সরকারের মদদপুষ্ট বিচার বিভাগে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সফল মন্ত্রী, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা, গণমানুষের প্রিয় মুখ, জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদের বিরুদ্ধে ন্যায়ভ্রষ্ট রায় আপিল বিভাগে বহাল রাখাকে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। সামান্য বিবেক সম্পন্ন মানুষ এ রায় মেনে নিতে পারেনা। আমরা ন্যায়ভ্রষ্ট রায়কে ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করছি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরে তিনি দেশে থেকেই পড়াশুনা ও চাকুরী করেছেন। নিয়োজিত ছিলেন সাংবাদিকতার পেশায়ও। যার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন কোন অপরাধে বাংলাদেশের কোন জেলায় একটি মামলা এমনকি একটি জিডিও হয়নি। আলী আহসান মো. মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলা ও বিচার প্রক্রিয়া পুরোটাই ছিল সাজানো, প্রতিহিংসা ও চরম অসঙ্গতিপূর্ণ। ট্রাইবুনালের ৩টি বানোয়াট অভিযোগে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল। আপিল বিভাগ তার একটিতে খালাস ও আরেকটিতে যাবজ্জিবন কারাদন্ড দিলেও উদ্দেশ্যেমূলক ভাবে বুদ্ধিজীবি হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছে। অথচ এই অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, সাজানো এবং অসঙ্গতিপূর্ণ। অভিযোগে বলা হয়েছে ১৯৭১ সালে, মোহাম্মাদপুর ফিজিকাল ইন্সটিটিউটে পাকিস্তানী আর্মিদের টর্চার ক্যাম্পে তিনি বুদ্ধিজীবি হত্যায় কর্মকর্তার সাথে শলাপরামর্শ করতেন। এই অভিযোগে মুজাহিদকে ফাসিঁর দন্ডাদেশ প্রদান করে ট্রাইবুনাল। অথচ তিনি কবে, কাকে, কিভাবে হত্যা বা অপহরণ করেছেন সুনির্দিষ্ট কোন নাম বা দিন তারিখ উল্লেখ নেই। কোন আর্মি অফিসারের সাথে কোথায় বসে এই পরামর্শ হয়েছে বা এই পরামর্শের সময় আর কেউ উপস্থিত ছিলো কিনা এই মর্মে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য দেয়া হয়নি। তাছাড়া কোন বুদ্ধিজীবি পরিবারের কোন সদস্য কিংবা যারা এই ফিজিকাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের কথিত ঘটনার ভিকটিম তাদের কারও স্ত্রী বা সন্তানতার কোন স্বাক্ষ্য প্রদান করেননি। এমনকি ঐ কলেজের তৎকালিন গার্ড ও মামলার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী রুস্তম আলী এবং অধ্যক্ষ এখনো জীবিত থাকলেও তাদেরকে সাক্ষী করা হয়নি উদ্দেশ্যেমূলক ভাবে। বরং সাক্ষী করা হয়েছে ঘটনাকালিন সময়ে ১৪ বছরের একজন বালককে। ট্রাইবুনালের জেরায় স্বীকার করেছে কোন স্কুলে লেখাপড়া না করেও অসৎ ভাবে সে ৫ম শ্রেণীর সার্টিফিকেট গ্রহণ করেছে। সেখানে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে এমন একজনের নামও সে বলতে পারেনি। এমন একজন অসৎ স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে কিভাবে মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা যায় তা বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষের বোধগম্যনয়। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে প্রতিটি অভিযোগের ঘটনার বিবরণে ভিন্নতা ও তথ্যে অসংলগ্নতা ছিল স্পষ্ট। মামলার আইও স্বীকার করেছেন যে, মুজাহিদ আল বদর, শান্তি কমিটি, রাজাকার বা আল শামস বা এই ধরনের কোন সহযোগী বাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, এমন কোন তথ্য তিনি তার তদন্তকালে পাননি। এর পরও তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রাখার কোন যু্িক্তকতা আছে বলে জনগণ মনে করেনা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আদালতকে আমরা শ্রদ্ধা করতে চাই। ন্যায় বিচারের প্রতিক হিসেবে দেখতে চাই। কিন্তু নেতৃবৃন্দের উপর বার বার যে অবিচার করা হচ্ছে তাতে জাতি হতাশ। জনগণ বার বার বিচারের নামে অবিচার দেখতে প্রস্তুত নয়। এ রায়ের রিভিও আবেদন করা হবে। আমরা আশা করি তিনি রিভিওর মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। তার মুক্তির মাধ্যমে আদালতের প্রতি মানুষের পূর্ণ আস্থা ফিরে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
নেতৃবৃন্দ যে কোন সংকির্ণতা ও প্ররোচণার উর্দ্ধে উঠে ন্যায় বিচারের স্বার্থে আলী আহসান মো. মুজাহিদকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে আদালতের প্রতি আহবান জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন