Bangladesh Barta Desk: ২০০৭ সাল থেকে গাজাকে অবরুদ্ধ করেছে রেখেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। আর ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ও নিজেদের ভূখণ্ডে ফিরে যাওয়ার দাবিতে ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘ সংগ্রামে লিপ্ত। আর এ সংগ্রামে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করছে ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ ও শিশুদের।
এ পরিস্থিতির যেন কোনো উন্নতি নেই। ২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে প্রতি শুক্রবার ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ও নিজেদের ভূখণ্ডে ফিরে যাওয়ার দাবিতে গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন নামে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত মার্চ মাসে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ শুরুর পর এ নিয়ে তিন নারীকে হত্যা করা হলো। চলমান বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ২৪১ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি।
সর্বশেষ গত শুক্রবার গাজায় ইসরাইলি সেনার গুলিতে এক ফিলিস্তিনি নারী নিহত হন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আল–জাজিরা জানায়, নিহত ওই নারীর নাম আমল আল-তারামসি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা জানান, শুক্রবার গাজা-ইসরাইল সীমান্ত বেস্টনীতে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনির বিক্ষোভের সময় এই গুলি চালানো হয়। বিক্ষোভের সময় ওই নারীর মাথায় গুলি লাগে।
শুধু ফিলিস্তিনিদের হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি হানাদার ইসরাইল। নানাভাবে নিপীড়ন করছে ফিলিস্তিনিদের। এর প্রভাবে সেখানে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পরিষ্কার পানি পান করাটা গাজা উপত্যকায় অনেকটাই বিলাসিতার মতো। সেখানে সাপ্লাই পানি পান করাটা একেবারেই নিরাপদ নয়। পানিতে ক্লোরিন এবং সালফেটের মাত্রা বিপজ্জনক পরিমাণ।
কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকার ফলে ভূগর্ভস্ত পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া জ্বালানি স্বল্পতার কারণেও পানি উত্তোলনে বিঘ্ন ঘটছে।
ইসরাইলি অবরোধের কারণে গত ১০ বছর ধরে এ ধরনের সঙ্কটের মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন গাজার বাসিন্দারা। গাজা থেকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার কার্লেস স্ট্রাটফোর্ড জানান, সেখানে বাসাবাড়িতে পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন পাত্রে করে সাপ্লাই পানি সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন তারা। এক বৃদ্ধকে দেখা যায়, নিজের বাড়ির ট্যাপ ঘুরাচ্ছেন তিনি। তবে সেখানে কোনো পানি পড়ছে না। ফলে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন সেখানকার মানুষজন। শিশুদেরও দূর থেকে পানি বহন করে নিয়ে আসতে হচ্ছে।
এদিকে গাজা উপত্যকায় হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরাইলের ব্যাপক বোমা হামলা করার মধ্য দিয়ে ইসরাইল এবং গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের মধ্যকার আরেকটি যুদ্ধ শুরু হওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এদিকে হাজার হাজার ইসরাইলি নাগরিকদের হামাসের রকেট হামলা থেকে বাঁচানোর জন্য আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন