১- প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদত পাঠ করুণ। (আশ্হাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া রাসূলুহূ
أَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ)
এতে জান্নাতের ৮টি দরজার যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।(সহিহ মুসলিম- ৪৪১, হাদিস একাডেমি, পবিত্রতা অধ্যায়)
২- প্রত্যেক ফরজ সলাত (নামায) শেষে আয়াতুল কুরসি (সূরা বাকারা- আয়াত ২৫৫) পাঠ করুণ এতে মৃত্যুর সাথে সাথে জান্নাতে যেতে পারবেন।(নাসাই, সহীহ জামে’ ৫/৩৩৯, সিলসিলাহ সহীহাহ্ ৯৭২)
৩- প্রত্যেক ফরজ সলাত শেষে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার এবং ১ বার (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর পাঠ করুণ
« لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ».)
এতে আপনার অতীতের সব পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। (সহিহ মুসলিম হাদিস-১২৩৯, হাদিস একাডেমী)
সেই সাথে জাহান্নাম থেকেও মুক্তি পেয়ে যাবেন কেননা দিনে ৩৬০ বার এই তাসবিহগুলো পড়লেই জাহান্নাম থেকে মুক্ত রাখা হয় আর এভাবে ৫ ওয়াক্তে ৫০০ বার পড়া হচ্ছে। (সহিহ মুসলিম হাদিস-২২২০, হাদিস একাডেমী)
৪- প্রতিরাতে সূরা মুলক (৬৭ নাম্বার সুরা) পাঠ করুণ এতে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।(সহিহ নাসাই, সহিহ তারগিব, হাকিম-৩৮৩৯, সিলসিলাহ সহিহাহ-১১৪০, শায়খ আলবানী রঃ হাদীছটি হাসান সহিহ বলেহেন, দ্র: সহীহ তারগীব ও তারহীব, হা/ ১৪৭৫ ও ১৪৭৬)
৫- সুরা ইখলাস ৩বার পড়লে পুরো কুরআন খতমের সওয়াব (বুখারী- ৫০১৫)
সুতরাং যত খুশী পড়ুন, চাইলেই প্রতিদিন শত শতবার কুরআন খতমের সওয়াব পেতে পারেন এভাবে—
সুতরাং যত খুশী পড়ুন, চাইলেই প্রতিদিন শত শতবার কুরআন খতমের সওয়াব পেতে পারেন এভাবে—
৬- সকালে ১০০ বার ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি (سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ وَبِحَمْدِهِ) পাঠ করুণ এতে আল্লাহ তা’লা আপনাকে সৃষ্টিকুলের সমস্ত মানুষ থেকে বেশী মর্যাদা দান করবেন। (সুনান আবু দাউদ তাহকিককৃত-৫০৯১)
৭- সকালে ১০০ বার ও সন্ধ্যায় (সন্ধ্যায় বলতে আসর থেকে মাগ্রিবের মধ্যে যে কোন সময়ে) ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি (سُبْحَانَ اللّهِ وَ بِحَمْدِهِ) পাঠ করুণ এতে কিয়ামতের দিন আপনার চেয়ে বেশী সওয়াব নিয়ে আর কেও উপস্থিত হতে পারবে না। (সহিহ মুসলিম-৬৫৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেসন)
৮- সকালে সূর্য ওঠার আগে এবং বিকালে সূর্য ডোবার আগে অর্থাৎ ফজর সলাত আদায় করে সূর্য ওঠার আগেই এবং বিকালে সূর্য ডোবার আগেই ১০০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ্, ১০০ বার আল্লাহু আকবার এবং ১০০ বার (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর) পাঠ করুণ এতে মক্কায় ১০০ টি উট কুরবানির চেয়ে বেশী সওয়াব, জিহাদে ১০০ টা ঘোড়া পাঠানোর চেয়ে শ্রেষ্ঠ, ১০০ টি গোলাম আযাদ করার চেয়ে শ্রেষ্ঠ, এবং পৃথিবীর সব মানুষের চেয়ে বেশী সওয়াব হবে আপনার। (নাসাই সুনানে কুবরা- ১০৬৫৭, হাদিসটি সহিহ)
৯- ঘুমানোর পূর্বে বিছানায় গিয়ে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়ুন, রাসুল সাঃ তাঁর মেয়ে ফাতিমা (রাঃ) এবং আলী (রাঃ)-কে এই আমল করার জন্য বিশেষভাবে নসিহত করেছেন (বুখারী- ৩৭০৫, তাওহীদ পাবলিকেশন)
১০- বাজারে প্রবেশ করে- (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু য়্যুহয়ী ওয়া য়্যুমীতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা য়্যামূত, বিয়াদিহিল খাইরু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর
«لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، يُحْيِي وَيُمِيتُ، وَهُوَ حَيٌّ لاِ يَمُوتُ، بِيَدِهِ الْخَيْرُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ».)
পাঠ করুণ এতে ১০ লক্ষ পুণ্য হবে, ১০ লক্ষ পাপ মোচন হবে, ১০ লক্ষ মর্যাদা বৃদ্ধি হবে এবং জান্নাতে আপনার জন্য ১ টি গৃহ নির্মাণ করা হবে। (তিরমিজি তাহকিককৃত -৩৪২৮,৩৪২৯ শাইখ আলবানী হাদিসটিকে হাসান সহিহ বলেছেন)
১১- বাড়িতে সালাম দিয়ে প্রবেশ করুণ এতে আল্লাহ তা’লা নিজ জিম্মাদারিতে আপনাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (ইবনু হিব্বান-৪৯৯, সহিহ তারগিব-৩১৬)
১২- জামাতে ইমামের প্রথম তাকবীরের সাথে ৪০ দিন সলাত আদায় করুন অর্থাৎ দেরিতে নয় বরং সলাত আরম্ভ হওয়ার সময়ই শরিক হওয়া এতে আপনি নিশ্চিত জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। (সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] - হাদিস ২৪১, তাকবিরে উলার ফজিলত অধ্যায়)
১৩- জুমার দিন ১) গোসল করে ২) পায়ে হেটে ৩) আগে আগেই মসজিদে গিয়ে ৪) ইমামের পাশাপাশি বসে ৫) মনোযোগের সাথে খুতবা শুনলে বারি থেকে হেটে আসার প্রতি কদমে ১ বছর সারা রাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং ১ বছর টানা সিয়াম পালন করার সওয়াব পাবেন (সুনান তিরমিজি তাহকিককৃত- ৪৯৬)
তাহলে যদি কোন ব্যক্তি এই শর্তগুলো পুরন করে তবে সে যদি বাড়ি থেকে ১০০০ পা ফেলে মসজিদে যায় তবে তার জন্য ১০০০ বছর একটানা সারা রাত তাহাজ্জুদ নামাজের সওয়াব এবং ১০০০ বছর একটানা সিয়াম পালনের সওয়াব দেওয়া হবে, (সুবহানাল্লাহ), এবং কদম যতো বারতে থাকবে সওয়াবও এই একই অনুপাতে বারতে থাকবে।
১৪- সাধ্যমত বেশি বেশি জানাজা সলাতে শরিক হবেন কেননা শুধু জানাজা সলাতে শরিক হলেই এক কীরাত সওয়াব দেওয়া হয় আর দাফন পর্যন্ত থাকলে ২ কিরাত সওয়াব দেওয়া হয় আর ২ কিরাত অর্থ দু’টি বিশাল পর্বত সমতুল্য (সাওয়াব) (বুখারি- ১৩২৫, জানাজা অধ্যায়)
১৫- প্রতিমাসের আয়ের একটা অংশ এতিমখানা বা মসজিদ মাদ্রাসা বা গরিব-দুখি, বিধবা ও দুস্থদের মাঝে দান করবেন হোক সেটা অতি অল্প এতে আপনি আল্লাহ তা’লার কাছে জিহাদকারির সমতুল্য হবেন। (বুখারি-৬০০৭, তাওহীদ পাবলিকেশন)
১৬- মহিলারা ৪টি কাজ করবেন, ১) ৫ ওয়াক্ত সলাত ২) রমজানের সিয়াম, ৩) লজ্জাস্থানের হেফাজত, ৪) স্বামীর আনুগত্য করুণ এতে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। (সহিহ ইবনু হিব্বান-৪১৬৩, মুসনাদে আহমাদ-১৬৬১, তবরানি কাবির-৯৯১)
১৭- মসজিদে ফজরের সলাত আদায় করে বসে দোয়া জিকির পাঠ করুণ এবং সূর্য উঠে গেলে ২ রাকাত ইসরাকের সলাত আদায় করুণ এতে আপনি প্রতিদিন নিশ্চিত কবুল ১ টি হজ্জ ও ১ টি উমরার সওয়াব পাবেন আর কবুল হজ্জের সওয়াব জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়। (সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] – ৫৮৬, জুমু’আর নামায অধ্যায়)
(মহিলারাও বাড়ীতে ফজর সলাত আদায় করে যদি মুসল্লায় বসেই দোয়া জিকির পাঠ করে এবং সূর্য উঠে গেলে ২ রাকাত ইসরাকের সলাত আদায় করে তাহলে তারাও এই সওয়াব পাবে বলে শাইখ বিন বাজ রঃ-এর ফতওয়া রয়েছে সুতরাং চাইলেই এই বিশাল সওয়াব প্রতিদিন ই অর্জন করা সম্ভব)
বিঃদ্রঃ ফরজ ইবাদতগুলো করার পাশাপাশি শির্ক, বিদআত ও হারাম ভক্ষণ থেকে দূরে থেকে (কেননা এই ৩ পাপে লিপ্ত থাকলে কোন ইবাদতই কবুল করা হয়না) যে কেও এই অতি সহজ আমলগুলো করবে সে সহজেই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে ইন শা আল্লাহ। কিয়ামতের দিন পাপ পুণ্য মিজানের পাল্লায় মাপা হবে, পুণ্যের পাল্লা ভারি হলেই কেবল জান্নাত পাওয়া যাবে তাই আমলগুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পুণ্যের পাল্লা ভারি করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আল্লাহ, তাওফিক দিন। অামিন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন