ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ৫ জুলাই, ২০১৭

ফরহাদ মজহার অপহরণঃ নাটক তো নাটকই! লজ্জার কথা না'ই বললাম! কিন্তু এধরণের কান্ড যেন এদেশে আর না ঘটে।

শ্বাসরুদ্ধকর ১৮ ঘণ্টা_ফ্যাক্ট’স, ট্রুথ এন্ড রিয়ালিটি (একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ) 
ফরহাদ মজহার সাধারনতঃ খুব ভোরে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন এবং লেখালেখির কাজটা সকাল সকাল সারেন। সকাল বেলা তার কী বোর্ডের টাইপের শব্দ স্ত্রী ফরিদা আখতারের চিরচেনা। ৩ জুলাই সকাল ৫টার পর ফরিদা আখতার এর ঘুম ভাঙলে তিনি দেখেন ফরহাদ মজহার বিছানায় নেই, এমনকি প্রতিদিনের মত লেখার টেবিলেও নেই। তিনি ডাকাডাকি করে বাথরুম সহ ঘরের অন্যান্য জায়গায় খুঁজে তাকে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। 
এরই মধ্যে (৫টা ২৯ মিনিটে) ফরহাদ মজহার এর মোবাইল ফোন থেকে স্ত্রী ফরিদা আখতার একটি কল পান। ফোনে ফরহাদ মজহার ভয়ার্ত কণ্ঠে বলেন “ফরিদা ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে, মেরে ফেলবে”। এ কথার পর লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং ফোনটিও বন্ধ হয়ে যায়। ফরিদা আখতার ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েন এবং তার অফিস এবং পরিবারের সবাইকে বিষয়টি জানান। 
সকলের পরামর্শে তিনি আদাবর থানায় গিয়ে তার স্বামীকে অপহরনের বিষয়টি অবহিত করেন এবং তাকে উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা চান।
সকাল আনুমানিক নয়টার দিকে পুলিশ, RAB এবং গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা ১ শ্যামলী রিং রোডস্থ ফরহাদ মজহারের বাসভবন হক গার্ডেন-এ আসেন। তারা ভবনের নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে আলাপ করে এবং সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন সকাল ৫টার দিকে ফরহাদ মজহার কে তার স্বভাবসিদ্ধ সাদা ফতয়া-পাঞ্জাবী ও লুঙ্গী পরে বাড়ী থেকে বের হতে দেখা গেছে। পুলিশ বাসায় থাকা ফরহাদ মজহারের অপর একটি ফোন, তিনি যে কম্পিউটার ডেস্কটপে বসে কাজ করছিলেন তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তিনি কারও ফোন কল বা মেসেজ পেয়ে বাইরে বেরুলেন কিনা তা জানার চেষ্টা করে। 
পুলিশ ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেন যে তারা তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন তবে তার অপহরণের বিষয়টি যেন বাইরে জানাজানি না হয় এবং কোনভাবেই যাতে বিষয়টি মিডিয়াতে না আসে। পুলিশ আরও জানায় যে, যেই ফোন থেকে স্ত্রী ফরিদা আখতার কে কল করা হয়েছিল তারা তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন এবং পুলিশের গোয়েন্দা নেট ওয়ার্কের মাধ্যমে তারা খুব শীঘ্রই অপহরণকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করতে পারবেন বলে তারা আশাবাদী। কিন্তু বিষয়টি যদি মিডিয়ার মাধ্যমে জানাজানি হয়ে যায় তাহলে তাকে উদ্ধার করা কষ্টকর হয়ে যাবে। ফরিদা আখতার সরল বিশ্বাসে তাদের কথায় আশ্বস্ত হন এবং বিষয়টি কাউকে না জানানোর বিষয়ে একমত হন। তবে তিনি তার নিকট আত্মীয়দের বাসায় আসতে বলেন এবং সিলেটে বেড়াতে যাওয়া ফরহাদ মজহারের একমাত্র কন্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং নিউইয়র্ক সিটির মেয়রের আইন পরামর্শক ‘এটর্নি সমতলী হক’ কে দ্রুত ঢাকায় ফিরে আসতে বলেন। খবর পেয়েই সমতলী তাৎক্ষনিক ঢাকায় রাওয়ানা দেন। দুপুর নাগাদ ফরহাদ মজহারের সেই ফোন থেকে আরও দুইবার ফরিদা আখতারের কাছে কল আসে। একই রকম ভয়ার্ত কণ্ঠে ফরহাদ মজহার জানান ‘৩৫ লক্ষ টাকা পেলে অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে দেবে’ এরপর আবার ফোন বন্ধ হয়ে যায়। ফরিদা আখতার তার বাসায় অবস্থানকারী পুলিশের গোয়েন্দা টীম কে বিষয়টি জানান। 
পুলিশ আধুনিক ফোন ট্র্যাকিং দিভাইস ব্যাবহার করে জানতে পারে ফরহাদ মজহার কে নিয়ে অপহরণকারীরা দ্রুত স্থান পরিবর্তন করছে এবং মানিকগঞ্জ হয়ে যশোর-খুলনা অভিমুখে তাদের গতিপথ বলে তাদের ধারনা। ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফরহাদ মজহারের অপহরণের বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীরা ফরহাদ মজহারের বাসভবনে ভিড় করতে থাকে। বিপুল সংখ্যক শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীরাও সমবেত হয় ফরহাদ মজহারের বাসায়। ফরহাদ মজহার কন্যা সমতলি ঢাকায় ফিরে তার আন্তর্জাতিক বন্ধু-স্বজন দের বিষয়টি জানান। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সবাই একযোগে প্রতিবাদ জানায়। টুইটার ও ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও সমলোচনার ঝড় ওঠে। ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাস, বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা সহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফরহাদ মজহারের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। সরকারের কাছেও তারা ফরহাদ মজহারের বিষয়ে জানতে হয়। বিকেল বেলা ফরহাদের মজহারের বাসায় প্রায় সকল গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে তার বন্ধু-স্বজন এবং মানবাধিকার কর্মীদের পক্ষ থেকে লেখক ও কলামিস্ট গৌতম দাস জানান ফরহাদ মজহারকে কে বা কারা তার বাসা থেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। তারা তার জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন। তার পরিবার এই মুহূর্তে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত তাই তারা মিডিয়ার সামনে কথা বলতে পারছেনা।

সারা দুনিয়ায় ফরহাদ মজহারের অপহরণ নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়লেও রহস্যজনক কারনে পুলিশ ফরিদা আখতার এবং তার পরিবারের সদস্যদের মিডিয়ার কাছে কিছু না বলতে অনুরোধের চাপ অব্যাহত রাখে। ফরিদা আখতার বারবার পুলিশকে বলতে চেষ্টা করেন ‘আপনাদের সব অনুরোধতো আমি রাখছি এবং সকল সহযোগিতা করছি কিন্তু আপনারা সারাদিন ধরে ট্র্যাক করেও কেন এখনও ফরহাদ মজহার কে উদ্ধার করতে পারছেননা?’ 
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ফরিদা আখতারের ফোনে শেষবারের মত কল আসে। এসময় ফরহাদ মজহারের কণ্ঠ ছিল খুবই দুর্বল। তিনি জানতে চান ৩৫ লক্ষ টাকা জোগাড় হয়েছে কিনা নাহয় তারা তাকে মেরে ফেলবে। ফরিদা আখতার জবাবে বলেন সব টাকা আমি জোগাড় করব তবুও তাদের বলেন আমরা আপনাকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেতে চাই। একথা বলার পর আবার ফোন বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফোনালাপ পুরোটাই রেকর্ড করেন এবং ট্র্যাক করেন। 
রাত ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বিভিন্ন মিডিয়ায় ফরহাদ মজহার কে উদ্ধারে নানা জায়গায় অভিযান পরিচালনার খবর আসে। একটি সাদা মাইক্রবাস রেখে অপহরণকারীরা ফরহাদ মজহার কে নিয়ে সীমান্তের দিকে পালিয়ে গেছে এরকম গুজব ছড়িয়ে পড়ে। কোন কোন মিডিয়ায় পুলিশের বরাত দিয়ে ফরহাদ মজহার স্বেচ্ছায় বাসা থেকে বেরিয়ে গেছেন। তাকে কোন এক হোটেলে একা একা ভাত খেতে দেখা গেছে মর্মে খবর প্রচার হতে থাকে। পুলিশের বরাত দিয়ে এসকল সংবাদ প্রচার হওয়ায় ফরিদা আখতার হতাশ হয়ে পড়েন। সারাদিন পুলিশ তাকে মিডিয়ায় কথা বলতে নিষেধ করে রাত শেষে নিজেরা মিডিয়ায় নানা রকম বিভ্রান্ত মূলক কথা বলছে দেখে তিনি বিস্মিত হন। 
রাত দশটায় ফরিদা আখতার তার মেয়ে সমতলি হক, তাদের পারিবারিক মিত্র মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরি, প্রফেসর ড মামুন আহমেদ, ডাঃ পিনাকি ভট্টাচার্য সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। ফরিদা আখতার দেশবাশী, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মানবাধিকার সংস্থা সমূহ, গণমাধ্যম সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, সকাল ১১টা থেকে পুলিশ অপহৃত ফরহাদ মজহার এবং অপহরণ কারীদের ফোন ট্র্যাক করে অবস্থান ও চলাচল সম্পর্কে জানতে পারলেও এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করতে না পারায় তিনি শঙ্কিত। মেয়ে সমতলি হক বলেন আমার বাবার বয়স ৭০ তিনি অসুস্থ। তিনি একজন দেশপ্রেমিক প্রজ্ঞাবান লেখক। আমরা কিছু চাইনা শুধু তাকে সুস্থ ও জীবিত ফেরত চাই। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরি বলেন ফরহাদ মজহার কে মুক্তিপনের জন্য কিডন্যাপ করা হয়েছে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এটা গুম ও অপহরণের নতুন মাত্রা ও কৌশল হতে পারে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ফরহাদ মজহার পরিবারের এই সংবাদ ব্রিফিং লাইভ সম্প্রচার করে। ফেইসবুক লাইভের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষ পুরো বিষয়টি জানতে পারে। এই সংবাদ সম্মেলনের পরই পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টাতে থাকে। রাত ১১-৩০ মিনিটে RAB সদর দফতর থেকে টেলিফোনে ফরিদা আখতার কে জানানো হয় তারা যশোর এর নওদা পাড়া থেকে ফরহাদ মজহার কে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। সাথে সাথে সকল গণমাধ্যমে ফরহাদ মজহার কে জীবিত উদ্ধারের ব্রেকিং নিউজ প্রচার হতে থাকে। 
অবসান হয় শ্বাসরুদ্ধকর ১৮ ঘণ্টার।
(সংগৃহীত)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন