ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০

আল্লাহ যেন এ রক্তের প্রতিটি ফোঁটা কবুল করেন

 

বাংলঅদেশ বার্তা ডেস্কঃ ৫ বছর পার হয়ে ৬ বছরে পড়লো। ২০১৫ সালে এ দিনটি বা এ সময়টি যখন পার করি, তখন এক কঠিন পরিস্থিতি। এ সময়ে আমরা সর্বশেষ সাক্ষাৎ করার জন্য ডাক পেয়েছি। সেদিন কী যেন হয়েছিল। কোন এক নেতা বা নেত্রী যেন বিদেশ থেকে দেশে এসেছিলেন। সারা রাস্তায় জ্যাম। আমি আগে চলে গেলাম কারাফটকের সামনে। চারিপাশে আমার হিতাকাংখি কেউ নেই। পরিবারের সদস্যরা বহুদুরে। আগের দুজন দায়িত্বশীলকে ১০টার পরপরই রায় কার্যকর করেছিল। আমাদের বেলায় তাই হয় কিনা- তা নিয়ে আমার তীব্র ভয়।

সব ভয়কে জয় করে চলে গেলাম কারাগারের সামনে। মনে হলো, রাজ্যের আক্রোশ আমার ওপর এসে পড়লো। কোনোরকমে কারারক্ষী আর আমার পরিচিত কিছু সাংবাদিক আমাকে টেনে হিঁচড়ে উদ্ধার করলেন। সেদিন দুজনের রায় একসাথে কার্যকর হয়েছিল। শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার আগে সাক্ষাতের জন্য ঢুকে যাওয়ায় আমরা হাতে কিছুটা সময় পেলাম। আস্তে আস্তে আমার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনেরা একে একে আসতে লাগলো।
সবাইকে নিয়ে ওয়েটিং রুমে গেলাম। এমনিতে ওয়েটিং রুমে লোকজন গিজগিজ করে। সেদিন আমরা দুটো পরিবার। নাম জমা দিলাম। আমাদেরকে ভেরিফাই করে ভেতরে নিলো। সাক্ষাৎ করলাম। মৃত্যুকে হাসিমুখে আলিঙ্গন করতে যাওয়া একজন মানুষের সাথে সাক্ষাত করলাম। কী তার বলিষ্ঠ আওয়াজ। কী বজ্রকন্ঠ। রীতিমতো ভাষণ দিলেন পরিবারের সবাইকে সামনে রেখে।
জীবনের শেষ নসীহতগুলো দিলেন। দীনের পথে থাকতে বললেন। কুরআন ও হাদিসকে নিয়মিত অনুশীলণ করতে বললেন। হালাল রিজিকের ওপর জীবন পার করার নির্দেশ দিলেন। তার বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়গুলোকে পরিস্কার করলেন। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়া অভাবী মানুষকে মাফ করে দিলেন। আমাদেরকে আল্লাহর হাওলায় ছেড়ে দিলেন।
বের হলাম। কেন রাত ১২টা পার হলো? ফাঁসি দিতে এত দেরি হচ্ছে কেন? সব নিয়ে কারাগারের সামনে জড়ো হওয়া মানুষগুলোর আক্রোশের শিকার হলাম আবারো। সাংবাদিকদের কিছু কথা বলার ছিল। সুযোগই পেলাম না। রীতিমতো শারীরিকভাবে হামলা। আম্মাসহ বাড়ির মহিলাদেরকে নিয়ে কোনোরকমে জায়গাটা পার হলাম। বকশী বাজার দিয়ে যখন পার হচ্ছি, মনে হলো কবরের নিস্তব্ধতা। জেলখানার সামনে যত ভীড়, যত আলো, ঢাকা শহরের অন্য অংশে যেন ততটাই নীরবতা।
বের হয়েই জীবন্ত মানুষটার জানাজা পড়ার জন্য বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা। ১০-১৫ মিনিটে চলে গেলাম অনেকদূর। কল্যাণপুর আসতেই রেডিওতে শুনি রায় কার্যকর। গাড়িতে কান্নার রোল উঠলো। সংগঠনের বেশ কিছু দায়িত্বশীল আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য অপেক্ষমান ছিলেন। তারাও যোগ দিলেন। একটু পর পর কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা ফোন দিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। কোথাও কোনো হামলার শিকার হলাম কিনা..অবিশ্বাস্য কিছু সময়....
সব কিছুকে পাড়ি দিয়ে ফজরের আগ দিয়ে বাড়িতে কবর দেয়ার জায়গায় পৌঁছলাম। জীবিত রেখে আসা বাবার লাশও অল্প কিছু সময় পর সেখানে এসে পৌঁছালো। আমি সিগনেচার করে মৃতদেহ নিলাম। তার সারা গায়ে তাজা রক্ত। আমার হাতে, কফিনে সর্বত্র সে রক্তের ছাপ। ফজর পড়ে সংক্ষিপ্ত জানাজা পড়েই দাফনও শেষ হলো।
রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা। আমি এখনো আমার হাতে সে রক্তের স্পর্শ পাই। আল্লাহ যেন এ রক্তের প্রতিটি ফোঁটা কবুল করেন। এ রক্তের বিনিময়ে আল্লাহ যেন তার প্রত্যাশিত ইসলামকে এ ভুখন্ডে কায়েম করে দেন। আমিন।
আলী আহমদ মাবরুর

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন