া গেলো। অথচ তাকে হত্যার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করে আদালতে স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দী নেয়া হলো। নিখোঁজ মেয়েটিকে ফেরৎ পাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দীর কোনো কার্যকারিতা ও সত্যতা নেই। প্রকৃত পক্ষে ১৬৪ ধারাটিকে জুলুম-নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের ঘটনার সাথে জড়িত অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, ১৬৪ ধারার অপব্যবহার বন্ধ এবং সর্বোপরি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”

শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০২০

শহীদ পাড়া মহল্লা কমিটির নেতা সাইফুল ইসলামের পিতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ চান্দগাঁও থানা ৪ নং ওয়ার্ডের শহীদ পাড়া নিবাসী শহীদ পাড়া মহল্লা কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলামের পিতা জনাব মোহাম্মদ সোলেমান আজ ২৮ আগষ্ট (শুক্রবার)২ ঘটিকার সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন(ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজেউন)।

মরহুমের মৃত্যুতে চান্দগাঁও থানা জামায়াত নেতা জসিম উদ্দিন সরকার শোক প্রকাশ করে একটি বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে জামায়াত নেতা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ’আল্লাহ যেন শোকাহত পরিবারের সকল সদস্যদের সবরে জামিল দান করেন। আমিন ছুম্মা আমিন ।

আজ বাদ এশা শহীদ পাড়াস্হ আব্দুল লতিফ ওয়াকফোষ্টেট জামে মসজিদে মরহুমের জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

আশুরা উপলক্ষ্যে ৩০ আগষ্ট আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বন্ধ থাকবে

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ পবিত্র আশুরা (মুহররম) উপলক্ষ্যে আগামী ৩০ আগষ্ট (রবিবার) আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

উক্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার অফিস থেকে কর্নেল মোঃ কাশেম, পিএসসি (অবঃ), রেজিষ্ট্রার কর্তৃক ২৭ আগষ্ট’২০ তারিখ স্বাক্ষরিত একটি ছুটির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। 

 

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০

মুহররম ও আশুরার ফজিলত

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ মুহররম, একটি মহান বরকতময় মাস। হিজরি সনের প্রথম মাস । এটি ‘আশহুরে হুরুম’ তথা হারামকৃত মাস চতুষ্টয়ের অন্যতম। আশহুরে হুরুম সম্বদ্ধে আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ ﴿36﴾[التوبة:36].
নিশ্চয় মাসসমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে, (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্য থেকে চারটি সম্মানিত, এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন। সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহে নিজদের উপর কোন জুলুম করো না।{সূরা তাওবা:৩৬}
সাহাবি আবু বাকরাহ রা. নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, নবীজী বলেন,
{السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ: ثَلاثَةٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ } [رواه البخاري 2958]
বছর হলো বারোটি মাসের সমষ্টি, তার মধ্যে চারটি অতি সম্মানিত। তিনটি পর পর লাগোয়া জিলকদ, জিলহজ ও মুহররম আর (চতুর্থটি হলো) জুমাদাস সানি ও শাবানের মধ্যবর্তী রজব। {বোখারি:২৯৫৮}
মুহররমকে মুহররম বলে অভিহিত করা হয়েছে কারণ এটি অতি সম্মানিত।
আল্লাহর বাণী ﴿فَلا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ﴾ {তোমরা এতে নিজেদের উপর কোনো জুলুম করো না।} অর্থাৎ, এই সম্মানিত মাস সমূহে তোমরা কোনো অন্যায় করো না। কারণ এ সময়ে সংঘটিত অন্যায় ও অপরাধের পাপ অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি ও মারাত্মক।
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা “ ﴿فَلا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ﴾ {তোমরা এতে নিজেদের উপর কোনো জুলুম করো না।}’’ এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, এই বারো মাসের কোনোটিতেই তোমরা অন্যায় অপরাধে জড়িত হয়ো না। অত:পর তাহতে চারটি মাসকে বিশেষভাবে নির্দিষ্ট করেছেন। তাদেরকে মহা সম্মানে সম্মানিত করেছেন। এসবের মাঝে সংঘটিত অপরাধকে অতি মারাত্মক অপরাধ বলে গণ্য করেছেন। আর তাতে সম্পাদিত নেক আমলকে বেশি সাওয়াব যোগ্য নেক আমল বলে সাব্যস্ত করেছেন।
কাতাদাহ রা. “ ﴿فَلا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ﴾ {তোমরা এতে নিজেদের উপর কোনো জুলুম করো না।}’’ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, যদিও জুলম সব সময়ের জন্য বড় অন্যায় তবে হারাম মাস চতুষ্টয়ে সম্পাদিত জুলুম অন্যান্য সময়ে সম্পাদিত জুলুম হতে অপরাধ ও পাপের দিক থেকে আরও বেশি মারাত্মক অন্যায়। আল্লাহ তাআলা নিজ ইচ্ছা মাফিক যাকে ইচ্ছা বড় করতে পারেন।
তিনি বলেন, মহান আল্লাহ নিজ সৃষ্টি হতে খাঁটি ও উৎকৃষ্টগুলোকে বাছাই করেছেন; ফেরেশতাকুল হতে কতককে রাসূল হিসাবে বাছাই করেছেন অনুরূপ মানুষ থেকেও। কথা হতে বাছাই করেছেন তাঁর জিকিরকে। আর জমিন হতে বাছাই করেছেন মসজিদ সমূহকে। মাসসমূহ থেকে বাছাই করেছেন রমজান ও সম্মানিত মাস চতুষ্টয়কে। দিনসমূহ হতে বাছাই করেছেন জুমুআর দিনকে আর রাত্রসমূহ থেকে লাইলাতুল কদরকে। সুতরাং আল্লাহ যাদের সম্মানিত করেছেন তোমরা তাদের সম্মান প্রদর্শন কর। আর বুদ্ধিমান লোকদের মতে, প্রতিটি বস্তুকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হয় মূলত: সেসব জিনিসের মাধ্যমেই যেসব দ্বারা আল্লাহ তাদেরকে সম্মানিত করেছেন। {সার সংক্ষেপ, তাফসির ইবন কাসির, সূরা তাওবা, আয়াত ৩৬}
💦 মুহররম মাসে অধিক পরিমাণে নফল রোজার ফজিলত
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
{ أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللَّهِ الْمُحَرَّمُ }
অর্থাৎ, রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহররম (মাসের রোজা)। { সহিহ মুসলিম,১৯৮২}
شَهْرُ اللَّهِ বাক্যে شَهْر কে اللَّهِ -এর দিকে যে إضافة করা হয়েছে এটি إضافة تعظيم। অর্থাৎ, সম্মানের ইযাফত। আল্লামা ক্বারী রহ. বলেন, হাদিসের বাহ্যিক শব্দমালা থেকে পূর্ণ মাসের রোজা বুঝে আসে। তবে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান ব্যতীত আর কোনো মাসে পূর্ণ মাস রোজা রাখেননি, এটি প্রমাণিত। তাই হাদিসকে এ মাসে বেশি পরিমাণে রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া হয়েছে বলে ধরা হবে।
শা’বান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক রোজা রেখেছেন বলে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। হতে পারে মুহররম মাসের ফজিলত সম্বন্ধে তাঁকে একেবারে জীবনের শেষ পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে আর তিনি তা বাস্তবায়ন করে যাবার সময় পাননি। {ইমাম নববি, শারহু সহিহ মুসলিম}
💦 আল্লাহ তাআলা স্থান ও কাল যাকে ইচ্ছা মর্যাদা দিয়ে থাকেন
আল্লামা ইজ্জ বিন আব্দুস সালাম রহ. বলেন, স্থান ও কালের একের উপর অপরের মর্যাদা দান দুই প্রকার। এক. পার্থিব। দুই. দ্বীনী, যা আল্লাহর দয়া ও করুণার উপর নির্ভরশীল। তিনি সেসব স্থান বা কালে ইবাদত সম্পন্নকারীদের সাওয়াব বৃদ্ধি করে দিয়ে তাদের উপর করুণা করেন। যেমন, অন্যান্য মাসের রোজার তুলনায় রমজানের রোজার মর্যাদা অনুরূপ আশুরার দিন..। এগুলোর মর্যাদা আল্লাহর দান ও ইহসানের উপর নির্ভরশীল। {কাওয়ায়েদুল আহকাম:১/৩৮}
💦 ইতিহাসে আশুরা
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
قال: قدم النبي - صلى الله عليه وسلم - المدينة فرأى اليهود تصوم يوم عاشوراء فقال: { مَا هَذَا قَالُوا هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ، هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللَّهُ بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ فَصَامَهُ مُوسَى، قال: فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ فَصَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ } [رواه البخاري 1865].
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা পালন করছে। নবীজী বললেন, এটি কি? তারা বলল, এটি একটি ভাল দিন। এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলকে তাদের দুশমনের কবল থেকে বাঁচিয়েছেন। তাই মুসা আ. রোজা পালন করেছেন। রাসূলুল্লাহ বললেন, মুসাকে অনুসরণের ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার। অত:পর তিনি রোজা রেখেছেন এবং রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।{বোখারি:১৮৬৫}
বোখারির বর্ণনা,
{ هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ }
এটি একটি ভাল দিন।
মুসলিমের বর্ণনায় আছে,
{ هذا يوم عظيم أنجى الله فيه موسى وقومه وغرّق فرعون وقومه }
এটি একটি মহান দিন, আল্লাহ তাআলা তাতে মুসা আ. ও তাঁর কওমকে রক্ষা করেছেন আর ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়কে পানিতে ডুবিয়ে মেরেছেন।
বোখারির বর্ণনা,
{ فصامه موسى }
মুসা আ. রোজা পালন করেছেন।
ইমাম মুসলিম তার রেওয়ায়াতে সামান্য বাড়িয়ে বর্ণনা করেছেন,
{ شكراً لله تعالى فنحن نصومه }
আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় স্বরূপ তাই আমরাও রোজা পালন করি।
বোখারির অন্য রেওয়ায়াতে আছে,
{ ونحن نصومه تعظيماً له }
আর আমরা রোজা পালন করি তার সম্মানার্থে।
ইমাম আহমাদ সামান্য বর্ধিতাকারে বর্ণনা করেছেন,
{ وهو اليوم الذي استوت فيه السفينة على الجودي فصامه نوح شكراً }.
এটি সেই দিন যাতে নূহ আ.-এর কিশতি জুদি পর্বতে স্থির হয়েছিল, তাই নূহ আ. আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ার্থে সেদিন রোজা রেখেছিলেন।
বোখারির বর্ণনা,
{ وأمر بصيامه }
এবং রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
বোখারির অন্য বর্ণনায় এসেছে,
{ فقال لأصحابه: أنتم أحق بموسى منهم فصوموا }.
তিনি তাঁর সাহাবিদের বললেন, মুসা আ.-কে অনুসরণের ক্ষেত্রে তোমরা তাদের চেয়ে অধিক হকদার। সুতরাং তোমরা রোজা রাখ।
আশুরার রোজা পূর্ব হতেই প্রসিদ্ধ ছিল এমনকি রাসূলুল্লাহর নবুওয়ত প্রাপ্তির পূর্বে জাহেলি যুগেও আরব সমাজে তার প্রচলন ছিল।
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, জাহেলি যুগের লোকেরা আশুরাতে রোজা রাখত।..
{ إن أهل الجاهلية كانوا يصومونه }..
জাহেলি যুগের লোকেরা আশুরাতে রোজা রাখত।..
ইমাম কুরতুবি রহ. বলেন, ]
কোরাইশরা আশুরার রোজা প্রসঙ্গে সম্ভবত বিগত শরিয়ত যেমন ইবরাহীম আ.-এর উপর নির্ভর করত। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরাত করার পূর্বেই মক্কাতে আশুরার রোজা রাখতেন। হিজরতের পর দেখতে পেলেন মদিনার ইহুদিরা এদিনকে উদযাপন করছে। তিনি কারণ সম্বন্ধে তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা উপরোল্লেখিত উত্তর দিল। তখন নবীজী সাহাবাদেরকে ঈদ-উৎসব উদযাপন প্রসঙ্গে ইহুদিদের বিরোধিতা করার নির্দেশ দিলেন। যেমন আবু মুসা রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন,
{ كَانَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ تَعُدُّهُ الْيَهُودُ عِيدًا }
অর্থাৎ, আশুরার দিনকে ইহুদিরা ঈদ হিসাবে গ্রগণ করেছিল।
মুসলিমের রেওয়ায়াতে এসেছে,
{ كان يوم عاشوراء تعظمه اليهود تتخذه عيدا }
আশুরার দিনকে ইহুদিরা বড় করে দেখত (সম্মান করত), একে তারা ঈদ হিসাবে গ্রহণ করেছিল।
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় এসেছে,
{ كان أهل خيبر ( اليهود ) يتخذونه عيدا، ويلبسون نساءهم فيه حليهم وشارتهم }.
খায়বর অধিবাসীরা (ইহুদিরা) আশুরার দিনকে ঈদ হিসাবে গ্রহণ করেছিল। তারা এদিন নিজ স্ত্রীদেরকে নিজস্ব অলঙ্কারাদি ও ব্যাজ পরিধান করাত।
তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম বললেন,
{ فَصُومُوهُ أَنْتُمْ }
তাহলে তোমরাও রোজা রাখ। {বোখারি}
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদেরকে এদিনে রোজা রাখার নির্দেশ দানের আপাত কারণ হচ্ছে, ইহুদিদের বিরোধিতা করা। যেদিন তারা ঈদ উদযাপন করে ইফতার করবে সেদিন মুসলমানগণ রোজা রাখবে। কারণ ঈদের দিন রোজা রাখা হয় না। { সার-সংক্ষেপ, ফাতহুল বারি শারহুল বোখারি, আল্লামা ইবন হাজার আসকালানি}
💦 আশুরার রোজার ফজিলত
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
{ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَحَرَّى صِيَامَ يَوْمٍ فَضَّلَهُ عَلَى غَيْرِهِ إِلّا هَذَا الْيَوْمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ، وَهَذَا الشَّهْرَ يَعْنِي شَهْرَ رَمَضَانَ }
আমি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রোজা রাখার জন্য এত অধিক আগ্রহী হতে দেখিনি যত দেখেছি এই আশুরার দিন এবং এই মাস অর্থাৎ রমজান মাসের রোজার প্রতি। {বোখারি:১৮৬৭}
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
{ صيام يوم عاشوراء، إني أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله }
আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি, তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের পাপ ক্ষমা করে দেবেন। {সহিহ মুসলিম:১৯৭৬}
এটি আমাদের প্রতি মহান আল্লাহর অপার করুণা। তিনি একটি মাত্র দিনের রোজার মাধ্যমে পূর্ণ এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন। সত্যই মহান আল্লাহ পরম দাতা।
💦 বছরের কোন দিনটি আশুরার দিন
আল্লামা নববি রহ. বলেন, তাসুআ, আশুরা দু’টি মদ্দযুক্ত নাম। অভিধানের গ্রন্থাবলীতে এটিই প্রসিদ্ধ। আমাদের সাথীরা বলেছেন, আশুরা হচ্ছে মুহররম মাসের দশম দিন। আর তাসুআ সে মাসের নবম দিন। জমহুর ওলামারাও তা-ই বলেছেন। হাদিসের আপাতরূপ ও শব্দের প্রায়োগিক ও ব্যবহারিক চাহিদাও তাই। ভাষাবিদদের নিকট এটিই প্রসিদ্ধ। {আল-মজমূ}
এটি একটি ইসলামি নাম, জাহেলি যুগে পরিচিত ছিল না। {কাশ্শাফুল কান্না’ ২য় খন্ড, সওমুল মুহররম}
ইবনু কোদামাহ রহ. বলেন, আশুরা মুহররম মাসের দশম দিন। এটি সাঈদ ইবনুল মুসায়্যাব ও হাসান বসরি রহ.-এর মত। কারণ আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. বর্ণনা করেন,
{ أمر رسول الله - صلى الله عليه وسلم - بصوم يوم عاشوراء العاشر من المحرم }.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরা-মুহররমের দশম দিনে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। {বর্ণনায় তিরমিজি, তিনি বলেছেন, হাদিসটি হাসান সহিহ}
💦 আশুরার সাথে তাসুআর রোজাও মুস্তাহাব
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. বর্ণনা করেন,
{ حِينَ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ". قَالَ فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ }.
অর্থাৎ, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোজা রাখলেন এবং (অন্যদেরকে) রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটিতো এমন দিন, যাকে ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা বড় জ্ঞান করে, সম্মান জানায়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আগামী বছর এদিন আসলে, আমরা নবম দিনও রোজা রাখব ইনশাল্লাহ। বর্ণনাকারী বলছেন, আগামী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয়ে গিয়েছে। {সহিহ মুসলিম:১৯১৪৬}
ইমাম শাফেয়ি ও তাঁর সাথীবৃন্দ, ইমাম আহমাদ, ইমাম ইসহাক প্রমুখ বলেছেন, আশুরার রোজার ক্ষেত্রে দশম ও নবম উভয় দিনের রোজাই মুস্তাহাব। কেননা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ তারিখ রোজা রেখেছেন এবং নয় তারিখ রোজা রাখার নিয়ত করেছেন।
এরই উপর ভিত্তি করে বলা যায়, আশুরার রোজার কয়েকটি স্তর রয়েছে: সর্ব নিম্ন হচ্ছে কেবল দশ তারিখের রোজা রাখা। এরচে উচ্চ পর্যায় হচ্ছে তার সাথে নয় তারিখের রোজা রাখা। এমনিভাবে মুহররম মাসে রোজার সংখ্যা যত বেশি হবে মর্যাদা ও ফজিলতও ততই বাড়তে থাকবে।
💦 তাসুআর রোজা মুস্তাহাব হবার হিকমত
ইমাম নববি রহ. বলেন, তাসুআ তথা মুহররমের নয় তারিখ রোজা মুস্তাহাব হবার হিকমত ও উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে প্রাজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন,
এক. এর উদ্দেশ্য হল, ইহুদিদের বিরোধিতা করা। কারণ তারা কেবল একটি অর্থাৎ দশ তারিখ রোজা রাখত।
দুই. আশুরার দিনে কেবলমাত্র একটি রোজা পালনের অবস্থার উত্তরণ ঘটিয়ে তার সাথে অন্য একটি রোজার মাধ্যমে সংযোগ সৃষ্টি করা। যেমনিকরে এককভাবে জুমুআরা দিন রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। এটি আল্লামা খাত্তাবি ও অন্যান্যদের মত।
তিন. দশ তারিখের রোজার ক্ষেত্রে চন্দ্র গণনায় ত্রুটি হয়ে ভুলে পতিত হবার আশংকা থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে। হতে পারে গণনায় নয় তারিখ কিন্তু বাস্তবে তা দশ তারিখ।
এর মধ্যে সর্বাধিক শক্তিশালী তাৎপর্য হচ্ছে, আহলে কিতাবের বিরোধিতা করা। শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া রহ. বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বহু হাদিসে আহলে কিতাবদের সাদৃশ্য অবলম্বন করতে নিষেধ করেছেন। যেমন আশুরা প্রসঙ্গে নবীজী বলেছেন,
{ لَئِنْ عِشْتُ إلَى قَابِلٍ لاَصُومَنَّ التَّاسِعَ }
আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তাহলে অবশ্যই নয় তারিখ রোজা রাখব। { আল-ফতোয়াল কোবরা, খন্ড:৬}
আল্লামা ইবন হাজার রহ.
{ لئن بقيت إلى قابل لأصومن التاسع }
আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তাহলে অবশ্যই নয় তারিখ রোজা রাখব। হাদিসের তা’লিকে বলেছেন,
নবীজীর নয় তারিখে রোজা রাখার সংকল্প ব্যক্ত করার উদ্দেশ্য কিন্তু এই নয় যে, তিনি কেবল নয় তারিখে রোজার রাখার সংকল্প করেছেন বরং তাঁর উদ্দেশ্য হচ্ছে, দশ তারিখের রোজার সাথে নয় তারিখের রোজাকে সংযুক্ত করা। সাবধানতা বশত: কিংবা ইহুদি খ্রিষ্টানদের বিরোধিতার জন্য। এটিই অগ্রাধিকার প্রাপ্ত মত। সহিহ মুসলিমের কতিপয় বর্ণনা এদিকেই ইংগিত করে। {ফাতহুল বারি:৪/২৪৫}
💦 শুধু দশ তারিখ রোজা রাখার বিধান
শায়খুল ইসলাম বলেন, আশুরার রোজা এক বছরের গুনাহের কাফ্ফারা আর আশুরার একটিমাত্র রোজা মাকরূহ হবে না। {আল-ফাতাওয়াল কোবরা: ৫ম খন্ড}
ইবনু হাজার হায়সামী রচিত তুহফাতুল মুহতাজ গ্রন্থে আছে, আশুরা উপলক্ষে দশ তারিখ কেবল একটি রোজা রাখাতে কোনো দোষ নেই। {তয় খন্ড, বাবু সওমিত তাতাব্বু’}
💦 নির্ধারিত দিনটি শনি কিংবা জুমুআ বার হলেও আশুরার রোজা রাখা হবে
কেবলমাত্র জুমুআর দিনকে নফল রোজার জন্য নির্ধারণ করা মাকরূহ, অনুরূপভাবে ফরজ রোজা ব্যতীত শনিবার রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে নিম্নের যে কোনো পদ্ধতির অনুকূলে রাখা হলে আর মাকরূহ হবে না। যেমন ঐ দুই দিনের সাথে মিলিয়ে আরো একদিন করে রোজা রাখা। দিনটি অনুমোদিত অভ্যাসের অনুকূলে পড়ে যাওয়া যেমন একদিন রোজা রাখা একদিন ইফতার করা। মান্নত কিংবা কাজার রোজা হওয়া। অথবা শরিয়ত রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছে এমন তারিখে ঐ দিনদ্বয় পড়ে যাওয়া যেমন আরাফা কিংবা আশুরার দিন...। {তুহফাতুল মুহতাজ, ৩য় খন্ড, বাবু সওমিত তাতাব্বু’, মুশকিলুল আছার, ২য় খন্ড, বাবু সওমি য়াওমিস সাবতি}
আল্লামা বাহুতি রহ. বলেন, শুধুমাত্র শনিবারকে রোজা রাখার জন্য নির্ধারণ করা মাকরূহ। কারণ এ প্রসঙ্গে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
{ لا تَصُومُوا يَوْمَ السَّبْتِ إلّا فِيمَا اُفْتُرِضَ عَلَيْكُمْ }
ফরজ রোজা ব্যতীত তোমরা কেবল শনিবার রোজা রাখবে না।{বর্ণনায় আহমাদ ও হাকেম}
তাছাড়া শনিবারকে ইহুদিরা খুব সম্মান করে, অনেক বড় করে দেখে, তাই সেদিন রোজা রাখলে তাদের তাশাব্বুহ তথা সাদৃশ্যাবলম্বন হয়ে যাবে...। তবে শুক্র বা শনিবার যদি কোনো ব্যক্তির অনুস্মৃত অভ্যাসের আওতায় পড়ে যায় তাহলে আর মাকরূহ হবে না। যেমন এক ব্যক্তি নিয়মিত আরাফা ও আশুরার রোজা পালন করে আর সেই আরাফা কিংবা আশুরার দিন শনি কিংবা শুক্রবার দিন সংঘটিত হল তাহলে সে ব্যক্তির জন্য উক্ত শুক্র কিংবা শনিবার রোজা রাখা মাকরূহ হবে না। কেননা এসব ক্ষেত্রে অভ্যাসকে বিবেচনায় রাখা হয়...। {কাশ্শাফুল কান্না’, ২য় খন্ড, বাবু সওমিত তাতাব্বু’}
💦 মাসের শুরু অস্পষ্ট হয়ে গেলে করণীয় কি?
ইমাম আহমদ রহ. বলেন, মাসের শুরু নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে কিংবা সেটি অস্পষ্ট হয়ে গেলে সে মাসে আশুরার রোজা তিনদিন রাখা হবে। আর এমনটি করা হবে কেবল নয় ও দশ তারিখের রোজাকে নিশ্চিত করার জন্য। {আল-মুগনি লি ইবনে কোদামাহ, ৩য় খন্ড, সিয়ামু আশুরা}
সুতরাং যে ব্যক্তি মুহররম মাসের আগমণ সম্বন্ধে বুঝতে পারেনি এবং সে দশ তারিখের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে ইচ্ছুক তাহলে সে নিয়মমত জিল হজ্জকে ত্রিশ দিন গণনা করবে। অত:পর নয় ও দশ তারিখ রোজা রাখবে। আর যে ব্যক্তি নয় তারিখের ব্যাপারেও সাবধানতা অবলম্বন করতে চাইবে সে আট, নয় ও দশ তারিখ মোট তিন দিন রোজা রাখবে। ( এখন যদি জিল হজ্জ মাস নাকেস অর্থাৎ ত্রিশ দিন থেকে কম হয় তাহলে সে নিশ্চিত তাসুআ ও আশুরার রোজা রাখতে সক্ষম হবে) তবে এখানে মনে রাখা দরকার, আশুরার রোজা কিন্তু মুস্তাহাব ফরজ নয়। তাই লোকদেরকে রমজান ও শাওয়াল মাসের মত মুহররম মাসের চাঁদ তালাশ করার নির্দেশ দেয়া হবে না।
💦 আশুরার রোজা কোন ধরনের পাপের জন্য কাফ্ফারা?
ইমাম নববি রহ. বলেন, আশুরার রোজা সকল সগিরা গুনাহের কাফ্ফারা। অর্থাৎ এ রোজার কারণে মহান আল্লাহ কবিরা নয় বরং (পূর্ববর্তী একবছরের) যাবতীয় সগিরা গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।
এর পর তিনি বলেন, আরাফার রোজা দুই বছরের (গুনাহের জন্য) কাফ্ফারা, আশুরার রোজা এক বছরের জন্য কাফ্ফারা, যার আমীন ফেরেশতাদের আমীনের সাথে মিলে যাবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে... হাদিসে বর্ণিত এসব গুনাহ মাফের অর্থ হচ্ছে, ব্যক্তির আমলনামায় যদি সগিরা গুনাহ থেকে থাকে তাহলে এসব আমল তার গুনাহের কাফ্ফারা হবে অর্থাৎ আল্লাহ তার সগিরা গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর যদি সগিরা-কবিরা কোনো গুনাহই না থাকে তাহলে এসব আমলের কারণে তাকে সাওয়াব দান করা হবে, তার দরজাত বুলন্দ করা হবে। আর আমলনামায় যদি শুধু কবিরা গুনাহ থাকে সগিরা নয় তাহলে আমরা আশা করতে পারি, এসব আমলের কারণে তার কবিরা গুনাহসমূহ হালকা করা হবে। {আল-মাজমূ শারহুল মুহাযযাব, ষষ্ঠ খন্ড, সওমু য়াওমি আরাফা}
শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া রহ. বলেন, পবিত্রতা অর্জন, সালাত, রমজান, আরাফা ও আশুরার রোজা ইত্যাদি কেবল সগিরা গুনাহসমূহের কাফ্ফারা অর্থাৎ এসব আমলের কারণে কেবল সগিরা গুনাহ ক্ষমা করা হয়। {আল-ফাতাওয়াল কোবরা, ৫ম খন্ড}
💦 রোজার সাওয়াব দেখে প্রতারিত হওয়া চলবে না
আরাফা কিংবা আশুরার রোজার উপর নির্ভর করে অনেক বিভ্রান্ত লোক ধোঁকায় পড়ে যায়। আত্ম প্রতারিত হয়। এমনকি অনেককে বলতে শোনা যায়, আশুরার রোজার কারণে পূর্ণ এক বছরের পাপ ক্ষমা হয়ে গিয়েছে। বাকি থাকল আরাফার রোজা, তো সেটি সাওয়াবের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করবে।
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রহ. বলেন, এ আত্ম প্রবঞ্চিত-বিভ্রান্ত লোকটি বুঝল না যে, রমজানের রোজা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আরাফা ও আশুরার রোজার চেয়ে বহু গুণে বড় ও অধিক সাওয়াব যোগ্য ইবাদত। আর এগুলো মধ্যবর্তী গুনাহসমূহের জন্য কাফ্ফারা তখনই হয় যদি কবিরা গুনাহসমূহ থেকে বেঁচে থাকা হয়। সুতরাং এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান এবং এক জুমুআ থেকে পরবর্তী জুমুআ, মধ্যবর্তী সময়ে কৃত পাপের জন্য কাফ্ফারা তখনই হবে যখন কবিরা গুনাহ ত্যাগ করা হবে। উভয়বিধ কার্য সম্পাদনের মাধ্যমেই কেবল সগিরা গুনাহ মাফ হবে।
আবার কিছু বিভ্রান্ত লোক আছে, যারা ধারণা করে, তাদের নেক আমল বদ আমল থেকে বেশি। কারণ তারা গুনাহের ভিত্তিতে নিজেদের হিসাব নেয় না। এবং পাপাচার গণনায় আনে না। যদি কখনো কোনো নেক আমল সম্পাদন করে তখন কেবল তাই সংরক্ষণ করে। এরা সেসব লোকদের ন্যায় যারা মুখে মুখে ইস্তেগফার করে অথবা দিনে একশত বার তাসবিহ পাঠ করে অত:পর মুসলমানদের গিবত ও সম্মান বিনষ্টের কাজে লেগে যায়। সারা দিন আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কাজে অতিবাহিত করে। এসব লোক তাসবিহ তাহলিলের ফজিলত সম্বন্ধে খুব ফিকির করে। কিন্তু তার মাধ্যমে সংঘটিত অন্যায় ও পাপকর্মের প্রতি মোটেই দৃষ্টিপাত করে না। এটিতো কেবলই ধোঁকা ও আত্ম প্রতারণা। {আল-মওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ, খন্ড ১৩, গুরুর}
💦 রমজানের কাজা অনাদায়ি থাকা অবস্থায় আশুরার রোজার হুকুম কি?
রমজানের কাজা আদায় না করে নফল রোজা রাখা যাবে কিনা এ ব্যাপারে ওলামাদের মাঝে এখতেলাফ আছে। হানাফিদের নিকট জায়েয। কেননা রমজানের কাজা সম্পন্ন করা তাৎক্ষণিকভাবে ওয়াজিব নয়। বিলম্বে সম্পন্ন করার অবকাশ আছে। শাফেয়ি ও মালেকিদের নিকটও জায়েয তবে মাকরূহ হবে। কারণ এতে ওয়াজিব আদায় বিলম্বিত হয়।
আল্লামা দুসূকি রহ. বলেন, মান্নত, কাজা ও কাফ্ফারা জাতীয় ওয়াজিব রোজা অনাদায়ি রেখে নফল রোজা পালন করা মাকরূহ। সে নফল রোজাটি গাইরে মুআক্কাদাহ হোক কিংবা মুআক্কাদাহ যেমন আশুরা, জিল হজ্জের নয় তারিখের রোজা ইত্যাদি।
হাম্বলি ইমামগণের মতে রমজানের কাজা আদায় করার পূর্বে নফল রোজা পালন করা হারাম। এমতাবস্থায় কেউ নফল রোজা রাখলে সহিহ হবে না এমনকি পরবর্তীতে কাজা আদায় করার মত পর্যাপ্ত সময় থাকলেও। বরং আগে ফরজ আদায় করতে হবে। { আল-মওসুআ আল-ফিকহিয়্যাহ, খন্ড ২৮, সওমুত তাতাব্বু’}
সুতরাং প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে, রমজানের পরপরই বিলম্ব না করে কাজা সম্পন্ন করে নেওয়া। যাতে কোনোরূপ সমস্যা ছাড়াই আরাফা ও আশুরার রোজা পালনের সুযোগ পাওয়া যায়। কেউ যদি আরাফা ও আশুরার রোজায় কাজা আদায়ের নিয়ত করে -এবং এ নিয়ত রাত্র হতেই করে- তাহলে সেটি তার জন্য যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ তার কাজা আদায় হয়ে যাবে। আল্লাহর করুণা অনেক বিশাল।
💦 আশুরায় উদযাপিত কিছু বেদআত
আশুরার দিন লোকেরা সুরমা লাগানো, গোসল করা, মেহেদি লাগানো, মুসাফাহা করা, খিচুড়ি রান্না করা, আনন্দ উৎসবসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করে থাকে এ সম্বন্ধে শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া রহ. কে প্রশ্ন করা হল, এর কোনো ভিত্তি আছে কি না?
জবাবে তিনি বললেন, এসব অনুষ্ঠানাদি উদযাপন প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সহিহ কোনো হাদিস বর্ণিত হয়নি এবং সাহাবাদের থেকেও না। চার ইমামসহ নির্ভরযোগ্য কোনো আলেমও এসব কাজকে সমর্থন করেননি। কোনো মুহাদ্দিস এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ও সাহাবাদের থেকে কোনো সহিহ কিংবা জয়িফ হাদিসও বর্ণনা করেননি। তাবিয়ীদের থেকেও কোনো আছর পাওয়া যায়নি। পরবর্তী যুগে কেউ কেউ কিছু বানোয়াট ও জাল হাদিস বর্ণনা করেছে যেমন, ‘যে ব্যক্তি আশুরার দিন সুরমা লাগাবে সে ব্যক্তি সে বছর থেকে চক্ষুপ্রদাহ রোগে আক্রান্ত হবে না’। ‘ যে ব্যক্তি আশুরার দিন গোসল করবে সে সেই বছর থেকে আর রোগাক্রান্ত হবে না। এরূপ অনেক হাদিস। এরই ধারাবাহিকতায় তারা একটি মওজু হাদিস বর্ণনা করেছে। যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালল্লামের প্রতি মিথ্যারোপ ব্যতীত আর কিছুই নয়। হাদিসটি হচ্ছে,
{ أَنَّهُ مَنْ وَسَّعَ عَلَى أَهْلِهِ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ سَائِرَ السَّنَةِ }
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আশুরার দিন নিজ পরিবারের উপর উদার হাতে খরচ করবে আল্লাহ তাআলা সারা বছরের জন্য তাকে সচ্ছলতা দান করবেন।
এ ধরণের সবগুলো বর্ণনা মিথ্যা ও জাল।
অত:পর শায়খ উল্লেখ করেছেন, -যার সার সংক্ষেপ হচ্ছে- এ উম্মতের অগ্রজদের উপর যখন সর্ব প্রথম ফেতনা আপতিত হল ও হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’র শাহাদাত সঙ্ঘটিত হল। এর কারণে বিভিন্ন দলের লোকেরা কি করল? তিনি বলেন,
তারা জালেম ও জাহেলদের দলে রাপান্তরিত হল। হয়ত মুনাফিক বেদ্বীন নয়ত বিভ্রান্ত বিপথগামী। তাঁর বন্ধুত্ব ও আহলে বাইতের বন্ধুত্ব প্রকাশ করতে লাগল। আশুরার দিনকে রোলবিল, কান্নাকাটি ও শোক দিবস হিসাবে গ্রহণ করল। তাতে তারা বুক ও চেহারা চাপড়ানো, আস্তিন ছেড়াসহ জাহেলি যুগের বিভিন্ন প্রথা প্রকাশ করতে লাগল। বিভিন্ন শোকগাথা যার অধিকাংশই বানোয়াট ও মিথ্যায় পরিপূর্ণ ও গীত আবৃত্তি করতে লাগল। এর ভেতর সত্যের কিছুই নেই আছে শুধু স্বজনপ্রীতি ও মনোকষ্টের নবায়ন। মুসলমানদের পরস্পরে যুদ্ধ ও দুশমনি সৃষ্টির পায়তারা। পূর্ববর্তী পূন্যাত্মা সাহাবিদের গালমন্দ করার উপাদান। মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের অনিষ্টি ও ক্ষতির পরিসংখ্যান কেউ লিখে শেষ করতে পারবে না। তাদের মোকাবেলা করেছে হয়ত আহলে বাইত ও হোসাইন রা. -এর ব্যাপারে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত নাসেবি সম্প্রদায় অথবা একদল জাহেল সম্প্রদায়। যারা ফাসেদের মোকাবেলা করেছে ফাসেদ দিয়ে। মিথ্যার মোকাবেলা মিথ্যার মাধ্যমে, খারাপের জবাব দিয়েছে খারাপ দিয়ে এবং বেদআতের জবাব বেদআতের মাধ্যমে।
ইবনুল হাজ্জ রহ. বলেন, আশুরার বেদআতের আরো একটি হচ্ছে, তাতে জাকাত আদায় করা। বিলম্বিত কিংবা অগ্রীম। মুরগি জবাইর জন্য একে নির্ধারণ করা। নারীদের মেহেদি ব্যবহার করা। {আল-মাদখাল, ১ম খন্ড, য়াওমু আশুরা}
আল্লাহ তাআলা আশুরাসহ যাবতীয় কর্মে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহর আদর্শের পূর্ণ অনুবর্তনের তাওফিক দান করুন।
লেখক : মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : ইকবাল হোছাইন মাছুম
সূত্র : ইসলামহাউজ

২৬শে আগষ্ট জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী।

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ১৯৪১ সালের ২৬শে আগষ্ট উপমহাদেশের ইসলামী আন্দোলনের কিংবদন্তি আল্লামা সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদূদী রহঃ মাত্র ৭৫ জন ব্যক্তিকে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন জামায়াতে ইসলামী নামক একটি ইসলামী সংগঠন।


সংগঠন আজ দীর্ঘ ৭৭ বছরের পথ পরিক্রমায়, উপমহাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রিয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে ৷

শহীদি কাফেলা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিপ্লবী কালেমার বিপ্লবী দাওয়াত প্রতিটা মানুষের কাছে পৌছাতে বদ্ধ পরিকর। ইনশাআল্লাহ।।

যেই সংগঠন আজ সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে। এবং এই সংগঠনের ফর্মুলা মোতাবেক ইসলামি আন্দোলন সফলভাবে কায়েম হয়েছে মিশর,তুরস্ক, তিউনিসিয়া এবং দক্ষিণ সুদানে।

এ দলের পরিচয় দিতে গিয়ে এর প্রতিষ্ঠাতা সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদূদী বলেছিলেন----

"এ দলের সদস্যদেরকে ঈমানের দিক দিয়ে সুদৃঢ় ও অবিচল হতে হবে এবং আমলের দিক দিয়ে হতে হবে প্রশংসনীয় ও উচ্চমানের। কারণ তাদেরকে সভ্যতা ও সংস্কৃতির ভ্রান্ত ব্যবস্থা ও রাজনীতির বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করতে হবে এবং এ পথে আর্থিক কুরবানি থেকে শুরু করে কারাদণ্ড এমনকি ফাঁসিরও ঝুঁকি নিতে হতে পারে"।

এই ইসলামী আন্দোলন পরিচালনার অপরাধে মরহুম মাওলানাকে আইয়ুব শাহীর আদালতে ফাঁসির আদেশ শুনতে হয়েছে। মরহুম মাওলানা মওদূদী (রহ.) কে যখন কারাগারে ফাঁসির আদেশ পড়ে শুনানো হয় তখন আদেশ শুনে মাওলানা মওদূদী রহ. বলেছিলেন-----

মৃত্যুর ফায়সালা জমিনে নয় আসমানে হয়।

সেই মহান কিংবদন্তির কথাই যে সঠিক তা বাংলাদেশে প্রমাণ হয়েছে। এই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র ইসলামি আন্দোলন করার অপরাধে ৷

সুদীর্ঘ ৭৭ বৎসরের পথ পরিক্রমায় হাজার হাজার নেতা কর্মীকে পঙ্গু হতে হয়েছে। শহীদি নাজরানা পেশ করতে হয়েছে,জালিমের জুলুম নির্যাতন সহ্য করেই এগিয়ে যাচ্ছে এ শহীদি কাফেলা ৷

আল্লাহ ছাড়া,কোন বাতিল শক্তি'ই রুখতে পারবেনা এই শহীদি কাফেলার,হেরার রাজ তোরণের পথে, অগ্রযাত্রাকে,ইনশাআল্লাহ ৷

বরং সময়ের ব্যবধানে সকল বাতিল শক্তি'ই খুবঈ করুণভাবে,ধ্বংস হওয়ার মাধ্যমে,ইতিহাসের আস্তাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হবে, ইনশাআল্লাহ ৷

৭৭ বছরের পথ পরিক্রমায় শহীদি কাফেলা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি শত জুলুম নির্যাতন সহ্য করেও ইসলামি আন্দোলনকে তার সফলতার মন্জ্ঞিলে মকসুদে এগিয়ে নিতে বদ্ধ পরিকর।

বর্তমানে পুরো বাংলাদেশকে
আওয়ামী বাকশলী, স্বৈরাচার,জঙ্গি, নাস্তিক, ভারতীয় রাজাকাররা তাদের জুলুমের কারাগারে পরিণত করেছে। শহীদি কাফেলা আজ ঈমানের কঠিন অগ্নিপরীক্ষায় অবত্তীর্ণ।

বাতিলের শত জুলুম আর নির্যাতনকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করে,শহীদি কাফেলা জাতিকে এই পর্যন্ত এক ঝাক সফল নেতৃত্ব উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে এবং ১৬ কোটি মানুষের প্রিয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে..............

আলহামদুলিল্লাহ,
ইসলামী শরীয়া-ভিত্ত্বিক এবং গণতান্ত্রিক পন্ত্রায় সমাজের পরিবর্তনে অংঙ্গিকারবদ্ধ,শহীদি কাফেলা,গত ১১ বছরে,বাতিলের চরম নির্যাতন এবং জুলুমের মোকাবেলা করে, আল্লাহর উপর ভরসা করে,বাংলাদেশের প্রতিটি স্হানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে,জাতিকে প্রায় ১৮২৬ জন, সৎ,মেধাবী, আল্লাহভীরু জনপ্রতিনিদি, জনসেবক উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে............

এই দেশের মানুষ,শহীদি কাফেলার ১৮২৬ জন জনপ্রতিনিদিকে নির্বাচিত করার মাধ্যমে,এটাই প্রমাণ করেছেন যে,শহীদি কাফেলার মাধ্যমেই এই দেশে একটি ইনসাফপূর্ণ সুখী সমৃদ্ধশালী, ইসলামী সমাজ ব্যবস্হা কায়েম করা সম্ভব ৷

আমার বিশ্বাস,আমি আশা রাখি,আমি বাস্তব একটি স্বপ্ন দেখি................

প্রিয় শহীদি কাফেলা আল্লাহর উপর ভরসা করে,বাতিলের সব বাধাকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করার মাধ্যমে,ঈমানের কঠিন অগ্নীপরীক্ষাকে হাসিমুখে গ্রহন করার মাধ্যমে, বিপ্লবী কালেমার বিপ্লবী দাওয়াত'কে এই দেশের গণ মানুমের কাছে পৌছানোর মাধ্যমে,গণ মানুষের গণ সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে,শহীদ-দের রক্তঝরা এই ভুখন্ডের জাতীয় সংসদকে কোরআনের সংসদে পরিণত করবেই, ইনশাআল্লাহ

ইয়া আল্লাহ,প্রিয় শহীদি কাফেলার জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত,তোমার যে সকল প্রিয় মানুষগুলো তাদের জীবনের সোনালী সময় গুলো,দ্বীনের পথে ব্যয় করেছেন এবং করছেন,ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং করছেন,শহীদি নাজরানা পেশ করেছেন,সেই সকল প্রিয় ভাই,বোনদের সকল ত্যাগ'কে আগামী দিনের ইসলামী সমাজ ব্যবস্হার জন্য কবুল করে নাও।।

হে আল্লাহ, শহীদি কাফেলাকে,এই দেশের স্বাধীনতা,সার্বভৌমত্ব,ইসলাম,ইসলামী আন্দোলনের হেফাজতকারী হিসেবে কবুল করুন, আমিন ৷

পরিশেষে আমাদের এই সংগঠনের সকল কর্মী, সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষী এই অংগীকার হক আমরা যেন আমাদের সকলের আত্মো সমালোচনা করে এই সংগঠনের সকল নিয়োম শৃঙ্খলা মেনে, আমাদের ঈমানকে মজবুত করে সকলের কাছে দাওয়াত পৌছায়ে ইকামতের দ্বীনের এই কাফেলার সাথে সক্রিয় থেকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। আল্লাহ আমাদের সকলকে কবুল করুক আমিন
' জহির উদ্দীন।