ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১৯

বিএনপি-জামায়াতের দূরত্ব বাড়ছে যে কারণে !

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পথ চললেও বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে জামায়াতের। এ দূরত্ব এতদিন খুব একটা প্রকাশ না পেলেও এখন অনেকটাই দৃশ্যমান।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে সেই দূরত্ব বেড়েছে কয়েক গুণ, বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক এখনও তলানিতে। বিশেষ করে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আসন বণ্টন ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উপর বিএনপির অতিমাত্রায় নির্ভরতার বিষয়টি মানতে পারছে জামায়াত। এর বহির্প্রকাশ ঘটেছে দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে।
বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ১৯৯৭-৯৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক ছিল সবচেয়ে মধুর। জামায়াতকে রাজনীতিতে শক্ত জায়গা করে দেয়ার জন্য বিএনপিকে কম কথা শুনতে হয়নি। বিশেষ করে ২০০১ সালে জামায়াতের দুই নেতাকে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেয়া ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেয়ায় বিএনপিকে এখনও অনেকে সহ্য করতে পারছে না।
জামায়াতও বিএনপির সেই আস্থার প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করেছে প্রতি পদে পদে। বিশেষ করে ২০০৫ সালের শেষ দিকে আওয়ামী লীগের সরকার বিরোধী আন্দোলনে মাঠে থেকে বিএনপিকে সর্বোচ্চ সহায়তা করে জামায়াত।
শুধু তাই নয়, ২০১৪ সালের নির্বাচন-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়টাতে একতরফা ভোট ঠেকাতে জামায়াত ছিল বিএনপির রাজপথের সঙ্গী। সারা দেশে আন্দোলন সংগঠিত করতে কাণ্ডারির ভূমিকা রেখেছে ধর্মভিত্তিক এ দলটিই।
দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর। যখন আওয়ামী লীগ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের একের পর এক দণ্ড- এমনকি ফাঁসি দিতে থাকে, তখন বিএনপিকে পাশে পায়নি জামায়াত। এমনকি জামায়াতের ওই সব নেতার পক্ষে কোনো প্রতিক্রিয়াও দেখায়নি জোটসঙ্গী বিএনপি। এতে হতাশ ও চরম ক্ষুব্ধ হয়েছে জামায়াত।
এর পর থেকে বিএনপি সরকারবিরোধী যত আন্দোলন-সংগ্রামের ডাক দিয়েছে, সেগুলোতে জামায়াত নৈতিক সমর্থন দিয়েই দায় এড়িয়েছে। কৌশলগত কারণে জোট থেকে বিচ্ছিন্ন না হলে আগের সেই সখ্য আর দেখা যায়নি। এমনকি ২০-দলীয় জোটের বৈঠকে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকেও দেখা যায়নি।
বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে একাদশ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে বিএনপি আলাদা একটি মোর্চার শরিক হওয়ার পর। বিএনপি কার্যত ২০ দলকে পেছনে ফেলে নতুন জোটের নেতাদের ভ্যানগার্ড হিসেবে বেছে নেয়। ড. কামালের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের কেউ-ই জামায়াতকে মেনে নিতে পারেনি।
এমনকি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ না করায় বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বিএনপির সঙ্গে জোটে আসেনি। ড. কামাল-কাদের সিদ্দিকী-আ স ম রব-মাহমুদুর রহমান মান্নারা শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে জোট করলেও দলটির সঙ্গে জামায়াতের গাঁটছড়া এমনকি অস্তিত্ব মেনে নেয়নি।
এসব বাস্তবতা সত্ত্বেও বিএনপি সুকৌশলে চেষ্টা করেছে ২০ দলকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সমান্তরালে হাঁটতে। এ ক্ষেত্রে বিএনপিকে হোঁচট খেতে হয়েছে পদে পদে। শেষ পর্যন্ত ২০ দলকে আড়ালে রেখে ঐক্যফ্রন্টকেই সামনে দিয়ে নির্বাচন করেছে বিএনপি। এমনকি ২০ ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা আজ পর্যন্ত সামনাসামনি বসেনি। সিদ্ধান্ত নিতে দুই জোটের সঙ্গে আলাদা আলাদা বসতে হয়েছে বিএনপিকে। এ ক্ষেত্রে বাধা জামায়াত। এসব নিয়ে দুই জোটের শরিকদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বিএনপি-জামায়াতের দূরত্ব তীব্র হয় একাদশ নির্বাচনে দুই জোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে। একাদশ নির্বাচনে জামায়াতের চাহিদা ছিল অন্তত ৩৫-৪০ আসন। বিএনপি শুরুতে ২৫ আসন জামায়াতকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে দলটি। শেষ দরকষাকষিতে জামায়াতকে দেয়া হয় মাত্র ২০ আসন। জামায়াত এটি মেনে নিতে পারেনি। তারা জোট থেকে বের না হলেও বেশ কয়েকটি আসনে ধানের শীষের প্রার্থীদের পাশাপাশি নিজেদের প্রার্থীও দিয়েছে।
একাদশ নির্বাচনে ‘শোচনীয়’ ভরাডুবি হয় বিএনপি জোটের। দুই জোটের ২৭ দল মিলে পায় মাত্র সাতটি আসন। বিএনপি পাঁচটি আসন পেলেও জামায়াত একটি আসনও পায়নি।
এর পরই জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের অপরিহার্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। বিএনপিতে জামায়াতবিরোধী বলয় হিসেবে যারা পরিচিত, তারা এখনই মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলটির সঙ্গ ছাড়তে চাপ সৃষ্টি করছে শীর্ষ নেতাদের। তবে এ নিয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কোনো নেতা এখনই মুখ খুলতে নারাজ।
যারা জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন, তাদের যুক্তি হচ্ছে- এতদিন জামায়াতের ভোট ব্যাংকের কথা বলে তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধার কথা বলা হতো। এবার তো প্রমাণ হল জামায়াতের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে।
তবে বিএনপিতে এখনও যারা জামায়াতকে সঙ্গী হিসেবে দেখতে চান, তাদের যুক্তি হচ্ছে- একাদশ নির্বাচন জনপ্রিয়তা কিংবা ভোটের মানদণ্ড হতে পারে না। সেটি হলে বিএনপির মতো এত বড় দল সারা দেশে পাঁচটি আসন পাবে কেন?
এদিকে জামায়াতও এত প্রশ্ন কিংবা বঞ্চনা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে থাকবে কেন, তা নিয়ে ভাবছে। দলটির প্রবীণ নেতাদের একটি বড় অংশের যুক্তি হচ্ছে- শুধু বিএনপিকে রাজপথে ও ভোটের মাঠে শক্তি জোগানোর কারণে তাদের (জামায়াত) এই রাজনীতির পরিণতি বরণ করতে হয়েছে। একে একে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এতকিছুর পরও জামায়াত নিয়ে বিএনপি অস্বস্তিতে ভুগলে তাদের সঙ্গে থাকার দরকার কি?
এসব ভাবনা-চিন্তার দোলাচলে সম্প্রতি বিএনপির ডাকে সাড়া দেয়নি জামায়াত। নির্বাচনের পর গত বৃহস্পতিবার ধানের শীষের সব প্রার্থীকে ঢাকায় ডাকে বিএনপি। সেখানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের অন্য শরিকদের প্রার্থী ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও জামায়াতের কেউ ছিল না। এটিকে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের রাজনীতির বিচ্ছেদ হিসেবে দেখছেন অনেকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন