বাংলঅদেশ বার্তা ডেস্ক, ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ইংঃআমাদের দেশে রাতকানা একটি অতি পরিচিত রোগ। শিশুদের যে সব রোগে বেশি ভোগতে দেখা যায়, রতকানা একটি। শিশু দিনের বেলায়, দিনের আলোয় ভালই দেখতে পায়। কিন্তু রাত নেমে আসলে সমস্যা দেখা দেয়। রাতকানা রোগ হল- রাতে কম দেখে, ঝাপসা দেখে, একেবারে দেখে না। যেহেতু রাত্রিকালে, রাতের অন্ধকারে কম দেখে তাই রোগের নাম রাতকানা বা Night blindness.
এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ শিশু রাতকানা রোগে আক্রান্ত হয়। এবং এর ফলে প্রতিদিন প্রায় ৮৮জন শিশু অন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শিশুদের মধ্যে যারা নানাবিধ অন্ধত্বে ভোগে তাদের মধ্যে শতকরা দু শতাংশ ভিটামিন এর অভাবজনিত কারণে। রাতকানা রোগের শিশুদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে শিশু স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এ সংখ্যা বেশি।
কারা বেশি ভোগে : রাতকানা রোগে অধিকাংশ ৬বছরের নিচে বয়সের শিশুরা ভোগে। কারণ : রাতকানা রোগের নানাবিধ কারণ আছে। তবে, প্রধান কারণ শিশুর দেহে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব বা স্বল্পতা। মানবদেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন প্রয়োজন হয়। ভিটামিন ‘এ’ তেমনি অতি প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন।
শরীরেঞ্জভিটামিন ‘এ’ এর স্বল্পতা, পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ না করা। অপুষ্টি। জন্মের সময় বাচ্চার ওজন কম হওয়া।
বিভিন্ন রোগে ভোগার করণে শরীরে ভিটামিন এর স্বল্পতা। বিশেষ করে হাম, ডায়রিয়া, হুপিং কাশি, যক্ষ্মা ইত্যাদি রোগে ভোগার পর।
ভিটামিন ‘এ’ এর স্বল্পতায় চোখে নানাবিধ সমস্যা তৈরি হয়। ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে চোখের নিঃসরণ গ্রন্থি ঠিকমত কাজ করে না। ফলে চোখে অত্যধিক শুষ্কতা দেখ দেয়। চোখে পুুঁজ, চোখের মনিতে ঘা ইত্যাদি দেখা দেয়।
লক্ষণ : রোগী দিনের বেলায় ঠিকই দেখতে পায়, কিন্তু রাতে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়, কম দেখে বা একেবারে দেখে না। চোখের সাদা অংশ এবং চোখের মণি শুকিয়ে যায়, শুষ্ক হয়ে যায়। চোখের পানি কমে যায়।
চোখে ঘা গয়, পুঁজ তৈরি হয়। চোখের মণি ঘোলাটে ও ফ্যকাশে হয়ে পড়ে। চোখের সাদা অংশের রঙ ক্রমশ পরিবর্তন হয়ে বাদামী হয়ে যায়।
চোখ লাল হয়ে যায়। উজ্জল আলোর দিকে সরাসরি থাকাতে পারে না।শারীরের চামড়া শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায়।
মারাত্মক জটিলতা : শিশু চিরতরে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
প্রতিরোধ : শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে। ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার খোঁজার জন্য বেশি দূরে যেতে হয় না, কষ্ট করতে হয় না। আমাদের চার পাশেই রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ হাজারো খাবার। প্রথমেই মায়ের বুকের দুধ। রাতকানা রোগ প্রতিরোধে মায়ের বুকের দুধের বিকল্প নেই। শিশুকে জন্মের পরপরই শালদুধ খাওয়াতে হবে। ৬ মাস বয়স পর্যন্ত আলগা খাদ্য বাদ দিয়ে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়াতে পারলে ভাল।
৬ মাস বয়স পূর্ণ হবার পর ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ আলগা খাবার খেতে দিতে হবে। গর্ভবতী ও প্রসূতিকে পর্যাপ্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বিশেষ করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে।
ভিটামিন‘ এ’ - দৈনন্দিন খাবারের বিভিন্ন উৎস থেকে ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ করা যায়। প্রাণীজ উৎস যেমন- ডিম, দুধ, মাখন, কলিজা, ছোট ছোট মাছ, মাছের তেল, মাংস ইত্যাদি।
উদ্ভিজ উৎস- সবুজ পাতাযুক্ত শাক এবং রং এর বিভিন্ন মৌসুমি ফল। যেমন- কচুশাক, পুঁই শাক, লাউ শাক, পালং শাক, কলমি শাক, কুমড়া শাক, পাট শাক, হেলেঞ্চা শাক, মুলা শাক, সজিনা পাতা ইত্যাদি সবুজ শাক। গাজর, শালগম, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, পাকা কাঁঠাল, পাকা পেপে, পাকা আম, পাকা কলা ইত্যাদি মৌসুমি ফল।
শিশু বিভিন্ন রোগে ভোগার করণে শরীরে ভিটামিন এর স্বল্পতা দেখা দেয়। বিশেষ করে হাম, ডায়রিয়া, হুপিং কাশি, যক্ষ্মা ইত্যাদি। তাই এসব রোগে ভোগার পর পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে।
নইম কাদের
চেম্বার : হোমিও হেলথ হোম, বহদ্দারহাট, চট্টগ্রাম।
মোবাইল : ০১৯৯১ ৯৪ ৮৫ ৯১
মোবাইল : ০১৯৯১ ৯৪ ৮৫ ৯১
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন