ইন্ডিয়ার স্বনামধন্য সাংবাদিক ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী কুলদীপ নায়ার বলেছেন , Most of the Bangladeshis feel suffocated অর্থাৎ অধিকাংশ বাংলাদেশীর এখন দম বন্ধ হয়ে আসছে । ইনি ইন্ডিয়ায় বসে যা উপলব্ধি করছেন , অনেক বাঘা বাঘা বুদ্ধিজীবী এদেশে বা এ সমাজে অবস্থান করেও সেটা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছেন ।
এই সকল বুদ্ধিজীবীদের বড় একটা অংশ ইসলামফোবিয়ায় আক্রান্ত । পশ্চিমাদের এই ইসলামফোবিয়া বা বর্তমান রোগের অনেক আগেই এদেশে এই রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল । ফরহাদ মজহার যখন বলতেন , There is no God - তখন উনি বিশাল বড় মাপের বুদ্ধিজীবী ছিলেন , মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন । তার চরিত্র তখন ফুলের মত পবিত্র ছিল । তখন শত শত অর্চনা দেবি ফরহাদ মজহারকে সারাক্ষণ পুজো দিলেও মুন্নী সাহাদের কোনও প্রবলেম হতো না । " প্লেয়ার বনাম প্লেয়ার " শিরোনাম দিয়ে ফরহাদ মজহারের চরিত্র হননের নিমিত্তে এভাবে কোনও অনুষ্ঠান সাজাতেন না ।
কিন্তু যখনই বলা শুরু করলেন , Certainly there is a God - তখনই বুদ্ধিজীবী সার্কেলে ভূমিকম্প শুরু হলো । বুদ্ধিজীবীদের তালিকা থেকে তার নামটি রাতারাতি কাটা পড়ে গেল । এখন সক্রেটিস , প্লুটোর সঙ্গে তুলনা করা তো দূরের কথা -তার মাথায় সামান্য বুদ্ধি অবশিষ্ট আছে কি না সেটা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। মুন্নী সাহার আলোচনার সেটে এক জন ভুল করে ফরহাদ মজহারকে প্লুটো , সক্রেটিসদের সঙ্গে তুলনা করে ফেলেছিলেন । অন্যজন সাথে সাথেই এটার প্রতিবাদ করেন । বলাই বাহুল্য এটি ছিল মুন্নী সাহার উপস্থাপনায় ফরহাদ মজহারের চরিত্র হননের একটি বিশেষ অনুষ্ঠান ।
এদের চোখে ফরহাদ মজহার এখন নারীমাংস খাদক , বাটপার, জোচ্চোর , হেফাজতি । যৌবন যার সংযমে কেটেছে বৃদ্ধ বয়সে এসে তিনি যৌনকাতর হয়ে পড়েছেন । সত্তর বছর বয়সে এসে তিনি তার এক দাসীকেও নাকি প্র্যাগনেন্ট বানিয়ে ফেলেছেন ! আল্লাহ খোদায় বিশ্বাস না থাকলেও এদের কেউ কেউ বলছেন , ওয়াস্তাগফিরুল্লাহ ।
উল্লেখ্য , মানব মানবীর চরিত্রের পুতপবিত্রতা নিয়ে মাত্রাধিক স্পর্শকাতর এই শ্রেণীটির কাছে এখন এরশাদের চরিত্রও ফুলের মত পবিত্র হয়ে পড়েছে ।
ফরহাদ মজহারের অপহরণের পর এদের সেই বিদ্বেষ সকলমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে । ফরহাদ মজহারের জীবন তো রক্ষা পেয়েছে কিন্তু ইজ্জত কতটুকু রক্ষা পাবে , সেটাই এখন দেখার বিষয় । মুন্নী সাহারা গা ঝাড়া দিয়ে লেগে পড়েছেন । এবার অর্চনা দেবির কাহিনী প্রতিষ্ঠিত করে ছাড়বেন ই । কারণ রাষ্চ্রীয় এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সমস্ত লজিস্টিক এখন মুন্নী সাহাদের হাতে । যেভাবে চান আজ সেভাবেই সবকিছু সাজাতে পারবেন । অডিও, ভিডিও , গোয়েন্দা রিপোর্ট যা দরকার সবই প্রস্তুত হয়ে পড়বে ।
ফলে ফরহাদ মজহারের জনৈকা দাসীর অস্তিত্বই শুধু আবিস্কৃত হয় নি । সেই দাসী যা যা দাবি করেছেন তার হুবহু ভিডিও প্রমাণ ও মিলে গেছে । অর্থাৎ মুন্নী সাহাদের কেল্লাহ এখন ফতেহ হয়ে পড়েছে ।
ইন্ডিয়ার টিভি চ্যানেলের বদৌলতে আমরা বিখ্যাত নায়ক নায়িকাদের লুক-এলাইক বা দেখতে অনেকটা একই রকম মানুষ দেখেছি । ফরহাদ মজহারের এরকম কাছাকাকাছি চেহারা বা বাহ্যিক গঠণের লুক এলাইক বের করা কঠিন কিছু নহে । বিশেষ করে একটু আবছা আবছা চেহারা দিয়ে বা দূর থেকে যে ভিডিওটি দেখানো হবে - তাকে তো সহজেই আসল ভিডিও বলে চালানো সম্ভব । এটা দেখেই আওয়ামী ভক্ত পাঠককুল ইউরেকা ইউরেকা বলা শুরু করেছে ।
এদের বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াত্ব কতটুকু চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে , তা বোঝা যায় ফরহাদ মজহারকে নিয়ে তথাকথিত এক ছড়াকারের একটি ছড়া দেখে । আমার মনে হয় ছড়া সাহিত্যের সবচেয়ে বড় কলংক হিসাবে চিহ্নিত হবে এই নোংরা ছড়াটি । যেখানে ফরহাদ মজহারকে অপমান করতে গিয়ে পুরো জাতিকেই অপমান করা হয়েছে । ফরহাদ মজহার সর্বদা লুঙ্গি পরেন । এটা তিনি করেন একটা জাতীয়তাবোধ এবং অহংবোধ থেকে । তার এই অহংবোধকে আঘাত ও ছোট করা মানে পুরো জাতির অহংবোধকে আঘাত করা । বঙ্গবন্ধুর লুঙ্গি পরা অনেক ছবি আছে , মাওলানা ভাসানী সহ অনেকেই লুঙ্গি পরে বিদেশে সফরে যেতেন । ফরহাদ মজহারের লুঙ্গি খুলে এই কুলাঙ্গাররা পুরো জাতিকেই নেংটা করে দিয়েছে ।
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও এই শ্লোগানটি দিয়েছিলেন বিএনপি নেত্রী ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় । আজ ফরহাদ মজহারের মেয়ের চোখে যেন সারা জাতির চরম অসহায়ত্বটি ফুটে উঠেছে । বেগম জিয়ার সেই কথাটি দেশবাসী মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছে - দেশ বাঁচাও , মানুষ বাঁচাও । মানুষের জীবন বাঁচাও , ইজ্জত বাঁচাও ।
জানি না ,
কে এখন এই জাতিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসবেন ?
কোথা থেকে আসবেন ?
মিনার রশিদ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন