বাংলাদেশ বার্তাঃ সরকার দেশের জনগণকে দুর্ভোগে ফেলে শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে
নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশের শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলন বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে নিরপরাধ কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের উপর পুলিশ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের নির্লজ্জ হামলা, সরকারের ইঙ্গিতে সরকারের মদদপুষ্ট পরিবহন মালিক ও শ্রমিক কর্তৃক সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িতে ও সুজন সম্পাদক জনাব বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় সন্ত্রাসীদের হামলার নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জনাব মকবুল আহমাদ আজ ৫ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলন বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে সরকারের সমর্থক পরিবহন শ্রমিকদের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের সর্বস্তরের জনগণের সাথে সাথে আমরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলন বানচাল করার জন্য বাস চলাচল বন্ধ রেখে পরিবহন শ্রমিকদের মাঠে নামিয়ে সরকার আত্মঘাতি কাজ করছে। দেশবাসী ভালভাবেই জানেন যে, সরকার দেশের জনগণকে দুর্ভোগে ফেলে শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। যানবাহন বন্ধ রাখার ফলে সৃষ্ট জনদুর্ভোগের জন্য সরকারই একশত ভাগ দায়ী। সরকারের চরম ব্যর্থতার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন বহু মানুষ পঙ্গু হচ্ছে এবং গড়ে প্রতিদিনই প্রায় ৬৪ জন লোক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের দাবি মানার আশ্বাস দেয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করতে পারছে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়নি। কোন প্রজ্ঞাপন জারী না করে বরং প্রধানমন্ত্রী নিজেই আদালতের দোহাই দিয়ে ভিত্তিহীন অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। যে কারণে শিক্ষার্থীরা তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করতে পারছে না।
প্রধানমন্ত্রী একদিকে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়ার কথা বলছেন, আবার অন্যদিকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। ৪ জুলাই জিগাতলায় ছাত্রলীগের হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের হাতে ছাত্রীরাও লাঞ্ছিত হয়েছে। আজ ৫ আগস্ট পুলিশ ছাত্রদের উপর টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশ এবং ছাত্রলীগ যৌথভাবে ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। অবশ্য ছাত্ররা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
সুজনের সম্পাদক জনাব বদিউল আলম মজুমদারের বাসা থেকে নৈশভোজ শেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বের হওয়ার সাথে সাথেই রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে এবং জনাব বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় হামলা হয়। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করছি।
এভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলন দমন করা যাবে না। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের আস্থায় এনে তাদের দাবি মেনে নিয়ে তাদেরকে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। অন্যথায় উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ী থাকতে হবে।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন