ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ৭ জুন, ২০১৭

সৌদি - কাতার সম্পর্ক আকাশ থেকে ভূমিতে পতন


প্রথমেই কাতার সম্পর্কে কিছু তথ্য দেই । ২৭ লাখ অধিবাসির ছোট্ট একটি আরব দেশ । ঐতিহাসিকভাবে দেশটি জাজিরাতুল আরবের অংশ । বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও যে কয়েকটি দেশ মন্দায় না পড়ে বরং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে আরো এগিয়ে গেছে তার একটি কাতার । সৌভাগ্যক্রমে অন্য দেশগুলিও মুসলিম : তুরস্ক, ওমান ও ব্রুনেই । তেল বিশেষত প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ দেশ । পুরো দেশটাই বলতে গেলে নগর সংস্কৃতি প্রধান দেশ । ট্যুরিজম থেকেও দেশটি ব্যাপক কারেন্সি অর্জন করে ।সৌদি আরবের সাথে কাতার দেশটির একটি গূরুত্বপূর্ন মিলবা সাদৃশ্য হলো, দুইটি দেশই গত ৫-৬ বছর আগ পর্যন্ত খুবই আন্তরিক বন্ধুত্বপূর্ন রাজতন্ত্রের দেশ এবং দুই রাজ পরিবারই চিন্তাজগতের দিক থেকে একই ওহাবি-সালাফি ট্রেন্ডের ফলোয়ার । তবে শিক্ষা দিক্ষা বিশেষত উচ্চ শিক্ষারর গবেষনার দিক থেকে কাতার সৌদি আরবের চেয়ে অনেক এগিয়ে । সৌদি আরবের অর্থনীতি যেখানে শুধুই তেল নির্ভর সেখানে কাতার দেশটি তেল গ্যাস ছাড়াও শিল্পায়ন নির্ভর। হার্ডকোর অর্থোডক্স ওহাবি ধারার সৌদি আরবে মুসলিম হেরিটেজ ও সংস্কৃতির চর্চার কোন চিহ্নও নেই । পক্ষান্তরে প্রাগমেটিক সালাফি ধারার কাতার রাজকিয় সরকার হাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি চর্চায় করেছে অনেক কাজ। নিজ দেশে বিশাল ইসলামিক মিউজিয়াম, মুসলিম ইতিহাস নির্ভর নাটক, চলচ্চিত্র সহ অন্যান্য মুসলিম দেশেও আছে কাতার ফাউন্ডেশনের ব্যানারে অনেক কাজ।সৌদি আরব ও কাতার এতটাই ভ্রাতৃপ্রতিম অন্তরঙ্গ দুই দেশ যে, বলা হতো আন্তর্জাতিক রাজনিতির অনেক কিছুই সৌদি আরব কাতারের চোখ দিয়ে দেখতো । মূলত শিক্ষা দিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাই ছোট্ট এই দেশটিকে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রনীতির নেয়ামক শক্তিতে পরিণত করে।
মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন হলো, তাহলে কি এমন বিষয় যা দুই দেশকে বৈরি করে ফেললো???
ঘটনার শুরুটা নিউজ চ্যানেল " আল জাজিরা " কে দিয়ে। সবাই জানেন ২০০২ এ ঈরাকে মার্কিন আগ্রাসনের সময় আরব দেশগুলোর অবস্থা ছিলো কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো কষ্টের। না পারছিলো গিলতে না ফেলতে। সেই সময় চালু গলো কাতার ভিত্তিক সংবাদ চ্যানেল " আল জাজিরা "। ঈরাক যুদ্ধে সবকটি পাশ্চাত্য মিডিয়ার বিপরিতে একাই লড়াই করে গেছে আল জাজিরা। পুরো মুসলিম বিশ্বে বিশেষত আরব বিশ্বে " আল জাজিরা " হয়ে উঠলো ব্যাপক জনপ্রিয় । ( সাবেক শিবির সভাপতি বর্তমান সিলেট আমির জোবায়ের ভাইয়ের কাছ থেকে শোনা, " আল জাজিরার নেপথ্য কারিগরের একটা অংশ নাকি ইখওয়ান । " 
কিভাবে সেটার ব্যাখ্যা তিনি দেননি। ) । ঈরাক যুদ্ধের পর আল জাজিরার আরেকটা বৈশিষ্ট ছিলো তার নান রকম ফিচারধর্মি ডকুমেন্টারি । মুসলিম ইতিহাস, সিরাত, ক্রুসেড, খেলাফত, আন্তর্জাতিক রাজনিতি, ফিলিস্তিন - ইসরাইল, নাকাবা, ইন্তিফাদা, আরব ইসরাইল যুদ্ধ, শিয়া - সুন্নি ঐতহাসিক কনফ্লিক্ট, ইখওয়ান / মুসলিম ব্রাদারহুডের ইতিহাস, নারিবাদ, জেন্ডার ইস্যু, জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি অর্থনিতি, আরব বিশ্বে বাকস্বাধিনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধিনতা ইত্যাদি নানা ইস্যুতে প্রচুর ডকুমেন্টারি তৈরি হতে থাকে আল জাজিরার হাতে । ২০০৪-২০০৫ থেকেই সৌদি আল জাজিরাকে ভয় পেতে শুরু করে। তখন থেকেই আল জাজিরার উপর সৌদি হুমকি আসতে থাকে। সৌদির ভয় এসব দেখে সৌদি আরবের তরুন প্রজন্ম চালাক হয়ে যাবে। সৌদি আরবের দরকার একটা খাও দাও ফূর্তি করো দুম্বা খাও এই টাইপের হাইব্রিড হাবাগোবা তরুন প্রজন্ম । 
২০১১ এর আরব বসন্তের সময় কাতার ও আল জাজিরা সুস্পষ্ট ভাবেই আরব বসন্ত ও মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষে অবস্থান নেয়। সৌদি আরব রাজ সরকার অবস্থান নেয় হোসনি মোবকরক, বেন আলির পক্ষে। পরে এদের পতন হলে সৌদি আরব মিশরের মুরসি সরকারের পতনে পেটট্রোডলার ঢালে, হাত মেলায় মোসাদ, সিআইএ, আরব আমিরাতের সাথে। ২০১৩ এ মুরসি সরকারের পতনের পর মুসলিম ব্রাদারুডের নেতাদের কাতার রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়। পরে ২০১৪ এ সৌদির ব্যাপক চাপে কাতার হার মানতে বাধ্য হয়। কাতার সরকারের অনুরোধে মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতারা তুরস্কে চলে যান । সর্বশেষ হামাসকে নিয়ে ঘটলো এবারের ঘটনা।কথা হলো কাতারের এখন কি হবে?????? 
এই সংকটের সমাধান কূটনৈতিকভাবেই হবে । সৌদি যে হিসাবটা মাথায় রাখে নাই সেটা হলো মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে এখন সবচেয়ে বড় বিগ বস তুরস্ক । কাতার যদি শক্ত থাকে তবে সৌদিই প্যাচে পড়বে। ধৈর্য ধরেন বেশিদিন না সৌদিই বাধ্য হবে অবরোধ তুলে নিতে।সৌদির এখন কি হবে???????
সৌদির অবস্থা পাড়ার বড় ভাইয়ের মতো। ছোট ভাইয়েরা অনেকদিন হলো হজম করেছে। কিন্ততু আর কতদিন????
এত্তগুলা মুসলিম দেশগুলির মধ্যে মাত্র আল সিসি ( আমি মিশর বলবো না) , আরব আমিরাত, বাহরাইন, লিবিয়া আর ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা মালদ্বীপ। একমাত্র পরমানু শক্তিধর মুসলিম দেশ পাকিস্তান তো মুখের উপর না করে দিলো। কুয়েত তো মধ্যস্ততাকারির দায়িত্ব নিলো। ওমানও সাড়া দেয়নি। জর্দান তামশা দেখছে। লেবাননও চুপচাপ। সৌদির জানি দুশমন ইরান কিন্তু এই মূহুর্তর মিটিমিটি হাসছে আর সিনেমা দেখছে । সিরিয়া ইরান - হেজবুল্লাহ নেয় নেয় অবস্থা। সিরিয়া ফিল্ডে আল সৌদির একমাত্র ভরসা তুরস্ক। ঐদিকে ইয়েমেনেও সৌদি ঘুড্ডি পেচায় ফেলছে, একেবারে লেজে গোবরে অবস্থা। সৌদির ভেতরেই আছে জিহাদি সালাফিস্টদের গরম নিশ্বাস। পাশের দেশ কুয়েতের রাজপরিবার সুন্নি সালাফি হলে কি হবে জনসংখ্যার বেশিরভাগটাই শিয়া। আরেক পাশের দেশ বাহরাইনের রাজপরিবার সুন্নি সালাফি হলেও। জনসংখ্যার বেশিরভাগটাই শিয়া। আরেক পাশের দেশ ওমানও না সুন্নি না শিয়া না সালাফি, চিন্তাজগতে সৌদির ধারের কাছেও নেই ওমান । শিয়া ইরান এক ইয়েমেন নিয়ে টান দেয়াতেই সৌদির দম যায় যায় অবস্থা। বাকিগুলা নিয়া টান দিলে কি হবে???? ঐদিকে সৌদি রাজপরিবারের মধ্যেও আছে বিভক্তি। রাজপরিবারের কেউ কেউ অতি আধুনিক পশ্চিমা, কেউ কেউ হার্ডকোর অর্থডক্স ওহাবি, কেউ কেউ ইখওয়ানের প্রতি অনুরক্ত । আমি খুব বেশি অবাক হবো না মুসলিম বিশ্বের স্বার্থেই শক্তিধর অন্যকোন মুসলিম দেশই হয়তো সৌদ রাজ পরিবারের পতন ঘটিয়ে কল্যানকামি কাউকে অথবা রাজ পরিবারের ভেতর থেকেই হয়তো বিবেকি কারো উত্থান ঘটাব। ( কারন রাসুলুল্লাহ সা: এর দোয়া আছে, 
" জাজিরাতুল আরব অমুসলিমদের জন্য হারাম হোক ") বিপদে কখনোই নিজের ভাই আর কাছের বন্ধুকে দূরে ঠেলতে নেই । আহাম্মক আল সৌদ কি তা বুঝবে????????
সংগৃহীত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন