১.
ফরহাদ মজহার অপহৃত হন নি । তিনি নিজেই বেড়াতে বের হয়েছিলেন । বেড়ানোর আলামত হিসাবে তার সঙ্গে একটি ব্যাগও পাওয়া গেছে । সেই ব্যাগে তার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সবকিছুই ছিল । কাজেই প্রমাণিত হয়েছে যে তিনি নিজেই বেড়াতে বের হয়েছিলেন । অপহৃত হন নি । পুলিশের উর্ধতন অফিসারের প্রেস ব্রিফিংসহ সরকারের বিভিন্ন শুভাকাঙ্খী ইশারা ঈঙ্গিতে কিংবা সরাসরি তাদের ফেসবুকে এই কথাটি প্রচার করেছেন । কাজেই আশা করা যায় রানা প্লাজার রেশমার নতুন ড্রেসের মত ফরহাদ মজহারের এই ব্যাগটিও আমাদের ইতিহাসের অংশ হয়ে পড়েছে ।
উদ্ধার হওয়ার পর স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে তাঁর যে ছবি দেখা গেছে তা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখতে পাবেন যে তিনি ও তার পরিবার কত নিখুঁত অভিনয় করে গেলেন ! তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে কান্নার দৃশ্যে তারানা হালিমদেরকেও অনেক পেছনে ফেলে দিয়েছেন । শুধু তাই নয় , নিজে লুকিয়ে গেলেও পুলিশ যাতে তাকে ট্র্যাক করতে পারে , তজ্জন্যে নিজের মোবাইলটি অন রেখেছিলেন । সরকার নাটক করে নি , নাটক করেছেন তিনি নিজে । নাটকের পুরো সাসপেন্স তৈরি করতে ৩৫ লাখ টাকা টাকা চেয়ে পরিবারকে নিজেই ফোনও করেছিলেন! বাপরে বাপ কত্তো বড় অভিনেতা ! হাছান মাহমুদ কিংবা হানিফ ঠিকঠাকমত বলে দিতে পারবেন এই নাটকের প্রযোজক কে ? দুয়েকদিনের মধ্যে তা জাতি জানতে পারবেন বলে অনুমিত হচ্ছে ।
মনে হচ্ছে , ফরহাদ মজহার ভুল করে কবি সাহিত্যিক হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন । অভিনয় করলে দেশের জন্যে প্রথম অস্কার পুরস্কারটি বোধহয় তিনিই এনে দিতেন !
সাধারণ মানুষ চেচামেচি শুরু না করলে কমপক্ষে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দীন আহমেদ এবং সুখরঞ্জন বালীর মত কামরূপ কামাখ্যায় উদয় হতেন । হাতে থাকতো পুলিশ কর্তৃক উদ্ধারকৃত এই ঐতিহাসিক ব্যাগ , উদাস দৃষ্টি মেলে দার্শনিকের মতই বলতেন , আমি কোথায় এসেছি ?
জনগণের চেচামেচির কারণে পুরো অভিনয়টি তিনি করতে পারলেন না ।
বিডিনিউজ২৪.কম এই নব্য অভিনেতার দৃশ্য অদৃশ্য কিছু পাপের তালিকা প্রকাশ করতে সময় নেয় নি । শাহবাগের মন্চে যাওয়াকে মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসুদ তার জীবনের সবচেয়ে বড সওয়াবের কাজ বলে উল্লেখ করেছিলেন । কাজেই এই বামপন্থী কবির সবচেয়ে বড় পাপ ছিল এই মন্চের সমালোচনা । তাছাড়া গোরক্ষা আন্দোলনের সমালোচনার মত স্পর্ধাও তিনি দেখিয়েছেন ! ভারতের অনেক বুদ্ধিজীবী ভারতে বসেও গো-রক্ষা আন্দোলনের সমালোচনা করেন । অনেক কিছু না বুঝেই সেই খায়েশ হয়েছিল ফরহাদ মজহারদের !
২.ফরহাদ মজহারকে নিয়ে সাধারণ মানুষ সরব হলেও সমাজের অসাধারণ মানুষগুলি বরাবরের মতই নীরব ছিল । এই নীরবতা আমাদেরকে ধীরে ধীরে আরো ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে , সেই হুঁশটি অনেকেই হারিয়ে ফেলছি ।
এই কঠিন বাস্তবতার মাঝেও কেউ কেউ দেশবাসী ও বিশ্ববাসীকে প্রকৃত ঘটনা জানাতে চেষ্টা করছেন , এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দিচ্ছেন । এই সব গুণী ও সাহসীজনদেরই একজন লন্ডন প্রবাসী ক্যাপ্টেন ফজলুর রহমান চৌধুরী । জীবনে কোনওদিন রাজনীতি না করলেও রাজনৈতিক সচেতনতা তাঁর লেখায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে । দেশ ও জাতির জন্যে যা দরকার সেই কথাটিই তিনি অকপটে বলে ফেলেন । বাংলাদেশ মার্চেন্ট নেভির অত্যন্ত পরিচিত মুখ জনাব চৌধুরী তাঁর অবসর সময় এই কাজে উৎসর্গ করেছেন । তাঁর লেখায় ইতিহাসের অনেক না বলা কথা ফুটে ওঠে । তাঁর এমনই একটা সুন্দর লেখা South Asia Journal এ প্রকাশিত হয়েছে ( লেখার লিংকটি নিচে দেয়া হলো ) । আশা করি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে । যে যেখানেই থাকেন না কেন , আসুন এ লক্ষ্যে কিছু একটা করি । মনে রাখবেন অন্য কিছু না পারলেও আপনার একটা লাইক শেয়ারও এই প্রচেষ্টাকে সামনে এগিয়ে নিবে । আপনার জাগ্রত দৃষ্টি ও ভূমিকা অনেক ফরহাদ মাজহারকে রক্ষা করবে ।
Click Here to see the Atricle
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন