ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০১৭

হাওরবাসীর কন্ঠে কেবলই বাঁচার আকুতি


সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের ফসলহারা প্রত্যন্ত গ্রাম গুলোতে ঈদের আনন্দ নেই। পরপর কয়েক বছর শিলাবৃষ্টি, অতিবর্ষন আর গেল চৈত্র মাসের বন্যার কারনে বছরে একটি মাত্র বোরো ফসল ঘরে তুলতে না পারার ফলে ওই অঞ্চলের মানুষের ঈদরে আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। পবিত্র রোজায় চরম কষ্টে দিনযাপন করে কোন রকম সংসার চালাতে তাদের কন্ঠে কেবলই শুধু বাঁচার আকুতি। সারা বছর পরিশ্রম করে গোলাঘরে ধান ভর্তি করে প্রতিবছর যারা ঈদের আনন্দে মেতে ওঠতেন, চলতি বছর ফসল ডুবির কারণে তাদের ঘরে অন্যান্য বছরের মতো এবার ঈদের আনন্দ নেই। অনেকেই ছেলে মেয়ে ও পরিবার পরিজনকে নতুন জামা কাপড় কিনে দিতে পারছেন না।

জামালগঞ্জের বৃহত্তর ফসলী এলাকা পাকনা হাওরের ফেনারবাঁক গ্রামের বাসিন্দা তিন সন্তানের জননী স্বাধীনা বেগম বলেন, বানে (বন্যায়) আমরার ঈদের খুশি নিছেগা, ধনীরাই কোন ধান পায়নাই আমরার গরীবেরতো কিচ্ছুই নাই। ঘরে কোন খাওন নাই, সরকারী কোন সাহায্যেও পাইনাই আমার ছোট-ছোট অবুঝ দুধের বাচ্চা কাচ্চা নিয়া ঊনা-উফাসে চলতাছি। ঈদ কি জিনিষ আমরার মনে নাই, জীবন বাঁনোই দায়। রোপাবালী গ্রামের স্মামী হারা ৫৫ উর্দ্ধ বয়সের রংমালা বেগম বড় আক্ষেপ করে বলেন, তার স্মামী মারা যাবার পর চরম দুর্দীনে কাটছে তার সংসার জীবন। আয় রোজগারের কোন মানুষ নেই, অন্যের ঘরে কাজ করে জীবন চলছে, সরকারী কোন সাহায্য কখনো তিনি পাননি। অভাবের কারণে তার দুই কন্যা সন্তান মেয়ের বাড়িতে রেখেছেন, ঈদের আনন্দ বলতে তাঁর কাছে কিছুই নাই বলেই চোখ মুচতে লাগলেন। উদয়পুর গ্রামের রেজুয়ান আহমদ বলেন, রোজাই রাখতাছি খুব কষ্টে আর এই বছর আমরার ঈদের খুশি নাই। আমরার ফসলতো গেছেই জৈষ্ঠ্য মাইয়া বানে গেরামের ৪৫ টা গরু মইরা আমরার এখন গোয়াল শূন্য হইছি।

সরকারে যে সাহায্য দিছে আমরার গেরামে মাত্র কয়েকজনে পাইলেও বেশীর ভাগ মানুষ এখনো পায়নি। কত কষ্টে আমরা আছি ঈদ নামের একটা দিন আছে, হাসি খুশি করমু মুখে হাসিও আয় না। ঘরে গিয়রা ছোট ভাই বোনদের মুখের দিকে চাইলে ছোকে পানি আয়। কেউরে তো নতুন জামা কাপড় কিনে দিতে পারছিনা। কেউর ঘরে ধান-চাল নাই আমরার গেরামে ঈদের আনন্দ নাই। সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের প্রায় ২০ লাখ সুবিধা বঞ্চিত-নিপীড়িত জনগোষ্টির কান্না আজো কেউ শোনেনা। সীমাহীন বৈষম্য আর উন্নয়ন বঞ্চিত এ অঞ্চলের মানুষগুলো ডুবে আছে অন্ধকারে। চরম অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার এ অঞ্চলের মানুষের প্রাকৃতিক দুর্যোগই হচ্ছে জীবন সঙ্গী। এর মধ্যে পাল্লা দিয়ে মোকাবেলা করতে হচ্ছে জোতদার ইজারাদারদের শাসন।

রক্ত চক্ষু আর অন্যায় ভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে নিরিহ মানুষজন। এ ভাবেই সংকটের পর সংকটে চিরকাল দিনাতিপাত করছেন তারা। বছরের একটি সময় এ অঞ্চলের মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। তাদের হাতে কোন কাজ থাকে না, ফলে দেখা দেয় চরম খাদ্য সংকট। উন্নয়ন, শিক্ষা আর প্রযুক্তির আলো থেকে আজো তারা অনেক দূরে। বিশাল হাওরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষেরা এ ভাবেই যুগের পর যুগ মুখ থুবড়ে পড়ে আছেন ক্ষুধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক আর অবহেলায়। ফসলহারা হাওরবাসীর কন্ঠে কেবলই শুধু বাঁচার আকুতি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন