ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬

তুরস্কের সঙ্কটকালে এরদোগানের পাশে আবদুল্লাহ গুল

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল: ফাইল ছবি
বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল। তুরস্কের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার অবদান অপরিসীম। ফলে রাজনীতি থেকে অবসর নিলেও এই সঙ্কটময় মুহূর্তে তিনি ক্ষমতাসীন ডেভলপমেন্ট এন্ড জাস্টিস পার্টি’র (একেপি) পাশে দাঁড়িয়েছেন। 
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান, প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম, তুর্কি পার্লামেন্টের স্পিকার ইসমাঈল করামান এবং সেনাবাহিনী প্রধান হুলুসি একারে সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন। তবে ওইসব বৈঠকের মূল এজেন্ডা জানা যায়নি। খবর সিএনএন তুর্কের।
বৈঠকের পর সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল বলেছেন, ১৫ জুলাই (শুক্রবার) রাতে দেশকে এক অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা করা হয়েছিল তা ব্যর্থ হওয়ায় তুরস্কে ফের পুরানো দিন ফিরেছে। তিনি আরো বলেন, বিপদগামি সেনাদের ষড়যন্ত্র, হত্যা, রাস্তায় সংঘর্ষ ও পার্লামেন্টে বোমাবর্ষণের ঘটনা তুরস্কের জন্য এক ‘অন্ধকার দাগ’। এমন কিছু ঘটতে পারে, কেউ তা কল্পনাও করতে পারেনি। 
তিনিও এই ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফেতুল্লাহ গুলেনকেই দায়ি করেছেন। তিনি গুলেনের ‘রাষ্ট্রের মধ্যে বিকল্প রাষ্ট্রব্যবস্থা’ এর কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন তার দলের বন্ধুরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের উদ্দেশ্যে হাসিলে সফল হবেন। কোনো ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো চক্রান্তই সফল হবে না। 
এই ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনার পর তুর্কি পার্লামেন্টে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ার আলোচনাকে তিনি স্বাগত জানিয়ে বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এটা একটা গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।
ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রপতির জারি করা জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি পর গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে অনুমোদন করায় তিনি পার্লামেন্ট মেম্বারদের প্রশংসা করেন। 
রাজনীতি থেকে অবসর নিলেও তুরস্কের রাজনীতি এখনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত। তিনি সর্বদা একজন পরামর্শক হিসেবে কাজ করে আসছেন। গেল জুন মাসের নির্বাচনের আগে একটা রাজনৈতিক গুঞ্জন উঠেছিল তুরস্কের এই সাবেক প্রেসিডেন্ট ফের রাজনীতিতে আসছেন। ক্ষমতাসীন ডেভলপমেন্ট এন্ড জাস্টিস পার্টি’র (একেপি) মনোনয়ন নিয়ে তিনি হয়তো আবার সংসদে ফিরবেন এবং রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হবেন। 
সেসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আর সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশ নেব না। বরং যখনই প্রয়োজন হবে তখনই আমার চিন্তা-গবেষণা দিয়ে তাদেরকে (একেপি) সাহায্য করে যাব। সারাজীবন জাতির জন্য নি:স্বার্থভাবে কাজ করে যাব।’
কে এই আব্দুল্লাহ গুল? 
আবদুল্লাহ গুল ১৯৫০ সালের ২৯ অক্টোবর কায়সারি প্রদেশে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করে দুই বছর লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি ইউনিভার্সিতে শিক্ষকতা করেন। 
ব্যক্তি জীবনে ১৯৮০ সালে তিনি হাইরুনিসাকে বিয়ে করেন। স্ত্রী হাইরুনিসাও একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ইসলামী চিন্তাবিদ। তিনি তিন ছেলেমেয়ের জনক। 
তুরস্কের কায়সেরি এলাকা থেকে ১৯৯১, ১৯৯৫, ১৯৯৯, ২০০২ এবং ২০০৭ সালে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি ইসলামপন্থী ভার্চু পার্টিতে যোগ দেন। পরবর্তীতে তৎকালীন সরকার ভার্চু পার্টি নিষিদ্ধ করলে তার দীর্ঘদিনের মিত্র রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানসহ অন্যদের সঙ্গে মিলে ২০০১ সালে একেপি পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। 
মূলত: তার জীবনের স্মরণীয় অধ্যায় শুরু হয় ২০০১ সালে থেকেই। অতি অল্পসময়ের মধ্যেই নতুন প্রতিষ্ঠিত দলটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। দেশের মানুষ একে পার্টিকে মনে প্রাণে গ্রহণ করে নেয়। ২০০২ সাল থেকে দলটি প্রতিটি নির্বাচনে জয়লাভ করে আসছে। তিনি ২০০২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন । পরে ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশটির ১১তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেন।
এছাড়াও তিনি তুরস্কের উপ-প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। 
৬৫ বছর বয়সী এই প্রভাবশালীর নেতার সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার জন্যে বয়সটা খুব বেশি নয়। এরপরও তিনি সহকর্মীদের জায়গা করে দিতে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। তবে ২০০১ সালে যে আবদুল্লাহ গুল নিজেকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, সেই আবদুল্লাহ গুল এখনো বেশ জনপ্রিয় এবং জনগণের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র। দীর্ঘদিন একটানা দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। নেতা হিসেবে পুনরায় দলে ফিরে আসার ব্যাপারটা ২০১৪ সালের আগস্টের আগ পর্যন্ত বেশ আলোচিত হয়। ওই সময় তিনি সহকর্মীদের সাফল্য কামনা করে সুষ্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেন, তিনি আর সক্রিয় রাজনীতে ফিরবেন না। প্রয়োজনে সব সময় পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে যাবেন। 
আব্দুল্লাহ গুলের বাংলাদশে সফর 
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুলের দক্ষিন এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে ২০১০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ করেন। এর আগে তিনি ভারতে ৬ দিনের দীর্ঘ এবং সফল রাষ্ট্রীয় সফর শেষ করেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এটাই ছিল গেল ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্রপতির প্রথম সফর। এছাড়াও বিগত ১৯ বছরের মধ্যে প্রথম কোন তুর্কি রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফর এটি। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রজতজয়ন্তী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা সফরে এসেছিলেন তুরস্কের সাবেক রাষ্ট্রপতি সুলেইমান দেমিরেল। 
এর আগে তুরস্ক সফর করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান। ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির (কমসেক) ২৫তম অর্থনৈতিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। ওই সময় তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রপতির এ আমন্ত্রনে সাড়া দিয়ে আব্দুল্লাহ গুল বাংলাদেশে এসেছিলেন। সফর সঙ্গী হিসেবে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং প্রায় শ’খানেক ব্যাবসায়ী প্রতিনিধি তার সঙ্গে ছিলেন।
উৎসঃ   আরটিএনএন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন