ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০১৬

জামায়াত-বিএনপি জোট ভাঙ্গার মতলবটা বুঝতে হবে ॥ মুহাম্মদ আবদুল জব্বার॥


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা ও ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজের প্রাক্কালে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও দল মত নির্বিশেষে প্রধানমন্ত্রীকে “জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য” গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও “জাতীয় ঐক্য” গড়ে তোলার ব্যাপারে রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে তার কার্যালয়ে মতবিনিময় করেছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বিএনপিকে ‘জাতীয় ঐক্য’ গঠন করতে হলে জামায়াতকে ছেড়ে আসার আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপাররসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে জামায়াত ছাড়া প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য না আসলেও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে কেউ কেউ মনে করেন ‘জাতীয় ঐক্যে’র জন্য এটা মোক্ষম সময়। এজন্য জামায়াতকে ছাড়তে হলে তাতেও তারা রাজি। মিডিয়ার সামনে তাদের উচ্ছ্বসিত বক্তব্যে মনে হয় জামায়াত ছাড়লে তারা সহজেই ক্ষমতার নাগাল পেয়ে যাবেন!
“জামায়াত ছাড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ যুগান্তরকে বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ নয়, অনেকেই জামায়াত ছাড়ার ব্যাপারে তাদের মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ যদি লিখিতভাবে কোনো প্রস্তাব দেয় তাহলে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনে নিশ্চয় আমরা তা বিবেচনা করব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমাদের প্রধান ল্য জাতীয় ঐক্য। ধরুন, বডিটা হলো জাতি। তাতে যদি চুল লম্বা হয়ে যায় কাটতে আপত্তি নেই। নখ কাটতে আপত্তি নেই। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব। যাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি। তাতে দু’একটা ছিটেফোঁটা এদিক-সেদিক হয়ে যেতে পারে।” সুত্র : দৈনিক যুগান্তর ১৮ জুলাই, ২০১৬।
উনার সহজ সরল বক্তব্যে বুঝা যায় জামায়াত-বিএনপিকে আওয়ামী লীগ কেন দীর্ঘদিন ধরে আলাদা করতে চায় তা তিনি ভুলে গেছেন অথবা তিনি মনে করছেন ‘জাতীয় ঐক্য’ প্রতিষ্ঠিত হলে এর মাধ্যমে বহু প্রতিক্ষিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম হতে পারে। উনার মতো বিএনপিতে যারা এমন অংক কষছেন তাদের এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দূরদর্শিতা আসলে কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। দেশের সচেতন নাগরিক মাত্রই জানেন যে, আওয়ামী লীগ প্রকৃত পক্ষে যেকোন মূল্যে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার নিমিত্তে যে কোনো ছল-চাতুরি করতে পারে। সে লক্ষ্যেই তারা দেশকে বিরোধীদল শূন্য করে হাতে গোনা ক’টি গৃহপালিত বিরোধী দল বাঁচিয়ে রাখতে চায়। আর এখন সেই আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা জামায়াতকে বিএনপি থেকে কেন আলাদা করতে চাইছে তা বুঝতে বিএনপির কিছু সিনিয়র নেতাদের এখনো দেরি হচ্ছে! ওনাদের জন্য আফসোস করা ছাড়া কিইবা করার আছে?
আওয়ামী লীগের ‘জাতীয় ঐক্য’ ‘জাতীয় ঐক্য’ (!) খেলা করতে বিএনপি যত পেরেশান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তত পেরেশান নন-
“প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল, গুলশান হামলার পর জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার কথা বলছে অনেক রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এই ঐক্যের প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন কি না? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ইতিমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, যুদ্ধাপরাধ ও আগুন-সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, তাদের কথা আলাদা। এদের বাইরে যাদের মধ্যে ঐক্য দরকার, যাদের সঙ্গে ঐক্য হলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে, তাদের মধ্যে ঐক্য হয়েছে।” সুত্র : দৈনিক প্রথম আলো ১৭ জুলাই, ২০১৬।
প্রধানমন্ত্রীকে সর্বমহল থেকে জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে আহ্বানের পর এমন বক্তব্য সচেতন মহলকে হতাশ করেছে। এরপরও বিএনপি ‘জাতীয় ঐক্য’ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিএনপির ভেতরে যারা জামায়াতকে বাদ দিয়ে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়তে চান তারা কি মনে করেছেন আওয়ামীলীগ এত তাড়াতাড়ি তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের পরিবর্তন করছে বা করেছে? সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোর সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রকৃত মনোভাব সহজে অনুমেয়-
“আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের আটজন নেতার সঙ্গে কথা বলে দলটির এই চিন্তা ও উদ্যোগের কথা জানা গেছে। তাঁরা বলেন, জামায়াত ছাড়লেই বিএনপির সব বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে, এমনটা নয়। তখন প্রশ্ন আসবে, তাহলে বিএনপি কি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ও বর্তমান সরকারকে মেনে নিচ্ছে? আর সরকারকে মেনে নিলে সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালে নির্বাচন হবে, এটাও মেনে নিতে হবে। একই সঙ্গে ২০১৩-২০১৫ সালে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের বিষয়েও বিএনপিকে ভুল স্বীকার করতে হবে। এসব রাজনৈতিক হিসাব চুকে যাওয়ার পর বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভূমিকা কী হবে, সেটাও সামনে চলে আসবে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, তারা মনে করে, বিএনপিতে জামায়াত ছাড়ার আওয়াজ উঠেছে জঙ্গিবাদের বদনাম ঘোচানোর জন্য। তবে জামায়াতকে পুরোপুরি ছাড়বে না। দেশে-বিদেশে জঙ্গিবিরোধী যে মনোভাব তৈরি হয়েছে, তা থেকে বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়। এ জন্য জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগের নামে সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবিরোধী একটি জাতীয় সম্মেলন করার পরিকল্পনা করছে। তাতে হয়তো জামায়াতকে ডাকবে না, তবে সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে মতা থেকে নামানোর বিষয়টিও আলোচনায় আসবে। এই অবস্থায় বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে দলটিকে রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের সুযোগ দিতে রাজি নয় সরকার ও আওয়ামী লীগ।” সুত্র : প্রথম আলো ২৩ জুলাই, ২০১৬।
বিএনপি কি তাহলে উপরোক্ত শর্তগুলো মেনে নিচ্ছে? যেখানে দলের চেয়ারপারসনকে তার স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে লাঞ্ছিত করে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যে দল নতুন করে গুলশান এলাকায় অবৈধ স্থাপনা সরানোর নামে বিএনপির গুলশান কার্যালয় সরানোর ব্যাপারে ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার প্রদর্শন করছেনা, সে দল খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াকে মামলা-মোকাদ্দমার ফাঁদে ফেলে বিএনপিকে সর্বস্বান্ত করবেনা তার গ্যারান্টি কি?
ইতিহাস কারো অজানা নয়। একটু অতীতের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায় আওয়ামী লীগ ও বাম দলগুলো ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জামায়াতের সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। দেশে কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শুধু আওয়ামী লীগ কেন, অন্যান্য বামপন্থী দলকেও জামায়াতের সঙ্গে সংসদে ও রাজপথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক হয়ে আন্দোলন করতে দেখা গেছে। আন্দোলন নিয়ে শেখ হাসিনা ও মাওলানা নিজামীসহ দু’দলের নেতারা প্রকাশ্য দিবালোকে বৈঠক করেছেন তার প্রমাণও রয়েছে। শেখ হাসিনার সভানেত্রীত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মাওলানা নিজামীর পাশে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে বসে থাকতে দেখা গেছে সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবিতে। দেশে কেয়ারটেকার সরকার ফর্মুলা উপস্থাপনের দাবিদার জামায়াতের সঙ্গে এই ইস্যুতে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রবল গণআন্দোলন গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ধর্মনিরপেবাদী ও বামপন্থী জোটের কোনোই সমস্যা দেখা যায়নি। এখন আবার তারাই বলছে জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকারের দল! স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে যুগপৎ আন্দোলনের সময় কি তারা ভুলে গিয়েছিল জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী? আর এখন সেই জামায়াতকে নেতৃত্বশূণ্য করতেই আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা একের পর জামায়াত নেতাদেরকে পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছে। এসব ঘটনা থেকে সহজে অনুমেয় যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য যেকোন পথ বেছে নিতে পারে।
আওয়ামী লীগ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের নামে কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠে। অথচ বিএনপি তার মিত্র শক্তির এমন দুর্দিনেও টু-শব্দ পর্যন্ত করেনি। তারা মনে করেছিল যা হবার জামায়াতের হবে, তাতে আমাদের কি! আর এখন? স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য সালাউদ্দীন কাদের চেীধুরীর ফাঁসি হলো, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ড. ওসমান ফারুকের ব্যাপারে ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং ২১ জুলাই ২০১৬ একটি মামলায় হাইকোর্ট তারেক জিয়াকে ৭ বছর কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করে! এখন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলছেন তারেককে দেশে আনা হবে! এটি মনে হচ্ছে সবে মাত্র শুরু। আওয়ামী লীগ জামায়াতের সাথে যে মরণ খেলায় মেতে উঠেছে, বিএনপির সাথে তা করবেনা এর গ্যারন্টি কোথায়?
অনেকে মনে করেন, আওয়ামী লীগের ‘জাতীয় ঐক্য’র নামে জামায়াত ও বিএনপি ভাঙনের পিছনে মূল টার্গেট ভোটের রাজনীতি। কারণ ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১-এর নির্বাচনসমূহ এই বার্তা দেয় যে, বিএনপি-জামায়াত জোটবদ্ধ থাকলে বিপুল বিজয় নিশ্চিত হতে পারে। আর পৃথক হলে তার বিরূপ ফলাফল অবধারিত। পরবর্তী সময়ে এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও সাংঘাতিক সরকারি চাপ, সন্ত্রাস, কেন্দ্র দখল প্রভৃতির মধ্যেও বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা প্রভৃতি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অনেকটা সাফল্য লাভ করতে সমর্থ হয়। বিশেষ করে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত চার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের বিপুল বিজয় এর উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত। সুতরাং জামায়াত থেকে বিএনপি আলাদা হলে বিএনপির ক্ষতি কি তা সহজে অনুমেয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক । এই দলটি সবসময় সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা, অগণতান্ত্রিক ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার। নানা টোপে ফেলে সরকার জামায়াতের মাধ্যমে জোটে ভাঙন সৃষ্টি করতে অপচেষ্টা চালিয়েছে। সরকার এই অপচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েই জামায়াত নেতাদের হত্যা, জেল, জুলুম-নির্যাতনের পথ বেছে নেয়। জামায়াত মনে করে ২০ দলীয় জোটের ঐক্য দেশ ও জাতির প্রয়োজনে অটুট থাকা জরুরি। অবশ্য এজন্য জামায়াতকে অনেক চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। অনেকেই মনে করেন শুধু বিএনপি জোটের সাথে থাকার কারণেই জামায়াত দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে শীর্ষ নেতাদের হারিয়েছে। কথিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও রাজপথে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে জামায়াত ও শিবিরের অনেকে নিহত হয়েছেন, যা এখনো অব্যাহত আছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী পুলিশ ও সরকার দলীয় ক্যাডারদের আক্রমণে আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অসংখ্য কর্মী কারান্তরীণ। হাজার হাজার মিথ্যা মামলায় লাখ লাখ নেতা-কর্মী এখন ফেরারি জীবন যাপন করছেন। দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে মনে করেন জোট থেকে বেরিয়ে আসলে সরকারের জুলুম-নির্যাতন কমতে পারে। তাদের প্রশ্ন জোটে থেকে জামায়াতের লাভ কি? যেখানে সরকার জামায়াত নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা অভিযোগে হতাযজ্ঞে মেতে উঠলেও বিএনপি একটি বিবৃতিও দিতে পারেনা! অবশ্য তাদের অনেক মান-অভিমান থাকা সত্ত্বেও তারা দেশ ও জাতির প্রয়োজনে জোটে থাকা জরুরি বলে মনে করেন। তবে শুধু ভোটের রাজনীতির জন্য জোট না হয়ে নতুন করে কর্মপরিকল্পনা ও করণীয় করা জরুরি।
সচেতন মহলের অনেকে মনে করেন, জামায়াত-বিএনপি সম্পর্ক ছিন্নের কাজে যারা লিপ্ত তারা ভিন্ন কোনো পক্ষের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কাজ করছেন। আর এমন লোকদের যথাযথ ভূমিকার অভাবেই বিগত আন্দোলন সফল হতে পারেনি। সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের কারণে মাঠে অনেক তাজা ইস্যু থাকা সত্ত্বেও কার্যত এখনো সরকারবিরোধী কোনো সফল আন্দোলন ২০ দলীয় জোট গড়ে তুলতে পারেনি, কিন্তু তারপরেও দেশের চলমান নাজুক পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোট ভাঙা কোনোভাবেই সমীচীন হবেনা। এই জোটই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ত্বরান্বিত করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার শেষ ভরসা। জনগণ সরকারের অব্যাহত জুলুম-নির্যাতন ও মামলা-হামলার কারণে শুনশান নীরবতা পালন করলেও দেশের সিংহভাগ মানুষ সরকার বিরোধী মনোভাব পোষণ করছে। সফল আন্দোলন ও পরিবর্তনের জন্য হয়ত আরো কিছু কালক্ষেপণ করতে হবে, কিন্তু মনে রাখতে হবে ফ্যাসিবাদী কোনো শাসক কোনো দেশেই বেশি দিন টিকে থাকতে পারেনা। তবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগের পাতানো ফাঁদে পা দিলে দেশ ও দলের অবস্থা বিপন্ন হবে যা সহজেই অনুমেয়।
লেখকঃ সাবেক কেন্দ্রিয় সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন