বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ১৯৩৯ সালে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) ও ১৯৬৩ সালে এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন।
ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে জীবনের বাঁকে বাঁকে ইসলামী আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ ২০০৪ সাল থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর হিসেবে অসামান্য মেধা ও সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
তিনি ছিলেন সংগঠনের এক নীরব গবেষক। প্রচার বিমুখ নীরব কারিগর। স্বল্প ভাষায় প্রাঞ্জল শব্দ প্রয়োগকারী, চিন্তাশীল, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সরল ও অনাড়ম্বর জীবন-যাপনকারী এক অনন্যসাধারণ মানুষ। নীতি-আদর্শের প্রশ্নে ছিলেন হিমালয়ের মতই অটল-অবিচল।
আকর্ষণীয় ভাষায় হৃদয় নিংড়ানো শব্দ চয়ন ও বলিষ্ঠ কন্ঠে শৈল্পিক উপস্থাপনের মাধ্যমে লাখো হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করার মত প্রকৃতিগত যোগ্যতা ছিল তার মাঝে। প্রতিটি কথা বলতেন মেপে মেপে। কোন বাহুল্যতা নেই তবে বলিষ্ঠতায় পরিপূর্ণ। যতবার তার বলিষ্ঠ কন্ঠের ছন্দময় বক্তব্য শুনেছি মন্ত্রমুগ্ধের মত তার দিকেই শুধু তাকিয়ে থেকেছি। তার রচিত অসংখ্য ইসলামী সাহিত্য যুগে যুগে সত্য সন্ধ্যানী পাঠকদের হেদায়াতের আলোয় উদ্ভাসিত করবে।
তার বর্ণাঢ্য জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু লেখার যোগ্যতা বা সাহস কোনটাই আমার নেই। তবে তার জীবনের শেষ দিন কয়টির কথা আজ খুব মনে পড়ছে।
রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলায় তিনি জামিনে থাকা সত্বেও সত্তরোর্ধ বয়সে তাকে মানসিক ও পারিবারিকভাবে যেভাবে যাতনা দেয়া হয়েছে তা খুবই নির্মম এবং অমানবিক। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাতে তার বাসায় পুলিশী অভিযানকালে তার নিরপরাধ পুত্রকে গ্রেফতার করার পরেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কিছুদিন পর জ্ঞান ফিরলেও পুনরায় হার্টএটাক হলে হাসপাতালে নেয়া হয়। এভাবেই ২০১৪ সালের ৭ জানুয়ারি তিনি তার প্রভুর সান্নিধ্যে চলে যান। তার এ চলে যাওয়ার মাধ্যমে চিন্তাশীল জ্ঞান রাজ্যে সৃষ্ট শূন্যতা কোনদিনও পূরণ হওয়ার নয়।
কর্তৃত্ববাদী সরকারের নিষ্ঠুরতম এ আচরণ ইতিহাস কোনদিন ক্ষমা করবে না। মরহুম অধ্যাপক এ কে এম নাজির আহমদ স্যারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে জালিম শাসকদের প্রতি আবারো ধিক্কার জানাই। আর মহান প্রভুর কাছে একটাই আকুতি- তিনি যেন তাঁর এই একনিষ্ঠ গোলামকে তাঁর মেহমান হিসেবে কবুল করে নেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন