ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

আমীরে জামায়াত জননেতা মকবুল আহমাদ প্রসঙ্গ -মতিউর রহমান আকন্দ


 [তিন]
সামাজিক কার্যক্রম : জনাব মকবুল আহমাদ বেশির ভাগ সময়ই সাংগঠনিক কাজে জড়িত ছিলেন। তিনি সংগঠনের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। তার প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে জনগণের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। প্রতি বছর শতাধিক গরীব প্রতিভাবান ছাত্রদেরকে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে এককালীন বৃত্তি প্রদান করা হয়।
বিদেশ ভ্রমণ ও হজ্ব পালনের অনুভূতি : জনাব মকবুল আহমাদ রাবেতার আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের রিয়াদ সফর করেন। রাবেতা আয়োজিত এ সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিত্ব করেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ, চিন্তাবিদ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সমাদৃত ব্যক্তিবর্গও এ সকল সম্মেলনে যোগদান করেন।

প্রবাসী সংগঠনের আমন্ত্রণে সাংগঠনিক সফরে তিনি জাপান ও মালয়েশিয়া সফর করেন। জাপান সফর শেষে তিনি সফরের অভিজ্ঞতার আলোকে রচনা করেন -‘জাপান সফর-দেখার অনেক শিখার অনেক’। তার রচিত এ গ্রন্থটি সুখপাঠ্য বই হিসেবে সমাদৃত। তিনি সৌদি আরব সরকারের রাবেতা আলমে আল ইসলামীর মেহমান হিসাবে প্রথম হজ্ব পালন করেন। এরপর ২০০৩ সালে আবারহজ্ব¡ পালন করেন। জনাব মকবুল আহমাদ হজ্বের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘খানায়ে কাবা দর্শন সে এক অকল্পনীয় অব্যক্ত অনুভূতি। সারা দুনিয়ার মানুষ, খোদাপ্রেমে সবকিছু ছেড়ে দুনিয়া ত্যাগী ফকিরের বেশে এক কাপড় পড়ে কাবা প্রদক্ষিণ আমার মনে বিরাট প্রভাব পড়েছে। সারা দুনিয়ার মুসলমানদের ঐক্যের জন্য মহান রাব্বুল আলামীন যে ব্যবস্থা করেছেন তার দ্বারা মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের বিরাট বন্ধন উপলব্ধি করেছি।
হজ্বের শিক্ষা উপলব্ধি করা ও কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা হিসাবেই ইসলামী আন্দোলন (ইকামাতে দ্বীনের) প্রেরণা অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা জীবন অন্য কোন কাজকে আর প্রাধান্য দেইনি বা দিতে পারিনি।’

ভারপ্রাপ্ত আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন : ২০১০ সালের ২৯ জুন জামায়াতে ইসলামীর আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গ্রেফতার হলে জনাব মকবুল আহমাদ ভারপ্রাপ্ত আমীর হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। সুদীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় জামায়াতের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার অবিচার, বহু কর্মীকে গুম, খুন ও পঙ্গু করার অমানবিক সরকারি প্রচেষ্টা চলে। এ সময় তিনি ধৈর্যহারা হননি। আইনী সীমার মধ্যে চলার এবং সংগঠনকে খোদাভীতি ও নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে রাখার সাধ্যমত চেষ্টা করেন।

জামায়াতের সংগঠনের শৃঙ্খলার কারণে হাজার হাজার (রুকন) সদস্য কর্মী ছবরের সাথে কাজ করায় সারা দেশের মানুষের মধ্যে একটি ইতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার কর্মী কারাবরণ করে কারাভ্যন্তরে ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী নিজদেরকে গঠন করতে সক্ষম হয়। জেল থেকে মুক্তি লাভ করে তারা আরো ভালো মজবুত কর্মী ও সমাজ সচেতন হয়েছে।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীবৃন্দ ত্যাগ কুরবানী ও আনুগত্যের মধ্যে যেভাবে কাজ করেছেন তাতে আমীরে জামায়াত হিসেবে তিনি আরো উদ্বুদ্ধ হন। 
ভারপ্রাপ্ত আমীর হিসেবে সারা দেশের বড় বড় সমাবেশগুলোতে তিনি বক্তব্য রেখেছেন। তার বক্তব্যে কারও বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক বক্তব্য না দিয়ে তিনি দেশের সমস্যা উপলব্ধি করে সবাইকে নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য আহ্বান জানান। তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সকল দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলনে সোচ্চার হওয়ার লক্ষ্যে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি রাজনীতির একটা স্বচ্ছ সাবলীল ধারা চালুর চেষ্টা করেন। 

আমীরে জামায়াতসহ শীর্ষ ৫ নেতার ফাঁসি সম্পর্কে : জনাব মকবুল আহমাদ সরকারের জুলুম-নিপীড়নের মাঝেও সংগঠনকে যথার্থভাবে পরিচালনায় কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তিনি রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। আইনগতভাবে মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। বিতর্কিত বিচারে ফাঁসি দেয়ার পর তিনি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে সরকারের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। জনাব মকবুল আহমাদের নেতৃত্বে দেশে বিদেশে সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও সাজানো বিচারের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে উঠে। জাতিসংঘ, Human Rights Watch সবাই বিচারের জন্য ব্যবহৃত আইনকে একটি কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেন। জামায়াত নেতাদের ফাঁসি না দিতে জাতিসংঘ, বিভিন্ন রাষ্ট্র, মানবাধিকার সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান আহ্বান জানান। সরকার কারো কথায় কর্ণপাত করেনি। ফলে এ সরকারের বিরুদ্ধে সারা দুনিয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জনাব মকবুল আহমাদ মনে করেন, আদালতে আখেরাতে আমাদের নেতৃবৃন্দ নিশ্চিতভাবে ন্যায় বিচার পাবেন।

তিনি বলেন, মহামতি সক্রেটিস, ইতিহাস বিখ্যাত নেত্রী জোয়ান অবআর্ক কতজনকেই তো Judicial Killing করেছে। আদালত তখনও ছিল। কিন্তু ১০০ বছর পরে তাদেরকে জাতীয় হিরোর মর্যাদা দিয়ে ইতিহাস নতুনভাবে লেখা হয়েছে।
জনাব মকবুল আহমাদ বলেন, যে মানুষগুলো সারা জীবন চুরি, ডাকাতি, মানুষ খুন অথবা অন্য কোন অন্যায় করেনি তারা হঠাৎ ’৭১ এ খুনি হয়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করল এটা কি করে সম্ভব? আবার জোট সরকারের আমলে ২ জন মন্ত্রী দুর্নীতিমুক্ত ও যোগ্য হিসেবে Far East Economic Review-এর মত পত্রিকায় স্বীকৃতি লাভ করেন।

আমীরে জামায়াত হিসেবে শপথ : জনাব মকবুল আহমাদ স্বাস্থ্যগত কারণে জামায়াতের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। কিন্তু জামায়াত নেতৃবৃন্দ তা গ্রহণ করেননি। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা আমীর নির্বাচনের জন্য ৩ সদস্যের একটি প্যানেল নির্বাচিত করেন। সারা দেশের রুকনগণ সেই প্যানেল থেকে জনাব মকবুল আহমাদকে আমীর নির্বাচিত করেন। এ বছর ১৭ অক্টোবর তিনি আমীর হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। সেদিন তিনি তার দীর্ঘ বক্তব্যে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান। এর পরপরই শুরু হয় তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। জনাব মকবুল আহমাদ বলেন, এ দায়িত্বে যাকেই বসানো হোক তার বিরুদ্ধে এভাবে অভিযোগ আসবে, আসতেই থাকবে। এটা রাজনৈতিক বিদ্বেষ ও সংকীর্ণতার কারণে চলতেই থাকবে। (চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন