চট্টগ্রামের প্রবীণ সাংবাদিক ও দৈনিক নয়াদিগন্তের চট্টগ্রাম ব্যুরোচীফ বাংলাদেশ বার্তা ডেস্হেকঃ লাল হুমায়ুন আর নেই। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টায় চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
একাধারে কলামিষ্ট ও সামাজিক সংগঠক সাংবাদিক হেলাল হুমায়ুন বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী। তিনি দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য, চট্টগ্রাম মেট্্েরাপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক সমবায় সমিতির সাবেক নির্বাচিত সহ সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক নিবাচিত সদস্য এবং বিভিন্ন সামাজিক-সংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। এছাড়া দৈনিক সংগ্রাম,দৈনিক দেশ বাংলা,জাতীয় দৈনিক অর্থনীতি,খবরপত্র সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের চট্টগ্রাম ব্যুরোচীফ এর দায়িত্ব পালন করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি ও চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ছিলেন। হেলাল হুমায়ুন স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
১৯৮২ সালে সাংবাদিকতা পেশায় যোগদান করে তিনি। এ বনাঢ্য জীবনে তিনি অসংখ্য প্রবন্ধ এবং বই লিখেছেন। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, চট্টগ্রাম মেট্্েরাপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিএনপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখা, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ফ্্রন্ট, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম, দারুল ইরফান ট্্রাস্ট, মসজিদ মিশন, আহলুস সুন্নত ওয়াল জামায়াত,বায়তুশ শরফ মাদরাসা, আল্ হেলাল আদর্শ ডিগ্রী কলেজ, চট্টগ্রাম ইউনানী মেডিক্যাল কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিঠি, ইসলামী ছাত্রশিবির, বায়তুশ মরফ মজলিসুল ওলামা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্্রন্ট কেন্দ্রিয় কমিটিসহ বিভিন্ন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
মরহুম হেলাল হুমায়ুনের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নে তালগাঁ গ্রামে। তার জন্ম ১৯৫৬ সালে ৬ জুলাই। তার পিতা কবি হাকীম ইসমাঈল হিলালী ছিলেন একজন এলাকার প্রখ্যাত ব্যক্তি ও হেকিমি চিকিৎসক।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, আজ সোমবার সকাল ১০ টায় নগরীর দেওয়ানহাট ধনিয়ালাপাড়াস্থ বায়তুশ শরফ মসজিদে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১১ টার দিকে হেলাল হুমায়ুনের লাশ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জানাজার নামাজের পর তার গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। বাদে আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
এদিকে পত্রিকায় পাঠানো এবং ফোনে দেয়া বিবৃতিতে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও নেতৃবৃন্দ বলেছেন, স্বাধীন সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ মরহুম হেলাল হুমায়ুনের বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মহান ব্রতকে সামনে রেখে যেভাবে নিরলস কাজ করেছেন, তা তার সতীর্থ সাংবাদিকরা চিরদিন শ্রদ্ধার সাথেই মনে রাখবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। তারা বলেন, বাংলাদেশে সাংবাদিকতার ইতিহাসে একজন প্রথিতযশা কলমসৈনিক হিসেবে তার ভূমিকা স্মরনীয়। কীর্তিমান সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার অবদান নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য। একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক ও কীর্তিমান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে হারিয়ে আজ চট্টগ্রামবাসী শোকে ম্্িরয়মান। তার শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতিদাতারা বলেন,তার রূহের মাগফিরত কামনা করে দোয়া করছি-আল্লাহ যেন তার নেক আমলসমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতবাসী করেন। তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহীদের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন