সালটা মনে করতে পারছিনা। ২০০৭ অথবা ২০০৮ এর প্রথম দিকে হবে। মীর কাসেম আলী প্যারিসে আসলেন। এখানকার ইসলামিক সংগঠনের উদ্যোগে এক আলোচলা সভার আয়োজন করা হল। আমি নগণ্য এক আল্লাহর বান্দাকেও সেই আলোচনা সভায় দাওয়াত দেয়া হলো। মীর কাসেম আলীর কোন প্রোগ্রামে এর আগে ছিলাম কি না মনে নেই। স্মৃতি হাতরিয়েও খুজে পাচ্ছিনা। মীর কাসেম আলীর কোন প্রোগ্রামে আমার হাজিরা এটাই সম্ভবত পয়লা।
প্রোগ্রাম যথারীতি শুরু হয়েছে। এক ভাই পবিত্র কুরআন থেকে সামান্য তেলাওয়াত করেছেন। আমাকে একটি ইসলামিক গানের জন্য আহবান করা হলে আমি গান পরিবেশন করলাম। পরিচয়পর্ব শেষে প্রশ্নোত্তরের সুযোগ দেয়া হলো। প্রত্যেকেই মৌখিক প্রশ্ন করছেন আর জনাব কাসেম আলী কোন জড়তা,হিনমন্যতা কিংবা গোঁজামিলের আশ্রয় না নিয়ে সবকটির সাবলিল জবাব দিয়ে যাচ্ছেন।
২০০৬ সালের রক্তাক্ত ২৮ শে অক্টোবর নিয়ে আমি একটি প্রশ্ন করলাম। প্রশ্নটা ছিলো- যেখানে শেখ হাসিনা তার নেতা কর্মীকে লগি বৈঠা সাথে নিয়ে রাজপথ দখলের হুকুম দিলেন সেখানে জামায়াত নেতৃবৃন্দ তাদের কর্মী সমর্থকদের জনগণের দোয়া নিয়ে মাঠে নামার আহবান করলেন।এতে করে তারা লগি বৈঠার তান্ডবের শিকার হলে প্রতিরোধের কোন সুযোগই থাকলোনা। অনেকগুলি তাজাপ্রাণ নিমিষে ঝরে গেলো। এটা কি জামায়াত নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক অদুরদর্শিতা নয় ?
এমন প্রশ্নের উত্তরে সহজ সরল ভাবে দায়স্বীকার করে নিয়ে জানালেন , আওয়ামীলীগ এতটা হিংস্র হবে বা পুলিশ বিডিয়ার এতটা নীরব ভূমিকা পালন করবে তা তাদের ধারনায় ছিল না। এভাবে সহজ স্বীকারোক্তি করছেন আর ২৮শে অক্টোবরে শহীদ হয়ে যাওয়া ভাইদের স্মৃতিচারণ করে ঝরঝর করে কাঁদছেন। তার কান্নার সাথে মাহফিলের সকলেই শরিক হলেন। আমিও না কেঁদে পারলাম না। এ কান্না কোন লোক দেখানো কান্না নয়, এ কান্না সত্যি প্রিয়জন হারানোর কান্না। টিভি ক্যামেরার সামনে দাড়িয়ে সস্তা চোখের পানি ফেলানো নয়, এটা কর্মী হারানো এক নেতার অন্তর ছিড়ে বেরিয়ে আসা নোনা জল। সেদিন দেখেছিলাম কতটা নরমদিলের মানুষ তিনি। আল্লাহ তুমি তাকে সাহায্য কর। সংগৃহীত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন