ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

সোমবার, ২৬ জুন, ২০১৭

এবার থামেন, দেশ বাঁচাতে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন: সরকারকে খালেদা জিয়া

বাংলাদেশ বার্তাঃ   এবার থামেন,১০ বছর তো অনেক দুর্নীতি, লুটপাট করেছেন, গুম করেছেন। দেশ বাঁচাতে এবার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন’, বলে মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, গত ১০ বছরে অনেক করেছেন। গুম, খুন করেছেন। আল্লাহর দরবারে বিচার হবে। এবার থামেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। সরকারকে উদ্দেশ্য করে সোমবার ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপি প্রধান এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া সরকারের নানা কর্মকাণ্ডেরর সমালোচনা করেন। তিনি
সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান হয়। ঈদের দিন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে কূটনীতিক, বিশিষ্ট নাগরিক-পেশাজীবী এবং দলীয় নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন তিনি। এর আগে ১২টা ২৬ মিনিটে এই মিলনায়তনে আসেন খালেদা জিয়া।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী এসেছেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। এসময় বিএনপির স্থায়ী সদস্য কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শুভেচ্ছা বিনিময়কালে খালেদা জিয়া চেয়ারে বসলেও দলের সিনিয়র নেতারা তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকেই নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
অনুষ্ঠানে জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধি দল খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এদিন খালেদা জিয়া হালকা নীলরঙের ওপর বিভিন্ন কাজ করা একটি শাড়ি পরে মিলনায়তনে আসেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, সাদেক খান, রুহুল আমীন গাজী, আবদুল হাই শিকদার। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে জেবেল রহমান গাণি, শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। লাইনে দাঁড়িয়েও শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। লাইন মিলনায়তনের বাইরেও চলে যায়।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন খালেদা জিয়া। এরপর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বনানীস্থ সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে নিজ বাসভবনে ফিরে যাবেন তিনি।

আমার বাবা আল্লামা সাঈদীকে ছাড়া আমাদের ১৫টি ঈদ কেমন কাটলো ! - মাসুদ সাঈদী

 বাংলাদেশ বার্তাঃ  আমার হৃদস্পন্দন, আমার ভাললাগা ভালবাসা, আমার পরম শ্রদ্ধেয় আব্বা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাথে সাক্ষাত করে এই কিছু আগে কারাগার থেকে বের হলাম। গাড়ি চলছে, এখনো ঘরে পৌঁছাতে পারিনি। আব্বার সাথে দেখা হল আমার প্রায় এক মাস পর। মাঝে উপজেলা পরিষদের কাজে জিয়ানগরে থাকার কারনে আমি আব্বার সাথে সাক্ষাত করতে পারিনি। কিন্তু এর মাঝের প্রতিটি দিনই ছিল আমার ক্ষন গণনার, কখন আসবে কাংখিত সেই দিন। আলহামদুলিল্লাহ অবশেষে কাংখিত সেই দিনও এসেছে আর আমরা দেখাও করেছি। ভাগ্যের ফেরে আজ আবার ঈদেরও দিন।
সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদনের পর সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত স্থানে আব্বা এলেন। পরনে সফেদ পানজাবী তাতে গলার কাছে হালকা নীলের কাজ, মাথায় চিরচেনা সেই টুপি। চোখে কালো মোটা ফ্রেমের চশমা। আজকে আব্বাকে দারুন লাগছিল আলহামদুলিল্লাহ (যদিও আমার আব্বা এমনিতেই সুন্দর আলহামদুলিল্লাহ)।
আমাদের জন্য সাক্ষাতের সময় নির্ধারিত মাত্র ৩০ মিনিট। আব্বার মায়াভরা পবিত্র চেহারাখানি নয়ন ভরে দেখতে গিয়েই অনুভব করেছি আমাদের সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত 'অল্প সময়টুকুন' আসলে কতো 'অল্প' !!
আলহামদুলিল্লাহ, দেখা হলো আব্বার সাথে।, কথাও হলো। কিন্তু হৃদয়ের হাহাকার মিটলোনা আমার। তার পবিত্র মুখখানি দেখার জন্য আমার ছোট্ট এ হৃদয় কতটুকুন উতলা থাকে তা আমি বলে বোঝাতে পারবোনা।
সাক্ষাত শেষে গাড়িতে করে ফিরছি আর চোখের পানি মুছছি ক্ষনে ক্ষনে। আমার মনে পড়ছে আজ থেকে ৭ বছর আগের কথা। ২০১০ সালের ২৯ জুন আমাদের শহীদবাগের বাসা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আমার আব্বা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের হাস্যকর এক মামলায় গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। সেই থেকে কেটে গেছে আজ ৭টি বছর। একে একে হারিয়ে গেছে আমাদের জীবন থেকে ১৫টি ঈদ। যে মানুষটি বিগত পঞ্চাশটি বছর ধরে বিশ্বব্যাপি বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি জনপদের মানুষকে কোরআনের দাওয়াত দিয়েছেন, মানুষকে কোরআনের পথে আহবান করেছেন সেই তিনিই নাকি মুসলমানের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করেছেন !!
ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের মামলায় গ্রেফতারের পরপরই কথিত যুদ্ধাপরাধসহ আওয়ামী সরকার তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের জন্য আমার আব্বার বিরুদ্ধে -
>> রমনা থানায় গাড়ি ভাংচুর, গাড়ি পোড়ানো ও পুলিশের কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে (!) ২টি মামলা
>> রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে (!) উত্তরা মডেল থানায় ১টি মামলা
>> পল্টন মডেল থানায় গাড়ি ভাংচুর, গাড়ি পোড়ানো, পুলিশের কাজে বাঁধা ও রাষ্ট্রপতির গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগে (!) ৩টি মামলা
>> শেরেবাংলা নগর থানায় যাকাতের ৫ লক্ষ টাকা আত্নসাতের অভিযোগে (!) ১টি মামলা
>> কদমতলী থানায় বোমা/ককটেল বানানোর অভিযোগে (!) ১টি মামলা
>> রাজশাহীর মতিহার থানায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যার অভিযোগে (!) ১টি হত্যা মামলা
>> জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আয়কর ফাঁকির অভিযোগে (!) ১টি মামলা এবং
>> পিরোজপুরে অর্থের প্রলোভন ও ভীতি প্রদর্শন করে ২টি কল্পিত যুদ্ধাপরাধের মামলাসহ মোট ১৩টি মামলা দায়ের করে আওয়ামী সরকার।
এইসব কল্পিত অভিযোগ আর মিথ্যা মামলায় আমার পরম শ্রদ্ধেয় আব্বাকে টানা ৪১ দিন রিমান্ডে নেয়া হয়। এছাড়া সরকারের সেফ হোমেও তাকে একদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল। এভাবে টানা রিমান্ডে নিয়ে আমার আব্বার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। আল্লামা সাঈদীর মতো একজন কোরআনের দা'ঈ ও সিনিয়র রীজনীতিবিদকে এতোদিন রিমান্ডে নেয়ার বিষয়টি বিশ্ব রাজনীতিতে বিরল এক ঘটনা।
গ্রেফতার হওয়ার সময় আমার আব্বার বয়স ছিল ৭১। এই ৭১ বছরের মধ্যে আমার আব্বার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন থানায় কোন মামলা তো বহুদূরের কথা সামান্য একটি জিডিও কোন বিষয়েই ছিলনা। কিন্তু কি আশ্চর্যের বিষয়, যার জীবনের ৭১ বছরের মধ্যে যার বিরুদ্ধে একটি মামলাও ছিলোনা সেই তারই বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই গায়ের জোড়ে এক এক করে মোট ১৩টি মামলা দায়ের করে !!
আওয়ামী সরকারের রোষানলে কারান্তরীণ অবস্থায়ই আমার আব্বা হারিয়েছেন তার মমতাময়ী প্রিয় মা গুলনাহার ইউসুফ সাঈদী এবং কলিজার টুকরা বড় সন্তান রাফীক বিন সাঈদীকে। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে একই মাঠে সন্তান হয়ে মায়ের এবং পিতা হয়ে পুত্রের নামাজের জানাজা পড়ানোর মতো দুঃসহ যন্ত্রনা সইতে হয়েছে আমার আব্বাকে। শুধু তাই নয়, মা কিংবা সন্তানের লাশের পাশে এমনকি স্বজনদের সাথেও ব্যাথা ভোলার জন্য সামান্য কিছু সময়ও তাকে কাটাতে দেয়া হয়নি। জানাজা শেষেই মাঠ থেকে আবার তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কারাগারে।
প্রায়ই একাকী বসে ভাবি, আহ্! কী অব্যক্ত বেদনাময় সময়-ই না কাটিয়েছেন আমার আব্বা তখন !!
আসলে বিশ্বব্যাপি আল্লামা সাঈদীর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তায় দিশেহারা তার আদর্শিক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। শুধুমাত্র এ কারনেই তাঁকে জনগণ থেকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম থেকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী নানাবিধ অপবাদ ছড়ানো হয়েছে। আল্লাহর রহমতে ষড়যন্ত্রকারীদের সকল প্রচেষ্টাই এ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। তার প্রমান হলো, মিডিয়ার হাজারো প্রপাগান্ডা শেষে সরকারের ইচ্ছামাফিক সাজানো মিথ্যা মামলায় মিথ্যা স্বাক্ষের ভিত্তিতে দেয়া অন্যায় রায়ের পর দেশের আপামর জনতা এ জুলুমের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছে। রায়ের প্রতিবাদে সারাদেশে জীবন দিয়েছে তরতাজা দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। আল্লাহর মেহেরবানীতে, সরকারের হাজারো ষড়যন্ত্র আর মিডিয়ার পরিকল্পিত শত অপপ্রচারও জনগন থেকে আল্লামা সাঈদীকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি আর পারবেও না কোনোদিন ইনশাআল্লাহ।
ইসলামের শত্রুদের কাছে এ বিষয়টিই অসহনীয় এবং এ কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করে ‘আজীবন কারাদন্ডে’ দন্ডিত করে কারাগারের চার দেয়ালের মাঝে বন্দি করে রেখেছে।
আমার প্রান প্রিয় আব্বার বয়স এখন ৭৮ চলছে। নানারকম শারিরীক অসুস্থতা নিয়ে কারাগারে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন তিনি। চিকিৎসার অভাবে হাটু ও কোমড়ের ব্যথার তীব্রতা প্রতিদিন বাড়ছেই। ৩৭ বছরের ডায়াবেটিক আর হার্টের সমস্যাতো তার নিত্যদিনের সঙ্গী।
৭৮ বছর বয়স্ক আমার আব্বা শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও তার মানসিক মনোবল আল্লাহর মেহেরবাণীতে পর্বতসম।
আজ ছিল ঈদের দিন। আব্বাকে কারাগারে রেখে এটি আমাদের ১৫তম ঈদ। আমাদের ঈদ আজ জালিমের কারাগারের চার দেয়ালের মাঝে বন্দী। পরম শ্রদ্ধেয় আব্বা কারাগারে থাকা অবস্থাতেই হারালাম কলিজার টুকরা বড় ভাই রাফীক বিন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহকে, তেমনি হারিয়েছি প্রিয় দাদীকেও।
আমাদের পরিবারে ঈদের আনন্দ বলতে এখন আর কিছু নেই। আমাদের ঈদ আনন্দ এখন আমরা খুঁজে বেড়াই অতীত স্মৃতির মাঝে। চারপাশের মানুষের ঈদের আনন্দ দেখে আজকাল মাঝে মধ্যে বড় ঈর্ষা হয়।
আহারে! এই ঈদ আনন্দ এক সময় আমাদেরোতো ছিল !
সরকার আমাদের এই আনন্দটুকুনও কেড়ে নিয়েছে ...।

প্রবাস জীবনে ঈদ


বাংলাদেশ বার্তাঃ  প্রবাসের ঈদ আনন্দহীন, পরিবার পরিজন ছেড়ে ঈদ যদিও কষ্টের তারপর হাসিমুখে ঈদ পালন করতে হয় রিতিমত! আসলে দেশের আত্মীয়স্বজনেরা অনেক সময় জানতে চায় ঈদ কেমন কাটে? তাই স্বাভাবিক প্রবাসীদের বেশিরভাগ মানুষের ঈদ কেমন কাটে তার সামান্য ইঙ্গিত দেয়ার চেষ্টা করছি আমার জানাজ্ঞান থেকে।

এখানে ঈদটা একেক জনের কাছে একেক রকম। অল্প কিছু মানুষের কাছে এখানে ঈদ আনন্দের হলেও অধিকাংশ প্রবাসীর কাছে ঈদ মানেই কান্না। সারা বছরের জমিয়ে রাখা কান্নার বাঁধভাঙ্গা স্রোত যেন ঈদের দিন আর কোনো বাঁধা মানতে চায় না। দু চোখ বেয়ে ঝরে পড়ে বিরহের অশ্রু। বুকে চেপে বসে কষ্টের হিমালয়। কান্নার গতি যেন থামতেই চায় না। জোর করে থামাতে চাইলে গলায় কিছু একটা এসে আঁটকে থাকে। খানা খেতে বসলে চোখের পানি ঝরে পড়ে ভাতের উপর। হায়রে কপাল, আমি আজ কোথায়?কোথায় আমার বাবা মা? তারা কি নতুন জামা কাপড় কিনেছে? ফিরনি সেমাই রান্না করেছে তো? আমার কথা কি তারা স্মরণ করছে? আমার অনুপস্থিতি তাদের কাছেও কি কষ্টের? এইসব ভাবতে ভাবতে ভেজা চোখেই ঈদের দিনটা শেষ হয়। পর দিন কারো ছুটি আছে আর কারো নাই। আবার শুরু হল হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম। উদ্দেশ্য আমার কষ্ট হলেও আমার আত্মীয়স্বজন যেন একটু সুখ পায়। বাবাকে যেন আর কষ্ট করতে না হয়। কয়েক বছর পরে বাড়িতে এসে যেন সবাইকে নিয়ে একটু সুখে থাকতে পারি। তাই আমার জীবনের কয়েকটা বছর আত্মীয়স্বজনদের জন্য যেন উৎসর্গ করে দিলাম। নিজের সুখ ত্যাগ করলাম স্বজনদের সুখের জন্য। এটাই প্রবাস। এটাই নিয়তি।

ঈদের আগের দিনগুলোতে এখানে বাজার সদায় করার কোনো রকমের ধুম পড়ে না। এখানে এদেশের মানুষের কাছেই শুধু ঈদ আসে। আমাদের কাছে আসে না। আমাদের কাছে স্বাভাবিকভাবে একপ্রকার নিজের অজান্তেই ঈদের তারিখটা শুধু আসে। যারা দোকানে কাজ করে তাদের জন্য এই রাতে কিছুটা বাড়তি সময় দোকানে থাকতে হয়, আর সকালে ঈদের জামাতে নামাজ পড়তে হয়, এই ছাড়া অন্য কোনোভাবেই ঈদের লক্ষণ তাদের কাছে প্রকাশ পায় না।

আবারো, ঈদ উল ফিতরের অনেক অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল, আনন্দে কাটুক সকলের ঈদ "ঈদ মোবারক"।

বাবা আমার স্পন্দনে!

বাংলাদেশ বার্তাঃ এক নিম্নবৃত্ত পরিবারের ছেলে মাহিম। জন্ম নেয় সে নিম্নবৃত্ত পরিবারে তাই তার সকল চাওয়া পাওয়া গুলো থেকে যায় অপূর্ণ, হয়ত বা কিছু হয় তাতে সে অনেক খুশি! আর এই হাঁসি খুশি থাকার একমাত্র কারন তার বাবা-মায়ের ভালোবাসা টুকু পায় পরিপূর্ণভাবে। তার বয়স এখন মাত্র চার বছর, এই চার বছরেই বয়ে যায় তার উপর চৌয়াল্লিস ধরনের দূর্যোগ। দূর্যোগ গুলোর বর্ণনা দেওয়াও আমার পক্ষে খুব মর্মান্তিক!তবুও একটু দেয়, যখন তার বয়স এক কি দেড় বছর তখন সে এক পুকুরের জলে পড়ে যায় নিয়তির লিখা ছিল তাই সেদিন সে বেঁচে গেছে। মাহিম সেদিনই এই পৃথিবীর ছেড়ে চলে যেতে পারত, কিন্তু যায় নি হয়ত সামনের যন্ত্রনা গুলো দেখার জন্য। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, এই বয়সে তো ছেলে-মেয়েদের একলা কোথাও ছেড়ে দেওয়ার কথা না? আমিও মানলাম সেটা, কিন্তু বুঝতে পারছেন না তার পরিবারটি কি রকম।গ্রাম অঞ্চলে সাধারণত ছেলেদের বিয়ে দিয়ে কিছুদিন পর পরিবার তাদের আলাদা করে দেয়, গ্রামে বসবাসরত হলে খুব সহজে বুঝতে পারবেন ব্যাপারটি। এই মাহিমের বাবা-মার ক্ষেত্রে তা হয়েছিল। তাই তার মা একলা সংসারের কাজ সামলাতে গিয়ে মাহিম কে ছেড়ে দিয়েছিল, প্রতিদিনই ছেড়ে রাখত কাজের সময় টুকু। তবে কোনদিন পুকুর পাড়ে যায় নি আজ হয়ত ভাগ্য তাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল আবার ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে এটাই অনেক শুকরিয়া। জলে পড়ার কিছুদিন পর একবার তার ম্যালেরিয়া হয়েছিল হয়ত সে এই দরিদ্র পরিবারে স্বভাবিক খাবার পেত না।একবার উঠান থেকে পড়ে গিয়ে তার ছোট্ট কমল ঠোট টা দিয়ে অঝর ধারায় রক্ত ঝরে ছিলো। আরো অনেক আছে, আপতত এই গুলোই মাহিমের ছোট্ট জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু নির্মমতা।ও! একটা কথা বলতে ভুলেই গেছি সে দেখতে কেমন? চেহারাটা খুব একটা ফর্সা নয়, তবে সে রকম কালো নয় চোখে কেমন একটা অকাল্পনিক মায়া মায়া ভাব, দেহটা একটু সুঠাম ধরনের জন্মের সময় একটি সুস্থ শিশু যে রকম হয় আর কি। সব মিলিয়ে তার বাবা-মার কাছে সে এক চাঁদের কনা, লোক-জনের কাছে কি রকম জানি না। বয়স এখন তার চার বছর, মুখে অস্পষ্ট ভাষা কথাগুলো শুনতে খুব ভালো লাগে! তার প্রিয় বন্ধু তার বাবা মাঠ থেকে কাজ করে তার বাবা বাড়িতে ফিরলে আব্বু...আব্বু...আব্বু..। কথা না বল্লে আবার, আব্বু...আব্বু...আব্বু..!কলিজা জুড়ানো ডাক শুনে প্রচন্ড রৌদ্রে পোড়া দেহের ভিতর করা মন শীতল হয়ে যায়। তখন বাবা দুই একটা চুমু দিয়ে তারে ছেড়ে দেয়, মনে হয় সে এই টুকু নিতে এসেছে। আবার শুরু করে দেয় কাঁপা কাঁপা কন্ঠে অনেক কথা।বাবা মনে মনে ভাবে, হয়ত কোন ধনী ঘরে জন্ম নিলে অফিস থেকে ফিরত তার বাবা ব্যাগে অথবা হাতে থাকত অনেক দামি দামি চকলেট বা অন্য কিছু।তখন কাছে এসে ডাকতো, পাপ্পা, পাপ্পা! কাছে এসে জড়িয়ে ধরত, বাবা তখন দামি জিনিস গুলো দিত আর সে তা পেয়ে আনন্দে চলে যেত মার কাছে। কিন্তু আমার ছেলে তো এসব পায় না, তবু সে কিসের জন্য এতো কথা বলে আর কেনই বা আমি কোথাও থেকে আসা মাত্র ছুটে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখে? কিছুই আমি জানি না! উপর ওয়ালায় সব ভালো জানে কি আছে এই ছোট্ট ছেলের মনে। মাঝে মাঝে নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয়, কত জনই না কত কি করে ছেলের জন্য আর আমি কিছুই করতে পারি না একটা মাত্র ছেলের জন্য।২-দুপুরে গোসল সেরে খাওয়া শেষে বাবা ছেলে এক সঙ্গে শুয়ে গল্প শুরু করে দেয়। বাবার চেয়ে মনে হয় ছেলে বড় গল্পাকার। কি গল্পের ধরন! মনে হয় তার গল্পের কোন শেষ নায়। হঠাৎ...ছেলে: উহ..!বাবা: কি হলো বাবা তোমার? (হন্তদন্ত হয়ে)ছেলে: আব্বু এই উঁচু যায়গা টা আমার পিঠে লাগল।অজান্তেই চোখে জল চলে আসলো হাসান মিঞার এতো দিন যাবত সংসার করছে তবু ঘরে একটা চৌকি নায়, মাথা রাখার বালিসটা পর্যান্ত সেই পুরনো! মাটিতেই তিনি হিরার টুকরো টাকে রেখে দেন।বাবা: আব্বা এত নড়াচড়া করনা আর এত কথা বলতে হয়না ছোট ছেলেদের, ঘুমিয়ে পড়! (করুন স্বরে)ছেলে: আমি ছোট! আমি তো তোমার চেয়েও বড় (একটু বাবার বালিশের উপরে মাথা রেখে) দেখো এই তো আমি তোমার বড়।বাবা: হু, বাবা তুমি আমার মেলা বড় তুমি যে আমার বাপ।আমি তোমার বাপ! তাহলে কাল থেকে ঐ দাদূটাকে আব্বা বলে ডেক না! আমাকে আব্বা বল।বাবা: কেন বাবা? তোমাকে কি করেছে আমার আব্বা?ছেলে: আবার ঐ দাদুটাকে আব্বা বল্লে!বাবা: আচ্ছা আর বলব না কিন্তু কি বলে তোমার দাদু তোমাকে?ছেলে: আমি রাস্তায় খেলতে গেলে আমাকে ধমক দিয়ে বলে, ঐ ছেলে..! রাস্তায় যাওয়া হবে না ছেলে ধরায় ধরে নেবে। আচ্ছা বাবা তুমি বল তো আমি কি ছোট ছেলে যে, ছেলে ধরায় ধরে নিয়ে যাবে? আর ধরে নিয়ে যাবে কোথায়? তুমি তো ঐ রাস্তার পাশেই কাজ কর তাই না?এ রকমি তাজ্জব তাজ্জব কথা বলে চার বছরের মাহিম। কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়ে সে তার বাবার পাশে দেখে মনে হবে ঘুমিয়েও কথা বলে এই ছেলে।আর এ রকম ছেলে যদি বাবাকে ছেড়ে চলে যায় না ফেরার দেশে তাহলে তো বাবার পাগলের ন্যায় অবস্থা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই অবুঝ শিশুটিকে রেখে যদি বাবা চলে যায় না ফেরার দেশে তাহলে কি অবস্থা হবে একবার ভেবে দেখেছেন কি? হয়ত বা না তবে আমি আমার মত করে ভেবেছি যেখানে এই মাহিম এর বয়স মাত্র চার বছর আর এ পরিবারে তার বাবা প্রধান একদিন কাজ না করলে খাওয়া দাওয়ার টানা পড়ে। তবুও পরিবারটা অনেক সুখী ছিল এতোদিন। তবে বিধাতা বুঝি কাউরে সুখে রাখে না বেশি দিন এ ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম হয়নি। হঠ্যাৎ একদিন সুখের সংসারে অসান্তি ঢুকল, কারনটা অজানায় থাক।সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়ে হঠ্যাৎ একদিন মাহিমের বাবা-মা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।৩-আজ অনেকদিন হয়ে গেল অনেক বড় হয়েছে মাহিম। বিয়ে করেনি এখনো তবে একটা বউ পেয়েছে তার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে, হাতে জলন্ত একটা সিগারেট। মেয়েটির কাছে অতীতের কাহিনি গুলো বলছে।অনেক সুখী ছিলাম আমি কিন্তু একদিন আমার বাবা-মার ভুল বোঝাবুঝি হয়, সেখান থেকে সৃষ্টি হয অনেক সমস্যা। কেউ হার মানতে রাজি হয় না, অবশেষে বাবা-মার ছাড়া-ছাড়ি হয়ে যায়। একটি বারের জন্য কেউ আমার কথা ভাবলো না, বাবা মা কে ছেড়ে চলে গেল আমাকে একবার শেষ আদরটা করে নি আমার বাবা। হয়ত মায়ায় পড়ে যাবে বলে।কিছুদিন পর মা আর চলতে না পেরে আরেকটা বিয়ে করে সেই নতুন বাবার কাছে আমি থাকতাম।নতুন বাবা যখন কাজ করে বাড়ি ফিরত তখন আমাকে আলাদা একটা ঘরে রেখে যেত, তাদের ঘরে যেতে দিত না। এভাবে দেখতে দেখতে কি ভাবে যেন হঠ্যাৎ একদিন আমি তাদের দরজার কাছে চলে গেলাম, দেখি দরজা খোলা আছে ভিতরে প্রবেশ করে তো আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। সেখানেই খুন করলাম দুইজন কে একবার ভেবেছিলাম একজন কে মারব কিন্তু না আমার মা কে যদি বাঁচিয়ে রাখি তাহলে সে আবার বিয়ে করবে, তখন আবার আমার চোখে এ রকম দৃশ্য পড়বে তাই দুইজন কে একসাথে শেষ করে দিলাম। কিন্তু একবার ভাবিনি যে এবার আমি নিজেই শেষ হয়ে যাব। সেই রাতেই ঐ বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম নিরউদ্দ্যেশহীন পথে। হঠ্যাৎ একদিন বাবার সাথে দেখা তিনাকে দেখার পর অশ্রু ধরে রাখতে পারলাম না, আমাকে দেখে বাবা ও কেঁদে দিলেন। আর বল্ল বাবা তুমি এইখানে কেন?সব ঘটনা বাবাকে খুলে বল্লাম বাবা শুধু একটু মুচকি হাঁসল আমি কিছু বুঝলাম না।বাবা: তা এখন কিছু করছো?ছেলে: না, তবে কোন কিছু করার জন্যই এসেছি বাবা। কিন্তু কোন যায়গায় মিলছে না কোন কাজ অশিক্ষিত বলে।বাবা: তাহলে এখন চল বাবা আমার সাথে মনে হচ্ছে তুই কিছু খাস নি।গেলাম বাবার সাথে গিয়ে দেখলাম শহরের সবচেয়ে কুড়ে ঘরটা বাবার। ভিতরে ঢুকলাম ঘরে শুধু ঔষুধের প্যাকেট পড়ে আছে আমার মনে হয় কোন সুস্থ মানুষকে এতো ঔষূধ খাওয়ালে সে নির্ঘাত অসুস্থ হয়ে পড়বে। বাবা কে বল্লাম, বাবা এতো ঔষূধ কি তুমি খেয়েছো?বাবা: হ্যা রে বাপ, সারাদিন শ্রম দিয়ে যখন বাড়ি ফিরি তখন একটু ক্লান্ত মনে হয় তাই ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী এগুলো খেতে হয়।ছেলে: আচ্ছা বাবা কাল থেকে তোমার কাজ টা আমি করব।বাবা: তুই কেন এখন কাজ করবি তোর তো........বাবাকে থামিয়ে দিযে আমি বল্লামছেলে: যেখানে আমি এই কথা বলব আর বাবা তুমি বলছো এখন, বাবা-মা কে তো ছেলেরা এ বয়সে সেবা করে এতোদিন তুমি ছিলে না আর আজ যখন পেয়েছি তখন কি ছাড়া যায়। দয়া করে বাবা তুমি না করনা!বাবা: কাজ টা যে খুব কঠিন আছে।ছেলে: এ কি বলছ বাবা? ছেলেকে কাজ করতে দেবে না বলে বলছ কাজটা কঠিন, দেখ তোমার ছেলের কাছে সহজ লাগবে।৪-পরদিন কাজে গেলাম আমি। আসলেই কাজটা কঠিন একজন অর্ধ মাঝ বয়সি মানুষদের এমন কাজ করা মোটেও উচিৎ নয়। ভাবলাম কত গল্প শুনেছি যে, ছেলেরা বড় বড় চাকুরীওয়ালা হয়ে বাবা-মাকে বৃদ্ধা শ্রমে রেখে চলে যায়। কিন্তু আমি তো আমার বাবা কে এখানে রাখিনি তিনি নিজ ইচ্ছাই এসেছেন, লোকদের কাছে কি উত্তর দেয় আমি ঠিক জানি না। তবে এই টুকু বলতে পারি যে আমার বাবা বলতে পারবে না লোকদের কাছে, আমার ছেলে চাকুরীজীবী আর সেই চাকুরীর জন্য আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।তবে হ্যা, আমি যদি লিখা পড়া শিখতাম, আর যদি চাকুরী করতাম তাহলে বাবাকে তো ছাড়তাম না, সঙ্গে আরো অনেক অবহেলিত বাবাদের রাখতাম। আসলে যার ধন আছে তার মন নাই।মেয়েটির চোখের জল একফোটা মাহিমের হাতে পড়ল।মাহিম: এ কি সিমা তুমি কাঁদছো কেন? তুমি কাঁদলে তো আমি আর বাঁকিটুকু বলতে পারব না।মায়া: না, না, আর কাঁদব না তুমি বল! শুনতে কষ্ট হলেও অনেক ভালো লাগছে!কাজ শেষে বাড়ি ফিরে দেখি বাবা খাবার নিয়ে বসে আছে আমার জন্য।আমি: বাবা তুমি এখনো খাওনি?বাবা: আমি কি আমার ছোটন কে ছেড়ে খেতে পারি!আমি: আচ্ছা বাবা তুমি পরে আর বিয়ে কর নি কেন? আরেকটা বিয়ে করতে পারনি?বাবা: বিয়ে..! এমনি নিজেই চলতে পারি না আবার বউ চালাব কি করে? (কথাটা শুনে বাবা-ছেলে একটু হাঁসা হাঁসি করলাম)সেই ছাড়া-ছাড়ির পর বাবা আর বিয়ে করেনি। যায় হোক অনেকদিন পর বাবা-ছেলে একসঙ্গে ভালো কাবার খেলাম। বাবা বল্ল, তুই এসে আবার আমাকে নতুন করে সুখী করে দিলি (যদিও এতোক্ষন বাবা তুমি করে কথা বলছিল আমার সাথে) কোন কাজই করতে দিস না আর। কথাটি শুনে হৃদয় কম্পিত হলো, আমি বাবাকে সুখী করেছি! এ তো এক বড় পাওয়া যা ভাগ্যবান কারো ভাগ্যে জোটে। তবে বেশি সুখ যে কারো কপালে বেশিদিন থাকে না তার প্রমান আবার পেলাম। এইভাবে কাজ করে রোজ বাড়ি ফিরি বাবার সাথে খেয়ে গল্প করি, কিন্তু প্রায় পনের দিন পর কাজ থেকে বাড়ি ফিরে দেখি বাবা মৃত্যূ যন্ত্রনায় ছটফট করছে। অনেক বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু টাকা ছাড়া ডাক্তাররা দেখতেই চাননি। আমার কাছে তখন টাকাও ছিলো না তখন বুঝেছিলাম টাকাটা কত মূল্যবান। তবে মৃত্যূর আগ পর্যান্ত সন্তানের জন্য ভবিষৎ সুখ কামনা করে গিয়েছিলেন বাবা। এই হলো আমার স্বরল মনের বাবা যার প্রতিটি স্মৃতি আমার হৃদয়ে গাঁথা।মায়া কান্না জড়িত কন্ঠে বল্ল, পৃথীবির সমস্ত বাবারা সন্তানের জন্য এই রকম হয় না কি? মৃত্যূর আগ পর্যান্ত হৃদয়ের শেষ ভালোবাসা টুকু দিয়ে যায় সন্তান কে উজাড় করে। আরেক টা খাঁটি কথা বলেছিল, তাইত সকল বাবা সন্তানদের স্পন্দনে।আমি বলেছিলাম বাবা তো আমার স্পন্দনে।তখন মায়া আমায় একটা চিমটি কেটে বলেছিল না, না বাবা আমার স্পন্দনে!
সাইমুম চৌধুরী

বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০১৭

২০ দলীয় জোটের শরিকদের সম্ভাব্য প্রার্থী যারাঃ জামায়াত ৪৩, এলডিপি ২৪

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হবে নাকি সহায়ক সরকারের অধীনে হবে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার অন্ত নেই। এর মধ্য দিয়েই নির্বাচনের পালে একটু একটু করে হাওয়া লাগছে। ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সব রাজনৈতিক দল। বিএনপি-আ.লীগ প্রার্থী বাছাইয়ে মাঠ জরিপ শুরু করে দিয়েছে। বসে নেই ছোট দলগুলোও। তারাও নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে তৈরি করছে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো বলছে, ১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বয়কট করা হয়। এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপরও জোটের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
জোট নেতারা জানান, দুটি বিষয় মাথায় রেখে প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে। জোটভুক্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে শরিকদের খুব বেশি আসনে ছাড় দেবে না বিএনপি। সেক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে যোগ্য, খুবই জনপ্রিয় এবং জেতার সম্ভবনা আছে এমন প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
তবে জোট নেতা বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে, যদি দল মনে করে নির্বাচনে অংশ নেবে তাহলে প্রার্থীর সমীকরণ হবে ভিন্ন। সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে। এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে স্বাভাবিকভাবেই প্রার্থী বেশি হবে। দুটি বিষয় মাথায় রেখেই প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে।
জোট নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপির প্রার্থী অনেক। কিন্তু জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন হলে শরিকদের আসন ছেড়ে দিতেই হবে। সে ক্ষেত্রে মাঠে প্রার্থীর অবস্থান কেমন সেটা বিবেচনা করেই দরকষাকষি হবে। সেজন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদেরকে নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ বাড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, জোটের কয়েকটি দল রয়েছে যেগুলো ‘এক নেতা এক দল’ নামে পরিচিত। আবার কয়েকটি দলের নিবন্ধন নেই। তারা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আসন পাওয়ার ক্ষেত্রে নিবন্ধনকৃত দলগুলো এগিয়ে থাকবে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
জামায়াত ইসলামী (নিবন্ধন বাতিল)
জোটের অন্যতম প্রধান দল জামায়াত ইসলামী। এই দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে।
জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, এবার তাদের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন। ৪৩টি আসনে তাদের প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তারা হলেন- এম এ হাকিম (ঠাকুরগাঁও-২), মোহাম্মদ হানিফ (দিনাজপুর-১), আনোয়ারুল ইসলাম (দিনাজপুর-৬), মনিরুজ্জামান মন্টু (নীলফামারী-২), আজিজুল ইসলাম (নীলফামারী-৩), হাবিবুর রহমান (লালমনিরহাট-১), শাহ হাফিজুর রহমান (রংপুর-৫), নূর আলম মুকুল (কুড়িগ্রাম-৪), আবদুলআজিজ (গাইবান্ধা-১), নজরুল ইসলাম (গাইবান্ধা-৩), আবদুর রহিম সরকার (গাইবান্ধা-৪), নুরুল ইসলাম বুলবুল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), মো. লতিফুর রহমান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), আতাউর রহমান (রাজশাহী-৩), রফিকুল ইসলাম খান (সিরাজগঞ্জ-৪), আলী আলম (সিরাজগঞ্জ-৫), মতিউর রহমান নিজামীর পরিবারের কোনো সদস্য (পাবনা-১), মাওলানা আবদুস সোবহান (পাবনা-৫), ছমিরউদ্দিন (মেহেরপুর-১), মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (চুয়াডাঙ্গা-২), মতিয়ার রহমান (ঝিনাইদহ-৩), আজিজুর রহমান (যশোর-১), আবু সাইদ মুহাম্মদ সাদাত হোসাইন (যশোর-২), অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ (বাগেরহাট-৩), শহীদুল ইসলাম (বাগেরহাট-৪), মিয়া গোলাম পরওয়ার (খুলনা-৫), শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুছ (খুলনা-৬), ইজ্জতউল্লাহ (সাতক্ষীরা-১), আবদুল খালেক মণ্ডল (সাতক্ষীরা-২), মুফতি রবিউল বাশার (সাতক্ষীরা-৩), গাজী নজরুল ইসলাম (সাতক্ষীরা-৪), দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দুই ছেলে (পিরোজপুর-১ ও ২), শফিকুল ইসলাম মাসুদ (পটুয়াখালী-২), মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ছেলে (শেরপুর-১), অধ্যাপক জসিমউদ্দিন (ময়মনসিংহ-৬), ফরীদউদ্দিন (সিলেট-৫), মাওলানা হাবিবুর রহমান (সিলেট-৬), ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের (কুমিল্লা-১১), শামসুল ইসলাম (চট্টগ্রাম-১৪), হামিদুর রহমান আযাদ (কক্সবাজার-২) ও শাহজালাল চৌধুরী (কক্সবাজার-৪)। এ আসনগুলোর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, সিরাজগঞ্জ-৫, ময়মনসিংহ-৬, সাতক্ষীরা-১, পটুয়াখালী-২, কক্সবাজার-৪ এই ছয়টি আসনে জামায়াত নতুন করে লড়তে যাচ্ছে।

গত নির্বাচনে এ আসনগুলোতে জামায়াতের প্রার্থী ছিল না। তবে ময়মনসিংহ-৬ আসনে ২০০১ সালে জামায়াত প্রার্থী জোটের মনোনয়ন পেয়েও পরাজিত হন। সিরাজগঞ্জ-৫ ও কক্সবাজার-৪ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান। এ কারণেই আসন দুটিতে ছাড় দিতে নারাজ তারা।
এলডিপি (নিবন্ধিত)
এলডিপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম নিউজবাংলাদেশকে জানান, আমাদের দলের ২ ডজন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেণ- কর্নেল অলি (চট্টগ্রাম-১৩), ড. রেদোয়ান (কুমিল্লা-৭), শাহাদাৎ হোসেন সেলিম (লক্ষ্মীপুর-১), আব্দুল করিম আব্বাসী (নেত্রকোনা-১), আবু ইউসুফ মোহাম্মদ খলিলুর রহমান (জয়পুর হাট-২), আব্দুল গনি (মেহেরপুর-২), প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (চাঁদপুর-৩), নুরুল আলম (চট্টগ্রাম-৭), এম ইয়াকুব আলি (চট্টগ্রাম-১১), অ্যাড কফিল উদ্দিন চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৫)।
তিনি জানান, এরা প্রত্যেকেই একাধিকবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হয়েছেন। এছাড়া কিছু সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছে।
বিজেপি (নিবন্ধিত)
বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যারিষ্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ (ভোলা-১), ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদ (ঢাকা-৫ ডেমরা-যাত্রাবাড়ী)।
আব্দুল মতিন সাউদ জানান, এছাড়া খুলনা, সাতক্ষীরা, রাজশাহী ও নারায়ণগঞ্জে আমাদের যোগ্য প্রার্থী রয়েছে।
খেলাফত মজলিশ (নিবন্ধিত)
খেলাফত মজলিশের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মুহম্মদ ইসহাকের আসন (পাবনা-১), মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাদেরের আসন (হবিগঞ্জ-৪)।
মুহাম্মদ ইসহাক নিউজবাংলাদেশকে জানিয়েছেন, সারাদেশের যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঈদের পরে তা চূড়ান্ত করা হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (নিবন্ধিত)
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি মুফতি মুহম্মদ ওয়াক্কাস (যশোর-৫) থেকে ২০০১ সালে জোটের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন, এবারো তিনি সেই আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এছাড়া শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মহীউদ্দিন ইকরাম, মুফতি রেজাউল করিম, আব্দুর রব ইউসুফি দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টি (জাফর)
এই দলের সম্ভাব্য যোগ্য প্রার্থীরা হচ্ছেন, ড. টিআইএম ফজলে রাব্বি (গাইবান্ধা-৩), মোস্তফা জামাল হায়দার (পিরোজপুর-১), আহসান হাবিব লিংকন (কুষ্টিয়া-২)।
এছাড়া নবাব আলী আব্বাস খান (মৌলভীবাজার কুলাউড়া), সেলিম মাস্টার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), মজিবুর রহমান (মুন্সিগঞ্জ), নাসের চৌধুরী (চট্টগ্রাম), গোলাম মোস্তাফা বাটুল (রংপুর), সাইদুর রহমান মানিক (ময়মনসিংহ), জাফরউল্লাহ খান চৌধুরী (কুষ্টিয়া-৩), এস এম এম আলম (চানপুর), খালেকুজ্জামান চৌধুরী (ঢাকা-ডেমরা), শফিউদ্দিন ভুইয়া (সোনার গাঁ নারায়ণগঞ্জ), অ্যাডভোকেট মাওলানা রুহুল আমিন পিরোজপুরে প্রার্থী হতে কাজ করে যাচ্ছেন। এদের অনেকেই সাবেক এমপি।
আহসান হাবিব লিংকন জানিয়েছেন, আমাদের দলে সাবেক এমপি রয়েছেন ১৭ জন। তারা সবাই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী।
কল্যাণ পার্টি (নিবন্ধিত)
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক (চট্টগ্রাম-৪), মহাসচিব এম.এম. আমিনুর রহমান (পাবনা-১), আলহাজ্ব কাহির মাহমুদ এফ সি এ (সিলেট-১), অ্যাড. আজাদ মাহবুব (পিরোজপুর সদর), মো. ইলিয়াস (চট্টগ্রাম-৮), ইসমাইল ফারুক চৌধুরী (কক্সবাজার সদর), প্রফেসর ড. ইকবাল হাসান (নারায়ণগঞ্জ-২), আলী হোসাইন ফরায়েজি কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম।
কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান নিউজবংলাদেশকে বলেন, “আমরা ৭টি আসনে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। ৫টি আসনে আমাদের শক্ত প্রার্থী রয়েছে।”
বাংলাদেশ ন্যাপ (নিবন্ধিত)
বাংলাদেশ ন্যাপের সম্ভাব্য প্রার্থী চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি (নীলফামারী-১), মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া (নরসিংদী-৩), আলহাজ্ব গোলাম সারওয়ার খান (মৌলভীবাজার-২), সাদ্দাম হোসেন (কুমিল্লা-১০), সৈয়দ শাহজাহান সাজু (কুমিল্লা-৭), ব্যারিস্টার মশিউর রহমান গানি (রংপুর-৩), মো. শহীদুননবী ডাবলু (পিরোজপুর-১), মো. কামাল ভুইয়া (নারায়ণগঞ্জ-৪), মো. নুরুল আমান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১), মো. তারিকুল ইসলাম (পাবনা-২)।
গোলাম মোস্তাফা ভুইয়া জানান, আমাদের প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
জাগপা (নিবন্ধিত)
জাগপার চেয়ারম্যান শফিউল আলম প্রধান কিছুদিন আগে মারা গেছেন। তিনি (দিনাজপুর-২) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতেন। সেই আসনে এবার তার সহধর্মিনী অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়া দলের মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান বগুড়া-১ থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এনপিপি
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ (নড়াইল-২), মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা (ঢাকা-১৩), এম ওয়াহিদুর রহমান কুমিল্লা-১০ থেকে নির্বাচন করতে চান।
এনডিপি
খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা (পাবনা-২), মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা খুলনা-৩ আসনে নির্বাচন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএলের এএইচএম কামরুজ্জামান খান কিশোরগঞ্জ ০৫, অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী চট্টগ্রাম-১ আসনে নির্বাচন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

ইসলামী ঐক্যজোট (অ-নিবন্ধিত):
ইসলামী ঐক্যজোটের একটি অংশ মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী ও মুফতি ফয়জুল্লাহর নেতৃত্বে মূল অংশ জোট থেকে বের হয়ে গেছে। বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আবদুর রাকিব ও মহাসচিব মাওলানা আবদুল করিম নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান।
আব্দুল করিম জানিয়েছেন সারাদেশে ১০টি আসনে তাদের যোগ্য প্রার্থী রয়েছে।
ডিএল
ডেমোক্রেটিক লীগ-ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি ময়মনসিংহ-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী। সাম্যবাদী দলের কমরেড সাঈদ নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
লেবার পার্টি (অনিবন্ধিত)
দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হচ্ছেন- মোস্তাফিজুর রহমান ইরান (পিরোজপুর-২), সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ উদ্দিন (কুমিল্লা-৫) ও মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি (কুমিল্লা-১০)।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন জোট নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।”
এছাড়া জোটভুক্ত দল পিপলস্ লীগ, ইসলামিক পার্টি, ন্যাপ ভাসানী ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচন করতে চায় বলে জানা গেছে।
নিউজবাংলাদেশ

হাওরবাসীর কন্ঠে কেবলই বাঁচার আকুতি


সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের ফসলহারা প্রত্যন্ত গ্রাম গুলোতে ঈদের আনন্দ নেই। পরপর কয়েক বছর শিলাবৃষ্টি, অতিবর্ষন আর গেল চৈত্র মাসের বন্যার কারনে বছরে একটি মাত্র বোরো ফসল ঘরে তুলতে না পারার ফলে ওই অঞ্চলের মানুষের ঈদরে আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। পবিত্র রোজায় চরম কষ্টে দিনযাপন করে কোন রকম সংসার চালাতে তাদের কন্ঠে কেবলই শুধু বাঁচার আকুতি। সারা বছর পরিশ্রম করে গোলাঘরে ধান ভর্তি করে প্রতিবছর যারা ঈদের আনন্দে মেতে ওঠতেন, চলতি বছর ফসল ডুবির কারণে তাদের ঘরে অন্যান্য বছরের মতো এবার ঈদের আনন্দ নেই। অনেকেই ছেলে মেয়ে ও পরিবার পরিজনকে নতুন জামা কাপড় কিনে দিতে পারছেন না।

জামালগঞ্জের বৃহত্তর ফসলী এলাকা পাকনা হাওরের ফেনারবাঁক গ্রামের বাসিন্দা তিন সন্তানের জননী স্বাধীনা বেগম বলেন, বানে (বন্যায়) আমরার ঈদের খুশি নিছেগা, ধনীরাই কোন ধান পায়নাই আমরার গরীবেরতো কিচ্ছুই নাই। ঘরে কোন খাওন নাই, সরকারী কোন সাহায্যেও পাইনাই আমার ছোট-ছোট অবুঝ দুধের বাচ্চা কাচ্চা নিয়া ঊনা-উফাসে চলতাছি। ঈদ কি জিনিষ আমরার মনে নাই, জীবন বাঁনোই দায়। রোপাবালী গ্রামের স্মামী হারা ৫৫ উর্দ্ধ বয়সের রংমালা বেগম বড় আক্ষেপ করে বলেন, তার স্মামী মারা যাবার পর চরম দুর্দীনে কাটছে তার সংসার জীবন। আয় রোজগারের কোন মানুষ নেই, অন্যের ঘরে কাজ করে জীবন চলছে, সরকারী কোন সাহায্য কখনো তিনি পাননি। অভাবের কারণে তার দুই কন্যা সন্তান মেয়ের বাড়িতে রেখেছেন, ঈদের আনন্দ বলতে তাঁর কাছে কিছুই নাই বলেই চোখ মুচতে লাগলেন। উদয়পুর গ্রামের রেজুয়ান আহমদ বলেন, রোজাই রাখতাছি খুব কষ্টে আর এই বছর আমরার ঈদের খুশি নাই। আমরার ফসলতো গেছেই জৈষ্ঠ্য মাইয়া বানে গেরামের ৪৫ টা গরু মইরা আমরার এখন গোয়াল শূন্য হইছি।

সরকারে যে সাহায্য দিছে আমরার গেরামে মাত্র কয়েকজনে পাইলেও বেশীর ভাগ মানুষ এখনো পায়নি। কত কষ্টে আমরা আছি ঈদ নামের একটা দিন আছে, হাসি খুশি করমু মুখে হাসিও আয় না। ঘরে গিয়রা ছোট ভাই বোনদের মুখের দিকে চাইলে ছোকে পানি আয়। কেউরে তো নতুন জামা কাপড় কিনে দিতে পারছিনা। কেউর ঘরে ধান-চাল নাই আমরার গেরামে ঈদের আনন্দ নাই। সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের প্রায় ২০ লাখ সুবিধা বঞ্চিত-নিপীড়িত জনগোষ্টির কান্না আজো কেউ শোনেনা। সীমাহীন বৈষম্য আর উন্নয়ন বঞ্চিত এ অঞ্চলের মানুষগুলো ডুবে আছে অন্ধকারে। চরম অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার এ অঞ্চলের মানুষের প্রাকৃতিক দুর্যোগই হচ্ছে জীবন সঙ্গী। এর মধ্যে পাল্লা দিয়ে মোকাবেলা করতে হচ্ছে জোতদার ইজারাদারদের শাসন।

রক্ত চক্ষু আর অন্যায় ভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে নিরিহ মানুষজন। এ ভাবেই সংকটের পর সংকটে চিরকাল দিনাতিপাত করছেন তারা। বছরের একটি সময় এ অঞ্চলের মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। তাদের হাতে কোন কাজ থাকে না, ফলে দেখা দেয় চরম খাদ্য সংকট। উন্নয়ন, শিক্ষা আর প্রযুক্তির আলো থেকে আজো তারা অনেক দূরে। বিশাল হাওরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষেরা এ ভাবেই যুগের পর যুগ মুখ থুবড়ে পড়ে আছেন ক্ষুধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক আর অবহেলায়। ফসলহারা হাওরবাসীর কন্ঠে কেবলই শুধু বাঁচার আকুতি।

আলহাজ্ব জামাল উদ্দিনের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রবীণ রুকন ফরিদপুর শহরের হাবেলী গোপালপুর টেপাখোলা নিবাসী আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন ৮৫ বছর বয়সে গত ১৮ জুন সকাল ৮টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ......... রাজিউন)। তিনি ২ পুত্র ও ২ কন্যাসহ বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে গিয়েছেন। গতকাল ১৮ জুন বাদ আসর ফরিদপুর সরকারী ইয়াসিন কলেজ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে মরহুমকে ফরিদপুরের কমলাপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

শোকবাণী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রবীণ রুকন ফরিদপুর শহরের হাবেলী গোপালপুর টেপাখোলা নিবাসী আলহাজ্ব জামাল উদ্দিনের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জনাব মকবুল আহমাদ আজ ১৯ জুন ২০১৭ এক শোকবাণী প্রদান করেছেন। 

শোকবাণীতে তিনি মরহুমের জীবনের সকল নেক আমল কবুল করে তাকে জান্নাতবাসী করার জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের কাছে দোয়া করেন এবং মরহুমের শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের এ শোক সংবরণ করার তাওফিক দান করুন। 

অন্যান্য নেতৃবৃন্দের শোকবাণী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রবীণ রুকন ফরিদপুর শহরের হাবেলী গোপালপুর টেপাখোলা নিবাসী আলহাজ্ব জামাল উদ্দিনের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল, ফরিদপুর অঞ্চলের পরিচালক ও সাবেক এমপি জনাব হামিদুর রহমান আযাদ, ফরিদপুর অঞ্চলের টীম সদস্য জনাব মোঃ দেলোয়ার হোসাইন ও জনাব শামসুল ইসলাম আল বরাটি এবং ফরিদ জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবদুত তওয়াব আজ ১৯ জুন ২০১৭ এক যুক্ত শোকবাণী প্রদান করেছেন। 

শোকবাণীতে তারা মরহুমের জীবনের নেক আমলসমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতবাসী করার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করেন এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের এ শোকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফীক দান করুন।

মেয়ের নিষ্পাপ প্রশ্নে হুঁশ ফিরল ঘুষখোর বাবার!


ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ুয়া ১২ বছর বয়সের মেয়ের প্রশ্নে হুঁশ ফিরে এসেছে এক ঘুষখোর বাবার। তিনি এখন এ পথ থেকে সরে এসেছেন বলেও জানিয়েছেন।

জানা গেছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাবা সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের কাছে একটি চিঠি লিখে তাতে তার ১২ বছরের মেয়ের করা একটি প্রশ্ন তুলে ধরেন। চিঠিতে ওই বাবা লেখেন, ‘আমার ১২ বছরের মেয়ে তনিমা একটি নাম করা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে। আমার সঙ্গে কথা বলতে খুব পছন্দ করে সে।

তার নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। ফলে আমি যতক্ষণ বাসায় থাকি ওকে নিয়েই ব্যস্ত থাকি। সে আমার নয়নের মনি। ওকে নিয়ে মাঝে মাঝে বাইরে বেড়াতে যাই। নামকরা রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া-দাওয়া করি।

একবার তার মা এবং তাকে নিয়ে বিদেশেও ঘুরে আসি। একদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরলে হঠাৎ তনিমা প্রশ্ন করে বসে, বাবা তুমি কি ঘুষ খাও?’

নিজের মেয়ের কাছে এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম। কত পরীক্ষা দিয়েছি, কত প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি, এমন প্রশ্ন আমার সামনে আসেনি। আমার পরীক্ষার প্রশ্নের তুলনায় আমার মেয়ের প্রশ্নটি সহজ হলেও এর উত্তর অনেক কঠিন।

এ প্রশ্নের উত্তর কি দেব ভাবছি। বললাম, তুমি ছোট মানুষ। এ প্রশ্ন করছ কেন? ঘুষের তুমি কি বোঝ? এরই মধ্যে আমার স্ত্রী এসে হাজির।

তনিমাকে বললাম, তোমার প্রশ্নের উত্তর দেবে তোমার মা। তনিমা বলছে, মা কেন উত্তর দেবে। আমি বললাম, ঘুষ খাব কেন, এটা কি খাওয়ার জিনিস মেয়ে বলল, উত্তর হল না বাবা। তুমি ঘুষ খাও কি না সেটা জানতে চেয়েছি। সোজা প্রশ্ন।

এবার তনিমা প্রশ্ন করে বসে, তোমার বেতন কত বাবা? এই যে তুমি গাড়ি কিনছ, ফ্ল্যাট কিনছ, টাকা কোথায় পেলে? মায়ের এত গহনা কোথায় পেলে? লোকজন বাসায় মিষ্টি আনে, ফলমূল আনে, কি সব প্যাকেট আনে কেন এসব আনে বাবা?

চিঠিতে ওই বাবা বলেন, মেয়ের এক প্রশ্নে আমি আজ জেগে উঠেছি। আমার মধ্যে অজানা আশঙ্কা ভর করেছে। আমি খুব উদ্বিগ্ন। যার জন্য এতকিছু করছি, সেই আজ প্রশ্ন তুলছে। বলছে চোর।

সত্যিই আজ আমার নিজেকে চোর মনে হয়। যে পথে গিয়েছিলাম, সে পথ থেকে আমি নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করলাম। তনিমা আমার চোখ খুলে দিল। এখন আমি অফিস শেষ করে মেয়েটার হাত ধরে বিকালে হাঁটি। নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করছি। দুদকের গণসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য গণমাধ্যমকে জানান, একজন ঘুষখোর বাবা দুদক চেয়ারম্যানের কাছে নাম ছাড়া চিঠিটি দিয়েছেন। তবে তাতে একটি টেলিফোন নম্বর দিয়েছেন। আমরা ওই ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করব। তবে তাকে নিয়ে আমরা কোনো ধরনের অনুসন্ধানে যাব না। কারণ, ওই বাবা নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন।
https://goo.gl/ydxLwm

সদরঘাটে হতদরিদ্র ফুটপাতের হকারের কাছ থেকেও পুলিশের চাঁদাবাজি ছবি তোলার সময় সাংবাদিককে পিটুনী,


রাজধানীতে পুলিশের প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির দৃশ্য আজ নতুন কিছু নয়।প্রায় প্রতি বছর রমজান মাস এলেই যেন পুলিশের চাঁদাবাজি বেড়ে যায়।
এমনি এক দৃশ্য দেখা যায় রাজধানীর সদরঘাট ফাঁড়ির কনস্টেবল জাকিরের.২০শে জুন মঙ্গলবার রাতে দেখা যায় ওয়াইজ ঘাট এলাকায় ফুটপাতের বিভিন্ন দোকান ও পিকাআপ ভ্যান থেকে চাঁদা আদায়ের দৃশ্য। 

ফুটপাতের একাধিক হকারকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের সময় এক বৃদ্ধের কাছ থেকে টাকা আদায় কালে উপরোক্ত ছবি ধারণ করা হয়।এছাড়াও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের সামনে রাখা(ঢাকা মেট্রো-ন-১৮-৫৪২৫ নম্বর পিকআপ)ভ্যান থেকে ১০০ টাকা দাবি করে ৪০ টাকা (পিকআপ ভ্যানের লোকের স্বীকারোক্তি অনু্যায়ী)এবং অন্যন্য গাড়ি থেকেও নানা পরিমান অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেন এলাকার বিভিন্ন ব্যাক্তি।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানের সুবাধার্থে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ শেষে এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের স্বার্থে প্রতিবেদক কনস্টেবল জাকিরের প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির বিষয় সদরঘাট ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃদেলোয়ার হোসেনের সাথে আলাপ করতে গেলে দেলোয়ার হোসেনের অনুপস্থিতিতে প্রতিবেদককে আটকে রেখে ক্যামেরা ভাংচুর এর চেষ্টাসহ পাল্টা চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া ও পিটিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে হামলা করতে তেড়ে আসে কনস্টেবল জাকির।ইতোপূর্বে প্রাইভেট টিভি চ্যানেলে সময় টিভিতে সদরঘাটের এরকম পুলিশের চাঁদাবাজির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে,কিছুদিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও ফের শুরু হয় এমন চাঁদাবাজি।

এসব বিষয় সম্পর্কে লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ‘মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান’ কে জানানো হলে তিনি যথাযথভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সূত্র Tareq Hossain

বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭

সন্ত্রাসীদের হামলা এবং গাড়ী ভাংচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর গাড়ী বহরের উপর হামলার ঘটনায় আ.লীগের ফ্যাসিবাদী চরিত্রই অত্যন্ত নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে

বাংলাদেশ বার্তাঃ  বিএনপি’র মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরির্দশনে যাওয়ার পথে রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালীতে পৌঁছলে আজ ১৮ জুন সকাল ১০টায় তাদের গাড়ী বহরের উপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলা এবং গাড়ী ভাংচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ ১৮ জুন প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার পথে রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালীতে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর গাড়ী বহরের উপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রই অত্যন্ত নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে।
জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জনাব আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর উপর নগ্ন হামলা কার্যত: গণতন্ত্র এবং মানুষের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর চরম আঘাত। এ থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, সরকার পাহাড় ধসে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রকৃত অবস্থা দেশবাসীকে জানতে দিতে চায় না। বিরোধী দলীয় কোন ব্যক্তি পাহাড় ধসে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করুক তা সরকার আদৌ পছন্দ করে না। সরকার নিজেও দুর্গত লোকদের সাহায্য করছে না এবং অন্যদেরও সাহায্য করতে দিতে চায় না।
বিরোধী দলের উপর সরকারের নির্যাতন, নিপীড়ন ও দমনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০১৭

“কারাগারের ঈদ” ---ফখরুল ইসলাম খান।


বাংলাদেশ বার্তাঃ   ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। নতুন জামা কাপড় পরে এ দিনে সবাই থাকে হাসি খুশি। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সবাই। ছোট বড় সবাই সাত সকালে গোসল করে নতুন কাপড় পরিধান করে। মনের মত করে সেজে গুজে আতর গোলাব মেখে ঈদের মাঠে যায়। আনন্দ, হাসি, গান, তকবীর ধ্বনী ওদের সবার মনে ধরা দেয়। এই যেমন এক মাস রোজা রাখার পর আসে মুসলিম জাতির সবচেয়ে আনন্দের দিন “ঈদ উল ফিতর“। 
২০১৭ সালের এই দিনটি সমগ্র মুসলিম বিশ্বে একই রকম আনন্দ বয়ে আনলেও মুসলিম দুনিয়ার সব দেশে, সব ঘরে দিনটি একই ভাবে উদযাপিত হবে না। যেমন- বার্মা, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, চীন এবং আমাদের প্রিয় জন্মভুমি বাংলাদেশ। এইতো মাত্র কয়েক দিন আগে সারা দেশে কয়েক হাজার মানুষকে সাড়াসি অভিযানে গ্রেফতার হয়ে জেলে যেতে হয়েছে। আল্লাহ ভালো জানেন কতজনের ভাগ্যে মুক্ত বাতাসে ঈদ উদ্যাপন করা সম্ভব হবে। 
আল্লাহর নির্দেশে দীর্ঘ এক মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আমরা যে তাকওয়া ভিত্তিক চরিত্র গঠনের অনুশীলন করে থাকি, তার সমাপনী উৎসব ঈদুল ফিতর নামে অভিহিত। অতএব এর আনন্দ প্রকাশ করা কতটুকু সম্ভব হবে আল্লাহ ভালো জানেন? দেশের অস্থির এ পরিবেশ বলতে পারছে না দেশের কতভাগ মানুষ সঠিকভাবে এ ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারবে? দেশের মানুষ আজ স্বাধীনভাবে চলতে পারছে না, রাতে ঠিকমত সেহরী খাওয়াটা সম্ভব হচ্ছে না? এমবস্থায় আমরা আশা করবো এ অবস্থার উন্নতি ঘঠুক, দেশের মানুষ যেন শান্তিতে ঈদের সঠিক আনন্দ উপভোগ করতে পারে এই পরিবেশটা বিরাজ করুক।

বর্তমান সরকার জণগনকে বিভ্রান্ত করার জন্য সম্প্রতি জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে নানা ভাবে প্রচারনা চালানো হচ্ছে। জামায়াত রাজনৈতিক ময়দানে পরীক্ষিত একটি ইসলামী আদর্শের পতাকাবাহী সংগঠন। কাজেই জামায়াতের ব্যাপারে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী একটি শান্তিকামী ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। নিয়মাতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন, পরিচালনা বা সরকার পরিবর্তনের নীতিতে বিশ্বাসী। জামায়াতে ইসলামী কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বা অস্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। শক্তি বলে কোন আদর্শ চাপিয়ে দেয়া জামায়াত বিশ্বাস করে না। জামায়াত মনে করে জণগনের ইচ্ছা ও আকাংখা অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হবে। জামায়াতে ইসলামী কোন ধরনের গোপন তৎপরতায় বিশ্বাসী নয় এবং গোপন কর্মকান্ডে অভ্যস্থ নয়। জামায়াত বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধিত ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন। জামায়াত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে সরকারের বিভিন্ন উস্কানীমূলক আচরণে অত্যন্ত ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। শুধু রাজনৈতিক ভাবে জামায়াতকে ধ্বংস এবং নেতাদের সরকার পরিকল্পিতভাবে তথাকথিত মানবতানিরোধী অপরাধে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে হত্যা করা হচ্ছে এবং মিথ্যা ও হাস্যকর মামলায় গ্রেফতার করছে। কিন্তু জুলুম-নির্যাতন করে ইসলামী আন্দোলনকে থামানো যাবে না। ইসলামী আন্দোলনের একজন কর্মী হওয়ার কারণে আমাকেও বার বার কারাবারণ করতে হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি যত বাঁধা আসবে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা আরো বেশী উজ্জীবিত হবে। 
১ম দফা কারাবরণ :-
১২.১২.১২ ঈসায়ী তারিখটি। লাকি বারো, বারো, বারো। সহস্র বছরে মেলে এমন একটি দিন। ধর্মীয় দিক থেকে আমার কাছে এ দিবসের মুল্যে না থাকলেও জীবন ডায়রীতে তা ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে দিবসটি। ১৯৮২ সাল থেকে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু। ছাত্র আন্দোলন থেকে বৃহত্তর ইসলামী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার পর থেকে ৯০ দশকে ৪ ঘন্টার জন্য বন্ধি ছিলাম বিশ্বনাথ থানা হাজতে। অবশ্য পরে সমঝোতার মাধ্যমে ছাড়া পেয়েছি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জেলে যাবার সুযোগ না হলেও কোন এক রাজনৈতিক ব্যক্তির ব্যক্তিগত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার রোষানলে পড়ে এবং তারই নিদের্শনার আলোকে এ তারিখে প্রথমদফা গ্রেফতার হয়ে জেলে যেত হল। তাই এ দিবসটি অন্যদের মতো আমার জীবন ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। বিশ্বের আনাচে-কানাচে সব শ্রেনীর মানুষের কাছেই এই নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা আর উদযাপনের কমতি ছিল না। এক কথায় নানা আয়োজনে ও উদযাপনের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল যেন এই দিনটি নিয়ে। পড়বেই না কেন? আবার যে শত বছর পরে বিশ্ববাসী দেখবে এই দিনটি পাবে এই বিশেষ দিবসটি উদাযপনের উপলক্ষ। তখন আমরা থাকব না। থাকবে না আমাদের প্রজন্ম। এদিক থেকে আমি ও আমার প্রজন্মটি অত্যন্ত ভাগ্যবান বলা চলে। এরপর কত কত প্রজন্ম আসবে যাবে। তারা পাবে না এই বিশেষ দিবসটির দেখা। মোটামুটি কয়েকটি প্রজন্মের পরের কোন এক ভাগ্যবান প্রজন্ম আবার দেখা পাবে এই বিরল দিবসটির। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান জীবিত প্রজন্মটি নিঃসন্দেহে লাকি। আর লাকি বলেই তো বিশ্বব্যাপী মানুষের এত উদ্দিপনা, এত আয়োজন। এই দিনটিতে একটি মানুষের জীবনে যা ঘটেছে, যা যা করছে মানুষটি তাই থাকবে তার স্মৃতির পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখিত।
২য় দফা কারাবরণ :-
বিশ্বনাথের মাটি ও মানুষের হৃদ্রয়ের স্পন্দন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাবার আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে বিএনপির পাঁচটি মামলা খেতে হয়েছে। বিএনপির দলীয় কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহিত হয়ে বিএনপির ও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীসহ আমরা হত্যা মামলার আসামী হয়ে জেল কাটতে হয়েছে। ০৯-০৩-১৪ তারিখ আদালতে আত্নসমর্পণ করে জামিন না পেয়ে ২য় দফায় জেলে যেতে হলো। ১১ দিন পর আদালতের মাধ্যমে জামিনে ছাড়া পেলাম।
৩য় দফা কারাবরণ :-
২৭শে জানুয়ারী’১৫ ঈসায়ী তারিখ সকাল সাড়ে নয় টার দিকে আমার গ্রামের মসজিদে তাফসির মাহফিলের আয়োজন করা কালিন সময়ে মসজিদ বসে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যস্ত, এমন সময় বিশ্বনাথ থেকে এসে ধরে নিয়ে গেল আমার খুবই বন্ধুজন তৎকালিন ওসি সাহেবের পুলিশ বাহিনী। একটি মিথ্যে গাড়ী জ্বালানো মামলায় তিনদিন কম ছয় মাস পরে হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিন নিয়ে বেরুতে হলো। অবশ্যই দুইবার থানা পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে থানা নিয়ে গেলেও আমার সাথে অশোভন কোন আচরণ না করাতে বিশ্বনাথ থানা কর্তৃপক্ষে সাধুবাদ জানাই।
জেল জীবন :-
বিশ্বনাথ থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর এক করুণ অভিঞ্জতা শুরু হলো আমার জীবনে। মনোকষ্ট ও দৈহিক কষ্ট সাথে সাথে রাজনৈকিত অস্থিরতা ও স্নেহবান্ধব পরিবার-পরিজনকে ফেলে আসার মানসিক কষ্ট সব মিলিয়ে আমার জীবন হয়ে ওঠে দূর্বিসহ। বাড়ীতে, ব্যবস্যা প্রতিষ্টানে, রাস্তায় ও চলা ফেরায় পুলিশের হামলা। নিরাপদ আশ্রয় কোথাও নেই। অতএব জেলখানাকেই আপাতত: নিরাপদ ও জীবন সাথী করে নিয়ে এবং নিজেকে আল্লাহ’র আশ্রয়ে সমর্পণ করে হাজতি ও কয়েদি সাথীদের মধ্যে দ্বীনের দাওয়াতে মনোনিবেশ করলাম। একে একে ছয়টি মাস চলে গেল অনুভব করতে পারি নি। আমি যে ওর্য়াডে (নিউ জেল-৩) থাকতাম তা ছিল সারা জেলের মধ্যে মর্যাদাশালী একটি ওর্য়াড। তার কারণ হলো এ ওয়ার্ডে আমার পরিবারভুক্ত সদস্য ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সিলেটে যিনি ক্লীন ইমেজদারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলে সর্বমহলে পরিচিত, এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর ২০দলীয় জোটের সদস্য সচিব হাফিজ আব্দুল হাই হারুন, নগর জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা সোহেল আহমদ, সিলেট (দক্ষিন) জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী, সাবেক দক্ষিন সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান, সিলেট (দক্ষিন) জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা লোকমান আহমদ, মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী শাহজাহান আলী, শাহ জালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা সিলেট এর শিক্ষক মুফতি মাওলানা আলী হায়দার, মাওলানা মুশাহিদ আলী, শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন দক্ষিন সুরমা উপজেলা সভাপতি সোহেল রানা, বিশ্বনাথ উপজেলা সভাপতি জাহেদুর রহমান, মহানগর শিবিরনেতা হাফিজ আব্দুল আজিজ, সাদিকুর রহমান সুমন, শামসুর রহমান জাবাল, আব্দুস সামাদ রনি, মাহবুব, জাবেদ মোল্লা, হাফিজ সুফিয়ানসহ প্রায় অর্ধশত জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী। কুরআন তেলাওয়াত, ইসলামী সাহিত্য অধ্যায়ণ, হাজতি ও কয়েদি সাথীদের মধ্যে দ্বীনের দাওয়াতের মাধ্যমে চলতে লাগলো দিনগুলি।
মুক্তি হয়েও হচ্ছে না!
জামিন হয়ে যাবে, হয়ে যাচ্ছে এই অবস্থায় চলে আসলো রমযান মাস। ঈদের প্রায় সপ্তাহ খানেক পূর্বে দেখা করার জন্য জেল গেটে (স্ত্রী, তিন মেয়ে একমাত্র ছেলে ও ভাতিজাসহ পুরো পরিবার। কি এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ ও মান অভিমানের দৃশ্য। আমি কৌশলাদি জেনে সবাইকে স্বাভাবিক রাখার জন্য ঈদের মার্কেটিং করে যাবার জন্য সবাইকে উদ্যেশ্যে করে বলার পর এক পর্যায়ে ২য় মেয়ের (তাসনিমা ইসলাম খান আনিসা) অভিমানী প্রশ্ন ওহ আব্বা! ঈদের আগে আপনি বের হয়ে আসবেন না? আমি সংযত হয়ে খুশির ভান করে বললাম আমার উকিল চেষ্টা করছেন ঢাকায় ছাড়ার জন্য বিচারকতো ছাড়ছে না। পাল্টা জবাব আমরার এমপিদাদাও (জাতীয় জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট নুরুল ইসলাম খান তিনি আমার চাচা এজন্য এমপিদাদা) তো উকিল, তিনিকে কি বলবো আপনাকে ছাড়ানোর জন্য? আমি অসহায়ের মতো জবাব দিলাম তিনি চেষ্টা করেও পারছেন না। তখন হৃদয়নিংড়ানো আবেগ উজাড় করে আমার মেয়েটি বললো আপনি ঈদের আগে আসবেন না? তাহলে আমরা মার্কেটেও যাবো না? ঈদের কাপড়ও কিনবো না? এবার ঈদও করবো না। এ দৃশ্য দেখে মাওলানা লোকমান আহমদসহ অনেক পুলিশও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেন নি! আমিতো এর আগে দুইবারে ২৯+১১ দিন এবং এবার সাড়ে পাঁচ মাস জেলে কাটালাম এতো কষ্ট পাইনি। এ ঘটনার পর থেকে প্রতিদিন আমার মেয়ের আবেগ ও অনুভুতির কথাটা মনে হলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারতাম না, আর শুধু একটি চিন্তা বার বার ঘুরপাক খেত আমার কলিজার টুকরাগণ জামায়াত নেতৃবৃন্দসহ জাতীয় ও স্থানীয় হাজারো হাজার নেতা-কর্মী এবং হাজারো হাজারো মানুষের পরিবারের এ কান্না আল্লাহর আরশে আযীম পর্যন্ত কাঁপতেছে নিশ্চয়ই? কিভাবে সারা দেশের নিরিহ-নিরপরাধ মানুষগুলোর পরিবার সহ্য করবে এ যুলুম-নির্যাতন? এর কি কোন শেষ নেই? আল্লাহ তায়া’লা কি মজলুমদের জন্য সাহায্যকারী পাঠাবেন না?
পৃথিবীর বিজ্ঞান ভূখন্ডের বিভিন্ন পরিবেশে ইসলামী উম্মাহর অধিবাস হওয়ার ফলে স্বভাবতই তাদেরকে অনুকুল-প্রতিকুল বিভিন্ন সমস্যা ও পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। কখনো তাদের জীবনে গতি সজীবতা ও প্রাণচাঞ্চল্য। কখনো আবার নেমে আসে সীমাহীন নির্র্জীবতা অবসাদ ও হীনস্মন্যতা। কখনো শিকার হয় সংঘাত সংঘর্ষের এবং নিপীড়ন-নির্যাতনেরা। কখনো বা মুকাবিলা করে তাহজীব-তমদ্দুন ও সভ্যতা-সংস্কৃতির মতো গুরুতর সমস্যার কিংবা বৈষয়িক ও রাজনৈতিক প্ররোচনা প্রলোভনের। জীবন কখনও হয় সম্পদ প্রাচুর্যে পরিপুর্ণ: আবার কখনো চরম দৈন্য ও দারিদ্র-পীড়িত। কখনো তাদের উপর চেপে বসে কোন স্বৈরাচারী ও জালিম শাসক। কখনো বা তাদের ভাগ্য নিয়ে পৈশাচিক খেলায় মেতে ওঠে রাজনীতির পাকা খেলোয়াড় দল। এমনি ধরনের আরো অসংখ্য সমস্যা জটিলতাও প্রতিকুলতা আছে তাদের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে। এ সকল সমস্যা. জটিলতা ও প্রতিকুলতার সকল মুকাবিলার জন্যই প্রয়োজন শক্ত ঈমানের। উহার প্রতিটি সদস্য ও শ্রেণীকে ত্যাগ ও কুরবানী এবং আনুগত্য ও সম্পর্নের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ করা। মানুষ বুদ্ধি সর্বস্ব কোন জীব নয়, নয় প্রাণহীন কোন যন্ত্র। বরং বুদ্ধি ও হৃদয় বিশ্বাস ও অনুভূতি এবং আনুগত্য ও প্রেমের সমন্বয়েই মানুষের পূর্ণতা।
রোযা শুরু হলেই ঈদের আনন্দ আমাদেরকে পেয়ে বসে। সব সময় মনে হয় আর কয়টি দিন পরেই তো ঈদ। পুরো রোযার মাস নিয়ে চলে ঈদের ভাবনা। একটি হলো আনন্দের সাথে রোযা পূর্ণ করা। আর রোযা যে সাফল্যের সাথে আমরা পালন করছি তার স্বীকৃতিস্বরুপ এই ঈদুল ফিতর পালন করা। নতুন জামা-কাপড়, জুতা-মোজা কেনার পরিকল্পনা। ঈদের চাঁদ ওঠার সাথে সাথে সে কি আনন্দ। জেল কর্তৃপক্ষ ঈদকে সামনে রেখে হাজতী ও কয়েদিদেরকে সাময়িক সময়ের জন্য আনন্দ দেয়ার জন্য সর্বাত্নক চেষ্টা করেছে। গোটা জেলকে ঢেলে সাজাচ্ছে এবং আলোক সজ্জা করছে। জামায়াত-শিবির বেশী থাকায় জেলের সব কয়টি ওর্য়াডে নিয়িমিত জামায়াতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করা হতো এবং সবকটি নামাযের জামায়াতের ইমাম জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা ছিলেন। জেল কর্তৃপক্ষ একটু পরিবর্তন করে ঈদের জামায়াতের জন্য ইমাম নিয়োগ দিলেন সভা করে। আমাদের ভাগ্যে (নিউ জেল-৩ এ) ইমাম হিসেবে নিয়োগ পেলেন ব্যক্তিগত একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিগত কানাইঘাট উপজেলায় পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জমিয়তনেতা মাওলানা আলীম উদ্দিন। এর আগে তার সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা ছিল না। জানতাম জমিয়তের একজন কর্মী তিনি এতোটুক। সকাল ৯টায় এক সাথে সবকটি ওর্য়াডে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু আমরা যারা জেলের চার দেয়ালে বন্ধি আমাদের আবার কিসের ঈদ? তারপরও মযলুম হিসেবে বাধ্য হৃদয়ের গভীরে শত কষ্ট ভুলার চেষ্ঠার প্রস্তুতি নিয়ে দাড়ালাম ঈদের জামায়াত পড়তে। জামায়াতের পর এমন দৃশ্য প্রত্যাশা কেউই করেনি! ইমাম সাহেব যখন দোয়ার জন্য হাত তুললেন সর্বপ্রথম তিনিই বর্তমান সরকারের যুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে উচ্ছ কন্ঠে কান্না করে ফরিয়াদ করলেন। তখন প্রায় দেড় শতাধিক মুসল্লি ছিলেন সবাই উচ্ছ স্বরে কান্না করে বলছে- ওহ আল্লাহ! আমরা নিরাপধ, রাজনৈতিক কারণে আজ আমাদের স্ত্রী, সন্তানাদি, পরিবার-পরিজন, আত্নীয়-স্বজন ছেড়ে চার দেয়ালের ভিতর ঈদ করছি, এ ঈদ আনন্দের নয়, এ ঈদে আমাদের কলিজায় আগুন জ্বলছে, আমরা এ কষ্ট সহ্য করতে পারছি না! আমাদেরকে মুক্ত করো, আমরা জালিমের এ যুলুমের অবসান চাই। বুঝ হওয়ার পর থেকে জীবনে যতটি ঈদ করেছি জামায়াত পরেই ঈদগাহে আনন্দের কোলাকোলি করেছি। কিন্তু এবার সেই জামায়াতের পর ঈদে কোলাকোলি করেছি এমন বুক ফাটা কান্নার মধ্য দিয়ে চোখের পানিয়ে ভিজে গেল সবার ঈদের আনন্দ। এমন এক হৃদয়বিদায়ক পরিবেশে উদ্যাপন করলাম জেলের ভিতর ২০১৫ সালের ঈদুল ফিতর।

লেখক:-
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, মাসিক বিশ্বনাথ ডাইজেস্ট এবং সভাপতি, বিশ্বনাথ কেন্দ্রীয় সাহিত্য সংসদ ও বিশ্বনাথ সংস্কৃতি কেন্দ্র।

বিশ্বজয়ী কোরআন তেলাওয়াতকারী তারিকুল ইসলামকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংবর্ধনা


বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ ১৮ জুন রাতে তাঁর কার্যালয়ে সম্প্রতি দুবাই এ অনুষ্ঠিত দুবাই ইন্টারন্যাশনাল হলি কোরআন এওয়ার্ড জয়ী বাংলাদেশের হাফেজ তারিকুল ইসলামকে সংবর্ধনা প্রদান করেন।

বেগম খালেদা জিয়া তাকে ১ লক্ষ টাকা, পবিত্র কোরআন শরীফ ও জায়নামাজ প্রদান করেন। তিনি বিশ্ব বিজয়ী তরিকুলের ভূয়সী প্রশংসা করে তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করে বলেন আন্তর্জাতিক ক্বেরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে সে বাংলাদেশের মুখ উজ্জল করেছে। তরিকুল বাংলাদেশের গর্ব। 

এসময় তরিকুল ইসলাম বেগম খালেদা জিয়াকে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করে শোনান। বেগম জিয়া তার তেলাওয়াত শুনে মুগ্ধ হন এবং প্রশংসা করেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুবাই এর শাসক সরকার এই আন্তর্জাতিক ক্বেরাত প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এবং এতে সৌদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, মিশর, বাহারাইন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশসহ ১০৩ দেশের ১ জন করে প্রতিযোগী অংশ নেন। চুড়ান্ত পর্ব ২০ রমজান অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের তরিকুল ইসলাম প্রথম স্থান অধিকার করে।

শ্রীমঙ্গলে পুলিশের উপস্থিতিতেই বিএনপি’র ইফতার মাহফিলে আ’লীগের হামলা

মৌলভীবাজার: জেলার শ্রীমঙ্গলে পুলিশের উপস্থিতিতেই বিএনপি’র ইফতার মাহফিলে আ’লীগ ও ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার আসর নামাজের পর শ্রীমঙ্গল পূর্বাশা এলকায় হাম হাম রিসোর্টে আয়োজিত বিএনপি’র ইফতার মাহফিলের ঠিক পূর্বে এ হামলা চালায় বলে সাংবাদিকদের জানান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী।
বিএনপি নেতা মোছাব্বির আলী মুন্না অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের লোকেরা এ কাজ করেছে। ইফতার মাফিলে এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
এদিকে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আর ইফতার হচ্ছে নির্বাচনী একটি বড় প্রচার মাধ্যম। তিনি যাতে প্রচারনা না করতে পারেন তাই প্রতিপক্ষরা হিংসাত্মক হয়ে এ কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, ইফতার মাফিলের জন্য গত কয়েকদিন থেকে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম নজরুল ইসলামকে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযোগ আছে আপনাদের উপস্থিতিতে ওই হামলা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ সাংবাদিকদের বলেন- না এটা সম্পূর্ণ ভুল। আমরা সেখানে ছিলাম না। পরে খবর পেয়ে গিয়েছি। যাওয়ার পর আর কাউকে পাই নাই।

সোমবার, ১৯ জুন, ২০১৭

সাত বছরে ব্যাংক থেকে ‘৩০,০০০ কোটি টাকা চুরি

গত দেড় দশকে ব্যাংকিং খাতে ৯টি বড় ধরণের আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। আর গত ৭ বছরে ঘটা ৬টি বড় আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি চুরি বা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ।
বৃহস্পতিবার দুপরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয় শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর থেকেই বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে চলেছে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম বাধা। এ নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে আস্থাহীনতা ও উৎকণ্ঠা।
বখতিয়ার আহমেদ বলেন, নিকট অতীতে পুজিবাজার, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, বেসিক ব্যাংক ও ডেসটিনি কেলেঙ্কারির সাথে সাম্প্রতিক যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা চুরির ঘটনা। ভবিষ্যতে এ সকল ঘটনা উত্তরণে এবং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এ খাতের বিদ্যমান সমস্যা গুলো চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
তিনি প্রবন্ধের শুরুতে ব্যাংকিং খাতে বিদ্যমান কিছু সমস্যা তুলে ধরেন। সমস্যাগুলো হলো- ১. বিনিয়োগ না বাড়ায় ব্যাংকগুলোতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত পড়ে থাকা, ২.ব্যাংকগুলো যে ঋণ দিচ্ছে তা আদায় করতে না পারা, কিংবা কাকে ঋণ দেয়া হবে তা নিয়ে সংকট তৈরি হওয়া, ৩. ব্যাংকিং খাতের নানা অনিয়ম ও জালিয়াতি, ৪. ব্যাংকগুলোর কেবল লাভের পেছনে ছোটা, ৫. বিপুল অঙ্কের খেলাপি ও মন্দ ঋণ, বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে, ৬. ব্যাংকগুলোর আইটি সিস্টেম সুরক্ষিত না থাকা, ৭. মূলধন ঘাটতি, বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে, ৮. আমানত সংগ্রহে অসম প্রতিযোগিতা, ৯. ব্যবস্থাপনার সংকট, বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর, ১০. সরকারি এবং বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে পরিচালকদের অযাচিত হস্তক্ষেপ, ১১. বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে সিবিএ নেতাদের দৌরাত্ম্য।
সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা জনাব মির্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আবু আহমেদ, সুজন নির্বাহী সদস্য জনাব আলী ইমাম মজুমদার ও ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড. সাজ্জাদ জহির, জনাব নুরুল হক মজুমদার, আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন প্রমুখ।
এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে অত্যন্ত বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। এ খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। কি কারণে আজ এ অবস্থা তা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। দলীয়করণ ও রাজনীতি ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক এর কর্তৃত্ব ও নজরদারি অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর আছে কি না সে বিষয় নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেন।’
মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা যে কম আছে তা নয়, ক্ষমতা যতটুকু আছে তার কতটুকু প্রয়োগ করছে তা বিবেচ্য বিষয়। ক্ষমতার প্রয়োগের জন্য যথাযথ ও যোগ্য লোক নিয়োগ প্রদান করতে হবে। তিনি ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অডিট নিয়মিত করা, ব্যাংকগুলো যাতে বড় ধরণের ঝুকির মধ্যে না পড়ে সেদিকে নজর রাখা, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কাকে ঋণ প্রদান করা হবে সেটি বিবেচনায় আনা, ঋণ আবেদনকারীর তথ্য সঠিকভাবে যাচাই করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।’
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এর নীতিমালা যা আছে তা আর্ন্তজাতিক মানের কিন্তু নিয়ম/নীতিমালা আমাদেরকে পালন করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে অন্যান্য ব্যাংকসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে আবার বেশি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, একটা ভারসাম্য রাখতে হবে। এছাড়াও সৎ, যোগ্য ও দক্ষ মানুষকে নিয়োগ প্রদান করতে হবে। আর্থিক খাতের অনিয়মের জন্য বিচার করতে হবে তাহলে বারবার এরকম দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।’
তিনি আরো বলেন, ‘আর্থিক খাতের মত একটি খাতে যদি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হয় তাহলে তা ধ্বংস হতে বাধ্য। তিনি ঋণ প্রদান কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, সবমসময় টাকাওয়ালাদের ঋণ প্রদান করা হয়। কিন্তু তা না করে নতুন নতুন উদ্যোক্তা ও মহিলাদের ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।’
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের আর্থিক খাতে বিচারহীনতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে, আর এ অবস্থা চলতে থাকলে রিজার্ভের টাকা চুরি, বেসিক ব্যাংক, হলমার্ক ও পুঁজি বাজার কেলেঙ্কারীর মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।’
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অযাচিত সব দুর্ঘটনা ঘটছে বলে দু:খ প্রকাশ করে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এর রিজার্ভ চুরির ঘটনা অতীতে কখনো ঘটেনি, অন্যান্য দেশেও এরকম ঘটেছে বলে আমার অন্তত জনা নেই। আর্থিক খাতের দুর্নীতিরোধে যাদের দায়িত্ব রয়েছে তাদের অনেকেই দুর্নীতির সাথে জড়িত বলে তিনি মন্তব্য করেন। ব্যাংকিং খাতের এ হতাশাজনক অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নতুন গর্ভনর যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং খাতে বা আর্থিক খাতে না সকল খাতেই বিচারহীনতা বিরাজ করছে। অন্যায় করে পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি বিরাজ করছে। তবে আশার কথা যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির বিষয়ে যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে তারা যথাসময়ে তাদের প্রতিবেদন পেশ করেছে।
ড. সাজ্জাদ জহির বলেন, অর্থখাতের যে পরিবর্তনগুলো সারা বিশ্বব্যাপী ঘটছে তার সাথে সঙ্গতি রেখে আমাদের দেশের ব্যাংকিং খাতের পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। আমাদের সেই দক্ষ জনবল নেই যারা প্রযুক্তির ওপর প্রভাব রাখে। প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণে যে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন তা করা হচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। Diganta.net

এ হামলা গণতন্ত্র, মুক্তচিন্তা ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ওপর আঘাত: মির্জা আলমগীর

রাঙ্গামাটি পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির গাড়িবহরে যে হামলা চালানো হয়েছে এটাকে গণতন্ত্র, মুক্তচিন্তা ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার দুপুর ১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ ৪ জন আহত হয়েছে। এসময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বহরের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
শনিবার সকাল ১০ টার দিকে বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহর রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালী বাজারে পৌঁছার পরই তারা এ হামলা চালায় বলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহসিন শীর্ষ নিউজকে জানিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল গণমাধ্যমকে বলেন, ২০-২৫ জন লোক অতর্কিতে গাড়িবহরে লাঠিসোঁটা, রামদাসহ হামলা করে। আমার গাড়ির কাচ ভেঙে গেছে। গাড়ি তছনছ করা হয়েছে। গাড়ির ভাঙা কাচ আমার শরীরে এসে লেগেছে। আমাদের কয়েক নেতা আহত হয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমার হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে।

হাছানের মাহমুদের গায়ে 'কৃত্রিম কাঁদা' : ফেসবুকে হাস্যরস!

রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের ঘটনার পর ওই এলাকায় গিয়ে ফটোসেশন করা আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদের একটি ছবি নিয়ে ফেসবুকে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। ছবিটি শেয়ার করে অনেকে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করছে।
আওয়ামীপন্থী ব্লগার আরিফ জেবতিক লিখেছেন, “হঠাৎ এই ছবি দেখে আমি আরো ভেবেছি কেউ উনার শরীরে ইয়ে ছুড়ে মেরেছে ! পরে শুনি উনি মাটি কেটেছে ! এসব নাটক দেখলে বিরক্ত লাগে | একজন মাটি কেটেছে আর চল্লিশ জন সেলফি তুলেছে - এমনটা দেখলে হাসি পায়।”
ডয়চে ভেলের সাংবাদিক আরাফাত ইসলাম সেখানে মন্তব্য করেছেন, “কাদাতো মাটি কাটতে গিয়ে লেগেছে মনে হচ্ছে না। ছবি তোলার আগে কেউ ছিটিয়ে দিয়েছে মনে হচ্ছে।”
আওয়ামীপন্থি অভিনেত্রী লৎফুন নাহার লতা লিখেছেন, “সব আনাড়ীদের সাথে নিয়ে অল্প পানিতে কাদা ঘোলা করা আরকি! একটা নাটকই বটে! বাঙালী জাতি আর এদের ন্যাতাগন ভয়াবহ রকমের নাটুকে! সব কিছুতেই একটা ইয়ে আর কি!”
টুটুল লিখেছেন, “দেশে আবারও মাটি কাটার রাজনীতি শুরু হয়ে গেল নাকি! এখন দেখি অনেক নেতারাই মাটি কাটায় মন দিয়েছেন!”
রফিক লিখেছেন, “ওনারা আমা‌দের‌কে খুব বোকা ম‌নে ক‌রে। বিষয়‌টি যে হাস্যকর তা কি ভোদাইয়ের মাথায়‌ একবারও আ‌সে‌নি?”

লিয়াকত লিখেছেন, “মানুষের উপকার করার জন্য বড় নেতার এভাবে মাটি কাটার দরকর হয় না, মন থেকে মানুষের উপকার করতে চাইলে টেন্ডারে কমিশন খাওয়া বন্ধ করুন তাতে দেশ ও জনগণেরও উপকার হবে। এই হাস্যকর ছবি উপস্থাপন করে জনগনের সহানুভুতি পাবেন না বরং জনগন আপনাকে জোকার ভাববে। আজকের জনগণ এত বোকা নয়।”
সজল খান লিখেছেন, যার কাজ তার করা উচিত । তিনি তাঁর জায়গায় থেকে কাজের তদারকি করতে পারেন । মাটি কাটার চেয়ে তার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে নিশ্চয় ।যত সব ফালতু প্রচার । Diganta Update

নিয়মানুবর্তিতা রমজানের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যাবিধি: অধ্যাপক নইম কাদের

Bangladesh Barta: তাবৎ সৃষ্টির মাঝে সবচাইতে বিষ্ময়কর ও সুন্দরতম সৃষ্টি হচ্ছে মানুষ। সর্বাধিক আকর্ষণীয় ও সুন্দর এই মানব দেহ অজস্র মেকানিজমে ভরপুর। পবিত্র কুরআনে মানব দেহের সৃষ্টি কৌশল বর্ণনা দিয়ে স্বয়ং আল্লাহ পাক বলেছেন ‘আমি মানুষকে সর্বোত্তম আকৃতিতে তৈরি করেছি।’
সর্বাধিক কলাকৌশলে ভরপুর ও সুন্দরতম দেহাকৃতি এটা মানুষের জন্য আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। সৃষ্টিকূলের উপর মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের নানাবিধ কারণের মধ্যে দেহাবয়ব অন্যতম। আল্লাহ পাক মানুষকে সুন্দর একটি দেহ দান করেছেন কিন্তু এই নেয়ামত রক্ষা করার দায়িত্ব মানুষের নিজের।
মানব দেহ গঠন ও এর সুষ্ঠু কার্যক্রম নির্ভর করে সঠিক পরিচর্যার উপর। এবং এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিয়মানুবর্তিতা বা নিয়ম মেনে চলা। মনে রাখতে হবে যেখানে অনিয়ম সেখানেই বিশৃংখলা। মানব দেহ বিভিন্নভাবে রোগাক্রান্ত হয়, বিভিন্ন রোগের নামও আমাদের জানা। এই যে রোগ-ব্যাধি এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষা। এটাকে ভিন্নভাবে বলা যায় ‘বিশৃংখলা’। মানব দেহের বিভিন্ন বিশৃংখলাই বিভিন্ন রোগ নামে পরিচিত। সুতরাং রোগ থেকে মুক্তি বা নিরোগ স্বাস্থ্য গঠনে প্রধান করণীয় হচ্ছে নিয়মানুবর্তিতা বা শৃংখলা মেনে চলা।
আল্লাহ পাক মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাঁর এবাদতের জন্য। ইসলামী জীবন যাপন পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রকার এবাদত পালন করতে হয়। আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন ছাড়াও প্রতিটি এবাদতে হাজারো বৈষয়িক ফায়দা আছে। 
আল্লাহ পাক কর্তৃক নির্ধারিত একটি ফরজ এবাদত হচ্ছে মাহে রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা বা রোজাব্রত পালন করা। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় রোজা নিয়ে হাজারো গবেষণা হয়েছে এবং হচ্ছে। সকল প্রকার গবেষণায় একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, রমজানের নিয়মানুবর্তিতা স্বাস্থ্য সম্মত এবং সুষ্ঠু স্বাস্থ্য গঠনে এর বিকল্প নেই। ভোর রাত্রে সেহেরি রোজা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সেহেরি শেষ করতে হবে। সেহেরির পরপরই মসজিদে গিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করা হয়। আধুনিক চিকিৎসা একথা দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করেছে যে, ভোরে শয্যা ত্যাগ এবং ভোরের মুক্ত আবহাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
পানাহারের মাধ্যমে রোজ ভঙ্গ করার নাম ইফতার। এবং এটা সূর্যাস্তের সাথে সাথেই করতে হয়। ইফতারে বিলম্ব শরিয়ত সম্মত নয়। পানি পান এবং খেজুর খেয়ে ইফতার করার ফজিলতের বিভিন্ন বর্ণনা হাদিস শরীফে এসেছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান মানব শরীর গঠনে পানির কোন বিকল্প অদ্যবদি খুঁজে পায়নি। একইভাবে খেজুরের খাদ্য মানও অপরাপর অনেক খাদ্যের তুলনায় বেশি।
রোজার যাবতীয় কার্যক্রমে কঠোর নিয়মানুবর্তিতা বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সময় গুণে গুণে সেহেরি খেতে হয়, ইফতার করতে হয় ঘড়ির কাঁটায় সেকেন্ড মিনিট হিসেব করে বা উন্মুক্ত স্থানে বসে সূর্যাস্ত দেখে। একইভাবে পানাহারে চরম কৃচ্ছ্রতা রমজানের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। সুতরাং পানাহারের ক্ষেত্রে রোজাদারকে চরম কৃচ্ছতা সাধন করতে হয়। দিনের বেলায় কিছু না খেয়ে ইফতারে বা ইফতারের পরে ভিন্ন স্বাদের নানা রকম খাদ্যে ভুরিভোজন রমাজনের শিক্ষার পরিপন্থী। সারা দিন খেতে না পারাটা ইফতারে পুষিয়ে নেয়া সিয়াম সাধনা নয়। 
সারাটা দিন গোসলের সময়, অজুর সময় একজন রোজাদারকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয় ভুলে মুখ থেকে যেন পানি ঢুকে না পড়ে। একইভাবে কথা বলার সময় সর্বক্ষণ সতর্ক থাকতে হয় অশ্লীল কোন একটি শব্দও যেন মুখ দিয়ে বেরিয়ে না আসে। রোজা রেখে অশ্লীল কার্যক্রম দূরে থাকা মুখ দিয়ে অশ্লীল শব্দ উচ্চারণও নিষিদ্ধ। এভাবে রোজা মানুষকে সুনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের শিক্ষা দেয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার এই যুগে রোজার উপবাসকে সাধারণ উপবাস হিসেবে প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। এর বিপরীত এটা বিভিন্নভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, মানব স্বাস্থ গঠন ও আত্মার উৎকর্ষ সাধনে রোজার অনুশীলন অপরিহার্য। যাদের কিডনির সমস্যা আছে, ডায়াবেটিস আছে এমনকি গর্ভবর্তী মহিলাদের ক্ষেত্রেও রোজা ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়নি। এর বিপরীত বিভিন্নভাবে রোজা কল্যাণকর প্রমাণিত হয়েছে। দুর্ঘটনা, অপারেশন, অতিবৃদ্ধ, শিশু এ সব ভিন্ন বিষয়। এই জন্য মুসাফির এবং রুগ্ন ব্যক্তিদের জন্য পরবর্তীতে রোজা পালনের অপশন রাখা হয়েছে। 
রোজার মৌলিক শিক্ষা নিয়মানুবর্তিতা, শৃংখলাবোধ এবং সংযম। মানব দেহের গঠন এবং সুস্থতা নির্ভর করে এসবের উপরই। মাসব্যাপী সম্মিলিতভাবে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে দেহ, মন-আত্মা গঠনের যে প্রশিক্ষণ, পরবর্তী এগার মাস সে হিসেবে জীবন যাপন করলে নিরোগ জীবন যাপন সম্ভব। 
রমজান মাস সংযমের মাস। পানাহারসহ জীবনের সংযমী হতে পারলে রোগের ভয় থাকার কথা নয়। হোক তা দেহের কিংবা মনের এবং এটাই রমজানের মৌলিক শিক্ষা।