বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ অনেকগুলো অর্জন
আছে এই আন্দোলনের। আন্দোলন এখনো
চলমান। সার্বিক মুল্যায়নের সময় এখনো আসেনি।
কিন্তু তারপরও কিছু
তীর্যক মন্তব্য দেখে
মনে হলো, কিছু
কথা এখুনি বলা
দরকার।
প্রথমত, হরতাল নামক একটি রাজনৈতিক কর্মসূচীকে জ্যান্ত করার জন্য ইসলামপন্থী এ শক্তিকে ধন্যবাদ দেয়া যায়। যারা নিয়মতান্ত্রিক ও দৃশ্যমান পদ্ধতিতে আন্দোলন সংগ্রাম করেন, অন্তত বাংলাদেশে তাদের জন্য অন্যতম একটি সেরা কৌশল ছিল হরতাল। কিন্তু প্রধান বিরোধী দলের নিস্ক্রিয়তা এবং ভালো করে একটি ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করার মুরোদ কমে যাওয়ায় হরতাল নামক কর্মসূচীটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় চলেই গিয়েছিল। সর্বশেষ অদ্ভুত জাতীয় নির্বাচনের পরও ঘটনা কম ঘটেনি। কিন্তু প্রতিবাদ কর্মসূচী হিসেবে হরতালকে কখনোই বেছে নেয়ার সাহস করা হয়নি।
দ্বিতীয়ত, হরতাল ডেকে ঘরে বসে থাকা বা এসিরুমে থাকার যে দুর্নাম এই দেশের মূল ধারার রাজনীতিবীদদের হয়েছিল, আগেও এবং এবারও ইসলামপন্থীরাই সে দুর্নাম ঘুচিয়েছে। বড়ো দলগুলো ছোটদলগুলোর সাফল্যকে স্বীকৃতি দিতে চায় না। কিন্তু জনগন যা বোঝার তা বুঝে গিয়েছে।
তৃতীয়ত, মিডিয়াগুলো আরেকবার তাদের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করেছে। ফ্যাক্ট আর রিয়েলিটি থেকে তারা কতটা দূরে- তা এবার আরো একবার প্রকাশিত হয়েছে। যে যুক্তি দিয়েই তারা নিজেদের এ অক্ষমতাগুলোকে জাস্টিফাই করুন না কেন, মানুষের গনমাধ্যমের ওপর থেকে বহু আগেই আস্থা উঠে গিয়েছিল। অনাস্থার সেই জায়গাটা এবার আরো বেশি পোক্ত হলো।
চতুর্থত, দালাল ও কাপুরুষদেরকে চিত্রায়িত করা সম্ভব হলো। আগে যে কথাগুলো মানুষ মনে মনে ভাবতো কিন্তু বলতে সাহস পেতো না, এবার তারা মুখে ও লেখনিতে তা প্রকাশ করেছে। এখন সেলিব্রেটিদেরকে নিজেদের পথ বেছে নিতে হবে। তারা মিডিয়ার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারেন অথবা আস্থা অর্জনও করে নিতে পারেন। সিদ্ধান্ত তাদের।
পঞ্চমত, প্রবাসী মানুষদের দেশ নিয়ে আকুতি চোখে পড়েছে। তারা যেহেতু স্বাধীনভাবে ফেসবুক ব্যবহার করতে পেরেছেন, তাই তাদের সক্রিয় থাকার সুযোগও ছিল। আর তারা যতটা পারেন, করেছেন। ননস্টপ অনলাইনে থাকা এবং আত্মিকভাবে পাশে থাকার এ চেষ্টা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন বার্তা বহন করে।
৬ষ্ঠত, আমরা অনেকগুলো নেতা পেয়েছি। আস্থা রাখার মতো লোক পেয়েছি। আমরা অনেকেই দুশ্চিন্তা থেকে বলি, নেতা কই? নেতা কবে আসবে? এই চিন্তাগুলো আসে, প্রথাগত ভাবনা থেকে। অনেক সময় পরিস্থিতিই নেতা তৈরি করে দেয়। খেয়াল করে দেখুন, দুদিন আগে আমরা কয়জনই বা মধুপুরের পীর সাহেবের কথা জানতাম। অথচ আজ কমবেশি সবার ওয়ালেই তার ছবি। তার সাহসিকতার প্রশংসা। এভাবেই সামনে আসার লোক তৈরি হয়ে যায়।
শেষে এসে একটি কথা বলি। যদি এই প্রয়াসকে আপনার কাছে অপ্রয়োজনীয় ও অকার্যকর মনে হয়, তাহলে আপনারই দায়িত্ব হলো, বিকল্প রাস্তার কথা বলে দেয়া। কিছু মানুষ দেখছি, প্রতিনিয়ত সমালোচনা করছেন, বলছেন, এভাবে হবে না ওভাবে করুন। কিংবা বলছেন, এগুলো দূরদর্শী কাজ নয়। কেউ কেউ আবার বলছেন, হরতাল অবরোধ বা গণতান্ত্রিক কর্মসূচী দিয়ে কিছু হবে না। অন্য কিছু চাই। কেউ বা বলছেন, রাসুলের সা,. সুন্নাতের আদলে আন্দোলন। এভাবে ভাসা ভাসা কথা না বলে, আপনার চিন্তা বা কর্মসূচীর আউটলাইন দিন। কীভাবে কী করতে চান, প্রকাশ্যে বলুন। আপনার ডিটেইলস কথা সঠিক হলে এ প্রজন্ম মেনে নেয়ার মতো মানসিকতা রাখে। তারপরও আল্লাহর ওয়াস্তে কথায় কথায় মানুষের ত্যাগ ও কুরবানিকে খারিজ করবেন না।
(আলী আহমেদ মাবরুর)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন