ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৯

বিয়ের পর অলীমা ওয়াজিব,,,,,,,,

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ
অলীমা’র দাওয়াত
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা) হইতে বর্ণিত হইয়াছে, হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) নবী করীম (স)-এর নিকট উপস্থিত হইলেন। তাঁহার দেহে সোনালী হলূদের চিহ্ন লাগানো ছিল। ইহা দেখিয়া নবী করীম (স) তাঁহাকে ইহার কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। জবাবে তিনি জানাইলেন যে, তিনি সম্প্রতি আপনার বংশের একটি মেয়ে বিবাহ করিয়াছেন। রাসূলে করীম (স) জিজ্ঞাসা করিলেনঃ তাহাকে কত মহরানা দিলে? তিনি বলিলেনঃ এক দানা পরিমাণ স্বর্ণ। রাসূলে করীম (স) বলিলেনঃ অলীমা’র দাওয়াত কর- একটি ছাগী দিয়া হইলেও।
(বুখারী, তিরমিযী, নাসায়ী)

ব্যাখ্যাঃ হাদীসটি মোটামুটি তিনটি কথা আলোচনা সাপেক্ষ। প্রথম সোনালী হলুদের চিহ্ন গায়ে, থাকা। দুই মহরানার পরিমাণ এবং তিন, অলীমা করার নির্দেশ।

এই হাদীসটির মূল ভাষা হইলঃ তাহার দেহে হলুদের চিহ্ন ছিল। অপর এক বর্ণনায় এই স্থলের শব্দ হইলঃ অর্থাৎ তাঁহার গায়ের জাফরানের রঙ মাখা ছিল। অন্য একটি বর্ণনায় এখানকার ভাষা হইল অর্থাৎ এক প্রকার সুগন্ধি মাখা ছিল। আর একটি বর্ণনার ভাষা এইঃ নবী করীম (স) তাঁহার চোখে-মুখে নব বিবাহের হাসি-খুশী ও উৎফুল্লতা দেখিতে পাইলেন। আর তিরমিযীর ভাষা হইলঃ ‘নবী করীম (স) আবদুর রহমান ইবনে আউফের (দেহে বা কাপড়ে) হলুদ চিহ্ন দেখিতে পাইলেন। হলুদ চিহ্ন বা জাফরান মাখা দেখার তাৎপর্য হইল, তাহার শরীরে জাফরান মাখা কাপড়-যাহা সাধারণত নব বিবাহিত ব্যক্তিরা পরিয়া থাকে-পরিহিত ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলিয়াছেনঃ
যে মুসলমানই বিবাহ করিবে সে যেন সোনালী হলুদ বর্ণ মাখা কাপড় পড়ে। ইহা নব বিবাহ ও তজ্জনিত আনন্দ উৎফুল্লতার বাহ্য লক্ষণ হইবে। তোমরা কি হাদীসের এই বাক্যটি দেখিতে পাওনা, যাহাতে বলা হইয়াছেঃ তাঁহার চোখে-মুখে নববিবাহের উৎফুল্লতা প্রতিভাত ছিল।

কেহ কেহ বলিয়াছেনঃ ‘নব বিবাহিত ব্যক্তি এই ধরনের কাপড় পরিবে এই উদ্দেশ্যে, যেন লোকেরা তাহার অলীমা’র অনুষ্ঠান করায় ও নব গঠিত পরিবারের ব্যয় বহনে সাহায্য করে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলিয়াছেনঃ
সমস্ত রঙের মধ্যে সর্বোত্তম রঙ হইল সোনালী হলুদ বর্ণ। কেনা কুরআন মজীদেই আল্লাহ তা’আলা বলিয়াছেনঃ হলুদবর্ণ- উহার রঙ অত্যুজ্জল। উহা দ্রষ্টা ও দর্শককে আনন্দিত ও উৎফুল্ল করিয়া দেয়।

কুরআনের ও আয়াতটি সূরা আল-বাকারা’র ৬৯ আয়াতাংশ। ইহাতে বলা কথার ভঙ্গী হইতে জানা যায়, মানসিক আনন্দ লাভ হয় হলূদ বা ঘিয়ের রঙে। এই কারণে নবী করীম (স) ও এই রঙটি খুবই পছন্দ করিতেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) কে নবী করীম (স)-এর পছন্দনীয় রঙ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল। জবাবে তিনি বলিয়াছিলেনঃ
নবী করীম (স) সোনালী হলুদ রঙ মাখিতেন। আমিও উহা মাখি এবং এই রঙ আমি ভালবাসি, পছন্দ করি।

ইবনে আবদুল বার জুহরী হইতে উদ্ধৃত করিয়াছেনঃ
সাহাবায়ে কিরাম (রা) সোনালী হলুদ রঙ মাখিতেন এবং তাহাতে তাঁহারা কোন দোষ দেখিতে পাইতেন না।

ইহা হইতে বুঝিতে পারা যায় যে, বর্তমানকালে বিবাহের প্রক্কালে বর-কনের গাত্রে হলূদ মাখার যে সাধারণ ও ব্যাপক রেওয়াজ রহিয়াছ তাহা বহু প্রাচীনকাল হইতে চলিয়া আসা রীতি এবং তাহাতে শরীয়াতের দৃষ্টিতে কোন দোষ নাই।

দায়ূদী বর্ণনা করিয়াছেনঃ হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) তাঁহার শ্বশ্রু সোনালী হলুদ বর্ণে রঙীন করিয়া রাখিতেন। ফলে তাঁহার কাপড়-পোষাক এই রঙে রঙীন হইয়া যাইত।
হযরত উমর (রা) বলিয়াছেনঃ
আমি নবী করীম (স)-কে দেখিয়াছি, তিনি এই রঙ মাখিতেন এবং ইহার অপেক্ষা অন্য কোন রঙ তাঁহার অধিক প্রিয় ও পছন্দ ছিল না। তিনি তাঁহার সমস্ত কাপড়-এমন কি তাঁহার পাগড়ীও এই রঙে রঙীন করিয়া রাখিতেন।

আসলে ইহা জাফরানী রঙ সম্পর্কে কথা। উহা ছাড়া আর যে রঙে কোন গন্ধ নাই তাহা মাখা জায়েয হওয়ায় কোন মত-বিরোধ নাই।
অবশ্য ইবনে সুফিয়ান বলিয়াছেনঃ সোনালী হলুদ বর্ণ কাপড়ে লাগানো জায়েয, দেহে লাগানো জায়েয নয়। ইমাম আবূ হানীফা, শাফেয়ী ও তাঁহাদের সঙ্গী-সাগরিদগণ কাপড়ে বা দাড়িতে জাফরানী রঙ ব্যবহার মকরুহ মনে করিতেন। তাঁহাদের দলীল হইল হযরত আনাস বর্ণিত হাদীসঃ
পুরুষ মানুষকে জাফরানী রঙ লাগাইতে নবী করীম (স) নিষেধ করিয়াছেন।

প্রখ্যাত হাদীস ব্যাখ্যাকারী আল্লামা আবদুর রহমান মুবারকপুরী লিখিয়াছেনঃ হাদীসের এই বাক্যটির অর্থ হইলঃ
হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফের (রা) অবয়বে নব বিবাহ সংক্রান্ত সুগন্ধি হিসাবে ব্যবহৃত জাফরানের চিহ্ন লাগিয়া ছিল।

অর্থাৎ তিনি এই জাফরানী রঙ নিজে ইচ্ছা করিয়া লাগান নাই। কেননা পুরুষদের এই রঙ ব্যবহার সম্পর্কে রাসূলে করীম (স)-এর স্পষ্ট নিষেধ সহীহ বর্ণনা সূত্রে বর্ণিত হইয়াছে। অনুরূপভাবে হলুদবর্ণ সম্বলিত সুগদ্ধি ব্যবহারও পুরুষদের জন্য নিষিদ্ধ। কেননা ইহা মেয়েদের ভূষণ। আর পুরুষদিগকে মেয়েদের সহিত সাদৃশ্য করিতে নিষেধ করা হইয়াছে। তাঁহার মতে ইহাই আলোচ্য হাদীসের সঠিক তাৎপর্য। কাযী ইয়ায ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞগণ হাদীসের এই অর্থই গ্রহণ করিয়াছেন। কিন্তু আল্লমা বদরুদ্দীন আইনী এইরূপ অর্থ গ্রহণে একমত নহেন।

কাযী ইয়ায বলিয়াছেন, বলা হইয়াছে, বরের জন্য এই রঙ ব্যবহার করা জায়েয। আবূ উবাইদ উল্লেখ করিয়াছেনঃ
সাহাবায়ে কিরাম (রা) যুবকদের বিবাহ উৎসব কালে এই রঙ ব্যবহার করা জায়েয বলিয়া ঘোষণা করিতেন।

হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) আনসার বংশের যে মেয়েটি বিবাহ করিয়াছিলেন, জুবাইর উল্লেখ করিয়াছেন, সে মেয়েটি আবুল হাসান ইবনে রাফে’র কন্যা। রাসূলে করীম (স) জিজ্ঞাসা করিলেন ইহার অর্থঃ ‘তাহাকে মহরানা বাবদ কত দিয়াছ’? জওয়াবে তিনি বলিয়াছিলেনঃ ‘একদানা ওজনের স্বর্ণ’। মূল কথা একই, ভাষা ও শব্দ প্রয়োগের পার্থক্য মাত্র। ‘একদানা পরিমাণ’ বা ‘একদানা ওজনের স্বর্ণ’ কতটুকু? ইমাম খাত্তাবী বলিয়াছেনঃ এমন একটা ওজন বা পরিমাণ বুঝায় যাহা তদানীন্তন সমাজের সকলেরই জানা ছিল এবং ইহা কাহারও নিকট অপরিচিত ছিলনা। উহার মূল্য পরিমাণ ছিল পাঁচ দিরহাম। ইহাই অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মত। তবে ইমাম তিরমিযীর বর্ণনা মতে একদানা পরিমাণ স্বর্ণের ওজন হইল তিন দিরহাম ও এক দিরহামের এক তৃতীয়াংশ। আর ইসহাক বাহওয়াই বলিয়াছেন, ইহার ওজন পাঁচ দিরহাম ও এক দিরহামের এক তৃতীয়াংশ। বিভিন্ন সময়ে স্বর্ণের মূলে যে পার্থক্য হইয়াছে, তাহারই প্রতিফলন ঘটিয়াছে এই সব কথায়।

এই আলোচনা হইতে জানা গেল, বিবাহে মহরানা একটা অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং কে কত মহরানা ধার্য করিয়াছে বা দিয়াছে তাহাই পারস্পরিক জিজ্ঞাসা বিষয়। সমাজ প্রধান হিসাবে রাসূলে করীম (স)-এরও ইহা একটি দায়িত্ব ছিল।

রাসূলে করীম (স) হযরত আবদুর রহমান (রা)-এর বিবাহ অনুষ্ঠিত হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর তাঁহাকে নির্দেশ দিলেনঃ অলীমা কর- অলীমার জিয়াফতের ব্যবস্থা কর একটি ছাগী দ্বারা হইলেও।

‘অলীমা’ কাহাকে বলে? আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী লিখিয়াছেনঃ
বিবাহ উৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় যে খাবার বা জিয়াফতের আয়োজন ও অনুষ্ঠান করা হয়, তাহারই নাম ‘অলীমা’।

ইবনুল আসীর বলিয়াছেনঃ
বিবাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ খাবার ও জিয়াফতকেই অলীমা বলা হয়।

আল্লামা আজহারী বলিয়াছেন- ‘কেননা স্বামী-স্ত্রী দুইজন একত্রিত হয়’- এই উপলক্ষেই এই জিয়াফতের ব্যবস্থা করা হয়। এই জন্যই ইহার নাম ‘অলীমা’।

বস্তুত বিবাহ উৎসবকে কেন্দ্র করিয়া কিংবা বিবাহন্তে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদিগকে দাওয়াত করিয়া খাওয়ানোর জন্য রাসূলে করীম (স) এই নির্দেশ দিয়াছেন। হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণিত হাদীসে বলা হইয়াছে, রাসূলে করীম (স) জিজ্ঞাসা করিলেনঃ ‘তুমি কি বিবাহ করিয়াছ’? বলিলেনঃ হ্যাঁ’। জিজ্ঞাসা করিলেনঃ ‘তুমি কি অলীমা করিয়াছ’? বলিলেনঃ ‘না’।
তখন রাসূলে করীম (স) একদানা পরিমাণ স্বর্ণ তাঁহার দিকে নিক্ষেপ করিলেন এবং বলিলেনঃ অলীমা কর- যদি একটি ছাগী দ্বারাও তাহা হয়।

কথার ধরন হইতেই স্পষ্ট হয় যে, একটি ছাগী দ্বারা অলীমার জিয়াফত খাওয়ানো কমসে-কম নিয়ম। অর্থাৎ বেশী কিছু করিতে না পারিলেও অন্তত একটি ছাগী যবেহ করিয়া অলীমা খাওয়াইতে হইবে। আর নবী করীম (স) যে একটি স্বর্ণ দানা তাহাকে দিলেন, ইহার তাৎপর্য এই যে, বর বা তাহার অভিভাবক নিজস্ব ব্যয়ে যদি অলীমার জিয়াফতের ব্যবস্থা করিতে অসমর্থ হয়, তাহা হইলে সমাজের লোকদের- অন্ততঃ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, মুরব্বী, সমাজপতি সর্বশেষ অবস্থায় সরকারের কর্তব্য হইল তাহার সাহায্য করা। নবী করীম (স) ইহারই পথ-নির্দেশ করিয়াছেন বাস্তব আদর্শ সংস্থাপন করিয়া।

হযরত আনাস (রা) বলিয়াছেনঃ
রাসূলে করীম (স) তাঁহার স্ত্রীগণের মধ্যে জয়নবের বিবাহে যে অলীমা করিয়াছেন সেইরূপ অলীমা অন্য কোন স্ত্রীর বিবাহে করেন নাই। তখন তিনি একটি ছাগী যবেহ করিয়া অলীমা করিয়াছেন।

অপর একটি বর্ণনায় বলা হইয়াছে, হযরত আনাস (রা) বলিয়াছেনঃ লোকদেরকে আহবান করার জন্য রাসূলে করম (স) আমাকে পাঠাইয়াছিলেন। পরে তিনি তাহাদিগকে পেট ভরিয়া গোশত রুটি খাওয়াইয়াছিলেন।

বুখারী গ্রন্হে উদ্ধৃত হইয়াছেঃ
নবী করীম (স) তাঁহার কোন কোন স্ত্রীকে অধিক মর্যাদা দেওয়ার জন্যই অলীমা খাওয়ানোর এইরূপ পার্থক্য করিয়াছেন, তাহা নয়। বরং বিভিন্ন সময়ের বিবাহ কালে রাসূলে করীম (স)-এর আর্থিক সামর্থ্য কখনও সংকীর্ণ ছিল এবং কখনও প্রশস্ত ছিল, এই কারণেই এই রূপ হইয়াছে।

হযরত বুরাইদা (রা) হইতে বর্ণিত হইয়াছে, তিনি বলিয়াছেনঃ
হযরত আলী (রা) যখন হযরত ফাতিমা (রা)-কে বিবাহ করার প্রস্তাব দিয়াছিলেন, তখন নবী করীম (স) বলিয়াছিলেনঃ বিবাহে অলীমা করা একান্ত আবশ্যক।

ইবনে হাজার আল আসকালানী বলিয়াছেনঃ প্রথমে উদ্ধৃত মূল হাদীসটির সনদে কোন দোষ নাই। আর এই হাদীসটি একথাও প্রমাণ করে যে, অলীমা করা ওয়াজিব। অবশ্য ইবনে বাত্তাল বলিয়াছেন, অলীমা করাকে কেহ ওয়াজিব বলিয়াছেন, তাহা আমার জানা নাই। কিন্তু তিনি জানেন না বলিয়াই তাহা ওয়াজিব হইবে না, এমন কথা নয়। কাহারও অজ্ঞতা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে মতবিরোধ প্রমাণ করে না। অহশী ইবনে হারব-এর মরফু’ হাদীসের ভাষা এইরূপ অলীমা সত্য-সপ্রমাণিত। ইহার সহিত বিভিন্ন লোকের হক জড়িত। বস্তুত বিবাহ একটা সামাজিক আনন্দ অনুষ্ঠান। এই সময় বর পক্ষের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব এবং কনে পক্ষের নিকটাত্মীয় ও আপনজনের হক বা অধিকার হয় বর পক্ষের নিকট হইতে জিয়াফত খাওয়ার আহবান পাওয়ার। এই হক বা অধিকার অবশ্যই পূরনীয়, পালনীয়। 

কিন্তু ইবনে বাত্তাল এই হাদীসেরও ভিন্ন অর্থ করিয়াছেন। তাঁহার মতে হাদীসের শব্দ ও অর্থ ‘বাতিল নয়- ভিত্তিহীন নয়’। আর যাহা বাতিল বা ভিত্তিহীন নয়, তাহা বড়জোড় ‘মুস্তাহাব’ হইতে পারে। তাই উহাকে ‘একটি মর্যাদাশীল সুন্নাত’ বা ‘রাসূলের একটি সম্মানযোগ্য রীতি’ বলা যাইতে পারে, ওয়াজিব নয়।

উপরন্তু উহা সম্প্রতি সৃষ্ট একটি আনন্দমূলক ঘটনা সংশ্লিষ্ট জিয়াফত। ফলে ইহা অন্যান্য সাধারণ দাওয়াত-জিয়াফতের মতই একটি কাজ। (আল মুগনী-ইবনে কুদামাহ( আর ইহা করার জন্য যে আদেশ দেওয়া হইয়াছে, তাহা পালন করা ‘মুস্তাহাব’ মাত্র- ওয়াজিব নয়। আর রাসূলে করীম (স)-এর কথা ‘একটি ছাগী দিয়া হইলেও’- ছাগী জবেহ করিয়া অলীমা করা যে ওয়াজিব নয়, ইহা তো সর্ববাদী সম্মত কথা। তবে জমহুর আলেমের মতে ইহা ‘সুন্নাতে মুয়াক্কাদা’।

কিন্তু ইহাও সর্বশেষ কথা নয়, কেননা আল্লাম বদরুদ্দীন আইনীর উদ্ধৃতি অনুযায়ী, শাফেয়ী মাযহাবের কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতে ইহা ওয়াজিব। কেননা নবী করীম (স) হযরত আবদুর রহমানকে ইহা করার জন্য আদেশ করিয়াছেন। আর হযরত আবদুর রহমানকে একটি ছাগী যবেহ করিয়া হইলেও অলীমা করার নির্দেশ দিয়াছেন, তাহার অর্থ এই নয় যে, অলীমার দাওয়াতে ইহার অধিক কিছু করা যাইবে না। হযরত আবদুর রহমানের আর্থিক অবস্থার বিচারে ইহা ছিল তাঁহার সামর্থ্যের সর্বনিম্ন পরিমাণ ব্যয়। অবশ্য কাহারও কাহারও মতে সদ্য হিজরতকারী সাহাবীদের আর্থিক অস্বচ্চলতা বরং সংকটের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়াই এইরূপ বলা হইয়াছে। উত্তরকালে সাহাবীদের আর্থিক অবস্থায় যখন প্রশস্ততা আসে, তখন অলীমা’র ব্যয়-পরিমাণেও প্রশস্ততা আসে।

উপসংহারঃ-
আজকে আমাদের সমাজ উল্টো পথে যাত্রা করছে! বিয়ে মানেই হলো চাওয়া আর পাওয়া। কনের পিতা মহা মুসিবতে পড়ছে মেয়ে জন্ম দিয়ে। দীর্ঘদিন একটি মেয়ের ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার মতো গুরুদায়িত্ব পালন করে যখন পাত্রস্থ করবে তখন বর পক্ষের যাবতীয় চাহিদা মেটানো এবং গোটা এলাকার মানুষকে আপ্যায়ন করে মেয়ে উঠিয়ে দিতে হয়! যা একটি পরিবারের প্রতি জুলুম এবং অমানবিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হয়। আসুন আমরা আকদ অনুষ্ঠানকে ছোট করে সামর্থ্য অনুযায়ী অলীমাকে অত্যধিক গুরুত্ব প্রদানের প্রচেষ্টা করি। 

বইঃ- হাদিস শরীফ ৩য় খন্ড
মাওলানা আব্দুর রহিম (রহঃ)।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন