বাংলাদেশ বার্তাঃ আজ ৩০ জুলাই ব্যালট ডাকাতি, কারচুপি, জালভোট প্রদান, ভোটকেন্দ্র দখল এবং স্বতন্ত্র ও বিরোধীদলের কর্মী ও ভোটারদের সাথে সরকারী দলের প্রার্থী এবং পুলিশের সংঘাত, সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ৩০ জুলাই, ২০১৮ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সিলেট, রাজশাহী ও বরিশালে আজ ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ব্যালট ডাকাতি, কারচুপি, জালভোট প্রদান, ভোটকেন্দ্র দখল এবং স্বতন্ত্র ও বিরোধীদলের প্রার্থীদের এজেন্টদের ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া এবং স্বতন্ত্র ও বিরোধী দলের প্রার্থীদের কর্মী এবং ভোটারদের সাথে পুলিশের ও সরকারী দলের প্রার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সরকার ও সরকারের
আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন সরকারী দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করানোর জন্য তিনটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে ভোট ডাকাতি ও প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত করেছে।
সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাত দুষ্ট গর্হিত আচরণ দেশের জনগণ ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের হতবাক করেছে। আমরা বর্তমান সরকার তাদের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বচন না হওয়ার যে আশংকা করে আসছিলাম আজ তা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। অনিয়ম, কারচুপি, ব্যালট ডাকাতির ও ভোট কেন্দ্র দখলের প্রতিবাদে আজ বেলা ১২টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিরোধী দলের মেয়র প্রার্থী জনাব মুজিবুর রহমান সরোয়ারসহ বিরোধী দলের সকল প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাকে ও বাসদের মেয়র প্রার্থীকেও সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা লাঞ্ছিত করেছে। তিন সিটিতে গত কয়েক দিন যাবতই আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা বিরোধী দলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নেতা-কর্মীদের বাড়ীতে- বাড়ীতে হানা দিয়ে গ্রেফতার ও হত্যা করার হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছে। ভোটারগণের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্র নিয়ে ভোট দানের মত কোন পরিবেশই ছিল না। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩০ নং ওয়ার্ডের বিনোদপুর ইসলামিয়া কলেজের কেন্দ্রে ৩০ মিনিটে ৫৬টি ভোট পড়ার খবর সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে। সিলেটের ৩টি কেন্দ্রের ভোট ২৯ জুলাই রাতেই কেটে নৌকা প্রতীকে সীল মেরে বাক্সে ঢুকানোর অভিযোগও প্রকাশিত হয়েছে। সিলেটের কাজী জালালউদ্দিন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গোলাগুলিতে ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। সিলেটে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের পোলিং এজেন্টদের কাজির বাজার, মীরা বাজার জামেয়া স্কলার্স হোম, নবীনচন্দ্র বিদ্যালয়, হাতিম আলী স্কুল, বাগাবাড়ী ধর্মকেন্দ্র, এমসি কলেজ, লামা বাজার ও জালালাবাদ, ভোট কেন্দ্রসহ প্রায় ৩০টি ভোট কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দেয়া হয়েছে। রায়সর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র বিরোধী দলের প্রার্থীকে লক্ষ্য করে ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। বরিশালের পশ্চিম কাউনিয়ার সৈয়দ মজিদুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সকল ব্যালট বইতে নির্বাচনের আগেই নৌকায় সীল মারা হয়েছে। রাজশাহী ইসলামীয়া কলেজ কেন্দ্রে বিরোধী দলের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল কত ভোট কাস্ট হয়েছে তা জানতে চেয়ে অবস্থান নেওয়ার কারণে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। আজকের তিনটি সিটি করপোরেশনের ব্যালট ডাকাতি ও প্রহসনের নির্বাচনের ঘটনার দ্বারা আরো একবার প্রমাণিত হলো যে, বর্তমান সরকার ও তার আজ্ঞাবহ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আদৌ কোন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।
সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে আজ ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত ব্যালট ডাকাতি ও প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে নতুনভাবে নির্বাচন দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন