ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ, ২০২১

চট্টগ্রামে স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সেমিনার অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ বার্তা: চট্টগ্রামে স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সেমিনার অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ ডেস্কঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে মহান স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান।


সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. নেছারুল করিম।

ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, 'আমাদের ভূখন্ডকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাখা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব, কারণ দেশ যদি স্বাধীন-সার্বভৌম না থাকে তাহলে আমরা কোথায় আমাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করব? আমাদের মনে রাখতে হবে বড় বড় ব্রিজ, কালভার্ট, ফ্লাইওভার এসব উন্নয়ন দেশের স্বাধীনতা-অখন্ডতার পরিচয় বহন করে না। হ্যাঁ, দেশ স্বাধীনের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রত্যাশার কিছু জিনিস আমরা পেয়েছি, কিন্তু আমাদের ভাগ্য থেকে ৫০টি বছর চলে গেছে। কিছু নিয়মিত গতানুগতিক উন্নয়ন হয়তো হয়েছে, কিন্তু যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ছিল না, তা জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যা প্রত্যাশা করেছিলাম, তার অধিকাংশই আমরা পাইনি। স্বাধীন স্বকীয়তা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোয় স্বাধীনতা। কিন্তু আমাদের রাজনীতি, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির আজ কী হাল? আমাদের সভা সমাবেশ করার অনুমতি নেই, নির্বাচন ব্যবস্থা একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে, ভোটের আগের রাতে ভোট হয়ে যায়। এসব তো মুক্তিযুদ্ধের সময় কথা ছিল না। ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের মাধ্যমে কথা বলার স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেয়া হবে, মামলা দেয়া হবে, স্বার্থ রক্ষা করতে না পারলে চিফ জাস্টিসের মতো ব্যক্তিকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হবে, এগুলো কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? স্বাধীনতার এই ৫০ বর্ষপূর্তিতে সকলের প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঘোষণা অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আল-কুরআনের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। কেবলমাত্র সেই আদর্শের মাধ্যমে একটি সৎ, যোগ্য নেতৃত্বের কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব।'

প্রধান বক্তা প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, 'স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস আমাদের জানতে হবে, ইতিহাসের অনেক বিকৃতি হয়েছে, সেটি আমাদের দুর্ভাগ্য। ১৯৪৭ সালে আমাদের প্রথম স্বাধীনতা দিবসে আমরা পুর্ব পাকিস্তানের যে মানচিত্র পেয়েছিলাম সেটাই আমাদের বাংলাদেশের মানচিত্র, পরবর্তী প্রজন্ম যাতে এটি ভুলে না যায়। গণতন্ত্রের জন্য, অনাচারের বিরুদ্ধে আমাদেরকে দীর্ঘ সংগ্রাম করতে হয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনিই বাকশাল গঠন করে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন। অথচ ভাষাগত , জাতিগত ও ধর্মীয়ভাবে আমরা অধিকাংশই এক, এটা পুরো পৃথিবীতে বিরল, কিন্তু নানা ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা বহুধা বিভক্ত। সঠিক নেতৃত্বও আমরা পাইনি। আমাদের সবাইকে গণতন্ত্রের জন্য কাজ করতে হবে, গণতন্ত্র থাকলে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে। যে রাজনৈতিক দলই দেশে ক্ষমতায় থাকুক, মেধাবীদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে। অতএব স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তিতে আমার চাওয়া আমরা যদি একটি সৎ যোগ্য জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে পারি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন যদি সম্ভব হয় তাহলে আগামী দিনের বাংলাদেশ অনেক সুন্দর হবে।'

সেমিনারে উদ্বোধনী বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ জনাব মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, 'বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত মহান স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনার’২১ এ উপস্থিত সকল অতিথিবৃন্দকে জানাচ্ছি আন্তরিক মুবারকবাদ। স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তিতেও দেশে বাকস্বাধীনতার চরম সংকট চলছে। এরকম একটি দিনেও আলেম-ওলামা-মুসল্লিদের উপর পাখির মতো গুলি করা হচ্ছে। ’৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যে উদ্দেশ্যে তাঁদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন, বাংলাদেশ কি সেই উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে? দেশ কি ইনসাফের ভিত্তিতে চলছে? দেশের মানুষ কি অর্থনৈতিক ভাবে মুক্তি পেয়েছে? অবকাঠামো গত কিছু উন্নয়নের চমক এটি একটি দেশের জন্য বড় অর্জন হতে পারে না। গণতন্ত্র বিবর্জিত, মানবতা বিবর্জিত উন্নয়ন মানুষকে শুধু প্রতারিতই করতে পারে, মানুষের অন্তরকে জয় করতে পারে না। আজ দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, গণতন্ত্রের লেশমাত্রও কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আজ আমাদেরকে ভার্চুয়াল সেমিনারের আয়োজন করতে হচ্ছে, অথচ আজ এটি একটি বড় হল রুমে হওয়ার কথা ছিল। আজকে যে উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে, তা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। আজকের এই সেমিনার থেকে আমরা সুস্পষ্ট ভাবে উচ্চারণ করতে চাই, রাজনৈতিক যে কাদা ছোঁড়াছুড়ি, জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে সকল ক্ষেত্রে যে অনৈক্য, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনআর নামে আমাদের নতুন প্রজন্মকে ইসলাম বিবর্জিত এবং ধর্ম নিরপেক্ষ প্রজন্ম গড়ে তোলার যে সুদুরপ্রসারি চক্রান্ত, এখান থেকে জাতিকে উদ্ধার করতে হবে। আমরা জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে যদি সঠিক ট্র্যাকে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে পৃথিবীতে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। তাই আসুন, আজকের এই সেমিনারের আলোচনাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশ গড়ার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ি।'

এছাড়াও উক্ত সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবদুর রব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. মাঈন উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের প্রফেসর ড. শামীম উদ্দিন খান প্রমুখ।

সেমিনারে সমাপনী বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক জনাব আ.জ.ম ওবায়েদুল্লাহ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ নুরুল আমীন৷ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ আলম চৌধুরী ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরীসহ চট্টগ্রামের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন