ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৮

আমার আদরের সামিয়া


বাংলাদেশ বার্তাঃ ওকে নিয়ে যে আমাকে লিখতে হবে তা আমার ভাবনায় ছিল না । ২৪তারিখ শুক্রবার রাত ১০-৩০মিনিটে ঈদ উপলক্ষে ফেসবুক লাইভ করছিলাম। প্রায় দুই দশকের রেডিও টিভি সংবাদপাঠ উপস্থাপনায় যা হয়নি তাই ঘটলো এখানে। টেলিভিশন, রেডিও , শিল্পকলা, নিমকোতে শব্দচয়ন, বাচনভঙ্গি, উচ্চারন, উপস্থাপনা বিষয়ে জীবনে যতো প্রশিক্ষণ নিয়েছি আর চর্চা করেছি তার সব গ্রামার ভেঙে লাইভ  প্রোগ্রামের শেষের দিকে বাঁধ ভাঙ্গা চোখের পানি তার উপর মোবাইল ফোন অন রাখা সত্যিই ব্যতিক্রম ঘটনা। একটি কল প্রগ্রামের ভিতরই চলে আসলো, আমি কেটে দিলাম। ইতিমধ্যে আমাদের পারিবারিক গ্রুপে বড় ভাবী লিখলেন “ইন্না লিল্লাহি অইন্না ইলাইহি রাজিউন, সামিয়া-সামিয়া”। আমার বড় মেয়ে লাইভ শেষে এসে বললো,আব্বু কল দাওতো। বড় ভাইকে ফোন দিলে শান্তভাবেই বললেন সড়ক দুর্ঘটনার কথা,জানালেন সামিয়ার মৃত্যুর খবর। আমার ছেলে মেয়ে চারিদিকে ঘিরে বসা। অনেকক্ষণ নীরব থেকে নিজেকে সামলিয়ে জীবন মৃত্যু নিয়ে একটা ভুমিকা দিয়ে খবরটা বলতেই,তাদের চোখের পানি আর বুক ফাটা কান্নায় আমি নিজেকে ওদের থেকে আড়াল করে নিলাম। সামিয়ার সাথে ওদের হৃদয়ের বন্ধন আরেকবার কাছ থেকে দেখলাম। আমার বড় মেয়ে সারা রাত ঘুমালো না।আমার বড় ছেলে থেকে সামিয়া এক বছর বড়।আমার বিয়ের সময় ও ২০ দিনের বেবি।দুধের মতো সাদা রং। জন্মের পর যেখানে বাচ্চারা কেঁদে ওঠে ও সেখানে পিক করে হেসে উঠেছিলো। আমরা তিনবোন দুই ভাই। বোনরা বড়।তার মাঝে মেঝো বোন আগেই মারা গেছে ক্যান্সারে। তার জন্যই আমার বোনের গান গাওয়া। সামিয়ার আম্মা বোনদের মাঝে ছোট। আমার থেকে প্রায় ৪ বছর বড়। আম্মা গল্প করতেন,ছোট সময় পুকুরে নামলে আমার আর খেয়াল থাকতো না, আম্মা ছোট আপাকে পাঠাতেন আমাকে নিয়ে আসতে। বাসা থেকে তা ছিল অনেক দুরে। আমার এই বোনটি আমাকে এতই আদর করতো যে ছোট ভাইর কষ্ট হবে ভেবে বাকিয়ে বাকিয়ে কষ্ট করে পুরোটা পথ রোদের মাঝে কোলে করেই আনতো।এই বোনের তিন ছেলেমেয়ে তাদের মায়ের মতোই হলো। প্রত্যেকেই গায়ে গায়ে মাখিয়েই আদর নিতো। তার মাঝে সামিয়া আরেকধাপ এগিয়ে। এমনিতেই ও ছোট আর আমিও ছোট মামা। আমাকে দেখলেই দৌড়ে এসে “মামা ছোট” ডাক দিয়ে গলাটা জড়িয়ে আমার বুকে কতক্ষণ মাথাটা লাগিয়ে রাখতো। স্পন্দন থেকে বের হওয়া টুনটুনি আসরের ভিডিও গানগুলোতে ও থাকতো । এগুলো সবই আজ স্মৃতি। সামিয়া অসম্ভব মেধাবী ও বইপাগল ছিলো।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আই বি এ থেকে বিবিএ শেষ করেছিলো। ছোট সময় যে সরলতা দেখেছি বড় হয়েও তার এতটুকু ছেদ হয়নি । জীবনের জটিল বিষয়গুলো ছিলো ওর বুঝার বাইরে। অসম্ভব পরোপকারী, অন্যের জন্য প্রান উজাড় করা একটি মেয়ে সামিয়া। আমার ছেলে মেয়েগুলো গত ঈদে ওদের বাসায় গেলে নিজের রুমটা ভাইবোনদের জন্য ছেড়ে দিয়ে পুরো রাতটাই পড়ার কথা বলে ড্রয়িং রুমে কাটিয়ে দিলো। আমার ভগ্নিপতিকেও দেখেছি, তিন ছেলে মেয়ের মাঝে ওকেই বেশী মহব্বত করতে। ঘন্টার পর ঘন্টা বাপ মেয়ের কথা চলতো । প্রায় সময় বেড়াতে যেতেন তার আদরের সামিয়াকে নিয়ে। আমার ছোট আপা বলতো " ও কিভাবে যে সংসার করবে, সংসার জীবনের কোন কিছুইতো ও বুঝে না।'‘ আমি কিছু সময় পর নিজেকে সামলিয়ে ছোট আপাকে ফোন দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি আর ভাবছি বোনটার কি আমার সাথে কথা বলার মতো অবস্থায় আছে। কিভাবে আমি তাকে শান্তনা দিবো। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে কল দিলাম। আমি আশ্চর্য হলাম অপর প্রান্তর থেকে অত্যন্ত ধীরস্থির ভাবে বললো “ওতো কয়েকদিন পর অন্যের সংসারেই চলে যেতো, সেই যাওয়াটা না হয় আমার আল্লাহ কাছেই হলো।”(চলবে)
#SaifullahMansur

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন