বাংলাদেশ বার্তা: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু ধর্ষিতা ও খুন হওয়ার ঘটনা এবং সম্প্রতি পিরোজপুরে একজন কিশোরী কাজের মেয়ে গৃহকর্তা কর্তৃক ধর্ষিতা হওয়া এবং ঢাকায় কণ্ঠশিল্পী কৃষ্ণকলির স্বামী খালেকুর রহমান কর্তৃক ধর্ষিতা হয়ে গৃহকর্মী জান্নাত আক্তার শিল্পী খুন হওয়াসহ শত শত শিশু এবং নারী নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান।
গতকাল মঙ্গলবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ২০ মার্চ কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সোহাগী জাহান তনু টিউশনি করে বাসায় ফেরার পথে ধর্ষিতা হয়ে খুন হয়। ক্যান্টনমেন্টের মতো নিরাপদ এলাকার বাসায় ফেরার পথে তনুকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দেশবাসী শংকিত ও ক্ষুব্ধ। সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হলো তনু হত্যার ১ সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতোই বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বললেন, ‘আমরা বড় বড় ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছি, এটাও পারবো’। তনু হত্যার ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুনিদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হওয়ায় সাধারণ মানুষ বিশেষ করে স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ রাস্তায় নেমে প্রতিদিনই মানববন্ধন করছেন এবং তনুর হত্যাকারী খুনিদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছেন। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কথা বললেও মামলার দৃশ্যমান ও বিশ্বাসযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই।
তিনি আরো বলেন, প্রায় ৪ বছর আগে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি খুন হওয়ার পর তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করার ঘোষণা দেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা তো দূরে থাক আজ ৪ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সাগর-রুনির ছোট্ট ছেলেটি, তাদের আত্মীয়-স্বজন ও দেশবাসী জানতে পারলো না যে, তাদের কারা খুন করেছে। তাই স্বাভাবিক কারণেই তনুর ধর্ষক ও খুনিদের গ্রেফতারে বিলম্ব হওয়ায় তার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠীসহ দেশবাসী সকলেই উদ্বিগ্ন যে, তনু হত্যার প্রকৃত খুনিরা আদৌ গ্রেফতার হবে কিনা?
তিনি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বার্থান্বেষী মহল তনু হত্যার ঘটনা যাতে ধামাচাপা দিতে না পারে, প্রকৃত ধর্ষক ও খুনিরা যাতে আড়াল হতে না পারে, সেজন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ তনু হত্যাসহ অন্যান্য শিশু এবং নারী নির্যাতনকারী খুনিদের আসল চেহারা ও বিচার দেখতে চায়। সংশ্লিষ্ট মহল যদি বাংলাদেশের জনগণকে বোকা মনে করে এ ধরনের পৈশাচিক ঘটনাগুলোকে ধামাচাপা দিতে চান, তাহলে জনগণ একদিন রুখে দাঁড়াবে এবং এ ব্যাপার সমূহ দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
নরপশুদের বিরুদ্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে কুণ্ঠাবোধ করবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন