১১ এপ্রিল । কড়া রোদের বিকাল । ঘড়ির কাটা ৪টা অতিক্রম করলো। নাজিমদ্দিন রোডের নির্দিষ্ট ভবনের গেইটে দাড়িয়ে। স্থানটি কেন্দ্রীয় কারাগার। সবাই আসলে এক সাথে ঢুকবো এজন্য অপেক্ষা। কারাগারের বিশাল গেইট গুলো দেখলেই বুকটা হাহাকার করে উঠে। যাদের প্রিয়জন কারাগারে তারা এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। অসংখ্য স্বজন-প্রিয়জনের চাপা কান্না হাহাকারের সাক্ষী এইসব কারাগারের ইট-পাথরগুলো। উচু দেয়ালের এপাশে ওপাশে দুদিকে কান্নার শব্দ ইথারে ভাসে।
একটু পরেই বাসা থেকে যখন গাড়ী চলে আসলো মিডিয়া কর্মীগণ হুমরি খেয়ে পড়লেন। অনেক কষ্টে অসংখ্য মিডিয়া কর্মীর ভীড় ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করলাম। ঢুকতেই শুরু হলো কারারক্ষীদের নানান রকমের কায়দা কৌশলে দেহ তল্লাসী। শরীর পরিধেয় ছাড়া আর কিছূ নেই তারপরও নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা। একজনতো অতি উৎসাহী হয়ে চশমায় হাত দিলেন এটা নেওয়া যাবে না। পরে কি মনে করে আবার ফিরিয়ে দিলেন। ভাবলাম যেহেতু আমরা ফাসির আসামীর স্বজন তাই আমরা অসহায়, আমাদের প্রতি কোন সহানুভুতি থাকতে নেই। সর্বশেষ হাতে সিল আর প্রত্যেকের ছবি তুলে পূর্ণতা পেলেন তারা। এরপর নানান বাহিনীর মিশ্রনে তৈরি একটি টিম বেষ্টীত অবস্থায় আমরা অনেকগুলো মানুষ যাচ্ছি তাদের প্রিয়জনের সাথে দেখা করতে কিন্তু উচ্ছাস নেই, আনন্দ নেই, সবাই ব্যথায় বোবা হয়ে গেছে।
একটা বিষয় লক্ষ করলাম, আমরা ছাড়া আর কেউ কারাগারের খালি জায়গাটিতে নেই। শুনসান কবরের নিরবতা, আগেই সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বুঝা গেল। অনতিদুরের ঘরগুলোর জানালার পাশে অনেকগুলো কৌতুহলী চোখ দেখা যাচ্ছে। ডান দিকের কোনায় লক্ষ করলাম অনেক কয়েদীরা উকিঝুকি মারছেন। হাটছি আমরা। বাম দিকের ছোট্ট কঠুরীগুলো আমাদের লক্ষ। বাম দিকে তাকিয়েই চমকে উঠলাম। কয়েক গজ দুরে বড় আম গাছটার পাশেই রঙ্গীন চাদোয়া দিয়ে কিছু অংশ ঘিরে রাখা হয়েছে। কলিজাটায় একটা মোচড় দিয়ে উঠল। বুঝতে বাকী রইলো না অল্প কিছুক্ষণ পরেই কি ঘটতে যাচ্ছে।
ফাসির মঞ্চ তৈরি হচ্ছে, সময় গনণা চলছে আর কিছুক্ষণ পর এখানেই ফাঁসতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হবে বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবি, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে সহকারী সেক্রেটারী জননেতা আলহাজ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান কে। ভাবতেই চোখের কোন ভিজে গেল। কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম।
কামারুজ্জামান চাচাকে যে সেলে রাখা হয়েছে তার নাম রজনীগন্ধা। জেলখানার কুঠুরিগুলোর নামে যেন একটা সুক্ষ বিদ্রুপ আছে। যেমন রজনীগন্ধা, বকুল। শেরপুরে আমি যে সেলে ছিলাম তার নাম ছিল অবকাশ। ভালো চিন্তা থেকেই হয়তো রাখা। যাই হোক আজ আমরা যার কাছে যাচ্ছি তিনিও একটা ফুলের মত। মনে মনে ভাবছিলাম দেখা হলে তিনি কি বলবেন আমরাই বা কি বলবো? মনে নানান স্মৃতি আর প্রশ্ন?? ভাবতে ভাবতে সেলের বাউন্ডারীতে ক্রমানুসারে এগুচ্ছি ১, ২, ৩ . .
এক, দুই গুণতে গুণতে আমরা আট সেলের পাশে এসে দাড়ালাম। আমি সামনের দিকে থাকলেও এগুনোর সাহস হলো না। বুকে আহাজারি। ওয়ামী ভাই আর চাচী (কামারুজ্জামান চাচার স্ত্রী) প্রথমদিকে ঢুকলেন এরপর ওয়াফী, সাফী, কফিল চাচা(কামারুজ্জামন চাচার বড় ভাই) আমি সহ পরিবারের অন্য সকলে।
ছোট্ট খালি জায়গা ১০ জন মানুষও ঠিক মত দাড়ানো যায় না সেখানে কারা কর্তৃপক্ষের (সংখ্যায় আমাদের মতই) জনবলসহ অতগুলো মানুষের সংকুলন হচ্ছিল না। তাই আমরা কয়েকজন প্রাচীরের বাইরে দাড়ালাম। ঢুকতেই সালামের আওয়াজ আসসালামুআলাইকুম। আমরা প্রায় এক সাথে ওয়ালাইকুম আসসালাম বললাম। চাচী আর ওয়ামী ভাই এগিয়ে গেলেন। উনি লোহার শিকের ওপারে কাছে দাড়িয়েছেন। একটা সাদা পাজামা, সুতী, পাঞ্জাবী আর টুপী পড়ে আছেন। এর আগে রায়ের পর যতবার গিয়েছি ততবারই জেলখানার সেই নির্ধারিত সাদা কালো ডোরাকাটা পরিধেয় দেখেছি, চলেই যাচ্ছি এই বিবেচনায় হয়তো এই পোশাকটা পড়তে দিয়েছেন।
ছোট্ট কুঠুরী। অন্ধকারের দরুন উনাকে ছাড়া আর ভিতরের কিছুই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। আলো আর বাতাস চলাচলের জন্য ঐ একটায় দরজা। নিচে আলোতে দেখলাম বিছানায় কুরআন শরীফ। বুঝা গেল আমারI আসার আগে কুরআন পড়ছিলেন। দরজার উপরে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত লেখাটা যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত মনে হলো। চাচী আর ওয়ামী ভাই মিডিয়া প্রচার নিয়ে জানতে চাইলেন। উনি বললেন দেখো ওরা শেষ র্পযন্ত মিথ্যাচার করলো। আমার সাথে কোন ম্যাজিস্ট্রেটের কথা হয়নি। অথচ মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে উনি ম্যাজিস্ট্রেটদের সাথে দূর্ব্যবহার করেছেন! আবার কোন মিডিয়া আরও একধাপ এগিয়ে বললো উনি প্রাণ ভিক্ষাও চেয়েছেন। অবাক হয়নি মৃত্যুপথযাত্রী একজন মানুষকে নিয়ে কেমন মিথ্যাচার !!!
উনি বললেন আজকে আমার সাথে যে মিথ্যাচার করা হলো, যে জুলুম করা হলো, বিনা দোষে, যে ঘটনার সাথে আমার কোন সর্ম্পক নেই এমন ঘটনায় আমাকে যেভাবে দোষী বানিয়ে হত্যা করতে যাচ্ছে আল্লাহ এর বিচার করবেন। এদেশের তরুন প্রজন্ম ঠিকই এর সত্য উদ্বঘাটন করবেন এবং প্রতিশোধ নিবেন। এটা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং জুলুম। এ সময় চাচী বললেন এগুলো বলে আর কি হবে। সবইতো আল্লাহ দেখছেন। আমাদেরতো আর কেউ নেই আল্লাহ ছাড়া, "আল্লাহ এর বিচার করবেন।"
আমরা তোমাকে আল্লাহর হাতে তুলে দিয়েছি। জান্নাতে দেখা হবে আশা করি। এ নিয়ে আমাদের কষ্ট নেই, আমরা ধৈর্যই ধারণ করলাম। ওয়ামী ভাইয়ের সাথে একান্তে কিছু কথা বললেন"। এর পর ওয়ামী ভাই বললেন আমাদের তো বলা হয়েছিল শেষ দেখায় সরাসরি বুক মেলানোর সুযোগ দেওয়া হবে। প্লীজ, আমার বাবার সাথে শেষ বারের মত বুক মেলানোর সুযোগ দেন। সন্তানের এমন আকুতিতে আমাদের সকলের চোখে পানি এসে গেলেও উপস্থিত কারা কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। পরে চাপাচাপির পর একজন বললেন আপনারা বাকীরা কথা বলেন আমি স্যারের সাথে কথা বলে দেখি। এরপর ওয়াফী ভাই, সাফী কাছে গেলেন।
উনি সকলকে লোহার শিকের ভিতর থেকে হাত বের করে মাথায় হাত বুলিয়ে বিদায় দিচ্ছেন। সন্তানদের কে চুমু খেলেন। এরপর কফিল চাচা এগিয়ে গেলেন। আগে থেকেেই জানতাম কফিল চাচা কামারুজ্জামান চাচাকে খুবই আদর করতেন। কফিল চাচার সাথে জেলখানায় যখন ছিলাম অনেক স্মৃতি চারণ করেছেন। বড় ভাইকে দেখে চুপ করে রইলেন, কফিল চাচা কাঁদতে লাগলেন, তিনি হাত বIড়িয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। চোখ মুছে দিলেন। বড় ভাই আদরের ছোট ভাইকে বিদায় দিতে এসেছে। অথচ ছোট ভাই, বড় ভাইকে সান্ত্বনা দিয়ে কথা বলছেন। কেমন চিত্র বর্ণনা করার ভাষা নেই। একটু পর উনি জিজ্ঞাস করলেন ভাই, কবরের ব্যবস্থা কোথায় করছো? কফিল চাচা বললেন তোমার এতিমখানার পাশেই রাস্তার সাথে মাটি ভরাট করে ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার সেই হাতে গড়া প্রিয় এতিমখানা, প্রিয় গ্রাম মুদিপাড়া।
আমি যখন উনার সাথে সেই গ্রামে গিয়েছি উনি বলতেন, জানো মোস্তাক, আমাদের গ্রামটা আগের মতই আছে মনে হয়, লোকগুলোও সহজ সরল। উনার বাড়ীর কাছে একটা শতবর্ষী গাছ দেখিয়ে বলেছিলেন এই গাছটা ছোট বেলা থেকেই এই রকম অবস্থা আমি যখন স্কুলে যাই তখন দেখছি, আজও ঐ অবস্থায় আছে। ভাবছি গ্রামে জন্ম নিয়েছেন তার প্রিয় গ্রামেই ফিরতে যাচ্ছেন। একটু ভাবলেন, মনে মনে কবরের জায়গাটা কল্পনা করলেন . . মাথা নেড়ে বললেন, ঠিক আছে, ভালো হয়েছে। আবার জিজ্ঞাস করলেন জানাযা কাকে দিয়ে পড়াবে। আউয়াল(তার চাচাতো ভাই সদর জামায়াতের আমীর) হলে ভালো হয়। কফিল চাচা বললেন আউয়ালতো আসতেই পারছেনা না পুলিশের অত্যাচারে। হাফিজুর বলছিল, নুরুল আমীন মাওলানার কথা। ফারুক(তার ভাতিজা) বললেন আমাদের জামাই আছে আঃ হামিদ এখন মাদ্রাসা ভারপ্রাপ্ত সুপার। উনি বললেন, সমস্যা নাই, এদের মধ্য থেকেই পড়াক। হামিদ পড়াক ভালোই হবে। জানাযা করতে দিলে সবাইকে থাকতে বলো।
এই কথাগুলো বলতে বা লিখতে যত না কষ্ট হচ্ছে এই কথোপকথন শুনতে এবং দেখাটা সহ্য করা ততই কঠিন ছিল। একজন মানুষ আর কয়েক ঘন্টা পর পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন মনে একটু ভয় নেই, চোখে কান্না নেই অবলীলায় নিজের স্থায়ী বাসস্থান ঠিক করে নিচ্ছেন। তখন মনে হলো মৃত্যু বুঝি এদেরই সাজে যারা মৃত্যু কে ভয় পায় না। তারপর ফারুক ভাই কথা বললেন এর পর আমি গেলাম। চিরচেনা সেই মুখটায় কেমন জানি উজ্জল মনে হলে, আমার মুখে কথা আসছিল না। চোখে পানি। উনি বললেন তোমার আব্বা-আম্মা কে আমার সালাম দিও। তারপর উনার আন্দোলন জীবনের দীর্ঘদিনের সহকর্মী এবং মুরব্বী শ্রীবরদী ডাঃ আঃ মমিন এবং অধ্যাপক মাযহারুল ইসলামকে সালাম পৌছাতে বললেন। সবাইকে সালাম এবং দোয়া করার জন্য বললেন। আমি শুধু মাথা নাড়ছিলাম। মুখটা কাপছিলো। হাত বাড়িয়ে পিঠে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। আমি আমার মাথাটাকে লোহার শিকে রাখলাম। লোহার শিকের ফাকাগুলেI ছোট হওয়াই উনার চশমাটা বার বার বাড়ী খাচ্ছিল। উনি অনেক কষ্টে কপালে চুমু একে দিলেন। বুকটা হাহাকার করে উঠলো।
এরপর উনার আরেক আত্নীয় সাথে ছোট্ট শিশু ছিলো তাকে দেখেই বললেন ওদের জন্য আমি চকলেট কিনে রেখেছিলাম বলে বিছানা থেকে চকলেটের প্যাকেট টা বের করে দিলেন। অন্যদিকে কারা কর্তৃপক্ষ সময় গুনছিলেন। ১৭ মিনিট, ১২ মিনিট ৭ মিনিট এই ডাকগুলো যেন বুকে শেলের মত বিধছে। পর কারা কর্তৃপক্ষ বললে পরিবারের আপন সদস্য সন্তান, ভাই, আর স্ত্রীর জন্য গেইট খুলা হবে। আমরI একটু সরে আসলাম I উনি তার পরিবারের আপন সদস্যদের সাথে কথা বললেন, বুক মেলালেন।
সময় শেষ, তিনি সকলকে নিয়ে মোনাজাত করলেন। কুরআন থেকে কয়েকটি আয়াত তেলাওয়াত করলেন, দুরুদ পড়লেন শেষে বললেন, হে আল্লাহ আমি দেশের জন্য কাজ করেছি, ইসলামের জন্য কাজ করেছি I যারা এই অন্যায় বিচার করলেন এই জালিম স্বৈরাচারী সরকার সহ, এই বিচারে যারা সহযোগিতা করেছে, সাক্ষী দিয়েছেন তাদের সকলের প্রতি অভিশাপ দিয়ে গেলাম। এদের বিচার আপনি দুনিয়াতে এবং আখিরাতে উভয় জায়গায় করেবেন। আমি আমার দুই হাত দিয়ে কোন অন্য কাজ করিনি, আমার মুখ দিয়ে কাউকে গালি দেইনি, আমার সম্পর্কে আপনি ভালো জানেন, সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে হত্যা করতে যাচ্ছে, আপনি আমাকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন। আমার মৃত্যুর পর আপনি আমার পরিবারের উত্তম অভিভাবক। তাদেরকে হেফাজত করুন। আমার পরিবার, স্বজন, ইসলামী আন্দোলনের সর্বস্তরের সকল নেতাকর্মী সহ সকলকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দিন। তাদেরকে জালিমের হাত থেকে হেফাজত করুন। এদেশের ইসলামী আন্দোলনকে হেফাজত করুন। আমার ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দিন।
দোয়া শেষে ওয়ামী ভাইকে বললেন, শেরপুরসহ দেশ এবং বিশ্ববাসীকে সালাম জানাবে এবং দোয়া করতে বলবে।আমরা প্রাচীরের বাহিরে ধীরে ধীরে চলে আসছি। বাহিরে বেরিয়ে দেখি এতক্ষণে আসার সময় খালি লোহার গ্রীল গুলো রঙ্গিন চাদোয়াই ঢাকা প্রায় শেষ। রঙ্গীন কাপড়ে ঘেরা ফাসির মঞ্চের দিকে তাকালাম। না, এবার আর ভয় নই, কেমন এক অদ্ভুত সাহসী আবেশ মনে ভর করলো, বুকটা হালকা মনে হল। যাকে বিদায় দিতে গেলাম উনিতো প্রস্তুত তাহলে আর ভয় কেন? দুরে বাতাসে মুয়াজ্জিনের আযানের ধ্বনী আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাললাহ . . . . . . আমরাও সাক্ষী দিলাম
রঙ্গীন চাদোয়া ঢেউ খেলছে, তেজদীপ্ত সূর্যও তেজহীন হয়ে পশ্চিমে হেলে পড়েছে। কোনায় কয়েদীদের আবার শুরগোল। রেখে আসলাম I না, আল্লাহর কাছেই সপি দিয়েছি, ভয় নেই, উনি ঠিকঠাক পৌছে যাবেন তার মহান প্রভুর কাছে। যান চাচা, আবার দেখা হবে, ভুলে যেয়েন না ।
**** মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক
সাবেক জেলা সভাপতি, ইসলামী ছাত্রশিবির, শেরপুর জেলা
সাবেক জেলা সভাপতি, ইসলামী ছাত্রশিবির, শেরপুর জেলা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন