ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৭

৭৬ বছরের জামায়াত কি একটি ব্যর্থ সংগঠন?

বাংলাদেশ বার্তাঃ গত ২৬ আগস্ট জামায়াতের ৭৬ বছর পূর্ণ হয়। অনেকেই দাবী করছেন এই বিশাল সময়ে জামায়াতের অর্জন সামান্য। আবার অনেকেই বলছেন জামায়াত ব্যর্থ। সাধারণত তারা নিন্মোক্ত কারণগুলো দেখিয়ে ব্যর্থ বলতে চান।
১. বাংলাদেশের ফ্রন্ট লাইনের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো দল হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনো গণমানুষের দলে পরিণত হতে পারেনি।
২. জামায়াত তার ৭৬ বছরের রাজনীতিতে এককভাবে কখনোই ক্ষমতার স্বাদ পায় নি।
৩. ৭৬ বছরে জামায়াত তিনবার নিষিদ্ধ হয়েছিল। এতে জামায়াতের অপরিপক্কতা প্রকাশিত হয়।
৪. ৭১ সালে জামায়াত ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৫. এত বছর রাজনীতি করার পর তারা এখন তাদের সব মূল নেতাদের হারিয়েছে জঘন্য সব অপবাদের দায়ে।
এরকম আরো কারণ দেখিয়ে আপনি বলতেই পারেন জামায়াত ব্যার্থ। কিন্তু আসলে কি তাই?
বস্তুত সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করে উদ্দেশ্য-লক্ষ্যের উপর। একটি দল হিসেবে জামায়াতের চূড়ান্ত লক্ষ্য কি? সেটাই বলে দিবে জামায়াত কতটুকু ব্যর্থ।
জামায়াতের মূল ও চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জন। আর সেই সন্তুষ্টি অর্জন হবে কুরআন হাদীস অনুসারে মানুষের সার্বিক জীবনের পূনর্বিন্যাস সাধনের মাধ্যমে।
জামায়াত যুগে যুগে উপমহাদেশে এমন সব জানবাজ মানুষ তৈরী করে যাচ্ছে যারা ইকামাতে দ্বীনের কাজে নিজের জীবন উৎসর্গকে সাফল্যের সিংহদ্বার মনে করে।
জামায়াতের আছে অনন্য সাতটি বৈশিষ্ট্য যা জামায়াত কে তার লক্ষ্য অর্জনকে সহজ করে দিচ্ছে।
১. জামায়াতের বিপ্লবী দাওয়াত। জামায়াত দুনিয়াবী কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মানুষকে আহ্বান করে না। দুনিয়ার কোন সফলতার লোভ দেখায় না। একান্ত পরকালীন সাফল্যের কথা সামনে নিয়ে আসে, যেভাবে আল্লাহর রাসূল দাওয়াত দিয়েছেন।
২. ইসলামী সমাজ গঠনের উপযোগী ব্যক্তিগঠন পদ্ধতি। জামায়াত মনে করে ব্যক্তিগঠনের জন্য তিন ধরণের যোগ্যতা লাগবে।
এক, ঈমানী যোগ্যতা।
দুই, ইলমী যোগ্যতা।
তিন, আমলী যোগ্যতা।
যোগ্যতা হাসিলে কঠোর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছে সংগঠনটি।
৩. জামায়াত ইসলামীর তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একটি তাকওয়া ভিত্তিক সংগঠন। জামায়াত কোন লোককে দায়িত্ব প্রদানকালে তাকওয়ার বিষয়টি সামনে রাখে।
৪. জামায়াতের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে “নেতৃত্ব সৃষ্টির পদ্ধতি”। অসাধারণ এই পদ্ধতিতে নেতৃত্ব বা পদলোভীদের কোন স্থান নেই।
৫. ক্ষমতা দখলের রাজনীতি করে না জামায়াত। জামায়াত ইসলামী সূরা নূরের ৫৫ নং আয়াতকে সামনে রেখে বিশ্বাস করে, ইসলামী সরকার চালানোর যোগ্য কর্মীবাহিনী তৈরী হলে আল্লাহ পাক সরকারী দায়িত্ব দেয়ার পথ করে দিবেন।
৬. জামায়াতের অর্থের উৎস জামায়াতের দায়িত্বশীল, কর্মী এবং শুভাকাংখীরা। জামায়াত বাইরের অন্য কারো অর্থে চলে না। কারো ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করে না।
৭. বিরোধীদের প্রতি জামায়াতের আচরণ। জামায়াত তার বিরোধীদের মধ্যে যারা অশালীন ও অভদ্র ভাষা প্রয়োগ করে তাদের করুণার পাত্র মনে করে। জামায়াতের দাওয়াত আদর্শ ও কর্মসুচীর বিরুদ্ধে বেচারাদের কিছু বলার সাধ্য নেই বলে বেসামাল হয়ে গালাগালি করে মনের ঝাল মেটানোর চেষ্টা করে। জামায়াত তাদের হিদায়াতের জন্য দোয়া করে।
আর যারা মিথ্যা সমালোচনা করে অপবাদ দেয়, জামায়াত প্রয়োজন মনে করলে সেই সমালোচনা যুক্তি দিয়ে খন্ডন করে।
সুতরাং যারা শুরুর কয়েকটি পয়েন্ট দেখিয়ে জামায়াতকে ব্যর্থ বলতে চাইবেন তাদের প্রতি আমাদের বিনীত বার্তা, আপনারা যেগুলোকে সফলতা মনে করেন আমরা সেগুলোকে চূড়ান্ত সফলতা মনে করি না।সেগুলো আমাদের মূল লক্ষ্যও নয়।
আর তাছাড়া আমরা এও বিশ্বাস করি, মুমিনের দুনিয়ার জীবনে ব্যর্থতা হল আল্লাহর আনুগত্য করতে না পারা। আর কোন কিছুকেই ব্যর্থতা মনে করি না। দুনিয়ার জীবনের কষ্ট, ক্ষমতা পাওয়া বা না পাওয়া সবগুলোকেই আমরা পরিক্ষা বলেই গন্য করি। পৃথিবীর অধিকাংশ নবী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পাননি। নূহ আঃ ৯৫০ বছরের দাওয়াতে মাত্র একশত ষাট জনকে ইসলামের পথে আনতে পেরেছেন। তাই বলে কি নূহ আঃ ব্যর্থ?
হিদায়াত আল্লাহর কাছে। আমাদের কাজ হল চেষ্টা করে যাওয়া। জামায়াতের অন্যতম সফলতা হল, জামায়াত শয়তানের প্রোপাগান্ডাকে চ্যালেঞ্জ করে বর্তমান পৃথিবীতে ইসলামের আবশ্যকতা উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
বর্তমান পৃথিবীতে ইসলামবিরোধীদের একটা বড় প্রোপাগান্ডা হল চৌদ্দশত বছর আগের ইসলামের বিধানগুলো এখন নাকি কার্যকর না। জামায়াতে ইসলামী এটা ইতিমধ্যে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ সকল সেক্টরে ইসলামী বিধান শুধু কার্যকর নয় বরং অত্যাবশ্যকীয়।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সহীহ বুঝ দান করুন। সিরাতুল মুস্তাকীমের পথে রাখুন। আমিন।
আহমাদ আফগানী ।
Collected by -আমির হামজা ।

শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৭

মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মুসলমান নিহত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ: মিয়ানমারে প্রায় একশত রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও উদ্বেগজনক----------ডাঃ শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ বার্তাঃ   মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রায় একশত রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হওয়ার নির্মম ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২৬ আগষ্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রায় একশত রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও উদ্বেগজনক।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনার পর জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষ তার প্রতিবাদ করলেও মায়ানমার সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না। বাংলাদেশ সরকারের বাধা প্রদান সত্ত্বেও এখনো বাংলাদেশে রোহিঙ্গা মুসলমানরা প্রবেশ করছে এবং প্রায় ৪ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে উদ্বাস্তু অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে তাদের পুনর্বাসনের জন্য জাতিসংঘ এবং ওআইসি মায়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু মায়ানমার সরকার তা উপেক্ষা করে আবারও গণহত্যা শুরু করেছে। গত ৫০ বছরে মায়ানমার সরকার সে দেশ থেকে প্রায় ১২ লক্ষ মুসলমানকে বিতাড়িত করেছে।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার উদ্দেশ্যে আগত রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মায়ানমারের সীমান্ত রক্ষীরা গুলি বর্ষণ করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারও তাদের বাংলাদেশে ঢুকতে দিচ্ছে না। এতে দিশেহারা হয়ে শত শত রোহিঙ্গা মুসলমান নাফ নদীতে ঝাপ দিয়ে নদীর পানিতে ভাসছে। এ অসহায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর গুলি বর্ষণের ঘটনা অত্যন্ত অমানবিক ও মানবতাবিরোধী। আমি এ ঘটনার নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
মায়ানমারে গণহত্যা বন্ধের ব্যাপারে সে দেশের সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেই এগিয়ে আসতে হবে।
তাই মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সে দেশের সরকারের পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ করে তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমি জাতিসংঘ, ওআইসি এবং সকল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও শান্তিকামী বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৭

হযরত মুসা (আঃ) আর শয়তানের ঘটনা


বাংলাদেশ বার্তাঃ   একদিন হযরত মুসা (আঃ) -এর কাছে শয়তানই এসে বললো- "আপনি আল্লাহর মনোনীত রসূল। আপনি আল্লাহর সাথে কথা বলার মর্জাদা লাভ করেছেন। আমি তওবা করার ইচ্ছে করেছি। আপনি আল্লাহ পাকের দরবারে আমার তওবা কবুল করার জন্য সুপারিশ করুন।
.
হযরত মুসা (আঃ) শয়তানের এই কথা শুনে খুশিতে খুব বাগ বাগ হয়ে গেলেন। কারণ শয়তান তওবা করে নিলে তো গুনাহ করার প্রশ্নই উঠে না। তাই তিনি ওযু করে নামাযে লিপ্ত হলেন। আল্লাহ পাক বললেনঃ "হে মুসা! শয়তান মিথ্যে বলেছে। সে আপনার সাথে প্রতারণা করতে চেয়েছে। যদি তাকে পরীক্ষা করতে ইচ্ছা করেন তাহলে তাকে বলে দিন সে যেন আদমের কবরে সিজদা করে। আমি তার তওবা কবুল করব।"
.
এতে মুসা (আঃ) খুব খুশী হলেন। এইজন্য যে এটা তো সাধারণ শর্ত। এটা তো শয়তান কবুল করবেই। তাই তিনি শয়তানকে আল্লাহ পাকের পয়গাম শুনিয়ে দিলেন। 
.
এটা শুনে শয়তান অগ্নীশর্মা হয়ে গেল। আর বললোঃ "জীবিত থাকতে যাকে সিজদাহ করলাম না এখন মৃত্যুর পর তাকে সিজদাহ করব? তবে মুসা (আঃ)! আপনি আমার পক্ষে সুপারিশ করে আমার প্রতি এহসান করেছেন। এর শুকুর আদায় করতে গিয়ে আমি আপনাকে তিনটি কথা অবগত করাব। তা হলো এই তিন অবস্হায় আমার থেকে সতর্ক থাকবেন -
.
(১) মানুষ যখব ক্রোধান্বিত হয় তখন আমি তার অন্তরে অবস্হান করি আর রক্তের ন্যায় তার শিরা উপশিরায় দৌড়াতে থাকি।
*
(২) জিহাদের ময়দানে মুজাহীদের অন্তরে স্ত্রী পুত্রের ও সম্পদের আকর্ষণ বাড়াতে থাকি। যাতে সে তাদের  মহব্বতের কারণে জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করে।
*
(৩) যখন কোন পুরুষ গায়রে মাহরুম নারীর সাথে নির্জনে কোথাও অবস্হান করে। তখন আমি তাদের প্রত্যেকের পক্ষ থেকে পকীল হয়ে একের অন্তরে অপরের প্রতি ঝুকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাই। যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা অসৎকার্যে জড়িত না হয়ে পড়ে ততক্ষণ আমার এই প্রচেষ্টা চলতে থাকে।
.
আল্লাহতায়ালা বিতাড়িত শয়তান থেকে আমাদের সকলকে হেফাজত করুন। আল্লহুম্মা আমিন।।
# সূত্রঃ "তাম্বেহুল গাফিলীন" (খন্ডঃ ১ ;
পৃঃ ৮২)

মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০১৭

বিয়ের ক্ষেত্রে সাহাবীদের আমল ও আমাদের মানসিকতা


বাংলাদেশ বার্তাঃ   সাহাবীদের সময়ে বিয়ের ক্ষেত্রে একটা সুন্দর পদ্ধতি ছিল। সাহাবারা কোনো নারীকে একা ফেলে রাখতেন না। সে বিধবা হোক, তালাকপ্রাপ্তা হোক, তার আবারও বিয়ে হতো। আর অবিবাহিত হলে এখনকার মত আইবুড়ু হয়ে থাকতে হতো না, সে দেখতে অসুন্দরী হলেও!
.
আমরা দেখি, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর যুগে কোন কোন মহিলা সাহাবীর তিন-চার-পাঁচবারও বিয়ে হয়েছে! আমাদের সময়ে একজন মেয়ের এতবার বিয়ের কথা ভাবাই যায় না। আবু বকর, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুম, উনাদের মত সেরা সেরা সাহাবীরাও তালাক দিয়েছেন, একাধিক বিয়ে করেছেন। তাদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীদের আবার অন্য সাহাবীরা বিয়ে করে নিয়েছেন। কেউ এমন ভাবেনি, "নিশ্চয়ই অমুক মেয়ের দোষ আছে, নইলে কি আবু বকর-উমারের মত মানুষ তাকে তালাক দেয়! এমন মেয়েকে কে বিয়ে করি?"
.
মানুষের কিছু চাহিদা বাবা-মা-ভাই-বোন-সন্তান-সন্ততি দ্বারা পুরা করা যায় না। একজন সঙ্গী প্রয়োজন। যে অবিবাহিত তারও একজন সঙ্গীর প্রয়োজন, যে বিধবা তারও একজন সঙ্গীর প্রয়োজন। যে তালাকপ্রাপ্ত তারও একজন সঙ্গী প্রয়োজন। সাহাবীদের আমলে কেউ কোনো নারীকে একাকী নিঃসঙ্গ পড়ে থাকত না। মায়ের বয়সী হোক, দাদীর বয়সী হোক, তার আগে বাচ্চাকাচ্চা থাকুক, ‍কিংবা কুমারী হউক -সব রকম নারীকেই বিয়ে করে নেওয়া হত। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে ইসলাম দান করেছেন যেন আমাদের জীবনগুলো সুন্দর হয়, শান্তির হয়। একাকী পড়ে থাকার মত অসহনীয় জীবন আর কিছু নেই!
.
বিয়ের সময় কম-বয়সী, কুমারী নারীকে বিয়ে করতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু সমাজের সার্বিক দিকের কথা চিন্তা করে বিধবা এবং তালাক-প্রাপ্ত বোনদেরও তো কাউকে না কাউকে বিয়ে করতে হবে! 
.
একই ভাবে বোনদের বলব, বিয়ের সময় ইয়াং, সিঙ্গেল পুরুষদের প্রাধান্য দেওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু উত্তম পাত্রের দ্বিতীয় স্ত্রী হতে কিংবা পরহেজগার ও ইলম-অলা পাত্র বয়স্ক হলেও তাকে বিয়ে করার কথা বিবেচনা করা উচিত।
.
আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর সবচেয়ে ছোটো কন্যা ফাতিমা (রা)। এই ফাতিমার মেয়ে উম্মু কুলসুম। উম্ম কুলসুমকে বিয়ে দেওয়া হয় আল্লাহর রাসূলের সাহাবী উমার (রা) এর সাথে! চিন্তা করুন, ফাতিমার স্বামী আলীর (রা) চেয়েও উমার বয়সে বড়। নিজের বাবার চেয়েও বেশি বয়সী একজন পাত্রকে বিয়ের ব্যাপারে উম্ম কুলসুমের কোনো আপত্তিই ছিল না! আমরা এরকম করার কথা কল্পনাও করতে পারি না।
.
একজন পুরুষের জন্য কুমারী অল্পবয়সী মেয়েকে বিয়ে করতে চাওয়াটা খুবই সহজাত ব্যাপার, তবে বয়স্ক কিংবা বিধবাদের দেখে “ঝুটা” মনে করাটা বাড়াবাড়ি। মনের কোনো কোণায় যদি সূক্ষ্মভাবে এরকম অনুভূতি কাজ করে তাহলে মনে রাখতে হবে যে একজন নারী কুমারী না হওয়ার অর্থ এই না যে সে কম পরহেজগার বা আপনার স্ত্রী আর আপনার সন্তানদের মা হওয়ার কম যোগ্য। 
.
স্বয়ং আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর প্রথম স্ত্রী খাদিজা (রা) তাঁর চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন। দুই-এক বছরের না, বেশ কয়েক বছরের বড়। এমনকি তাঁর আগে বিয়েও হয়েছিল। অর্থাৎ তিনি কুমারী ছিলেন না। কাজেই পূর্ব বিবাহিত পাত্রীকে বিয়ের ব্যাপারে এই ধরণের অস্বস্তিবোধের জায়গা ইসলাম দেয় না। 
.
একবিংশ শতাব্দিতে এসে আমরা সাহাবীদের মত উন্নত মানসিকতা ধারণ করতে পারি নাই। সাহাবী-সাহাবিয়াতরা সব ক্ষেত্রেই সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত রাখতে পেরেছিলেন। আমাদেরকে সহীহ আকিদা ধারণ করার সাথে সাথে সাহাবীদের মত উন্নত মানসিকতা মনের মধ্যে ধারণ করা উচিত।
______________
সংগৃহিত ও সম্পাদিত

সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭

কুরআনের ১১২ নম্বর সূরা পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা রিজিকের ১০০০ দরজা খুলে দিবেন

মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১১২ নম্বর সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৪টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ১টি। আল ইখলাস সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটিকে ইসলামের শেষ পয়গম্বর মুহাম্মদ (সা:) বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তাৎপর্যের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই আয়াতে আল্লাহ্ অস্তিত্ব সত্তার সবচেয়ে সুন্দর ব্যাখ্যা রয়েছে। এটি কুরআনের অন্যতম ছোট একটি সূরা হিসেবেও বিবেচিত হয়ে থাকে। এই সূরাটি কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।

আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সূরা) ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদসম্পর্কে বলেছেন, “সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ আছে, নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল।

অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণকে বললেন, ‘তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে অপারগ?’ প্রস্তাবটি তাঁদের পক্ষে ভারী মনে হল। তাই তাঁরা বলে উঠলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে?’ (অর্থাৎ কেউ পারবে না।)

তিনি বললেন, “ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস স্বামাদ’ (সূরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল।” (অর্থাৎ এই সূরা পড়লে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান নেকী অর্জিত হয়) (বুখারী) [1]

[1] সহীহুল বুখারী ৫০১৫, ৫০১৪, ৫৫৪৩, ৭৩৭৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবূ দাউদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯, ১০৭৩১, ১০৭৯৭, ১০৯১৩, ১০৯৯৯, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭৭, ৪৮৩ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি কোন লোককে সূরাটি বারবার পড়তে শুনল। অতঃপর সে সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তা ব্যক্ত করল। সে সূরাটিকে নগণ্য মনে করছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “সেই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ আছে, নিঃসন্দেহে এই সূরা (ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।” (বুখারী) [1]

[1] সহীহুল বুখারী ৫০১৫, ৫০১৪, ৫৫৪৩, ৭৩৭৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবূ দাউদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯, ১০৭৩১, ১০৭৯৭, ১০৯১৩, ১০৯৯৯, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭৭, ৪৮৩ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সূরা) ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদসম্পর্কে বলেছেন, “নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।” (মুসলিম) [1]
[1] মুসলিম ৮১২, তিরমিযী ২৮৯৯, ২৯০০, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৭, আহমাদ ৯২৫১, দারেমী ৩৪৩২ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি এই (সূরা) ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদভালবাসি।তিনি বললেন, “এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।” (তিরমিযী হাসান সূত্রে, বুখারী বিচ্ছিন্ন সনদে) [1]
[1] সহীহুল বুখারী ৭৭৪ নং হাদীসের পরবর্তী বাব। তিরমিযী ২৯০১, আহমাদ ১২০২৪, ১২১০৩, দারেমী ৩৪৩৫ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

প্রতিদিন অজুর সাথে ২০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করার দ্বারা ০৯ টি উপকার লাভ হবে।

(
) আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত অসুন্তুষ্টির ৩০০ টি দরজা বন্ধ করে দিবেন। যেমন: শত্রতা, দূর্ভিক্ষ, ফিতনা ইত্যাদি।

(
) রহমতের ৩০০ টি দরজা খুলে দিবেন।

(
) রিজিকের ১০০০ টি দরজা খুলে দিবেন। আল্লাহ তায়ালা পরিশ্রম ছাড়া তাকে গায়েব থেকে রিজিক দিবেন।

(
) আল্লাহ পাক নিজস্ব ইলম থেকে তাকে ইলম দিবেন, নিজের ধৈর্য্য থেকে ধৈর্য্য এবং নিজের বুঝ থেকে বুঝ দিবেন।

(
) ৬৬ বার কুরআন শরীফ খতম করার সাওয়াব দান করবেন।

(
) তার পঞ্চাশ বছরের গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।

() আল্লাহ পাক জান্নাতে ২০টি মহল দান করবেন। যেগুলো ইয়াকুত, মারজান,জমরুদ দ্বারা নির্মিত হবে এবং প্রত্যেকটি মহলে ৭০,০০০ দরজা হবে।

(
) ২০০০ রাকাত নফল পড়ার সাওয়াব অর্জিত হবে।

(
) যখনমৃত্যু বরন করবে তখন তার জানাযায় এক লক্ষ দশ হাজার ফেরেশতা অংশগ্রহন করবেন