বাংলাদেশ বার্তা: যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আটশত কোটি টাকা চুরির ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা এবং চুরি হয়ে যাওয়া আটশত কোটি টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে সরকারের ঢিমেতেতাল গতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ৩০ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আটশত কোটি টাকা চুরির ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা এবং চুরি হয়ে যাওয়া আটশত কোটি টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে সরকারের টিমেতেতাল গতি লক্ষ্য করে দেশবাসীর মনে এ টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে সন্দেহ ও সংশয় দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের ব্যাপারে তদন্তে তেমন কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। দিন যত যাচ্ছে ততই যেন বিষয়টি ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে যে, সরকারের মধ্যেকার রাঘব বোয়ালরা যাতে ধরা না পরে সে জন্যই সরকার বিষয়টি ধামা-চাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ জন্য সরকার তদন্তের ব্যাপারে গড়ি মসি করে অযথা সময় ক্ষেপণ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনাকে কোনভাবেই হ্যাকিং বলা যায় না, এটা ডিজিটাল ডাকাতি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আটশত কোটি টাকা চুরির প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করে এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবী আজ গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। জনতার দাবীকে পাশ কাটানোর কোন ষড়যন্ত্র দেশবাসী বরদাস্ত করবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরিতে শুধু আর্থিক ক্ষতিই হয়নি। এতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত এসেছে এবং দেশের ভাবমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। সরকার কিছুতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনার দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। টাকা চুরির ঘটনার ব্যাপারে সরকার এখন পর্যন্ত কোন যৌক্তিক ব্যাখ্যাও দিতে পারেনি। এ থেকেই বুঝা যাচ্ছে যে, এ ঘটনার সাথে সরকারের মধ্যকার রাঘব-বোয়ালরা জড়িত। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তা ব্যক্তিরা জড়িত না থাকলে অন্য কেউই এ ঘটনা ঘটাতে পারত না। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত থাকার কারণেই এ টাকা চুরি করা সম্ভব হয়েছে।
গত ১৩ মার্চ অর্থমন্ত্রী অর্থচুরির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণরের পদত্যাগ করা ছাড়া আর কোন অগ্রগতিই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণরের পদত্যাগই যথেষ্ঠ নয়। এ অর্থ চুরির দায়িত্ব তিনি এড়াতে পারেন না।
সরকার ও সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বর্তমানে রহস্যজনকভাবে কঠোর নিরবতা পালন করছেন। নিরবতা পালন করেই কি সরকার তার দায়িত্ব এড়াতে পারবেন? অর্থ চুরির দায়দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করার পরিবর্তে অর্থমন্ত্রী রহস্যজনকভাবে নিরবতা পালন করে কি দেশের মানুষের চোখ ফাঁকি দিতে পারবেন? অতএব এই অর্থ চুরির ঘটনার দায়ভার ঘাড়ে নিয়ে কমপক্ষে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আটশত কোটি টাকা চুরির ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা এবং চুরি হয়ে যাওয়া আটশত কোটি টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
অন্যথায় দেশের এই লুণ্ঠিত সম্পদের ব্যাপারে দেশের জনগণ সরকারের কাছ থেকে কড়ায় গন্ডায় হিসাব আদায় করার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন