ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

জননেতা মকবুল আহমাদ প্রসঙ্গ: মতিউর রহমান আকন্দ

মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার সম্পর্কে : আমীরে জামায়াত হিসেবে ১৭ অক্টোবর ২০১৬ শপথ নিয়ে তিনি জাতির উদ্দেশ্যে জাতীয় ঐক্য, সংহতি ও অগ্রগতিকে সামনে রেখে যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন তা দেশে-বিদেশে সর্বমহলে ব্যাপকভাবে অভিনন্দিত হয় এবং দেশী-বিদেশী অনেক গণমাধ্যমে তার এ ঐতিহাসিক বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয়। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় জনাব মকবুল আহমাদ আমীর হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর দু’একটি স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন ও জাতীয় পত্রিকায় জনাব মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবর পরিবেশিত হতে থাকে। জামায়াতের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। দেশের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, রাজনীতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ ও সচেতন জনতা এ অপপ্রচারে বিস্মিত হন। আমীর হিসেবে শপথ নেয়ার পর তাকে ’৭১-এর ঘটনায় জড়িয়ে সংবাদ পরিবেশন সকলকে হতভম্ব করে। প্রকৃতপক্ষে আমীরে জামায়াত জনাব মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ সর্বৈব মিথ্যা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ফেনীতে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার সাথে জনাব মকবুল আহমাদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। ফেনী জেলার দাগনভূঞা থানার উত্তর লালপুরে ১০ জন হিন্দু ও একজন মুসলিম হত্যা এবং বাড়িঘর অগ্নিসংযোগের ঘটনার সাথে মকবুল আহমাদকে জড়িয়ে যে খবর দু’একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকেরা কেউ মকবুল আহমাদকে অভিযুক্ত করেনি। উত্তর লালপুরের হত্যাকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগের জন্য জনৈক হিন্দু ভদ্রলোক জানিয়েছেন ১৯৭১ সালের এ হামলার জন্য দায়ী লাতু ও শাহাবুদ্দিন নামক ২ জন লোক। তারা ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন। তারা স্পষ্টতই উল্লেখ করেছেন মকবুল আহমাদ সাহেব এ ঘটনার সাথে কোনভাবেই সম্পৃক্ত নন। আমরা তাকে দেখিনি। তার নাম শুনেছি। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ বলে লোকমুখে শুনেছি। আরো শুনেছি তিনি মানুষের উপকার করেন। কারো ক্ষতি করেন না। ১৯৭১ সালে ঐ ভদ্রলোকের বয়স ছিল ১২/১৩ বছর। তিনি বললেন আজও সে ঘটনার কথা আমার মনে পড়ে। অনেকে পিস কমিটির সভাপতি হিসেবে তার নাম উল্লেখ করেন, যা সর্বৈব মিথ্যা। পিস কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন খাজা আহমদ এম.পি.এ তার বাড়ি ফেনীর বারাহীপুর গ্রামে। সেক্রেটারি ছিলেন জনৈক মকবুল আহমদ এডভোকেট। তার বাসা ছিল ফেনী জহিরিয়া মসজিদের নিকট, তার বাড়ি ছিল দাগনভূঞা থানার ছিলনীয়া এলাকায়। মকবুল আহমাদকে দায়ী করার এটাও একটা ভিত্তি। এ মকবুল আহমাদ এডভোকেট ছিলেন সেটা চাপিয়ে রেখে মিথ্যার বেসাতী করছেন কিছু লোক। শান্তি কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি হওয়াতো দূরের কথা তিনি শান্তি কমিটির সাধারণ সদস্যও ছিলেন না। শুধু তাই নয়; রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ইত্যাদি বাহিনীর সাথেও তিনি জড়িত ছিলেন না।
খুশিপুর গ্রামের আহসানউল্লাহকে হত্যার জন্য জনাব মকবুল আহমাদ নির্দেশ দিয়েছেন মর্মে যে সব খবর প্রচারিত হয়েছে তার মধ্যে সত্যের লেশমাত্র নেই। আহসানউল্লাহর স্ত্রী সালেহা বেগম এবং তার ভাই মুজিবুল হক মকবুল আহমাদকে অভিযুক্ত করে যেসব কথাবার্তা প্রচার করা হয়েছে তার নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন যে, আহসানউল্লাহ তার সাত মাস বয়সী ছেলের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাকে দেখার জন্য বাড়ি এসেছিলেন এবং পরে তিনি বাড়ি থেকে ছিলনীয়া বাজারে যান এবং সেখান থেকে ফেরত আসেননি। তার লাশ কোথাও পাওয়া যায়নি। এর সাথে জনাব মকবুল আহমাদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা মকবুল আহমাদ সম্পর্কে জানান, তার মত একজন ভালো মানুষের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করার প্রশ্নই আসে না। যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলছেন তারা মিথ্যা কথা বলছেন।
১৯ নবেম্বর ২০১৬ শনিবার বাংলা ট্রিবিউন ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় “জামায়াত আমীর মকবুলের চিঠিতে একাত্তরে হত্যার প্রমাণ” শীর্ষক একটি মিথ্যা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। রিপোর্টটিতে জামায়াতে ইসলামীর ফেনী মহকুমার প্যাড ব্যবহার করে মহকুমা আমীর হিসেবে জনাব মকবুল আহমাদ কর্তৃক রেডিও পাকিস্তান চট্টগ্রামে ভারপ্রাপ্ত ডিউটি অফিসার জনাব ফজলুল হককে স্বহস্তে ইংরেজিতে একটি চিঠি লিখেছেন বলে দেখানো হয়েছে। চিঠিতে ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন গ্রুপ) এর নেতা মাওলানা ওয়েজউদ্দিনের চট্টগ্রাম যাবার তথ্য দিয়ে তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সহায়ক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তার গতিবিধি সনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে ........ ইত্যাদি ইত্যাদি। 
চিঠিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং পরিকল্পিতভাবে ‘সৃজন’ করা হয়েছে। কতগুলো বিষয় সামনে আনলেই এ চিঠি মিথ্যা হওয়ার বিষয়ে ধারণা পেতে কারো কষ্ট হওয়ার কথা নয়ঃ
১৯৭১ সালে ফেনী মহকুমা জামায়াতের কোন আমীর ছিল না। এ ধরনের কোন পদও ছিল না। মহকুমার দায়িত্বশীলকে বলা হতো ‘নাজেম’। জনাব মকবুল আহমাদ নাজেমও ছিলেন না। 
চিঠির শুরুতেই সালাম দেয়া হয়নি। জামায়াতের কোন নেতা বা দায়িত্বশীল কাউকে চিঠি লিখলে শুরুতেই ‘আস্সালামু আলাইকুম’ উল্লেখ করে থাকে। অথচ এ চিঠিতে তা উল্লেখ নেই। এটা চিঠি মিথ্যা হওয়ার অন্যতম প্রমাণ।
জামায়াতের নেতার পক্ষ থেকে চিঠি চট্টগ্রামের কোন জামায়াত নেতার কাছে না লিখে লিখা হয়েছে চট্টগ্রামের রেডিও পাকিস্তানের ডিউটি অফিসারকে।
চিঠিতে স্বাক্ষর দেয়া হয়েছে ‘মকবুল আহমাদ বি.এ’ লিখে। স্বাক্ষরের সময় কেউ বি.এ/এম.এ লিখে স্বাক্ষর দেয় তা কত বড় ডাহা মিথ্যা তা সহজেই অনুমান করা যায়।
চিঠির লেখা মকবুল আহমাদের নয়, স্বাক্ষরও তার নয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে এ চিঠির কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
চিঠিতে নামের যে বানান লেখা হয়েছে ঐ বানানের সাথে মকবুল আহমাদের নামের বানানের মিল নেই। 
১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মকবুল আহমাদ জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণায় নামলে আওয়ামী লীগ নেতা হাজারী এ চিঠি তৈরি করে জনাব মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালান। ঐ সময় জামায়াতের পক্ষ থেকে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং পত্রিকায় তা ছাপা হয় তখন তারা চুপসে যায়।  মাঝখানে এ নিয়ে আর কোন আলোচনা নেই। জনাব মকবুল আহমাদ আমীর হওয়ার পর দীর্ঘ ২৫ বছর পর আবার এ চিঠির আগমন ঘটেছে। মূলত মকবুল আহমাদকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই এ চিঠির আবির্ভাব। এমনকি তিনি ভারপ্রাপ্ত আমীরের দায়িত্ব পালনকালেও এ ধরনের কোন চিঠির আলামত প্রকাশ হয়নি।
জনাব মাওলানা ওয়েজউদ্দিনের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম চৌধুরী ও কন্যা সৈয়দা ওয়াসিমা পারভীন এনী জীবিত আছেন। ওয়েজউদ্দিনের কন্যার নিকট অপপ্রচারকারীরা গিয়েছিল ওয়েজউদ্দিনের হত্যাকাণ্ডের জন্য মকবুল আহমাদকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়েরের জন্য প্ররোচিত করতে। কন্যা ওয়াসিমা পারভীন তাদের কথায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আপনারা কারা? এতদিন কোথায় ছিলেন? ৪৫ বছরের মধ্যে আপনারা তো কোন খবর নিতে আসলেন না। আমার বাবার জায়গা-জমি বেদখল হয়ে গেল! একদিনও তো তা উদ্ধার করার জন্য আসলেন না। এখন কেন আসলেন?’ 
সৈয়দা ওয়াসিমা পারভীন মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে রাজি হননি। তারা বলেছেন, আমরা একজন নির্দোষ মানুষকে দোষী বানাতে চাই না। এতে আমার বাবার আত্মা কষ্ট পাবে। 
জনাব মকবুল আহমাদ ১৯৭১ সালে কিভাবে মানুষের কল্যাণ করেছেন তা শফিকুর রহমান চৌধুরী রচিত ‘মুক্তিযুদ্ধে ফেনী’ পুস্তকের ১৯৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে।
জনাব মকবুল আহমাদ মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা ও বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য যেখানে সদা তৎপর ছিলেন সেখানে তাকে হত্যা, অগ্নিসংযোগের সাথে জড়ানো ডাহা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই না।
সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে রাখা যাবে না : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ঘোষণা করেছেন, “সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত, মিথ্যার পতন অবশ্যম্ভাবী”(সূরা বনী ইসরাইল-৮১)। মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে কখনো সত্যকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। জনাব মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে যতই অপপ্রচার চালানো হউক না কেন ফেনীর সর্বস্তরের মানুষ সাক্ষী তিনি কোন ধরনের অনৈতিক, ধ্বংসাত্মক, হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত নন। অপপ্রচারকারীদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন হবে না ইনশাআল্লাহ। [সমাপ্ত]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন